অচেনা তুমি পর্বঃ৩৯

0
558

#অচেনা_তুমি
#লেখিকাঃমহিমা_হাছনাত_মাহি
#পর্বঃ৩৯

গাড়ি চলছে আপন গতিতে। আশেপাশে ছুটছে ব্যাস্ত যানজট। কিছুক্ষন পর আশেপাশের গাড়ি গুলোর সংখ্যা ও যেন আস্তে আস্তে কমতে লাগলো। দুই পাশে দেখে মনে হচ্ছে রাস্তার কাচায় সারি সারি গাছ গুলো আপন গতিতে ছুটছে।

বাতাসের ছুটে কুবরার ইউ কাট ঘাড় পর্যন্ত চুল গুলো আকাশ মেলে উড়ছে মতো। সামনে নাদিম নিজ বেগে গাড়ি ছুটিয়ে চলছে। ইচ্ছে করছে নাদিমের এই প্রসারিত বাহু কাধে মাথা রেখে গলা ছেড়ে গান গাইতে” এই পথ যদি না শেষ হয়, তবে কেমন হবে তুমি বলো তো “।

কিন্তু তবুও নিজের মন কে শক্ত করে বেধে গুমোট বেধে বসে আছে। তাও আবার নাদিমকে কোমড় ধরে জড়িয়ে। মনে মনে তাকে নিয়ে কতো স্বপ্ন বুনছে আবার আনমনে হেসেই উঠছে।

নাদিম বাইক চালাতে চালাতে লুকিং গ্লাসে কুবরার ওই হাসিপানা মুখ ঠিকি দেখছে আর মনে মনে বলছে ” আর কতোক্ষন রাগ করে থাকতে পারো দেখি। যেখানে আমিই তোমার সব সেখানে আমি হীনা কি করে থাকবে তুমি? ”

হঠাত কুবরার খেয়াল হলো আসার সময় যে রাস্তা দিয়ে এসেছিলো এটা সেটা নয়। আর এদিকটায় তেমন মানুষ কিংবা গাড়ি ও নেই।

কুবরাঃ এই আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন বলুন তো? এটা তো আমি যেখান থেকে এসেছি সেই রাস্তা নই।

নাদিমঃ তোমাকে আমি কিডন্যাপ করে বাইরের দেশে পাচার করে দিতে যাচ্ছি। ( ঠোঁট চেপে হেসে)

কুবরা জানে তাকে নিয়ে নাদিম কখনোই এমন করবে না। যেখানে নিজের বাবার পর সবচেয়ে বেশি নাদিমের কাছেই সেইফ ফিল করে সেখানে নাদিম তো এমন করার চিন্তাই করবে না।

কুবরাঃ ওমাগো…… তা কোন দেশে হ্যা?? ওয়াও আমি তাহলে ফ্রিতে বিদেশ যেতে পারবো। আহহ কতো সুন্দর ওরা আমাকে ঘুরাবে, বেড়াবে। কি মজা ( তালি দিয়ে উতসাহিত সুরে) ।

কুবরার কথা শুনেই নাদিম হঠাত ব্রেক কষে। আচমকা ব্রেক হওয়াতে কুবরা হুমড়ি খেয়ে নাদিমের গায়ের উপর ঝাপটে পড়ে।

নাদিমঃ এই কি বললে তুমি?? পাচার হয়ে গেলে তারা তোমাকে সুন্দর করে বাইরের দেশে ঘুরাবে? লাইক সিরিয়াসলি? তুমি এই ধারণা নিয়ে থাকো? ( অবাক হয়ে)

এই মূহুর্তে নাদিমের অবাকময় স্ট্যাচু চেহারা দেখে হেসে উড়িয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে। তবু কোনো মতে পেট চেপে মুখকে না জানার ভান করে বলে ” হুম তা নয় তো আর কি হবে? ”

নাদিমঃ আচ্ছা তাইইই। ঠিক আছে চলো আজ তোমাকে তুলেই দিবো পাচারকারীদের হাতে। ( এই বলার পর নাদিম কুবরার হাত ধরে টেনে টেনে সরু একটা রাস্তা দিয়ে হেটে যায়।

যতই হাটছে রাস্তা যেন আবছা অন্ধকার হয়ে আসছে। কেমন একটা জঙ্গল জঙ্গল ভাব। যদিও ঢাকা শহরে কোনো জঙ্গল নেই। তবু জায়গা টা দেখতে তেমনি।

