#তোমাতেই_অস্তিত্ব_আমার
লেখনীতে:মিথিলা মাশরেকা
২২.
ভয়ে জমা বরফের মতো থেমে আছি।কিছুক্ষন আগে করা বোকামির কথা মনে পরলেই গা শিউরে উঠছে আমার।মুখে হাত দিয়ে বড়বড় করে তাকিয়ে আছি আরমানের দিকে।কি করে এটা করলাম আমি?কি করে?ইশতিয়াক আরমানের মতো একজনের কলারে হাত লাগিয়েছি আমি!চড়া গলায় চোখে চোখ রেখে কথা বলেছি ওনার সাথে।মানুষটা এখন গম্ভীরভাবে আমার দিকে এগোতে শুরু করেছে।
দুনিয়াদারী ভুলে গেছি আমি।একটার পর একটা শুকনো ঢোক গিলে পিছোতে থাকলাম।এ কয়দিনে উনি যেভাবে নির্বিঘ্নে আমার কাছে এসেছেন,আজকে এভাবে জনমানবের আওয়াজহীন শুনশান জায়গায় তুলে আনলেন,সবগুলো মিলিয়ে ভয়টা আরো বেড়ে গেছে আমার।জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি আর উল্টোদিকে পিছোচ্ছি।উনি এগোতে এগোতেই দাতে দাত চেপে বললেন,
-ছবিটা কে পোস্ট করেছিলো?
……
উনি চেচিয়ে বললেন,
-বলো?
ধমকে আমার অন্তরাত্মা কেপে উঠলো।বললাম,
-স্ স্ সুহা সুহানা আ্ আপু।
-পোস্টের ডেট এন্ড টাইম দেখেছো?
কি বলবো আমি?ওটা তো দেখিই নি।চোখের পানির জন্য লেখাটা ব্লার মনে হচ্ছিলো।ঘাড় নারিয়ে না বুঝালাম।আরমান তেড়ে এসে আমার দুহাতে কনুইর উপরে শক্ত করে ধরলেন।ব্যথা পেয়েছি আমি।চোখ দিয়ে টুপ করে পানি বেরিয়ে এলো।উনি রাগ নিয়েই বললেন,
-ওইটা চারমাস আগের পোস্টের স্ক্রিনশট ছিলো।পোস্টটা নেই,সেদিনই ডিলিট করতে বাধ্য হয়েছিলো সুহানা।তোমাকে জেলাস করাতে যা করলাম,তুমি ভুল বুঝে জেলাস হয়ে আমাকেও সাথে জ্বালাতে চললে?আর কতো?কতোভাবে কষ্ট দিবে আমাকে তুমি?কতোভাবে?না কাছে আসো,না কাছে আসতে দাও।না নিজে বলো,না আমাকে বলতে দাও।না বুঝতে শেখো,না বুঝাতে দাও।আবার যেটা বোঝো,সেটাকে স্বীকার না করতে বাহানা বানাও।কি চাও কি তুমি?কি চাও?ওই সিয়ামের সাথে সবকিছু ধ্বংস করে দেই আমি?নাকি নিজেকে শেষ…
-নাহ!
-কিসের না?হ্যাঁ?কিসের না?বলো,আজ বলতেই হবে তোমাকে।কে আমি?কে তুমি?বলো মিথি?কেনো আসবে সিয়াম,সুহানা আমাদের মাঝে?বলো?
কথাটা বলে আমার হাত ছেড়ে দিলেন উনি।ওনার সব কথা মাথার উপর দিয়ে গেছে আমার।কথাগুলো গোছাতে গোছাতে নিচদিক তাকিয়ে পিছনে যেতে লাগলাম আবারো।একটু পরেই কিছুর সাথে আমার পিঠ ঠেকে যায়।পিছনে ঘুরে দেখতে যাবো তখনই আরমান তার পা দিয়ে সজোরে মাটিতে লাথি মারলেন।
মাটি ছিলো না ওটা,ধুলো ছিলো।উড়ে এসে জামার নিচে লেগেছে আমার।নিচদিক তাকিয়ে নোংরা হয়ে যাওয়া জামাটার দিকে একপলক তাকালাম।তারপর সামনে তাকিয়ে দেখি আরমান দু পকেটে হাত গুজে আরামে দাড়িয়ে আছেন।আমাকে তাকাতে দেখে বললেন,
-কিছু মনে পরে?
