আপনিময় বিরহ পর্ব ৩

0
511

#আপনিময়_বিরহ (০৩)
#বোরহানা_আক্তার_রেশমী
____________

২ দিন পরই প্রিয়তাকে রিলিজ করা হলো। সে এখন কিছুটা সুস্থ। যদিও এতো তাড়াতাড়ি হসপিটাল থেকে রিলিজ পেতো না তবুও প্রিয়তার জোড়াজুড়িতে বাধ্য হয়ে প্রিয়তার বাবা পলক সাহেব রিলিজ করিয়ে আনলেন। যখন মেয়ে এমন পরিস্থিতিতে ছিলো তখন সে ছিলো গ্রামের বাড়িতে। ওখাানে একটু সমস্যার জন্য গেছিলো। যখন শুনলো তার আদরের মেয়ের এ অবস্থা তখনই বিভ্রান্তের মতো ছুট লাগিয়েছে। বাবারা বুঝি এমনই হয়! এই দুদিনে অনিমা আর শিশির হসপিটালে যায়নি প্রিয়তা উত্তেজিত হতে পারে ভেবে। তবে দুজনের দুরত্ব কমার বদলে বেড়েছে শতগুণ। শিপন সাহেব রাগে, দুঃখে ছেলের সাথে কথায় বলছেন না৷ তবে শিলা বেগম স্বাভাবিক। যেনো কিছুই হয়নি। তাঁরা বেগম কিচেনে প্রিয়তার জন্য হালকা খাবার রান্না করছে। পলক সাহেব মেয়ের পাশে বসে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,

‘এখন শরীর কেমন লাগছে মা? বেশি কষ্ট হচ্ছে?’

প্রিয়তা মাথা নাড়িয়ে বোঝায় ‘না’। তার কষ্ট হচ্ছে না। পলক সাহেব মুচকি হেঁসে মেয়েকে বলে, ‘আমার ছোট্ট মা টা এতো অবুঝ কবে হলো? তুমি তো আমার লক্ষী একটা মা ছিলে তবে এমন ভুল সিদ্ধান্ত কেন মা? আমরা বুঝি তোমার কাছে মূল্যহীন!’

প্রিয়তা মাথা নিচু করে ঠোঁট কামড়ে ধরে। সে আবেগের তাড়নায় কত বড় ভুল করে ফেলেছে হয়তো বুঝতে পারছে। বাবা মা কে কষ্ট দিয়ে ফেললো সে! প্রিয়তার ভাবনার মাঝেই উদয় এসে হাজির। একটা আপেল কামড়াতে কামড়াতে বললো,

‘কাকে কি বলো আব্বু? ওর কি আমরা কেউ হয়? ওর তো শিশিরই সব। তাই জন্যই ওর জন্য হাতের শিরা কে’টে ফেললো। একটাবার ভাবলো না বাবা মা, ভাইয়ের কি হবে!’

তাঁরা বেগম খাবার হাতে রুমে ঢুকতে ঢুকতে উদয়ের কথার জবাবে বললো, ‘এই একটা কথা ১০০ বার বলে ফেলছিস৷ অন্য কিছু বল। কানের কাছে তোর এই একই প্যান প্যান ভালো লাগছে না।’

উদয় কিছু বলতে যাবে তার আগেই তনিমা হাজির। মুখ ভেংচি কেটে বললো, ‘তাছাড়া তুমি ওকে কি কথা শোনাও! তুমি নিজেই তো গার্লফ্রেন্ডের থেকে ছ্যাকা খেয়ে কয়দিন দেবদাসের মতো ছিলে হুহ।’

কথা বলতে দেড়ি কিন্তু উদয়ের দৌড়ানি দিতে দেড়ি নাই। পলক সাহেব মেয়ের দিকে তাকিয়ে দেখেন প্রিয়তা মলিন মুখে অন্য দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি বড় করে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। এটা কয়েকঘন্টা আগের প্রিয়তা হলে হেঁসে গড়াগড়ি দিতো। অথচ এখন! একটা মন ভাঙার এতো ক্ষমতা যে মানুষকে সহজেই বদলে দেয়! পলক সাহেব প্রিয়তার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,