এবার তো কুবরার সত্যি সত্যিই মনে মনে ভয় হচ্ছে। কিন্তু তার দৃঢ় বিশ্বাস নাদিম তার সাথে তেমন কিছু করতেই পারে না। আরো কিছুদূর এগোতে দেখে সামনে একটা জীর্ণ শীর্ণ কুড়ে ঘর।

নাদিমঃ ওই যে ওই বাড়িটা দেখছো,, ওইটাতে ওরা অপেক্ষা করছে। তারপর ওদের সাথেই বাইরের দেশে শান্তিতে ঘুরো। আমাকে তো আর দরকার নেই, আমি তো কেউ না। চলো ( টানতে টানতে)

নাদিমের এমন কথায় কুবরার কলিজা মোচড় দিয়ে ঝড়ে যাওয়ার অবস্থা। রীতিমতো কাপাকাপি শুরু হয়ে গেছে তার। তবে কি নাদিম রাগের বশে সত্যি সত্যিই তাকে পাচারকারীদের হাতে তুলেদিচ্ছে!!

নিজের মধ্যে প্রবল মনোবল আর শক্তি নিয়ে পাথরের ন্যায় শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে যায় কুবরা। নাদিম টানতে গিয়েও কুবরাকে আর জোরে টানতে পারছে না। এরপর নাদিমকে ধাক্কা দিয়ে গাছের সাথে হেলান দিইয়ে নিজের সর্বস্ব শক্তি দিয়ে চেপে ধরে কুবরা।

কুবরাঃ সামান্য মেসেজের রিপ্লে দিই নি বলে আর একটু সামনে যাই নি বলে আপনার এতো রাগ!! আর আপনি যে দিনের পর দিন আমার সাথে একটু দেখা করতেও আসেন না আমার রাগ হয় না তখন? আমার কষ্ট হয় না তখন? সব ইগো শুধুই আপনার? আমার ফিলিংস কি বিন্দুমাত্রও বুঝেন না আপনি?? যে আমি কি চাই? আমার মন কি চাই? ( অশ্রুসিক্ত ঝাঝালো কন্ঠে)

রাগে, ভয়ে কুবরার চোখ দুটি লাল রক্তিম বর্ণে ধারণ করেছে। সাথে গালের বারান্দা দুটো স্বল্প কাপছে। এক নজরে নাদিমের দিকে চেয়ে থাকতে থাকতে টপ করে বেয়ে পড়ে সেই রক্তিম চোখ থেকে দুফোঁটা লোনা জল।

কুবরার এমন রুপ হয়তো আজ প্রথম দেখছে নাদিম
এতোদিন তো হাসি ঠাট্টা, নেকাময় মেকি কান্নাই করতো। তবে আজ কুবরার এমন চেহারা দেখে নিজের আনমনেই আতকে উঠে নাদিম। তবে কিছু না বলে আচমকা কোলে তোলে নেয় কুবরাকে সে।

নাদিমকে কিছু বলতে না দেখে এবার কুবরা নিজেও শান্ত হয়ে যায়। আর কিছু মুখ দিয়ে বের ও হতে চাইছে না। ভালোবাসার মানুষটা এবার তাকে নিজের হাতে কিছু নৃশংস পশুর হাতে তোলে দিতে যাচ্ছে। তবে এটাই যখন তার কামনা। তাহলে সে তা চুপচাপ অনায়াসে মেনে নিতে রাজি।

কোলে নেয়ার পর নাদিমকে শক্ত করে মনে মনে শেষবারের মতো জড়িয়ে ধরে কুবরা। যেন কোনো শক্তিই যেন তাকে নাদিমের কাছ থেকে আলাদা করতে পারবে না।

হেটে হেটে কুড়েঘরের সামনে এসে দাঁড়ায় নাদিম। আসা মাত্রই চোখ দুটো খিচে বন্ধ করে আরো জোড়ে চেপে ধরে নাদিমকে কুবরা। নাদিম নিজের কাধবাহু দ্বারা ঠেস দিয়ে ঘরের দরজাটি খোলে। আর ভেতরে ঢুকে আবার দরজাটি বন্ধ করে দেয়।

নাদিমঃ কি হলো চোখ বন্ধ করে এভাবে বুকের ভেতর ঢুকে আছো কেন? চেহারা টা তো এবার দেখাতে হবে তো ওদের।

কুবরাঃ না না আমি কোত্থাও যাবো না। প্লিজ প্লিজ প্লিজ। আমি এবার থেকে আপনার সব কথা শুনবো। আপনার সব মেসেজের রিপ্লে দিবো। সবসময় আপনার সামনে থাকবো। আমি ওদের সাথে যাবো না। ( চোখ খিচে নাদিমের কলার চেপে ধরে)

নাদিমঃ চোখ খুলবা নাকি এখন এভাবেই ফেলে দিবো??

