গল্প: আগামী (৩য় পর্ব)

0
1394

গল্প: আগামী (৩য় পর্ব)
লেখা: মাহফুজা রহমান অমি।

সাফিনের চোখে টলমল করছে জল। আমার দু’চোখে জেগে উঠেছে পুরাতন যত ক্ষোভ। সময় পেরিয়ে গিয়েছে অনেক। তাই বলে ভেতরে জমাট বাঁধা কষ্টগুলোর কথা ভুলে যাইনি, যেতে পারিনি।

মানুষ সুখের কথা যতটা না শক্ত করে মনে রাখে, তারথেকে হাজারগুণ বেশি শক্ত করে মনে রাখে দুঃখের কথা। দশদিন যে মানুষটা ভালোবেসেছিলো, তার কথা অতটা মনে থাকে না। কিন্তু একদিন যে মানুষটা কষ্ট দিয়েছিলো, সেই মানুষটার কথা কখনো মন থেকে সরে না।

তবুও ভেতরের অনুভূতিকে স্তব্ধ রেখে ভদ্রতা রক্ষাটা এই মুহুর্তে দরকারি মনে হলো।
একজন সম্পূর্ণ অপরিচিত মানুষের দৃষ্টিতে সাফিনের দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘আমার সন্তানদেরকে রক্ত দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমরা কৃতজ্ঞ।’

আমার কথায় সাফিনের বিব্রতবোধটা টের পেলাম সহজেই। সাফিন নিচের দিকে তাকিয়ে জবাবে বললো, ‘মানুষ তো মানুষের পাশে থাকবে, এটাই তো স্বাভাবিক।’

এই কথার প্রেক্ষিতে অনেক কিছু বলতে মন চাইছে। মন চাইছে সাফিনকে আচ্ছামতো অপমান করে দিই কথার ভাঁজে। কিন্তু নিজেকে থামালাম। সাফিন আমার কাছে অপরিচিত মানুষের একজন। তার কোনো গুরুত্ব আমার জীবনে নেই। তাই অতীতের সব হিসেব নিকেশ স্থগিত করে বললাম –
‘আমার মনে হয়, আপনার এখন বিশ্রাম নেওয়া দরকার। আপনি চাইলে এখন বাসায় চলে গিয়ে বিশ্রাম নিতে পারেন।’

সাফিনের বুঝতে অসুবিধা হয় না যে আমি তাকে এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্যই কথাটা বলেছি। তাই আর কথা বাড়ায় না। নায়লার স্বামী মুহিতের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায় সাফিন। আমি বাচ্চাদের পাশে গিয়ে বসি।

নায়লা প্রশ্ন করে মুহিতকে, ‘সাফিন ভাইয়াকে পেলে কোথায় তুমি?’

মুহিত অবাক স্বরে প্রশ্ন করে, ‘তাকে চিনতে তুমি?’

‘তিনিই তো বাচ্চাদের বা….’ আমি তাকিয়ে পড়ায় লাইনটা শেষ করতে পারলো না নায়লা।

নায়লার দিকে তাকিয়ে মুহিত ইশারা করলে নায়লা হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়তেই মুহিতের চোখেমুখে বিস্ময় ছড়িয়ে পড়ে।

চাপা স্বরে বলে, ‘হায় আল্লাহ! আমি কী না শেষমেশ তাকেই খুঁজে পেলাম!’

‘কোথায় পেয়েছিলে?’

‘তার স্ত্রী’কে নিয়ে ডাক্তারের কাছে এসেছিলেন। আমি তখন হন্য হয়ে রক্ত খুঁজছি। এখানকার কয়েকজন নার্সকে বলে রেখেছিলাম। একজন এসে জানালো, এক ভদ্রলোক’কে তিনি খুঁজে পেয়েছেন।’

‘নাটক, সিনেমা আর গল্পে এরম কাহিনী লেখা হয়৷ বাস্তবেও তাহলে এমনটা ঘটে!’

