উড়ো পাতার ঢেউ পর্ব ১৯

0
524

#উড়ো_পাতার_ঢেউ
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ১৯
_________________

সে রাতে আর ইরতিজার ঘুম হলো না। মাথার ভিতর শুধু ক্যানিয়লের চিন্তা বিরাজ করেছে। মারামারির দৃশ্যটা চোখে ভাসতেই গা ছমছম করে উঠেছে। ক্যানিয়ল আসলেই সন্ত্রাসী? প্রশ্নটা ভাবতেই খুব ভয় করে, মন খারাপও হয়!
ক্যানিয়লের ব্যাপারে সর্বপ্রথম রিশনকে জিজ্ঞেস করলো ইরতিজা। রিশনের সাথে মর্নিং ওয়াকে বের হয়েছিল। তখন হঠাৎ প্রশ্ন করলো,
“আচ্ছা, ক্যানিয়ল কি সন্ত্রাসী?”

প্রশ্নটা শুনে দাঁড়িয়ে যায় রিশন। ভ্রু কুঁচকে তাকায় ইরতিজার দিকে। মনে মনে কী যেন ভাবে ক্ষণকাল। তারপর বলে,
“ক্যানির ব্যাপারে একটা কথাও বলবো না আমি। মুড নেই ওর ব্যাপারে কথা বলার।”
বলে ইরতিজাকে রেখে সে দ্রুত পা চালিয়ে চলে যায়। ইরতিজা ব্যাপারটার কিছুই বুঝে উঠতে পারে না। রিশন ক্যানিয়লের প্রতি এতটাই বিরক্ত যে ওর ব্যাপারে কথা বলতেই অনিচ্ছা?
ভার্সিটি এসে একই প্রশ্ন করলো আবার জুহিকে। জুহি প্রশ্নটা শুনে খানিক মৌন থেকে বললো,
“না, ও সন্ত্রাসী নয়, ওকে ঠিক সন্ত্রাসী বলা যায় না। কিন্তু ওর কাজকর্ম আবার সন্ত্রাসীদের মতোই।”
এই ব্যাপারে শুধু এটুকু বলেই প্রস্থান করে জুহি। আসল ব্যাপারটা ভালো করে জানা হয় না তাই। অন্তঃকরণে জানার কৌতূহল খুঁড়ে খুঁড়ে খেতে থাকে ইরতিজাকে। কার কাছে জিজ্ঞেস করবে ক্যানিয়লের ব্যাপারে? সামুরা নিশ্চয়ই সবকিছু ভালো করে বলতে পারবে। কিন্তু ভাইয়ের কাছে ভাইয়ের ব্যাপারে এমন কথা জিজ্ঞেস করা কি ঠিক হবে?
দিশেহারা লাগতে লাগলো ইরতিজার। ক্যানিয়ল একজন সন্ত্রাসী এটা কিছুতেই মানতে পারছে না সে।
করিডোর ধরে এলোপাতাড়ি পা ফেলে হেঁটে আসছিল ইরতিজা। মাথায় কালো হিজাব। হিজাব ছাড়া এখন সে কোথাও বের হয় না। বের হলে যদি ক্যানিয়লের সাথে দেখা হয়ে যায়? তাহলেই তো ক্যানিয়ল বলবে,
‘তোমার মাথার হিজাব কোথায় পাকিস্টানি গার্ল?’

ওই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারবে না কিছুতেই। সর্বাঙ্গে শিহরণ বয়ে যায় ওই প্রশ্নটা শুনলে।
অকস্মাৎ পিছন থেকে অন্যমনা ইরতিজাকে ধাক্কা দিয়ে করিডোর থেকে ক্লাসরুমে ঢুকালো কেউ। ঘটনাটা আকস্মিক ঘটায় ইরতিজা প্রথমে বুঝতে পারলো না এমন কে করলো। ক্যানিয়লকে দেখে ভ্রু কুঁচকে বললো,
“তুমি?”

