You_are_mine
season_2
Poly_Anan
part_12
ঈশানের সাথে কথা বলতে বলতে ঈশা এতটাই মগ্ন হয়ে যায় যে তার সাইড থেকে আসা একটি বাইক থেকে পেছনের ব্যাক্তিটি ঈশার বাম হাতের বাহুতে ছুড়ি দিয়ে বেশ গভীর ভাবে পোচ দেয়।সঙ্গে সঙ্গে ঈশা গগন বিহীন চিৎকার দিয়ে উঠে তার চিৎকার শুনে পেছনে অনু তাকালে সে নিজেও থমকে যায়…মুখ দিয়ে অস্পষ্ট স্বরে বেরিয়ে আসে.,
“ইইইইঈশা….
মুহূর্তেই হাত চেপে ধরে ঈশা মাটিতে লুটিয়ে পরে।অনু দৌড়ে ঈশার পাশে বসে যায়।
” কলিজা তোর কি হয়েছে, এই এই প্লিজ বলনা তোর কি হয়েছে।
ঈশা অসহ্য যন্ত্রণায় গোঙানি করতে থাকে।অনু দ্রুত ঈশার মোবাইল তুলে ঈশানকে কল করে।
“ইইইঈশান ভ..ভাই ঈশাকে কে যেন ছুরি…
আর কিছু বলতে পারলোনা অনু।কথা গুলো যেন দলা পাকিয়ে গেছে।ঈশান ফোনের অপর পাশ থেকে হ্যালো হ্যালো করেই যাচ্ছে কিন্তু কান্না ছাড়া কোন শব্দ পাচ্ছেনা।মোবাইটা কেটে ঈশান ঈশার লোকেশন ট্রেস করে দ্রুত রাসেল কে নিয়ে বেরিয়ে যায়।রাসেল ড্রাইভিং সিটে এদিকে ঈশান পাশে বসে শুধু মাথার চুল টেনে যাচ্ছে।
” রাসেল আমার ঈশার কি হয়েছে রাসেল..!আমার ঈশার কিছু হলে আমি কি করবো আমি কাকে নিয়ে বাচঁবো।
“প্লিজ ঈশান শান্ত হ..!
” দ্রুত চালা গাড়ি প্লিজ দ্রুত চালা।
কিছুক্ষন পরেই তারা পৌছে যায় সেই রাস্তায়।ঈশা এতোক্ষন অজ্ঞেন হয়ে যায়। তার পাশে অনু কাদছে।সামনে তিন চার জন মানুষ এসে জায়গাটা ভিড় করে আছে।
ঈশান গাড়ি থেকে নেমেই, দ্রুত ঈশাকে কোলে তুলে নেয়।রক্তে ঈশার অনুর আর ঈশানের জামা ভিজে গেছে।এত রক্ত একসাথে দেখে অনুর মাথা ঘুরছে কিন্তু তবুও নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে।পেছনের সিটে ঈশানের কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে ঈশা।রক্তে ঈশানের পরনের অফ হোয়াইট টি শাটটায় দাগ লেগে আছে।
” ঈশু এই ঈশু চোখ খোল প্লিজ আমি এসেছি একটু আগেই আমাদের কথা হয়েছে প্লিজ ঈশু চোখ খোল।
ঈশান পাগলের মতো ঈশাকে ডাকছে কিন্তু ঈশা নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে। কিছুক্ষন পর তারা হসপিটালে পৌছে যায়।অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরনে ঈশার জন্য রক্ত প্রয়োজন। রক্ত খুব দ্রুত জোগাড় করে নেয় রাসেল। ঈশাকে এখন ঘুমের ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। ঈশান বেলকনির একটি সিটে বসে আছে।তার পাশে অনু।দুজনেই স্তব্দ হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
“ঈশান অলরেডি ৩ ঘন্টা হয়ে গেছে ঘটনাটার আমদের এবার ঈশার বাবা মাকে খবরটা দেওয়া উচিত।(রাসেল)
” হুম ঠিক।
“তাহলে আমাদের এবার যেতে হবে…!