নায়লার কথায় মুহিত হেসে জবাব দেয়, ‘ঘটলো তো।’

ওদের কথার বিষয়বস্তু পাল্টে দিতে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আমরা কবে বাসায় যেতে পারব, ডাক্তার কিছু বলেছে?’

‘এখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি। আমি জেনে আসছি।’ কথাটা বলে মুহিত চলে গেলো।

নায়লাকে বললাম, ‘মা’কে একবার দেখে আয়।’

বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে মা খুব একা হয়ে পড়েছেন। নায়লাও বিয়ের পর মুহিতের সঙ্গে আলাদা বাসা নিয়ে থাকে। মায়ের সঙ্গ বলতে আমি আর আমার দুই সন্তান।

বাচ্চাদের পাশে চুপচাপ বসে আছি। চোখ বেয়ে অনর্গল পানি পড়ছে। অতীতের কথা ভেবে নয়, বাচ্চাদের কথা ভেবে। আজ যদি ভয়ংকর কিছু ঘটে যেত, আমি তাহলে বোধহয় বেঁচে থাকার সমস্ত আশা হারিয়েই ফেলতাম। বাচ্চারা ছাড়া আমি আমাকে এক মুহূর্তের জন্যও ভাবতে পারি না।

বাচ্চারা সুস্থ হয়ে উঠছে। আগামীকাল বাসায় যেতে পারব বলে জানায় ডাক্তার। মা’কে নিয়ে নায়লা বাসায় চলে গিয়েছে গত পরশু। অফিস শেষে মুহিত এসে খোঁজখবর নিয়ে যায় রোজ। নায়লার জন্য এমন চমৎকার একটা ছেলে পেয়ে আমি আর মা ভীষণ খুশি। ওদের সম্পর্কটা আজীবন এমন সুন্দর থাকুক, মাঝপথে রঙ না বদলাক এটাই কামনা করি। আমি চাই না, আমার জীবনের প্রতিচ্ছবি আর কারোর জীবনে ঘটুক।

সন্ধ্যায় আচমকা সাফিন এসে হাজির। দু’হাতে বাচ্চাদের জন্য একগাদা খাবার দাবার। ওর মুখটা দেখতেই ঠান্ডা মেজাজটা বিগড়ে যেতে শুরু করলো। বাচ্চাদের সামনে কড়া মেজাজকে দমন করে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে কথা বলতে হলো সাফিনের সঙ্গে।

বাচ্চারা প্রশ্ন করলো, ‘মা, উনি কে? কী হন আমাদের?’

সাফিন আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ইতস্ততবোধ না করেই চটজলদি বলে উঠলাম, ‘উনি তোমাদের একটা আঙ্কেল। তোমরা যখন অসুস্থ ছিলে, তিনি তখন তোমাদেরকে রক্ত দিয়েছিলেন।’

বাচ্চারা হাসিমুখে ধন্যবাদ জানালো সাফিনকে৷ আমার সঙ্গে আর সাফিনের কথা জমানোর সুযোগ হয়নি৷ বাচ্চাদের সঙ্গে খোশগল্প শুরু করতেই মুহিত চলে এলো। রুমের মধ্যে আমার দম বন্ধ লাগছিলো। মুহিত এলে স্বস্তি পেলাম। রুম ছেড়ে বের হয়ে বাহিরে দাঁড়ালাম। ভেতরে গল্প চলছে সাফিনের সঙ্গে সকলের। আমি একটু সামনের দিকে হেঁটে গেলাম।

হাসপাতালে নানান ধরণের মানুষের আগমন ঘটে। হরেক মানুষের হরেক সমস্যা, দুঃখ, যন্ত্রণা দেখে নিজের কষ্ট কখন যে শীতল হয়ে গিয়েছে টেরই পাইনি৷ আইসিইউ থেকে লাশ বের করে স্বজনেরা নিয়ে যাচ্ছেন আর হাউমাউ করে কেঁদে চলছেন। এমন দৃশ্য চোখে পানি এনে দিলো। চোখের পানি মুছে বাচ্চাদের রুমের দিকে এগিয়ে যেতেই দেখি সাফিন এদিকেই আসছে।

