তবুও_বর্ষণের_অপেক্ষা 10..

0
2199

#তবুও_বর্ষণের_অপেক্ষা
10..
#WriterঃMousumi_Akter

কপালে কি আছে সেটা না জেনেই তোহা আপুর জন্য বিহান ভাই কে প্রপোজ করার প্রস্তুতি নিলাম।আজ কে সবাই মিলে ঘুরতে বেরোবো।সবাই রেডি কিন্তু বিহান ভাই উনাকে পাওয়া যাচ্ছে না।উনি পড়ার টেবিলে পড়ে আছেন।এমন ই বিদঘুটে মানুষ বলার বাহিরে।একমাত্র উনার জন্য আম্মু আমাকে যা তা ভাবে অপমান করে।উনার ভাতিজার পা ধোয়া পানি খাওয়ার ও যোগ্য না নাকি আমি।উনার কি খেয়ে কাজ নেই এত বই পড়ার কি আছে সেটাই বুঝলাম।ফুফি বাড়ি পাশের এলাকাতেই ২০ মিনিটে হেঁটে যাওয়া যায়।ফুফাতো ভাই বোন তিন টা ওরা ও এসে হাজির।ফুফির বড় ছেলে বিহান ভাই এর বড় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে অস্ট ইউনিভার্সিটি তে।তারপর ফুফির মেয়ে মেহনুবা আপু বিহান ভাই এর ছোট। অনেক দিন পর ফুফির আরেক টা মেয়ে হয়েছে তার নাম রিমি বয়স ৬-৭ বছর হবে।মেয়েরা সবাই শাড়ি পরেছে আমি একমাত্র ব্যক্তি শাড়ি পরতে পারি না।ব্লু জিন্স এর উপোর হালকা গোলাপি কালারের একটা গাউন পরেছি।পায়ে একটা কালো সুতা বেঁধেছি। যদিও এটা স্টাইলের জন্য কিন্তু বিহান ভাই দেখলে দু’চারটা জঘন্য কথা শুনিয়ে ছাড়বেন।আমার আসলেই অজানা এই সুতা নিয়ে ঠিক কি কি আমাকে শুনেবেন।পার্কে ঘুরতে যাবো সবাই।ওদিকে বিহান ভাই কে ফোনের পর ফোন দিচ্ছে সবাই।রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি সেই মহামানব এর জন্য।অবশেষে আগমণ ঘটালেন বিহান ভাই।

ওহ মাই গড!আমি চোখ সরাতেই পারছি না।ঘন ঘন কয়েকবার চোখের পলক ফেললাম।আমার চক্ষুযুগল নির্বাক আজ।কয়েক হাজার ভোল্টেজ এর ক্রাশ খেয়ে ফেললাম।বেসরমের মতো তাকিয়েই আছি।আল্লাহ এত সুন্দর কেনো ছেলেটা।বিহান ভাই এর এ কি অস্হির লুক লাগছে আজ।নিশ্চয় মেয়েদের পটাবে বলে এত সেজে গুজে এসছে।উনার দিকে মেয়েরা তাকালে যে আমার কি চরম রাগ লাগে সেটা কাউকে বোঝানো সম্ভব নয়।

ব্লু জিন্স এর উপরে ব্লু কালারের পাঞ্জাবী পরা।জিন্স টা পায়ের সাথে একদম টাইট হয়ে আছে।একটা ছ ফিটের ছেলে স্লিম ফিগার। ফর্সার বিন্দুমাত্র কমতি নেই।ডান গালের সাইডের হালকা কালো তিলটা চেহারার মাধুর্যতা হাজার গুন বাড়িয়ে দেই উনার।কখনো ক্লিন সেভ দেখি নি উনার।উনাকে সৃষ্টিকর্তা প্রেমে পড়ার জন্য ই হয়তো এতটা নিঁখুত ভাবে সৃষ্টি করেছেন।কি অপরূপ চাহনি উনার।উনার স্টাইল অন্য সবার চেয়ে আলাদা কথা বলার বচন ভঙ্গী আলাদা।সব থেকে বেশী ভাল লাগে উনার রাগ মুড।তার থেকে বড় কথা উনি এমন এমন কথার জন্ম দেন যা কারো মাথাতেই আসে না।