“তোমাকে মে/রে ফেলবো পাকিস্টানি গার্ল!” ফিসফিসানি সুরে বললো ক্যানিয়ল।

কথাটা শুনে ইরতিজা হঠাৎ বেপরোয়া হয়ে উঠলো। কেমন অভিমানও হলো। বললো,
“কেন মারবে আমাকে? কী অপরাধ আমার? আমার গায়ে হাত দিলে আমিও নিশ্চুপ বসে থাকবো না।”

ক্যানিয়ল ব্যাঙ্গাত্মক হেসে বললো,
“তোমার মতো ছিঁচকাঁদুনে মেয়ে কী করতে পারবে?”
প্রশ্ন করে ইরতিজার উত্তরের অপেক্ষা করলো না ক্যানিয়ল, সাবধানী কণ্ঠে বললো,
“লিসন, গতকাল যা দেখেছো ওটা যদি প্রকাশ করো তাহলে…”

ঠক ঠক করে টোকা পড়লো দরজায়। থেমে গেল ক্যানিয়ল। দরজায় তাকিয়ে দেখলো লেকচারার স্টিভেন দাঁড়িয়ে আছে। লম্বা সুঠাম দেহের অধিকারী স্টিভেন। দেখতেও সুদর্শন। ক্যানিয়ল বিরক্তিতে মুখ বিকৃত করে বললো,
“উফ, সব সময় সব জায়গায় তুমি আমাকে বিরক্ত করতে চলে আসো। কী প্রয়োজন?”

“প্রফেসর ব্রুস তোমাকে ডাকছে।”

ক্যানিয়ল দরজার দিকে এগিয়ে এসে প্রশ্ন করলো,
“কেন?”

“কেন সেটা তুমি ভালোই জানো ক্যানি।”

“না জানি না তো আমি।” কেমন কাঁধ নাড়িয়ে নাড়িয়ে বললো ক্যানিয়ল, নির্বিকার ভাবে।

“আর্থার আর ওর ফ্রেন্ডসদের মেরেছো, তোমার সাথে তোমার দুই ক্লাসমেটও ছিল। এ খবর লিক হয়ে গিয়েছে।”

কথাটা শুনে ক্যানিয়লের মাঝে ভাবান্তর হলো না তেমন। নির্বিকার ভাবেই বললো,
“আমি যাব না প্রফেসর ব্রুসের কাছে। তার ওই এক ঘ্যান ঘ্যান শুনতে ভালো লাগে না। তাকে গিয়ে বলো, ক্যানি তোমার সাথে দেখা করবে না।”

ক্যানিয়ল ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে চলে গেল। ইরতিজা ভাবছে ক্যানিয়ল কত বড়ো বেয়াদব! প্রফেসরের কথা পর্যন্ত শোনে না!

“তুমি কে?” স্টিভেনের কথায় হকচকিয়ে গেল ইরতিজা। আমতা কণ্ঠে উত্তর দিলো,
“আমি ইরতিজা।”

স্টিভেন নাম নিয়ে অত আগ্রহ দেখালো না। বললো,
“ক্যানি কি তোমায় মেরেছে?”

ইরতিজা চমকে উঠলো। চোখ স্ফীত হয়ে উঠলো তার।
“ক্যানিয়ল মেয়েদেরও মারে?”

“মারে না বলেই তো তোমাকে এখানে দেখে অবাক হচ্ছি!”

স্টিভেন সরু চোখে ইরতিজাকে দেখে চলে গেল। অবাকচিত্তে দাঁড়িয়ে রইল ইরতিজা। চারপাশে কী হচ্ছে, কী চলছে কিছু বুঝতে পারছে না সে। ক্যানিয়লের সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে সবকিছু কেমন ওলটপালট লাগছে।