” যাবো মানে(চমকে)
“ঈশার বাবা মা আমাদের দেখলে অন্য কিছু ভাবতে পারেন।তাই আমাদের এখান থেকে চলে যাওয়াটাই বেটার হবে।
“তুই পাগল হয়ে গেছিস..!আমি ঈশাকে না দেখে চলে যাবো?
“দেখ ভাই এটা ঈশা আর তোর, দুজনের ভালোর জন্যই আমি বলছি!(ঢোক গিলে)
” যাবো না আমি(দৃঢ় গলায়)
পাশ থেকে অনু সবটা দেখছিল।জিব দিয়ে তার শুষ্ক ঠোঁট দুটো একবার ভিজিয়ে বলে,
“হ্যা ঈশান ভাই আপনার এখান থেকে চলে যাওয়া টাই বেটার হবে কারন আংকেল আন্টি এসে পড়লে সমস্যা হতে পারে।
ঈশান চুপ চাপ মাথা নিচ করে বসে আছে ঈশার জ্ঞান আসার আগে সে কিছুতেই দেখা না করে যাবে না।
” কিরে তুই যাবি না(রাসেল)
“না…(গম্ভীর কন্ঠে)
রাসেল কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে কি যেন ভাবে তারপর ঈশানকে উদ্দেশ্য করে বলে,
” ওকে আমরা যাবো না।কিন্তু…!
“কিন্তু..?
” কিন্তু আমরা আড়ালে থাকবো।আমরা ডান দিকটায় থাকবো । সেইদিক থেকে ঈশার কেবিনটা বেশ ভালোভাবেই দেখাযায়।তুই বরং এখন ঈশাকে একবার দেখে আয়।
ঈশান দ্রুত ঈশার কাছে যায়।চোখে মুখে রুক্ষতা ছেয়ে গেছে ঈশার। তার বাম হাতে সাদা ব্যান্ডেজে মুড়ানো। ঈশান ঈশার দিকে কিছুক্ষন নিষ্পল ভাবে তাকিয়ে থাকে। গুটি গুটি পায়ে সামনে গিয়ে তার ডান হাতটি শক্ত করে ধরে পাশে বসে।
“আমি যানিনা কে এমনটা করলো! তবে এক মূহুর্তে তোমার শত্রু সাইফ আর নাজিম ছাড়া কেউ নেই। আমি লোক লাগিয়ে দিয়েছি তারা ঠিকি খুযে বের করবে ওই জানোয়োরটাকে।তুমি শুধু সুস্থ হয়ে যাও দ্রুত আমি এটাই চাই।
ঈশার দিকে ঈশান কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে। তারপর ঈশার হাতে আলতো করে একটি চুমু খেয়ে বলে,
” আজ আমি ব্যর্থ ঈশা.!আমি ব্যর্থ! তোমাকে আমি যথেষ্ট নিরাপত্তা দিতে পারিনি।তবে কে বা কারা করেছে এই কাজটা তাদের আমি কিছুতেই ছাড়বোনা।
ঈশান কথাটি বলে দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
সবার আড়ালে সে এক সাইডে গিয়ে তার পার্সনাল গাডকে কল করে।
“হুম বলো কি খবর?