‘জীবনে একটা ধাক্কা বড় জরুরি মা৷ তাতে তুমি মানুষ চিনতে শিখবে। আর একটা কথা মাথায় রেখো আল্লাহ যা করেন তা ভালোর জন্যই করেন। হয়তো শিশির তোমার জন্য সঠিক না তাই তাকে পাওনি। নিজেকে সামলে সামনে এগিয়ে যাও। কখনোই নিজের অতীত আঁকড়ে ধরবে না। যারা অতীত আঁকড়ে বাঁচে তারা বোকা। অতীত সবাইকেই একটা পীড়া দেয়, একটা দুঃস্বপ্নের মতো খারাপ স্মৃতি দেয় যা ভুলে যাওয়ায় শ্রেয়। আশা করবো তুমিও এক সময় নিজের খারাপ স্মৃতি ভুলে এগিয়ে যাবে।’

কথা শেষ করতেই প্রিয়তা বাবাকে জড়িয়ে ধরে৷ শব্দ করে কান্না করতে থাকে। কান্না করতে করতেই বলে,

‘আব্বু আমাাকে এখান থেকে নিয়ে যাও প্লিজ। এখানে আমার দম আটকে আসে। শিশির ভাই যেমন তেমন অনু আপুকে তো আমি খুব ভালোবাসি বলো। ছোট থেকে অনু আপু আর তনু আমার প্রাণ। কিন্তু অনু আপুই তো আমাকে ঠকালো। প্লিজ আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও।’

___________

অনিমা শিলা বেগমের হাতে হাতে কাজ করছে আর গভীরভাবে কিছু ভাবছে। শিশির কয়েকবার ডেকেছে তাও কানে যায় অনিমার। পাশ থেকে শিলা বেগম অনিমার অন্যমনষ্ক ভাব লক্ষ্য করে হাল্কা ধাক্কা দিয়ে বললেন, ‘অনি কই হারিয়ে গেছো? শিশির তোমাকে কখন থেকে ডাকতেছে।’

অনিমার কান অবদি কথা টুকু পৌছাতেই ছুট লাগালো শিশিরের রুমের দিকে। শিশির ততক্ষণে বিরক্তি নিয়ে চারপাশ পর্যবেক্ষণ করতে ব্যস্ত। অনিমা রুমে এসে ব্যতিব্যস্ত কন্ঠে বললো,

‘ডাকছিলেন? কিছু হয়ছে?’

শিশির বিরক্তি চোখে তাকিয়ে রুক্ষ স্বরে বলে, ‘কতগুলো ডাক দিতে হয় তোমাকে? ডাকতে ডাকতে গলা ফেটে যায় তাও তোমার পাত্তা নাই। আমার শার্ট কই?’

অনিমা বোকার মতো তাকিয়ে বলে, ‘ওই যে ওখানে সব।’

‘ওগুলো আমিও দেখেছি। সাদা শার্ট কই? আমি অফিস যাবো না নাকি!’

অনিমা সাথে সাথে ছুট লাগায় ছাঁদের দিকে। বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকায় শিশির। খানিকটা সময় বাদেই ফিরে আসে অনিমা। হাতে সেই সাদা শার্ট। শুকাতে দিয়েছিলো। শিশির টান মেড়ে হাত থেকে নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বলে, ‘বোনের ভালোবাসা কেড়ে নিয়ে খুব সুখী হতে চাইছিলে তাই না? এমন সুখী করবো তোমার বাবা মাও পা ধরে কান্না করবে।’

