তুমি হাতটা শুধু ধরো পর্ব ৩০

1
2515

#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো
#পর্বঃ৩০
#Jhorna_Islam

তোমার পাশে এতো বড় একটা জল’জ্যা’ন্ত মানুষ বসে আছে,তোমার হাত থেকে মালা পরার জন্য আর তুমি তাকে দেখতেই পাইতেছো না? দিজ ইজ নট ফ্যায়ার বউ।

শেষ মেষ কি না আমি একটা কা’না মেয়েকে বিয়ে করলাম? এই ছিলো আমার কপা’লে।বলেই মুখটাকে দুঃখী দুঃখী ভাব করে ফেলল দায়ান।

সোহা ফ্যাল ফ্যাল করে দায়ানের দিকে শুধু তাকিয়ে আছে।

এ আমি কি দেখছি। উনি কি সত্যিই আমার সামনে? নানা তা কি করে হয়।উনি আসবেন কোথা থেকে? আমার মনের ভু’ল।উনিতো আমায় চান না।ঘৃণা করেন।উনার জীবন থেকে চলে যেতে বলেছেন।সব আমার মনের ভুল।

লোকটা কে ভালোবেসে শেষ মেষ পা/গল ই হয়ে গেলাম আমি?

কি ব্যাপার পাগলি এমন ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো আমার দিকে? আমায় কি একটু বেশি সুন্দর লাগছে নাকি?
বলেই ব্রু উচায়।

সোহা তার এক হাত দায়ানের গালের কাছে নেয় ছোয়ার জন্য। আবার থেমে যায়।ভাঙা গলায় জানতে চায়,,,,,

আপনি এখানে? এটা সত্যি আপনিতো? আমি স্বপ্ন দেখতেছি তাই না? জেগে জেগেও আপনাকে দেখতেছি।

নিন আমার হাতে একটা চিমটি কাটেন তো।একবার মনে হচ্ছে আপনি বাস্তবেই আছেন। আরেকবার মনে হচ্ছে সবই আমার চোখের ভু’ল।বলেই দায়ানের সামনে হাত বাড়িয়ে দেয়।

দায়ান মুচকি হেসে সোহার হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নেয়।খুব যত্ন সহকারে হাত টা উঠিয়ে হাতের উল্টো পিঠে চুমু খায়।

আমি তোমার কাছে সত্যি সত্যি এসেছি পাগলি এটা কোনো স্বপ্ন না।

সোহা দায়ানের কথাটা শুনে বুঝে গেছে সত্যি এটা দায়ান।তারপর হাতটা ছাড়িয়ে ছিটকে এক হাত দূরে সরে আসে।

কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠে,,, আ-আপনি আপনি এখানে কি করছেন? আর জানলেন কিভাবে আমি এখানে আছি?

তুমি ভুলে গেছো যার কাছে তুমি আছো।সে তোমার ভাই হওয়ার আগে আমার বন্ধু।

তার মানে রুশ ভাইয়া?

ইয়েস ম্যাম।

এরই মধ্যে রুশ এসে ওদের সামনে হাজির হয়।

সোহা রুশের দিকে রা’গী চোখে তাকায়। রুশ শুকনো ঢুক গিলে বলে,,এভাবে তাকাইস না বোন।আমার হার্ট টা খুব দূর্বল।তর তাকানো দেখে না জানি কখন এ’ট্যা’ক ফ্যা’টাক করে বসে।

বিশ্বাস কর আমি বলতে চাইনি।এই ব্যাটার অবস্থা দেখে খুব মায়া হচ্ছিল যতই হোক আমার বন্ধু না? দেবদাস হয়ে ঘুরে বেড়াইতে ছিলো।তর জন্য। পুরো শহর অর্ধেক খোজে ফেলেছে তোকে।খাওয়া দাওয়া ঘুম সব ভুলে গিয়ে তোকেই খুজতেছিলো। সাথে আমাকে ও যেতে হতো।