“বস, সাইফ আর নাজিম চিকিৎসার জন্য তারা দেশের বাইরে আছে তাদের সাথে তাদের পরিবার ও চলে গেছে।এইছাড়া আর কোন আপডেট পাইনি।
” ওকে।
ঈশান চিন্তায় পড়ে যায় ঈশার সাথে ঠিক এই কান্ড গুলো কে করছে।তারা দেশের বাইরে যেহেতু আছে নিশ্চই ক্রিটিকাল অবস্থা।ভাবনার রাজ্য ঈশান যেন বার বার হারিয়ে যাচ্ছে।
ঈশার সাথে প্রায় ১৭ দিন দেখা হয়নি ঈশানের।দেখা হয়নি বললে ভুল দিনের বেশির ভাগ সময় দুজনের ভিডিও কলে কথা হয় কিন্তু সামনে থেকে দুজন দুজনকে দেখতে পায়নি এতদিন।ঈশান অবশ্য চেষ্টা করেছে কি করে দেখা করা যায় কিন্তু ঈশাকে বাড়ি থেকে বের হতে বারন করেছে তার বাবা তাই এখন ঘর বন্ধিনি সে।
ছাদে ঈশানের সাথে ফোনে কথা বলছে ঈশা।তার পাশে অনু কিছু ফুলের চারার পরিচর্জা করছে। হুট করেই ঈশার গায়ে একটি কাগজের দলা পরে আশে পাশে তাকালে কোন ছাদ থেকে কাউকে দেখতে পায় না এদিকটায় প্রায় তিনটে ছাদ আছে কিন্তু কোন ছাদ থেকে এমনটা করলো কিছুই বুঝতে পারেনি ঈশা।
দ্রুত কাগজটা হাতে তুলে সে পড়তে শুরু করে।
“এক অসহ্য যন্ত্রনায় তুই মরবি।নিজের। জীবনের সাথে নিজে যুদ্ধ করবি.।নিজের মিত্যুর কামনা নিজে করবি দিনের পর দিন..হ্যা তুই,নওশীন ঈশা…!
কথা গুলো একটু শব্দ করে পড়ে ঈশা তাই কথা গুলো ফোন থেকে স্পষ্ট শুনতে পায় ঈশান৷ তার পাশ থেকে লাফিয়ে উঠে কাগজটা আরো দুইবার পড়ে অনু কিছুই মাথায় ডুকছেনা। আড়াল থেকে এই হুমকি কে দিলো তাকে।ঈশার ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে। দুই হাত পা থরথর করে কাপছে।
” ঈশা কে দিলো তোমায় এই লেখা,..
প্লিজ ঈশা কথা বলো। এই মেয়ে চুপ কেন?
ঈশা স্তব্দ হয়ে গেছে।মোবাইলটি বন্ধ করে সে অনুকে জড়িয়ে ধরে কাদতে শুরু করে।অনুর মাথায় কিছু ডুকছেনা।
তখনি অনুকে ঈশান ফোন করে।
“হ্যালো ভাইয়া..!
” ঈশা একটু আগে এইসব কি বলছিল?
অনু সবটা ঈশানকে খুলে বলে।
“অনু তুমি ঈশাকে ঘরে নিয়ে যাও দ্রুত।
” ওকে ভাইয়া।
ঈশান নিজের মাথার চুল নিজে ছিড়ছে কে করছে এইসব।সাইফ,নাজিম ওদের সন্দেহ হলেও তারা এখন দেশের বাইরে।যদি অন্য কাউকে দিয়ে কাজটা করায় তবে সে কে?
“ঈশান…!(রাসেল)
” হুম.!
“দেখ আমার মনে হচ্ছে তোর কোন শত্রু ঈশার পেছনে লেগেছে।এইদেশে আসার পর কিন্তু তোর কম শত্রু তৈরি হয় নি।একের পর এক কোম্পানিকে টপকে তুই নিজের টাকে বেস্ট পজিশনে এনেছিস। তোর কি মনে হয় তাদের কাছে তুই শত্রু না।?
” আমি বুঝতে পারছি কিন্তু ঈশাকে পেলো কি করে?
