ঘৃণার মেরিন সিজন ৪( পর্ব ২০+২১)

0
544

#ঘৃণার_মেরিন 4
part : 20
writer : Mohona

নীড় : 😱।
মেরিন : নিন … এখন চুপটি করে ঘুমান ।
নীড় ড্যাপড্যাপ করে তাকিয়ে রইলো।
মেরিন : এভাবে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই। আমার প্রেমে আপনি পরবেননা। ঘুমান। চোখ বন্ধ।
নীড় মনে মনে : মেয়েটা কখনো স্বাভাবিক কথা বলতে পারেনা।
মেরিন ধীরে ধীরে মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। নীড় চোখ বন্ধ করে আছে। হঠাৎ মনে হলো হাতে ১ফোটা গরম তরল পরলো।
নীড় মনে মনে : মেরিন কাদছে …
নীড় তারাতারি চোখ মেলল। নাহ… মেরিনতো স্বাভাবিকই আছে।
মেরিন : কি হলো?
নীড় কিছু না বলে কয়েক সেকেন্ড মেরিনের দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ বন্ধ করে ফেলল।

নীড় মনে মনে : যতোই লুকাও… আমি জানি তুমি কাদছো মেরিন। আমি জানি তুমি কাদছো। আমার পা অকেজো হয়ে যেতে পারে… আমি চাইলেও তোমার থেকে পালাতে পারবোনা… এই কথাটার মধ্যে তোমার আনন্দ না। তোমার ব্যার্থতা … তোমার আক্ষেপ মিশে আছে । যন্ত্রনা মিশে আছে । যে আমার এই অবস্থা। আর আমার ব্যান্ডেজ করা চেহারাটা তোমার কাছে কিউট লাগছেনা… তোমাকে অসহনীয় কষ্ট দিচ্ছে। তোমার সহ্যসীমা বাহিরে… সেটা আমি বেশ বুঝে গিয়েছি। তবে অবাক হলাম… তোমার বাকীসব ফিলিংসের মতো আমার প্রতি ভালোবাসাটাও … চিন্তাটা আড়াল করলে । যেটা তুমি কখনো করোনা। তারজন্য ভীষন ভয় হচ্ছে … তুমি নিজের কোন ক্ষতি না করে ফেলো…
এসব ভাবতে ভাবতে নীড়ের অজান্তেই ওর চোখের কোনে পানি চলে এলো। সেগুলো নিচে পরার আগেই মেরিন ঠোট দিয়ে শুষে নিলো।
এরপর বেশ ঠান্ডা গলায়
বলল : আপনার কি কষ্ট হচ্ছে নীড়?
নীড় চুপ।
মেরিন : দারান আমি ডক্টরকে ডেকে নিয়ে আসি ।
মেরিন উঠতে নিলে নীড় কেবল ওর হাতে টাচ করলো। মেরিনের হাত ধরে আটকানোর মতো অবস্থায় ও নেই। আর মেরিনের সাথে কথা বলতে চাইছেনা ।
মেরিন বুঝতে পারলো যে নীড় ওকে যেতে না করলো। তাই ও আর গেলো। বসে রইলো । নীড়ের মাথায় হাত বুলাতে লাগলো। কিছুক্ষনপর নীড় ঘুমিয়ে পরলো ।।

.

একটুুপর …
জন : ম্যাম আসবো?
মেরিন : হামম ।
জন ঢুকলো ।
জন : স্যার এখন কেমন আছে ?
মেরিন : ভালো।
জন : ম্যাম… ওর হাত ২টা তো কাটা শেষ এখন ?
মেরিন : যন্ত্রনাটা একটু কমুক। এরপর নতুন ক্ষত দিবো আজকে ওর জন্য…
তখন নীলিমার বলা কথাগুলো কানে বারি খেলো। ‘তোমার জন্য আমার ছেলের এই অবস্থা ।’
মেরিন মনে মনে : ঠিকই বলেছে মামনি। আমার জন্যই তো….
জন : ম্যাম… কি হয়েছে ?
মেরিন : কিছুনা । ডক্টর দের কি খবর ?
জন : ম্যাম নেক্সট উইকের শুরুর দিকেই তারা চলে আসবেন।
মেরিন : হামমম।
জন : আসছি ম্যাম।
মেরিন : জন শোনো…
জন : জী ম্যাম।।
মেরিন : তুমি কিছু খেয়েছো ? নাকি কাজই করে যাচ্ছো?
জন : না ম্যাম খেয়েছি।
মেরিন : ভালো। শোনো মামনি-বাবা কালকে রাত থেকে কিছুই খায়নি। ওদেরকে খাওয়াও।
জন : জী ম্যাম। ম্যাম আপনিও তো কিছু খাননি কাল থেকে। আপনিও ষদি কিছু খেয়ে নিতেন।
মেরিন : যেটা বলেছি সেটা করো।
জন : জী ম্যাম।
মেরিন : আর শোনো আমার ১টা তারকাটার চাবুক লাগবে।
জন : কিন্তু কেন?
মেরিন : আজকাল বড্ড প্রশ্ন করো।
জন : সরি ম্যাম…
জন বেরিয়ে গেলো।

.

