#দেবী
লেখিকাঃ #Srotoswini_স্রোতস্বীনি
কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ।
৬ঃ
একজন কাকনের মুখ চেপে ধরলো। তারপর আরেকজন ২ হাত ধরে ফেললো। এবার কাকনের নিকাব খোলার জন্য হাত বাড়ালো।
যেই কাকনের বোরকার নিকাব খুলবে ওমনি কেউ একজন হাত ধরে মুচড়ে ফেললো।
কাকন ভয়ে চোখ বন্ধ করেছিল। কিন্তু দুটি শব্দ শুনে চোখ খুললো,”রুহুল সুরাজী”।
কাকন চোখ খুলে একজন পুরুষের অবয়ব দেখতে পেলো। সন্ধাবেলা আবছা আলোয় কাকন চিনতে পারলো এটা দুলাল সিরাজীর নাতি যাকে সে মহিলা শালায় দেখেছিল।
বখাটের দলের একজন বলে উঠলো,”রুহুল সিরাজী আপনে,,, মা..মাফ কইরা দেন আমাগো। বুঝবার পারি নাই আর হইবো না।”
মুখ এ ঘুষি মারলেন রুহুল। বললো,”লজ্জা করে না তোদের। একটা মেয়েকে নিয়ে এসে জোর করছিস। সিরাজপুরে মেয়েদের কে জোর করা বের করবো আজকে। আজ তোদের কেউ বাচাতে পারবে না।”
তারপর সব গুলা কে মারতে শুরু করলো।থাপ্পড়, ঘুসি,লাথি সব গুলো মা’রতে লাগলো। জঙ্গলের গাছের ডাল দিয়ে ইচ্ছেমতো পিটালো।লেখিকা স্রোতস্বীনি। তারপর ওরা রুহুল সিরাজী কে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিলো তারপর প্রাণ নিয়ে পালালো।
রুহুল চিৎকার করে বললো,” তোদের মুখ ও যেন এই সিরাজপুরে না দেখি। যদি দেখি জ্যান্ত পু’তে ফেলবো”।
রুহুল দেখলো একটি মেয়ে মাটিতে বসে ফুপাচ্ছে।
তারপর মেয়েটির দিকে তাকালো।নিকাবের আড়ালে চোখ দুটি চেনা চেনা লাগছে।
রুহুল মেয়েটির উদ্দেশ্য বললো, “আর আপনি একা একা কি করছিলেন? আর একটু দেরি হলে কি হতো ভেবে দেখেছেন। ভাগ্যিস আপনার চিৎকার শুনেছিলাম কিন্তু এসে যে এভাবে দেখবো ভাবি নি। নদীর পাশে দিয়ে কি করছিলেন।জানেন না নদীর পাশে সন্ধ্যার পর নিরাপদ নয়।কে আপনি? ”
কাকন ক্লান্ত স্বরে বলল,” জি আমি কাকন।আমি মহিলাশালায় থাকি। মেলায় গিয়েছিলাম আপাদের সাথে। ওদের হারিয়ে ফেলেছি মেলায় তাই একা একা চলে এসেছি। আর ওই লোকগুলো জোড় করে আমায় এখামে নিয়ে এসেছে।” বলেই কাদতে শুরু করলো।
রুহুল কাকনকে চিনতে পারলো। ওর ভিষণ রাগ লাগলো। তবুও রাগ দমন করে বললো, ” কান্না থামান। আর কখনো এভাবে বেড়োবেন না। আর যারা আপনাকে দেখে রাখতে পারে না তাদের সাথে কেন এসেছেন। আজ যদি আপনার ক্ষতি হয়ে যেতো ভাবুন কি হতো? ”
কাকন চুপ করে রইলো। তারপর চোখের জল মুছার চেষ্টা করলো।
রুহুল বলল,” চলুন আপনাকে এগিয়ে দেই। এই অন্ধকারে না জানি আবার কোন বিপদ বাধাবেন।”
তারপর চুপ চাপ দুজন এগোতে থাকলো। কাকন ওর নিকাব ঠিক করলো। বোরকা ঝাড়লো। রুহুল ও গায়ের জামায় লেগে থাকা ময়লা ঝাড়তে ঝাড়তে এগোলো।
মসজিদে নামাজ পড়ে সবাই বের হচ্ছিলো।নদীর পথে দিয়ে যাদের বাড়ি তারা সেদিকে যাচ্ছিলেন। জঙ্গলের ভিতর থেকে রুহুল-কাকন কে দেখে থেমে গেলো সবাই।
–আরে ওইডা রুহুল বাজান না।মাইয়া নিয়া জঙ্গলে কি করতেছিলো।
–হ রুহুল সিরাজী ই তো। তয় মাইয়া কেডা?