আমি দেখেও না দেখার অভিনয় করে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেই সাফিন সামনে এসে বললো, ‘আমি কী একটু সময় নিতে পারি? আমাকে একটু সময় দেওয়ার জোর অনুরোধ রইলো।’

মন থেকে সম্মতি না পেলেও বললাম, ‘হ্যাঁ, বলুন।’

‘এখানে তো অনেক লোকজন। আমরা কী একটু ওদিকটায় গিয়ে দাঁড়াতে পারি?’

সাফিনের ইশারা করা দিকটার দিকে তাকাতে দেখি ওদিকটায় লোকজন বেশ কম আছে।
আমি শান্ত গলায় বললাম, ‘চলুন।’

আমি সাফিন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছি৷ পেছনে কেটে গেছে কতগুলো বছর। সাফিনের আচারণে বুঝতে কষ্ট হয়নি, আমার চোখে চোখ রেখে কথা বলার সাহস ওর নেই। আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘জ্বী, এবার বলুন।’

‘কেমন আছো তুমি?’

সাফিনের এই নরম গলার প্রশ্ন শুনে অন্য কেউ হয়তো আবেগী হয়ে পড়তো। কিন্তু আমার বিন্দু পরিমাণেও আবেগ তৈরি হয়নি ভেতরে। বরং স্বরটা শক্ত হয়ে উঠলো।

‘আমার বাচ্চাদেরকে রক্ত দিয়েছিলেন আপনি। শুধু এই ভদ্রতার কারণেই আপনার সঙ্গে এখানটায় দাঁড়িয়ে আছি। জরুরী কিছু বলার থাকলে বলেন, আমাকে বাচ্চাদের কাছে যেতে হবে। ওরা আমায় হয়তো খুঁজছে।’

‘বাচ্চারা তোমায় অনেক ভালোবাসে।’

‘অবশ্যই। আমার বাচ্চারা আমাকেই তো ভালোবাসবে।’

‘আর বিয়ে করোনি?’

প্রশ্নটা শুনে সাফিনের দিকে তাকাতেই সাফিন চোখ সরিয়ে নিলো।

কড়া মেজাজে বললাম, ‘বুঝেছি, আপনার আসলে বলার মতো জরুরী কিছু নেই। আর এখানে আমি ব্যক্তিগত প্যাচাল পাড়ার জন্য আসিনি।’

কথাটা বলে রুমের উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেই সাফিন বললো, ‘জুলিয়া। আমি জানি তুমি আমায় ঘৃণা করো। অনেক রাগ জমে আছে আমার প্রতি।’

আমি পেছন ঘুরে তাকিয়ে বললাম, ‘আপনার কাছে এটাই কী স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না?’

খানিক চুপ থেকে সাফিন উত্তর দেয়, ‘হ্যাঁ, আমি অনেক অন্যায় করেছি তোমার সঙ্গে। কষ্ট দিয়েছি তোমায়। যা করেছি সব ভুল করেছি। কিন্তু তাই বলে তোমায় যে আমি কখনোই ভালোবাসিনি, তা কিন্তু নয়।’

‘এক বালতি দুধের মধ্যে এক ফোটা বিষের যে প্রবাদটা ওটা বোধহয় আপনি ভুলে গিয়েছেন। আর এখন আপনার সঙ্গে পুরাতন স্মৃতি ঘাটার সময় এবং সম্পর্ক, কোনোটাই আমার নেই।’

‘কিন্তু তবুও কী তুমি অস্বীকার করতে পারবে যে তোমার বাচ্চাদের বাবা কিন্তু আমিই?’