_________________

ভোরের পাখি টুইটুই করে ডাকছে। ক্যানিয়লের রুমের পশ্চিমা জানালার কাছে থাকা ডালটায় বসে ডাকছে পাখিটা। ক্যানিয়ল কিছুক্ষণ ধরে দেখে চলছে পাখিটাকে। এন্ডারসন হাউজে যেদিনই আসে সেদিনই এই পাখিটার দেখা মেলে। পাখিটা আরও কিছুক্ষণ বসে থাকার পর উড়ে গেল। ক্যানিয়লও জানালার কাছ থেকে সরে রুম থেকে বেরিয়ে কিচেনে ঢুকলো। কফি বানালো। এরপর এলো লিভিং রুমে। লিভিং রুমে হাত পা বাঁধা অবস্থায় দুজন মোটাসোটা লোক ম্যাট্রেসের উপর ঘুমিয়ে আছে। এই দুজন গতরাতে প্রবেশ করেছিল এন্ডারসন হাউজে। ক্যানিয়লকে ঘুমের মাঝে আঘাত করতে চেয়েছিল, কিন্তু ক্যানিয়ল তার আগেই সজাগ হয়ে আঘাতটা প্রতিরোধ করে। তারপর হালকা মারধর হয় এই দুজনের সাথে। ক্যানিয়ল শুধু ঘাড়ে একটু ব্যথা পেয়েছে, কিন্তু এই দুজনের অবস্থা করুণ। প্রচুর আঘাত পেয়েছে এরা। ক্যানিয়ল পা দিয়ে একজনকে ঠেলে বললো,
“হেই, ওয়েক আপ।”

লোকটা নড়েচড়ে সজাগ হয়ে উঠলো। চোখ খুলে ক্যানিয়লকে দেখেই ধরফড়িয়ে উঠে বসার চেষ্টা করলো সে। অপর ব্যক্তিটাকেও জাগিয়ে তুললো।
ক্যানিয়ল দুজনের সামনে কফির কাপটা রেখে বললো,
“খেয়ে নাও, তোমাদের ব্রেকফাস্ট।”

প্রথম জাগ্রত হওয়া লোকটা অসহায় চোখ তুলে বললো,
“শুধু এককাপ কফি? আমরা সংখ্যায় তো দুজন।”

“তাহলে কি দুই কাপ চাও? যে লোকটাকে মারতে এসেছিলে সেই লোকটা তোমাদের ঘুম থেকে উঠিয়েই এক কাপ মিষ্টি কফি উপহার দিচ্ছে, এমন ঘটনা তো বিরল পৃথিবীর বুকে।”

লোক দুটোর চেহারা নেতিয়ে পড়লো।
দরজায় কলিং বেলের শব্দ শোনা গেল এরই মধ্যে। দরজা খুলতে গেল ক্যানিয়ল। মি. হেনরি এসেছে। রাতেই খবর পেয়ে ছুটে আসতে চেয়েছিল সে। ক্যানিয়ল বলেছে সকালে আসতে।
এসেই সে লোক দুটোর গায়ে কয়েকটা চ’ড়-থা’প্পড় মারলো। ক্যানিয়ল বললো,
“থামো মি. হেনরি। আমি বাইরে বের হচ্ছি। তুমি ওদের জিজ্ঞাসাবাদ করো। কিছু প্রকাশ না করলে চুরির দায়ে পুলিশে দেবে।”

“চুরি? ওদের সাথে তো অ্যাটম টু মার্ডার কেস যায়!”
বলতে বলতে মি. হেনরির চোখ কফির কাপটার উপর পড়লো হঠাৎ। সে ভ্রু কুঁচকে অবাধ বিস্ময়ে তাকালো ক্যানিয়লের দিকে।
“তুমি ওদের কফি খেতে দিয়েছো?”

ক্যানিয়ল হেসে বললো,
“দিয়েছিলাম, কিন্তু মনে হচ্ছে না এটা এখন আর ওদের প্রয়োজন আছে। কারণ ইতোমধ্যে তুমি ওদের কিছু খাইয়ে দিয়েছো। এক কাজ করো, কফিটা তুমি খেয়ে নাও।”
ঠোঁট টিপে হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেল ক্যানিয়ল।

________________

“সকাল সকাল আপনি রেডমন্ড এসেছেন কেন?”
সকালবেলা সাজিদকে দেখে ইরতিজা খুবই বিরক্তবোধ করলো।

“তাহলে কি এখন চলে যাব?”

