উত্তরণ পর্ব_৪১

0
684

#উত্তরণ
পর্ব_৪১

আরোহী: না ম্যাডাম, প্রতিটা টিম নিজের নিজের ওয়ার্কিং এরিয়ায় আছে. এখানে শুধু উজান স্যার যে টিমটা লিড করছেন সেটা, অর্থাৎ মেন অপারেশন টিমটাই আছে. অ্যাকশন, মানে বাইরের সব মুভমেন্ট আমরা করি. এই টিমের সবাই IPS. কাজেই বুঝতেই পারছেন আমাদের কাজ. ইমফরমেশন রেসকিউ করার পর আমাদের বেরিয়ে যেতে হবে অপারেশনে۔۔۔

হিয়া: সবাই IPS মানে? NIA এর যতজন এখানে আছে সবাই?

আরোহী: হ্যাঁ ম্যাডাম. তবে আপনি জানেন কিনা জানিনা, উজান স্যার এয়ারম্যান হওয়ার সাথে সাথে একজন দুদ্ধর্ষ শুটারও. শুটিং এ গোল্ড মেডেলিস্ট উনি. আসলে কি জানেন তো, আমাদের কাজে কেউ যদি জানে আমরা আইপিএস বা ডিফেন্সের লোক তাহলে আমাদের আর চাকরিই দেবেনা (হেসে ওঠে আরোহী).

হিয়াও হাসে. আজ ওর মন উজানের প্রতি শ্রদ্ধায় আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়. গল্প করতে করতে ওরা হিয়ার রুমের সামনে এসে যায়. তারপর আরোহী চলে যায়, হিয়া নিজের রুমে প্রবেশ করে۔۔

এদিকে অফিসে যখন উজান আর মুরুগেশ কম্পিউটারে ব্যস্ত তখন ঘরের অন্য কোনে উজান আর হিয়াকে নিয়ে একটা জল্পনা চলতে থাকে. উজান ব্যস্ত থাকায় সেদিকে কান যায়না ওর. অল্প দু’দিনেই সবার বেশ পছন্দের মানুষ হয়ে উঠেছে হিয়া, বিশেষ করে আজ হিয়ার প্রত্যেক পদক্ষেপ ওদের জন্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ۔۔۔۔۔ সেটা হিয়ার ওদের জন্য আনা কফি, স্যান্ডউইচই হোক বা ভয়েস নোটের ব্যাপারটাই হোক অথবা ওদেরকে ওই ধাঁধার সমাধানের প্রথম ধাপে পৌঁছে দেওয়াই হোক۔۔

ওরা উজান কে যতটা ভয় পায় তার থেকে বেশী সম্মান করে. তাই ওরা স্বভাবতই খুশি হিয়াকে উজানের পাশে দেখে. এমন মানুষই তো ওদের উজান স্যার ডিজার্ভ করেন যে তার জীবনের যোগ্য অংশীদার হতে পারে, ঘরে বাইরে যোগ্য সহযোগী হয়ে উঠতে পারবে۔۔

গুগলে সার্চ দিতেই মাউন্ট আবু সম্পর্কিত সব তথ্য বিশদে ফুটে ওঠে. অফিসার মুরুগেসের সুনিপুন ছোঁয়ায় কম্পিউটার দ্রুত নিজের কাজ করে যাচ্ছে. উজান নিঃস্পলকে তাকিয়ে আছে স্ক্রিনের দিকে. একজায়গায় উজান দেখে স্ক্রিনের শেষের দিকে লেখা “people also search for”. সেখানে রাজস্থানের আরো বেশ কিছু জায়গার লিংক দেওয়া. উজান মুরুগেশ কে সেই লিংক গুলোও একে একে ওপেন করতে বলে۔۔۔

মুরুগেশ সবার প্রথমে যে লিংক টা ওপেন করে সেটা জয়পুর. জয়পুরের পেজ টা ওপেন হতেই উজানের চোখ এক বিশেষ জায়গায় আটকে যায়. জয়পুরের লঙ্গিচিউড এন্ড ল্যাটিচিউড দেওয়া রয়েছে, 26.92°N/75.80°E..এই সংখ্যাটা ওর ভীষণ পরিচিত মনে হয়. তড়িতাহতের মতো উজান ছিটকে যায় ধাঁধার প্রিন্ট আউটটার কাছে. যা ভেবেছিলো ঠিক তাই, খুঁজে পেয়েছে:
26927580: 1220

উত্তেজনায় উজানের চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে. মুরুগেশকে সবটা বুঝিয়ে বললে সে উজানের নির্দেশ অনুযায়ী নতুন উদ্দমে কাজ শুরু করে. উজান সারা অফিসে পায়চারি করতে থাকে, উত্তেজনায় সে চেয়ারে বসতে পর্যন্ত পারছেনা. যত সময় অতিবাহিত হচ্ছে মুরুগেশের মুখমন্ডল ততই উদ্দীপ্ত হয়ে উঠছে, উজান বোঝে সে সঠিক পথেই এগোচ্ছে. বেশ কিছুক্ষন পর মুরুগেশ মুখে বিজয়ীর হাসি হেসে ঘোষণা করে ওর কাজ শেষ. উজান, আরোহী সহ সবাই মুরুগেশ কে ঘিরে ধরে. ধাঁধার সমাধান তখন কম্পিউটার স্ক্রিন জুড়ে:

1. (Ahmedabad) 23.03/72.58 : 8586 (Kanchanjungha)

2. (Pune)18.53N/73.84E : 1048 (Amarkantak)

3. (Jaipur) 26.92N/75.80E : 1220 (Mount Abu)

4. (Lucknow) 26.85N/80.92E : 6683 (Kailash)

5. (Indore) 22.72N/75.86E : 3555 (Monark)

6. (Agra) 27.19N/78.01E : 8848 (Everest)

7. (Hyderabad) 17.40N/78.48E : 4590 (Manas Sarovar)

8. (Madurai) 09.93N/78.12E : 8091 (Annapurna)

সবাই প্রথমে খুশি হলেও সেটা দীর্ঘস্থায়ী হয় না. কেউই বুঝতে পারেনা আহমেদাবাদের সাথে কাঞ্চনজঙ্ঘার বা পুনের সাথে অমরকন্টকের কি সম্পর্ক থাকতে পারে۔۔۔

উজানের চোখ বন্ধ, সে চেয়ারে হেলান দিয়ে নিশ্চল হয়ে বসে. যারা ওর কাজের সাথে পরিচিত তারা জানে এখন উজান ধ্যানস্থ. ওর মস্তিস্ক জটিল সমস্যার সমাধান খুঁজতে ব্যস্ত. এই ধ্যান সহজে ভঙ্গ হবার নয় যতক্ষণ না সে কোনো সমাধানের হদিস পাচ্ছে. মুরুগেশ তখনো কম্পিউটারের মধ্যে ডুবে আছে এই আশায় যদি কিছু ক্লু পাওয়া যায়۔۔۔۔

দেখা যাক উজান কিভাবে বাকি ক্লু গুলো খুঁজে পায়—!!

(আপনারাও উজানকে ক্লু খুঁজতে সাহায্য করুন???–আজ কিছু ব্যাক্তিগত কারণ বসত #ভালোবাসার_নীড় লেখা হয় নি তাই আজকে দিতে নতুন পর্ব পোস্ট করা সম্ভব না– আগমীকাল যথা সময়ে নতুন পর্ব পোস্ট করা হবে??।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here