পরদিন…
নিরা এলো নীড়কে দেখতে। হাতে ফুলের তোরা নিয়ে । ওকে দেখে নিহাল-নীলিমা-নীড় অবাক হলো। মেয়েটার সাহস কিভাবে হলো যে নীড়ের সাথে দেখা করতে এলো।
নিরা নীড়ের সামনে গিয়ে বসলো । নীড় ১বার নিরার দিকে তাকাচ্ছে আর ১বার মেরিনের দিকে তাকাচ্ছে । আর মেরিনকে যতোবার দেখছে অবাক হচ্ছে। কোনো হেলদোল নেই। কেবল শীতল নজরে দেখছে।
মেরিনের এমন আচরন নীড়কে বড্ড ভাবাচ্ছে।
নিরা : কেমন আছো নীড় বেবি ?
নীড় : ভালো ।
মেরিন : মিথ্যা কেন বলছেন ? শোন নিরা আমি তোকে বলছি। আসলে উনার ডান পায়ে অনেক যখম। হয়তো আর চলতে ফিরতে পারবেননা ।
কথাটা শুনে নিরা অবাক হলো। নীলিমার বড্ড রাগ উঠলো।
নীলিমা : তুমি কি যা তা বলছো বলো তো ? এমন করে কেউ বলে? তাও …
মেরিন : তাও নীড়ের সামনে তাইতো … কেউ বলেনা তাই আমি বলি…
নিরা মনে মনে : নীড় আর হাটতে পারবেনা । ওহ থ্যাংকস গড যে ওর সাথে আমার বিয়ে হয়নি। তাহলে এমন মানুষকে নিয়ে সংসার করতে হতো । আহারে মেরিন … তোর কপালে আসলেই সুখ নেই। এখন একটু ভালোগিরি করি…
নিরা লোক দেখানো কান্না করতে লাগলো। তবে নীড় সেটা খেয়ালই করেনি। ও মেরিনের দিকে তাকিয়ে আছে । হয়তো ওর পক্ষে কোনোদিনই মেরিনকে বোঝা সম্ভবনা।

নিরা : কেন তোমার সাথে এমন হলো? হলে আমার সাথে হতো … আমি কষ্ট পেতাম… কেন আমার সাথে হলোনা… কেন কেন কেন ?
মেরিন : তোর খুব শখ বুঝি অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার তাইনা? ওকে তোর এই ইচ্ছা আমি পূরন করে দিবো। নো ওয়ারি… এটা এখন আমার দায়িত্ব …
নীড় একটা মুচকি হাসি দিলো। ওর অজান্তেই হাসিটা চলে এলো মেরিনের এমন আচরন দেখে। পরক্ষনেই ভাবলো মেরিনকে আর অন্যায় করতে দেয়া যাবেনা । ১টা বার সুস্থ হলে মেরিনকে সব অন্যায় থেকে দূরে রাখার চেড় চেষ্টা করবো। ওর ট্রিটমেন্টও করবে।

মেরিনের কথা শুনে নিরার তো ভয় শুরু হয়ে গেলো ।
মেরিন : ভয় পাচ্ছিস কেন বলতো ? আমি তো জাস্ট তোর মনের আশাটাই পূরন করছি…
নীড় বেশ কঠোর কন্ঠে বলে দিলো : মামনি ওকে বলো যে যদি ও নিরার সাথে এমন কিছু করে তবে কসম আল্লাহর তবে নিজেকে শেষ করে দিবো …
কথাটা শুনে মেরিন নীড়ের দিকে তাকালো । বাকা হাসি দিলো।
মেরিন : ওকে ফাইন আমি নিরার সাথে ‘এমন কিছু করবোনা’ ।

নীড় বুঝলো না মেরিন ‘এমন কিছু করবোনা’ কথাটা এভাবে কেন বলল ? কেন যেন সন্দেহ লাগছে ।

আসলে মেরিন ঠিক করেছে নিরার সাথে অন্যকিছু করবে। একটুপর নিরা চলে গেলো। আর যাওয়ার পথেই নিরার হাতে আর পায়ে ব্যাপকভাবে পিটানো হলো। মিনিমাম ৬মাস খুরিয়ে খুরিয়ে হাটবে ।

.

পরদিন …
কবির রেগে মেগে এলো কথা শুনাতে ।
মেরিন নীড়ের কেবিনের বাহিরে বসে আছে। ভেতরে নীলিমা নীড়কে খাইয়ে দিচ্ছে । আসলে মেরিন ইচ্ছা করেই বেরিয়ে এসেছে। হুট করে বুকের বা পাশটাতে অসম্ভব ব্যাথা অনুভব করছে । নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে । বুকের ওপর হাত দিয়ে বসে আছে। একটু একটু হাত বুলিয়েও দিচ্ছে।
মুখ দেখেও যে কেউ বুঝতে পারবে যে ওর ভীষন কষ্ট হচ্ছে।

কবির যতো খারাপই হোক মেয়েকে যতোই অপছন্দ করুক। মেয়ে তো মেয়েই। বাবা তো বাবাই … খারাপ লাগলো। তাই আর কথা শোনানোর ইচ্ছা হলোনা। ইচ্ছা করছে জিজ্ঞেস করতে যে কি হয়েছে। কিন্তু কবির ভালো মতোই জানে এই কথাটা জিজ্ঞেস করলে মেরিন বলবেনা। ওকেই উল্টা কথা শোনাবে। কবির ভাবলো হয়তো এসব কিছুর জন্য নিজেই দায়ী … ১টা লম্বা নিঃশ্বাস ফেলে কবির চলে গেলো।

.