আতকে উঠলাম আমি।চারপাশটা এতোক্ষনে চোখ বুলালাম।এটা কোনো নদীপাড়ের কাচা রাস্তা।পাশেরই ঝকঝকে পানির নদী,সবুজ পাড়ের দিগন্ত চোখে পরে।জায়গায়টা চেনা চেনা লাগছে আমার।মনে হলো এর আগেও এসেছি আমি।পিছনে তাকিয়ে পিঠ যেটার সাথে লেগে আছে ওটা দেখতেই আরো চমকে উঠলাম আমি।সিমেন্টের ইয়া বড় রিং,ছোটখাটো কালভার্ট হিসেবে যেগুলো রাস্তায় বসানো হয়।ওটা একটু ভালো করে দেখতেই ঝাকুনি দিয়ে উঠলো আমার শরীর।একদম আমার চোখ বরাবর লাল ছোপের দাগ।রক্তের দাগ ওটা।
-এ্ এটা…
-হ্যাঁ বলো?ওটা?
আমি পিছন ফিরে দেখলাম উনি রাস্তার ধুলো পা দিয়ে আবারো সেভাবেই ওড়াচ্ছেন।ধুসর মাটি উড়ছে,নদীর পানিতে গিয়ে পরছে।রোদের আলোতে আরমানের ফর্সা মুখটা লাল হয়ে গেছে।মাথা চিনচিন করে উঠলো আমার।এই ঘটনাগুলো চেনা,এই সিচুয়েশনে আগেও পরেছি আমি।চোখ বন্ধ করতেই প্রথমে ভেসে উঠলো ওই রক্তের দাগ,তারপর মনে হলো কেউ আরমানকে ধাক্কা দিয়েছে।উনার মাথা গিয়ে সোজা লেগেছে ওই সিমেন্টের রিংটাতে।ধরফরিয়ে চোখ খুললাম আমি।আরমান ওভাবেই আছেন।কাপা কাপা গলায় বললাম,
-আ্ আরমান,এটা,এটা আপনার রক্ত।
আরমানের পা থেমে গেলো।চকচকে চোখে একপলক তাকালেন আমার দিকে।আগ্রহ আর খুশি নিয়ে দুপা এগিয়ে বললেন,
-তোমার মনে পরেছে?এটা আমার রক্ত তোমার তা মনে পরেছে?
আমি একটু শান্ত হয়ে আবারো মনে করার চেষ্টা করলাম।কেনো এমনটা মনে হলো আমার?কেনো আরমানকে দেখলাম আমি?রাস্তার ধুলোর দিকে তাকিয়ে আছি।আরো একবার ওই রক্তের দাগের দিকে তাকিয়েই চোখ খিচে বন্ধ করে নিলাম।
*
চারপাঁচটা ছেলে ঘিরে দাড়িয়ে আছে আমাকে।ওদের চাওনিতে শুধু হিংস্রতা।লোলুপ দৃষ্টিতে এগোচ্ছে আমার দিকে ওরা।মুখে উদ্দেশ্য সাধনের কুৎসিত হাসি।চেচাচ্ছি আমি,কেউই শুনতে পাচ্ছে না আমার ডাক।পেছোনোর মতো এতুটুকো জায়গা নেই,আটকে আছি এই কালভার্টের সাথেই।আত্মসম্মান বাচাতে সাহস জুগিয়ে শক্ত হয়ে দাড়ালাম।ওদের একজন আমার গায়ে হাত দিতে আসলেই আমি পা দিয়ে মাটি ছিটিয়ে দেই।ধুলো চোখে গিয়ে কিছুটা দিশেহারা হয়ে পরে ওরা।ধাক্কিয়ে বেরিয়ে আসি ওদের হাতের মাঝখান থেকে।
প্রানপনে দৌড়াতে থাকি।ওরাও তক্ষনাৎ নিজেদের সামলে পিছু নেয় আমার।ধাওয়া করতে থাকে। ওরা কতোটুকো পিছনে আমার তা খেয়াল রেখে দৌড়াচ্ছিলাম আমি।কিছুটা দৌড়াতেই কারো বুকের সাথে ধাক্কা লেগে দু পা পিছিয়ে যাই আমি।প্রথমে ভয় পেলেও ব্যাক্তিটির মুখের দিকে তাকিয়ে তাকে গিয়ে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম।বুকে মুখ গুছে হু হু করে কাদছি।লোকটার সাদা টিশার্ট ভিজিয়ে দিয়েছি কেদে কেদে।উনি একহাতে আমাকে জরিয়ে অন্যহাতে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।আমার চুলে তার ঠোটের স্পর্শও ছিলো।উনি আমার হাত ধরে পাশে দাড় করালেন।চিৎকার করে ছেলেগুলোর দিকে তাকিয়ে বললেন,
-তোদের সাহস কি করে হয় ওর দিকে হাত বাড়ানোর?
