অনন্যময়ী সানজিতা_তুল_জান্নাত পর্ব_৪৫

0
5717

অনন্যময়ী
সানজিতা_তুল_জান্নাত
পর্ব_৪৫

মধ্যাহ্ন বেলায় মাথার উপর সূর্য খাড়াভাবে তার প্রখর উত্তাপ ছড়িয়ে দিচ্ছে।ব্যস্ত শহরে কারো এদিক ওদিক তাকানোর ফুসরত টুকুনি নেই। যে যার মতো কাজে ব্যস্ত।ব্যস্ত নগরীর মানুষগুলো আপন গতিতে চলছে।শহরের কাকগুলো গলা ফাটিয়ে কা কা করতে ব্যস্ত তো আবার কোন কোন কাক খাবারের সন্ধানে এদিক ওদিক উড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে। মাঝে মাঝে শহরের মাঝ দিয়ে টাঙানো জটলা পাকানো কারেন্টের তারের উপর বসে জিরিয়ে নিচ্ছে।ছাদের উপর বেরিয়ে আসা অবশিষ্ট রডের উপর এসে বসে একটা কাক।

অনি সবে মাত্র গোসল সেরে এসে কাপড় শুকাতে এসেছিল।আজই প্রথম সে ছাদে এসেছে কাপড় শুকাতে।সচরাচর আসা হয়না। নিজের কাপড় নিজে ধুলেও আমেনার মা ই সব সময় কাপড় শুকাতে দেয়। আজ হাতে কাজ থাকায় অনি নিজেই এসেছে। এবাড়ির ছাদে সে আরো একদিন এসেছিল। এরপর আর আসা হয়নি। কি যেন ভেবে অনি একটু ছাদটা ঘুরে দেখে। বেশিক্ষণ দেখার সুযোগ হয়নি। নিচে থেকে শায়লা বেগম বার বার ডাকছিল। বিধায় তাকে নিচে নেমে আসতে হয়।

নিচে নামতেই শায়লা বেগম তাকে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য তাড়া দিতে থাকে। অনির এখনো যোহরের নামাজ পড়া হয়নি। অনি তাকে জানায় সে নামাজ পড়ে খাবে। তাই শায়লা বেগমও আর তাকে বিশেষ জোরাজুরি করে না।

অনি নামাজ শেষ করে দুপুরের খাবার খেয়ে নেয়। রুমে এসে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নেয়। বিছানায় বসে থাকতে থাকতে তার তন্দ্রাভাব চলে আসে।কিছুক্ষণের মধ্যেই সে যেন গভীর ঘুমে তলিয়ে যায়।



অপরাহ্ণে আসরের নামাজ শেষ করে বোর হচ্ছিল অনি। কিছুক্ষণ অলসভাবে বসে থাকার পর মিথিলার রুমে যায়। মিথিলা পড়াশোনা নিয়ে কিছুটা ব্যস্ত ছিল। আর তিনদিন বাদেই তাদের ঢাকা ভার্সিটির এডমিশন টেস্ট। তাই প্রস্তুতিও এখন খুব জোরালো ভাবেই চলছে।

মিথিলা অনিকে আসতে দেখে একটা মিষ্টি হাসি উপহার দেয়। উত্তরে অনিও হালকা হেসে ভেতরে প্রবেশ করে।

রুমে ঢুকেই মিথিলা একবার পুরো রুমে চোখ বুলায়। পুরো বিছানা জুড়ে নোটস বই খাতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছে। অনি কিছুটা ভড়কে যায় মিথিলার এ অবস্থা দেখে। তার চোখ মুখ দেখেউ বোঝা যাচ্ছে সে কিছুটা অবাক হয়েছে। মিথিলা একটা বোকা বোকা হাসি দেয়।

বিছানার একপাশে থেকে কয়েকটা বইখাতা সরিয়ে নিয়ে অনিকে বসতে দেয়। অনিও বসে পড়ে। মিথিলা কিছুটা লজ্জা পায়।

–“আসলে কি বলো তো এক্সাম তো তাই আর কি এই অবস্থা। বিছানায় পড়তে না বসলে আমার পড়াশোনাই হবে না আমার। বলেই পুনরায় একটা বোকা বোকা হাসি দেয়।