পরের সপ্তাহ…
সিঙ্গাপুর থেকে ৫জন ডক্টর এসেছে। মেরিন আনিয়েছে । ২মাসের জন্য । তারা বসে আছে মেরিনের মুখোমুখি ।
মেরিন : এখানকার ডক্টররা বলেছে যে নীড়ের পা অকেজো হয়ে যেতে পারে। হয়তো নীড় আর কখনো হাটতে পারবেনা। তবে এসব কিছুর জন্য ১মাস অপেক্ষা করতে হবে। আর আমি চাই ১মাসের মধ্যে নীড়ের পা ভালো হয়ে যাক ।এই ১মাসের মধ্যেই দৌড়াতে না পারলেও অন্তত হাটতে যেন পারে। আপনাদের সময়সীমা ১মাস। কি করবেন কিভাবে করবেন আমি জানিনা। সেটা আপনাদের ব্যাপার। আমি জানিনা আর জানতেও চাইনা। তবে আমাকে কি করতে হবে সেটা আপনারা নির্দ্বিধায় জানাবেন … আশা করি আমার কথা বুঝেছেন। জন ..
জন তাদের সবাইকে ১টা করে ব্যাগ দিলো। সেগুলো ভরা টাকা।
মেরিন : বাংলাদেশে আসার আগেও ১টা ব্যাগ পেয়েছে টাকা ভরা । এখনও ১টা পেলেন । নীড়কে সুস্থ করে যাবার সময়ও পাবেন। দরকার হলে নীড়কে হসপিটালেই রাখবো। তবুও ওকে সুস্থ চাই। অল দ্যা বেস্ট।
বলেই মেরিন উঠে গেলো ।

পরদিন থেকে ডক্টররা নিজেদের কাজ শুরু করলো। নীড়ের কিছু টেস্ট করালো ।

.

৩দিনপর …
আজকে নীড়ের মুখের আর বুকের ব্যান্ডেজ খোলা হলো । নীলিমা নীড়ের মুখে চুমু একে দিলো।
নীলিমা : আমার সোনা বাচ্চাটা।
এই কদিনে নীড় মেরিনের সাথে ১টা কথাও বলেনি । দুপুরের দিকে খাবার চলে এলে মেরিন নীড়কে খাইয়ে দিতে লাগলো। নীড় দেখলো যে মেরিন আজও ফুল স্লিভের জামা পরেছে। নীড় অবাক হচ্ছে । ওর জ্ঞান ফেরার পরদিন থেকেই মেরিনকে এভাবে দেখছে । কোনো কারন তো নিশ্চয়ই আছে ।
আসলে মেরিন রোজ রোজ নিজের শরীরকে যখম করে। নিজেকে শাস্তি দেয় ।

নীড়কে খাওয়ানোর সময় আবার হঠাৎ করে মেরিনের বুকের বা পাশে ব্যাথাটা উঠলো । খুব কষ্ট হচ্ছে মেরিনের। তবুও নীড়কে খাইয়ে দিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলো। বুকটা চেপে ধরলো ।
নীড় : কি হলো? হঠাৎ করে ওর মুখটা এমন দেখাচ্ছে কেন ? কি হয়েছে ?

তখন মেরিন বেরিয়ে এলো । নীড় মেরিনের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে যে কাহিনি কি। কিন্তু বুঝতে পারলোনা।

তখন দাদুভাই এলো নীড়কে দেখতে। কথা টথা বলতে লাগলো।

নীড় : দাদুভাই… আম্মুর শরীরটা কেমন আছে? অসুস্থ হয়ে পরেনিতো?
দাদুভাই : না । স্থিতিশীল আছে। যেন অস্বাভাবিক হয়ে না পরে তাই অ্যাসাইলামে নেয়া হয়েছে।
নীড় : থ্যাংকস গড …

.

