আসক্তির_শেষ_বেলায়_তুমি
#পর্বঃ০৩
#লেখকঃআয়ান_আহম্মেদ_শুভ
* কিছু দূর পথ চলার পর হঠাৎ করে অধরাকে পেছন থেকে কোনো একটা গাড়ি এসে ধাক্কা মারতে নিলো। তবে সৌভাগ্যক্রমে অধরার শরীরের সাথে গাড়ির কোনো অংশ লাগেনি। গাড়িটা বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে ধাক্কা লাগে। গাড়িটা থেমে থেমেই অধরা গাড়ির দিকে তাকায়। আমন মনে অধরা বলতেই লাগলো “খুব কি ক্ষতি হয়ে যেতো যদি এই গাড়িটা এসে আমার উপর দিয়ে চলে যেতো! আমি একদম মুক্তি পেয়ে যেতাম। আর কোনো পিছুটান আমায় পিছু করতো না”! অধরা গাড়ির দিকে তাকিয়ে কথাটা গুলো ভাবছে ঠিক এমন সময় হঠাৎ করে একটা ছেলে এসে অধরাকে উদ্দেশ্য করে ভিশন কর্কশ কন্ঠে বলতে লাগলো
— এই আপনি কি পাগল আছেন? দেখে চলতে পারেন না? রাস্তার মাঝখান দিয়ে চলছেন, এখন যদি একটা দূর্ঘটনা ঘটে যেতো তবে কি হতো! ( লোক)
— কিছুই হতো না। বেওয়ারিশ লাশ হয়ে দাফন করা হতো ব্যাস! ( অধরা)
— আসলেই আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কোথা থেকে যে আসে এই সব পাগল কে জানে? ( লোক)
লোকটি রাগে গজগজ করতে করতে অধরাকে অনেক কথা শুনিয়ে দিলো। অতঃপর সে তার গাড়ি নিয়ে চলে গেলো। অধরা ও অয়নের বাড়ির দিকে রওনা দিলো। অয়নের বাড়ি এসে অধরা ফ্রেশ হয়ে নিয়ে সোফার উপর বসে আছে। মাথাটা ঝিমঝিম করছে তার। অয়ন আর অধরার ভালোবাসার সম্পর্ক ছিলো। পরিস্থিতি অধরাকে অয়নেথ রক্ষিতা বানালেও আল্লাহ জানে যে অধরা আর অয়নের মাঝে কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু এই সমাজ তো আর সেটা মানে না। সমাজ সেটাই বলবে যেটার মানে দাঁড়ায় তাদের সম্পর্কের।
* রাত ১১টার কাছাকাছি সময়। বাহিরে জোনাকির টিপটিপ আলো জ্বলছে। অধরা জানালার পাশে বসে আছে। বাহির থেকে বয়ে আসা মৃদু বাতাসে অধরার চুল গুলো খেলা করছে। মনটা হয়তো ভারী হয়ে আছে অধরার। তবে এই পরিবেশটা বেশ ভালোই লাগছে তার। কিছু সময় এই পরিবেশটাকে অনুভব করতেই হঠাৎ করে অধরা কর্ণপাত করে কারোর পায়ের শব্দ। এটা অয়ন ছাড়া আর কেউ নয়। অধরা চোখের কোনে লেপ্টে থাকা হৃদয়ের দহনরত নোনা জলের বিন্দুটা মুছে নিলো। অয়ন রুমে এসে ফাইলটা টেবিলের উপর রেখে ফ্রেশ হতে চলে যায়। অধরা ভাবছে অয়নের হয়তো আজ মুডটা ফ্রেশ আছে। কারন অয়ন রুমে প্রবেশ করতেই অয়নের ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসির ঝলক দেখা গেছে। অধরা রাতের খাবার এখন ও খায়নি। একটা রক্ষিতা মেয়ের সাথে এক টেবিলে বসে খাবার খাওয়ার ইচ্ছা এই বাড়ির কারোর নেই। অয়নের সাথে যদি খাবার খাওয়া যায় তো! এই ভেবে অধরা ও প্রস্তুত হয়ে আছে অয়ন আসবে আর তাকে নিয়ে ডিনার করতে যাবে। অয়ন ফ্রেশ হয়ে এসে সোফার উপর বসে পড়তেই অধরা বলতে লাগলো
— আজ আপনার মনটা খুব ভালো মনে হচ্ছে। বিশেষ কিছু কি হয়েছে আজ?
— আরে তেমন কিছু না নতুন একটা টেন্ডার পেয়েছি তো তাই আরকি! তা ছাড়া এই টেন্ডারটা পাওয়ার প্রায় অনিশ্চিত ছিলো। জানো আমি কত কষ্ট করে এটা পেয়েছি! রাত দিন না খেয়ে দুয়ে পড়ে ছিলাম। আজ সেটা পেলাম। বেশ শান্ত লাগছে এবার।
— ওহহ কনগ্রেচুলেশন। আপনি সব সময় সফলতা পাবেন। আমার দোয়া আছে।
অধরার কথাটা শুনে দুম করে অয়নের মুখের উপর থাকা আনন্দ ভাবটা এক নিমিষেই উধাও হয়ে যায়। অয়ন ভুলেই গিয়েছিলো সে একটা প্রতারকের সাথে কথা বলছে। যেই প্রতারক নারী তার থেকে খুশিটা কেড়ে নিয়েছিলো। হাজারটা স্বপ্ন দেখিয়ে এক মুহুর্তে সমস্ত স্বপ্নকে ধূলোর সাথে মিশিয়ে দিয়েছিলো। অয়নের প্রত্যেকটা রাত সাক্ষী এক নারীর প্রতারণার। অয়ন সোফা থেকে উঠে পড়ে একটা সিগারেট ধরাতে নিতেই অধরা অয়নকে উদ্দেশ্য করে কৌতুহল পূর্ণ কন্ঠে বলতে লাগলো
— একই করছেন? মাত্র ফ্রেশ হয়েছেন। এখন ডিনার করে নিন। তারপর না হয়…!