কথাটা শোনা মাত্রই ভেতরে ক্রোধের আগুনের ফুলকি ছিটে উঠলো।
গলা ফাটিয়ে বললাম, ‘এই প্রশ্নটা করতে আপনার লজ্জা হওয়া উচিৎ ছিলো।’

আমার রাগত্ব স্বরে আশেপাশের কয়েকজন আমাদের দিকে তাকিয়ে পড়লো। সাফিন চুপ করে রইলো। আমি চোখ বন্ধ করে লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করে বললাম, ‘আমার বাচ্চাদের দিকে নজর দিবেন না। ওরা আমার সন্তান। ওদের আর আমার মাঝে আপনার অস্তিত্বের কোনো প্রয়োজন নেই।’

সাফিন করুণ গলায় জিজ্ঞেস করলো, ‘তাহলে আমার সন্তানেরা কী কখনোই আমার কথা আরকি তাদের বাবার কথা জানতে পারবে না?’

‘একটা কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন আপনি, সন্তানেরা কেবল আমার৷ ওদের বাবাও আমি, মাও আমি৷ কেবল জন্ম দিলেই যেমন মা হওয়া যায় না, তেমন এত সস্তায় বাবাও হওয়া যায় না। বাবা হতে গেলে বাবার দায়িত্ব পালন করতে হয়। আপনি কী কী দায়িত্ব পালন করেছিলেন সেই হিসেবে যাব না। সেটা আপনিও ভালো জানেন আর আমিও।’

সাফিন মাথা নিচু করে বললো, ‘আমি আমার সমস্ত ভুল শুধরে নিয়ে সব আগের মতো করে নিতে পারব না জানি৷ অন্তত একজন বাবা হিসেবে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ চাই তোমার কাছে। দয়া করে আমার বাচ্চাদের সাথে যোগাযোগের একটা রাস্তা খোলা রাখো তুমি।’

ধিক্কার ভরা স্বর নিয়ে বললাম, ‘আমি অত্যন্ত দুঃখিত, আমি আপনার জন্য কখনোই কিছু করতে পারব না, করতে চাইও না।’

সাফিনের চোখে ছলছল করছে জল।
কাতর গলায় বললো, ‘আমি আমার বাচ্চাদের মুখগুলো দেখেছি, ওদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি, ওদেরকে হাসতে দেখেছি। কী নিষ্পাপ দু’টো মুখ। আমি ওদেরকে ভালোবেসে ফেলেছি জুলিয়া।’

‘ভালোবাসাটা নিজের মধ্যেই চেপে রাখুন। ওসব কখনো আমাকে কিংবা আমার সন্তানদেরকে বলতে আসবেন না। আমাদের তিনজনের জীবনে আপনি কেউ না।’

কথাটা বলেই দ্রুত পা ফেলে হাঁটতে শুরু করলাম। পেছনে সাফিন দাঁড়িয়ে আছে। কতটা চোখের পানি ফেলেছে, জানি না৷ কখনো এসব জানতে চাইও না৷ আমি সাফিনকে ঘৃণা করি, ভীষণ ঘৃণা করি। এমন একটা মানুষ আমার বাচ্চাদের কাছে বাবা হয়ে উঠবে, এ আমি কখনো মেনে নিতে পারব না। আমি আমার সন্তানদের কাছে আর কখনো ওকে ঘেঁষতে দিব না। রক্ত দিয়েছে, এই জন্য যতটুকু ভদ্রতা প্রয়োজন ছিলো করার চেষ্টা করেছি। আর সম্ভব নয় কিছুই করা। আমি আমার সন্তানদেরকে আমার থেকে একটুও দূরে সরে যেতে দিব না।

‘মা, কোথায় ছিলে তুমি? জানো, ওই আঙ্কেলটা চলে গিয়েছে। আরও কিছুক্ষণ থাকতে বললাম, থাকলোই না।’

মেয়েটার কথা শুনে বললাম, ‘আমি একটু বাহিরে গিয়েছিলাম মা।’