সমস্ত কাজিন কুলের গ্যাংস্টার বিহান ভাই।উনি না থাকলে সব কিছু নিরামিষ লাগে। মানুষকে হাসাতে পারে খুব আবার হুট করে রেগেও যেতে পারেন।উনি না গেলে কেউ কোথাও যেতে চায় না।সবার আড্ডা অপূর্ণ থাকে বিহান ভাই ছাড়া।এলাকার কোনো পোলাপান আজ ও বিহান ভাই এর দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারে নি।বিহান ভাই আড্ডার আসর টা মাতিয়ে রাখেন।

বিহান ভাই কে দেখেই সবাই লাফিয়ে উঠলো।বিভোর ভাই চিৎকার দিয়ে উঠলো বসের আগমণ শুভেচ্ছা স্বাগতম।

বিহান ভাই ভ্রু কুঁচকে বললো বিভোর! কে তোর বস?।

ক্যানো আবার আমার কলিজার ভাই বিহান।বিহান ভাই বলেন বস তো তুমি এত গুলা মেয়ে তোমার ফ্যান ফলোয়ার তোমার পিছে দাঁড়িয়ে আছে।বিভোর ভাই বলেন এরা তো তোর ফ্যান আর আমার হাত পাখা।রিমি ছুটে গিয়ে বিহান ভাই কে জড়িয়ে ধরে।বিহান ভাই রিমি কে কোলে তুলে নেই।বিহান ভাই রিমি কে ভীষণ ভালবাসে। রিমি ও বিহান ভাই বলতে পাগল।রিমি যত সময় থাকে বিহান ভাই এর কোলেই থাকে। রিমি বিহান ভাই কে বলে ভাইয়া তুমি ছিলে না এরা আমাকে হাঁটিয়ে এনেছে। আমি ছোট মানুষ আমি কি হাঁটতে পারি।আমি বললাম এই মিথ্যুক এত সময় তো তোকে কোলে নিলাম।বিহান ভাই বলে ভাজ্ঞিস তোমাকে কেউ কোলে নেই নি বেঁচে গিয়েছো।দিয়া আজ ব্রাশ করে নি।ওর কোলে উঠলে বমি হতো তোমার।দিয়া জিন্দেগী তে ব্রাশ করেছে কিনা আমার সন্দেহ।রিমি বলে বিহান ভাই ঠিক ই দিয়া আপু ব্রাশ করে নি আজ।আমি খিটমিট করএ রিমির দিকে তাকিয়ে বললাম তোর বিহান ভাই সব সময় থাকবে না তখন তোর ব্যবস্হা নিবো।এই মুহুর্তে রিমি কে কিছু বললে বিহান ভাই দুনিয়ার মানুষের সামনে আমার প্রেজটিজ মাটির সাথে মিশিয়ে দিবে।

“আমি বিহান ভাই কে বললাম এই শুনুন আপনাকে কে বলেছে আমি ব্রাশ করিনি।”

“তুই যেভাবে মুখ গোমড়া করে রেখেছিস তাতে বোঝাই যাচ্ছে তোর ক্লোজ আপ হাসি দেওয়া দাঁত গুলো তোর মতো পিশাচ এর গালে উঠে কত নির্যাতন ভোগ করছে।”

এর ই মাঝে মেহনুবা আপু বলে ওঠে দিয়া তোর যদি বিহান ভাই এর মতো একটা বর হয় তাহলে সারাদিন ই তোর পৌষ মাস।

“আমার বয়েই গেছে অমন বান্দর ছেলের বউ হতে।”

“বিহান ভাই বলেন কি বললি আমি বান্দর এই পার্ক থেকে কয়টা প্রেম করে যেতে পারবো দেখতে চাস।তুই তো গোসল ও করিস না ঠিক ভাবে। ছেলেরা তোর থেকে একশ হাত দূরে থাকবে।গোসল না করতে করতে কি এক্টা অবস্থা দিয়া তোর।আজ কে তোকে খুব ই বিশ্রি লাগছে।রাগে ফুস ফুস করছি। উনার জন্ম হয়েছে আমাকে বিরক্ত করার জন্য।”