কিন্তু দুঃখের বিষয় কি জানিস বোন? ওর কষ্ট সহ্য করতে পারতেছিলাম না দেখে আমি তোর কথা না শুনে ওরে বললাম তুই আমার বাড়িতে আছিস।আর ও কি করলো।দেখ আমার এতো সুন্দর নাকটায় ঘু’ষি মেরে দফারফা করে দিয়েছে।বলেই মুখে দুঃখী ভাব করে। ভালো মানুষের তো আজকাল কোনো দাম নাই।

সোহা রুশের নাকের দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি সত্যি অনেকটা ফুলে আছে।আহারে বেচা’রা ওদের দুইজনের চক্করে পরে,,কি অবস্থায় পরেছে।

সোহা রুশের দিক থেকে চোখ সরিয়ে দায়ানের দিকে চোখ পাকিয়ে তাকায়। যার মানে আমার ভাইকে আপনার মারার সাহস কে দিয়েছে?

কি ব্যাপার সোহা রানী এভাবে তাকাও কেনো? আমার কি দোকানে বলো? তোমার ভাই এটা ডিজার্ভ করে।

এবার চলোতো সব কথা পরে হবে।বাড়ি চলো এবার।

— কার বাড়ি কিসের বাড়ি?

— কার বাড়ি মানে? আমার বাড়ি।আই মিন আমাদের বাড়ি।

— আমার কোনো বাড়ি নেই।

— মাইর চিনো? মাইর লাগাবো।বাড়ি চলো।অনেক হয়েছে বাড়ি গিয়ে বাকি কথা হবে।চলো।

— আমি কোথাও যাবো না শুনেছেন আপনি।ভুলিনি আমি কিছু। আপনি আমায় কি কি বলেছিলেন। সব মনে আছে।আপনি আমায় ঘৃণা করেন? আমার থেকে মুক্তি চান? আমার মুখ ও দেখতে চান না।টাকার জন্য আমি আপনার কাছে পরে আছি?

— এভাবে বলো না প্লিজ। বাড়ি চলো আমি সব তোমায় বুঝিয়ে বলবো।ওকে? সব শুনে যদি তুমি আমায় শাস্তি দিতে চাও।তাহলে তা আমি খুশি মনে মাথা পেতে নিবো।

— আমার কোনো বাড়ি নেই। আমি আপনার সাথে যাবো না।কেনো যাবো? কোন অধিকারে যাবো?

— ঐটা তোমারই বাড়ি পাগলি।আর তুমি আমার বউয়ের অধিকারে যাবে।

— চাইনা আমার কোনো অধিকার। কিসের জন্য আমার কাছে এসেছেন? আবার আমায় নিয়ে গিয়ে খারাপ ব্যবহার অপমান করার জন্য?

— এখনো বুঝতে পারতেছো না পাগলি কিসের জন্য নিতে চাই? থাক তুমি ছোটো মানুষ বুঝতে হবে না।

— সোহা চুপ হয়ে থাকে।

— চলো চলো বাড়ি চলো।এই কয়দিনে তো আমার অভ্যাস খারাপ করে দিয়েছো তুমি মেয়ে।না নিজের হাতে খেতে পারছি।আর তোমার হাতের কফিটাও খুব মিস করছি।দেখো এই কয়দিনে আমার অবস্থা কি হয়ে গেছে।

— সোহা এবার দায়ানের দিকে ভালো ভাবে তাকায়।সত্যি লোকটার চোখ মুখ খুব শুকনো লাগছে।চোখ গুলো লাল হয়ে আছে। হয়তো না ঘুমানোর কারণে। চুল গুলো এলোমেলো হয়ে আছে।সব মিলিয়ে দায়ান কে কেমন অগোছালো লাগছে।সোহার খুব মায়া হলো।ভালোবাসার মানুষের কষ্ট কি দেখা যায়? সে যতই অন্যায় করুক না কেনো।