ওদের মধ্যে সামনের একজন বললো,
-হিরোগিরি দেখাইতে আইসো না মামা!চুপচাপ চলে যাও।বস শুধু মেয়েটার কথা বলেছে,এজন্য মেইন মাল আনি নাই।একটা মেয়ে তুলতে গোলাগুলি ভালো দেখায় না।অবশ্য যদি তুমি বাড়াবাড়ি করো,তোমারে টপকাইতে কিন্তু একদমই হাত কাপবে না আমাদের।
লোকটা বাকা হেসে বললো,
-হাত কাপা?কোন হাত?তোদের ওই হাতই থাকবে না।
পিছনের একজন একটু ধীরে কাপতে কাপতে এসে বললো,
-বড় ভাই,এইটা তো ওই লোকটাই যার কথা বস বলছিলো!
ওই ছেলেটা আবারো বললো,
-তাই নাকি?তো কি হইছে?রন্টি ভাই এরে ভয় পায় না।মেয়েটারে তোল।
ছেলেটা দৌড়ে পালালো।বাকি চারজন একপলক সেদিক দেখে এগোচ্ছে আমাদের দিকে।আমি ভয়ে ওনার পিছনে গিয়ে দাড়ালাম।ছেলেগুলোর মুখ দেখতেও ভয় লাগছে আমার।লোকটা আমার হাত ছেড়ে সামনে এগোতে যাবে আমি আবারো তার হাত ধরে আটকে দিলাম।উনি শুধু একটু ঘাড় ঘুরিয়ে বললেন,
-ডোন্ট ওয়ারি।কিচ্ছু হবে না।আই আম হেয়ার।রিল্যাক্স।
কথাটা বলে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে গলার টাইটা টেনে ঢিল করে দিলেন।টিশার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে এগিয়ে গেলেন উনি।আমি ওখানেই দাড়িয়ে।লোকটা হাতের মুঠো করে এগিয়ে গেলো ওই ছেলেগুলোর দিকে।যে ছেলেটা কথাগুলো বলেছিলো,সজোড়ে ঘুষি লাগিয়ে দিলেন।
ঘলঘল করে রক্ত বেরোতে লাগলো ওর নাক দিয়ে,ঠোটটাও কেটে গেছে।নাক ধরে মাটিতে বসে পরেছে ও।বাকি দুটো ছেলে ‘ ধর ব্যাটারে ‘ বলে ঝাপিয়ে পরলো ওনার উপর।আমি মুখে হাত দিয়ে ফুপিয়ে কেদে উঠলাম।আমাকে বাচাতে এসে উনি তো নিজেরই বিপদ ডেকে আনলেন!