রেগে মেগে বললাম আপনাকে বুঝি খুব সুন্দর লাগছে।

“অফ কোর্স সুন্দর লাগছে। ওই যে দেখ ওই মেয়েগুলা বফ দের রেখে আমার দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে।ওরা আমাকে দেখে ক্রাশ খাচ্ছে।বেচারা প্রেমিক গুলা প্রেমিকাদের নিয়ে এসেও শান্তি নেই।মেয়ে জাতি এমন ই সাংঘাতিক।সুযোগ পেলেই স্মার্ট ছেলে দেখলেই ক্রাশ খেতে ভুল করবে না।এটা যদি আমার শ্বশুরের মেয়ে বুঝতো তাহলে সযত্নে তার এই স্মার্ট জামাই কে সামলে রাখতো।বড়ই আফসোস শ্বশুরের মেয়ে বুঝছে না।দিয়া তাকে একটু বুঝিয়ে বলিস”

“আমি বললাম বিহান ভাই আপনার যা বিশ্রি স্বভাব আপনার বউ ও এই সেইম কাজ ই করবে।আপনাকে রেখে অন্য কারো দিকে ঠিক ই নজর দিবে।যে আনরোমান্টিক আর খিটখিটে আপনি”

“আমার সে কখনো এমন করবে না।আমের অভাবে জুস খেলেও আমার অভাবে অন্য কারো কাছে যাবে না।আর যাবে এটা ভাবাও ভুল সে জানে বিহান কি তুলকালাম কান্ড ঘটাবে।”

পার্কে এক জায়গা গোল হয়ে বসে আছি।এর ই মাঝে আবিদ ভাই আবার বলে উঠলো কোন মাদারের বাচ্চা দিয়া কে চিঠি দিলো।আমরা ভাইয়ের মিলে কুরবানির আগেই ওর ফয়তা করবো।ফুফির ছেলে তন্ময় ভাইয়া বলে কে সেই জুকার আমার বোন কে চিঠি দিয়েছে।আমার বোনের জন্য যে কোনো আলতু ফালথু ছেলে আমরা মেনে নিবো না। বিভোর ভাই বলে পাইলে শালারে ঠাঁটিয়ে চড় মারতাম।আমার বোনের প্রেমিক হওয়া অত সোজা না।

আমার তো মারাত্মক হাসি পাইছে।সেই চিঠি নিয়ে গবেষণা চলেই যাচ্ছে।গবেষণা তো কিছুতেই থামছে না।আমি মুচকি মুচকি হেসে যাচ্ছি আর বিহান ভাই এর বিরক্তি মাখা মুখ টা দেখছি।বিহান ভাই এর ঘন ঘন কাশি হচ্ছে আমার দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছেন আর হেসে যাচ্ছেন।।আমি তো বুঝতে পারছি উনার চিঠির এমন বিদঘুটে বর্ণনা দেখে উনার অবস্থা এমন যে কোনো ভাবে টপিক্স টা ধামা চাপা পড়ুক।মেহনুবা বলে দিয়া বিহান ভাই কি শাস্তি দিয়েছেন তোকে এটা নিয়ে।আমার তো চোখে মুখে হাসির লহর। আমাকে সারাক্ষণ যা তা অপমান করা এইবার বোঝ।
বিহান ভাই আপনি দিয়া কে কিছু বলবেন না এত কিছুর পরেও।
রিয়া বলে উঠলো ওহে শ্যামাবতী, আমার শ্যামলতা ইস কি মারাত্মক রোমান্টিক কথা।

বিহান ভাই বলেন কি শাস্তি দিবো।তাকে বিয়ে দিলে মেয়ের মা হয়ে যাবে। এ বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই।

বিহান ভাই আমার ফোনে একটা মেসেজ সেন্ট করে তোর ১৪ গুষ্টি কে চুপ হতে বল।

আমি রিপ্লে দিলাম আপনি বলুন।

আবার মেসেজ দিলেন তোমার সাথে কথা আছে।

ঠাস করে তোহা আপু আমার ফোন টা কেড়ে নিয়ে মেসেজ পড়লেন তোমার সাথে কথা আছে।নাম্বার টা গিরগিটি দিয়ে সেভ করা।এই দিয়া এই গিরগিটি টা কেরে।আমি বললাম যার স্বভাব ঘন ঘন পরিবর্তন হয় সেই গিরগিটি।মেহনুবা আপু বলে গিরগিটি কে দেখতে খুব ইচ্ছা করছে।এই তো আবার গিরগিটি নিয়ে শুরু হলো।

বিহান ভাই এমন ভাবে আমার দিকে তাকালেন যার মানে তোর এত বড় সাহস আমার নাম্বার গিরগিটি দিয়ে সেভ রেখেছিস।আজ ই তোর জীবনের শেষ দিন।কেউ না বুঝলেও আমার বুঝতে বাকি নেই উনার চাহনির কারন।

