তোমাতেই অস্তিত্ব আমার পর্ব-৩

0
4123

#তোমাতেই_অস্তিত্ব_আমার
লেখনীতে:মিথিলা মাশরেকা

৩.

কোনোদিন আম্মু আব্বুর রুমে এভাবে আড়ি পাততে হবে,এরকম কোনো সিচুয়েশন আমি ভাবতেও পারিনা। নির্লজ্জের মতো আজ সে কাজটাই করেছি আমি। কিন্তু উদ্দেশ্য তো খারাপ ছিলো না,আমিতো শুধু নতুন মানুষটাকে দেখতেই এগিয়ে গিয়েছিলাম।তাহলে এর ফল খারাপ হলো কেনো? আমাকে এতোবড় কথা শুনতে হলো কেনো? কেনো নিজের আব্বু আম্মুকে আজ অচেনা মনে হচ্ছে? রুম থেকে মাথা ধরে অতিকষ্টে বেরিয়ে যেইনা তাদের রুমে ঢুকতে যাবো কানে আসলো,

-দেখ মাহবুব,ওকে এভাবে আটকে রাখাটা ঠিক হচ্ছে না। ওর হেল্থের জন্য তো একদমই না।

-কি করবো বল? তুই তো সবটাই জানিস এমদাদ! কিভাবে আমি ওকে…

বুঝলাম উনি এমদাদ আঙ্কেল। আমাদের ফ্যামিলি ডক্টর। কিন্তু উনি এখানে কেনো?উনাকে কেনো ডেকেছেন আব্বু? এ একমাসে তো কেউই আসে নি আমাদের বাসায়।তাহলে??

-হুম জানি,কিন্তু তা বলে সবাই মিলে তো আর মেয়েটাকে শেষ করে দিতে পারিনা? এভাবে বাসায় আটকে রেখে ওর জীবনপার করাতে পারি না তাইনা?

-হ্যাঁ,তবুও। ওর সাথে আমি কোনো অন্যায় হতে দিবো না আর ওই…

-শোন মাহবুব,তুই তো পুলিশ ফোর্স এফোর্ট করেছিস। তবুও এতোটা ভাবছিস কেনো?

-তুই জানিস কেনো।

এমদাদ আঙ্কেল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,

-দেখ,যা থেকে যাই হোক না কেনো,এটুকু বয়সে ওর জীবনে যা ঘটেছে তার দায় কেউ না নিলেই ওর সুস্থ্য না হওয়ার দায় কিন্তু তুই এড়াতে পারবি না। ওর মেডিসিনগুলো এভাবে না দিলে ও অসুস্থ হবেনা ঠিকই কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ্যও তো হবেনা।

কথাটা বুঝে উঠতে পারছি না। কিন্তু সিরিয়াস কোনো কিছু এরা আমার কাছ থেকে লুকোচ্ছে তা আমি জানি। পুলিশ ফোর্স এফোর্ট করেছে মানে? এতোটা রিস্কের কি আছে আমার সাধাসিধে জীবনে? আমার অসুস্থতা? কি হয়েছে আমার?আব্বু মাথা নিচু করে বললেন,

-থাকুক আরো কিছুদিন অসুস্থ্য,যতদিন না আমি ওকে একটা পারমানেন্টলি সেইফ জোনে পাঠাতে পারছি।

-মানে?

