চুপকথার_গল্প #পর্ব_৬

0
949

#চুপকথার_গল্প
#পর্ব_৬
#পুষ্পিতা_প্রিমা

প্রচন্ড গরম পড়ছে। রাস্তায় কাঠফাটা রোদ। গাড়ির হর্নের আওয়াজ আর ধুলোবালি উড়োউড়ি করছে। পকেটে থাকা মাক্সটা আবার পড়ে নিল সজীব। গিয়ে দাঁড়াল একটি ফার্মেসিতে। মায়ের ঔষধ কিনে এগোতেই রাস্তার পাশে হা করে পড়ে থাকা একটি কুকুরকে দেখতে পেল। তার মতো কুকুরটির ও তেষ্টা পেয়েছে বোধহয়। এই শহরটাতে পানির ও বড্ড অভাব। পানির বোতল কিনল সজীব৷ নিজে খেয়ে নিল ঢকঢক করে। গলা ভিজে উঠল। হা করে ক্লান্ত হয়ে পড়ে থাকা কুকুরটির দিকে এগিয়ে গেল সজীব। বোতলে থাকা পানিগুলো ঢেলে দিল কুকুরটির গাল বরাবর। পানি গলায় পড়ায় নড়েচড়ে গা ঝাকিয়ে উঠল কুকুরটি। সজীব আবার ও পানি ঢালল। পকেটে রাখা বিস্কিটের প্যাকেট ছিঁড়ে খেতে দিল কুকুরটাকে। পাঁচ ছয়টা বিস্কিটগুলো এক কামড়ে খেল কুকুরটি। সজীব হাঁটা ধরল। আশ্চর্য হলো সজীব। কুকুরটি ও তার পিছুপিছু আসা শুরু করেছে। সজীব থামলে কুকুরটি ও থামে। সজীব হাঁটলে কুকুরটি ও হাঁটে।
বাসার কাছে এসে পড়ল সজীব। কুকুরটিকে বলল,
‘ আর কোথায় যাবি? বাসায় যাবি নাকি?
কুকুরটি বসে পড়ল। সজীব বলল,
‘ এখানে বসে থাকবি?
কুকুরটি জিহবা দেখিয়ে অদ্ভুত আওয়াজ করল। সজীব দোতলায় উঠে গেল। দরজা ঠেলে ডুকতেই মাকে বসা দেখল চেয়ারে । সাজিয়া বেগম ছেলেকে দেখে বলল,
” তাড়াতাড়ি গোসল সেড়ে নে আব্বা৷ কিভাবে ঘেমেছিস?
সজীব নিজের রুমের দিকে পা বাড়াল। ভেবেছে কথা স্কুলে গিয়েছে, কিন্তু না যায়নি। সজীবকে দেখে রান্নাঘরে দৌড়ে গেল কথা। শাড়ির জন্য বেশি দৌড়াতে পারল না। শরবতের গ্লাস নিয়ে আবার এল কথা। সজীবের সামনে গিয়ে ধরল।
নিল না সজীব। খেতে ইচ্ছে করছেনা। কথার মন খারাপ হলো।
সে তারপরও বাড়িয়ে দিল সজীবের মুখের কাছে। ঠোঁটের কাছে নিয়ে যেতেই খেতে হলো সজীবকে। একটুখানি খেয়ে আর খেলনা সজীব। কাপড়চোপড় নিয়ে চলে গেল ওয়াশরুমে।
বাকি শরবতটুকু খেয়ে নিল কথা। মা বলে, জিনিস অপচয় করতে নেই। খেয়ে নিজে নিজে হাসল কথা।
যোহরের নামাজ পড়ে নিল কথা। সজীব মসজিদে চলে গিয়েছে। মসজিদ থেকে ফেরার পথে আবার দেখা কুকুরটার সাথে। লেজ নেড়ে নেড়ে পিছু নিল সজীবের। বাসায় পৌঁছাল সজীব। কুকুরটি বাসার নিচে দাঁড়ানো। দোতলার দিকে তাকানো।