“আর ইউ মেড! তারা এতো দিন তোর দূর্বলতা খুজে চলছিল এখন পেয়ে গেছে তাই সেই অনুযায়ী কাজ করছে।ঈশার কোন ক্ষতি হলে তুই নিজেই শেষ হয়ে যাবি আর সেই সুযোগটাই লুফে নিচ্ছে তারা।
” ইউ আর রাইট..! কিন্তু ঈশার জন্য এত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলাম কাজের কাজ কিচ্ছু হচ্ছেনা।(দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে)
“একটা কথা বলি ঈশান।ঈশা কিন্তু তোর কারনেই নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে! তাই বলি কি তুই ঈশাকে যত দ্রুত পারিস বিয়ে করে ফেল।
কথাটা যেন ঈশানের কানে বজ্রের ধ্বনির মতো লাগলো।
” কি বলছিস তুই? পাপা এই সময়টাতে বিয়ে দিতে রাজি হবেনা।
“তা আমি ভালো করেই যানি ঈশান। কিন্তু তুই একবার ট্রাই কর। দেখ ঈশা তোর পাশে থাকলে নিরাপদ থাকবে তুই তার বেস্ট টা দিয়ে তার পাশে থাকবি তাই আমি চাই বিয়েটা কর।তুই ভালো করে ভেবে দেখ তোর স্টাডি চলছে আর নিজের ব্যবসা অলরেডি শীর্ষে আছে। ঈশার বাবা আশা করি তোদের বিয়ে দিতে বারন করবেনা।
ঈশান দুই মিনিটের জন্য চুপ থেকে রাসেলকে জড়িয়ে ধরে।
” বেস্ট বুদ্ধি ভাই।(রাসেলের পিঠ চাপড়ে).
“অল দা বেস্ট। দোয়া রইলো মহারানীকে নিয়ে সুখী হও..!
ঈশান মুচকি হেসে আবারো জড়িয়ে ধরে।
(গল্পটি লেখনীতেঃপলি আনান)
” হ্যালো মম কেমন আছো?
“ভালো বাবা তুই কেমন আছিস?
” ভালো।বাবা কোথায়?
“এখনো ফিরে নি।কোন দরকার ছিল?
” মম যা বলবো সোজা খোলা খুলি ভাবে বলবো আশা করি তুমি যানো তোমার ছেলে কেমন প্রকৃতির।
“আমি যানি আমার ছেলে কেমন।এবার তোর কথাটা বল।
“”I want to get married mom
ঈশানের মুখে এমন একটা কথা শুনে কিছুক্ষনের জন্য স্তব্দ হয়ে গেলেন মাহমুদা।কিছুক্ষন পর শক কাটিয়ে খুশিতে গদ গদ হয়ে বলে,
“সত্যি..!
” হুম।কিন্তু বাবা….
সাথে সাথে চুপসে যান মাহমুদা। তিনি জানেন আবিদ কখনো ঈশানকে এই সময়টেতে বিয়ের জন্য অনুমতি দেবেনা।আর বাংলাদেশে কোন আত্নীয়তা তিনি করবেন না কারন ইউএসে বড় পদের লোকজনের সাথে উঠা বসা তার।আর তিনি কিনা বাংলাদেশ থেকে সাধারণ পরিবারের মেয়ে ঘরে আনবে অবিশ্বাস্য।
“ঈশান আমি তোকে কি বলবো ভেবে কুল পাচ্ছি না। দেখ তুই আমার দিক থেকে সম্পূর্ণ সাপোট পাবি। কিন্তু তোর বাবা…
” রিলেক্স মম।তুমি তোমার ছেলেকে জানোনা সে যেকোন মাধ্যেমে পাপাকে বিয়েতে রাজি করাবেই।
“সব বাদ কিন্তু তোর মাথায় হঠাৎ বিয়ের ভুত উঠলো কেন?
তারপর ঈশান সবটা তার মাকে খুলে বলে,
“,রাসেল সত্যি কথাই বলেছে তোর কারনে মেয়েটা এত ঝামেলার মাঝে পরছে তুই যা ভালো মনে করিস তাই কর।তবে একটা কথা আমি তোকে সাপোট করবো।
” লাভ ইয়ু মম,রাখছি।
কলটা কেটে ঈশান একটি দীর্ঘ শ্বাস নেয়।কিছুক্ষন পর তার পাপা কে কল করবে, তাই শুরু থেকে শেষ কি বলবে সেই হিসাবটা কষতে বসে যায় ।
“হ্যালো পাপা তুমি কি বিজি?
” না,কি বলবে ঝটপট বলে ফেল আমি কিছুক্ষণ পর ব্যস্ত হয়ে যাবো।
“”I want to get married papa….
