তবুও_বর্ষণের_অপেক্ষা
Partঃ2
#WriterঃMousumi_Akter”
“হ্যালো বিহান ভাই কোথায় তুমি?তোহা আপু তোমাকে বিকালে আসতে বলেছে।”
“ফোন দিয়ে যে সালাম দিতে হয় সেটা জানিস না।”
“আসসালামু আলাইকুম বিহান ভাই।”
“ওয়ালাইকুম আসসালাম
কোথায় আবার থাকবো পড়ার টেবিলে আছি।সামনে আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা আছে।আমি কোথায় থাকলে তুই হ্যাপি হবি।আর তোহা আপু টা কে দিয়া।আমার ব্রেইনে কোনো মেয়ের কথা মনে থাকে না। শুধু মাত্র মেয়ে হিসাবে তোর নাম টাই মনে থাকে।”
“আপনি তোহা আপু কে চিনেন না। নিজের প্রেমিকা কে ই চিনেন না।কেমন যেনো অন্য মেয়ের কথা বলতে গেলে বুক ফেঁটে যায় আমার”
“তোহা ওই যে তোর কাকার মেয়ে ওর কথায় বলছিস তো।হ্যাঁ চিনি তবে প্রেমিকা হিসাবে চিনি ন।তোর বোন হয় সে হিসাবেই চিনি।তোকে কে বলেছে তোহা আমার প্রেমিকা।দেখ দিয়া এগুলা মাথায় ও আনবি না।আমার নিজের প্রেমিকা সে নিজেই জানেনা আমি তার প্রেমিক।সে আমাকে ভাই ভাই ডাকলেও আমি তাকে বউ এর নজরেই দেখি।মেডিকেল টা শেষ হোক একবারে ভাই বলার মজা বুঝাবো।”
“তোমার এসব কঠিন কথা আমি বুঝি না।সকালে গেলে বলে গেলে না যে!একটু লেট করতে আমি ঘুম থেকে ওঠা অবধি।”
“তুই তো নবাবজাদী অলস বারোটার বাবু।সকালে উঠে নামাজ পড়িস না,হাতির মতো ঘুমাস তোকে বলে আসতে গেলে আজ আর আমার আসা হতো না।”
“আজ থেকে যেতে পারতে”
“ওয়েট এক্সকিউজ মি! তুই কি বলতে চাস আমি ঘর জামাই থাকবো তোদের বাসায়।তোদের বাসার যে পরিবেশ।ওখানে মানুষ থাকতে পারে।তোর বাসার ওই গন্ডার টা আত কতদিন ঘোজ্জে থাকবে বলতি পারিস।ওর মা বাবার কি কমস সেন্স নেই।আর তোর পরিবারের মানুষের কি কমন সেন্স নেই।বাড়িতে বিয়ের উপযুক্ত দুই দুইটা মেয়ে আরো তো ছোটা খাটো গুলার কথা বাদ ই দিলাম।বাড়িতে বিবাহ যোগ্য মেয়ে থাকতে তোর ফ্যামিলি কিভাবে বাইরের একটা এবনরমাল ছেলেকে এলাউ করে বুঝি না।আমার আপণ ফুফি বাড়ি আমাকে দেখেছিস যখন তখন গিয়ে থাকতে।”
“তোমার মনে এত দোষ কেনো বিহান ভাই।তুমি ও যেমন ভাই,আলিফ ভাই ও তেমন ভাই।সে তো আমাদের বোনের নজরেই দেখে।”
“হ্যাঁ দুনিয়ার সব বিবাহ যোগ্য ছেলেই তো তোকে বোনের নজরে দেখে।”
উফফফ গড তুই ক্যানো বুঝিস না দিয়া তোর পাশে আমার কাউকে সহ্য হয় না।আর তুই কবে বড় হবি আর আমার এই রেগে যাওয়ার কারণ আর তোকে বকুনি দেওয়ার কারণ বুঝবি।তোকে বুঝাতে গেলে আমাকে প্লে বয় টাইপ কথা বলতে হবে।যেটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।আমার এই রাগ থেকেই তোকে একদিন বুঝে নিতে হবে আমার ভালবাসা কথাগুল বিহান মনে মনে বলছে।
বিহান ভাই কে বেশী কিছু বলা যায় না।বললেই ভীষণ রেগে যাবে। রাগ করে নিজের মামা বাড়ি পাঁচ বছর যান না উনি।উনার মামারা এত রিকুয়েষ্ট করেন তবুও বিহান ভাই যান না।বিহান ভাই এর সাথে সবাই খুব হিসাব করে কথা বলে একমাত্র আমি ছাড়া।উনার রাগ অনুযায়ী ভীষণ সহ্য করে উনি আমাকে।যেভাবে বকে সে তুলনায় কাছে এসে কিছুই বলতে পারে না।
“বলে যেতে তুমি।।ঘুম থেকে উঠে তোমাকে খুজছিলাম আমি।”
“এক মিনিট সেই তখন থেকে তুমি তুমি করছিস কেনো? আমি তোর বড় না ছোট দিয়া।তুই মাত্র কলেজে গেছিস আর আমি ভার্সিটিতে পড়ি।আমাকে আপনি বলবি। কোনো সভ্যতাই শিখলি না দিয়া।মিনিমাম সম্মান টুকুও দেওয়া ছেড়ে দিচ্ছিস।খুব সাহস হয়েছে না তোর।”
“বিহান ভাই মানুষ কি ভাইদের তুমি বলে না।”
“তোকে আমি আর কতবার বলবো দিয়া তোকে আমি বোন বলে পরিচয় দেই না।অথচ তোর চৌদ্দগুষ্টির সবাই আমি গেলে তোর ভাই পরিচয় দেই।আচ্ছা তোর কি ভাই এর অভাব। তোর নিজের ভাই আছে আবার তোর চাচাতো,খালাতো,ফুফাতো দিয়ে কয়েক হালি ভাই আছে তবুও আমাকে ক্যানো ভাই ভাই করিস বলতে পারিস।তোর জাত গুষ্টি কে আমার সহ্য হয় না।দাদা যে কি খেয়ে ওই মফিজ বংশে আমার ফুফির বিয়ে দিয়েছিলো।”
“খবর দার আমার বংশ নিয়ে কিছুই বলবেন না।এখানে বংশ টানছেন কেনো?”