আড্ডা মানে সে ভয়ানক আড্ডা চলছে।মেহনুবা আপু বলে এই রাফি তুই এতটুক পিচ্চি ছেলে আমার বান্ধবীকে প্রপোজ করেছিস ক্যানো সেটা বল।তোর কত খানি সিনিয়র হবে সেটা ভেবে দেখেছিস ফাজিল ছেলে।আমার ফ্রেন্ড আমাকে সে মেসেজ স্ক্রিনশট দিয়েছে ওয়েট পড়ে শুনাচ্ছি।

প্রিয়তমা আজ এই ভালবাসা দিবসের দিনে তোমাকে আমার হৃদয় ঝালাপালা করা ভালবাসা দিলাম।ক্লাসে বড় হলেও আমাদের বয়স কিন্তু সেইম।আমিও আজ তোমার সাথেই পড়তাম।উইল ইউ ম্যারি মি জান।বাড়ি থেকে খুব প্রেসার দিচ্ছে বিয়ের জন্য আই ওয়ান্ট টু ম্যারি ইউ মাই জান।

রাফির তো লজ্জায় নাক কাটা যাওয়ার মতো অবস্থা।

বিভোর ভাই বলেন রাফি তুই তো জালেম এর থেকে উত্তম জালেম।তোর বড় ভাই এর দাঁড়ি সব গুলা পেকে প্রায় এখনো কোনো মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারলাম না।আর তুই সিনিয়র মেয়েদের বলছিস তোকে বাড়ি থেকে বিয়ের প্রেসার দিচ্ছে।আমার ফুফাতো ভাই তন্ময় বলে রাফি তোকে কে প্রাসার দিচ্ছে রে ভাই বল তোর বাপ নাকি।বিহান ভাই বলে রাফি একটা মেসেজ কতজন কে দিয়েছিস।আমার ফ্রেন্ড এর ফেইক আইডি তে মেসেজ দিয়েছিস।ইয়ে ভাইয়া ফ্রেন্ডলিস্টের সবাই কে।বিহান ভাই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে রাফির দিকে তাকিয়ে বলে আজ বাসায় গিয়ে তোর রেজাল্ট দেখবো।তোকে বয়স হওয়ার আগেই ভর্তি করলাম আর তুই কিনা বলছিস তোর বয়স অনুযায়ী ক্লাসে ছোট তুই।হোয়াট এ প্লে বয়।আলিপ ভাই যে আমার প্রতি ক্রাশড সেটা সবাই ই কম বেশী বোঝে।আলিপ ভাই এর সাথে মেহনুবা আপুর মারাত্মক ভালো রিলেশন। আলিপ ভাই কিছু বলবেন বলে মেহনুবা আপুকে ডেকে পাঠান।নিরব ভাই আড়চোখে তাকিয়ে ফলো করছেন আলিপ আর মেহনুবা আপুকে।

