তুমিময় আসক্তি ২ পর্ব ১৬

0
544

#তুমিময়_আসক্তি_২
#আলো_ইসলাম(লেখিকা)
“১৬”

–” রুদ্র খাম’টা খুলে দেখতেই চমকে উঠে। স্থীর চাহনিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে খামের ভেতরের বস্তু গুলোর দিকে। হিংস্রতা আবারো চোখ মুখে জেগে উঠে। চোখ দুটো আগুনের ফুলকির ন্যায় দপদপ করে উঠে। রাগে চিৎকার করে ছুড়ে মারে খামটা। হঠাৎ রুদ্রর এমন কান্ডে চমকে উঠে রাজ। ঘাবড়ে যাওয়া চোখে কৌতুহল নিয়ে বলে কি হয়েছে রুদ্র? তুই এমন করছিস কেনো? কি আছে খামে বলে রাজ খামের মধ্যে থাকা ছবিগুলো হাতে তুলে আঁতকে উঠে ভয়ার্ত চোখে তাকায় রুদ্রর দিকে। রুদ্রর শরীর কাঁপছে রাগের কারণে।

– আমি আগেই জানতাম দোলা ঠক, প্রতারক। ও আমাকে ঠকিয়েছে। বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও পর-পুরুষের সাথে সম্পর্ক রেখেছে। তুই না আমাকে বলেছিলি রাজ” দোলা এমন ধরনের মেয়ে না। আমার ভুল হচ্ছে৷ আমি শুধু শুধু ওর উপর অত্যাচার করছি। এইগুলো কি তাহলে? আন্সার মি চিৎকার করে বলে রুদ্র।
– রুদ্র আমার কথাটা শুন। হয়তো সত্যি আমাদের ভুল হচ্ছে৷ দোলা এমন টাইপের মেয়ে নয়। কেউ ইচ্ছে… শাট আপ রাজ! জাস্ট শাট আপ। আমি আর একটাও কথা শুনতে চাইনা তোর মুখ থেকে। আমি আগে থেকে জানতাম দোলা সামিরকে ছাড়া থাকতে পারবে না। দোলা কখনোই ভালো মেয়ে ছিলো না। যদি সে ভালো হতো তাহলে আরেকটা মেয়ের জীবন এইভাবে নষ্ট করতো না৷ আর এখন ” বিয়ের পরও পরোকিয়া চালিয়ে যাচ্ছে ছিহ ধিক্কার জানায় রুদ্র।
– তুই শিওর কীভাবে হচ্ছিস রুদ্র যে এই ছবিতে থাকা ব্যক্তিটি সামিরই?
– আমি জানি এটা সামির। তার জন্য আমার আলাদা ভাবে কোনো প্রমাণের দরকার নেই। আমি ওকে সুযোগ দিয়েছিলাম। নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম৷ ওর সব ভুল ক্ষমা করে দিয়ে নতুন ভাবে পথ চলতে চেয়েছিলাম আর কি করলো দোলা এটা? কি প্রতিদান দিলো তার। ভার্সিটির নাম করে এইসব নোংরামি করে বেড়ায় ও। আমার নিজের প্রতি নিজেরই করুণা হচ্ছে আজ৷ আমি আবারও ঠকে গেলাম রাজ। আমি আমার ভালোবাসার কাছে হেরে গেলাম আবারও আজ ভেঙে পড়ে রুদ্র।

— রুদ্র আমার কথাটা শুন৷ তুই এত হাইপার কেনো হচ্ছিস। আমাদের বিষয়টা ভালো ভাবে দেখা উচিত। দরকার হয় দোলার সাথে কথা বলবো এই ব্যপারে আমরা।
রাজের কথা শুনে রুদ্র হাসে। পাগলের মতো হাসতে থাকে। রাজ অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে থাকে রুদ্রর দিকে।
তোর কি মনে হয় রাজ” আমি দোলাকে এমনি এমনি ছেড়ে দেবো আজ। কোনো প্রশ্ন করবো না। আমার জবাব চাই জবাব। সব কিছুর উত্তর আজ দোলাকে দিতে হবে। সব কিছু আজ তার জানতে হবে কথাটা বলে রুদ্র রাজের হাত থেকে ছবিগুলো এক প্রকার ছিনিয়ে নিয়ে হনহন করে বেরিয়ে যায়৷ রাজ পিছু ডাকলেও রুদ্র কানে নেয় না। রাজ চিন্তিত হয়ে বসে পড়ে চেয়ারে। কিছু একটা ভেবে বেরিয়ে আসে সেও।