“এসেছেন কেন?”

“ইচ্ছা হয়েছিল তাই।”

“মিথ্যা, আপনি আমাকে দেখতে এসেছেন।”

সাজিদ অবাক হলো। ইরতিজা নিজেও যে অবাক হয়নি তা নয়। তার হঠাৎই মনে হয়েছে সাজিদ তাকে দেখতেই এসেছে। আর মুখ ফসকে সেটা বলেও ফেলেছে!

“তোমাকে দেখতে আসা তো দোষের কিছু নয়, হতেই পারে আমি তোমাকে দেখতে এসেছি।”

“আমার অবজেকশন এখানেই, আপনি কেন আমাকে দেখতে আসবেন? আমার মতো খারাপ মেয়েকে দেখে দিন শুরু হলে আপনার গোটা দিনটা খারাপ কাটবে।”

“আমার সাথে উলটোটা ঘটে। এই যে তোমাকে দেখলাম, আমার দিন এখন ভালো কাটবে।”

ইরতিজা হঠাৎ করে বললো,
“আমি আপনাকে বিয়ে করবো না, সুতরাং আমাকে দেখতে আসার কিছু নেই। আমি আপনার হবু বউ না যে আমাকে আপনি দেখতে আসবেন। আমি আপনার হবু বউ এমন কোনো প্রমাণ নেই।” ইরতিজা নিজের হাতের অনামিকা দেখিয়ে বললো,
“দেখুন, আপনার দেওয়া আংটি আমি খুলে রেখেছি। সেই কবে খুলে রেখেছি, আর পরিনি। এখন আমি আর আপনার হবু বউ নেই।”

সাজিদ স্মিত হেসে বললো,
“বোকা মেয়েরা কি এত সুন্দর হয় ইরতিজা?”

ইরতিজা অবাক হয়ে বললো,
“মানে? হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন এলো? কোত্থেকে এলো?”

সাজিদ ইরতিজার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বললো,
“আমি কিন্তু তোমাকে দেখতে আসিনি। আমি এসেছি আমার এক কলিগ আমাকে নিমন্ত্রণ করেছে সেখানে। তবে তোমাকে দেখতে এসেছি এই কথাটা অতটাও ভুল ছিল না। পথে যদি আমাদের দেখা না হতো তাহলে তোমার বাড়িতে গিয়েই তোমাকে দেখে আসতাম।”

ক্যানিয়ল বেশ কিছুক্ষণ ধরে ইরতিজাকে লক্ষ করছে। একটা পাকিস্তানি ছেলের সাথে সেই থেকে কথা বলছে ইরতিজা। ছেলেটাকে ইরতিজার কাছ থেকে সরে গাড়ির দিকে এগিয়ে যেতে দেখা গেল। গাড়িটা ওদের থেকে খানিক দূরে দাঁড় করানো। কথার সমাপ্তি ঘটেছে বোধহয়। ক্যানিয়ল ইরতিজাদের থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়ানো ছিল। পিছন থেকে এগিয়ে এলো ইরতিজার দিকে। বললো,
“হেই, ছেলেটা কে?”

ইরতিজা আচমকা শুনতে পাওয়া কণ্ঠে চমকে পিছন ফিরলো। সোজা সাপ্টা জবাব দিলো,
“আমার উডবি হাসব্যান্ড।”

ক্যানিয়ল হাসলো। তার হাসিতে প্রকাশ পেল ইরতিজা মিথ্যা বলছে এবং তা সে বিশ্বাস করেনি। কেনই বা বিশ্বাস করবে? মেয়েটা তো মিথ্যাবাদী! তার সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে সেই যে মিথ্যা উডবি হাসব্যান্ডের গল্প বানিয়েছিল সেটা এখন অবধি বহাল রেখেছে! সে সাজিদের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো,
“ও কি তোমার ভাই?”

