You_are_Mine season_2 Poly_আনান part_5

0
2070

You_are_Mine
season_2
Poly_আনান
part_5

গত তিন দিন থেকেই ঈশা আর অনুর কোন খোজ নেই।কলেজেও আসছেনা বাড়ির আসে পাশেও তাদের দেখা মিলছেনা,কারো ফোনেই কল ডুকছেনা ব্যাপারটা ঈশানের কাছে অস্বাভাবিক লাগে।পর্বতীতে লোক লাগিয়ে যানতে পারে ঈশা তার ফুফির বাড়িতেই আছে।অনেক দিন ঈশাকে না দেখে মনের ভেতরটা খচ খচ করছে তার।

“কিরে ঈশান কি ভাবছিস?(রাসেল)
“তোর ভাবি যে লাপাত্তা। কত দিন হয়ে গেলো মায়াবীর মুখ দর্শন করলাম না।
” ওহ এই ব্যাপার।প্রেম সাগরে ডুবে যে হাবুডুবু খাচ্ছেন আপনার বিজনেসের খবর কি আপনি রাখেন?
“কেন কি হয়েছে?
” কিছু হয়নি তবে সামনে মনে হচ্ছে বিশাল একটা লোকশান হবে তুই তো নজর দিস না একটু দেখা শুনা করিস আমি আর কত দেখবো আমারো তো শখ হয় একটু……
রাসেলের কথা শেষ হওয়ার আগেই ঈশান বলে,
“কি শখ হয় তোর প্রেম করতে চাস(ভ্রু কুচকে)
” দূর ফাজিল..
হুট করেই ঘর কাপিয়ে বেজে উঠে ঈশানের ফোন। স্কিনের দিকে তাকিয়ে দেখে তার মা মাহমুদা ফোন করেছে..
“হ্যা মম কেমন আছো?
” ভালো তুই কেমন আছিস বাবা?
“ভালো নেই গো মা ভালো নেই। তোমার ছেলে সেই মায়াবীর দেখা না পেয়ে পাগল হয়ে যাচ্ছে?
” কে মায়াবী কি বলছিস ঈশান আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা।

ঈশান শুরু থেকে শেষ সবটা তার মাকে বলে একটি নিশ্বাস ছাড়ে।
“ছবি পাঠাতো আমার বউ মার দেখতে চাই সে কেমন মায়াবী যার জন্য আমার ছেলে সূদুর ইউএসের সব মেয়েকে বয়কট করে তার বাবাকে মিথ্যা বলে বাংলাদেশে পাড়ি জমিয়েছে।

ঈশান ঠোট কামড়ে একবার হাসে।
” তোমার বউমা তো আমায় পাত্তা দেয় না মা। কি করে আয়ত্তো করবো তাকে?

ঈশানের কথা শুনে তার মা ঘর কাপিয়ে হাসলেন।

“ছোট বেলা থেকেই তোর একটি জঘন্য অভ্যাস আছে। যে জিনিসে একবার তোর চোখ যায়, তা তুই সকল বাধাঁ বিপত্তি পেরিয়ে জয় করে নিস।প্রয়োজনে ধীরে ধীরে রুপ পালটে খারাপ বনে যাস।
তোকে আমি ছোট থেকেই চিনি তাই নিশ্চিন্তে বলতে পারি তুই তাকে নিজের করে নিবি।তবে জানিস কি? সব কিছু নিয়ে জোর জবরদস্তি করা সাজে না।ভালোবাসা তো একেবারেই না।আমি চাই তুই তোর বিচার বুদ্ধি মন আত্না দিয়ে ভালোবেসে তাকে জয় করে নিস। মেয়েটাকে বুঝতে শিখিস।তার চাওয়া পাওয়া গুলোর মূল্য দিস।সময় গুলোকে ছোট ছোট ভাগে আনন্দময় করে তুলিস তবেই দেখবি তোর ভালোবাসা ঠিকি পূর্ণতা পাবে।