— দোলা তার রুমে নির্বাক ভঙ্গিতে বসে আছে। এমন একটা সত্যের মুখোমুখি হবে সে ভাবতে পারিনি৷ রুদ্র তার থেকে এত বড় সত্যি লুকিয়ে যাবে কল্পনাও করেনি৷ দোলার মধ্যে ক্ষোভ, অভিমান, হীনতা আসে সবার প্রতি। এই বাড়ির প্রতিটি মানুষ তাকে ঠকিয়েছে৷ সত্যটা আড়াল করেছে । দোলার কান্না পাচ্ছে ভীষণ। চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছে করছে। দোলা বন্ধ ঘরের রহস্য জেনে যাওয়ায় এতো তোলপাড় তার মধ্যে। অনেক চেষ্টার পরে দোলা সফল হয় ওই ঘর পর্যন্ত যেতে। আর গিয়ে যা কিছু দেখে তার জন্য দোলা একদম প্রস্তুত ছিলো না। দোলা চোখের পানি মুছে নিজেকে শক্ত করে। আজ সবার থেকে তার সব প্রশ্নের উত্তর চাই। কেনো তার থেকে সত্যটা আড়াল করা হয়েছে তার জবাব দোলার চাই। দোলা ঘর থেকে বের হতে যাবে এমন সময় রুদ্র আসে। দোলা কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে তাকিয়ে থাকে রুদ্রর দিকে। অভিমানটা যেনো রাগে আকার নেয়। কিন্তু দোলা লক্ষ্য করে রুদ্রকে অস্বাভাবিক দেখাচ্ছে আজ৷ সেই হিংস্রতা তার মধ্যে ফুটে উঠেছে। কিন্তু কেনো? দোলার ভাবনার মাঝে রুদ্র হাতে থাকা ছবিগুলো ছুড়ে মারে দোলার দিকে। দোলা চমকে উঠে তাতে। রুদ্রর দিকে একবার তাকিয়ে নিচে তাকাতেই চোখ যেনো কপালে উঠে যায়। তার আর সামিরের ভার্সিটির সেই মুহুর্তের ছবি জ্বলজ্বল করছে এখানে। দোলার মধ্যে ভয় চেপে বসে। তার অভিমান তার প্রশ্ন গুলো আপাতত অবসান নেয়। ভয়ার্ত দৃষ্টিতে রুদ্রর দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিলে দোলা। দোলা তো এই ভয়টাই করেছিলো যাতে রুদ্র না জানে কিছু। কিন্তু সেটাই হলো। কিন্তু এইভাবে ছবিগুলো কে তুলেছে৷ প্রতিটি ছবি এত নিখুঁত ভাবে তোলা হয়েছে যে! যে কেউ দেখলে বলবে সামির আর দোলা বেশ অন্তরঙ্গ অবস্থায় সময় কাটিয়েছে৷ এমনকি কয়েকটা ছবিতে মনে হচ্ছে সামির দোলাকে কিস করছে। দোলা একবার রুদ্র তো একবার ছবি গুলোর দিকে তাকাচ্ছে। ভেতরে ভেতরে আরও দুর্বল হয়ে উঠছে দোলা। হাত-পা রীতিমতো কাঁপা-কাঁপি শুরু হয়ে গেছে। রুদ্রর চোখ মুখে যে হিংস্রতা বিরাজ করছে তাতে দোলা নিশ্চিত তার জন্য ভালো কিছু অপেক্ষা করছে না।

— এইগুলোর মানে কি দোলা? শান্তশিষ্ট কন্ঠস্বর রুদ্রর? কিন্তু দোলা আঁতকে উঠে রুদ্রর কথায়। কিছু একটা বলার মতো অবস্থাও তার মধ্যে নেই। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে৷ কোনো রকম আওয়াজ চাইলেও বের করতে পারছে না। শুধু ভয়ার্ত চোখ দুটো রুদ্রর দিকে দিয়ে রেখেছে।

– উত্তর দাও দোলাপাখি। এইগুলোর মানে কি? কেনো করলে তুমি এমন? আমি তো তোমাকে বিশ্বাস করেছিলাম৷ তোমাকে একটা সুযোগ দিতে চেয়েছিলাম আর তার প্রতিদান তুমি এইভাবে দিলে। পুরাতন প্রেমিকের সাথে এইভাবে সময় স্পেন্ড করলে। রুদ্রর ঠোঁটে হাসি। কিন্তু এটা কোনো সুখকর হাসি নয়৷ তাচ্ছিল্যের হাসি,ঘৃণার হাসি, রাগ, জেদ অভিমান সব মিশ্রিত তার মধ্যে। রুদ্রর শান্ত থাকাটা দোলার মধ্যে তীব্র ভয় বাড়িয়ে দিচ্ছে।