লোকটা গায়ের জোড়ে একঝটকায় ছেলে দুটোকে ছাড়িয়ে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে গুড়াতে থাকলেন।যেনো কতো জন্মের রাগ মিটাচ্ছেন উনি।একপর্যায়ে পাশে থাকা শুকনা মোটা ডাল দিয়ে বারি মারতে শুরু করলেন।ওটাও ভেঙে গেলো চারটে বারিতেই।রাগটা বেরে গেছে ওনার।আগ্নেয়গিরির মতো উৎক্ষিপ্ত হচ্ছে সবটা ওই ছেলেগুলোর ওপর।গালে চড়িয়ে,ঘুষিয়ে,লাথিতে খুব বাজেভাবে মারলেন উনি ওদের।ওরা তিনজনই মাটিতে পরে কাতরাচ্ছে আর ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুনয় করছে।লোকটা থেমে এবার ক্লান্ত চোখে আমার দিকে তাকালেন।আমি ওনার পাশে তাকিয়ে দেখি ওই ছেলেগুলোর মধ্যেরই একটা ছেলে দৌড়ে আসছে ওনার দিকে।আমি চিৎকার দিয়ে ওনাকে সাবধান করার আগেই ছেলেটা ওনাকে সর্বোস্ব শক্তি দিয়ে ধাক্কা মেরে দেয়।লোকটা টাল সামলাতে না পেরে পাশে থাকা কালভার্টের রিংটার উপর গিয়ে পরলেন।বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো আমার।দু পা এগোবো,উনি নিজেই কপালটা ধরে মাথা তুলে তাকালেন আমার দিকে।
আরমান!ওটা আরমান ছিলো।মারপিট করে চেহারাটা লাল হয়ে উঠেছিলো তার।ঘামে ভিজে গিয়েছিলো সাদা শার্ট,সাথে ছিলো ছেলেগুলোকে মারার সময় ওদের গা থেকে ছিটে আসা রক্তের ফোটা।কাচা মাটির রাস্তার ধুলোতে সাদা কেডস্ আর কালো জিন্সটা একদম নোংরা হয়ে গিয়েছিলো ওনার।কপালের চুলগুলো শান্তভাবে কপালেই পরে ছিলো,আর আঙুলের ফাক দিয়ে ফিনকি দিয়ে রক্ত পরছিলো ওনার কপাল থেকে।।আমাকে বাচাতে গিয়ে ওনার কপালে চোট লেগেছিলো।সে রক্তের দাগ বসে গিয়েছিলো এই রিংটাতে!আমি বিস্ফোরিত চোখে আরমানের দিকে তাকালাম।উনি এখনো আশাবাদী চেহারায় আগ্রহভরে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।উৎসাহিত গলায় বললেন,
-মনে পরে গেছে?সবটা মনে করতে পারছো তুমি?
-স্ সেদিন আ্ আপনি বাচিয়েছিলেন আমাকে?
আরমান হাত বারিয়ে আরেকটু এগিয়ে আসলেন আমার দিকে।পিছিয়ে গেলাম আমি।ভ্রুকুচকে তাকালেন উনি।একটু থেমে কিছু ভাবলেন।ওভাবে দাড়িয়ে বললেন,
-কেনো এসেছিলে সেদিন এখানে?
-সেটা মনে নেই।মনে করতে পারছি না।
আরমান একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।একবারের জন্য ও ভেবেছিলো মিথির হয়তো সবটাই মনে পরে গেছে।কিন্তু ওকে ভুল প্রমান করে এমদাদ মামুর অভিজ্ঞতাকেই সঠিক দেখালো মিথি।
শুধুমাত্র ঘটনার সাথে সামন্জস্যপুর্ন বিষয়গুলো মনে করতে পারছে ও।বাকিগুলো নয়।সেদিন…
*
