তুমি অতঃপর তুমিই পর্ব :-৫

0
2195

তুমি অতঃপর তুমিই
২৩.
Writer Taniya Sheikh

খাবার শেষে আর রুমে ফিরে গেল না শান। প্লেট ধুয়ে,টেবিল পরিষ্কার করে বসল কাউচে। হঠাৎ কী ভেবে টিভি অন করে সাউন্ড বাড়িয়ে দিল। দু’চোখ স্থির ইমার রুমের বন্ধ দরজায়। টিভির সাউন্ডে রুমে টিকে থাকা দায় হলো ইমার। কানে হাত দিয়ে বসে বসে ভাবল কী করবে এই অবস্থায়! তখনই চোখে পড়ে সামনে টেবিলের উপর রাখা ওষুধের বক্স। বক্সের মধ্যে খুঁজে পেল একগুচ্ছ তুলো। কানের তুলো গুঁজে মনে মনে পৈশাচিক হাসি হেসে বলল,

” ব্যাটা নিজেকে বুদ্ধির জাহাজ ভাবে।হু, ইমা কী জিনিস বোঝেই নাই এখনো। হাই ভলিউম কেন এই মুহূর্তে ভুমিকম্প এলেও তো রুম থেকে বেরোব না। কিস দাও, ঝাল নিবারক কিস! কিস নিবারক কামড় না দেব তোরে।” ফের তুই কথাটা উচ্চারণ করে জিহ্বা কামড় দেয়। অনেক্ষণ শব্দ দূষণ করেও যখন কাজ হলো না, সাউন্ড কমিয়ে উঠে দাঁড়াল শান। টেবিল গিয়ে ইমার পছন্দ মতো খাবার প্লেটে সাজিয়ে ওর দরজার কাছে গিয়ে নক করে। কানে তুলো দিয়ে শুয়ে থাকা ইমা সেটা শুনতে পায়না। সাড়াশব্দ না পেয়ে শান জোরে জোরে আঘাত করে দরজায়। গলা চড়িয়ে ডাকে,

” ইমা,ইমা।” না, কোনো প্রত্যুত্তর নেই। মেজাজী শান ইমার এহেন আচরণে নিজেকে কী করে শান্ত রেখেছে কেবল সেই জানে! এছাড়া উপায়ও তো নেই। সুতরাং আবার চেষ্টায় লেগে গেল।

” ইমা শুনতে পাচ্ছ তুমি? আমি বিলিভ করতে পারছি না, বয়সের তুলনায় তোমার বুদ্ধি বাড়ছেনা বরং কমছে। একটা মানুষ এভাবে দরজা পেটাচ্ছে আর তুমি চুপচাপ বসে আছ? সিরিয়াসলি! আজব তুমি। টোটালি আজব।”

কানে তুলো গুঁজে অসহ্য লাগছিল ইমার। সামান্য একটু তুলতেই শানের গলার আওয়াজ শুনতে পেল। দরজা না খুলেই উচু গলায় বলল,

” শেষ হয়েছে আপনার?”

” মানে?”

” মানে এই যে বকরবকর করছেন,সেটা কী শেষ না আরও করবেন?”

রাগে কিছুক্ষণ কোনো কথায় মুখ দিয়ে বের করতে পারল না শান। ইমা বিষয়টা আন্দাজ করে মনে মনে শয়তানি হাসি হাসল। তারপর বলল,

” দরজা খুলতে পারব না। যা বলার বলে চলে যান।”

” সিরিয়াসলি তুমি দরজা খুলবে না?”