“তুই কি আর কিছু বলবি ধমক দিয়ে।”
“দুঃখি দুঃখি মন নিয়ে বললাম না।”
“আমার পুরা পাঁচ মিনিট সময় নষ্ট করেছিস তুই।এক্ষুণি ফোন রাখ।আর শোন তোদের বাড়ি আমার গেলে গা রিরি করে। শুধু বউ টা আছে বলে যেতে বাধ্য হই।কপালে এমন কুঞ্জুস মার্কা শ্বশুর বাড়ি জুটবে ভাবতে পারি নি।”
“এই মাত্র বললেন তোহা আপনার প্রেমিকা নয়। এখন আবার আমাদের বাড়িকে শ্বশুর বাড়ি বলে পরিচয় দিচ্ছেন।”
“ফোন রাখ এক্ষুণি।”
আমার ফোন টা কেটে দিয়ে বিহান ভাই তোহা আপুকে ফোন দিয়ে বলে তোহা তুমি কি আমাকে খুজছিলে সকালে।কই নাতো।
বিহান ভাই কিছু না বলে ফোন টা কেটে দিলো।
কি লজ্জাটায় না পড়লাম।আমার হঠাত বিহান ভাই কে দেখতে ইচ্ছা হচ্ছিলো।সেটা বিহান ভাই কে বললে আমাকে কুচি কুচি করে ফেলতো।।।ক্যানো জানিনা বিহান ভাই কে বারবার দেখতে ইচ্ছা করে আমার।আমার চোখে দেখা বিহান ভাই সব থেকে সুন্দর ছেলে।উনার চেহারার নিঁখুত বর্ননা দেওয়া সম্ভব নয় আমার পক্ষে।অলওয়েজ ভয়ানক রকমের রাগি মুডে থাকে।ভীষণ ফর্সা দেখতে হাইট ছ ফিট।উনার পাশে আমাকে ভীষণ কালো লাগে দেখতে।উনার ভার্সিটির মেয়েরা সবাই অনেক সুন্দর সুন্দর দেখতে।তারা ও ডাক্তার হবে। তাদের মাঝ থেকে বিহানের মতো ছেলে কি কখনো আমায় লাইক করবে।
আমার ফোনে আবার ফোন এলো।ভয়ে ফোন টা তুললাম না।আমি জানি বিশ্রিভাবে অপমান করবে আমাকে।এক টানা একুশ বার কল দিয়েছে বিহান ভাই ভয়ে রিসিভ করিনি।
বাড়িতে কেউ নেই সবাই পাশের বাড়ি একজনের বিয়ে সেখানে গায়ে হলুদ লাগাতে গিয়েছে।একমাত্র আমি ই যায় নি।
গোসল করে রুমের মাঝে চেঞ্জ করছি আমি।
কিছুক্ষণ পরে দেখি বুকে হাত বেঁধে, এ্যশ কালারের গেঞ্জি পরে দাঁড়িয়ে আছে বিহান ভাই।পরণে ব্লাক জিন্স এর থ্রি কোয়ার্টার। হাতে ব্রেস্লেট,আরেক হাতে ঘড়ি।বিহান ভাই খুব ফর্সা,ঠোঁট দুইটা গোলাপি।অথচ আমি শ্যামলা।উনার আর আমার বাসার দূরত্ব ১০ মিনিট হবে।
আমিও গায়ে হলুদের অনুষ্টানে যাবো বলে রেডি হচ্ছিলাম।ব্লাউজ আর পেটিকোট পরা জাস্ট।শাড়ি মাত্র কোমরে গুজেছি।
বিহান ভাই আমাকে এমন বিশ্রি ভাবে দেখে ফেলবে আমি ভাবতেই পারি নি।উনাকে দেখে ভয়ানক লজ্জা পেয়ে আমি দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেই।বাড়িতে কেউ নেই উনার ফোন তুলিনি আমি।আমাকে আজ মেরেই ফেলবে উনি।আর আমি তো ভাবতেই পারিনি উনি এখানে আসবে।কারণ উনি তো পড়ার সময় অন্য কোনো দিকে নজর দেই না।আজ হঠাত পড়া রেখে চলে এলেন যে।
তুই আমার ফোন তুলিস নি কেনো?কত বার ফোন দিয়েছি।ফোন তুলিস নি বলে বাধ্য হয়েই এখানে আসতে হলো।
আরে রাখেন আপনার ফোন।আমি গোসলে ছিলাম।আপনার কি কান্ডজ্ঞান কিছুই নেই।আমি চেঞ্জ করছিলাম আপনি দাঁড়িয়ে দেখছিলেন।