” বাবাকে এইসব কিচ্ছু যানিয়না মা। বাবা যানলে তার জাত চলে যাওয়ার মতো নাটক জুড়ে দেবে।আমি চাইনা বাবা যানুক।
“চিন্তা করিস না! তোর মা তোর বিশ্বাসের অমর্যাদা করবে না।
” তাই তো তোমায় এতো ভালোবাসি মা।লাভ ইউ মম।
“হয়েছে হয়েছে এবার আমার ছেলের বউকে দেখতে চাই আমি।

ঈশান তার মাকে ঈশার বেশ কিছু ছবি পাঠিয়ে দেয়।মাহমুদা খুটে খুটে ছবি গুলো দেখছেন সত্যি মেয়েটার মুখ মায়া মাখা।তবে চোখ দুটো যেন পরিচিত।কতকালের চেনা।নিজের অজান্তেই হেসে ঈশানের সাথে বাকি কথা সেরে নিলেন তিনি।

” দুঃখটাকে দিলাম ছুটি আসবে না ফিরে,
এক পৃথিবী ভালোবাসা রয়েছে ঘিরে..!

ঈশা তখন থেকেই এই গানের লাইন দুটো গেয়েই যাচ্ছে। পাশ থেকে অনু খুব বিরক্ত হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।

“ঈশা তুই এবার একটু চুপ কর এই গানের লাইন দুটো অন্তত ২৭০ বার তোর মুখে গাওয়া শেষ এবার অন্য গান ধর আমার কান ঝা ঝা করছে এই গান শুনে!
” দূর ডিস্ট্রাব করিস কেন তুই। আজ এই সিচুয়েশনের সাথে এই গানটাই মিলে দেখছিস না আজ কত্তো দিন হয়ে গেলো গুন্ডা ঈশান আমাদের খুযে পেলো না৷
“বেশি নাচিস না হারামি দেখবি ঠিকি খুজে বের করবে তোকে!
” আরে দূর পাবে না পাবে না দেখেনিস।
“হয়েছে তোর বকবক থামা কাল থেকে বিয়ের আয়োজন শুরু রিসোর্টে যেতে হবে জামা কাপড় প্যাকিং করে নে।
” হ্যা রে অনু আমরা যে এতো দিন ধরে আমাদের সিম, বন্ধ রাখলাম আমাদের কি কেউ একবারের জন্যও নক করেনি।

“আরেকবার এইসব কথা বললে তুই লাত্তি খাবি বলে দিলাম।তোর যন্ত্রণায় আমি আজ কতো দিন, ফেসবুক,ইন্সট্রা কিচ্ছুতে এক্টিভ হতে পারছিনা সিমটা পর্যন্ত খুলে রেখেছিস। তোর অত্যাচারে আমি শেষ হয়ে যাবো..!
” আহ প্যারা নাই চিল। দেখিস না এখানে সবাই মিলে কতো মজা করি তুই সিম দিয়ে কি করবি।তোর মাধ্যেমে হলেও আমাকে ওই গুন্ডা খুজে বের করবে তাই আগে তোকে সামলাবো তারপর নিজে…বুঝেছো অনুজা…?

“সর আমারে ডিস্ট্রাব করবি না।তুই তোর রাস্তায় আমি আমার।
” ওক্কে..!
(গল্পটি লেখনীতেঃপলি আনান)
অবশেষে সবাই একযোগে রিসোর্টে এসে পৌছে গেছে।হাসিনের হবু বউয়ের নাম শিমলি। পরিবারের বড় মেয়ে সে।সবাই সিধান্ত নিয়েই রিসোর্টে একযোগে অনুষ্ঠান শেষ করবে বলে সিধান্ত নেয়।
অনু আর ঈশা রিসোর্টটা ঘুরে ঘুরে দেখছে,হুট করেই তাদের সামনে এসে একটি ছেলে দাঁড়ায়। দেখতে লম্বা,ফর্সা গালে স্টাইল করে কাটা চাপা দাড়ি।
“সমস্যা এই ভাবে সামনে এসে পথ আটকালেন কেন?(মুখ কুচকে ঈশা)
” সেই গাইস আমি আরিফ!কনের বেস্ট ফ্রেন্ড। আপনারা?
“তো আমরা কি করবো?(বিরক্ত হয়ে ঈশা)