কুবরা হালকা ছাড় দিয়ে পিট পিট করে চোখ মেলে নাদিমের মুখে তাকিয়ে দেখে নাদিম তার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। তার মুখে আবছা হলদে লাল আলো পড়ায় পাশে চোখ ফিরিয়ে দেখে চারদিকে ছোট বড় মোমবাতির আলোয় ঝলঝল করছে ছোট্ট কুড়ে ঘরটি।

নাদিম আলতো করে কুবরাকে কোল থেকে নামায়। কোবরাতো নাদিমকে ছেড়ে ঘরটাকে দেখতে ব্যস্ত।
বাইরে দিয়ে দেখতে যতোটা ভাঙাচোরা জীর্ণ শীর্ণ দেখাচ্ছিলো ভেতর দিয়ে ঠিক ততোটা মনোমুগ্ধকর দেখাচ্ছে।

খড় দিয়ে বানানো পুরো ছোট্ট এক রুমা ঘরটা ছোট বড় নানা রঙের ক্যান্ডেল দিয়ে সাজানো। ছনের সাথে সাদা সোনালী রঙের তারার এসেথিক লাইট ঝুলানো । প্রত্যেক লাইটের নিচে আগোপিছু ঘুরছে নাদিম এবং কুবরার একসাথে তোলা সেই সব ছবি। বিশেষ করে শুভ্রার বিয়েতে তোলা ছবি গুলো বেশিই। বাকি সব তাদের অজান্তেই ক্যামেরার দিকে না তাকিয়ে তোলা ছবি। নিশ্চয় এসব সাদাফেরই কাজ।
কুবরা একে একে সব ছবি খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে। সাথে মুখে একরাশ বিষ্ময়ের হাসি।

কিছুটা সামনে এগোতেই পায়ে কিছু একটা লাগে। নিচে তাকাতেই দেখে সারা ফ্লোরে কমলা, হলুদ গাদা ফুলের পাপড়ির ছড়াছড়ি। তার মাঝখানে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে লেখা “I Love you KUBRA”.

কুবরার চোখে দেখে এসব বিশ্বাসই করতে পারছে না যে এসব সত্যিই বাস্তবিক ঘটছে। এ যেন নিছক কোনো ফিল্মের দৃশ্য। যা এতোদিন সিনেমায় দেখতো আজ তা সে বাস্তবে নিজ চোখে দেখছে।

হঠাত কানে ভেসে আসে মৃদু হিন্দি সফট সং।

“যবে তোমায় দেখেছিলাম প্রথম
তাচ্ছিল্যের সুরে নিয়েছিলে আমায়,
আমার সকল কথাতে উড়িয়ে দিতে মজার ছলে,
দুষ্টু মিষ্টি হাসি ঝগড়া করতে করতে কবে যে তোমারই মায়ায় আবদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম তা আমার নিজেরই অজানা।

( কুবরা হঠাৎ পেছন ফিরে দেখে নাদিম হাটু গেড়ে বসে কুবরার পানে একগুচ্ছ গোলাপ ফুল নিয়ে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে)

আমি আজ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে না বলে সোজাসোজিই বলছি খুবরা। আমি তোমাকে আমার নিজের করে পেতে চাই। আমি তোমাকে সারাজীবনের জন্য আমার পাশে চাই। তোমাকে আমি আমার সহধর্মিণী করতে চাই। সকাল বিকেল তোমার ওই দুষ্টু ঝগড়ার সাথী হতেই চাই। আমার আব্বুর একমাত্র ছোট্ট একটা বউমা করতে চাই। কুবরা আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।
” Will You Marry Me KUBRA?? ”