১মাসপর …
আজকে অবশেষে নীড় হসপিটাল থেকে বাসায় যাবে । নীড়ের পা অনেকটাই ভালো। লাঠি ভর করে হাটতে পারে । সকাল সকালই নীড় বাসায় ফেরার জন্য অস্থির হয়ে গেলো। তাই মেরিনও আর নীড়কে অপেক্ষা করালোনা। দ্রুত সবটা গুছিয়ে নিয়ে বাসায় ফিরলো। বাসায় ফিরে নীড় ১টা স্বস্তি নিঃশ্বাস নিলো।

বিকালে নীড় বসে বসে ভাবছে । যে এই ৪০দিনে ও নীলিমা আর মেরিনকে ১টা বারও সবসময়ের মতো কথা হয়নি। খুব প্রয়োজন ছারা কেউ কারও সা়থে কথা বলেনা। যদিও নীড়ও তেমন করে কথা বলেনি। তবে এই ১টা মাস মেরিন নীড়ের সাথে নীড়ে বেডেই ঘুমিয়েছে। তবে ও অসুস্থ বলে ওর বুকের ওপর মাথাটা রাখেনি। হাত রেখেছে । ভেবেই
নীড় বলল : পাগলি…

তখন নিহাল রুমে ঢুকলো ২কাপ চা নিয়ে।
নিহাল : আসবো নাকি?
নীড় : আসো বাবা।
নিহাল ঢুকলে।

নীড় : তুমি চা নিয়ে এলে যে ?
নিহাল : কেন আনতে পারিনা বুঝি? আমি কিন্তু চা অতোটাও খারাপ বানাইনা।
নীড় : এমনভাবে বলছো যেন চা তুমিও বানিয়েছো । মামনির হাতের চা এটা ।
নিহাল : কি করে বুঝলে?
নীড় : ২টা কারনে। এক মেরিনের চা… একটু আলাদা। তাই এটা মামনির। আর তুমি চা বানাতে পারো না। চৌধুরী বাড়ির ছেলেরা এই দিকে জিরো।
বলেই বাবা-ছেলে হাসতে লাগলো।

নীড় : বাবা …
নিহাল : হ্যা বলো।
নীড় : শাশুড়িবউমার মধ্যে কি হয়েছে ?
নিহাল সবটা বলল।
নীড় : হায়রে মামনি। আসলে এটা মামনির দোষনা। এটা প্রতিটা বাঙালি মায়ের ব্যাধি । সন্তানের কিছু হলে মাথা খারাপ হয়ে যায়। মামনি না হয় রাগের মাথায় বলেছে। সব ভুলে যাবে। কিন্তু মেরিন… সে তো কিছু ভোলেনা । কে জানে আবার কি পাগলামি করবে…

.

মেরিন রাতের খাবার রান্না করছে। নীলিমা চা খাচ্ছে আর মেরিনকে দেখছে।
নীলিমা মনে মনে : আমি না হয় রাগেক মাথায় ১টা কথা বলেই দিয়েছি। তাই বলে এখনও অভিমান করেই থাকবে? ভালো লাগেনা। হুহ। বলি তোর আম্মুকি কখনো তোকে বকতো না ? ধমক দিতো না? নাকি আমি শাশড়ি বলে বকেছি বলে এতোবড় কথাটা বললি? হুহ।
মেরিন কাজ করছে আর নীলিমার কর্মকান্ড দেখছে। মেরিন এখন বেশ বুঝে গিয়েছে যে নীড় এমন কেন? নীড় মা-বাবা মিলিয়েই হয়েছে। নিহাল আধা পাগল । নীলিমা আধা পাগল। আর ২জন মিলিয়ে নীড় পুরা পাগল।

কাজ শেষ করে মেরিন বের হলো। ফ্যাক্টরি সাইটে ১টা সমস্যা দেখা দিয়েছে তাই।

নিহাল : মেরিন কোথায়?
নীলিমা : জানিনা ওর খবর আমি হুহ। সকাল থেকে দৌড়াদৌড়ি। রাতের রান্না করে এখন এই সন্ধ্যাবেলা অফিসের কি যেন কাজে বেরিয়েছে । ঢং…

২ঘন্টার মধ্যেই মেরিন ফিরে এলো।

.

রাতে…
মেরিন ঘুমিয়ে আছে। নীড়ের ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে গেলো। দেখে মেরিন হাতের ওপর মাথা কাত করে ঘুমাচ্ছে। নীড় বেশ বুঝতে পারছে যে হাতের ওপর মাথা রেখে ও নীড়কে দেখছিলো। দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পরেছে ।

নীড় : আমার ভালোবাসা তো নিরার প্রতি। তবে তি তোমার প্রতি কি কেবল আকর্ষণ ? কেবল মোহ ? নাকি মানবকুলের সেই চিরচায়িত চাহিদা? আমি জানিনা কি? তবে ভালোবাসা না। কারন ভালো কি ২বার বাসা যায়? প্রেম কি দ্বিতীয়বার হয়? নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন কখনো কোনো কিছুতে কনফিউজ হয়নি। কিন্তু তোমার উন্মাদনা আমাকে আজ মহা তনফিউজড করে দিয়েছে। হয়তো কবুলের জোরে এমনটা হচ্ছে । আবার হয়তো এতোদিন ধরে একসাথে থাকার জন্য । নাকি … নাকি ভালোবাসার জন্য । জানিনা… নিজেকে পাগল পাগল লাগছে মিস অতৃ… থুরি মিসেস অতৃপ্ত আত্মা। মাথা কাজ করছেনা। তবে উপসংহারে যে পৌছাতেই হবে। কিন্তু কিভাবে?