” নো মানে না।”

” ওকে গুড,ভেরি গুড, ভেরি ভেরি গুড। থাকো তুমি দরজা বন্ধ করে। হু কেয়ারস।” দরজায় সজোরে লাথি মেরে প্লেটসুদ্ধ খাবার টেবিলের উপর শব্দ করে রাখে। হনহন করে উঠে যায় দোতলায় শান। সিঁড়িতে শানের ধুপধাপ পড়া পায়ের আওয়াজ কানে আসতেই মুখটা আরও কঠিন হয়ে গেল ইমার।

ফজরের আযানের সুর ভেসে আসছে কানে। রাতের নিস্তব্ধতা, ভীতিকর পরিবেশ উতরে গেল সহসা। দিনের অভ্যর্থনায় মৃদু মন্দ দখিনা বাতাস বইছে, পাখিসব কলকাকলিতে মেতে উঠল। ইমা নামাজ শেষে জানালা খুলে দাঁড়ায়। প্রাণভরে শ্বাস নেয় পশ্চিমে চেয়ে। তখনই মনে পড়ে আসার আগে কোরআন শরীফ আনতে পারেনি। মনটা খারাপ হয়ে গেল। যা মুখস্থ ছিল তারই কয়েক আয়াত পাঠ করতে কারতে রুম ছেড়ে বেরিয়ে এলো। সদর দরজা খুলতেই দেখল মতিন গেটের পাশে বসে ঢুলছে। অনেক রাতের নির্ঘুমতায় মুখ শুকিয়ে গেছে লোকটার। একপলক তার দিকে তাকিয়ে এগিয়ে গেল দক্ষিণ দিকের বাগানের দিকে। ফাল্গুন শেষ তবুও এই সকালটায় চৈত্রের তীব্রতা নেই। স্নিগ্ধতায় ভরা সকাল। ইমা ঘুরে ঘুরে,ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছে শানের শখের বাগান। ছোট্ট একটা গাছে অনেক সুন্দর ফুল ধরেছে। ইমা মুগ্ধ হয়ে দেখতে লাগল।

” বনসাইঁ বলে একে। এটা হচ্ছে ব্লু এডেনিয়াম বনসাই ট্রি।”

ইমা ঘুরে তাকাতেই দেখে শান দুপকেটে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে। ঠোঁটের কোনে সেই সম্মোহনীয় হাসি। সম্মোহন হতে হতে নিজেকে সামলে মুখ ফিরিয়ে নেয় ইমা। শানের এগোনোর আভাস পেয়ে সামনে গিয়ে দাঁড়ায় স্থান পরিবর্তন করে। শান পাশে এসে বলে,

” চলো আমার সাথে।”

” কোথায়?”

” আগে চলোই না তারপর বলছি।”

” না, আমার কাজ আছে আমি রান্নাঘরে যাচ্ছি।” ইমা ঘুরে এগোবে বলে পা বাড়াতেই শান বাধা হয়ে দাঁড়ায়। শুধু সামনে দাঁড়ায় বললে ভুল হবে। মাত্র কয়েক ইঞ্চির ব্যবধানে দাঁড়ায় শান। ইমার হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে যায় শানের পারফিউমের ঘ্রাণে। এই লোক আজও একই পারফিউম ব্যবহার করে। সে জানে না তার শরীরের ঘ্রাণ মেশানো এই পারফিউমের ঘ্রাণে ইমার শরীর নিশ্চল হয়ে যায়! সে জানে না ইমা সব প্রতিশোধ ভুলে গিয়ে কাছে আসতে চায় এই ঘ্রাণের মোহে! ইমার নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। চোখে,মুখে অসহায় ভাব ফুটে উঠতেই তাড়াতাড়ি উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে,হাত মুঠ করে বলে,

” আমাকে যেতে দিন।”

শান এগিয়ে এসে কিছু বলবে বলে ওর কানের কাছে মুখ আনতেই ইমা ফের সরে দাঁড়ায়। রাগত স্বরে বলে,

” আপনি কেন শুনছেন না কথা। যেতে দিন আমাকে।”