নাদিমের কথাতে কুবরার খুশিতে চোখ থেকে জল নেমে আসে। এতোটা ভালোবাসে নাদিম তাকে যে কেউ প্রেমের প্রোপোজাল না দিয়ে সোজা বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে। এমন হয় তো প্রথম যে কেউ তার ভালোবাসা প্রকাশ করে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে।

নাদিম উঠে দাড়াতেই কুবরা সটান গিয়ে তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে। এমন পরিনতির কথা শুনে খুশিতে আঝোর নয়নে কাদতে থাকে। যাকে নিয়ে মনে মনে আজ এতো স্বপ্ন বুনেছে আজ সে নিজে এসেই বলছে তাকে ধরা দিতে।

এবারে কুবরাকে বুকে নাদিম যেন সত্যিই একটা বিজয়ের উল্লাস খুজে পায়। সত্যিই যেন এবার বুকটা পূর্ণতার আশায় ভরে উঠে। মুখে ফুটে উঠে টোল পড়া ওই বিশাল রাজ্যের তৃপ্তিময় হাসি। চোখ বুঝে কুবরাকে সেও জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলায়।

কাদতে কাদতে কি যেন মনে করে হঠাত সরে দাঁড়ায় কুবরা। নাদিম ভ্রু কুচকে কি প্রশ্ন বোধক চাহনিতে তাকাতেই আবারো সজোরে কাদতে কাদতে এসে নাদিমের বুকে, বাহুতে, হাতে হাত দিয়ে যেমন পারে এবড়ো খেবড়ো ঠাস ঠুস দিতে থাকে।

কুবরাঃ শয়তান, পচা বাদাম, হনুমান, সাদা কাক, রক্তচোষা বাদর আমাকে এখানে পাচারকারীদের হাতে তোলা দেওয়ার কথা বলে এখানে আনা না?? আর এসে এসব কি?? আপনি জানেন আমি কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম!! একদম কথা বলবো না আমি আপনার সাথে। ( মারতে মারতে)

কুবরার এই ছোট ছোট মার গুলো তার বিশাল বডিতে বড় ফিকে। সে বরং হেসে হেসে উপভোগ করছে আরো।

নাদিমঃ এমন বলে একটু দেখলাম আর কি তুমি কেমন সাহসী। আর না বললে কি তুমি আমায় ওমন ভাবে জড়িয়ে ধরতে?? ( কুবরার দিকে ঝুকে)

কুবরাঃ আপনাকে তো আমি ছাড়বোই না ( রাগে ফুসে ফুসে মারতে মারতে)

নাদিম কুবরার হাতটা খপ করে ঘরে নিজের গালের সাথে মিশিয়ে নেয়।

নাদিমঃ আমিও তো তোমায় ছাড়তে চাই না কুবরা। ( এই বলে পকেট থেকে একটা রিং বের করে কুবরার আঙ্গুলে পড়িয়ে দেয়।) তোমাকে সারাজীবনের জন্য আমার সাথে বেধে রাখবো।এক্কেবারে বিয়ে করে। ( চোখ টিপ দিয়ে)

কুবরাঃ বিয়ে তো আমি আপনাকে ই করবো। আমি ছাড়া কাউকে আপনার জীবনে আসতে দিবো এ কি করে ভাবলেন আপনি? একদম এভাবে সারাজীবন গলায় ঝুলে থাকবো।

কুবরার চেয়ে নাদিমের উচ্চতা অনেক উচুতে। পা তুলেও হাত বাড়িয়ে গলা ধরতে গিয়েও ভালো ভাবে নাগাল পায় না সে। কোনো মতে শুধু একটু ছোয়া পেয়েছে।

নাদিম কুবরার কোমড় ধরে উপরে তুলে বলে ” তুমি ঝুলে থাকতে না পারলে আমি না হয় এভাবেই ঝুলতে সাহায্য করবো, কি বলো পিচ্চি?? ”

কুবরাঃ হুহ কথা বলবো না আমি আপনার সাথে। আমায় যদি এতো ভালোবাসেন তাহলে আমাক এতো দূরে দূরে রাখতেন না। ( মুখ ভেঙচি দিয়ে অন্য দিজে তাকিয়ে)

নাদিমঃ কাছে কাছে রাখবো বলেই তো বললাম বিয়ে করবো। তখন না হয় আরো কাছে এসো। ( আদুরে কন্ঠে)

