#উত্তরণ
পর্ব_৩৭
উজান: Voice note? নোটটা কি সেটা জানা গেছে?
মুরুগেশ: CIA is still working on it…
এবার তিনি উজানকে চিপ টা ওপেন করে দেখান. উজান এবং বাকি সমস্ত অফিসাররা পুঙ্খানুপুঙ্খ সব কিছু লক্ষ্য করতে থাকে যদি কোনো ক্লু পাওয়া যায়۔۔۔
অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়, কাজ চলতে থাকে. সকাল থেকে দুপুর, দুপুর থেকে বিকেল হয়ে যায়. স্নায়বিক চাপের প্রমান হিসাবে উজানের কপালে স্বেদবিন্দু জমা হয়. এমন সময় উজানের ফোনে চিফের কল আসে, উজান একটু সরে এসে ফোন রিসিভ করে. চিফ উজানদের অগ্রগতি সম্বন্ধে জানতে চাইলে উজান বিস্তারিত জানায়.
এই সময় একজন অফিসার প্রায় দৌড়োতে দৌড়োতে অফিস রুমে ঢোকে, হাতে একটা পেপার. উজান সহ সকলেই ওনার দিকে তাকিয়ে, দৃষ্টিতে প্রত্যাশা. অফিসার জানায় CIA পাসওয়ার্ড টা উদ্ধার করতে পেরেছে, তারপর হাতের পেপারটা উজানের দিকে এগিয়ে দেয়۔۔
উজান সাগ্রহে পেপারটা নিয়ে চোখ বোলাতে থাকে. তাতে লেখা۔۔
“Good evening ladies and gentlemen, this is your captain in command”
উজান পেপার থেকে মুখ তুলে সেই জনৈক অফিসারকে জিজ্ঞাসা করে۔۔
উজান: এটা পাসওয়ার্ড?
অফিসার: Yes Sir..
উজান ভ্রু কুঁচকে: Strange…
অন্য অফিসার: কি হয়েছে স্যার۔۔
উজান: এটা তো টেক অফ এর সময় ক্যাপ্টেন ইন কমান্ড এর আউন্সমেন্ট۔۔
অফিসার: তার মানে এটা কোনো ক্যাপ্টেনের ভয়েস?
উজান চিন্তিত গলায়: হতেও পারে۔۔۔۔۔আবার নাও হতে পারে۔۔
সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে থাকে. সবার কপালে চিন্তার ভাঁজ কারণ এই ধরণের সিক্রেট কোডে সাধারণত পাসওয়ার্ড পুট করার একটা লিমিট থাকে. বারবার ভুল পাসওয়ার্ড দিলে হয় ইনফরমেশন নষ্ট হয়ে যাবে আর নাহয় একেবারে লক হয়ে যাবে যেটা আর কোনোদিন খোলা সম্ভব হবেনা. এদিকে হাতে সময় কমে আসছে۔۔
উজান অফিস থেকে বেরিয়ে আসে. মাথাটা কোনো কাজ করছেনা. চিফ কে আপডেট দিয়ে নিজের রুমের দিকে যেতে গিয়েও উজানের হিয়ার কথা মনে পরে. আজ সারাদিন হিয়ার কোনো খোঁজ নেওয়া হয়নি, ইডিয়ট টা কি করছে কে জানে. হিয়ার রুমের দিকে পা বাড়ায় উজান۔۔
হিয়ার দরজায় নক করতেই হিয়া দরজা খুলে দেয় যেন হিয়া এই নকিং এর অপেক্ষাতেই ছিল. হিয়ার চোখ দেখে সেটা বুঝতে অসুবিধা হয়না উজানের. এতো দুশ্চিন্তার মাঝেও উজানের নিজেকে রিল্যাক্স লাগে. জীবনের শত ঝঞ্ঝাটের মধ্যেও এইটুকুই ওর প্রাপ্তি.
হিয়া দুবার ভিতরে আসতে বলে উজানকে, কিন্তু উজান তখন নিজের ভাবনার মধ্যে তলিয়ে থাকায় হিয়ার ডাক ওর কানে পৌঁছোয়না. হিয়া এবার উজানের হাত ধরে ঘরের ভিতরে নিয়ে আসে. হিয়ার স্পর্শে উজানের ধ্যান ভঙ্গ হয়.
