চড়ুইপাখির বন্ধুত্ব পর্ব ৬+৭

0
287

চড়ুইপাখির বন্ধুত্ব .
মাইশাতুল মিহির [লেখিকা]

[০৬+০৭]

কুমিল্লা তে অর্পনের আজ আট দিন। এতো তাড়াতাড়ি সময় চলে গেলো যে কেউ টেরও পায়নি। সময় যেন নদীর স্রোতের মতোই প্রভাহমান। কখন যে ঢেউ এপাড় থেকে ওপাড় চলে যায়। আরো কিছুদিন থেকে অর্পন কক্সবাজার চলে যাবে। এর মাঝেই একটি দিন-রাত সে কোটবাড়ি অর্থাৎ তার বড় মামার বাসায় কাটিয়েছে। আর এই এক দিনই অর্ষা অর্পনকে ভিষন ভাবে মিস করেছে। গতকালকের ঘটনার কথা অর্পনের সাথে শেয়ার করার জন্য মন ব্যাকুল হয়ে আছে তার। অর্পনের সাথে সারাদিন ঝগড়া করলেও একে অপরের মাঝে বেশ ভালো বন্ধুত্ব দুজনের। তাড়াতাড়ি আসার জন্য অর্পনকে কয়েকটা ম্যাসেজ দিল সে। মোবাইল ব্যাগে রেখে হেনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বের হলো অর্ষা। ঘড়ির ঘন্টার কাটা নয়টার ঘরে আর মিনিটের কাটা ছয়ের ঘরে। সকালের আবহাওয়া আজ শীতল। সূর্যিমামা বোধহয় আজ সকলের প্রতি করুণা হয়েছে। তাই তো আজ তার উত্তাপ খুবই কম। সিঁড়ি বেয়ে নেমে বিল্ডিং’এর বাহিরে আসলো অর্ষা। আশেপাশে তাকিয়ে একটা রিকশা ডাকলো। তখুনি সাদাত ডাক দিলো অর্ষাকে।

‘হেই অর্ষা! কোথায় যাচ্ছো?’

রিকশায় উঠার জন্য অগ্রসর হচ্ছিলো অর্ষা। ডাক শুনে পিছে ঘুরে ঠোঁটে সৌজন্যমূলক হাসি টেনে বললো, ‘ভার্সিটিতে যাচ্ছি!’

‘ওহ সাবধানে যাও!’

অর্ষা কথা বাঁড়ালো না। দ্রুত রিকশায় উঠে চলে গেলো। সাদাত তার জায়গায় ঠায় দাঁড়িয়ে অর্ষার চলে যাওয়া দেখলো। রিকশা চোখের আড়াল হতেই সাদাত বাসায় ঢুকার জন্য পা বাড়ালো। গেইটের কাছে এসে দেখে নিরব পকেটে দুই হাত গুঁজে গেইটের পাশে লাগানো বাগানবিলাস গাছে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সাদাত হাসিখুশি চেহারায় তাকালো নিরবের দিকে। নিরব সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে এক হাতে চুল ঠিক করলো। এগিয়ে এসে সাদাতের শার্টের কলার হাল্কা ঠিক করে বললো, ‘দৃষ্টি সংযত রাখতে শিখ। নাহলে আমাকে শিখিয়ে দিতে হবে। আর আমি যদি শিখাই তাহলে ভালো পথে শিখাবো না জানিস। সাবধানে থাকিস।’

সাদাত ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন। বুঝতে না পেরে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়লো, ‘মানে বুঝলাম না।’

ঠোঁট কামড়ে মৃদু হাসলো নিরব। বললো, ‘তোকে সাবধান করছি। অন্যের সম্পদের দিকে নজর দিবি না। নাহলে মুখ থুবড়ে পরে যাবি। নিলয় কখনো তার নিজস্ব জিনিসে আপোষ করে না। মাইন্ড ইট!’

শার্টের হাতা কুনই পর্যন্ত টেনে ভাজ করতে করতে চলে গেলো নিরব। সাদাত এখনো আহাম্মকের মতো দাঁড়িয়ে রইলো। কার সম্পদে নজর দিয়েছে সে? নিরব ভাইয়ের কথা গুলো ক্যালকুলেশন করতে লাগলো। ভাবতে ভাবতে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো সে। চার তলার সিঁড়িতে এসে সম্পূর্ণ কথা তার বুঝে আসলো। তাৎক্ষণাৎ চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো তার। এটা কিভাবে সম্ভব? তার মানে কি নিরব ভাই??