” সুন্দরি এতো বিরক্ত হচ্ছেন কেন পরিচয়টা দিন?
“দেবো না আমার পরিচয় আপনি নিজেই খুযে নিন।
ঈশা বিরক্ত হয়ে অনুর হাত টেনে অন্যদিকে চলে যায়।

রাতের আকাশে আজ অন্ধকার নামলেও অন্ধকার নেই রিসোর্টের চারিপাশে।ধুম ধাম গানের তালে কিছু ক্ষন পর পর নেচে উঠছে ঈশা।চারিদিকের আলোকসজ্জা বেশ মনো মুগ্ধ কর।মেহেদী রাতে ঈশা লেহেঙ্গা পরে চুল ছেড়ে বেশ ভারী মেকাপে সেজেছে।তার সাথে অনুতো আছেই। গানের তালে তালে দুজনে রুমের ভেতরে নেচেই যাচ্ছে তাদের কান্ড দেখে হাসিনের হবু বউ শিমলি এবং তার বান্ধবীরা হাসছে।ইতিমধ্যে ঈশার সাথে সবার বেশ ভাব জমে গেছে।আরিফ ছেলেটার সাথেও বেশ বন্ধুত্ব।তবে ভেতরে ভেতরে অনুর বেশ ভয় লাগছে ঈশান যদি এইসব যানে তবে তাকেও ৪০%শাস্তি দেবে।কিন্তু ঈশার নাচের তালে তালে সব কিছু ভুলে গেছে সে নিজেও।

রাত বাড়ার সাথে সাথে পরিবেশ আরো আনন্দপূর্ণ হয়ে উঠেছে।কনে কে কিছু পার্লারের মেয়েরা মেহেদী পরিয়ে দিচ্ছে।ঈশা তাদের পাশে বসেই মেহেদী দেওয়া দেখছে কিছুক্ষন পরেই তাকে লাগানো হবে।একজন সার্ভেন্ট এসে সবাইকে কোল্ড ড্রিংকস দিচ্ছে ঈশাও একটা গ্লাস তুলে অল্প অল্প করে মুখে দিচ্ছে।কিছুক্ষণ পর তার মাথাটা ঝিম দিয়ে যাচ্ছে।চোখ গুলো খুলে রাখতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।

” এই অনু আমার ঘুম পাচ্ছে(হাই তুলে)
“কি?তোর এই সময় ঘুম পাচ্ছে পাগল নাকি?একটু আগেই তো নেচে নেচে সবার মাথা খেয়ে দিচ্ছিলি এখন ঘুম পাচ্ছে তোর?
” আরে আমি যানি আমার ঘুম পাচ্ছে আমাকে রুমে দিয়ে আয় না প্লিজ।
“মেহেদী লাগাবি না?
” আগে ঘুমাবো তারপর মেহেদী প্লিজ অনুজান আমাকে রুমে নিয়ে চল।

অনু ঈশাকে ধরে রুমে নিয়ে যায়।বাইরে সবাই আনন্দে ব্যস্ত তাই রিসোর্টের রুম গুলো একদম ফাঁকা।ঈশা, অনুর জন্য আলাদা রুম দেওয়া হয়েছে।অনু ঈশাকে শুইয়ে দিয়ে কপালের চুল ঠিক করে দেয়।গায়ের উপরে কাথাঁটা টেনে ঈশা হাত টেনে একটি চুমু খায় আর বিড়বিড় করে বলে,
“তুই পাগল যানিস? তোর পাগলামো না দেখলে আমার ভালো লাগেনা এইযে এখন এতো মানুষ চারিপাশে থাকবে তবুও আমার নিজের কাছে নিজেকে নিসঙ্গ লাগবে।

এতোক্ষনে ঈশার চোখে রাজ্যের ঘুম চলে এসেছে।অনু ঘাড় ঘুরিয়ে চলে যেতে নিলেই সামনে একজন মানুষকে দেখে থমকে যায় দুই পা পিছিয়ে ধপ করে খাটে বসে পরে।কি দেখছে সে? সত্যি নাকি?