–আরে এইডা তো মহিলাশালার মাইয়া। ফাতিমা পালে এই মাইয়ারে।
মুখোমুখি সবাইকে দেখে থমকে যায় কাকন-রুহুল।
–তোমরা দুইজন জঙ্গলে কি করতে ছিলা?
রুহুল এমন প্রশ্নে বললো,”চাচা আসলে….”
পিছন থেকে আক্কাস বলে উঠলো,”আসল নকল থামাও সিরাজী সাব। কও যে সইন্ধ্যা বেলা ফুর্তি করতে গেছিলাম জঙ্গলে।”
রুহুল গালি দিতে যেয়ে দিলো না। বললো,”মুখ সামলে কথা বল আক্কাসের বা’চ্চা। তর জিভ টেনে ছিড়ে দিবো।”
আক্কাস লোকজনের সামনে বললো,” হ আমি খারাপ ই তুমি তো সাধু মানুষের বাচ্চা।তয় তুমি মাইয়া নিয়া জঙ্গলে গেছিলা সাধু কাম করতে নাকি। আর আপনারা চুপ কইরা আছেন কেন। সিরাজী মঞ্জিলের পোলা বইলা চুপ।লেখিকা স্রোতস্বীনি।আর আমার বেলায় কি মাইর আর অপমান ডা না করলো এই গেরাম বাসী।”
রুহুল বললো,”চুপ মিথ্যা কথা এগুলো সব মিথ্যা।আপনারা যা ভাবছেন তা না আম..”
আক্কাস সকল কে বললো,”হ আমরা তো সত্য মিথ্যা বুঝি না তাই না। যাও কেউ সিরাজী আব্বা রে ডাক দেও। হেতি নিজে আইসা দেখুক হের বংশের কুকির্তী। ”
রুহুল কে এক প্রকার জোর করেই কোনো কথা বলতে দেওয়া হলো না। কাকন ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে রুহুলের পিছে দাড়িয়ে আছে।
যখন দেখলো মসজিদ থেকে আরো লোকজন বের হচ্ছে ওমনি আক্কাস বলা শুরু করলো, “আরে কে কই আছো গো দেখো রুহুল সিরাজী মাইয়া নিয়া ধরা পড়ছে”।
ধীরে ধীরে লোকজন জরো হওয়া শুরু করলো।
সকল মানুষ এর আরো ভিড় জমলো।খবর ছড়ানোর সাথে সাথেই মেলার মানুষ জন ও আসা শুরু করলো।ফুল,রিতা সহ বাকিরা কাকন কে খুজতে খুজতে সন্ধ্যা পার হয়ে গেছে ।ওরা তাই মহিলাশালায় ফিরে যাচ্ছিলো। কিন্তু বকুল তলায় ভিড় দেখে থেমে উকি দিলো। সকলে উপস্থিত হলো। ফাতিমা খবর শুনে সেও উপস্থিত হলো। ফাতিমা আর সহপাঠীদের দেখার পর কাকন দৌড়ে গিয়ে ফাতিমা কে জড়িয়ে ধরে কাদতে শুরু করলো। কাকন কাদতে কাদতে বললো,” আপা, আপা ওরা আমাকে খারাপ বলছে আপা,,,আমাকে নিয়ে যান এখান থেকে।”
আক্কাস বলে উঠল,” এই সক্কলে ধরো দুইজন রে। কেউ জানি পালায়তে না পারে। সিরাজী আব্বারে দেখমু এইবার কি বিচার করে। আমারে যেমন সাতদিন গেরাম বন্ধ করছিল। নিজের নাতিরেও করা লাগবো।”
একটু পর উপস্থিত হলো দুলাল সিরাজী।
দুলাল জিজ্ঞেস করলো, ” কি হইছে কি এইখানে?”