–ওহ আচ্ছা। তো তোমার প্রিপারেশন কেমন?(অনি)

–আলহামদুলিল্লাহ ভালো,বাকিটা আল্লাহ ভরসা।পড়াশোনায় কোন কমতি রাখিনি আমি।(মিথিলা)

–তাহলে টেনশন করো না। ইনশাআল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে। আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যেই করে।(অনি)

–হ্যা ইনশাআল্লাহ। দেখি কি হয়।(মিথিলা)

–ওহ ভালো কথা। রিশা কোথায় রিশাকে তো দেখলাম না। আসার সময় ওর রুম হয়েই আসলাম।ওর ও তো এক্সাম।(অনি)

–রিশাকে বোধ হয় মনি ডাকছিল।নিচে গেছে। (মিথিলা)

–ওহ আচ্ছা। (অনি)

অনি আরো কিছুক্ষণ মিথিলার সাথে টুক টাক কথা বলে। তবে সে বেশিক্ষণ মিথিলার সাথে থাকেনা। সে থাকলে মিথিলার পড়াশোনায় ডিস্টার্ব হবে ভেবে রুম থেকে চলে আসে।

মিথিলার রুম থেকে নিচের দিকে যায় অনি। রায়হান সাহেব ড্রইংরুমে বসে চা খাচ্ছিলেন পাশাপাশি রিমোট দিয়ে চ্যানেল পালটে পালটে টিভি দেখছিলেন। ঠিক টিভি দেখছিলেন না শুধু চ্যানেল পালটে পালটে অন্যমনস্কভাবে টিভির দিকে তাকিয়েছিলেন।

অনিকে দেখে খুব রায়হান সাহেব কিছুটা খুশি হন। কেননা এখানে বসে বসে তিনি খুব বোর হচ্ছিলেন। অনি আসায় ভাবেন এখন হয়তো তার বোরিংনেস কেটে যাবে।

অনি রায়হান সাহেবের কাছে কিছুক্ষণ বসে থাকে। রায়হান সাহেব তার সাথে টুক টাক গল্প করেন।গল্পে বিশেষ কোন আকর্ষণ খুঁজে পায়না অনি। তবুও মনোযোগী শ্রোতার মতো তাকিয়ে থাকে অনি।

রায়হান সাহেব কথায় কথায় তার ছোটবেলার গল্প উঠান। কিভাবে গ্রামে দুরন্তপনার মাঝে জীবনযাপন করেছে সেই দুঃসাহসিক গল্প গুলোই শোনাচ্ছিলেন খুব উৎসাহ নিয়ে। অনি খুব মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনতে থাকে। সে নিজেও বেশ মজা পাচ্ছে। গ্রাম সম্পর্কে তার কোন ধারণা নেই বললেই চলে। তাই রায়হান সাহেবের কথাগুলো শুনে তার মনে হচ্ছিল সে যেন কোন এডভেঞ্চারের গল্প শুনছে।

রায়হান সাহেবের কথা শুনে অনির মনে মনে খুব ইচ্ছা জাগে তাদের গ্রামের বাড়ি দেখার। তবে সে ইচ্ছাটা নিজের মধ্যেই চেপে রাখে। গল্প করতে করতে মাগরিবের আযানের ধ্বনি ভেসে আসে অনির কানে।

রায়হান সাহেব মসজিদে যায় নামাজ পড়তে। অন্যদিকে অনিও নিজের রুমে গিয়ে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ আদায় করে নেয়।

নামাজ শেষ করে সে কিছুক্ষণ জাহানারা বেগমের সাথে কথা বলে। ফোন ঘাটতে ঘাটতে পুনরায় রিশাদের মেসেজটা তার চোখে পড়ে। মেসেজটা দুতিন বার পড়ে মুচকি হাসে সে। তবে রিশাদ তার মেসেজের কোন উত্তর না দেয়ায় কিছু একটা ভাবতে থাকে সে। অনি ভাবে কাজের ব্যস্ততায় হয়তো রিপ্লাই দিতে পারেনি। কিন্তু আর মন খারাপ হয়ে যায়। সেই যে মেসেজ দিয়েছিল তারপর আর না কল না কোন মেসেজ এসেছে। দু মিনিটও সময় হয়নি রিশাদের তার সাথে কথা বলার। মনে মনে কথা গুলো আওড়াতে থাকে অনি।