ইরতিজার চোখে-মুখে বিস্ফোরণ ঘটলো। ক্যানিয়ল সাজিদকে তার ভাই বলছে? ইরতিজা কিছু বলবে তার আগেই ক্যানিয়ল সাজিদকে ডেকে উঠলো,
“হেই…”

সাজিদ গাড়ির দরজা খোলার পর ডাক শুনতে পেয়ে থামলো। পিছনে তাকিয়ে দেখলো ইরতিজার পাশে একটা ইংরেজ ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। সেই ছেলেটা তাকে জিজ্ঞেস করলো,
“তুমি কি ইজার বিগ ব্রো?”

প্রশ্নটা শুনে সাজিদ ভ্রুকুটি করলো। তাকালো ইরতিজার দিকে। মনে মনে কী যেন ভেবে নিলো। ক্ষণকাল বাদেই তার অধরে নিঝুম হাসির রেখাপাত ঘটলো। অতঃপর আবার ক্যানিয়লের দিকে তাকিয়ে বললো,
“আমি ওর বিগ ব্রো এটাই কি বলেছে ও?”

ক্যানিয়লের জবাবের অপেক্ষা না করে সাজিদ ইরতিজার দিকে চেয়ে বললো,
“তখন বোকা মেয়ে কথাটায় তুমি উল্লেখ ছিলে।”
বলে হাসতে হাসতে গাড়িতে উঠে বসলো সাজিদ।
ইরতিজা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল। পাশ থেকে শোনা গেল ক্যানিয়লের কণ্ঠ,
“তোমরা পাকিস্টানিরা সময়-অসময়ে শুধু উর্ডু ভাষা ইউজ করো। এটা অনুচিত।”

ইরতিজা কটমট করে তাকালো ক্যানিয়লের দিকে। ক্যানিয়ল হেসে বললো,
“তোমার এত মিথ্যা বলাও অনুচিত। তোমার ভাই কষ্ট পেয়েছে মনে।”

“ও আমার ভাই নয়।”

“না হলে না, আমি কি বলছি ও তোমার ভাই? আজব!”

ক্যানিয়ল পা বাড়ালো সামনে। কতকদূর গিয়ে থেমে বললো,
“গতকাল বিকেলে আমি তোমাদের এরিয়ায় থাকা আমার বাড়িটায় গিয়েছিলাম। সিঁড়িতে কারো জুতার ছাপ দেখেছি। ওটা তুমি ছিলে তাই না?”

ইরতিজা চমকে গেল। হ্যাঁ, গিয়েছিল সে ক্যানিয়লের বাড়িতে। ক্যানিয়ল সন্ত্রাসী কি না এই ব্যাপারটা তাকে খুব ভাবাচ্ছিল, তাই ওই বাড়িতে কোনো অস্বাভাবিক কিছু দেখতে পায় কি না দেখতে গিয়েছিল। না, কিছুই দেখতে পায়নি। বাইরে থেকে কীই বা দেখতে পাবে। কিছু থাকলেও থাকবে ঘরের ভিতর। কিন্তু জুতার ছাপ কীভাবে পড়েছে সিঁড়িতে? গতকাল বৃষ্টি ছিল, কোনো রকমভাবে জুতায় কাঁদা লেগে গিয়েছিল না কি? সে খুব সহজে কথাটা অস্বীকার করে গেল,
“আমি তোমার বাড়িতে যাইনি। ওটা আমি ছিলাম না।”

“লুকিয়ে-চুরিয়ে লাভ নেই। আমি শুরু থেকেই ধরতে পেরেছিলাম তোমার ব্যাপার-স্যাপার। তুমি আমার প্রেমে পড়েছো। এটা প্রকাশিত। দয়া করে আর কখনও আমার বাড়ির আশেপাশে ঘুরঘুর করো না। মানুষজন দেখতে পেলে কলঙ্ক লাগবে আমার গায়ে!”

ইরতিজার ঠোঁট একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। ছেলেটা তার গায়ে মিথ্যা অপবাদের দাগ লাগিয়ে দিচ্ছে!

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here