ওদের আঙ্কেল সম্পর্কে আমি আর কোনো কথা বাড়ালাম না।
মুহিত বললো, ‘আপা আমি তাহলে চলে যাচ্ছি। কাল সকালে এসে আপনাদেরকে নিয়ে যাব। আর প্রয়োজন হলে অবশ্যই কল করবেন।’

মুহিত চলে গেলো। বাচ্চাদের সঙ্গে আমি খেতে বসে গেলাম। ওদের মুখগুলো খুব আনন্দিত দেখাচ্ছে, আগামীকাল বাসায় যাবে বলে।

হাসপাতালে মানুষ দায়ে পড়ে আসে, দিনের পর দিন থাকে, আশেপাশের মানুষের প্রতি মায়া জন্ম নিলেও হাসপাতাল কখনো কারো কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে না৷ কারণ সবাই বাড়ি ফিরতে চায়। হাসপাতাল ছুটি না দিলে, বাড়ি ফেরা যে সম্ভব নয়।

সকালে উঠে ব্যাগ গোছাতে শুরু করলাম। মুহিত আমাদের নিতে চলে এসেছে। হাসপাতালের বাহিরে গাড়ি অপেক্ষা করছে৷ বাচ্চারা একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে।
ওদের আচারণ দেখে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কী হয়েছে তোমাদের?’

ছেলেটা উত্তর দিলো।
‘গতকালের ওই আঙ্কেলটা বলেছিলেন, আজ তিনি এখানে আসবেন৷ আমরা চলে গেলে তিনি আমাদের খুঁজে পাবেন কীভাবে?’

আমি মুহিতের দিকে তাকাতেই মুহিত বললো, ‘আসলে আপা গতকাল সাফিন ভাইয়া ওদেরকে বলে গিয়েছিলো, আজ তিনি আসবেন।’

আমি মাথা নেড়ে বললাম, ‘বুঝেছি।’

বাচ্চাদেরকে কাছে টেনে নিয়ে বললাম, ‘আঙ্কেল আসবেন না৷ তার হয়তো জরুরী কাজ পড়ে গিয়েছে। আমরা বরং এখন তাড়াতাড়ি বাসায় চলে যাই। বাসায় নায়লা খালামনি আর নানি আপু মজার সব খাবার রান্না করে অপেক্ষা করছেন।’

বাচ্চারা মাথা নেড়ে বললো, ‘আচ্ছা।’

বাসায় আসতেই খুশিতে লাফিয়ে উঠলো বাচ্চারা। স্কুল থেকে বেশ কয়েকদিনের ছুটি নিয়েছি। এই সময়গুলো আমি কেবল বাচ্চাদেরকেই দিতে চাই।

রাতে বাচ্চাদের পাশে শুয়ে আছি এমন সময় মেয়েটা প্রশ্ন করলো, ‘মা তুমি জানো ওই আঙ্কেলটার নামও কিন্তু সাফিন?’

আমি খানিকটা অবাক হওয়ার ভঙ্গিমা করে বললাম, ‘তাই নাকি? তোমাকে কে বলেছে?’

‘আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তখন সে বললো, তার নাম সাফিন।’

আমি বললাম, ‘আচ্ছা।’

ছেলেটা বলে উঠলো, ‘বললাম, জানো আঙ্কেল আমার বাবার নামও সাফিন

এবার উৎসুক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তারপর সে কী বললো?’

‘সে কিছুই বলেনি। চুপ করে ছিলো।’

আমি চুপ করে রইলাম। ছেলেটা আবার বলে উঠলো, ‘মা, আমাদের বাবা দেখতে কেমন?’

আমি ছেলেটার দিকে তাকিয়ে রইলাম। আমি কখনোই তাকে বলতে পারব না যে তার বাবা দেখতে তার মতোই। ঠিক যেমন তাদের সাফিন আঙ্কেল।

আগের পর্বের লিঙ্ক:

https://www.facebook.com/groups/2401232686772136/permalink/3122840971277967/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here