সোহা কিছু বলতে নিবে,,, তার আগেই ওর কাশি উঠে যায়।অনবরত কাশতে থাকে।কাশতে কাশতে চোখ মুখ লাল হয়ে যায়।

দায়ান তারাতাড়ি করে এগিয়ে আসে সোহার কাছে। এসে পিঠে হাত বুলিয়ে দেয়। উফফ আল্লাহ কি রকম ঠান্ডা টা লেগে গেছে।

সোহা কাশি বাদ দিয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে দায়ানের দিকে তাকায়।

আর একটা কথাও না চলো বাড়ি চলো। বাড়ি গিয়ে কথা হবে।

আমি যাবো না আপনার সাথে।

সোহা মাথা ঠান্ডা আছে।ঠান্ডাই থাকতে দাও গরম করো না।তুমি কি চাও তোমার ভাইয়ের সামনে তোমায় কোলে তুলে নেই? আমার কোনো প্রবলেম নেই।তুমি চাইলে আমি নিতেই পারি।বলেই একটা চোখ টিপ দেয়।

সোহা অবাক হয়ে দায়ানের দিকে তাকায়।কি বলছে কি এই লোকটা।মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি? আরেক বার রুশের দিকে তাকিয়ে দেখে রুশ মিট মিটিয়ে হাসছে।

দায়ান কে বলে,,,নি’র্ল’জ্জ লোক।

হুু আরো হবো যদি তুমি না যাও এখন।দেখতে চাও?

রুশ গলা খেকারি দিয়ে বলে।যা বোন বেচারাটাকে একটা সুযোগ দিয়ে দেখ।আবার ও যদি তেরিবেরি করে তাহলে সোজা বাড়ি থেকে তোকে নিয়ে আসবো।

আরেকটু কাছে গিয়ে সোহার কানে কানে বলে,,সহজে মাফ করবি না বুঝলি।একটু ঘুরা দেখুক কেমন লাগে।এতোদিন পারতি না ঘুরাতে এখন পারবি কারণ তোরে বেচারা খুব ভালোবেসে ফেলেছে বুঝলি।

সোহা রুশের চোখের দিকে তাকায়।

রুশ চোখের ইশারায় তাকিয়ে বোঝায় যে হ্যা সত্যি।

খুশিতে সোহার মুখ উজ্জ্বল হয়ে যায়।

তার মধ্যে দায়ান সোহার হাত টেনে নিয়ে যেতে যেতে বলে,,,অনেক হয়েছে তোদের গোপন কথা।নাও আমি আমার বউকে নিয়ে গেলাম।বলেই সোহাকে নিয়ে যেতে লাগলো।

রুশ দায়ানের কান্ড দেখে হাসে।মনে মনে প্রার্থনা করে এই দুটিতে যেনো সুখে থাকে সবসময়।

—————————————–

নোহা আজ খুবই ব্যস্ত কারণ আজ তার নানি শ্বাশুড়ি ও ওমির মামাতো বোন আসবে তাদের বাড়িতে বেড়াতে।

তাই সকাল থেকেই সব গোছগাছ রান্না বান্না ঘর দুয়ার ভালো করে পরিষ্কার করতে ব্যস্ত। নোহার বিয়ের সময় যে এসেছিলো,আর আসেনি ওমির নানি।তখন নোহা নতুন ছিলো ভালো করে কথাও হয়নি।এতো লোকজন ব্যস্ততার জন্য। তার উপর বিয়ের দুইদিন পরই চলে গিয়েছিল ।

এতো বছর আর আসেনি। ওমিদের সাথে ওনার কথা হলেও নোহার সাথে হয়নি।উনি ও চায়নি কথা বলতে,নোহা ও আগ বাড়িয়ে বলেনি।
মহিলাটা খুবই গম্ভীর টাইপের।কথা খুব কম বলে।

