#উত্তরণ
পর্ব_৩৪
হিয়ার মুখে “ফেলুদা” শুনে উজানের তৃপ্তি একটু হোঁচট খায়. নিজের অজান্তেই ওর ভ্রু কুঁচকে যায়. কোন দিকে এগোচ্ছে হিয়া? মাঝে মাঝে উজানের হিয়াকে বোঝার থেকে টেরোরিস্টদের গতিবিধি বোঝা অনেক সহজ বলে মনে হয়.
উজান: কি ?
হিয়া: আমাকে নিয়ে এতই যখন সমস্যা তখন খামোখা এই সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু কে কোলে তুলতে গেলেন কেন?
উজানের তৃপ্তি এবার আর শুধু হোঁচট খায়না, একেবারে জবাব দিয়ে থেমে যায়۔۔۔
উজান: এই কে আপনাকে এসব ভুল ভাল কথা বলেছে বলুনতো?
হিয়া: আগে আমি প্রশ্ন করেছি۔۔
উজান: কে বলেছে? (মনে মনে: আরোহী? কিন্তু ও এইসব কথা হিয়াকে কেন বলতে যাবে? না না অন্য কোনো ব্যাপার আছে. অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়ছেন না তো?)
হিয়া: সব বলবো, প্রমান ছাড়া আমি কথা বলিনা. আগে বলুন কেন?
উজান এবার সত্যি আর উপায় দেখে না বাঁচার۔۔۔
উজান: আপনি অজ্ঞান ছিলেন তাই অবভিয়াসলি হেঁটে আসতে পারতেন না. কিন্তু আপনি যা ভাবছেন সেরকম কিছুই ঘটেনি.
হিয়া: আপনি কিডন্যাপার দের সাথে ছিলেন?
উজান: এইসব ছোট ছোট কাজে উজান চ্যাটার্জী ইনভল্ভ হয়না.
হিয়া: ফাইন. তারমানে আমাকে এখানে আনার পর আপনি তড়িঘড়ি ছুটে আসেন আমাকে দেখতে তাই তো?۔۔۔۔۔۔۔۔۔কেন?
উজান: ত۔তড়িঘড়ি? এই আপনি কি ভাবেন টা কি নিজেকে? কুইন ভিক্টোরিয়া?
হিয়া: আপনি না এলেও তো পারতেন. ওরাই আমায় ওই রুমে নিয়ে যেত۔۔
উজান: ওরা নিয়ে যেত? কি ভাবে?
হিয়া: যেভাবে আপনি নিয়ে গেছেন۔۔
উজান প্রচন্ড রেগে: Are you out of your mind? ওরা আপনাকে কোলে করে নিয়ে যেত?
হিয়া এবার বিজয়িনীর হাসি হাসে. উজান হিয়াকে হাসতে দেখে বোঝে ঝোঁকের বসে বেফাঁস কথা বলে ফেলেছে, নিজের হাত কামড়াতে ইচ্ছে করে ওর. উজানের অবস্থা দেখে হিয়ার হাসি আর থামতেই চায়না.
উজান রেগে: খুশি হয়েছেন? (একটু থেমে) কি হয়েছে টা কি যদি আমি নিয়ে আসি? তাছাড়া এটা আপনার আমার কোলে প্রথম চড়া না মিস মিত্র. মিসেস কাশ্যপের কমপ্লেক্সের সামনে যখন অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন তখন তো জানতে চাননি কি করে ওখান থেকে আমার ফ্ল্যাটে পৌঁছলেন? আজ কি মাথার পোকা গুলো নড়ে উঠেছে?
হিয়া: (মনে মনে: তাই তো۔۔۔۔۔۔সেদিনও তো উনি আমাকে۔۔۔۔۔সেদিন তো জানতে চাইনি)
অজান্তেই বেশ লজ্জা পায় হিয়া. নিজেকে একটু সামলে নিয়ে বলে۔۔۔
হিয়া: কিছুই যদি না হয়েছে এতো নাটক করার দরকার টা কি ছিলো? আপনি না লোকাতে চাইলে আমিও জোর করতামনা.
উজান বেশ অপ্রস্তুত হয় যেটা ওকে আবার রাগিয়ে দেয়۔۔۔
উজান: ( মনে মনে: বার বার আমি ওনার কাছে অপ্রস্তুত হই. আমি উজান চ্যাটার্জী বার বার ওনার কথার জালে আটকে পড়ি. উনি সামনে থাকলে আমার বোধ বুদ্ধি গুলো যে কোথায় যায় কে জানে۔۔ disgusting)
হিয়া এবার উজানের অনেকটা কাছে এসে একটু আদুরে গলায় প্রায় ফিসফিস করে বলে۔۔۔
হিয়া : আপনার পারফিউমের স্মেলটা না খুব সুন্দর۔۔۔۔Bit strong, প্রত্যেকবার পেয়েছি যখনই আপনার কাছে এসেছি۔۔۔۔দেখুন, এখনো আমার ড্রেসে স্মেলটা লেগে আছে۔۔
উজানের কাছে এবার সবটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায়. হিয়ার প্রতি ভালোলাগাটা আর একটু বেড়ে যায়. একটু আগের অনুভূতিগুলো রাগ সরিয়ে আবার মনে জায়গা করে নেয়.
এমনসময় দরজায় নক হয়, দুজনেই ফিরে তাকায়. একজন এসে উজানের কানে কানে কিছু একটা বলে যায়, শুনে উজানের ভ্রু কুঁচকে ওঠে.
উজান: You go, I am coming…
লোকটা চলে যায়. হিয়া লক্ষ্য করে উজান গম্ভীর হয়ে গেছে.
উজান: আমাকে যেতে হবে, আপনি শুয়ে পড়ুন, অনেক রাত্রি হয়ে গেছে. কাল দেখা হবে. Good night…
হিয়া : Good night…
উজান বেরিয়ে যায়. হিয়া দরজা লাগিয়ে দেয়, তারপর ক্লোরোফর্মের প্রভাবে ঘুমের দেশে পাড়ি দেয় সহজেই۔۔۔۔۔
দেখা যাক ভোরের নতুন সূর্য–কোন নতুন বার্তা বয়ে আনে উজান-হিয়া র জীবনে–!!
(আজ পর্ব পোস্ট করতে দেরি হয়ে গেলে–কারণ ঘুমিয়েছিলাম??–আর দেরি করে পোস্ট করায় কপিবাজ পাবলিক আপনাদের ও নিশ্চয় সমস্যা হয়ে কপি করতে তাই না–সমস্যা নেই একটু দেরি হয়েছে এই যা এখন কপি করে নিন????