না_চাওয়া_পূর্ণতা পর্ব : ১৯

0
1890

#না_চাওয়া_পূর্ণতা ?
লেখক : সানজিতা আক্তার মীম
পর্ব : ১৯

তনু : বুঝলাম না, বাবা!!
সায়নের বাবা : মানে তুমি তোমার বাবার বাড়ি চলে যাবে। ( গম্ভীর হয়ে)
সায়নের মা : আরে ও বাবার বাড়ি কেন যাবে শশুরবাড়ি ছেড়ে। বুড়ো বয়সে কি মাথাটাও নষ্ট হয়ে গেল। যতসব আজগুবি কথা বলছো। ( রেগে)
সায়নের বাবা : আমি এই বিয়ে মানি না। তুমি দেখেছো ওদের বিয়ে? কি হলো চুপ করে আছো কেন? বলো। দেখো নি তাহলে কিভাবে এটা শশুরবাড়ি হলো। ( কিছুটা চেঁচিয়ে বললো তা দেখে সবাই ভয়ে চুপ করে গেল)

সায়নের বাবার এমন কথা শুনে তনুর চোখে পানি চলে এসেছে। ও ভাবতে পারে নি যে সায়নের বাবা এমনটা বলতে পারে। তনু মাথা নিচু করে বসে বসে খাবার নাড়ছে শুধু।
এদিকে সায়ন ওর বাবার কথা শুনে কোনো reaction -ই দিলো না। ও ওর মতো করে খাবার খাচ্ছে আর একটু পর পর তনুকে দেখছে।

তনু কিছু না বলে খাবার রেখে উঠে চলে যাচ্ছিলো তখনি সায়নের বাবা তনুকে দাড়াতে বললো,,,

সায়নের বাবা : তনু না খেয়ে কোথায় যাচ্ছো? খাবার খেয়ে তবে যাও। তোমার ঔষধ খেতে হবে মনে আছে তো নাকি। সুস্থ হতে হবে তো। তা না হলে তো দেখা যাবে যার জন্য আয়োজন সেই রুমে শুয়ে থাকবে আর বাকিরা আনন্দ করবে।
তনু : কিসের আয়োজন বাবা? ( অবাক হয়ে)
সায়নের মা : হ্যাঁ,তাই তো! তুমি যে কি বলছো সব মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। বুঝিয়ে বলো তো একটু।
সায়নের বাবা : বিয়ে হবে এই বাড়িতে।
সায়নের মা : এই বাড়িতে আবার কার বিয়ে হবে। আমাদের কি আর কোনো সন্তান আছে যে তাকে বিয়ে দিবো।ওই তুমি আমার অজান্তে কোনো অঘটন ঘটাওনি তো আবার। ( তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
সায়নের বাবা : নাউজুবিল্লাহ। কিসব বলছো তুমি। আমি কোনো অঘটন ঘটাবো কেন। আমার বউ এখনো কি সুন্দর দেখতে। তা রেখে অন্য কোনো অঘটন ঘটানোর সময় নাই।
সায়নের মা : তাহলে কার বিয়ে?
সায়নের বাবা : আর কার হবে।সায়ন আর তনুর বিয়ে।

অন্তু এতোক্ষণ খাচ্ছিলো চুপচাপ। কারণ তনু শিখিয়েছে বড়রা কথা বললে তখন কথা না বলতে। কিন্তু সায়ন আর তনুর বিয়ের কথা শুনে সে তো মহা আনন্দ। খুশিতে সে দাদার কাছে দৌড়ে আসলো।

অন্তু : দাদাভাই, বাবাই আর মাম্মাম এর বিয়ে, সত্যি!!!
সায়নের বাবা : হুম সত্যি। ( হেসে)

তনু এতোক্ষণে যেন হাফ ছেড়ে বাচলো। তনু চুপচাপ বসে পরলো আবার। তনু সায়নের দিকে তাকিয়ে দেখলো সায়ন ওর দিকেই তাকিয়ে ছিলো। তনু তাকাতেই সায়ন চোখ মারলো৷ তা দেখে তনু চোখ বড় বড় করে তাকালো।

তনু : এর মানে এই বাদরটা আগে থেকেই সব জানতো। ফাজিল ছেলে। পরে বুঝাবো মজা। ?(মনে মনে)

খাওয়া শেষ করে সবাই সবার রুমে চলে গেল।তনু ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে অন্তুর চুল আচরে দিচ্ছিলো। সায়ন রুমে ঢুকে ধুম করে খাটে শুয়ে পরলো।
সায়ন : মেরি জান!প্রিন্সেস! দুজনই এদিকে আসো।