আক্কাস হেসে বললো,”সিরাজী আব্বা,,আপনের বড় নাতি মাইয়া নিয়া ধরা পড়ছে।”
দুলাল আক্কাস কে ধমকে বলল,” মুখ সামলায় কথা কইবি আক্কাস। আমার নাতি তর মতোন না। সে এইকাম করতেই পারে না। ”
আক্কাস বললো,” হ আমি তো খারাপ ই। কিন্তু আমরা নিজে চোক্ষে দেখছি। আরে পঞ্চায়েতের সদস্য সহ আরও অনেকেই আছিলো। ”
রুহুল তার দাদার কাছে যেয়ে বলল,” দাদাজান ওনারা যা ভাবছ সব মিথ্যা। আমি শুধু ওনাকে এগিয়ে দিত….”
আক্কাস কথা থামিয়ে দিয়ে বললো,” আরে রাখো মিয়া,,,ধরা পইড়া সব্বাই এমন করে। এখন দেখবার চাই সিরাজী আব্বা কি বিচার করে। নিজের রক্ত বইলা কি ছাড় দিবো নাকি। ”
–“আশেপাশের মানুষ জন বলে উঠলো,”হ হ আক্কাস ঠিক ই কইছে। ”
চারিদিকে নানা কথা বলাবলি শুরু হইলো। নানান রকমের কটুক্তি করা শুরু হলো।
দুলাল এবার সকলের উদ্দেশ্যে বলল,”আমার নাতির উপর আমার বিশ্বাস আছে। কিন্তু তোমাদের যখন মনে হয় আমার নাতি খারাপ কাম করলে আমিই এর ফয়সালা দিমু।আপনারা কেউ স্বচোক্ষে খারাপ কাম করতে দেখছেন?”
সবাই মাথা নিচু করে ফেললো। কিন্তু আক্কাস এই প্রতিশোধ নেওয়ার সু্যোগ হাত ছাড়া করবে না। তাই আবারো বললো, “জঙ্গলে পোলা মাইয়া কেন যায় হুনি? আমরা স্বচোক্ষে ওগো কাপড় ঝাড়তে ঝাড়তে আইতে দেখছি।এর চেয়ে আর কি শুনবার চান সিরাজী আব্বা। এই যে এনারা সাতেই আছিলো আমার। ”
আক্কাসের কথার সাথে বাকি কয়েকজন সম্মতি জানালো।লেখিকা স্রোতস্বীনি। দুলাল সবাইকে দেখলো।বিষয়টি যে হাতের নাগালের বাইরে বুঝতে বাকি রইলো না। না, সিরাজী বংশের মান নষ্ট হবে এইটা সে হতে দেবে না। তাই কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থাকার পর ভেবেচিন্তে বললো,”বেশ আগামী শুক্রবার আমার নাতির লগে ওর বিয়া দিমু। আশা করি এখন আর কারো কোনো আপত্তি নাই। সকল সিরাজপুর বাসীর দাওয়াত রইলো।”
দুলালের কথা শুনে কাকন সহ সবাই অবাক হয়ে গেলো। আক্কাস আশ্চর্যের চরম সীমায় কারণ একটা এতিম মেয়ের সাথে সিরাজী বংশের ছেলের বিয়ে দিবে এটা আক্কাস ভাবতে পারে নাই সে তো কেবল অপদস্ত করতে চেয়েছিল।তাই আক্কাস বললো, এইডা মানি না। আমার বেলা তাইলে মিতুর লগে বিয়া দিলেন না কেন,, আমার বেলায় তো….”