অনির চিন্তার ছেদ ঘটিয়ে দিয়ে শায়লা বেগম তার দরজায় এসে অনির নাম ধরে ডাকতে ডাকত্ব ভেতরে রুমে প্রবেশ করে। শায়লা বেগম রুমে প্রবেশ করেই বলতে শুরু করেন;

–সেই দুপুরে একটু ভাত খেয়েছো তার পর তো আর কিছুই খাওনি। তোমাদের নিয়ে আর পারিনা বাপু। সময় মতো খাওয়া দাওয়া করবে না আর অসুস্থ হয়ে পড়বে। (শায়লা বেগম)

হঠাৎ এধরনের কথা শুনে অনি কিছুটা ভড়কে যায়। শায়লা বেগমের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে বেশ ভালোই ক্ষেপে আছে। অনি আমতা আমতা করতে শুরু করে।

–হয়েছে আর কিছু বলতে হবে না।দ্রুত নিচে এসো। তোমার বাবাও চলে এসেছে।একটু কিছু খেয়ে নেবে।(শায়লা বেগম)

অনি শায়লা বেগমের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকায়। যার মানে হলো এই মূহুর্তে তার খেতে মন চাচ্ছে না। তবে শায়লা বেগম তা বুঝেও মা বোঝার ভান করে পুনরায় তাকে নিচা যাওয়ার তাগিদ দেয়। অনি আর কিছু বলতে পারেনা। শায়লা বেগমের পিছু পিছু নিচে নেমে যায়।

এবাড়িতে অনির প্রিয় বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শায়লা বেগমের আদর মাখা কড়া শাসন। যা সে খুব বেশিই উপভোগ করে। শুরু থেকেই অনির শায়লা বেগমের শাসন খুব ভালো লাগে।মাতৃস্নেহ অনুভব করে সে এই শাসনের মধ্যে। তাই সেও বিনা বাক্য ব্যয়ে শায়লা বেগমের সকল কথা মেনে নেয়।

নিচে গিয়ে অনি রায়হান সাহেবের সাথে হালকা স্ন্যাকস খেয়ে নেয়। সাথে এক কাপ ধোয়া ওঠানো গরম গরম কফি।আয়েশে কফির মগে অনি পুনরায় রায়হান সাহেবের সাথে গল্প করে সময় কাটায়। গল্পের মাঝেই আবির্ভাব ঘটে রিশাদের।

ক্লান্ত রিশাদ অফিস থেকে ফিরেই সোফায় গা এলিয়ে দেয়। আজ প্রচন্ড কাজের চাপ ছিল। শায়লা বেগম রিশাদকে অফিস থেকে ফিরে ফ্রেশ না হয়েই এভাবে বসে থাকতে দেখে রিশাদকে উপরে পাঠিয়ে দেন।

কিছুক্ষণ পর অনিও উপরে চলে যায়। শায়লা বেগম অনির হাতে এক কাপ কফি পাঠিয়ে দেয়।

অনি রুমে যেয়ে রিশাদকে কোথাও দেখতে পায়না।ওয়াশরুম থেকে পানি পড়ার শব্দ আসছে। অনি সেদিকে একবার তাকিয়ে বেডসাইড টেবিলে কফির মগটা রাখে। বিছানায় বসে হাত কচলাতে থাকে।

রিশাদ ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে হাত মুখ মুছে তোয়ালেটা বেলকনিতে মেলে দিয়ে আসে।

রুমে এসে অনিকে দেখতে পায় বিছানার কোণায় থম মেরে বসে আসে। মুখটাও কেমন গম্ভীর করে রেখেছে। রিশাদ বুঝছে পারছে না আবহাওয়া গরম না ঠান্ডা।

রিশাদ কিছুটা শঙ্কিত হয়ে অনির পাশে বসে। অনি গোমড়া মুখে আড়চোখে রিশাদের দিকে তাকায় চোখ ছোট করে। রিশাদের সাথে চোখাচোখি হতেই সে নজর সরিয়ে নেয়। রিশাদ বেশ মজা পায় বিষয়টাতে। মুচকি হেসে অনির দিকে তাকায়।