ভার্সিটিতে এক ক্লাস পর সয়েলটেস্ট করে এটম রিকগনেশনের প্র্যাক্টিকাল ছিলো মিথির।ল্যাবে পর্যাপ্ত নমুনা থাকা সত্ত্বেও স্টুডেন্টসরা জোরাজুরি করে বাইরে গিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য।মুলত ওদের প্লান ছিলো ভার্সিটি থেকে আউটিং এ যাওয়া।একদিনের ওরকম আবদারে টিচার রাজি হয়ে যান আর বেরিয়ে পরেন সবাইকে নিয়ে।মিথি আর আরিশাও ছিলো।ভার্সিটির বাইরে মিথির উপর সবসময় নজর রাখতো আরমান।কিন্তু ক্লাস টাইমে বাবার অফিসে থাকতো ও।এ সুযোগটাই কাজে লাগাতে চেয়েছিলো ওর শত্রুরা।নদীতীরের পাশের এরিয়াটাতেই ছিলো মিথিরা।মিথি বরাবরই প্রকৃতিপ্রেমী।আর আরিশা মোবাইলপ্রেমী।তাই হাটতে হাটতে আরিশার থেকে কখন বেশ অনেকটাই সরে এসেছে তা বুঝতেই পারে নি মিথি।ওই ছেলেগুলোর একজন স্টুডেন্টের মধ্যে মিশে গিয়ে সবাইকে বলে পাশের এরিয়াটাতে নাকি এটমিক সেন্সেশন ভালো পাওয়া যায়।চলে যায় সব।আরিশাও মোবাইলে চোখ রেখে এগোতে থাকে।
মিথির হঠাৎই মনে হলো ওর পেছনে বেশ কয়েকজন এসে দাড়িয়েছে।ছেলেগুলো তাদের উদ্দেশ্য পালনে এগোয় ওর দিকে।কিছুক্ষনের মধ্যে বুঝে উঠে দৌড় লাগায় মিথি।চেচানো শুরু করে।তবে দিকটা ছিলো উল্টোদিক।আরিশার হুশ আসতেই মিথিকে পাশে না পেয়ে গলা শুকিয়ে যায় ওর।স্যারসহ ক্লাসের সবাইকে ডেকে জানায় মিথিকে পাওয়া যাচ্ছে না।আকাশচুম্বী সাহস জুগিয়ে কাপাকাপা হাতে মোবাইল করে সবটা জানায় আরমানকে।পায়ের নিচের মাটি সরে গিয়েছিলো ওর কথাটা শুনে।ড্রাইভ করে ছুটে আসে ওখানে।সৌভাগ্যক্রমে খারাপ কিছু ঘটার আগেই বাচিয়ে নেয় মিথিকে।
একজনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পাওয়ার পর ওকে ধরে আবারো মারতে থাকে আরমান।খুব বাজেভাবে মেরেছিলো ওদের।তারপর আদিবকে ডেকে ওদের পাঠায় ওর ফার্মহাউজে।আদিবকে শুধু বলেছিলো ঘটনাটা।আদিব পরে ওদের বিশ্রীভাবে মেরে কথা বের করিয়ে নেয়।মিথি অনেকটাই ভয় পেয়ে গেছিলো সেদিন,আরমানের ওই রুপ দেখে।আরিশাকে জরিয়ে কেদেছিলো ফুপিয়ে ফুপিয়ে।
*
আজকে মিথিকে এভাবে আনতো না আরমান,এমনটা প্লান ছিলো না ওর।কিন্তু সিয়ামের সাথে ওভাবে দেখে মাথায় রক্ত চড়ে যায় আরমানের।রাগের বসে তাই মালিহাকে ধমকে মিথিকে গেইট অবদি নিয়ে আসায়।
-আ্ আরমান!
-হুম।
-শুকরিয়া।
আরমান তাচ্ছিল্যে হাসলেন।বললেন,
-কেনো?
-সেদিন বাচিয়েছিলেন আমাকে,আজ মেমোরি লসের জন্য হারানো কিছু মুহুর্ত মনে করিয়ে দিলেন।
আরমান একটু এগোলেন আমার দিকে।চেহারাটায় আবারো রাগ।না পিছিয়ে চোখ বড়বড় করে তাকালাম ওনার দিকে।উনি চোখ ছোটছোট করে বললেন,
-কলার ধরেছিলে আমার!মনে আছে?
আবারো গলা শুকিয়ে গেলো আমার।শুকনা ঢোক গিললাম একটা।আমার
তো মনেই আছে।আপনি কেনো মনে রাখছেন?আবার মনে করিয়েও দিলেন?ভয়টা আবার শুরু।চোরের মতো এদিক ওদিক তাকিয়ে যেইনা দৌড়াতে যাবো উনি খপ করে আমার ডানহাত ধরে হেচকা টানে একদম কাছে টেনে নিলেন আমাকে।হাতটা উপরে তুলে ধরে বাকা হেসে বললেন,
-এই হাতটা রাইট?
#চলবে…
®