শান পাশ কেটে সরে দাঁড়ায়। ইমা কোনোদিক না তাকিয়ে নত মুখে সামনে হাঁটতে লাগল দ্রুত পদে। সে চোখ তুললে দেখতে পেত শানের কাতর চাহনী। বহু জনমের বিরহ কাতর প্রেমিকের ন্যায় সেই চাহনী ক্রমেই কঠিন হতে থাকে ইমার দূরত্বের সাথে।

ইমা ফিরে এসে সোজা কিচেনে ঢুকল। কাঁপা হাতে, অস্থির চিত্তে কিছুতেই কাজে মনোযোগ দিতে পারছে না। চা চড়াতে গিয়ে হাত ফসকে পাতিল নিচে পড়ে গেল, ফ্লোরের পানি মুছতে গিয়ে মোছার মপটাও ঠিক করে ধরে মুছতে পারল না। সব এলোমেলো হয়ে গেল। এই অসংযত আবেগকে তিরস্কার করতে করতে দু’হাতে চুল টেনে কাঁদতে লাগল ইমা। পাছে শান টের পেয়ে যায় সেই ভাবনায় তৎক্ষনাৎ নিজেকে সামলাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। সে জানেও না তার ভাবনা সত্যিতে পরিণত হয়েছে। আড়ালে দাঁড়িয়ে সবই দেখে গেছে শান। মাইন্ড কনভার্ট করতে চা চড়িয়ে কিচেন পরিষ্কারের কাজে লেগে গেল ইমা। কিচেন পরিষ্কার ছিল তবুও সেটা আবার মুছল, জায়গা থেকে সরিয়ে পুনরায় সেখানে রাখল, পরিষ্কার থালা-বাসন ফের ধৌত করল। সম্পূর্ণ ঠিক না হলেও অস্থির ভাব কমে যায় একসময়। চা রেডি হতেই আরেক সমস্যা দেখা দিল। ইমা এই মুহূর্তে আবার শানের সম্মুখীন হতে চাচ্ছে না। উপায়ও তো নেই যাওয়া ছাড়া। অনেক ভাবনা চিন্তা শেষে নিজেকে তৈরি করল উপরে যাওয়ার জন্য। চায়ের কাপ সহ ট্রেটা হাতে উপরে চলে এলো। উপরে তিনটে রুম। শান কোনটায় ভাবতে ভাবতে একটা রুমের লক ঘুরায়। না, খুলল না। পরের রুমের লক ঘুরাতেই সেটা খুলে গেল। ইমা সভয়ে পা বাড়াল রুমে। পুরো রুমটা জুড়ে সেই দেহমন অসাড় করা ঘ্রাণ। ধনীদের রুমটা যেমন হয় এটাও তেমন। বিলাসবহুল আসবাবপত্র, দেয়ালে দামি পেন্টিং। রুমের সৌন্দর্য ইমাকে বিমোহিত করতে পারল না ঘৃণার পর্দা ভেদ করে। ইমা ভালো করে দেখলও না দ্বিতীয়বার। শানকে খুঁজছে সে। রুমের কোথাও শান নেই। রুমে না পেয়ে ইমা বেরিয়ে এলো। করিডোরের শেষ মাথায় যে রুমটা আছে সেখানে যেতেই একটা শব্দ কানে শুনতে পায়। শব্দটা কিসের ঠাহর করতে পারল না। সেটার দরজা ভেরানো ছিল। হাত দিয়ে হালকা চাপ দিতে খুলে গেল দরজা। শান একটা বিশেষ বস্তুর উপর দৌড়াচ্ছে। কানে হেডফোন, পরনে শটস। নগ্ন বুক। চার বছর আগের চাইতেও বডিসডি জবর বানিয়েছে। ইমা বিরবির করে,

” বেহায়া কোথাকার।” ইমা চা রেখে দরজা কাছে এসে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়। নিজ মনে বলে,