-এখন বলছি না তোকে,ইনফ্যাক্ট কাউকে বলিনি। সময় হোক জানাবো।

আমি দু পা পিছিয়ে দেয়াল ধরে দাড়ালাম।গাল বেয়ে পানি ঝড়ছে। মাথাটা আবারো ব্যথা করছে। কিন্তু সে মাথায় শুধু একটাই কথা ঘুরপাক খাচ্ছে।এক্সাক্টলি কতোবড় ঘটনা ঘটেছে আমার লাইফে?আব্বু আমাকে বেরোতে দিচ্ছেন না,উল্টো নিজের কাছ থেকে অন্য কোথাও পাঠিয়ে আমার সেইফটি এনশিওর করতে চাচ্ছেন।আবার এটাও বলছেন যাতে আমি অসুস্থ্য থাকি।এজন্য মেডিসিনও ঠিকমতো দিচ্ছেন না আমাকে।আমাকে তো বলা হতো আমার মেডিসিন সেন্সলেস থাকা অবস্থাতেই শেষ,আর কোনো মেডিসিন নাকি ডক্টরস্ সাজেস্ট করেনি তাহলে? ধুকতে ধুকতে অতিকষ্টে আবারো রুমে এসে বেডে বসলাম।আর পারছি না আমি!কিছুই ভালোলাগছে না। আপনজনেরাও অচেনাদের মতো বিহেভ করছে।চিৎকার করে কাদতে ইচ্ছা করছে। পরিবারের এমন ব্যবহার পারছি না আমি।জাস্ট পারছি না নিতে! কোথায় তুমি আপি?তোমার কাধটা যে দরকার আমার,মাথা রেখে কাদার জন্য।তোমার হাতদুটো যে দরকার আমার,আমার চোখের পানি বারবার মুছিয়ে দিয়ে আগলে জড়িয়ে ধরার জন্য।তোমার আদরের ডাকগুলো যে দরকার আমার,কষ্টগুলোকে ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য।খুব কষ্ট হচ্ছে আমার আপি!খুব কষ্ট হচ্ছে!

অন্ধকার ঘরের মাঝে আলোর সরু ঝলক চোখে পরতেই চোখ পিটপিট করে তাকালো রিয়া।কিছুক্ষন পর চারপাশ তাকিয়ে হুশে ফিরলো সে।চেয়ারে মুখ হাত পা বাধা অবস্থায় আছে সে তা বুঝতে সময় লাগলো না।হাত নাড়িয়ে ঝাকিয়ে গায়ের জোরে হাতের বাধন খোলার চেষ্টা করলো সে। কিন্তু কোনো লাভ হলো না।মনে পড়লো কাল রাতের কথা।বাবার এক্সিডেন্টের খবর শুনে হসপিটালে ছুটে যাওয়ার পর পরই একজন নার্স এগিয়ে এসে তাকে তার বাবার কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলো।বিশ্বাস করে তার পিছুপিছু একটা রুমে ঢুকতেই দরজা বন্ধ হয়ে যায় আর সাথে লাইটস্ও চলে যায়।তৎক্ষনাৎ কেউ তার মুখে পিছন থেকে রুমাল চেপে ধরে।তারপর নিজেকে এখানে দেখতে পায় সে।বুঝতে বাকি রইলো না যে কেউ ইচ্ছে করেই তাকে এভাবে ধরে এনেছে।

রাগে এতটাই জোরে হাতে ঝাকুনি দিয়েছে রিয়া যে চেয়ারসমেত মেঝেতে পরে গেছে ও।আচমকা এমন শব্দে ঘুম ভেঙে যায় আদিবের।আগের রাতে ওসব ঝামেলার পর আরমানের কাছে সবটা শুনতে আর পরের প্লান কষতে গিয়ে ঘুমোতে দেরি হয়েছিলো একটু।আরমান অন্য রুমে ঘুমিয়েছে।তাই রিয়ার রুমের শব্দ শুনে আদিব ছুটে আসলে রুমে।ওকে দেখে চিনতে কষ্ট হলোনা রিয়ার।ওকে ওভাবে পরে থাকতে দেখে তোলার জন্য আদিব যেইনা হাত বাড়িয়েছে,

-খবরদার! একদম ছোবেন না আমাকে!কেনো এভাবে ধরে এনেছেন আমাকে?আমার আব্বু কই?এতোদিন পর আবারো এসবের মানে কি?কি চান?

-ওকে রিল্যাক্স,আগে আপনাকে তুলতে তো দিন।

-না,একদমই না।তুলতে হবে না আমাকে।বলুন আমাকে কেনো এনেছেন এখানে?

-দেখুন মিস,আপনার প্রশ্নের জবাব আমার কাছেও নেই।আমাকে যেভাবে বলা‌ হয়েছে,আমি জাস্ট তেমনটাই করেছি।আপনাকে উঠাতে দিন প্লিজ।

-আবারো বলছি ধরবেন না আমাকে। কই সেই লোক?কোথায় সেই‌ গুন্ডাটা?আমি জানি কে আমাকে ধরে এনেছে আর আব্বুকে এভাবে লুকিয়ে রেখেছে।কোথায় ও?