– কি হলো দোলা কিছু বলো। আজ তোমার চুপ থাকলে তো চলবে না। এতদিন আমি বলে এসেছি আমি সব কিছু করে এসেছি৷ আজ তুমি বলবে আমি শুনবো। বলো বলো। দোলা এখনো চুপ৷ দোলাকে চুপ থাকতে দেখে রুদ্রর রাগের মাত্রা বেড়ে যায়। মাথায় যেনো আগ্নেয়গিরির লাভা ফুটন্ত।

– চুপ করে আছো কেনো উত্তর দাও আমায়? কেনো ঠকালে আমায়? কেনো প্রতারণা করলে আমার সাথে। স্বামী থাকা সত্ত্বেও পর-পুরুষের সাথে সম্পর্ক রাখার কি মানে দোলা? আমি জানতাম তোমার আর সামিরের রিলেশন আছে কিন্তু সেটা তো বিয়ের আগে ঠিক ছিলো। বিয়ের পরেও কেনো করলে এমন? কেনো আমার ভালোবাসাকে অপমান করলে তুমি? রুদ্রর চোখে পানি চলে আসে অজান্তে। ভালোবাসার কাছে পরাজিত হলে হৃদয় জুড়ে কি ক্ষত হয় সেটা একমাত্র হৃদয় ভাঙা ব্যক্তিটায় জানে।

— আমি কিছু করিনি বিশ্বাস করুন রুদ্র। এইসব মিথ্যা অনেক কষ্টে বলে দোলা।
– এখনো মিথ্যা বলছো দোলা। কীভাবে? কীভাবে পারছো এত কিছুর পরেও মিথ্যা বলতে৷ আচ্ছা কোনটা অস্বীকার করবে তুমি? এই ছবিগুলো, সামিরের সাথে তোমার গভীর সম্পর্ক আছে সেটা। নাকি তুমি নিজ হাতে একটা মেয়ের জীবন শেষ করেছো সেটার। দোলা অবাক হয়ে তাকায়। বিস্মিত কন্ঠে বলে আমি কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করেছি?
– হ্যাঁ করেছো। তুমি জেনে বুঝে একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করেছো৷ মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছো তাকে। তুমি শুধু ঠক-প্রতারকই না দোলা৷ তুমি একজন খুনি।

– রুদ্র! কি বাজে বকছেন এইগুলো। উত্তেজিত কন্ঠে বলে দোলা।
– একদম গলা তুলে কথা বলবে না আমার সাথে৷ অন্যায় করে আবার গলাবাজি হচ্ছে৷ তোমার মতো বাজে মেয়ের জন্য আজ সত্যিকারের ভালোবাসা গুলো অবহেলিত। তোমরা তো ভালোবাসা নিয়ে খেলা করো শুধু আর ভোগান্তি তো হয় আমাদের মতো সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষ গুলোর৷ যেমন ভালোবাসার প্রতিদান স্বরুপ জীবন দিতে হয়েছে নেহাকে। তার জন্য দায়ী তুমি। তুমি সামিরের সাথে রিলেশন করে নেহাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছো। তুমি জানতে নেহা সামিরকে ভালোবাসে আর তুমি কি করলে৷ সব জেনে-বুঝে সামিরের সাথেই সম্পর্কে জড়ালে।
– রুদ্রর কথায় দোলা কি রিয়াকশন দেবে সেটাই ভুলে গেছে। শুধু বাকহারা হয়ে তাকিয়ে আছে।
– নেহা আমার সব চেয়ে কাছের বন্ধু ছিলো। আমি রাজ নেহা একে অপরের ভালো বন্ধু ছিলাম। কিন্তু জানি না নেহা কীভাবে ওই সামির কু* বাচ্চার প্রেমের ফাঁদে জড়িয়ে যায়৷ আমরা প্রথমে কিছুই জানতাম না৷ কারণ নেহা আমাদের কিছু বলতে পারেনি সাহস করে আর সেটাও সামিরের জন্য। কারণ সামির জানতো আমরা যদি নেহার সাথে ওর রিলেশনের কথা জানি তাহলে নেহাকে সাবধান করে দেবো। সামিরের প্রতিটি কুকর্মের কথা ফাঁস করে দেবো। তাই কায়দা করে নেহাকে রাজি করায় যাতে ও আমাদের কিছু না বলে। এরপর সামির ভালোবাসার কথা বলে বিয়ের প্ররোচনা দিয়ে ভোগ করে নেহাকে। নেহা এইসবের কিছুই বুঝতে পারেনি। কারণ সে-তো সামিরকে সত্যি ভালোবেসেছিলো। এরপর যখন নেহা অজান্তে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যায় সামিরকে জানালে সামির সব অস্বীকার করে। এমনকি নেহা বিয়ের কথা বললে সেটাও অস্বীকার করে। দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। এরপর থেকে অবহেলা শুরু করে সামির নেহার প্রতি। নেহা যখন সামিরের মুখোমুখি হয় আবার তখন সামির জানায় তোমার সাথে নাকি সামিরের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক আছে। আর সেটা খুব শীগ্রই বিয়েতে পরিনতি নেবে৷ নেহা তার সম্মান তার ভালোবাসা তার অনাগত সন্তানের অধিকার পেতে যখন তোমার কাছে ছুটে যায় তখন তুমি তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দাও। একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়ের কষ্ট বুঝোনি। উল্টো অপমান করে তাড়িয়ে দাও শূন্য হাতে। সামিরকে তুমি বিয়ে করবে এটা বলে দাও নেহাকে।