কালই শ্বাশুড়ি জানিয়ে দিয়েছে,তার মা আজ আসবে।সব কিছু যেনো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে।উনার মা নোংরা জিনিস একদম পছন্দ করেন না।

তাই নোহা শ্বাশুড়ির কথা মতো ঘর-দুয়ার সব পরিষ্কার করে এখন নানি শাশুড়ী ও ননদের পছন্দের খাবার তৈরি করতে ব্যস্ত।

অনেক সময় নিয়ে খুবই যত্ন সহকারে নোহা রান্না শে’ষ করে।তার মধ্যেই বাইরে হইচই, চেচামেচি শোনা যায়। যার মধ্যে নোহার শাশুড়ীর গলাটাই বেশি শোনা যায়। এই মহিলা একাই চিল্লিয়ে বাড়ি মাথায় তোলার জন্য যথেষ্ট। এই বয়সে এতো শক্তি কই থেকে পায় বোঝেনা নোহা।
বয়স হয়েছে কই রোজা নামাজ পড়ে দিন পার করবো তা না।কু’ট’নীতি’তে ব্যস্ত এই মহিলা।কিছু মানুষের প্রধান কাজই হচ্ছে অন্য কে জ্বালানো। তাদের মাঝে নোহার শাশুড়ীর নাম প্রথমে থাকতো যদি গণনা করা হতো।

নোহা রান্না ঘর থেকে হাত মুছতে মুছতে বেরিয়ে আসে।এসে দেখে সকলে গল্পের ঝুড়ি খুলে বসেছে।

শ্বাশুড়ি নিজের মায়ের সাথে কি যেনো বলছে।

আজ ওমিও নানি আসবে বলে কাজে যায়নি।সোফায় বসে ওমির মামাতো বোন তমার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।কি যেন নিয়ে হাসাহাসি করছে।তমা ওমির গায়ের সাথে গা ঘেঁষে বসে আছে। হাসতে হাসতে ওমির উপর ঢলে পরছে।
নোহা একবার ওমির দিকে তাকায়। তারপর আবার চোখ সরিয়ে নেয়।ব্যাপারটা দেখে নোহার যতটা খারাপ লাগার কথা তা লাগেনি আশ্চর্য।এসব বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে নানি শ্বাশুড়ির দিকে এগিয়ে গিয়ে সালাম দেয় হাসি মুখে।

ওমির নানি নোহার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত একবার চোখ বুলিয়ে সালামের জবাব দেয়,গম্ভীর কন্ঠে।

তারপর ওমির মাকে উদ্দেশ্য করে বলে আমাকে রুমে দিয়ে আয়।বাইরে থেকে আসছি।শরীরে ময়লা ময়লা লাগতেছে।

নোহার শাশুড়ী সম্মতি জানিয়ে রুমের দিকে নিয়ে যায়। যাওয়ার আগে নোহাকে বলে যায়,যেনো রাতের খাবার সব ঠিকঠাক ভাবে টেবিলে রাখে।

নোহা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়।ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।আবার না জানি কোন অশান্তি বাড়িতে এলো।তারপর আবার নিজের কাজে চলে যায়।

রাতের বেলা নোহা খাবার টেবিলে রেখে সবাই কে ডাক দেয় খাওয়ার জন্য।

ওমি আর তমা এতোসময় একইসাথে বসে গল্প করতেছিলো।খাওয়ার জন্য ডাক দেওয়ায় দুজন একসাথেই আসে।তমা ওমির হাত ধরে এসে টেবিলের পাশে আসে।দুজন পাশাপাশি চেয়ার টেনেই বসে।নোহা শুধু একবার ওদের দিকে চোখ বোলায় কিছু বলেনা।নোহার তাকানোর সময় তমা ও নোহার দিকে তাকায়। নোহাকে দেখে তমা একটা গা জ্বালানো বি’দ্রু’প হাসি দেয়। নোহা তমার থেকে চুপচাপ চোখ সরিয়ে নেয়।তখনই নোহার শাশুড়ী ও নানি শ্বাশুড়ি খাবার টেবিলে এসে বসে। নোহা তাদের খাবার বেড়ে দেয়।