— শার্ট আপ। আমি কখন ডিনার করবো! বা করবো না সেটা আমার একান্ত নিজের ব্যাপার। একটা রক্ষিতার কাছ থেকে আমি কোনো ধরনের উপদেশ চাইছি না।
অয়নের কথাটা শুনে অধরা বাঁকা হাসি দিলো। অয়নের দিকে দৃষ্টিপাত করে বলল
— তাই না! তা হলে রক্ষিতাকে নিজের কাছে রেখেছো কেনো? আমার জানা মতে কেউ তো কোনো রক্ষিতাকে নিজের রুমের মধ্যে রেখে দিনের পর দিন পূজো করে না। পরিপূর্ণ ভাবে আমায় রক্ষিতা বানিয়ে নাও।
— প্রয়োজন পরলে তাই বানাবো। নিজের জায়গায় থাকো তুমি। তোমার সাথে কথা বলতেই আমার রুচিতে বাধে বুঝলে।
— তাই নাকি? পতিতালয়ের নারীদের সাথে কেউ প্রয়োজন ছাড়া কথা বলতে আসে না। আর আমিও তাদের থেকে কোনো অংশে কম না।
অধরার কথাটা কানে আসতেই অয়ন চুপসে গেলো। কোনো শব্দ তার মুখ থেকে বের হলো না। শুধু মাত্র এক দৃষ্টিতে নিজের প্রাক্তন প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে থাকলো সে। অধরা নিজেকে এতোটা নিচ কারোর সাথেও আজ তুলনা করতে পারে! কথা গুলো যেনো অয়নের বুকের উপর এসে সজোরে আঘাত করলো। অয়নকে নিশ্চুপ দেখে অধরা বাঁকা হাসি দিয়ে বলতে লাগলো
— কি হলো স্যার? আপনি এমন ভাবে কি দেখছেন? ওহহ আপনার তো মনে হচ্ছে শরীর চাই। অনেক কিছু তো দেখার আছে আপনার। এই নিন স্যার আপনার সামনে নিজেকে সমর্পণ করে দিলাম। ভোগ করুন আমায়।
কথাটা বলা শেষ করার পূর্বে অধরা নিজের কাঁধের উপর রাখা শাড়ির আঁচলটা মাটিতে ফেলে দিলো। শাড়ির আঁচলটা মাটিতে পড়তেই অয়নের সামনে অধরার বুক উন্মুক্ত হলো। অয়ন এখনও নিশ্চুপ হয়ে দাড়িয়ে আছে। হাত পা যেনো অসার হয়ে আছে তার। অয়নকে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অধরা এক টানে নিজের শাড়িটা সম্পূর্ণ খুলে ফেলল। অয়নের সামনে এখন অধরার পড়নে শুধু একটা ব্লাউজ আর পেটিকোট ছাড়া কিছু নেই। অয়ন এই দৃশ্যটা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। অধরা দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে বিপরীত দিকে মুখ করে দাঁড়ালো অয়ন। শরীরের মধ্যে থাকা সমস্ত রক্ত যেনো বেশ দ্রুত গতিতে ওঠা নামা করছে তার। অধরা অয়নের কাছে এগিয়ে এসে বলতে লাগলো
— অন্যদিক মুখ করে আছেন কেনো স্যার? এই রক্ষিতা নারীকে কি আপনার পছন্দ হয়নি? কোন দিন থেকে পছন্দ হয়নি? ভালো করে দেখুন না আমায়। প্লিজ! আপনার খুব পছন্দ হবে। একটু দেখুন!
— অধরা প্লিজ স্টপ ইট। প্লিজ বন্ধ করো এই সব আমার মাথা কাজ করছে না প্লিজ!
— বন্ধ করবো মানে? কি বন্ধ করবো? আজ তো কিছুই বন্ধ হবে না স্যার। আমি নিজের সবটা দিয়ে আজ আপনাকে খুশি করবো। রক্ষিতাদের কাজ তো এটাই।
— অধরা আমি আর পারছি না প্লিজ!
অধরার চোখ থেকে নোনা জল গড়িয়ে পড়ছে। অয়নের দিকে যতবার অধরা এগিয়ে আসছে অয়ন ততবার নিজের মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। অধরা আর নিজেকে সামলাতে পারলো না। দুম করে অয়নের শার্টের কলার চেপে ধরলো সে। অয়নের শার্টের কলার চেপে ধরে অধরা অয়নকে উদ্দেশ্য করে দাঁত দাঁত চেপে ফিসফিয়ে বলতে লাগলো
— কেনো পারছো না? রক্ষিতা করে যখন নিজের বাড়িতে রেখেছো, তখন এই রক্ষিতার সাথে সেই সব কাজ তোমায় করতেই হবে। যদি না কথার হয় তবে কেনো রেখেছো আমায়?
— অধরা আমি সত্যি বলছি খুব খারাপ হবে এখন।
— হোক খারাপ আমি সেটাই চাই। নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছি তোমার কাছে। এখন আমায় ভোগ করো তুমি..!
অধরার কথাটা শেষ হবার সাথে সাথে অয়ন অধরাকে খানেকটা অবাক করে দিলো। অয়ন অধরাকে নিজের………………..
#চলবে……………………..