” কি শালিক পাখি ভয় পেয়েছো?
“আয়ায়ায়াপ নি এখানে??
“ঈশা যেখানে ঈশান সেখানে… তুমি যানো না? (গানের সুরে)
” কিন্তু কি করে?
“উফফ শালিক পাখি ছোট কচি বাবু কিচ্ছু বুঝেনা। মনের টান গো মনের টান বুঝলে শালিকা।

” তার মানে আপনি ওর কোল্ড ড্রিংকস এর সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়েছেন?(ভ্রু কুচকে)
“ইয়াহ!আর কত দিন দূরে সরিয়ে রাখবে আমাদের দেখলে তো ঠিকি খুজে বের করেছি।

অনু ভয়ে কাচুমাচু হয়ে যায়।
” আচ্ছা যাও আমাদের একটু একা থাকার সুযোগ করে দাও!
“রিসোর্টের রুমের বাইরে সি সি ক্যামেরা আছে! আপনি ওর রুমে ডুকেছেন এটা সবাই যেনে যাবে।
” তুমি কি আমায় এতো বোকা ভাবো শালিকা।সব এখন আমার কন্ট্রোলে আছে তুমি চিন্তা করোনা যাও ইঞ্জয় করো।আরেকটা কথা, আমি যে এসে গেছি এটা যেন ঈশা না যানে যানলে কি হবে আশা করি বুঝতে পারছো?

অনু বড় বড় পা ফেলে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।কি হচ্ছে এইসব কিছুই তার মাথায় ডুকছেনা।এই ছেলের থেকে ঈশার মুক্তি নেই তা বার বার প্রমান পাচ্ছে অনু।
ঈশান গুটি গুটি পা ফেলে ঈশার সামনে বসে।
“কত দিন হয়ে গেছে তোমায় দেখিনা ঈশু জান।আর কত পালিয়ে থাকবে।ভাগ্য ,যানো সব ভাগ্য। ভাগ্যই আমাদের বার বার দেখা করিয়ে দেয়।

পরের দিন বেশ ভোরেই ঈশার ঘুম ভাঙ্গে। তার মাথাটা এখনো ভারি হয়ে আছে।পাশেই চিটপটাং হয়ে ঘুমিয়ে আছে অনু।তার দিকে একবার তাকিয়ে ওয়াশ্রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়। তখনি থমকে যায় ঈশা।
তার দুই হাত ভর্তি মেহেদী।মনে মনে অনুকে একটা থ্যাংস দেয়। নিশ্চই সে বলেছে ঘুমের ঘরে হলেও ঈশাকে যেন মেহেদী পরিয়ে দেয়।

কিন্তু খুশি বেশিক্ষন স্থায়ী হয় নি।যখন বাম হাতের তালু তার চোখে পরে তখনি ভ্রু কুচকে যায় তার।
সেখাবে স্পষ্ট লেখা ” You are mine” মানে কি এর অর্থ কি “তুমি আমার” (বিড়বিড় করে)
ডান হাতের তালুতে বেশ কয়েকটি S লেখা।

“অনু এই অনু.. অনুর বাচ্চা উঠ বলছি..!
অনুর হাত টেনে ঈশা বসিয়ে দেয়।
” আমার হাতে কাল মেহেদী দিয়েছে কে?
“আমি যানি না ঈশু!
” তুই না যানলে কে যানবে আমার সাথে তুই থাকিস সত্যি করে বল কে দিয়েছে মেহেদী (ধমক দিয়ে)

অনুর মনে পরে কাল রাতে মেহেদী ঈশান দিয়েছিল। এখন ঈশা যদি যানে নিশ্চই তার গর্দান নিয়ে নেবে।তাই সাত সকালে মিথ্যার ঝুড়ি নিয়ে বসলো অনু।

“ওহ আমি দিতে বলেছিলাম পার্লারের মেয়েদের।
” বাম হাতের তালুতে এটা কে লিখেছে।
“আমি লিখছি দোস্ত!(ঢোক গিলে)
” তুই এটা লিখলি কেন। ডিজাইন কি আর ছিল না!
“দেখ এতো প্যাচাস কেন? তুই আমার বুঝস না..?। তুই আমার জান,,কলিজা, বাবু,জিন্দেগী সব তুই আমার বেস্ট ব্রেন্ড তাই শখ করে লিখছি। এখন লিখছি এটা কি আমার অপরাধ।এমন করস কেন(চিল্লিয়ে)
” ওহ সরি এমন ডিজাইন তো তুই আর করস নাই তাই ভাবছি কে লিখলো এমন।রাগ করিস না প্লিজ।
“হইছে যা ভাগ এখান থেকে আমি ঘুমাবো।