আলিপ ভাই আর মেহনুবা অনেক্ষণ পরে ফিরে এলেন।

সবাই আবার বসলো।মেহনুবা আপু বলে আজ সবাই লাভ স্টোরি শুনতে চাই।তন্ময় ভাইয়া বলে বড় ভাইয়ের সামনে এসব প্রেম ট্রেম এর কথা বলছিস লজ্জা নেই না।ভাইয়া আমাকে কিছু বললে কিন্তু তোমার এক্স এর কথা আম্মুকে বলে দিবো।আমি সন্দিহান দৃষ্টিতে তন্ময় ভাই এর দিকে তাকিয়ে বললাম আপনার ও এক্স আছে।তন্ময় ভাই বলেন এক্স ছিলো ১০-১৫ জন আপাতত সিঙ্গেল দিয়া। মেহনুবা বলে আমার মনে হয় একমাত্র বিহান ভাই বাদে সবার লাইফে টুকটাক লাভ স্টোরি আছে।বাদ ছিলো দিয়া তার ও লাভ স্টোরি আছে।বিভোর ভাই বলেন বিহানের লাভ স্টোরি আমি জানি।বিহান ভাই ভ্রু কুঁচকে বিভোর ভাই এর দিকে তাকিয়ে বলে কিসের লাভ স্টোরি।বিভোর ভাই বললেন ওই যে তোর ল্যাপটপে স্রোতোশিনী দিয়ে একটা এলবাম আছে যেটা ভয়ানক ভাবে কয়েকটা তালা ঝুলানো।বিহান ভাই বলেন বিভোর তুই যদি এই গুলা পব্লিশড করিস তাহলে কিন্তু আমি সবাই কে বলে দিবো তুই গে।সবাই চোখ বড় বড় করে বিহান ভাই এর দিকে তাকিয়ে পড়ে।বিহান ভাই বলে এভাবে তাকিও না কাহিনী ইজ ভেরি সত্যি।বিভোর ভাই আলিপ কে ভালবাসে।এত হ্যান্ডসাম একটা ছেলে চোখের সামনে পরীরা আছে মেহনুবা,তোহা,রিয়া এদের সাথে আজ ও তার সামথিং কিছুই হয় নি।এগুলার মানে কি কিছুও বুঝো না তোমরা।একচুয়ালি বিভোর এর মেয়েদের প্রতি কোনো ফিলিংস ই নেই।হি লাভড আলিপ। আলিপ করূন দৃষ্টিতে বিহান ভাই এর দিকে তাকিয়ে বলে বিহান ভাই আজ ভালবাসা দিবসের দিনে তার সামনে এভাবে আমার ইজ্জত বল সাবান দিয়ে না ধুইলেই পারতেন।বিভোর ভাই বলে শুধু কি আলিপ তোমার সাথে আমার ও তো ইজ্জত মেরে দিলো।আজ যদি আমার হবু প্রেমিকা আমাকে গে ভাবে আমি বিহানের বউ কে অভিশাপ দিবো।

বিভোর ভাই দৌড়ে গিয়ে আলিপের গালে একটা চুমু দিয়ে বলে আলিপ বেবি উম্মমাহ আই লাভ ইউ সো মাস।আমরা সবাই প্রচন্ড হাসাহাসি করলাম।

বিহান ভাই বলেন বিভোর ভাই আমার বউ কে ভুলেও অভিশাপ দিও না সে তোমাদের বোন।সবাই আবার ও সন্দিহান তাদের বোন মানে।বিহান ভাই বলে এত ভাবার কি আছে।আমার বউ এর দেবর তোমরা আর সে তোমাদের ভাবি না বড় বোন হবে।পিওর বোন হবে তাই অভিশাপ দিয়ে আদরের বোন টাকে মেরো না।সে একটা নিশপাপ পিচ্চি মেয়ে।ভুলেও আমার পুচকি কে কিছু বলবা না।

বিভোর ভাই বলে এরপর ও আমি থেমে থাকবো না স্রোতোশিনীর কথা বলবোই।আবির ভাইয়া বলে কিরে বিহান আসলেই কি আছে এই স্রোতোশিনী নামক কেউ আছে।সকলের বিভিন্ন প্রশ্ন।এর ই মাঝে তোহা আপু বলে বিহান বলো প্লিজ সবাই জানুক।

বিহান ভাই বলেন হুম আছে।স্রোতোশিনী আছে।আমার প্রতিটি স্পন্দনে স্রোতোশিনী আছে।ওর থেকে সুন্দর চেহারার মেয়ে আজ ও আমার চোখে পড়ে নি।জানিনা সৃষ্টিকর্তা ওকে এতটা সুন্দর কিভাবে বানিয়েছেন।আমি ভয়ানক ভাবে ওর প্রেমে পড়েছি।সারাক্ষণ আমার সামনে দিয়ে ঘুর ঘুর করে।শালিক পাখির মতো কিচির মিচির করর ঝগড়া করার সময় ওর ঠোঁট দুইটা যখন নড়ে আমি নেশায় পড়ে যায়।ও একটা রাগপরী।এখনো রেগে আছে। তোমাদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি আর সে চাইছে আমি তাকে নিয়ে স্পেশাল কোথাও যায়।সে বড্ড অবুঝ সে তো বুঝে না ভালবাসা যত প্রকাশ করবো ততটাই আমাকে নিয়া তার ভাবনা টা কমে যাবে।আমি চাই সে আমায় নিয়ে ভাবুক কারণে অকারণে ভাবুক।তার ভাবনায় এই আমি ই থাকি।