সারাদিন কোলাহলপূর্ণ ভার্সিটিতে থেকে বিকেলে বাসায় ফিরলো অর্ষা। মাথা ব্যাথায় তার ঝিমঝিম করছে। কলিংবেল বাজানোর পর হেনা দরজা খুললো। অর্ষার চোখ মুখ দেখে চিন্তিত হয়ে উঠলো হেনা।

‘কিরে? তোর মুখ এমন দেখাচ্ছে কেন? কাল কি হয়েছিল তোর সাথে? আমাদের জানালি না কেন?’

ভিতরে ঢুকলো অর্ষা। পায়ের জুতো খুলে সোফায় হেলান দিয়ে বসলো। শুধাল, ‘নিরব ভাই সেখানে ছিলো। উনি ব্যাপার টা হ্যান্ডেল করেছে। তাই কিছু জানাই নি।’

হেনা অর্ষার জন্য লেবুর শরবত এনে দিয়ে রাগে গিজগিজ করতে করতে বললেন, ‘কত সাহস এই দুইটা ছেলের। তাদের ঘরে কি মা বোইন নাই? ছিঃ, তোর বাবা বিচারকার্যে গিয়ে জানতে পেরেছে সব। নিরব নাকি আচ্ছা মতো ধুলাই দিয়েছে দুইটাকে। ছেলেটা বেশ ভালো। এলাকার সব সমস্যা একা সামলায়। এমন ছেলে আর কয়টা পাওয়া যায় বল?’

চোখ তুলে তাকালো অর্ষা। সোজা হয়ে বসে বললো, ‘হ্যাঁ নিরব ভাইয়ের এই দিক গুলো ভালো।’

হেনা আরো কিছুক্ষন নিরবের প্রশংসা করলো। তারপর অর্ষার জন্য খাবার গরম করতে রান্না ঘরে গেলো। অর্ষা রুমে এসে গোসল করে খাবার খেয়ে নিলো। এখন বসে বসে টিভিতে সিরিয়াল দেখছে সে। কলিংবেল বাজায় উঠে গিয়ে দরজা খুলে দেখে অর্পন ও অর্জন এসেছে। ওদের দেখেই অর্ষা তাচ্ছিল্য করে বললো, ‘হাহ্, আম্মু নবাবজাদারা আসছে।’

বলেই সোফায় গিয়ে আসন-পেতে বসলো। অর্জন চুপচাপ নিজের রুমের দিকে চলে গেলো। অর্পন এগিয়ে অর্ষার পাশে সোফায় গা এলিয়ে বসলো। টিভিতে হিন্দি সিরিয়াল দেখে বিরক্ত হলো।

‘কি সব দেখিস এগুলো? সারাদিন খালি একজন আরেক জনের সংসারে আগুন লাগাতে ব্যস্ত থাকে। এইসব দেখে শিখে পরে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে এভাবে আগুন লাগাবি। তারপর বাপ মার নাম ডুবাবি।

চোখ পাকিয়ে তাকালো অর্ষা। কটমট করে বলল, ‘তোর বউ এমন করবো। ফালতু কথা বলছ কেন? কাল থেকে এখন অব্ধি ভালো ছিলাম। যেই তুই আসলি ওমনি শুরু করে দিলি।’

– ‘জি না! বরং এটা বল আমি আর অর্জন দুইজনই সেখানে ভালো ছিলাম। তোর মতো শাঁক:চু:ন্নির মুখ রেগুলার দেখা লাগছে না।’

তীক্ষ্ণ চোখে তাকালো অর্ষা। চেহারায় স্পষ্ট বিরক্তি এনে টিভি দেখতে লাগলো। বেশকিছু সময় পর অর্পনের মনে পরলো অর্ষা তাকে কিছু বলবে। সময় নষ্ট করলো না।

– ‘তুই কিছু বলবি বলেছিলি। বল কি হয়েছে?’