” চা ঠাণ্ডা হয়ে আইল্যান্ড হবে অথচ জনাব টেরই পাবে না। রুমে যে কেউ ঢুকেছে তাতে তার হুশ নেই। হুশ হবে কী করে? তার জীবনে আমার কোনো মূল্য আছে? না নেই। আমি তো একটা খেলনা পুতুল ছিলাম। মনমতো খেলে তারপর ছুঁড়ে ফেলতো। সেটা পারেনি বলেই তো এতো পিরিত উতলে উঠেছে আমাকে দেখে।” চোখের সম্মুখে শানকে সহ্য হচ্ছে না ইমার। হুটহাট জেগে ওঠা আবেগটার জন্য অনেককিছুই ভুলে যাচ্ছে। এমন চলতে থাকলে একসময় পুরোপুরি দূর্বল হয়ে পড়বে সে। যা কিছুতেই ইমা চায় না। এই না চাওয়াটাকে সফল করতে হলে ইমাকে স্বাভাবিক হতে হবে শানের সামনে। বোঝাতে হবে তার কিছুই যায় আসেনা শানের কাছে আসায়। ইচ্ছাশক্তির দরুন এগিয়ে যায় ইমা। কাপ সহ ট্রেটা হাতে তুলে লম্বা শ্বাস টেনে ট্রেডমিলের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। ট্রেডমিলের উপর দৌড়ানো শান তখনও আগের মতোই দৌড়াচ্ছে। আগে চেয়ে দৌড়ানোর গতি আরও বাড়ল। ইমা কী করবে, কী করবে ভাবতে ভাবতে সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। ট্রেডমিলের গতি কমিয়ে, কানের হেডফোন সরিয়ে জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে অবাক চোখে তাকায় শান।

” আপনার চা।” ট্রে টা সামনে এগোতেই শান চায়ের কাপে তাকিয়ে অদ্ভুতভাবে হাসল। ইমা কিছুতেই এই হাসির রহস্য উদঘাটন করতে পারে না। তাতেই যেন ফের রাগে ওঠে ওর। চায়ের কাপটা নিচে রেখে রুক্ষ স্বরে বলে,

” রেখে গেলাম। ইচ্ছা হলে খাবেন না হলে ফেলে দেন।”

” ইমা।” কয়েক কদম এগিয়ে থমকে দাঁড়ায় শানের গম্ভীর ডাকে। পেছন ঘুরে তাকাতেই দেখে ঘর্মাক্ত শরীরে দাঁড়িয়ে ইমার দিকে স্থির চোখে চেয়ে আছে শান। এই দৃষ্টি একটু আগের হাসির চেয়েও রহস্যময়। একটা দূর্ভেদ্য কাঠিন্য হঠাৎই লুকিয়ে গেল মুচকি হাসির আড়ালে,

” তোমার কী কোনো কাজ আছে এই মুহূর্তে?”

শানের প্রশ্ন শুনেও জবাব দিতে পারল না ইমা। মাথায় এখনো ঘুরছে এই লোকের হঠাৎ রহস্যময় হয়ে ওঠা তারপর আবার হাসা। শান চায়ের কাপ হাতে এগিয়ে এসে ইমার মুখের সামনে তুড়ি বাজাতেই ভাবনা ছেদ পড়ে ইমার। শান একই ভাবে হেসে বলে,

” কী হলো জবাব দিলে না?”

দৃষ্টি নত করে নিজেকে যথাসাধ্য স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে ইমা। নিচু গলায় বলে,

” সেটা তো আপনি জানেন।”

” আমি! আমার কী সেই অধিকার এখনো আছে?”

” আপনি আবার ভুল করছেন সাহেব। আসমা আপা বলেছিল, আমার কী কী কাজ করা লাগবে এই বাড়ি আপনি বলে দেবেন। আমি শুধু সেটাই বলেছি।”

শান নীরব হয়ে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ ইমার নত মুখের দিকে। কপালের রগ দপদপ করছে ওর। ইমা দৃষ্টি তোলার পূর্বেই চেহারার ভাব আগের মতো হাস্যোজ্জ্বল করে বলে,

” ওহ হ্যাঁ, আমারই বার বার ভুল হচ্ছে। নেক্সট টাইম থেকে খেয়াল রাখব এ ব্যাপারে।” শান ঘুরে জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। বলে,

” তোমার কাজ নির্ধারিত নয়। আমি যখন যেটা বলব সেটাই করবে তুমি। আপাতত আমার সাথে খামারে যাবার জন্য তৈরি হও।”

” খামার! মানে ঐ গোরু ছাগলের ঘরে?”