তনু আর অন্তু যেয়ে সায়নের সামনে বসে পরলো। সায়ন উঠে অন্তুকে কোলে বসিয়ে নিলো। তারপর ৩ টা বক্স বের করলো। তা দেখে তনু বললো,,,
তনু : এইগুলা কি?
অন্তু : কার জন্য বাবাই?
সায়ন : আমাদের তিনজনের জন্যই। তনু বক্সগুলো খুলে দেখো।( বক্সগুলো তনুর হাতে দিয়ে)

তনু বক্স খুলে দেখলো তিনটার মধ্যেই লকেট তাও আবার same style। লকেটে ৩ টা capital letter লিখা। TOS
সায়ন তনুর হাত থেকে একটা লকেট নিয়ে আগে তনুকে পরিয়ে দিলো তারপর অন্য একটা নিয়ে অন্তুকে পরিয়ে দিলো। তারপর তনুর হাতে লকেট দিলো পরিয়ে দেওয়ার জন্য। তনু সায়নকে লকেট পরিয়ে দিলো।

সায়ন : প্রিন্সেস, বলো তো কেমন হয়েছে?
অন্তু : অনেক সুন্দর হয়েছে বাবাই। I love it.
তনু : আসলেই অনেক সুন্দর হয়েছে।
সায়ন : মেরি জান, ঔষধ খেয়েছো?
তনু : yes, boss.

সায়ন আর তনুর মাঝে অন্তুকে নিয়ে ওরা ঘুমিয়ে পরলো।
কারণ কাল অনেক কাজ করতে হবে। পরশু গায়ে হলুদ আর পরের দিন বিয়ে। তাই অনেক কাজ।

In Morning,,,
সবাই সকাল থেকেই কাজে লেগে পরেছে নাস্তা শেষ করে। তনু রেডি হয়ে বসে আছে নুহাশ এর জন্য। আর ভয়ও পাচ্ছে কারণ ৬ বছর পর বাড়ি যাচ্ছে। বাবা-মা কি react করবে তা তনুর ধারনা নেই। তনুর ভাবনার মধ্যেই পরিচিত কন্ঠে তনুর নাম শুনে তনু সামনে তাকালো। সামনে তাকিয়ে দেখে তনুর বাবা আর নুহাশ দাঁড়িয়ে। তনু দৌড়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে। ৬ বছর পর দেখা বলে কথা।তনু বাবাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে। তনুর বাবাও মেয়েকে এতবছর পর দেখে চোখের জল ছেড়ে দিল।

তনু : বাবা আমাকে মাফ করে দাও প্লিজ। আমার জন্য তোমাদের অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে। আমি আর কখনো তোমাদের কষ্ট দিব না। promise.
তনুর বাবা : ভুলটা আমারই ছিল। আমাকেও মাফ করে দিস মা৷ তোকে না জানিয়ে তোর বিয়ে ঠিক করেছিলাম। তাই তুই এতো কষট করেছিস। আমি এমনটা না করলে তো তুই এমন করতি না।
তনু : বাদ দাও বাবা। মা কেমন আছে? মা কি এখনো রেগে আছে আমার ওপর। ( অসহায়ভাবে তাকিয়ে)
তনুর বাবা : নারে মা। তোর মা তো তোর জন্য অপেক্ষা করছে। জলদি যেতে বলেছে।
নুহাশ : তোমাদের বাবা-মেয়ের emotional সিন শেষ হলে তো যাবো।
সায়ন : আসসালামু আলাইকুম, বাবা। কেমন আছেন?
তনুর বাবা : একদম ভালো। বাবা দেরি করবো না আসি তাহলে।
সায়নের মা : সে কি ভাই। মাত্রই তো এলেন। বসেন।
তনুর বাবা : না তনুর মা তনুকে দেখার জন্য পাগল হয়ে আছে। পরে এসে অনেকক্ষণ বসবো। রাগ করেন না আপা।
সায়নের মা : ঠিক আছে। সাবধানে যাবেন। আর আমার মেয়ের খেয়াল রাখবেন কিন্তু।
তনুর বাবা : অবশ্যই। তাহলে যাওয়া যাক।

সায়ন, তনু,অন্তু,নুহাশ আর তনুর বাবা তনুদের বাসার উদ্দেশ্য নিয়ে বেরিয়ে পরলো।

#চলবে
Sorry guys. Assignment এর কারণে দেরি করে গল্প দিলাম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here