নীড় দেখলো মেরিন ঠান্ডায় কাজুমাজু হয়ে আছে। মেরিনকে নিজের ব্ল্যাংকেট ভেতরে ঢুকিয়ে নিলো। এরপর কিছু ১টা ভেবে মেরিনের কপালে চুমু দিয়ে বুকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো।

.

চলবে…

#ঘৃণার_মেরিন 4
part : 21
writer : Mohona

.

সকালে…
মেরিনের ঘুম ভাংলো। অবাক হলো। মনে করলো যে হয়তো নিজেই এমনটা করেছে। কিন্তু নিজের এমন বেসামাল ঘুমের কারন খুজে পায়না। মেরিনের এমন রিঅ্যাকশন দেখে নীড়ের প্রচন্ড হাসি পাচ্ছে। এমন করে কখনো ও মেরিনকে দেখেনি । আজকেই দেখলো ।
মেরিন : নীড়ের কতো কষ্ট হয়েছে। আমি এতোটা বেসামাল কি করে হলাম? ওহ গড। আল্লাহ ৮টা বাজে। ৯টায় মিটিং …
মেরিন তারাতারি উঠে গেলো।
নীড় মনে মনে : তোমার ভেতরে অন্য ১টা তুমি আছো। সেই তুমিটাকে বের করতে হবে।

.

মেরিন অফিস পৌছালো।
মেরিন : জন মিটিং রুম রেডি?
জন : জী ম্যাম। কিন্তু।
মেরিন : কিন্তু কি?
জন : ম্যাম আজকে আমাদের যাদের সাথে মিটিং হওয়ার কথা তাদের হেড আর কেউ না ট…
মেরিন : টনি। তাইতো?
জন : ম্যাম আপনি জানতেন যে টনির সাথে মিটিং?
মেরিন : হামম।
জন : ম্যাম তবুও আপনি রাজি হয়েছেন ?
মেরিন : হ্যা হয়েছি। কারন রাজী না হওয়ার কোনো কারন নেই।
জন : ম্যাম টনি …
মেরিন : টনি আমাকে ভালোবাসে। তাইতো? দেখো না তো টনি টিনেজার আর না আমি। উই আর অ্যাডাল্ট । আর আমি জানি টনিকে। বিজনেস স্কুলে ও আমার ক্লাসমেট ছিলো । আমি জানি ওকে । না তো ও নীড়ের মতো জেদী। না তো ও নিলয়ের মতো জঘন্য । আর না তো তপুদার মতো আবেগ প্রবন। ও ১জন সফল বিজনেসম্যান । আমি কেবল এটা জানি আর বুঝি যে টনির সাথে মিটিংটা সফল হলে ওর কাছ থেকে কনট্র্যাক্টটা পাবো। আর তাতে আমার কোম্পানির লাভ হবে। দ্যাটস ইট।
টনির : তোমার ভাবনা চিন্তার জন্যই আজ তুমি সফল মেরিন…
মেরিন ঘুরে দেখে টনি । কালো পোশাক পরে দারিয়ে । মেরিনের কালো রং প্রিয় বলে টনি সবসময় কালো রং ই পরে।

টনি : গুড মর্নিং।
বলেই টনি হাত বারিয়ে দিলো। মেরিন হাত মিলালো।
মেরিন : গুড কি ব্যাড মর্নিং সেটা মিটিং এর পর বোঝা যাবে । হ্যাভ সিট।

২জন খুব সুন্দরভাবে মিটিংটা সম্পুর্ন করলো। এরপর ২জনই কনট্র্যাক্ট পেপারে সিগনেচার করলো।

মেরিন : গুড মর্নিং এন্ড কংগ্রেচ্যুলেশনস।
টনি : সেইম টু ইউ। মেরিন কিছু মনে না করো তবে ১টা কথা জিজ্ঞেস করি?
মেরিন : হামম।
টনি : তুমি কি অসুস্থ ?
মেরিন : নো । কালকে দেখা হচ্ছে।
টনি : হামমম বাই।
মেরিন :বাই।
টনি বেরিয়ে এলো।

টনি : তুমি অসুস্থ মেরিন … তুমি অসুস্থ । আমি জানি তুমি অসুস্থ …

.

মেরিন বাসায় পৌছালো।
নীড় : বাবা… অতৃপ্ত আত্মাটা বাসায় ফিরেছে। অ্যাকশন।
নিহাল : নীড় …তুমি আবারও ভেবে দেখো। একটু ১৯-২০ হলে তোমার মামনি কিন্তু সাংঘাতিক ব্যাথা পাবে ।
নীড় : বাবা তুমি অতৃপ্ত আত্মাটাকে চিনোনা। ও এমন ১টা আত্মা যে কিনা যেকোনো জায়গাতেই প্রকট হতে পারে। তাইতো ও অতৃপ্ত আত্মা।
নিহাল : কিন্তু মেরিন যদি নিচে না নামে?
নীড় : আরে আমি কিছু খেতে চাইবো আর মেরিন সেটা করে খাওয়াবেনা? সূর্য দক্ষিন দিকে উঠতে পারে তবুও এটা হতে পারেনা।
নিহাল : তোমার মামনি?
নীড় : উফফ আমার বউকে আমি পাঠাবো আর তোমার বউকে তুমি।
নিহাল : আমার বউ শুনবেনা আমার কথা।
নীড় : বলো আমি কিছু খেতে চাই। তাহলে ঠিক যাবে। মেরিন ঢুকতেই সিড়িতে তেল ফেলে দিবে। আর মামনিকে নিচে পাঠানোর ব্যাবস্থা করবে… ওভার এন্ড আউট …
নিহাল : ওকে ওভার এন্ড আউট …