” জি, না। একটু শুধরে নিন, ওখানে শুধু গোরু ছাগল না আরও অনেক প্রাণী আছে। এবং সবগুলোর পরিচর্যা করার জন্য তোমাকে সেখানে যেতে হবে।”

” কী! পাগলা কুত্তায় কামড়াইছে আপনারে? আমি ওসব পারব না। আমার ফোবিয়া আছে গোরুতে।” শান ঠোঁট কামড়ে আনমনে হেসে নির্বিকারভাবে বলে,

” ওহ! ভালো কথা মনে করেছ, আমার চারটা জার্মান শেফার্ড আছে। কুকুরগুলোর খাবার কিচেনে রেখেছিলাম কাল। মনে করে নিয়ে নিয়ো তো। আর হ্যাঁ, তুমি নতুন ওদের কাছে সো একটু সাবধানে থাকতে হবে তোমাকে।”

” কুকুর! আল্লাহ গো। এই আমি আপনার বাসায় কাজ করব না। কুত্তাওলি হওয়ার শখ নাই আমার। বাই।”

” তাহলে বলো আমার অপরাধ কী ছিল?”

ইমার কুকুর ভীতি দূর হয়ে যায় শানের সেই সে দূর্ভেদ্য কাঠিন্যের চাহনি দর্শনে। চট করে ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে,

” বার বার একই প্রশ্ন করে নিজেকে যতই নির্দোষ সাব্যস্ত করতে চাননা কেন, আপনি তা হয়ে যাবেন না। আপনি মূলত একজন নীচ প্রকৃতির লোক ছিলেন এবং তেমনই থাকবেন।” দরজার পার হওয়ার আগে ইমা পেছন না ফিরে পুনরায় বলে,

” আর হ্যাঁ, প্রশ্নের জবাব তারাই পায় যারা জবাব জানে না। আপনি তো সবই জানেন। তাহলে মিথ্যেমিথ্যি ভালো সাজতে চাচ্ছেন কেন? বিছানা সঙ্গী বানাবেন বলে? সরি মি. খান, ও আশা ফের আর পূরণ হবার নয়৷ইমা মরে যাবে তবুও আপনার মতো নীচু লোকের মোহে আর পড়বে না। আপনি আসুন আমি নিচে গেলাম।”

ইমা চলে গেল। যেতে যেতে কথার বাণে ভীষণভাবে আঘাত করে গেল শানকে সে। শান স্তব্ধ মুখে দাঁড়িয়ে রইল শূন্যে তাকিয়ে। ছলছল চোখদুটো আগুনের গোলা হয়ে ওঠে। হাতের কাপটা উল্টে জানালার বাইরে চা ঢেলে বলল,

” তুমি আমার সেই ইমা নও। আমার ইমা কিছুতেই হতে পারো না তুমি। নিষ্ঠুর, পাষাণ,নির্দয় তুমি। আমি তো তোমাকে পেয়ে সব অতীত ভুলতে চেয়েছিলাম, চেয়েছিলাম তোমার দেওয়া সব ব্যথা ভুলতে। তারপরও কেন শুধু ব্যথায় পাচ্ছি তোমার কাছে। আমার ভালোবাসা, কাতরতা, কষ্ট কেন তুমি দেখতে পাও না? কেন আমাকে ব্যথা দিতে এতো ভালো লাগে তোমার? কেন,কেন?” শানের চাপা আর্তনাদে ঘরটা ভারী হয়ে ওঠে।

চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here