আদিবের এবার রাগ চরম পর্যায়ে।একেতো জেদ করে মেয়েটা মাটিতেই‌ গড়াগড়ি খাচ্ছে,তার উপর আরমানকে নিয়ে যাচ্ছেতাই বলে চলেছে।একটা জোরে শ্বাস নিয়ে জোর করেই ও রিয়াকে ধরে বসিয়ে দিলো।

-হাউ ডেয়ার ইউ?আপনি আমাকে ধরলেন কেনো?বারন করেছিলাম না আপনাকে আমি?আপনি কি করে…

-রিয়াপি।

আরমানের গলা শুনে রিয়া চোখ বড়বড় করে দরজার দিকে তাকালো।দুহাতে ওর আব্বু কবির রহমানকে জরিয়ে দাড়িয়ে আছে আরমান।চোখমুখ বাধা তার।ও এনে তাকে চেয়ারে বেধে বসিয়ে দিলো,চোখটাও খুলে দিলো।রিয়াকে দেখে উনার কষ্ট বেড়ে গেছে,তবুও চোখের ইশারায় মানা করছেন কোনো কিছুর জন্য।ইতিমধ্যে রিয়ার পায়ের বাধন খুলে দিয়েছে আদিব,তবে হাতের বাধনটা এখনো আছে।

-আরমান!তুমি?

-হ্যাঁ আমি।

-আমি জানতাম।তুমিই আমাদেরকে…আব্বু,তোমার কিছু হয়নি তো?

-এখনো কিছু হয়নি আপি,কিন্তু তুমি যদি আমার সাথে কোওপারেট না করো তোমার আব্বুর অনেক কিছু হতে পারে।

কবির রহমান মুখ বাধা অবস্থাতেই অনেক চেষ্টা করছেন কিছু বলার।আরমান দুজনকে সামনা সামনি বসিয়ে কথাগুলো বললো।
আরমানের কথা শুনে রিয়া বেশ অনেকটাই ভয় পেয়ে গেছে তা ওর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।তবুও সাহস জুগিয়ে বললো,

-আরমান,আমি জানি তুমি নির্দোষ কাউকে কোনোভাবে কষ্ট দাওনা।আর আমার আব্বু কোনো দোষ করে নি।

-আপি,তোমার এটাও জানার কথা‌ মিথির জন্য আমি সব করতে পারি,সব।

রিয়া এবার চুপসে গেলো।আরমানকে চেনে ও।যে ছেলেটা মিথির জন্য নিজের আট বছরের লাইফস্টাইলকে বদলে ফেলেছিলো,সবটা পাল্টে দিয়েছিলো,তার পক্ষে সবই সম্ভব।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,

-কি করতে হবে আমাকে?

-শুধু কিছু প্রশ্নের উত্তর দেবে।

-যদি বলি জানি না।

-তুমি জানো বলেই আমি এনেছি তোমাকে।সবটা খবর নিয়েই তোমাকে এনেছি।সময়ের দাম তোমারো আছে আর আমারো।হোপ ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড।

-আমাকে কেনো এসবে ইনভল্ব করছো?

-কজ তুমি মিথির লাইফে ইনভল্বড্।প্রশ্ন আমি করবো আপি,উত্তর তুমি দিবা।ডোন্ট ট্রাই টু মেক আনাদার সেন্স।নাও স্টার্ট।চার মাস আগে মিথির এক্সিডেন্টের পর কি কি হয়েছে,সবটা জানতে চাই আমি।ওর লাইফের একটা একটা মোমেন্টের হিসাব চাই আমার।

কথাটা বলে আদিবকে ইশারা করতেই আদিব রিয়ার বাধন খুলে জোর করে ওকে আলাদা রুমে নিয়ে এসে ও নিজে বেরিয়ে যায়।
পিছনে আরমানও আসে।ওর কথামতো চোখ বন্ধ করে চার মাসের মিথির প্রত্যেক সেকেন্ডের হিসাব আরমানকে কষে দিলো রিয়া।উপায় নেই তার।যদিও একটাবারের জন্য জানপাখিটার সাথে এ চারমাসে দেখা করেনি ও,তবুও ও জানতো কি কি হচ্ছে ওর সাথে।মাহবুব আঙ্কেল সবটা ওকে জানাতো।উনার মতে মিথিকে সবশেষে একমাত্র ওই সামলাতে পারবে পুরোটা বুঝিয়ে।রিয়ার কথা শুনে বড় করে হাসি দিলো আরমান।নিজের দুহাতে তালু ঘষে বললো,