মেরিন রুমে ঢুকতে নিহাল সিড়িতে তেল ফেলে রুমে গেলো।

নিহাল : নীলা … নীলা…
নীলিমা : চেচাচ্ছো কেন?
নিহাল : নীড়ের নাকি ক্ষুধা লেগেছে। তাই ওকে কিছু খেতে দিতে বলছে তোমাকে ।
নীলিমা : গাড়ির আওয়াজ পেলাম। ওর বউ এসেছে মনে হলো। ওর বউকে দিতে বলো।
নিহাল : মেয়েটা কেবল এলো। দাওনা গিয়ে।
নীলিমা : দিচ্ছি..

ওদিকে মেরিন ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হতেই নীড় নিজেকেই বলতে
লাগলো : ভীষন ক্ষুধা লেগেছে। সেই সকাল থেকে কিছু না খাওয়ায় মাথা ঘুরাচ্ছে ।
মেরিন : আপনি সকাল থেকে কিছু খাননি?
নীড় : তোমাকে বলবো না যে আমি খাইনি ।
মেরিন : নীড় আপনি না… দারান আমি এখনই খাবার নিয়ে আসছি…

.

নীলিমা মেরিনের গুষ্ঠি উদ্ধার করতে করতে সিড়ি দিয়ে নামছে। তাই খেয়ালও করেনি যে তেল ফেলা। পা পিছলে পরে যেতে নিলে দিলো ১ চিৎকার । তখন মেরিন এসে ওর হাত ধরলো। নীলিমা চোখ মেলে দেখে মেরিন ওর হাত ধরে রেখেছে ।
নীলিমা : তুই কেন আমার হাত ধরলি?
মেরিন : ছেরে দিবো?
নীলিমা : হামমম।
মেরিন : বেশ।
বলেই মেরিন নীলিমার হাত ছেরে দেয়ার ভান করলো।
নীলিমা : আআ… ছারিস না।
মেরিন নীলিমাকে সোজা করে দার করালো।
নীলিমা : এভাবেই দারিয়ে থাকবি নাকি আমাকে জ…
মেরিন নীলিমাকে জরিয়ে ধরলো।
নীলিমা : না হয় একটু বকেছিলাম। তাই বলে এতোগুলো দিন কথা না বলে থাকবি?
মেরিন : তোমার বকার জন্য কথা বন্ধ করিনি। নিজের ওপর রাগ করে করেছিলাম। একে তো আমার জন্য নীড়ের ওই অবস্থা। তারওপর তোমাকে যাতা বলে দিয়েছিলাম।
নীলিমা : আমিও তো কমকিছু বলিনি।
নিহাল-নীড় লুকিয়ে সবটা দেখলো।
মেরিন : কিন্তু এখানে এতো তেল…
নীলিমা : হ্যা তাইতো…

নীড় : বাবা… ইটস টাইম টু পালাও…

নিহাল : হ্যা।

নীলিমা-মেরিন : নিহাল/নীড় …

.

১৫দিনপর…
নীড় এখন সম্পুর্ন সুস্থ । মেরিন নীড়ের কফি নিয়ে এসে দেখে নীড় রেডি হচ্ছে ।
মেরিন : কোথায় যাচ্ছে?
নীড় : আমি কোথায় যাই? না কোরোনা। আমি সুস্থ । আর আম্মুর শরীরনা বেশি খারাপ হয়ে যায় ।
মেরিন : আপনি যাবেন তবে কালকে থেকে ।
নীড় : কেন কালকে থেকে কেন?
মেরিন : কারন আম্মু এখন অ্যাসাইলামে আছে । আজকে আম্মুকে মিরপুর শিফ্ট করা হবে। কালকে থেকে যাবেন।
নীড় : আমি অ্যাসাইলামে যাচ্ছি।
মেরিন : অতো জার্নি করতে হবেনা। কখনো তো ১টা কথা একবারে শুনুন।
নীড় : 😒।

.

পরদিন…
নীড় : হুয়াট ইজ অল দিস…?
মেরিন : নীড়… এতো রিয়্যাক্ট করার কি আছে ?
নীড় : রিয়্যাক্ট করবোনা ?
মেরিন : না। রিয়্যাক্ট করার কিছুই নেই। এখন থেকে আপনি ড্রাইভ করবেননা। সবসময় ড্রাইভার থাকবে। আর একা কোথাও বের হবেন না। সাথে বডিগার্ড থাকবে। যেমনটা দাদুভাইয়ের সাথে থাকে ।
নীড় : আমি দাদুভাই নই । আমি নিজেকে সামলাতে পারি। আই ডোন্ট নিড দেম।
মেরিন : বাট আই নিড। আমি বলেছি তো বলেছি ।
নীলিমা : মেরিন ঠিকই বলছে। তুই একা কোথাও বের হবিনা।
নীড় : কিন্তু…
নিহাল : কিসের কিন্তু? একদম জেদ করবেনা।
নীড় : নিজের বাড়িতেই নির্যাতিত আমি… আজকে থেকে ২টা লেজ নিয়ে ঘুরতে হবে। থ্যাংকস টু অতৃপ্ত আত্মা…

এভাবেই দিন কাটতে লাগলো।

.