ঈশা কাচুমাচু হয়ে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ায় আর ভাবতে থাকে তার বন্ধুটা কত ভালোবাসে তাকে ইসসস!আর সে কিনা তাকে সন্দেহ করছিল।
আর এদিকে অনু মনে মনে বলতে থাকে,
” আল্লাহ গো আল্লাহ এবারের মতো বাচাইয়া দিসো।

সন্ধ্যার হলুদ অনুষ্ঠানের জন্য ঈশা তৈরি হতে রুমে ডুকছে তার আগেই হুড়মুড় করে ডুকে অনু।
“কি হলো এতো লাফাচ্ছিস কেন?
অনুর হাতে একটি প্যাকেট তা ঈশার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে,

” এই নাও সুইটি তোমার বর না মানে…বন্ধুর পক্ষে থেকে এই গিফট তোমার।
ঈশা কপাল কুচকে প্যাকেট টা হাতে নেয়।
“কি আছে এতে?
” খুলেই দেখ!
ঈশা প্যাকেট খুলে দেখে হলুদ, গোলাপি,আর গোল্ডেন রং মিশ্রনে একটি লেহেঙ্গা।পুরো লেহেঙ্গা জুড়ে সুতির কাজ তার মাঝে স্টোন বসানো।লেহেঙ্গটা দেখেই ঈশার মুখ হা হয়ে যায়।

“কিরে ত..তুই এটা কবে কিনলি!
” ব..বাবার সাথে গিয়ে সকালেই কিনলাম আর কি?তোর পছন্দ হয়েছে(সন্দেহ নিয়ে)
“ওয়াও!দারুন! দারুন। পছন্দ হবে না মানে আমার বেশ পছন্দ হয়েছে।কিন্তু তোকে কে বলেছে শুধু শুধু টাকা খরচ করতে? বিয়ে উপলক্ষে কত শপিং করলাম সেই সব কি হবে?
” ওইসব বাদ তুই আজ এটা পড়বি!
“ওক্কে আমি তৈরি হয়ে আসি!

ঈশা খুশিতে গদ গদ হয়ে চলে যায় আর এদিকে অনু মাথায় হাত দিয়ে বিছানায় বসে পরে।কিছুক্ষন আগেই ঈশান তাকে স্টোর রুমে ফোন করে যেতে বলে সেখানে একজন গাড তাকে প্যাকেট দুটো ধরিয়ে দেয় একটি ঈশার আরেকটি তার।এদের ভালোবাসার লুকচুরি খেলায় মাঝ থেকে অনু যাতাকলে পিষে মরছে।

” আল্লাহ আমায় এইসব পাগলামী থেকে উদ্ধার করো। না হলে আমি নিজেই পাগল হয়ে যাবো।

ঈশা তৈরি হয়ে হাসিন ভাইয়ার কাছে ছুটে যায়।
“ভাইয়া তুমি রেডি?
” না রে, দেখতেই পাচ্ছিস কত ঝামেলার মাঝে আছি।ঈশা তোকে তো ডানা কাটা পরি লাগছে রে।একদম হলুদ পরি(হাসিন)
ঈশা একবার লাজুক দৃষ্টিতে হাসে।
“দেখিস ঈশা আমার বিয়ের পরেই তোর বিয়ের ফুল ফুটবে… আমি তো সেই দিনের অপেক্ষায় আছি শুধু!