-থ্যাঙ্কস্ দিয়ে তোমাকে ছোট করবো না রিয়াপি।এই বিহ্যাভের জন্য এখন সরিও বলবো না।তবে কথা দিচ্ছি,খুব তাড়াতাড়ি তুমি সবার সামনেই বলবে মিথির জন্য আরমানের থেকে বেটার কেউ‌ হবে না।আই প্রমিস ইউ দ্যাট।

এরপর আদিবকে রুমে ডেকে ওর দিকে তাকিয়ে‌ বললো,

-উনাদের খুব সাবধানে বাসায় পৌছে দিয়ে আয় আদিব।তাড়াতাড়ি আসিস।একসাথে ব্রেকফাস্ট করবো।সরি রিয়াপি,খাওয়ার জন্য আজ আর জোর করলাম না,যেদিন মিথি আমার ঘরে থাকবে,তোমাকে না খেয়ে যেতে দিবো না বলে দিলাম কিন্তু।

আদিব রিয়ার হাতের বাধন খুলে দিলো।রিয়া একনজর ঘৃনার দৃষ্টিতে আরমানের দিকে তাকিলো।আদিব বাধন খুলে দিতেই বাইরে বেরিয়ে বাবাকেও দেখতে পেলো সে।অপরাধীর মতো দাড়িয়ে আছে।বাবাকে ধরে গটগট করে বেরিয়ে আসলো।গাড়িতে উঠে কোনো কথা বলেনি দুজন।বেশ কিছুক্ষন পর আদিব ড্রাইভ করতে করতে বললো,

-দেখুন,আপনারা আরমানকে যেমন ভাবছেন ও কিন্তু মোটেও তেমন নয়।আসলে ও…

-আপনার ফ্রেন্ডের পরিচয় আমাদেরকে জানাতে আসবেন না।আর সে তো শুধু আপনাকে আমাদের ছেড়ে আসতে বলেছে,তার গুনকীর্তন গাইতে নয়।সো স্টে ইন ইউর প্রোফেশান।

আদিব চুপ হয়ে গেলো।সত্যিটা বলেই ওকে থামিয়ে দিয়েছে মেয়েটা।চুপচাপ গাড়ি চালিয়ে ওদের বাসায় নামিয়ে দিয়ে ফিরে আসলো সে।আরমান ব্রেকফাস্ট টেবিলে খাবার সামনে নিয়ে বসে ওর জন্যই অপেক্ষা করছিলো।ও আসতেই বললো,

-আয়,খেয়ে নেই।অনেক বেলা গড়িয়েছে।

-আমার খিদে নেই ,তুই খেয়ে নে।

আদিবের গলা শুনেই আরমান বুঝেছে ও কেদেছে।এটাও জানে ও যে আদিবের কান্নার একমাত্র কারন ওকে অতিরিক্ত ভালোবাসা।আরমান এগিয়ে গিয়ে ওর কাধে হাত রেখে বললো,

-কি হয়েছে রে আদিব?রিয়াপি বা ওর বাবা কিছু বলেছে তোকে?

আদিব ছলছল চোখে বললো,

-আমাকে বললে আমার বিন্দুমাত্র কিছু আসতো যেতো না।কিন্তু তোর মতো মানুষকে না চিনে ওরা এভাবে কেনো বলে বলতো?সহ্য হয় না আমার।তুইই কেনো এভাবে থাকিস?ওই মেয়েটাই বা কোন অধিকারে তোর সাথে এভাবে কথা বলে?সবটা জেনেও কেনো এভাবে তোকে অপমান করে?এভাবে তোর নাম…

-রিল্যাক্স আদিব।আমাকে ওভাবে বলাতে এতোটুকো খারাপ লাগেনি আমার।বরং ভালো লাগা এটাই যে উনি মিথিকে এতোটা ভালোবাসে বলেই আমাকে এভাবে বলে।