মেরিন প্রজেক্ট সাইটে এসেছে। কাজ কেমন হচ্ছে তা দেখতে । সেই সাথে কিছু কাজও আছে। সেগুলোও করছে। জন আসেনি। জন ঢাকার বাহিরে গিয়েছে। টনিও এসেছে এখানে একই কাজে। টনি টনির মতো কাজ করছে আর মেরিন মেরিনের মতো। ২জনই যথেষ্ট প্রফেশনাল। মেরিন তো বরাবরই এমন । টনিও । তবুও যদি ভালোবাসার কথা মাথা ঘুরে তখন ও নিজেকে সামলে নেয় এটা ভেবে যে ১৯ থেকে ২০ হলে মেরিন কনট্র্যাক্ট বাতিল করে দিবে। আর এতে ২কোম্পানিরই ক্ষতি হবে।

মেরিনের হুট করে আবার বুকের ব্যাথা শুরু হলো। কাজ বাদ দিয়ে মেরিন বুকের ওপর হাত দিয়ে বসে পরলো। বিষয়টা টনি লক্ষ্য করলো। টনি উঠে গেলো।
টনি : মেরিন তুমি ঠিক আছো ?
মেরিন : হ্যা।
টনি : মেরিন … চলো ডক্টরের কাছে চলো।
মেরিন : তুমি তোমার লিমিটের মধ্যে থাকো।
টনি : মেরিন । সরি।
টনি চলে যেতে নিলো। তখন কিছু ১টা পরে যাবার শব্দ পেয়ে ঘুরে দেখে মেরিনের মোবাইলটা নিচে পরে আছে। মেরিনে দিকে তাকিয়ে দেখে মেরিন জ্ঞান হারিয়েছে।
টনি : মেরিন… মেরিন…

টনি মেরিনের মুখে পানি ছিটিয়ে দিলো। তবুও জ্ঞান ফিরলোনা। টনি চিন্তায় পরে গেলো। জনও নেই । টনি ভাবলো যদি মেরিন রাগও করে তবে করবে।
টনি মেরিনকে গাড়িতে করে নিয়ে হসপিটালে গেলো।

নীড় শপিং করতে যাচ্ছে। আসলে কনিকা আজকে মর্জি করছিলো । তাই নীড় আর কনিকাকে ডিস্টার্ব করেনি।

টনি হসপিটালে পৌছালো । মেরিনকে কোলে তুলে ভেতরে নিয়ে যেতে লাগলো । নীড়ের গাড়িও হসপিটালের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো।
ঘটনাটা দেখলো।

নীড় : স্টপ দ্যা কার স্টপ দ্যা কার।
ড্রাইভ : কেন স্যার?
নীড় : বলেছি তাই থামাও।
ড্রাইভার থামলো।
বডিগার্ড : স্যার হসপিটালের সামনে রাখতে বললেন যে ?
নীড় : শাট আপ।
নীড় ছুটে ভেতরে ঢুকলো। খুজতে লাগলো। কিন্তু পেলোনা।

.

নীড় : মনে হয় ভুল দেখেছি। আমিও না। মেরিন আমার কল্পনাতেও রাজত্য করছে? ইন্টারেস্টিং…
নীড় নিজের মাথায় হালকা করে বারি মারলো। বেরিয়ে এলো । তখন দেখে কবির-সেতু নিরাকে ধরে ধরে গাড়িতে তুলছে। নিরার হাতে পায়ে ব্যান্ডেজ।
নীড় এগিয়ে গেলো।
নীড় : হাই গাইস। নিরা তোমার এই অবস্থা কেন? কি করে হলো?
নিরা : তোমাকে ভালোবাসার শাস্তি পেয়েছি।
নীড় : মানে?
নিরা : মানে বলে দিতে হবে নীড়? তোমার বউ করেছে এমন।
নীড়ের হসপিটালের কথা মনে করলো।

নীড় : নো। নট অ্যাট অল। মেরিন তোমাক অ্যাক্সিডেন্ট করাতে পারেনা। কারন আমি না করেছিলাম।
নিরা : ভালো লাগলো যে তুমি তোমার বউকে ভালোবাসো। বর তার বউকে ভালোবাসবে এটাই স্বাভাবিক। তবে কেন আমাকে আশা দিয়ে রাখছো?
নীড় : হুয়াট ডু ইউ মিন বাই দ্যাট? আমি তোমাকে কিসের আশা দিয়ে রাখছি…?
নিরা : ওহ গুড। তারমানে তুমি বলোনি যে তুমি আমায় ভালোবাসো ?
নীড় : সেটা কখন বললাম। তোমায় আমি… তোমায় আমি…
নিরা : ভালোবাসি বলতে পারছোনা তো… আসলে তোমরা সব ছেলেরাই এক। কি চাও তোমরা নিজেরাও জানোনা। তোমরা ভালোবাসতেই জানোনা। ছিঃ…

বলেই নিরা কাচ তুলে দিলো।

গাড়ি চলে গেলো।

.

