গল্পকথারা
ওয়েডিং প্ল্যানার
4
একটা বড় কার বাড়ীর সামনে এসে দাঁড়াতেই বাড়ীর দরজা থেকে ভয়ে ভয়ে মুখ বাড়ালো নীতি । নামকরা বিজনেস ম্যান ইশানের সাথে তার বিয়ে ঠিক হয়েছে । ঈশানের ফ্যামিলি হীরার এক্সপোর্ট ইমপোর্ট বিজনেসের সাথে যুক্ত । দেশে বিদেশে তাদের অনেক হীরার গয়নার শোরুম আছে । নীতির প্রথম বিয়েটা মাত্র আঠাশ দিনে ভেঙে যাবার প্রায় সাড়ে তিন বছর পরে তার সাথে ইশানের বিয়েটা এক কমন ফ্রেন্ড মারফৎ সম্বন্ধ করে ঠিক হয়েছে । নীতি তখন লন্ডনে ছিল একটা ইন্টেরিয়র ডিগ্রির ট্রেনিং নেবার জন্যে । সেখানেই তার পরিচয় হয় এক স্কুল ফ্রেন্ডের সাথে ।
নীতি তার সেই স্কুল বান্ধবীর সাথে তার বিয়ের শপিং করতে একটা দামী হীরার শোরুমে এসেছিল । তখনো সে জানতো না সেই শোরুমের মালিক ঈশান তার সেই বান্ধবীর কলেজ ফ্রেন্ড ।
সেই বান্ধবীকে দেখে ঈশান নিজেই এগিয়ে আসে কথা বলতে । তখন নীতির সাথে তার পরিচয় হয় । আসলে নীতির হাতে একটা হীরার আংটি দেখে ঈশান আগ্রহের সাথে জিজ্ঞেস করে এই হীরার আংটি সে কোথা থেকে নিয়েছে ! নীতি জানায় তার মায়ের ঠাকুরমার আমলের আংটি এটা । তখনি ঈশান নীতির আংটি পরা আঙুলটা ধরে বলে
‘ ‘ আমি দেখেই বুঝেছি এটা অনেক পুরোনো অ্যান্টিক টাইমের হীরা । দেখে মনে হচ্ছে মুঘল এরার হীরা ! ‘ ‘
‘ ‘ শুনেছি আমার মায়ের ঠাকুরমার বিয়ের সময় এই আংটি যেখান থেকে বানানো হয় সেই স্বর্ণকার নাকি মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের বেগম ও শাহজাদীদের গয়না বানাতেন ! ‘ ‘
‘ ‘ আমি অতোটা ইতিহাস জানিনা কিন্তু এই হীরা যে মুঘল আমলের এটা দেখেই বুঝেছি ! ‘ ‘ হেসে নীতিকে বলেছিল ঈশান ।
ব্যাস সেই থেকে ঈশান আর নীতি দুজনের মধ্যে পরিচয় শুরু হয়ে তা আরো গভীর হয় । ইশানের ভালো লেগে যায় ছিমছাম , সুন্দর ব্যবহারের নীতিকে আর সেই বান্ধবীর মারফৎ সে পরে নীতির ডিভোর্স হবার কথা জানতে পারে । কিন্তু ঈশান কয়েক মাস পরে নীতিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তার সেই বান্ধবীর মাধ্যমে । সেই বান্ধবী নীতিকে বলে
‘ ‘ রিচ অ্যান্ড মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর ঈশান । ওকে বিয়ে করার জন্যে কতো বড় বড় বিজনেস ফ্যামিলি থেকে সম্বন্ধ আসে আর সে কি না নিজের থেকে তোকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে ! কি লাকী তুই ! ‘ ‘
নীতিরও তখন মনে হলো নিজেকে খুব লাকী । অন্ততঃ তার জীবনে বৈভব নামের এক অতীত অধ্যায় শেষ হয়ে যাবার পরে সে ভাবেনি ঈশান তার জীবনে এইভাবে আসবে ! সত্যি ঈশান খুব ভালো আর ভদ্র ছেলে । এতো বড় বিজনেস সামলে সে যতটা পারে নীতির খেয়াল খুশির দিকে নজর রাখে । আর প্রথম দিন থেকেই সে বলেছে
‘ ‘ তোমার কোনরকম কিছুর প্রয়োজন হলে আমাকে কল করে বলবে আর আমি যদি সেই সময় মোবাইল না ধরতে পারি আমার পার্সোনাল সেক্রেটারীর নম্বর দিয়ে দেবো ওকে সব জানাবে , ও আমাকে পরে বলে দেবে । সরি ! জানোই তো আমি প্রায়ই মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকি ! ‘ ‘
‘ ‘ আমি জানি ! তুমি ভেবো না । ‘ ‘
আজকে নীতির ইশানের সাথে ডিনার করতে যাবার কথা । ইশানের কার বাইরে অপেক্ষা করছে । নীতি তৈরী হয়ে বেড়িয়ে আসতে দেখলো কার থেকে ঈশান না নেমে ফর্মাল স্যুট পরা আরেকটা ছেলে নেমে মাথা নীচু করে তাকে বললো
‘ ‘ ম্যাম ! আমি ঈশান স্যারের পার্সোনাল সেক্রেটারী । স্যার একটা জরুরী মিটিংয়ে আছেন । তিনি গাড়ী পাঠিয়ে দিয়েছেন । স্যার রেস্টুরেন্টে আপনার জন্যে অপেক্ষা করবেন । ‘ ‘
নীতি ঈশানকে দেখবে ভেবেছিল । সে আর কিছু না বলে কারের কাছে এগিয়ে যেতে তার পার্সোনাল সেক্রেটারী কারের দরজাটা খুলে দিলো । কারে বসে নীতি টেনশনে ঘামছিল । আসলে সে ভাবছিল তার আর বৈভবের আসল সম্পর্কটা ঈশান এখনো জানেনা । অনেকবার ফোনে বলবে ভেবেও নীতি ঈশানকে কিছু বলতে পারেনি । কিন্তু নীতির মনে হলো ঈশানকে সব সত্যিটা জানানো উচিৎ । আর এটা সে আজকের ডিনারে বলবে । এটা মনে করতেই নীতির অস্বাভাবিক ঘাম হতে লাগলো ।
কিছুক্ষণ অন্যমনস্ক ছিল নীতি , হঠাৎ তার গালে , কপালে এসির ঠান্ডা হাওয়া এসে লাগতে নীতি সামনের সিটের দিকে তাকিয়ে দেখলো সেখানে ড্রাইভারের সিটে বসা ঈশানের সেক্রেটারী ছেলেটা কারের এসি অন করে দিয়েছে । এসির হাওয়ায় নীতি একটু স্বস্তি বোধ করলো , যদিও ভিতরে ভিতরে তার টেনশনটা আরো বাড়ছিল ।
চলবে ……..
……..
#Bengali #ebook #ebooks #kobo #payhipbooks #Amazon #Amazonkindle #story #storybook #storybooks #book #books #facebook #Instagram #bengalistory #bookstagram #romantic #romance #Love #romanticstory #lovestory #fictionbooks #ebookstagram #booklover #ebooklover #digitalbook #instabook #bengalibook #bengalibooks #bengalistorybook #bookpic #ebooksale #golpokothaara
……..