গটগট করে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়। হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকে অনিমা। মানে কি এতগুলো কথার? সে কখন কেড়ে নিলো তার বোনের ভালোবাসা? শিশিরই তো জোড় করে বিয়ে করলো! আর বাবা মা পা ধরে কাঁদতে যাবে কেন? তারা তো আরো ক্ষুব্ধ অনিমার ওপর। সব কথা যেনো মাথার ওপর দিয়ে গেলো। হাজার কথা ভাবতে ভাবতে রান্নাঘরে এসে দেখে তার শ্বাশুড়ি রান্না করছে। হঠাৎ করেই একটা কথা মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। যেখানে সবাই অস্বাভাবিক সেখানে তার শ্বাশুড়ি এতো স্বাভাবিক কিভাবে? ভাবসাব এমন যেনো কিছুই হয়নি। অথচ কত কি হয়ে গেলো! অনিমা শিলা বেগমের পাশে দাঁড়িয়ে আস্তে করে ডেকে বললো,

‘আচ্ছা কাকিমা সবাই আমার ওপর রেগে আছে তুমি রেগে নাই কেন?’

উত্তরে শিলা বেগম নিজের কাজ করতে করতে বললো, ‘রেগে থাকার কি আছে? তুমি অনেক লক্ষীমন্ত মেয়ে তোমাকে ছেলের বউ হিসেবে পেয়েছি এটাই কম কিসের? আর কাকিমা কি? আমি তোমার শ্বাশুড়ি লাগি তাই মা ডাকবে।’

অনিমার যা বুঝার তা বুঝাা হয়ে গেছে। নিশ্চয় এই চারদেয়ালের মধ্যে এমন কিছু হয়ছে যাতে করে শিশির তাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়ছে। কিন্তু কি এমন কারণ থাকতে পারে? এর মধ্যেই শিলা বেগম আবার বললেন, ‘প্রিয়তাকে নাকি বাড়িতে এনেছে। ও বাড়িতে যাবে না।’

বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে আসে অনিমার। শ্বাশুড়িমা কে একটা শিক্ষা তো দেওয়া দরকার। এতো ভালো বউ পায়ছে একটু শিক্ষা না পাইলে হয়? কুটিল হেঁসে হাই তুলতে তুলতে বললো,

‘শ্বাশুড়ি মা আপনি রান্না করেন আমি যায় রুমে। একটু ঘুমায় গিয়ে। অনেক ঘুম পাচ্ছে।’

শিলা বেগমের উত্তরের অপেক্ষা না করেই নাচতে নাচতে চলে যায় অনিমা। শিলা বেগম বিস্ময়ে হতভম্ব। সে কাজ করবে আর এ মেয়ে ঘুমাবে মাানে?

_________

সন্ধ্যার আগে দিয়ে শিশির ছাঁদে এসেছে। এক ধ্যানে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই পাশে কারো উপস্থিতির টের পায়। পাশে তাকিয়ে দেখে অনিমা দাঁড়িয়ে আছে। কিছু না বলে চলে আসার জন্য ঘুরতেই চোখে কিছু পড়ে যায়। চোখ চেপে ধরে দাঁড়িয়ে পড়ে নিজের জায়গায়। বার বার চোখ ডলছে খেয়াল করে অনিমা সামনে এগিয়ে এসে একটু উচু হয়ে হাত সরিয়ে নিজে দেখতে থাকে। পেছন থেকে যে কেউ দেখলে মনে করবে কিস করছে। ঠিক একই ভুল করলো প্রিয়তা। রুমে ভালো লাগছে না বলে তনিমা কে নিয়ে ছাঁদে এসেছে। তনিমার নুপুর খুলে যাওয়ায় সে সিড়িতে বসেই ঠিক করতে থাকে আর প্রিয়তা আস্তে আস্তে উপরে চলে আসে। তখনই চোখ যায় সামনের ছাঁদে। অনিমা আর শিশিরকে এমন অবস্থায় দেখে আর এক পাও নড়ে না। যেভাবে ছিলো ঠিক সেভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে। এক দৃষ্টিতে দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকতেই তনিমা দৌড়ে এসে কিছু খেয়াল না করেই বলে,