লজ্জায় কুবরার নাদিমের কাছ থেকে ছিটকে দূরে সরে যায়। তারপর দিয়ে একে একে তাদের তোলা ছবিগুলোতে হাত বুলায়। সত্যি কি অপরুপ লাগছে তাদের জুটিকে। নিজের মনে মনে কেমন এক আসীম খুশির কাজ করছে। আজ খুলাখুলিভাবে সবকিছু ক্লিয়ার হিয়ে গিয়েছে। বিয়ের কথা মনে পড়তেই আনমনে মুখে ফুটে উঠে এক চিলতে হাসি।

নাদিমের ও আজ বড্ড খুশি লাগছে। সাদাফের কথাতে নিজের মনের ভাব আজ প্রকাশ করতে পেরে মনটাকে সত্যিই খুব হালকা লাগছে। সাথে কুবরাকে খুশি দেখতে মনটা আরো খুশিতে ভরে উঠেছে।

দূর থেকে মাগরীবের আজানের আওয়াজ শকানে ভেসে আসাতে টনক নড়ে নাদিমের । এতোক্ষনে বুঝি বাড়ির সবাই টেনশন করছে কুবরার জন্য ।

নাদিমঃ চলো বাকি কথা কাল হবে। বাড়িতে এতোক্ষনে সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। এরপর টেনশন করছে।

কুবরাঃ আরে এটা তো আমার মাথা থেকে একেবারেই বেরিয়ে গিয়েছিলো। এখন আমার আপনার জন্য এতোগুলো বকা শুনতে হবে ( গাল ফুলিয়ে)

নাদিমঃ কোনো বকা শুনতে হবে না। আমি সব ব্যাবস্থা করে এসেছি। এখন চলো।

কুবরাঃ ও তাই বলেন….. দাড়ান একটু।

কুবরা নাদিমকে দাড়াতে বলে ব্যাগে গোলাপের গুচ্ছ আর ঝুলানো তাদের সকল ছবিই ঢুকিয়ে নেয়।

কুবরাঃ আচ্ছা এই বাড়িটা কার বলুন তো। এতো দূরে নির্জন একটা জায়গাতে?

নাদিমঃ এখানে একটা বুড়ো থাকে। আসার সময় একটা নদী দেখলে না. ওখানে রোজ তিনি মাছ ধরতে যান। সন্ধ্যে হতে হতেই চলে আসেন। আমি আর আর সাদাফ প্রায় ওই নদীর পাড়ে ঘুরতে আসতাম। তখন ওনার সাথে পরিচয়। কাল কথা বলে এই ব্যবস্থা করলাম।

কুবরাঃ আমার কিন্তু খুব পছন্দ হয়েছে। আপনাকে এত্তো এত্তো এত্তো গুলা থেনক্স ( নাদিমের বাহু জড়িয়ে ধরে)

নাদিমঃ সবই তোমার জন্য। তুমার যা পছন্দ আমি সব করতে রাজি। তুমি যেটাতে খুশি আমি তাই করে তুমাকে খুশি রাখার সর্বস্ব চেষ্টা করবো। তোমায় যে আমি খুব ভালোবাসি প্রিয়।

কুবরা কিছু না বলে মুচকি হেসে নাদিমের বাহুডোরে শক্ত কিরে ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকে।

কুবরাঃ বলছি… মোমবাতি গুলো থাক। কতো সুন্দর লাগছে দেখতে। নিশ্চয় উনি এসে দেখে খুশি হবেন।

নাদিমঃ হুম তা ঠিক বলেছো। এখন চলো। বাড়ি যেতে হবে।

পশ্চিম আকাশে লাল আভাময় সূর্যের কাটা কাটা দাগ এখনো ভেসে আছে। ছোট বড় বিভিন্ন পাখিরা নিজ নিজ গৃহে ফিরতে ব্যস্ত। সে সময়ে নাদমের কাধবাহুতে মাথা রেখে বাইকে বসে বাড়ি ফিরছে কুবরা ও।

আজ তার জীবনের সবচেয়ে স্পেশাল একটা দিন। জীবনে প্রথম কাউকে ভালোবেসেছে। আজ সে নিজেই এসে তাকে সে প্রকাশ করেছে। খুশি তে মনটা আজ তাদের দুজনের সত্যিই নাচছে।

#চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here