আবিদ কিছুক্ষনের জন্য স্তব্দ হয়ে যায়।কি বললো এই ছেলে তিনি মূহুর্তেই রেগে যান।
” কি বললে তুমি কথাটা আরেকবার রিপিট করো।
“আমি যা বলেছি তুমি ঠিক শুনেছো পাপা।
“কিন্তু তোমার মাথায় এই বিয়ের ভূতটা কে ডুকালো?
” কেউ না আমার মনে হয়েছে আমি বলেছি বাকিটা তোমার দায়িত্ব .
“আচ্ছা তবে এখানে আসো এসে তোমার মত মেয়ে তুমি পছন্দ করে নাও।
” নো পাপা।আমার বউ সিলেক্ট আমি করে নিয়েছি।আর সে বাংলাদেশি বিয়েটা বাংলাদেশেই হবে।
ঈশানের কথায় আবিদের মাথা আরো গরম হয়ে যায় তিনি চেচিয়ে বলে,
“বাংলাদেশ..! তুমি এইজন্য বাংলাদেশ গেছিলে।দেখো ঈশান আমি বাংলাদেশের মেয়েকে কিছুতেই আমার বাড়ির বউ করবোনা।হ্যা তুমি বাঙ্গালি মেয়ে করতে পারো আমাদের ইউএসে কত মেয়ে আছে কিন্তু তাই বলে বাংলাদেশে আমি মানতে পারছি না।
” কেন পাপা কি সমস্যা তুমি বাংলাদেশী মা বাংলাদেশী আমার জন্ম হয়েছে বাংলাদেশেই তবে এত সমস্যা কিসের(ভ্রু কুচকে)
“কোন সমস্যা না এই মূহুর্তে তোমাকে বিয়ে দেওয়া হবেনা এটাই ফাইনাল।
” ওকে,আমিও বলে রাখছি আমি আর ইউএসে ফিরবো না আর তোমার যে অর্ধভাগ ব্যবসার কাজ বাংলাদেশে আমি সেই কাজ ছেড়ে দিলাম।
তুমি তোমার মতো বিশ্বস্ত কাউকে খুযে তার দায়িত্ব দাও।আমার অনেক কাজ..। গুড বায় পাপা আমি আর ওই দেশে ফিরবো না এটাই ফাইনাল।
ঈশান ফোনটি কেটে দিয়ে ওয়াশরুমে ডুকে যায় রাগে তার শরীর জ্বালা করছে। কিছুক্ষন তাকে শাওয়ার নিতে হবে তবেই শান্ত হতে পারবে সে।
কিছুক্ষন পর ঈশান ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখে তার পাপা ৫০+ মিস কল।এবং কিছু মেসেজ দিয়েছে।একটা মেসেজ ওপেন করেই ঈশান খুশিতে আত্নহারা হয়ে যায়।তার পাপাকে সে আবার কল ব্যাক করে,
“হ্যালো পাপা…!
” আমি রাজি ঈশান। জীবনটা তোমার সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্বটাও তোমার। শুধু শুধু আমি নাক না গলালেও হয়।আচ্ছা যাই হোক।মেয়েটার ডিটেইলস আমায় দাও,আমি তার বাবা মায়ের সাথে কথা বলবো..!
“ওকে পাপা থ্যাংকস।
ঈশান দৌড়ে রাসেলের রুমের দিকে পা বাড়ায়।
” রাসেল(হাসে)
“হ্যা বল!
” পাপা রাজি হয়েছে ঈশার ডিটেইলস চেয়েছে।
“সত্যি,ওহ ঈশান ফাইনালি তুই ঈশাকে পেয়ে যাবি।যা আংকেল কে সব সেন্ড কর।
” হুম যাই।
এভাবে কেটে গেছে আরো নয়দিন এখনো কোন নিউজ দেয়নি ঈশানের পাপা।এদিকে ঈশান ঈশাকে এই বিষয়ে কিছু যানায়নি।তার ধারণা সে ঈশাকে সারপ্রাইজ দেবে।রাতের এগারোটা ঈশা ঈশানকে ফোন করে বলে,
“হ্যালো ঈশান!