দুলাল সিরাজী প্রচন্ড জোরে বললো, “চপ জা***** আর একখান কথাও শুনতে চাই না। আমার নাতি কেমন সিরাজপুরের সক্কলেই জানে। তুই মানুষ জড়ো কইরা অপদস্ত করছা কিছু কই নাই। আর এইডার বাইরে কুনো কথা শুনবার চাই না।”
আক্কাস এবার নত স্বীকার করলো।
পাঠশালার শিক্ষক বললো,”হ্যাঁ এইডা ঠিক কইছেন। কাকন রে চিনি মাইয়াডা অনেক ভালো। আর রুহুল বাবা ও চরিত্রবান পুরুষ। আমার মনে হয় এই ঝামেলার পর নিকাহ পড়াইয়া দিলেই ভালো হবে। ”
এখন গ্রামের সবাই সহমত করলো।বিয়ের দাওয়াতের কথা শুইনা খুশিও হইলো।
দুলাল ফাতিমার কাছে গেলো অতপর বললো,, “ফাতিমা,আমার নাতির উপর বিশ্বাস আছে। কিন্তু আমার একটা মান ইজ্জত ও আছে। তাই এইডা ছাড়া উপায় নাই। কাকন , আশা করি তুই ও রাজি হবি। ।ফাতিমা তুমি কাকন রে এতদিন দেইখা রাখছো।ওর তো পরিবার, গুরুজনেরা নাই তাই তোমারেই বিয়ার দায়িত্ব দিলাম। আমি সকল ব্যবস্থা কইরা দিমু। তুমি সেগুলার দায়িত্ব নেও। আর কাকন রেও এই কয়ডা দিন তোমার কাছে রাইখো। আশা করি সব কাম ঠিক ঠাক মতো করবা তুমি।”
ফাতিমা ভালো করেই জানে সে চাইলেও না করতে পারবে না।লেখিকা স্রোতস্বীনি।ফাতিমা একবার কাকনের দিকে চাইলো তারপর বললো,” জি সিরাজী আব্বা। আপনি যা কইবেন তাই হইবো।”
দুলাল সিরাজী গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে বললো,”এখন তোমারা সকলে যার যার কামে যাও।
দুলাল সিরাজীর আদেশে সবাই যার যার মতো চলে গেলো। ফাতিমা কাকনসহ সকল মেয়েদের সাথে নিয়ে মহিলাশালায় চলে গেলো।
__________________________
মহিলাশালা~
ফাতিমা কাকনের চোখের পানি মুছে দিচ্ছে আর বলছে,” আর কত কানবি রে কাকন,, সেই সন্ধ্যা থিকা কানতাছা, ছাড় আমারে। ”
কাকন হেচকি তুলে বললো,” উহু”
ফাতিমা বললো,” সব ই কপাল রে মা,,আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে। রুহুল সিরাজী হইলো গেরাম সেরা পোলা। কত ধনীর বাপেরা নিজের মাইয়ার জন্য রুহুলের হাত চাইবার আইসে। কিন্তু দেখ ভাগ্যের লেখন তর লগে হের বিয়া।তর অনেক সৌভাগ্যরে কাকন।”
ফুল বললো,”ফাতিমা আপা ঠিক কইছে কাকন।সিরাজপুরের সব মাইয়ারাই সিরাজী মঞ্জিলের বউ হইতে চায় আর তুই না চাইতেই পাইলি।আর কত মন খারাপ কইরা থাকবি ক?”
নুপুর ভেজা চোখে বললো,” কাকন আমারে মাফ কইরা দে বোইন। তরে আমি ধইরা রাখতে পারি নাই।আমি যদি তর হাত না ছাড়তাম তর আজ এত বড় বিপদ হইতো না। আমার ই দোষ।”
কাকন নুপুরে দিকে চেয়ে বললো,” কারো কোনো দোষ নেই। সব দোষ আমার কপালের।”
রিতা বললো,” এভাবে কইস না কাকন। আমাগো মাফ কইরা দে আমরা ভুইলা গেছিলাম যে তুই আছোস আমাগো লগে। ”
ফাতিমা এবার সবাইকে থামিয়ে বললো,” হইছে এখন আর কথা বাড়ায়া লাভ নাই।আমি খাওন বাড়লাম। তরা আয়। ”
ফাতিমা চলে গেলে ফুল বললো,”শোন কাকন তর বিয়া তে কিন্তু আমি ই তরে সাজামু। এক্কেরে সুচিত্রা সেন এর মতো কইরা। কি সাজাইতে দিবি তো। ”
নুপুর বললো,” হ্যাঁ আর আমি চুল বান্ধা দিমু আর শাড়ি পড়ায়া দিমু।”
রিতা কোমড় ঢুলিয়ে নেচে উঠে বললো,” আর আমি নাচমু। হিহিহি “।
সবাই খুশিতে হেসে উঠলো। কিন্তু হাসি নেই শুধু কাকন এর মুখে।
———————————-
সিরাজী মঞ্জিল~
সবাই নিশ্চুপ হয়ে আছে।
জামাল বলল,” আব্বাজান আপনে ওই এতিম মাইয়ার লগে আমাগো বাড়ির পোলার বিয়া দিবেন?”