সাজিয়া বেগম খাবার বাড়ছেন টেবিলে। কথা ও সাহায্য করছে। সজীব পলিথিন যোগাড় করল কোথাথেকে। চামচ দিয়ে বেড়ে ভাত তরকারি নিল। ডিমের অর্ধেক দিয়ে মেখে নিল ভাতগুলো। তারপর দিয়ে আসল কুকুরটিকে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে গলা উঁচিয়ে সেই দৃশ্য দেখল কথা আর সাজিয়া।
কথা ভীষণ অবাক। কুকুরকে খেতে দিচ্ছে?
সাজিয়া বেগম মিটিমিটি হেসে বলল,
‘ বাপের রোগ কিছুটা হলেও তাহলে ছেলে পেয়েছে।
কথার মুখ ধরে তিনি বললেন,
‘দেখেছ তোমার বর কত জীবপ্রেমী?
কথা মৃদু হাসল। সে জানে। সে তো ভুল মানুষের প্রেমে পড়েনি। শুধু মানুষটা খুব ঘাড়ত্যাড়া। নাহলে আর সবগুলো অভ্যাস ভালো।
সজীব আসার আগেই দুজন টেবিলে এসে বসল। সজীব সাজিয়া বেগমের পাশে গিয়ে বসল। সাজিয়া বেগম কথাকে ইশারা করল খাবার বেড়ে দিতে। হাত কাঁপল কথার। নাকের ডগা ঘেমে উঠেছে সাথে কপাল। হাতের চুড়ির টুংটাং আওয়াজ হলো। সজীব বসে রইল নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে। কথা এটা ওটা তুলে দিল। সজীব খাওয়া শুরু করল না। কথা অসহায় চোখে তাকাল। সাজিয়া বেগম হেসে ফেললেন।
তারা খাওয়া শুরু না করলে কখনোই খাওয়া শুরু করবেনা সজীব। কথাকে বেড়ে দিল সাজিয়া বেগম। কথা মাথা নামিয়ে ভাত নেড়ে নেড়ে গালে তুলল। আঁড়চোখে সজীবের দিকে তাকাল। সাজিয়া বেগম খেতে খেতে বলল,
‘ টিউশনিগুলো দিনের বেলায় রাখার চেষ্টা করিস আব্বা। রাতে তুই কোথাও গেলে টেনশন হয় আমার।
কথা বলল না সজীব। কথা চুপিচুপি খেল। সজীব আড়চোখে কথার খাওয়া দেখল।
‘ এই ঘরের খাবার মেয়েটার মুখে উঠছে তো? এসি ছাড়া থাকতে নিশ্চয়ই কষ্ট হচ্ছে?
মাথার উপর ভনভন করে পাখা ঘুরছে। তারপর ও ঘেমেই চলেছে কথা। গরমের কারণে নয়, তার ঘামার কারণ এক, এই লোকটার সাথে একসাথে খেতে বসেছে, দুই ভাত বেশি গরম। কপাল বেয়ে ঘাম ঝড়ছে টের পেল কথা। অস্বস্তি লাগল কথার। ভুক্তাবশেষ রেখে হাত ধুয়ে চলে গেল কথা। রুমে গিয়ে মুখ ধুয়ে নিল। ভালো করে মুখ, কপাল মুছে আবার এল। হাসার চেষ্টা করল সাজিয়া বেগমের সাথে। সজীব খাওয়া থামিয়ে দিয়েছিল। কথা আসায় আবারও ভাত নেড়েচেড়ে গালে দিল।
খেয়ে উঠে চলে গেল। কথা সাজিয়া বেগমের দিকে তাকাল। তিনি হেসে বললেন,
‘ বরের সাথে খেতে আবার অস্বস্তি কিসের বৌমা? সজীব অন্য কিছু মনে করল। তোমার কি কোনো অসুবিধা হচ্ছে এখানে?
ঘনঘন মাথা নাড়াল কথা।