” হ্যা বলো ওয়াইফি কেমন আছো?হাতে কি অবস্থা।
“সব ঠিকঠাক।তুমি আজ আসবে ঈশান!
” কোথায়?
“আমাদের ছাদে, দেখো আজকের চাঁদটাও সেই দিনের মতো সরু চিকন!তোমাকে আমি মিস করছি প্লিজ এসো। আর কখনো বলবো না আজকেই শেষ।
ফোনে ঈশার কথাটা ঈশানের কাছে কেমন যেন লাগছিল।
” তুমি ঠিক আছো ঈশা।আর শেষ মানে তুমি যখন বলবে আমি তখন তোমার সামনে এসে হাজির হবো…!
“হুম এসো..
আজকের বিকাল থেকে চারিদিকে ধমকা এক ধরনের শীতল হাওয়া বইছে।আজ ছাদে ঈশা একা।কিছুক্ষন পর ঈশান এসে হাজির হয়।ঈশানকে যে আজ কত দিন পর ঈশা দেখছে, তাই এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।ঈশান ঈশার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে,
” কত দিন পর তোমায় দেখলাম।আমি ভাবিনি তুমি আমায় কখনো এইভাবে ডাকবে।
“হুম আমরা অনেক কিছুই কখনো ভাবিনা। কিন্তু বাস্তবতার কাছে মেনে নিতে হয়।আচ্ছা চলো এক কোনায় গিয়ে বসি।
ঈশানকে একপাশ থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঈশা। আর ঈশানের ঘাড়ে মাথাটা ফেলে দেয়।ঈশার এই কান্ডটা ঈশার অদ্ভুদ লাগে কারন ঈশা ঈশানকে ভালোবাসলেও কখনো নিজে থেকে ঈশানের পাশে ঘেসে বসে না।ঈশান মনে মনে ভেবে নেয় হয়তো বিয়ের কথাটা ঈশা যেনে গেছে তাই ঈশান মাথা থেকে সব চিন্তা ঝেরে দেয়।
” ওয়াইফি কেমন আছো?
“ভালো তুমি?
” তোমাকে দেখলে আমি কেমন থাকি যানো না।
“হুম যানি।আজকের পরিবেশটা সুন্দর না?
” ভীষন সুন্দর!
“তাই তো তোমায় আমি ডেকেছি!
” শালিক পাখি কোথায় তার দেখা নেই যে?
“শালিক পাখি তার কাজিনের বাড়ি গেছে। আমাকে সঙ্গে নিতে চেয়েছে কিন্তু আমি যাইনি।
এভাবে আরো কিছুক্ষন নিরবতা কেটে যায়।
” ঈশান তুমি আমায় কতটা ভালোবাসো?
“ঈশা এটা কোন ধরনের প্রশ্ন তুমি যানো না আমি তোমায় ঠিক কতটা ভালোবাসি।আমি যানি মাঝে মাঝে তোমার মাথায় বোকা বোকা কান্ড ঘুর পাক খায় যেমন এখন, কিসব প্রশ্ন করছো তুমি? আচ্ছা তুমি আমায় কতটা ভালোবাসো ঈশা….?
ঈশানের কথায় ঈশা হাসতে থাকে। তারপর উওর দেয়।
” আমি তোমায় কতটা ভালোবাসি যানি না।শুধু এটা যানি যদি কখনো ভাবি তুমি আমার পাশে থাকবেনা, তোমার ভালোবাসা আমি পাবো না তখনি আমার দম বন্ধ লাগে।সব কিছু পাগল পাগল লাগে।কিন্তু আমি তো কখনো ঈশান শাহরিয়ারের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হবো না। কারন ঈশান শাহরিয়ার কে আমি ছাড়লে সে তো আমায় ছাড়বেনা!