– দোলা কয়েক-পা পিছিয়ে যায়। আহত চোখে তাকিয়ে থাকে।
– জানো নেহার পরিণতি? কি হয়েছে তার সাথে জানো? জানবে কি করে? তোমাদের মতো মেয়েরা তো সম্পর্ক ভাঙতে জানে শুধু। কারো ব্যাপারে খবর নেওয়ার সময় কোথায়।

– দোলার মনে পড়ে যায় আজ থেকে প্রায় সাত-আট মাস আগের কথা৷ যখন সামির দোলাকে বলেছিলো একটা বাজে মেয়ে নাকি তার পিছু করেছে। অহেতুক দোষ দিচ্ছে। কিন্তু সামির মেয়েটাকে চিনে না। এরপর সামির নেহার ব্যাপার বুঝিয়ে বলে। তবে যা কিছু বলে সবই মিথ্যা দিয়ে ভরা৷ দোলা সরল মনে সব কিছু বিশ্বাস করে। কারণ সে সামিরের কোনো বাজে কাজ বা খারাপ কিছু দেখেনি। তাই সামির যে কোনো খারাপ কাজ করতে পারে সেটা কখনোই বিশ্বাস হয়না। এরপর দোলা যখন জানতে চাই তার কি করতে হবে এর জন্য। তখন সামির দোলাকে বলে নেহা তার কাছে আসলে যাতে এইগুলা বলে। তার সামিরের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করবে। নেহা যেনো সামিরের পিছু ছেড়ে দেয়। নেহা দোলার সম্পর্কে জেনে গিয়েছিলো আর নেহা সামিরকে এটাও বলেছিলো যে সে দোলার কাছে গিয়ে সব কথা বলে দেবে। সব জানার পর সামির তার মতো করে সবটা সাঁজিয়ে নেয়৷ এরপর দোলাকে ভুলভাল বোঝায়। দোলা সামিরের কথা মতো কাজ করে। নেহা আসলে এইসব বলে অপমান করে। তবে দোলার অনেক খারাপ লেগেছিলো সেদিন নেহাকে দেখে। নেহা যখন দোলার পা ধরে সামিরকে ভিক্ষা চাই তখন দোলার ইচ্ছে করছিলো সব কিছু বলে দিতে। কিন্তু দোলা সামিরের কথা ভেবে আর কিছু বলতে পারে না। কিছু সময়ের জন্য দোলা মেনেই নেয় নেহা ভালো মেয়ে নয়। ছেলেদের ফাঁসানো তার স্বভাব। কিন্তু এর মধ্যে এত বড় ধোকা থাকবে দোলা কল্পনাও করেনি। সামির এত জঘন্য খারাপ একটা মানুষ দোলার কল্পনাতেও আসেনি কখনো। সব কিছুর জন্য দোলার নিজের প্রতি করুণ, ধিক্কার জানায়।