নানি নোহাকে খেতে বসছেনা বলে,,নিজের মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বলে,,,জামাই বাবাতো আসতে আসতে অনেক রাত হবে।ওর জন্য অপেক্ষা না করলেও চলবে।কিন্তু এখন যারা আছে সবাই একসাথে খেতে বসলে খুশি হতাম।এমন ভাবে আলাদা আলাদা খাওয়া আমার পছন্দ না। ওমির মা বোঝে গেলো নোহাকে উদ্দেশ্য করে তার মা এই কথা বলছে।তাই উনি বললেন খেতে বসে পরো।বলেই মুখটা কেমন করে খাওয়া শুরু করলেন।

নোহা কথা বাড়ায়নি নিজেও একটা চেয়ার টেনে বসে পরে। খাওয়ার সময় সবাইকে মাছের টুকরো দেয় নোহা একটা করে।বাকি শুধু এক পিস আছে। নোহার শাশুড়ী বলে মাছ আর নেই? আহারে তোমার ভাগ্যে বোধয় নেই। ঐটা তোমার শ্বশুরের জন্য রাখো তুমি না হয় ঝোল দিয়েই খেয়ে নাও। নোহা বেশ বুঝতে পারছে উনি ইচ্ছে করেই একটা মাছের পিস কম দিয়েছেন। ওমির দিকে একবার নোহা তাকালো সে খেতে ব্যস্ত অন্য দিকে তার খেয়াল নেই।
নোহা অন্য তরকারি নিয়ে চুপচাপ খেতে থাকে। এতোসময় সব খেয়াল করেছিলো ওমির নানি।নিজের প্লেটের মাছের টুকরো টা তুলতে তুলতে বলে,,, আমার একদম মাছ খেতে ইচ্ছে করছেনা। বলেই নোহার প্লেটে তুলে দেয়।

ওমির মা বলে উঠে কিন্তু মা এটা তো তোমার প্রিয় খুব।তোমার জন্যই করা হয়েছে তুমি খাবে না?

নাহ খাবো না।যারে দিয়েছি সে যেনো চুপচাপ খেয়ে নেয়।

নোহা ছলছল চোখে নানির দিকে তাকায়।

নানি নোহার দিক থেকে চোখ সরিয়ে খেতে মন দেয়।

———————————————-

দায়ান সোহাকে বাড়িতে নিয়ে এসে নিজে গাড়ির ডোর খুলে দিয়ে সোহার হাত ধরে নামায়।

হাত ধরেই বাড়ির ভিতর ঢুকতে থাকে।

সোহা দায়ানের থেকে হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলে উঠে,,, এমন ভাব করছেন যেনো আমি হাটতে পারি না।ছাড়েন আমার হাত।আমি একাই যেতে পারি।

হু হাটতে পারো কই শুধু তো দৌড়াও। এজন্যইতো দৌড়ে পালিয়ে গিয়েছিলে। এজন্যই হাটতে শিখাবো আমি ধরে ধরে। আর হাত ছাড়বো মানে? এই যে ধরেছিনা হাত,, আর ছাড়া পাবা না গো বউ।ছাড়ছিনা আমি তোমায়।

সোহা দায়ানের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। লোকটা কেমন হয়ে গেলো।কিসব বলে চলেছে।উনিতো এমন ছিলেন না।

দায়ান বাড়িতে এসে দেখে দরজা ভিড়ানো।কিছু না ভেবে সোহাকে নিয়ে ঢুকে পরে। ড্রয়িং রুমে জমেলা খালা টেবিল গুছাচেছন। দায়ান দের দেখে বলল,,,,, তোমরা এসে গেছো? কই ছিলে তোমরা? বাড়িতে এসে কাউকেই পাইনি।ঐদিন এসে দেখি দরজা খোলা তোমরা কেউ বাড়িতে নাই।ভাজ্ঞিস আমি এসেছিলাম অন্য কেউ না।আর খাবার গুলো টেবিলেই পঁচে পরেছিলো।আমি আবার রান্না করেছি।তোমাদের জন্যই অপেক্ষা করতেছিলাম।তোমরা না আসলে খাবার ফ্রিজে রেখে চলে যেতাম।