“তা ঠিক বলেছো ঈশু যান।
” একটা কথা বলি ঈশান, আমি তোমায় খুব ভালোবাসি,আমি তোমার সাথে কখনো বেইমানি করবো না যদি না পরিস্থিতির শিকার হই।
“আরে দূর পরিস্থিতি দেখবে অনুকূলেই থাকবে।
ঈশা এবার ঈশানের গলার দিকটায় তার মুখ গুযে দেয়।তাকে মনে হচ্ছে সে যেন ঈশানের ঘায়ের গন্ধ শুকছে।ঈশান একচিলতে হেসে ঈশাকে জড়িয়ে নেয়।ঈশান ঈশার হাতের ভাজে হাত রেখে বলে,
” চলোনা ঈশা আমরা রাস্তায় হাত ধরে হাটি!
“উহুহ কেউ দেখে নিবে। চলো ছাদটা তো বিশাল এই ছাদেই আমাদের হাটা হয়ে যাবে।
ঈশান আর ঈশা কিছুক্ষন হাটতে থাকে হুট
করেই ঈশান বলে,
” ঈশা মনে আছে তুমি বলেছিলে তুমি গান পারো কিন্তু এই দীর্ঘ প্রেমের জীবনে আমি তোমার গান শুনলাম না।
“শুনবে আমার গান?
“অবশ্যই।
ঈশা হাটতে হাটতে ছাদের রেলিং এ দাঁড়ায়।ঈশান পকেট থেকে ফোন নিয়ে রেকডার অন করে দেয় তার মাকে শুনাবে তার বউমার গলার গান।
ঈশা ঈশানের দিকে একঝলক তাকিয়ে গান শুরু করে,
আমি তোমার বিরহে রহিব বিলীন,
তোমাতে করিব বাস
দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী,দীর্ঘ বরষ-মাস।
যদি আর-কারে ভালোবাস,
যদি আর ফিরে নাহি আস,
তবে তুমি যাহা চাও তাই যেন পাও,
আমি যত দুঃখ পাই গো
আমারো পরাণ যাহা চায়
তুমি তাই, তুমি তাইগো॥
ক্ষীণ কন্ঠে গাওয়া রবিঠাকুরের প্রেমের গানটি ঈশা যেন একপলকেই ঈশানের বুকে ঝড়তুলে দিয়েছে।ঈশার মাতাল কন্ঠে গাওয়া গানের প্রতিধ্বনি ঈশানের কান জুড়ে বেজেই চলছে। ঈশা কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে রাখে তার গাল বেয়ে দুই ফোটা অবাধ্য চোখের জল গড়িয়ে পড়ে।ঈশা চোখ খুলে মৃদ্যু হেসে ঈশানের দিকে তাকিয়ে বলে,
” ঈশান আমাকে একটু জড়িয়ে ধরবে ওই যে সেদিনের মতো বৃষ্টিতে কাক ভেজা হয়ে দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরেছিলাম ঠিক তেমনি কোন শক্তি যেন কেউ আমাদের আলাদা করতে না পারে।
ঈশার মুখের কথা শুনে ঈশান তার দুই হাত বাড়িয়ে দেয়। ঈশানের মুখে ফুটে আছে এক মোহ ঘেরা হাসি। ঈশা দ্রুত ঈশানের বুকে ঝাপিয়ে পড়ে।দুজন দুজনকে এতটাই শক্ত করে জড়িয়ে ধরে যেন আজ এই মূহুর্ত শুধু তাদেরি হয়।
“” ভালোবাসি গুন্ডা ঈশান!
“ভালোবাসি বোকা জান,ওয়াইফি…..!
দুজন দুজনকে জড়িয়ে আছে শক্ত করে,ধমকা বাতাসে শীতল করে দিচ্ছে পরিবেশ শীতল করে দিচ্ছে উত্তপ্ত দুটি হৃদয়……!
#চলবে….
?ঈশা ঈশানের বিয়ে কার কেমন লাগছে….!
আজকে অনেক বড় পাট দিয়েছি। গঠন মূলক মন্তব্য না পেলে আর এইভাবে বড় ক রে দেবো না?।
?পর্বটা কেমন হয়েছে অবশ্যই জানাবেন…!