ভিতরে এসে হিয়া উজানের হাত ছেড়ে দেয়, কিন্তু উজানের মন আজ বেহায়া, মস্তিষ্কের কোনো বারন মানতে নারাজ. এবার উজান হিয়ার হাত টা ধরে ওকে কাছে টেনে আনে. হিয়া অবাক হয়ে উজানের চোখে চোখ রাখে. অনেক কথাই বলা হয়ে যায় নিঃশব্দে. কিছুক্ষনের পর আবার উজান বাস্তবে ফিরে আসে. হিয়ার হাত ছেড়ে দিয়ে একটু সরে গিয়ে বলে۔۔
উজান: কি করছিলেন সারাদিন?
হিয়া: অপেক্ষা۔۔۔۔۔۔۔ না۔۔۔মানে একা মানুষ অপেক্ষা ছাড়া আর কি করতে পারে?
উজান একটা ভ্রু একটু উপরে তুলে: কার? আরোহীর?
হিয়ার ভ্রু টা একবার কুঁচকে উঠেই ঠিক হয়ে যায়۔۔
হিয়া: আর কার করবো? ওকে ছাড়া তো আর কাউকেই চিনিনা?
উজান: তাই বুঝি? আর কাউকেই চেনেন না?
হিয়া: হ্যাঁ۔۔۔۔۔۔۔ সেরকম বলতে গেলে তো বেশ কয়েক জনকেই চিনি. যেমন ধরুন যে আমাকে ওই ইন্টারোগেশন রুম থেকে এখানে নিয়ে এলো, বা যে আমাকে খাবার দিয়ে যায়, বা যে আপনাকে কাল ডেকে নিয়ে গেলো. আর তাদেরও তো চিনি যারা আমাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে এলো۔۔۔۔۔ (আড় চোখে তাকায় উজানের দিকে)
হিয়ার উত্তর শুনে বিরক্ত উজান: তাহলে আপনি বরং তাদের জন্যই অপেক্ষা করুন, আমি এখন আসি۔۔
হিয়া ফিক করে হেসে দেয় যার ফলে উজানের বিরক্তি আরো দু’ডিগ্রি বেড়ে যায়. ও ভাবে চলে যাবে কিন্তু চেয়েও পারেনা. এবার হিয়া উজানের একটু কাছে এসে বলে۔۔۔
হিয়া: বলছি۔۔۔۔সারাদিনে মুখে কিছু দিয়েছেন?
উজান: সেটা জেনে আপনার লাভ?
হিয়া: আপনি এতো বিদঘুটে কেন বলুনতো? একটা রসিকতাও বোঝেননা۔۔
উজান: আবার একটা বিশেষণ?
হিয়া: কি করবো? আপনার কাজগুলোই তো আপনাকে বিশেষণ দিতে বাধ্য করে. আপনি যদি এইরকমই করতে থাকেন তাহলে কিন্তু একদিন ভগবানের মতো আপনারও 108 টা নাম হয়ে যাবে বলে দিলাম, হুম۔۔
উজান: You know what? You are nothing but disgusting, terrible..
হিয়া: আপনিও কিন্তু আমায় বলতে ছাড়েন না. পার্থক্য এই যে আমি বাংলায় বলি আর আপনি ইংলিশে.
উজান: এনিওয়ে۔۔۔۔আপনার কিছু দরকার থাকলে আগে আমাকে বলবেন আর আমি না থাকলে আরোহী কে বলবেন, ও ব্যবস্থা করে দেবে. এখন যাই, অনেক কাজ বাকি۔۔۔
হিয়া: আপনি তো কিছু খাননি. একটু কিছু খেয়ে তারপর যান۔۔
উজান: আমার পুরো টীম না খেয়ে কাজ করে যাচ্ছে মিস মিত্র, আমি কি করে খাই বলুন?
উজান বেরিয়ে যায় নিজের অফিসের উদ্দেশ্যে আর হিয়া তখন এক মনে কিছু একটা ভেবে চলেছে۔۔۔۔
দেখা যাক উজান কিভাবে–সমস্যার সমাধান করে–!!
(কপিবাজ মহান ব্যাক্তিবর্গ গণ–কপি করতে কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন–আপনাদের জন্য কমেন্ট বক্স সময়ই উন্মুক্ত থাকবে??)