মোতালেব শেখ এলেন সন্ধ্যার দিকে। কথা এটা ওটা দিল, পানি ছাড়া কিছু মুখে তুললেন না। তিনি কথার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
‘ কোনো অসুবিধা হলে আমাকে মেসেজ করবে বুঝেছ? এখানে তো বেশি গরম। থাকছ কিভাবে?
কথা হাসল। ফ্যান দেখিয়ে বুঝাতে চাইল, বাতাস আছে।
মোতালেব শেখ কিছুই বললেন না আর। কপালপোড়া মেয়েটার।
টিউশনি থেকে ফিরেছে সজীব। মোতালেব শেখকে দেখে বসল । কথা ভেতরে চলে গেল। মোতালেব শেখ বললেন
‘ তোমার চাকরির কি খবর?
‘ আপাতত কোনো খবর নেই।
‘ টিউশনির টাকা দিয়ে কতটুকু পারবে তুমি? বাসা ভাড়া ও তো ছয়হাজার টাকা।
‘ ওসব নিয়ে আপনার ভাবতে হবেনা। আপনার মেয়ের থাকতে কষ্ট হলে পাঠিয়ে দেব।
মোতালেব ভীষণ আশ্চর্যান্বিত হলেন সজীবের কথায়৷
‘ এসব কোন ধরণের কথা বলছ তুমি? আমার মেয়ে কি হাতের পুতুল নাকি? দরকার হলে তোমার মাকে নিয়ে ও যাব আমার বাড়িতে। কলি আর সুমনকে বাসায় পাঠিয়ে দেব। আমার কাছে কথার ভালো থাকাটা আগেই। ওর থাকতে কষ্ট হচ্ছে দেখলে আমি নিজেই ওকে নিয়ে যাব। বিয়ের চুক্তিতে এরকম কিছু লেখা ছিল না। সুমন আর কলির জন্য বাসা ঠিক করেছি, ওরা সেখানে চলে যাবে আগামী মাসের দিকে। আমি কথাকে নিয়ে যাব।