দায়ান বাবা তোমার রুমে ঐসব কি করে ভাঙলো? র/ক্ত পরেছিলো।আমি সকালে পরিষ্কার করে দিয়েছি।কোথাও কি ব্যাথা পেয়েছো?
দায়ান সোহার দিকে তাকিয়ে তারাতাড়ি বলে,,,কিছুনা খালা তুমি এবার যাও আমরা খেয়ে নিবো।জমেলা খালা মাথা নাড়িয়ে চলে যায়।

দায়ান মেকি হেসে সোহাকে পাশ কাটিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। সোহা বুঝতে পেরেছে কিছু একটা লুকুচেছ তাই তারাতাড়ি দায়ানের রুমে যায়। দায়ান সোহাকে দেখে বলে তুমি? সোহা কিছু না ভেবে দায়ানের ডান হাত টা টান দিয়ে ধরে এনে দেখে।রুমাল বাঁধা রুমালটা ময়লা হয়ে আছে।
র/ক্ত শুকিয়ে গেছে। ক্ষ’ত টা মা’রা’ত্মক আকার ধারণ করেছে।সোহা দেখেই চোখ বন্ধ করে ফেলে।নিজেকে স্বাভাবিক করে নেয়। নিজে ফাস্ট এইড বক্স এনে দায়ানকে বসিয়ে নিজে পাশে বসে।
দায়ান বলে আরে আমি করে নিবো।তুমি যাও কোনো সমস্যা নাই। সোহা রা’গী চোখে তাকায়। দায়ান আর কথা বাড়ায় না চুপ হয়ে যায়। হাতে নতুন করে বেন্ডেজ করে উঠে কথা না বলে রুম থেকে বের হয়ে নিজের রুমে চলে যায় সোহা।দায়ান সোহার দিকে তাকিয়ে নিজেও ফ্রেশ হতে যায়।

———————————

সোহা ফ্রেশ হয়ে জামা পাল্টিয়ে খাটে হেলান দিয়ে বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে এক ধ্যানে।দায়ান তাকে ভালোবাসে রুশের কথাটা বারংবার কানে বাজতেছে।খুশিতে দৌড়ে গিয়ে দায়ানকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করতেছে।

সোহার ভাবনার মাঝেই দায়ান সোহার রুমে এসে ঢুকে।সোহাকে বসে জানালার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে কিছু না বলেই,,,বিছানায় উঠে গিয়ে সোহার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরে।

সোহা কিছুটা ভ’য় পেলেও নিজেকে সামলে নেয়।দায়ান কে নিজের কোলে মাথা রাখতে দেখে শরীর শিউরে ওঠে।

খাবার খাবানা পাগলি? খুব খিদে পেয়েছে তো। আসো খাবো।এই কয়দিন আমার কিছুই খাওয়া হয়নি।

দায়ানের কথা শুনে সোহার খুব খারাপ লাগলো।তাও নিজেকে সামলে নিয়ে মনে মনে বলল,,আপনার উপর থেকে আমার রা’গ কখনই পরে গেছে। তাও আপনাকে বুঝতে দেওয়া যাবে না।দেখি আপনি কি কি করতে পারেন আমার জন্য,,, এতোদিন অনেক তো অবহেলা করেছেন।এখন একটু কষ্ট করেন।বেশি না জাস্ট একটু খানি।এক চিমটি আপনাকে বেশি কষ্ট দেওয়া কি আমার পক্ষে সম্ভব? উহু কখনো না।

#চলবে,,,,,,

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here