দুলাল বললেন,” আমি যখন সিদ্ধান্ত নিছি তখন এইডাই শেষ কথা।সিরাজপুরে আমার সম্মান আছে। কয়জনের মুখ ঠেকামু আমি।লোকে মন্দ কথা বলাবলি শুরু করছিল।তাই কোনো উপায় আছিল না।গিন্নী, বিলালের বড় বউ আশা করি তোমাগো কোনো সমস্যা নাই।”
রুহুলের মা সুভা রুহুলের দিকে তাকালো। তারপর বললো,”আমার খোকা রাজি থাকলে আমার কোনো আপত্তি নেই।”
দুলাল সিরাজী বললো, ” দেখো বড়বউ আমি কথা দিয়া ফালাইছি। তাই রাজি হওয়া ছাড়া উপায় নাই। রুহুল কইলেও বিয়া হইবো না কইলেও হইবো।তয় আমি জানি রুহুল আপত্তি করবো না। কারন মাইয়াডা মন্দ না। দেখতে শুনতে সেরা খালি এতিম। ”
দুলালের স্ত্রী বললো,”আমি মাইয়া ডারে দেখতে যাইতে চাই। আপনি তাগো খবর দেন। কাইল আমরা সব মহিলারা যাইয়া দেইখা আসুম। রুহুল তুই ও যাবি আমাগো লগে।”
দুলাল উত্তরে খুশি হয়ে বললো,” বেশ,আমি খবর দিমু। যাও রাইতের খাওন বাড়ো,,সবাই খায়া শক্ত হও মেলা কাম আছে বিয়ার।”
সবার মুখে হাসি ফুটলো।
হেলাল খুশি হয়ে বললো,” যাইক আমার দাদা ভাই এর তাইলে বিয়া হইলো। এর পর বিয়া করুম আমি।”
দাদিমা বলে উঠলো,”চপ ব্যলজ্জা,বড়গো সামনে সরম লজ্জা রাখিস।”
মহীবুল বললো,” দাদিমা, হেলাল তো ঠিক ই কইছে।আমাগোও বিয়ার বয়স হইছে।”
দাদি এবার হেসে দিলো তারপর বললো,”হ এহন তুই ও শুরু করলি।তগো দুইজনের দাড়ি তে পাক না ধরলে বিয়া দিমু না হইছে।”
হেলাল আর মহীবুল একসাথে বলতে শুরু করলো মানি না মানমু না।
দাদি হাহাহা করে হেসে বললেন, “থাম তরা।শুনেন বিলালের আব্বা,,কাল ই বাড়িতে মেয়ে -জামাই গো আমন্ত্রণ শুরু কইরা দেন। লেখিকা স্রোতস্বীনি।সকল আত্মীয় স্বজন দের আমন্ত্রণ করা লাগবো। আমার মানিকের বিয়া। আমার চান্দের বিয়া বইলা কথা।”
সামিয়া বলে উঠলো, “ও দাদিমা আপা আর দুলাভাই দের কাল ই সিরাজপুরে আসার ব্যবস্থা কইরেন। ইশ কত্তদিন পর আনন্দ করমু। আমার নাচতে ইচ্ছা করতাছে।”
হাহাহা আওয়াজ করে সবাই হেসে উঠলো। বহুদিন পর সিরাজী মঞ্জিলে হাসির ধ্বনি বাজছে।
দাদিমার কাছে বসে মাথা নিচু করে আছে রুহুল। সে এখন অন্য এক কল্পনা জগতে। সে নিজেও কল্পনা করে নি কাকন এর মত পবিত্র ফুল তার জীবন সঙ্গী হবে।তার এখন আক্কাস কে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে করছে। কালচে রঙা বাদামী ঠোঁট প্রসারিত হলো তার।
রুহুলের চোখ মুখে হাসি অন্যদিকে কাকনের বেদনা।
চলবে….
#দেবী
#Srotoswini_স্রোতস্বীনি
বিদ্রঃ দয়া করে কেউ কপি করবেন না।ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করে পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ।
®️ Srotoswini-স্রোতস্বীনি✍️