” হয়েছে হয়েছে আর বলতে হবেনা আগে নিজে বিয়ে করে আমাদের উদ্ধার করো।
“ঈশা আজ কিন্তু তোকে একটা দায়িত্ব নিতে হবে?
” কি দায়িত্ব ভাইয়া।
“আমার স্পেশাল দুইজন গেস্ট আসবে।তাদের খাতির যত্ন তুই করবি !
” আরে সমস্যা নেই।তুমি আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিও আমি তাদের চোখে চোখে রাখবো।
“তাই তো তোকে বললাম। আমি যানি তুই দায়িত্ব টা পালন করতে পারবি।
” হু আই’ম গ্র‍্যাট ঈশা!
হাসিন ঈশার গালে হাত দিয়ে হাসতে থাকে।

ঈশা তার ভারী লেহেঙ্গা দুই হাতে ঝাপটে ধরে স্টেজের দিকে পা বাড়ায়।তখনি পেছন থেকে তার ডাক আসে,
“হলুদ পরি..!
ঈশা পেছনে তাকালে খেয়াল করে আরিফ দাঁড়িয়ে আছে।তার দিকে তাকিয়ে সে মিষ্টি করে হাসি দেয়।
” তোমাকে পুরো হলুদ পরি লাগছে যানো?
“থ্যাংস,
” আজ কাপল ডান্স হবে আর আমি চাই তুমি আমার পাটনার হবে কি রাজি?
“ওকে, নো প্রবলেম!চলুন স্টেজের সামনে যায়।

ঈশা আর আরিফ দুজনে কথা বলতে বলতে স্টেজের সামনে যায়। আর এদিকে এক জোড়া রক্ত বর্ণ চোখ তাদের দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। অনু ঈশা তাদের বিভিন্ন মজা গুলোকে ক্যামেরা বন্ধী করে নিয়েছে ফটোগ্রাফার রা।এছাড়াও কিছু কিছু ছবি তোলার সময় আরিফ ও ঈশার পাশেই ছিল। গায়ে হলুদের পর্ব শেষে সবাই ডান্স করবে বলে সিধান্ত নেয়।বেশ কিছুক্ষন থেকে আরিফকে খুজে যাচ্ছে ঈশা। কিন্তু সে লাপাত্তা।অনু এক কোনায় বসে ঈশার কান্ড দেখছে আর জুস গিলছে।

” ঈশা তুই বেশি লাফালাফি করছিস।তোর পা ভাঙ্গতে ঈশান হাজির হয়ে গেছে।তুই তো আর জানিস না তোর প্যায়ারের আরিফকে ও এতোক্ষনে মনে হয় দুই চার ঘা দেওয়া শেষ।

হুট করেই ঈশার সামনে আরিফ হাজির হয়। ঈশার সামনে দাড়িয়ে হাত চেপে বলে,
“আপু , আপনি আমার ছোট বোনের মতো।এই বড় ভাইটাকে মাফ করে দিন আর কখনো আপনার সামনে আসবো না।

” আরে আরিফ তুমি কি বলছো এইসব?ডান্স করবেনা চলো?
“ন..না না ভুলেও না আপনি আমার ছোট বোন।ছোট বোনের সাথে কাপল ডান্স, আস্তাগফিরুল্লাহ জিবনেও না।
” এই তুমি কি বলছো এইসব!
আরিফ আর কোন কথা না বলে উলটো দিকে হাটা ধরে।তাকে দেখতে এলো মেলো লাগছে চোখের সাইডে ফুলে গেছে।কি হচ্ছে এইসব ঈশা বুঝতে পারছে না।

যারা যারা ডান্স করবে সবাই মুখে একটা করে মুখোশ বেধে নেয়।বিভিন্ন ডিজাইনের মুখোশ গুলো থেকে ঈশা আর অনু দুইজনেই দুইটা নিয়ে চোখের সাইডে বেধঁ নেয়।
ঈশার মন খারাপ সে এবার কার সাথে নাচবে?
অলরেডি চারিদিকের আলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে হালকা নিয়ন বাতির লাল আলোতে সবাইকে দেখা গেলেও মুখ চিনতে সংশয় হচ্ছে মিউজিক শুরু হয়ে গেছে অনু এক কোনে দাঁড়িয়ে যায়।পেছন থেকে ঈশার কানে ভেসে আসে একটি কথা,
“Please dance with me!
ঈশা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালেই হেচঁকা টেনে লোকটি তার কোমড় জড়িয়ে ধরে,, তখন গানের তালে তালে সবাই নাচতে শুরু করে….!