দাঁতে দাঁত চেপে বিহান ভাই বললো তুই কি আমাকে চরিত্রহীন ভাবিস দিয়া।শেষ মেষ এই কেলেঙ্কারি দিয়ে দিলি।তুই কি সিওর আমি কিছু দেখেছি।আমার যে ওসব ইন্টারেস্ট নেই তুই ভাল ভাবেই সেটা জানিস।
আপনি আগে বাইরে যান তো।আমি চেঞ্জ করবো।
কিরে ক্ষেপি।মনে হচ্ছে খুব ক্ষেপে আছিস।আমাকে তোর দেখতে ইচ্ছা হচ্ছিলো সেটা বললেই পারতিস। তোহার অজুহাত দেওয়ার কি প্রয়োজন ছিলো।শোন দিয়া আমি কিন্তু একটু হলেও বুঝি যে তুই আমার প্রতি ক্রাশড বাট লজ্জায় বলতে পারিস না।
রাগে আমার শরীর রা রা করে জ্বলে যাচ্ছে।
নিজেকে কি ভাবেন বিহান ভাই।হিরো নাকি অন্য কিছু।
অদ্ভুত ব্যাপার হিরো ভাববো ক্যানো।আমি The great bihan.
আপনার মাঝে বিশেষ কি আছে যে ক্রাশ খেতে হবে।
তোর বোন তোহা আমার প্রতি ক্রাশড।তোর পাশের বাসার রাত্রী আমার প্রতি ক্রাশড তোর গুষ্টির সব মেয়েই তো আমার প্রতি ক্রাশড তুই বাকি থাকবি সেটা কি বড়ই অবাক করা ব্যাপার না দিয়া।
রাগে চোখ মুখ দিয়ে ঝাল বেরোচ্ছে আমার।
দিয়া বাইরে বেরিয়ে আয়।তোর কি পরা আছে সেসবে ইন্টারেস্ট নেই আমার।আমার ফোন না তুলে কত ক্ষতি করেছিস You have no idea.দ্রুত বাইরে আয় একটা কথা বলে চলে যাবো।
শাড়ি নিজের শরীরে বিশ্রি ভাবে নিজের ইজ্জত বাঁচানোর জন্য বাইরে বেরিয়ে এলাম।
আমার দিকে তাকা এবার।
ক্যানো
আমি জানি তোর আমাকে দেখতে ইচ্ছা হচ্ছিলো দিয়া।বলেই ফোন টা ড্রেসিন টেবিলে রেখে শাড়ি পরানোর ভিভিও বাইর করে আমাকে শাড়ি পরিয়ে দিলেন বিহান ভাই।আশ্চর্য আমাকে কোথায় বাজে ভাবে স্পর্শ করলেন না।আমার শরীরের কোথাও তাকিয়েও দেখলেন না।শাড়ি পরাতে পরাতে আমাকে বললেন বাসা থেকে বেরিয়েছিলাম তোকে ভীষণ বকা দিবো বলে।কিন্তু তোর সামনে এসে কিছুই বলতে পারলাম।দেখ শাড়ি টা ঠিক ঠাক আছে কিনা।।।এর পর বিহান ভাই আমাকে খাটের উপোর বসিয়ে মুখে ফু দিয়ে গেয়ে উঠলেন।
Tu hi yeh mujko bata de
Chahoon main ya na
Apne tho dil ka pata de
Chahoon main ya na
Itna bata doon tujhko
Chahat main apni mujhko
Yun tho nehi ikhyiyaar
Pushu tujho akbaar
Phir bhi yea sosa dill ne
Abjo laga hoon mill ne
Poochoon tujhe ekbaar o
এটুকু গেয়ে বিহান ভাই বেরিয়ে গেলেন।
গান টা যেনো আমার হৃদয়ে গিয়ে ভেদ করলো সরাসরি।
আসলে বিহান ভাই কখন কি করে বুঝে উঠতে পারি না।
চলবে,,,
( আইডির রিচ প্রব্লেম সবাই কমেন্ট করবেন।বার বার বিহানের জায়গা নিরব,শুভ,অদ্রিত,ইয়াস,শুভ্র লিখে ফেলতেছি কি এক্টা বিশ্রি অবস্থা,রি চেইক নেই।কোথাও নাম গুলিয়ে গেলে জানাবেন প্লিজ)