‘ আপনার মেয়ে, যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন। কিন্তু আমি আপনার বাড়িতে গিয়ে থাকতে পারব না।
‘ সুমন থাকবেনা বলছি তো।
‘ তাদের তাড়িয়ে আমি থাকব না ওখানে। আপনি কোনোকিছু সহজেই বুঝতে চাননা। তাই বুঝাতে চাইছিনা।
মোতালেব সাহেব রাগ চেপে ধরলেন। এই ঘাড়ত্যাড়া ছেলেটার সাথে কথা বলে আরাম নেই।
সজীব এগিয়ে দিল মোতালেব সাহেবকে। গাড়িতে উঠে তিনি চলে গেলেন৷
সাজিয়া বেগম বের হলেন রুম থেকে। কথাকে ডেকে বললেন,
‘ তোমার কি এখানে থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে বৌমা?
কথা ঘনঘন মাথা নাড়িয়ে বলল না জানাল। মুখ দিয়ে অদ্ভুত অদ্ভুত শব্দ করে এটা ওটা বলল, যার কিছুই সাজিয়া বেগম বুঝলেন না। তারপর বুঝতে পারছে, এমন করে মাথা নাড়তে লাগলেন।

সকাল দশটায় কথা বের হলো স্কুলের উদ্দেশ্যে। সাজিয়া বেগম ভাতের প্লেট নিয়ে পেছন পেছন দৌড়ে শুধু দুই লোকমা খাইয়ে দিতে পারল। বেশি খেলনা কথা। সজীব বাসায় নেই। কথাকে কিছুদূর বাড়িয়ে দিল সাজিয়া বেগম।
একা একা কিছুদূর যেতেই বখাটের পাল্লায় পড়ল কথা। সজীবকে নিয়ে নানানরকম কথাবার্তা চলছে। কানে এল কথার,
‘ সজীব্বের কপাল ভালা। শালা বেকার হয়ে ও বউ পাইয়া গেছে।
আরেকজন বলল,
‘ এটা এই সেই বউ নয়। বোবা বউ। আঃ উঃ করে কথা বলে।
ছেলেগুলোর অট্রহাসি কানে এল কথার। কপাল কুঁচকে গেল আপনাআপনি। চরম বেয়াদব এগুলো। কথা মাথা নিচু করে এগোলো। তার পিছু নিল বখাটেগুলো।
‘ ভাবি ভাবি ডেকে রসিকতা করতে লাগল। ঘৃণা লাগল কথার। পিছু ফিরে আঙুল দিয়ে শাঁসাল কথা। তার বরকে বলে ঘুষি খাওয়াবে একদম। ছেলেগুলো আর ও জোরে জোরে হেসে বলল,
‘ কি বলল তোরা বুঝতে পেরেছিস? আমি তো কিছুই বুঝতে পারিনি। ভাবি কি বললেন বুঝিনি। আর একটু জোরে বলেন।
কথা থেমে গেল। সামনে এগোনোর জোঁ নেই। ছেলেগুলো কয়েকটা সামনে দাঁড়িয়ে আছে কতগুলো পেছনে। মাথা নামিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল কথা।
ঘেউঘেউ করে কোথাথেকে দৌড়ে এল একটি কুকুর। ছেলেগুলোর পেছন পেছন দাওয়া করল। ছেলেগুলো পালিয়ে কূল পেলনা। কথা ভয়ে এককোণায় দাঁড়িয়ে পড়ল। কুকুরটি যদি তাকে কামড়ায়?
না তার দিকে এলোনা। ছেলেগুলোকে দাওয়া করে কুকুরটি কথার সামনে চলে এল। বসে পড়ে মনিবের দাসত্ব স্বীকার করার মতো চেয়ে রইল। কথা হেসে দিল খিলখিল করে। তার হাসির আওয়াজ ফেটে পড়ল আশেপাশে।
সে হেঁটে রাস্তার কাছে গেল। কুকুরটি তার পিছুপিছু। কথা উঃ উঃ শব্দ জিজ্ঞেস করতে চাইল,
‘ তোমার মনিব কোথায়?
কুকুরটু জিহবা দেখিয়ে আওয়াজ করতে লাগল। তারপর রাস্তা খালি দেখে দৌড়ে চলে গেল রাস্তার ওপাশে। কথা দেখল সজীবকে। সজীব জিজ্ঞেস করল কুকুরটিকে,
‘ কি হয়েছে তোর? কুকুরটি রাস্তার ওপাশে কথার দিকে চেয়ে রইল। সজীব কুকুরটির চাওয়াচাওয়ি নিজে ও তাকাল। কথাকে দেখল সজীব। রিকশার জন্য দাঁড়িয়েছে কথা। রাস্তা পার হয়ে এল সজীব। রিক্সাচালককে ডাকল,
‘ মামা ডিসি স্কুলের সামনে যাবেন?
রিক্সাচালক এল। বলল,
‘ জ্বি যামু। কয়জন যাবেন?
কথা দৌড়ে এল। সজীবের হাত ধরে দু আঙুল দেখাল রিকশাচালককে। সজীবের অবাক চাহনিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে কথা উঠে বসল রিকশায়। সজীবের হাতটা ধরা।
সীমাহীন বিস্ময় নিয়ে সজীব রিকশায় উঠে পড়ল। কথা তার হাত মুঠোয় বন্দী করল। কুকুরটিকে ফ্লাইং কিস দিয়ে হাত দিয়ে টা টা দিল। তারপর নিজে নিজে হাসল।
পাশ ফিরে সজীবকে দেখে মাথা নামিয়ে ফেলল লজ্জায়। সজীব চোখ ফিরিয়ে নিল।

স্কুলের সামনে যেতেই কথা নেমে গেল রিকশা থেকে। সজীবকে টেনে নামাল। সজীব শুধু হা করে তাকিয়ে দেখছে মেয়েটার কান্ড। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তাকে?
গেইট ঠেলে স্কুলে ডুকে পড়তেই খেলাধুলা করা বাচ্চাগুলো দৌড়ে আসে কথার কাছে। কথা সজীবের হাত ছেড়ে বাচ্চাগুলোকে ধরে। ইশারায় হাত নেড়ে নেড়ে কি যেন বলে সবাই। সজীব কিছুই বুঝল না। কথা সবাইকে ক্লাসরুমে চলে যেতে বলল। সবাই চলে গেল।
স্কুলের প্রিন্সিপাল এল কথাকে দেখে। হেসে জিজ্ঞেস করল,
‘ কেমন আছ কথা?
কথা মাথা দুলিয়ে হাসল।
সজীবকে দেখিয়ে দিল চোখের ইশারায়। প্রিন্সিপাল হেসে বলল,
‘ মিঃ সজীব? তোমার বর?
কথা মাথা দুলালো।
প্রিন্সিপাল হাত বাড়িয়ে দিল, হ্যান্ডশেক করে সৌজন্যে রক্ষার্থে হাসল সজীব।
কথা উঃ আঃ করে কি কি যেন বলল প্রিন্সিপালকে। সজীব শুধু দেখে গেল। প্রিন্সিপাল যেতে যেতে সজীবকে বলল,
‘ আমাদের অফিসে আসুন মিঃ সজীব। সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিই। সজীব গেল পিছু পিছু।
কথা ক্লাস নিতে চলে গেল।