Dua Bhi Lage Na Mujhe
Dawa Bhi Lage Na Mujhe
Jab Se Dil Ko Mere Tu Laga (ঈশা অবাক হয়ে লোকটির দিকে তাকিয়ে আছে। হালকা আলো, মুখোশের কারনে লোকটিকে ঈশা কিছুতেই চিনতে পারছেনা)

Neend Raaton Ki Meri
Chahat Baaton Ki Meri
Chain Ko Bhi Mere Tune
Yun Thaga Hai (ঈশান এক দৃষ্টিতে ঈশার দিকে তাকিয়ে আছে।তার বোকা পরিটা তাকে চিনতে পারছেনা কেমন অদ্ভুদ ভাবে তাকিয়ে আছে ভাবতেই ঈশানের হাসি পাচ্ছে।)

Jab Saanse Bharu Main
Band Aankhein Karun Main
Nazar Tu Yaar Aaya (অনুকে একা দাড়িয়ে থাকতে দেখে রাসেল টেনে তাকে ডান্স ফ্লোরে নিয়ে যায়। দুজনে সমান তালে ডান্স করতে শুরু করে। এদিকে ঈশা এখনো ভাবছে লোকটা কে তবে চোখ গুলো বেশ পরিচিত মনে হচ্ছে)

Dil Ko Karaar Aaya
Tujhpe Hai Pyaar Aaya
Pehli Pehli Baar Aaya Oh Yaara (ঈশান ঈশাকে ঘুরিয়ে তার চুলের ঘ্রাণ নিতে মত্ত হয়ে যায়।এদিকে ঈশার ভয়ে হাত পা কাপছে সে কিছুটা হলেও আচঁ করতে পারছে লোকটা ঈশান হবে)

Dil Ko Karar Aaya
Tujhpe Hai Pyaar Aaya
Pehli Pehli Baar Aaya Oh Yaara

har Roj Puche Yeh Hawayein
Hum Toh Bata Ke Haare
Kyun Jikar Tera Karte Hai Humse Taare
(ঈশা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সামনে থাক লোকটির দিকে।লোকটির ঠোটে লেগে আছে সেই মন ভুলানো হাসি।ঈশা বুঝতে পারে তাকে জড়িয়ে থাকা লোকটি ঈশান।হুট করেই বুকের ভেতরটা কেমন যেন ছ্যাত করে উঠে।তাহলে শেষ রক্ষে আর হলো না তার)

Har Roj Puche Yeh Hawayein
Hum Toh Bata Ke Haare
Kyu Jikar Tera Karte Hain Humse Taare

Ab Kisse Hai Tere
Inn Hothon Pe Mere
Izhaar Aaya Yaara (ঈশান মুচকি হেসে ঈশার কানের কাছে বলে,-চিনতে পারোনি আমায় ঈশু জান… আমি তোমার গুন্ডা ঈশান।ঈশা আবারো। তীব্র ভয় নিয়ে ঈশানের দিকে তাকায়)

Dil Ko Karar Aaya
Tujhpe Hai Pyaar Aaya
Pehli Pehli Baar Aaya Oh Yaara (ঈশানের ঠোঁটে হাসি লেগেই আছে এক রহস্য ঘেরা হাসি)

Dil Ko Karaar Aaya
Tujhpe Hai Pyaar Aaya
Pehli Pehli Baar Aaya Oh yaara(শেষের দিকে ঈশান ঈশার কপালে তালতো করে ভালোবাসার পরশ একে দেয়)

ঈশাকে ছেড়ে সবার মাঝ থেকে ঈশান আড়াল হয়ে যায়।ঈশানে যাওয়ার পানে তাকিয়ে ঈশা একবার ঢোক গিলে।কি হলো তার সাথে?

একটি অন্ধকার রুমের মাঝে দাড়িয়ে আছে ঈশা আর অনু দুজনেই ঠক ঠক করে কাপছে।ঠিক তখনিই…….
#চলবে…..
বেচারি অনুর সর্ম্পকে দুই লাইন বলে যাও?‍♀

অন্ধকার রুমে ঈশা আর অনু কি করছে আপনাদের কি মনে হয়?

আজকের পর্বটা কেমন হয়েছে যানাবেন?
?হ্যাপি রিডিং..!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here