অনি উঠে যেতে নিলে রিশাদ তাকে আটকে দেয়। অনির হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় বন্দী করে নিজের দিকে দাঁড় করায়।

অনি আরেক হাত দিয়ে রিশাদের হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করলে রিশাদ আরেক হাত দিয়ে অনির হাতটা মুঠোবন্দী করে নেয়।

–“ছাড়ুন।আমি নিচে যাবো। মামনি আপনার জন্য কফি পাঠিয়ে দিয়েছে। অন্য কিছু খেলে বলুন আমি নিয়ে আসছি।”(অনি)

–“উহুম আমি কিছু খাবো না। আগে বলুন আপনার কি হয়েছে। মুখটা এমন গোমড়া করে রেখেছেন কেন?”(রিশাদ)

–“কিছুনা।”(অনি)

–“তাহলে আমার কাছ থেকে পালাতে চাচ্ছেন কেন?”(রিশাদ)

রিশাদের কথায় অনি কোন উত্তর না দিয়ে মুখটা মলিন করে দাঁড়িয়ে থাকে।

–“অনন্যময়ী!”(রিশাদ)

রিশাদের মুখে নিজের নামটা উচ্চারিত হতে শুনে অনির মনে যেন প্রশান্তির হাওয়া বয়ে যায়। রিশাদের ডাকটা যেন অদ্ভুত মায়া ভরা।যেমনটা আরো অন্য কারো ডাকে সে অনুভব করে না। রিশাদের উপর জমে থাকা কিঞ্চিত অভিমান যেন নিমিষেই উধাও হয়ে যায়। রিশাদের ডাকে অনি যেন একটা ঘোরের মধ্যে চলে যায়। রিশাদের কথায় অনির ধ্যান ভঙ্গ হয়।

–“কি হয়েছে অনন্যময়ী? মন খারাপ আপনার?”(রিশাদ)

–“কই না তো। আপনি কফিটা খেয়ে নিন না। ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।এক্স(অনি)

–“ঠান্ডা হয়ে যাক। কফি আবার বানানো যাবে।আপনার মন খারাপ কেন আগে সেটা বলুন।”(রিশাদ)

–“আসলে মন খারাপ না। আপনি তো বাসায় থাকেন না। আমি বাসায় বসে বসে খুব বোর হই। আর আপনি তো এতটাই ব্যস্ত থাকেন আপনার তো দু মিনিটও সময় হয়না আমার সাথে কথা বলার।”অভিমানী কণ্ঠে গোমড়া মুখ করে কথাগুলো বলে রিশাদকে। রিশাদ খুব মনোযোগ দিয়ে অনির কথা শুনে মুচকি হাসে।

–“বুঝেছি। আমাকে মিস করছিলেন বুঝি।আহ আমার কি কপাল অনন্যময়ী শেখ নাকি আমাকে মিস করেছে।এ তো আমার পরম সৌভাগ্য।(রিশাদ) বলেই রিশাদ মুচকি হাসতে থাকে।

অনি রিশাদের কথায় কিছুটা রেগে যায়। চোখ বড় বড় করে রিশাদের দিকে তাকাতেই রিশাদ হাসি থামিয়ে দেয়। বেচারা বেচারা ভাব দেখিয়ে অনির দিকে তাকিয়ে থাকে। অনি রিশাদকে ভেংচি দিয়ে হাত ছাড়ানোর জন্য মোচড়া মুচড়ি করতে থাকে। রিশাদ আরো শক্ত করে ধরে থাকে।

–“সরি মিস। এইযে কান ধরছি আর কখনো এইরকম হবে না। আসলে আপনাকে টেক্সট করেই আমি কনফারেন্স রুমে ঢুকেছি। ফোনটা ছিল আমার এসিসট্যান্ট এর কাছে। পরে দেখতে ভুলে গিয়েছি।প্লিজ রাগ করবেন না। “(রিশাদ)