আদিব আরমানের কথা শুনে মাথা নিচদিক দিয়ে কিছুক্ষন চুপ করে রইলো।ওকে ভাবনায় ডুবতে দেখে আরমান বললো,

-আজ বোধহয় রিয়াপির আলাপে আদিবের পেটপুর্তি হয়েছে,ব্রেকফাস্ট করবে না সে।থাক তবে!আমারো আর খাওয়ার দরকার নাই।একবেলা না খেলে কিচ্ছু হবেনা আমার।

আদিব মাথা তুলে একগাল হেসে বললো,

-ওই মেয়ের কথায় আমার হলে বদহজমই হবে।উদরপুর্তি না।চল খাবো চল।

দুজনে হাসতে হাসতে গলাগলি ধরে টেবিলে বসে ব্রেকফাস্ট সেরে নিলো।খাওয়া শেষে আরমান আদিবকে বললো,

-আজ আব্বুর অফিসে যাবো।

আদিব অবাক হয়ে বললো,

-সত্যিই?এখনই?

-হ্যাঁ।

-আন্টিকে জানিয়েছিস?

-না সবটা না,জানিয়ে দেবো।

-বেশ,তারমানে তুই আবারো…

-হ্যাঁ,ঠিকই ধরেছিস।বললাম তো তোকে সবটাই রাতে।

-হ্যাঁ,তোর সামনের প্লান বুঝলাম।আগের দিনগুলোতেও তো তোর পাশে ছিলাম আমি।তবুও আমার কেনো জানি মনে হয়,কিছু লুকিয়েছিস তুই আমার কাছে।

আরমান আদিবের দিকে একনজর তাকিয়ে শার্টের হাতা গুছাতে গুছাতে বললো,

-তোকে লুকানোর কি আছে?

-সেটা তুইই জানিস।

এবার আরমান আদিবের দিকে দুপা এগিয়ে বললো,

-বেশ,বল কি জানতে চাস?

-যেটা আমাকে বলিস নি তুই।

-কোন বিষয়ে তোকে বলিনি তোর মনে হয়?

আদিব আরমানের ঘাড়ে হাত রেখে বললো,

-এরআগেও এই এদেরকে তুলে এনেছিলি তুই,আরো অনেককেই।তার আগেরদিন অবদি সবটা ঠিকই ছিলো।তাহলে এই অল্প সময়ের ব্যবধানে কি এমন হয়েছিলো যে তুই…

আরমান ওকে হাত দিয়ে থামিয়ে দেয়।ঘাড়ের হাত সরিয়ে বললো,

-তোর চিন্তার একমাত্র কারন আমার সেইফটি,তা আমি জানি।তাই আমিও নিজের কোনো ক্ষতি হতে দেবোনা,ডোন্ট ওয়ারি।পুরোনো কথা ছাড়,আমি তো মুভ অন করছি।

এরপর থেমে আবারো বললো,

-আব্বে ইয়ার!আজ অফিসে গিয়ে তোর কাধে যে কত ফাইল ঝুলাবো তার টেনশন করনা!

আদিব বিস্ময়,সুখ,তৃপ্তি,চাপা কষ্টের গুড়োগুড়ো পাহাড় নিয়ে তাকালো আরমানের দিকে।ওর কথায় স্পষ্ট,আজ থেকে আরমান নতুন করে আবারো লাইফসেট করতে চলেছে।আটবছর আগের ঘটনাকে পেছনে মুড়ে ছ মাস আগে যেভাবে আরমানের নতুন সত্ত্বাকে দেখেছিলো,সেটা আবারো ফিরে পাবে আদিব।আরমানের চোখের আড়ালে দুফোটা চোখের নোনাজলে ভিজে উঠলো আদিবের গাল।যেভাবে এখন আরমান সবটা ভেবেছে সেভাবেই যেনো হয়,এই একটাই চাওয়া ওর।ও যেনো ফিরে পায় সে সবটা,যা পেয়েও হারিয়েছিলো;সে সব মুহুর্ত,যা ওর জীবনকে নতুনভাবে রাঙিয়েছিলো।

#চলবে….

®

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here