আলিপ বলে বিহান ভাই সে কি সত্যি এত সুন্দর। দিয়ার চেয়েও সুন্দর।

বিহান ভাই আমার দিকে তাকিয়ে বলেন।হুম দিয়ার চেয়েও সুন্দর। দিয়া তার কাছে কিছুই না।বিহান ভাই আমার দিকে তাকিয়ে বলছেন আমি যাকে ভালবাসি সে একটা মাত্র কারণ আমার বেঁচে থাকার জন্য।

আমি তখন সিওর হলাম সে এতই সুন্দর তাহলে তোহা আপুই হবে।কারণ আমি শ্যামলা অত সুন্দর না।বিহান ভাই যে সাংঘাতিক সুন্দররের বর্ণনা দিচ্ছেন আমি তার কিছুই না।বুকটা হাহাকার করে উঠলো।মনে চাচ্ছে এখান থেকে উঠে বাসায় গিয়ে সুয়ে পড়ি।বিহান ভাই আমার দিকে তাকিয়ে পাঞ্জাবীর কলার একটু উঁচু করে ঝাকিয়ে নিয়ে বাঁকা হাসি দিলো।এই হাসির মানে দিয়া তুই জ্বলে পুড়ে মর।আমার প্রেমিকা আছে তুই তার পায়ের নখের যোগ্য ও না।

আমি বললাম যাকে এত ভালবাসেন বলে দিচ্ছেন না।

বিহান ভাই বলেন,বললেই বলবে আপনি গিরগিটি বলেই ডান চোখ টিপে দিলেন উনি।

এইদিকে তোহা আপু আমাকে বসতে দিচ্ছে না যা বিহান কে প্রপোজ কর।

বিহান ভাই কে মেসেজ দিলাম কথা আছে।

বিহান ভাই ফোন নিয়ে বিভোর ভাই হটসপট নিচ্ছিলো।এমন সময় বিভোর ভাই চিৎকার দিয়ে বলেন ইয়েস স্রোতোশিনী মেসেজ দিয়েছে কথা আছে।কিরে বিহান স্রোতোশিনী দিয়ে নাম্বার ও সেভ রেখেছিস।বিহান ভাই বলেন বিভোর ফোন দে বলছি। কাজিন গুষ্টির সবাই এগিয়ে গেলো বিহান ভাই এর ফোনের মেসেজ দেখতে। বিভিন্ন আইডি থেকে মেসেজ আসছে,, বিভোর ভাই জোরে পড়ছেন বিহান ভাই আই লাভ ইউ।প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিবেন না।
আবার মেসেজ এসছে বিহান একটা মেসেজ ও কি সিন হবে না।।।।
ফোনে ফেস লক করা যার ফলে কেউ পুরা মেসেজ পড়তে পারছে না।

বিহান ভাই বলেন ওমন কত শত মেসেজ অযত্নে পড়ে আছে তার ঠিক নেই।ওসব সিন করার ই টাইম নেই আমার।

বিহান ভাই এমন ই মানুষ। কারো মেসজের গুরুত্ব উনি কখনোই দেন না।বিশেষ করে মেয়েদের এসব প্রেম ভালবাসার মেসেজের।

তোহা আপুর দেওয়া রোজের স্টিক নিয়ে গেলাম।ওদিকে সবআই বিহান ভাই এর ফোন নিয়ে বিজি।বিহান ভাই কে ফাঁকায় ডেকে নিয়ে গেলাম।

বিহান ভাই হাতে ফুল দেখে বলেন কিরে প্রপোজ করবি নাকি।

“হুম”

“সিরিয়াসলি”

বিহান ভাই আমি আপনাকে খুব ভালবাসি আপনি কি সেটা বুঝেন না।আপনিও তো আমায় খুব ভালবাসেন।বিহান ভাই আপনি কি আমার মনের অনুভূতি বুঝেন না।আমার মনে হলো আজ ই বলার জন্য উত্তম সময়।বলেই ফুলের স্টিক টা বিহান ভাই এর দিকে এগিয়ে দিলাম।বিহান ভাই যেন পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।কি বলছি বুঝছেন না।এমন সময় বলে দিয়া তুই।বিহান ভাই এর ঠোঁটে মৃদু হাসি।

সাথে সাথে আমি বলি এটা আমার না তোহা আপুর কথা উনি আপনাকে ভালবাসে।

চলবে,,,,

(আজকের পর্বটা বেশ বড় দিয়েছি।এই স্টোরি টা কি আপনাদের ভাল লাগছে।ভাল লাগলে বড় করবো না হলে কয়েক পার্ট এ শেষ করবো)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here