অনি রিশাদের কথায় চুপ চাপ থাকে।কোন উত্তর দেয় না। রিশাদ বার বার সরি বলতে থাকে। রিশাদের অসহায় অবস্থা দেখে অনি এবার হেসে ফেলে।

অনিকে হাসতে দেখে রিশাদ যেন কিছুটা স্বস্তি পায়। অনির সাথে আরো কিছুক্ষণ কথা বলে রিশাদ। এদিকে কফিটা একেবারে ঠান্ডা হয়ে যায়। রিশাদকে ছেড়ে দিয়ে অনি নিচে গিয়ে নিজ হাতে কফি বানিয়ে দেয়।

রিশাদ মনে মনে ভাবতে থাকে কফি ঠান্ডা হয়ে বেশ ভালোই হয়েছে। সেই সুযোগে আবার অনির হাতে বানানো কফি খাওয়ার সুযোগ পেল। বাহ!

রিশাদ পরম আবেশে কফির মগে চুমুক দেয়।রিশাদ অফিসের কাজ করতে করতে তৃপ্তি সহকারে সে কফি খায়। অনি রিশাদের পাশেই বসে রিশাদের সাথে টুকটাক কথা বলছে। পাশাপাশি ফোনে স্ক্রলিং করছিল।

ফোনে কিছু একটা দেখে অনির চোখ আটকে যায়। বিস্ফারিত চোখে সে তাকিয়ে থাকে। বার বার করে রিফ্রেশ করে চেক করে। না সে তো ঠিকি দেখছে। স্পষ্ট সে দেখতে পাচ্ছে মেসেঞ্জারে এক্টিভ লিস্টে সবার উপরে অদ্রির নামের পাশে অদ্রির একটা ছোট্ট ছবিতে সবুজ বাতি জ্বলছে। মানে সে এক্টিভ হয়েছে।

প্রতিদিন একবার করে অনি চেক করতো অদ্রির আইডিটা। এতদিন ধরে আইডিটা ডিএক্টিভ ছিল। তাই সে বার বার হতাশ হয়েছে। আজও সে মেসেঞ্জারে এসেছিল। তবে চেক করতে ভুলে গেছিল। হঠাৎ করেই চোখে পড়ে যায় তার। এতদিন ধরে কোনভাবেই সে অদ্রির সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি।অনেক চেষ্টা করেও তার সাথে কন্টাক্ট করতে পারেনা। অদ্রি যেন তার সাথে যোগাযোগ করার সকল রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিল। আজ অদ্রিকে এক্টিভ হতে দেখে অনি যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। কিছুক্ষণ যেন সে একটা ঘোরের মধ্যে ছিল।

সব কিছু ভুলে অনি অদ্রকে মেসেজ করে “অদ্রিপু তুমি কেমন আছো?”।

মেসেজ করে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে। এখনো সে এক্টিভ আছে। তবে অনির মেসেজ এর কোন রিপ্লাই আসছে না। এমনকি তার মেসেজ সিনও করছে না। অনি একধ্যানে তার ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকে। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে অদ্রির দিক থেকে এই বুঝি কোন রিপ্লাই আসবে। কিন্তু না অনেকক্ষণ পেরিয়ে যায়।

রিশাদ কাজ করতে করতে অনির সাথে টুকটাক গল্প করছিল। কিন্তু হঠাৎ করে অনি চুপ চাপ হয়ে যায়। ল্যাপটপ থেকে মাথা তুলে তাকায়। অনিকে এক ধ্যানে ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে। রিশাদ ভ্রু কুঁচকে তাকায়। অনিকে দেখে কেমন অদ্ভুত লাগছে। কি এমন দেখছে সে এভাবে দুনিয়াদারি ভুলে। রিশাদ কৌতূহলী হয়ে পড়ে।

কোলের উপর থেকে ল্যাপটপটা রেখে অনির নিকটে চলে আসে রিশাদ। অনি তো আগের মতোই থম কেরে বসে আছে। গভীর চিন্তায় মগ্ন সে এখন। রিশাদ অনির নাম ধরে ডাকে তবে কোন সাড়া পায়না। ফোনের স্ক্রিনের দিকে চোখ বুলাতেই রিশাদ………….

চলবে…..

আসসালামু আলাইকুম?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here