‘আরে প্রিয়ু এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? দ্রুত চল।’

‘প্রিয়ু’ নাম কানে আসতেই ছিটকে দাঁড়ায় অনিমা আর শিশির। সেই সময়ই তনিমাও ওদের দেখে। প্রিয়তা তখনো তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। তনিমার কয়েক সেকেন্ড লাগে পুরো বিষয়টা বুঝতে। মুহুর্তেই মাথায় রাগ চেপে বসে। প্রিয়তার হাত ধরে রুক্ষ স্বরে বলে,

‘চল এখান থেকে। কিছু মানুষ নোং’রামি করার জন্য জায়গা পাই না ছাঁদে আসে নোং’রামি করতে। এতো যদি শখ হয় সারাদিন রুমের দরজা লক করে বসে থাকতে পারে না! যত্তসব।”

অনিমা মাথা নিচু করে নেয়। নিজের বোনও তাকে এভাবে কথা শোনালো! শিশির অসহায় চোখে প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে আছে। প্রিয়তা আর তনিমা চোখের আড়াল হতেই শিশির অনিমার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে চলে যায়। অনিমা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়। সাথে সাথেই চোখের কোণা বেয়ে এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে।

শিশির নিচে আসতেই শিলা বেগম তাকে ডাকলেন। চোখ মুখ শক্ত করে দাঁড়িয়ে শিশির বললো, ‘কি?’

শিলা বেগম রুক্ষ স্বরে বললো , ‘অনিমা কই? তুই কি ওকে কিছু বলবি? ২ দিন হলো না বাড়ি আসছে তাতেই আমাকে অর্ডার শুরু করছে! রান্নার কাজে তো হাত লাগায়ইনি উল্টো সারাদিন আমাকে অর্ডার করে যাাচ্ছে।’

শিশির হুট করেই হেঁসে দিয়ে বলে, ‘কেন মা? তুমি না শান্তশিষ্ট, লক্ষী বউমা চেয়েছিলে! তোমার পছন্দের মেয়েকেই তো বিয়ে করেছি। তাহলে এখন এসব বলতেছো কাকে? ৩ দিনেই বিরক্ত হয়ে গেলে? আমি সারাজীবন কিভাবে কাটাবো? সংসার চেয়েছিলে না? ছেলেকে জীবন্ত লাশ করে শান্তি পেয়েছো তো!’

শিশির শব্দ করে চলে যায়। শিলা বেগম শূন্য দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে থাকে৷

প্রিয়তা চুপচাপ নিজের রুমে বসে আছে। তনিমা হাজারটা কথা বললেও একটা কথাও তার কান অবদি পৌছাচ্ছে বলে মনে হয় না। তাঁরা বেগম এসে প্রিয়তাকে অন্যমনষ্ক দেখে তার কাঁধে হাত রাখে। প্রিয়তা তার দিকে তাকায়। অসহায় কন্ঠে বলে,

‘আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো না আম্মু। আমি এক্সামের সময় না হয় এখানে এসে এক্সাাম দিয়ে যাবো। প্লিজ আম্মু।’

তাঁরা বেগম মেয়েকে জড়িয়ে ধরলেন। তারপর মাথায় হাত বুলিয়ে ধরে আসা কন্ঠে বললেন, ‘আর মাত্র ৩ দিন কষ্ট করে অপেক্ষা করো আম্মু। তারপর আমরা চলে যাবো এখান থেকে।’