ক্লাস শেষ করে এসে অফিসে ডুকল না কথার। সজীবের কন্ঠস্বর ভেসে আসছে। তনিমা ম্যাডামের সাথে এত কিসের কথা? ওনি বিবাহিত না?
রাগে দুঃখে বুক ভার হয়ে এল কথার। তার সাথে একটুও কথা বলেনা, অথচ এখন কি পরিমাণে বকবক করছে।
ফোঁটা ফোঁটা জল পড়ল কথার গাল বেয়ে। অফিসে ডুকল থমথমে মুখে। ব্যাগ নিয়ে ধুপধাপ পা ফেলে বের হয়ে গেল অফিস থেকে।
আর ক্লাস করবেনা বলে ইশারায় বলে আসল। সজীব ও তার পিছুপিছু বের হয়ে এল। কথার এমন থমথমে মুখ দেখে কিছুই বুঝার উপায় নেই। গেইট পেরিয়ে কাছে গিয়ে দাঁড়াল কথা। রিকশা চালককে ডেকে উঠে বসল। সজীব ও উঠে বসল।
রিকশা চলতে শুরু করেছে। সজীব নিজের হাতের দিকে তাকাল। হাত ধরল না কেন? আজব!
হাত গুটিয়ে নিতেই কথা ধরে ফেলল তার হাত। কথা অন্য হাত দিয়ে উরুধুরা চিমটি বসালে সজীবের হাতে। চিনচিনে ব্যাথা লাগল সজীবের। এভাবে কেউ চিমটি দেয়?
ফোঁপাতে ফোঁপাতে সজীবের হাতে চিমটি মারতে লাগল কথা৷ সজীব নিজের হাতের দিকে অসহায় হয়ে চাইল। শেষ হাতটা। টুপ করে বৃষ্টিজলের মতো এক ফোঁটা পানি পড়ল সজীবের হাতে। সজীব চোখ তুলে দেখল কথাকে। আরেহ এই মেয়ে কাঁদছে কেন? কি সমস্যা?
সজীব সোজা হয়ে বসল। বলল,
‘ আমি নেমে যাব এখন।
কথা তাড়াতাড়ি চোখ গাল মুছে নিল। সজীবের বাহু আঁকড়ে ধরল। মাথা রাখল। তারপর খুব আলগোছে চিমটি বসালো সজীবের বাহুতে।
সহ্য করে নিল সজীব। হাসল মৃদু।
বাসায় গিয়ে সজীবের নামে একশ এক অভিযোগ শোনাল সাজিয়া বেগমকে। সাজিয়া বেগম কিছুই বুঝল না। কিন্তু সজীব কিছু একটা করেছে তা বুঝতে পারল। তিনি সজীবকে গিয়ে বলল,
‘ তুই আবার কার সাথে কথাটথা বলেছিা সজীব। ওর চোখের জল শুকোচ্ছে না।
সজীব মুখ মুছতে মুছতে মাকে জবাব দিল,
‘ হাতটা ব্যাথা করছে মা। কিভাবে চিমটি মারল।
সাজিয়া বেগম বললেন,
‘ কে এভাবে মেরেছে চিমটি? কে?
সজীব থতমত খেল। আমতাআমতা করে বলল,
‘ কেউ না। কোথায়? ব্যাথা করছে না তো। এমনি এমনি বলেছি।

চলবে,
গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here