অর্ষা টিভি বন্ধ করে রিমোট সোফার সামনের টি-টেবিলের উপর রেখে উঠে দাঁড়ায়। বললো, ‘এখানে না। ছাদে আয়!’

অর্পন মাথা দুলিয়ে সম্মতি দিলো। অর্ষা হেলে-দুলে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছে। অর্পন তার পিছনে পকেটে হাত গুঁজে অর্ষাকে দেখে হাটছে। কেন দেখছে তার জানা নেই। তবে তাকিয়ে থাকতে ভালো লাগছে তার। মনে মনে মৃদু হেসে ফেললো অর্পন। গোধূলির আবিরের রঙ্গে মুখরিত সন্ধ্যার আকাশ। পশ্চিম পাশে সূর্য কিছুসময় পর ডুব দিবে। তার পর ধরনী করবে অন্ধকারাবৃত। সদ্য ফোঁটা গাছের পাতার ফাঁকে-ফাঁকে ঝিঝিপোকাদের কোলাহলের মেলা জমে যাবে। এক-ঝাক তারা উঠবে আকাশে। সন্ধ্যার ছাদে প্রবাহিত মৃদু শীতল বাতাসে মনের আনাচে-কানাচে ভালোলাগা দুল খায়। অর্ষা ছাদে এসে লম্বা করে প্রাণ ভরে নিশ্বাস নিলো। আশে পাশে চোখ বুলাতেই দেখলো সাদাত ছাদে বসে আছে। অর্পনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে ভেবে ডাক দিলো।

– ‘সাদাত ভাই?’

অর্ষার কণ্ঠস্বর শুনে পিছে ফিরে তাকালো সাদাত। কুঁকরানো লম্বা বাবরি চুল গুলোর মাঝে ক্লিপ নেই বিধায় কপাল জুড়ে পরে আছে। চোখে কালো ফ্রেমের পাওয়ারফুল চশমা। অর্ষাকে দেখে তার সকালের ঘটনার কথা মনে পরে গেলো। নিরব ভাই দেখতে ভদ্রস্থতা হলেও প্রচন্ড বদমেজাজি ও রাগি মানুষ। অর্ষার সাথে যদি ভাব জমাতে যায় তো দেখা যাবে সত্যি সত্যি মে’রে’ই দিবে। শুকনো ঢুক গিললো সাদাত। অর্ষার ডাকের পাত্তা না দিয়ে তড়িঘড়ি করে নিচে নেমে গেলো। সাদাতের এমন ব্যবহারে অর্ষা অনেক অবাক হলো। অর্পন বলল, ‘তোকে ভয় পায় নাকি?’

অর্ষা অবাক চোখে সামনের বিল্ডিং’এর ছাদের দিকে তাকিয়ে থেকেই বললো, ‘না। প্রায় সময় ছাদে দেখা হলে কথা হয় আমাদের। কবিতাও শুনায় আমাকে।’

– ‘তাহলে?’
– ‘জানি না তো কি হলো। আজ সকালেও ভার্সিটিতে যাওয়ার আগে কথা হয়েছে আমাদের।’

পাত্তা দিলো না অর্পন। ছাদের কার্নিশে হেলান দিয়ে বললো, ‘বাদ দে। তুই কি বলবি বল। ‘