প্রিয়তা এতক্ষণের আটকে রাখা কান্না উপচে দিলো। হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। তাঁরা বেগম মেয়ের এমন কান্নায় নিজেই কেঁদে ফেললেন। আল্লাহ তার মেয়েকে এত কষ্ট কেন দিলো! মেয়েটা তো একদম ভেঙে পড়েছে। পাশ থেকে তনিমাও ঠোঁট চেপে কান্না করছে। উদয় প্রিয়তাকে দেখতে এসে এমন দৃশ্য দেখে ভড়কে যায়। তারপর নিজেকে সামলে যেভাবে নিঃশব্দে এসেছিলো সেভাবেই চলে যায়। যাওয়ার আগে তনিমার দিকে গভীর দৃষ্টি দেয়। মেয়েটা দুষ্টু, ঠোঁটকাটা স্বভাবের হলেও ভালো খুব। অন্তত বড় বোনের মতো পিছনে আঘাত করেনি৷ হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিজের বাবার রুমে যায়। পলক সাহেব তখন সন্ধ্যার চা খাচ্ছেন ব্যালকনিতে বসে। উদয় সরাসরি নিজের বাবাকে প্রশ্ন করে বসে,

‘আমরা এখান থেকে কবে যাবো আব্বু?’

পলক সাহেব ছেলের দিকে তাকিয়ে ধীর কন্ঠে বলে, ‘বসো আগে।’

উদয় বাধ্য ছেলের মতো বসে পড়ে ফ্লোরে। পলক সাহেব তা দেখে মুচকি হাসে। বরাবরই উদয় এমন। পলক সাহেব চায়ে চুমুক দিয়ে বললেন, ‘তোমার কি মনে হয় এখান থেকে গেলেই প্রিয়তা ঠিক হয়ে যাবে?’

‘তা হোক বা না হোক। কিন্তু এখানে থাকলে এই বে’ইমানগুলোর মুখ দেখতে হবে। যা ওর কাছে সহ্যের বাহিরে। তুমি যত দ্রুত সম্ভব এখান থেকে চলো।’

‘হুম। ৩ দিনের মধ্যেই আমরা চট্টগ্রাম শিফ্ট হবো।’

উদয় আর কথা বাড়ায় না। উঠে চলে যায়। পলক সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেলে চোখের কোণে জমা জল মুছে নেয়। মেয়ের কান্নার শব্দ সে এখান থেকেই পাচ্ছে। আহ কি হৃদয়বিদারক সে আওয়াজ। কি কষ্টের! আল্লাহর কাছে এখন এই পরিবারের সবার একটাই প্রার্থনা যেন প্রিয়তা অতীত ভুলে নিজের জীবনে এগিয়ে যায়। যত ও ওর অতীত মনে করবে তত ভেতর থেকে শেষ হয়ে যাবে। বে’ইমানরা তো ঠিকই সুখে শান্তিতে থাকবে আর দিনের পর দিন গুমড়ে মরবে এই ছোট্ট মেয়েটি।

________

গভীর রাতে প্রিয়তা উঠে জানালার ধারে দাঁড়ায়। এ জানালা থেকে সে বহুবার শিশিরকে দেখেছে। প্রেমিক পুরুষকে দেখেছে। কিন্তু এখন সবই স্মৃতি। এখন তো তাকে নিয়ে ভাবাও নিষিদ্ধ। আর মাত্র ৩ দিন এরপর সব স্মৃতি ফেলে প্রিয়তা পাড়ি জমাবে অন্য এক শহরে। যেখানে কারো স্মৃতি তাকে পীড়া দেবে না। এ বাড়ির কানায় কানায় তার, অনিমার আর তনিমার কত স্মৃতি! সে সব ধুলোয় পড়ে যাবে। ভাবনার মাঝেই জানালা দিয়ে নিচে তাকাতেই দেখে একটা অবয়ব সরে গেছে। প্রিয়তা দেখার চেষ্টাও করে না অবয়বটি কার! তার যেন কোনো কিছুতেই মাথা ব্যাথা নাই। জানালার পাশ থেকে সরে এসে ডায়েরী হাতে নিয়ে তাতে ছোট্ট করে দুলাইন লিখে,

‘আপনি আমার ভীষণ যত্নে রাখা সেই মানুষ
যার বিরহ আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
আপনাকে পাওয়া হলো না ঠিকই তবে আপনিময় বিরহ পেলাম এক আকাশ
আমি না হয় এই বিরহেই সুখী।

আপনিময় বিরহ।’

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here