– দোলা তার ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে দৃঢ় কন্ঠে বলে আমি কিছু করিনি রুদ্র। নেহাকে আমি এইসব বলেছিলাম ঠিকই কিন্তু আমাকে এইগুলো সামির… তার আগে রুদ্র দোলার গলা চেপে ধরে।
– একটাও কথা শুনতে চাইনা আর। তোর মতো বাজে মেয়ের মুখ দিয়ে আর নেহার নাম নিবি না। আমার ভুল ছিলো তোকে বিয়ে করা৷ তোকে ভালোবাসা। আমি যদি জানতাম আমার বেস্ট ফ্রেন্ড যার জন্য জীবন দিয়েছে যার প্রতারণার স্বীকার হয়েছে সেটা তুই ছিলিস। তাহলে তোকে বিয়ে তো দূর তোকে সেদিনই মেরে পুতে রাখতাম। কিন্তু আফসোস আমি প্রথম দেখায় তোকে ভালোবেসে ফেলি দ্বিতীয়বারের মতো। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর আমার মনে নতুন করে ভালোবাসার জন্ম নেয় তোকে দেখে। তোকে দেখে আমার মনে হয়েছিলো আমার নতুন জীবনের সূচনার নতুন অধ্যায় তুই। কিন্তু না তুই সেই বিষাক্ত কাটা। যা একবার বিঁধলে মরণব্যাধি রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়। তুই আমার জীবনের কোনো সজীবতা বয়ে আনার জন্য নয় বরং আমার তিল তিল করে গড়ে তোলা স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার জন্য আগত হয়েছিস। তোকে নিয়ে নতুন করে ঘর বাধার স্বপ্ন দেখাটা ছিলো আমার বোকামি। কিন্তু যখন সবটা জানতে পারি ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়৷ নতুন জীবনে পদার্পণ হয়ে যায় আমার তোকে নিয়ে। তখন ইচ্ছে করছিলো নিজের চুল নিজে ছিড়ি। যাকে ঘৃণা করি তাকেই ভালোবাসতে হবে ভাবিনি। নতুন করে কোনো প্রতারক আমার জীবনে আসবে আমি ভাবিনি। তখন না পারতাম সইতে আর না পারতাম মানিয়ে নিতে আর না পারতাম এড়িয়ে যেতে। একদিকে ভালোবাসা আরেক দিকে ঘৃণা। হাঁপিয়ে উঠি আমি সব কিছুতে৷ এরপরও আমি কিছু জানতে বা বুঝতে দিইনি তোকে। ভেবেছি সব ঠিক হয়ে যাবে। নিজেকে শোধরাই নিবি তুই। কিন্তু আমার ভাবনা ভুল ছিলো তার প্রমাণ এই ছবিগুলো।

– দোলা আজ বুঝতে পারে রুদ্র কেনো তার সাথে এমন করতো। কেনো অল্পতে সন্দেহ করতো। কিন্তু এখানে তো তার কোনো দোষ নেই। তাহলে কেনো তার শাস্তি সে পাবে?

— দোলা রুদ্রর থেকে ছাড়া পাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে। রুদ্র খুবই শক্ত করে দোলার গলা চেপে ধরে আছে৷ এখনই দোলার প্রাণ পাখি উড়াল দেবে যা ভাব। রুদ্র চাইলেও আজ নিজেকে সামলাতে পারবে না। তার মধ্যে যে ঝড় বয়ছে সেটা সহজে থামার নয়।

— দোলা নিজের সর্বস্ব দিয়ে রুদ্রকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। রুদ্রর থেকে ছাড়া পেয়ে গলায় হাত দিয়ে কাশতে থাকে। চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে। লাল হয়ে উঠেছে দুটো চোখ। জোরে জোরে টানা শ্বাস নিতে থাকে।

— তোকে আজ আমি নিজ হাতে শেষ করবো। ভাবিস না আমাকে ঠকিয়ে পার পেয়ে যাবি৷ সব কিছুর মূল্য আজ তোকে দিতে হবে বলে রুদ্র কোমর থেকে বেল্ট খুলতে থাকে৷ দোলা তাই দেখে আরও ঘাবড়ে যায়। দেয়ালের সাথে শিটে দাঁড়ায় গিয়ে। শরীর খারাপ করতে থাকে দোলার। রুদ্র বেল্ট খুলে উপরে উঠায় দোলাকে মারার জন্য এমন সময় রত্না চৌধুরী রুদ্র বলে চিৎকার করে ডেকে উঠে। তানিয়া ছুটে এসে দোলাকে জড়িয়ে ধরে। মায়ের ডাকে রুদ্রর হাত থেমে যায়। দোলা জড়োসড়ো হয়ে বসে পড়ে নিচে।

— চলবে….

– ❌❌কপি করা নিষেধ ❌❌ গল্পটার শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। আমি কাউকে আশাহত করবো না শুরুতেই বলে দিয়েছি।তাই আস্থা রাখবেন৷ ভুলক্রুটি গুলো ক্ষমা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here