অর্ষাও আর ব্যাপারটা নিয়ে মাথা ঘামালো না। অর্পনের পাশে দাঁড়িয়ে সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বললো। অর্পন প্রথমে রেগে গেলো শেষে সম্পূর্ণ ঘটনা শুনে প্রচুর হাসলো। তার হাসি যেন থামছেই না। বিশেষ করে ছেলেগুলো হাসপালে ভর্তি আছে শুনার পর থেকে। তার হাসি দেখে অর্ষা নিজেও হাসলো। কিছুসময় পর মুয়াজ্জিনদের ডাক পরলো। সূর্য পশ্চিম আকাশে ডুবে পরিবেশ অন্ধকার করেছে। ইতিমধ্যে আকাশে উড়ন্ত কালো পাখি গুলো ঢানা ঝাপটে যার যার গন্তব্যে চলে গেছে। অন্ধকার নেমে আসায় নিচে নেমে এলো দুজন। অর্পন বাসায় এসে অর্জনকে জুরপূর্বক মসজিদে নিয়ে গেছে নামাজ পরতে। অর্ষা হেনা বাসায় নামাজ পরলো। নামাজ আদায়ের পর পড়তে বসলো অর্ষা। মাথায় তার বিরাট চাপ। দুইটা এসাইনমেন্ট কাল জমা দিতে হবে তার। তাই আজকের পড়ার চাপ প্রচুর। রিফাতকে ম্যাসেজ দিয়ে জানিয়ে দিলো আপাতত সে পড়তে বসেছে। ফ্রি হয়ে কল দিবে। মাথা থেকে সকল চিন্তা ঝাপটে ফেলে দিয়ে পড়ায় মন বসালো অর্ষা। অর্পনরা নামাজ শেষে বাসায় এসে অর্জনকে পড়তে বসায়। অর্জন বরাবরই ভবঘুরে। পড়ার প্রতি তার মন একদমই নেই। হোম-টিউটর রাখলেও অর্জনের এই খাম-খেয়ালির জন্য কেউ বেশিদিন থাকে না। এখন যতোদিন অর্পন আছে ততোদিন তাকে পড়ায় সাহায্য করবে বলে ঠিক করলো সে। আপাতত বাসায় এসে তাই করছে।
.
.
আজকের আকাশ ঘোলাটে। সূর্য কালো মেঘের নিচে ঘামটি মেরে বসে আছে। সাদা-কালো কাদম্বরী ভাসছে আকাশে। ছিমছাম পরিবেশে মৃদু শীতল হাওয়া জানান দিচ্ছে আজকে সূর্যের প্রচন্ড উত্তাপ পরবে না। হয়তো কিয়ৎক্ষণ পর আকাশ কাঁপিয়ে বর্ষণ নামবে। ভারী বর্ষনে মুখরিত হবে কুমিল্লার প্রত্যেক অলিগলি। এমন মনোরম একটা দিন কিছুতেই হাত ছাড়া করতে নেই। তাই তো অর্ষা কেবল এসাইনমেন্ট জমা দিয়ে চলে এসেছে। ক্লাস করবে না। আজকে অর্পন কে নিয়ে ঘুরতে বের হবে। যেই ভাবা সেই কাজ। বাসায় এসে নতুন করে তৈরি হয়ে নিলো। অতঃপর অর্পন ও অর্জনকে নিয়ে বের হলো ‘ম্যাজিক প্যারাডাইস’এর উদ্দেশ্যে। পুরোটা দিন এখানে সেখানে ঘুরাঘুরি শেষ করে বিকেলের শেষভাগে বাসায় আসলো তিনজন। অর্ষার মন আজ বেশ ফুরফুরে! সন্ধ্যার পর মোবাইল হাতে নিয়ে বসলো। সারাদিনে তুলা প্রত্যেকটা ছবি দেখতে লাগলো। কিছু ছবি রিফাতকে দিলো অর্ষা। অর্পন ও অর্জনের সাথে তুলে একটা সেলফি আপলোড দিলো। অর্পনের হাত ধরে ফলোয়িং পিক তুলেছিলো কয়েকটা প্যারাডাইসের সামনে। সেখান থেকে ভালোটা দেখে ডিপিতে আপলোড দিলো।

রাতের ঘড়ির কাটা প্রায় সাড়ে সাতটার ঘরে। বাহির থেকে ভেসে আসছে যানবাহনের তীব্র হর্ণের আওয়াজ।বারান্দার দরজা ভেদ করে জ্যোৎস্নার আলোতে আঁচড়ে পরছে ফ্লোরে। টেবিলে বসে ম্যাথ করছে অর্ষা। তার পাশের চেয়ারে অর্জন কাচুমুচু হয়ে বসে আছে। মূলত তাকে রসায়ন বইয়ের সপ্তম অধ্যায়ের জারন বিজারনের বিক্রিয়া (রেডক্স) করাচ্ছে অর্ষা। রেডক্সের আগা-মাথা কিছুই বুঝতে পারছে না সে। আর অর্ষাও রেগে রেগে পড়াচ্ছে তাকে। মাঝে মাঝে জুড়ে জুড়ে ধমক দিচ্ছে। বিছানার হেড সাইডে হেলান দিয়ে বসে ছিলো অর্পন। অর্ষার পড়ানোর স্টাইল দেখে তেঁতে উঠলো।

‘পড়াতে না পারলে পড়াচ্ছিস কেন? অর্জন নতুন রেডক্স সম্পর্কে জানবে কিভাবে? তুই ভালো করে বুঝিয়ে দে তাহলেই তো হয়। ধমকাচ্ছিস কেন?’