নিরার বলা কথাগুলো নীড় ভাবতে লাগলো। সত্যিই কি বাজে ছেলে ? এতোটাই বাজে ছেলে? ও কি ধোকাবাজ? কাকে ধোকা দিচ্ছে? নিরাকে নাকি মেরিনকে? নাকি নিজেকে? ভীষন রাগ উঠছে নিজের ওপর ।

নীড় : আই হ্যাভ ডিসাইডেড… আমার সিদ্ধান্ত মেরিন।

মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। নিজেকে হসপিটালে পেয়ে অবাক হলো।
টনি : থ্যাংকস গড তোমার জ্ঞান ফিরেছে…
মেরিন বুঝতে পারলো যে টনি এনেছে । মেরিন নেমে গেলো।
টনি : তুমি নামছো কেন?
মেরিন : তুমি আমাকে এখানে কেন এনেছো? বলো…
টনি : তুমি জ্ঞান হারিয়েছিলে…
মেরিন : সো হুয়াট? তুমি নীড় কে ফোন করতে পারতে…

টনি : আসলে আমি টেনশনে… আচ্ছা চলো তোমাকে বাসায় ড্রপ করে দিচ্ছি ।
মেরিন : বাসায় ড্রপ করবে কেন? অনেকটা কাজ বাকি।
টনি : কিন্তু তুমি তো অসুস্থ…
মেরিন : মাইন্ড ইউর অন বিজনেস…

টনি জানে এখন আর কিছু বলা ঠিক হবেনা। মেরিন আরো ক্ষেপে যাবে।
টনি : মেরিন … মানে তোমাকে তো আমি আমার গাড়িতে করে নিয়ে এসেছি। আর আমরা যাবোও আমরা একই জায়গায়। তো তুমি কি আমার গাড়িতে যাবে?
মেরিন : যাবোনা কেন ? লেটস গো। উই আর গেটিং লেইট।

২জন বের হলো। গিয়ে গাড়িতে বসলো। এটাও নীড় দেখলো।

নীড় : মেরিন… তারমানে আমি গাড়ি থেকে সত্যিই দেখেছিলাম।
না নীড় সন্দেহ করেনি মেরিনকে।

.

টনি গাড়ি স্টার্ট দিলো।
টনি : ওহ মেরিন… তোমার মোবাইল…
মেরিন : তোমার কাছে ?
টনি : তোমাকে নিয়ে আসার সময় এটাও সাথে এনেছি।
মেরিন : থ্যাংকস।
গাড়ি চলছে।
মেরিনের খুব খারাপ লাগছে। শরীর ভালো না লাগলে কোনোকিছুই ভালো লাগেনা।
তখন মেরিনের ফোনটা বেজে উঠলো। মেরিন দেখলো নীড় কল করেছে। মেরিন অবাক হলো। নীড় তো কখনো ওকে কল করেনা। কোনো বিপদ হলো না তো? তারাতারি ধরলো।

মেরিন : আপনি ঠিক আছেন তো? আপনার কিছু হয়নি তো? কোনো সমস্যা ? আম্মু ঠিক আছে তো? কি হলো কিছু বলছেননা কেন?
নীড় : আমিও ঠিক আছি। আম্মুও ঠিক আছে। কিছু বলার ছিলো।
মেরিন : হ্যা বলুন।
নীড় : তুমি কোথায় ?
মেরিন : মানে?
নীড় : তুমি কোথায় মানে তুমি কোথায় ?
মেরিন : কোনো কাজ ছিলো?
নীড় : যে জিজ্ঞেস করছি সেটার জবাব দাও।
মেরিন : কি হয়েছে বলুন তো আপনার কন্ঠ এমন লাগছে কেন?
নীড় : যেটাক জবাব চেয়েছি সেটার জবাব দাও ড্যাম ইট।
মেরিন : নীড়… আচ্ছা এক কাজ করুন আপনিও বাসায় পৌছান আর আমিও আসছি। আমার মনে হয় আপনার শরীর ঠিক নেই ।
নীড় : আচ্ছা আমি কি এটাও জানতে পারিনা তুমি কোথায়?
মেরিন : …
নীড় : বলো।
মেরিন : আমি প্রজেক্ট সাইটে এসেছিলাম ।
নীড় : হামমম। বাই।
মেরিন : বাই…
নীড় ফোনটা রেখে দিলো।

মেরিন মনে মনে : নীড়ের কন্ঠ এমন লাগছিলো কেন?

মেরিনের সাথে কথা বলার পর নীড় মোবাইলটা আছার মেরে ভেঙে ফেলল।

.

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here