অর্ষা বিরক্তির চোখে অর্পনের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘তুই মনে হয় ভালো পড়াস? তাহলে পড়াচ্ছিস না কেন? নিয়ে যা এই গাধা টাকে। কিছু পাড়ে না। বুঝালেও বলে বুঝে না।’

এবার অর্পন রাগলো না। গলার স্বর মোলায়েম করে বললো, ‘আরে বুঝতে পারেনা বলেই তো বলছে। তুই একটু ভালো করে বুঝা। রাগিস কেন? কিছুদিন পর তো শ্বশুর বাড়ি চলে যাবি। এখন একটু আদর কর। পরে চাইলেও রাজশাহী থেকে এখানে সহজে আসতে পারবি না।’

অর্পনের কথা শুনে ক্ষুন্ন হলো অর্ষার মন। চেহারায় মলিনতা এনে অর্পনের দিকে তাকালো। ভাবলো সে। আসলেই রাগ না দেখিয়ে এখন একটু আদর করা যাক ভাইকে। পরে চলে গেলে দেখাই হবে না। যদিও হবে তাও কম। ভেবেছিলো আদর করেই পড়াবে। কিন্তু অর্জনের কথা শুনে তা আর হলো না। রাগ তিরতির করে বেড়ে গেলো অর্ষার। কারন অর্জন পড়ার ফাকে অর্পনের কথার প্রতিত্তরে বলে উঠলো, ‘এই ফকিন্নি চলে গেলেই ভালো। ওর জন্য বাড়িটাকে শাঁক:চু:ন্নির বাসস্থান মনে হয়। চলে যা তুই তাড়াতাড়ি। আমি একা আব্বু আম্মুর আদর পাবো।’

অর্পন হাত তালি দিয়ে উচ্চস্বরে হেসে ফেললো। হাসি তার থামছেই না। অপমানে শরির রিনরিনিয়ে উঠলো অর্ষার। দাঁতে দাঁত চিবিয়ে বললো, ‘থা:প্রা:ইয়া দাঁত ফালাই দিবো বেয়া:দব। এখান থেকে যা। উঠ বলছি।’

অর্জন বই বন্ধ করে উঠে দাঁড়ালো। বললো, ‘তোর কাছে পড়া আমার বয়েই গেছে।’

প্রতিত্তুর করলো না অর্ষা। দাঁতে দাঁত পিষে বসে রইলো। অর্জন বেড়িয়ে যাওয়ার জন্য দরজার কাছে আসতেই মোঃ আসিফ আসলেন রুমে।

‘অর্পন রুমে নতুন ফ্যান লাগিয়েছি। এবার রুমে যেতে পারো। আসলেই ওই ফ্যানটা অনেক পুরাতন ছিলো তাই ক্যাপাসিটি নষ্ট হয়ে গেছে। এতোক্ষণ কষ্ট করলে।’

অর্পন বিছানা থেকে নেমে সাবলীল ভাবে উত্তর দিলো, ‘না মামা। কষ্ট কোথায় করলাম। এতোক্ষণ তো অর্ষার রুমেই ছিলাম। ব্যাপার না। অর্জন চলো আমি তোমাকে পড়াবো।’

বেরিয়ে গেলো তিনজন। অর্ষা বই বন্ধ করে উঠে দাঁড়ালো। মোবাইল হাতে নিয়ে বারান্দায় গিয়ে বেতের মোড়া টেনে বসলো। রিফাত কল দিলো কিছু সময় পর। ফোনালাপ করতে লাগলো দুজন।

চলবে??

নোট : গল্পে তো কয়েক জনের আগমন ঘটলো। তাহলে নায়ক কে হবে? কার সাথে অর্ষার মিল হবে? বলুন তো দেখি ? ভুলত্রুটি মার্জনীয়। কার্টেসি ছাড়া কপি নিষিদ্ধ। হ্যাপি রিডিং!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here