The Colourful Fragrance Of Love ?Part: 06

0
1129

?#The_Colourful_Fragrance_Of_Love?

Part: 06

হিয়া স্নান করে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বেড়িয়ে আসতে চেষ্টা করে,উজান এতোক্ষণ হিয়ার ঔ ছোট্ট বিছানা টার এক সাইডে এসে বসে ছিলো,হিয়া স্নানে থাকাকালীন হিয়ার মামু এসে উজানের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করে বাহিরে গিয়ে রাতের খাবারের ব্যবস্থা করতে শুরু করে,আজ উজান প্রথম হিয়াদের বাড়িতে এসেছে আর জামাই কে যে ওনার ঠিক মতো না খাওয়ালেই নয়,উনি আবার হিয়ার মামির মতো নন উনি মন থেকেই হিয়াকে খুব ভালো বাসেন একদম নিজের মেয়ের মতো,,,হিয়া বেড়িয়ে এসে উজানের সামনে তোয়ালে টা এগিয়ে দিতেই একটা হাঁচি দিয়ে উঠে

হিয়াঃ হাঁচি টা ওনার সামনেই আসতে হলো,ধ্যাত

উজানঃ এই ভরা সন্ধ্যায় স্নান করবার কি দরকার ছিলো,আর একটু রাত টা বাড়তো তারপর না হয় করতে

হিয়াঃ আপনিও তো রোজ রোজ ঔ অফিস থেকে ফিরে রাত করে স্নান করেন তার বেলা

উজানঃ একদম মুখে মুখে তর্ক করবা না(ঝারি দিয়ে) আমার অভ্যেস আর তোমার অভ্যেস কি এক,ইডিয়ট_______এখন এরকম করে দাঁড়িয়ে না থেকে ব্যাগ গুছিয়ে নেও আমরা বাড়ি ফিরবো

হিয়াঃ কি,কেনো

উজানঃ সারাজীবন কি এখানে পড়ে থাকবার ইচ্ছে আছে

হিয়াঃ হ্যা মানে না,মানে,,আমি আপনার সাথে আজ ফিরতে পারবো না

উজানঃ হোয়াই

হিয়াঃ কাল নিপার বোনের বিয়ে আর নিপা বলেছে আমাকে থাকতে হবে মানে হবেই,আর নিপা আমার অনেক ভালো বন্ধু আমি এখন কি করে ওর কথা টা ফেলি বলুন তো

উজানঃ (একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে চোখ মুখ খিচে) কখন বিয়ে কাল

হিয়াঃ দুপুরে

উজানঃ বিকেলের মধ্যেই আমরা বাড়িতে ইন করবো কথা টা যেনো মাথায় থাকে

কথা টা বলেই উজান তোয়ালে টা হিয়ার হাত থেকে দুম করে নিয়ে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে চলে যায়,এদিকে হিয়ার আজ খুব রাগ হয় কি সুন্দর এ কদিন ও একটু নিজ মন মতো গ্রামে খেলেধুলে স্বাধীন পাখির মতো উড়ে বেরহচ্ছিলো আর কাল থেকে কি না আবার সেই বন্দী জীবন,ধুর
____________________
রাতে খাবার টেবিলে মামি উজানের পাতে ইচ্ছে মতো সব ঢালছিলো আর তা দেখেই উজানের মেজাজ পুরো বিগড়ে যায়,মামি যে শুধু দেখানোর জন্যই উজানকে বেশি তললাই করতে থাকে এটা উজানের বুঝতে বিন্দু মাএ ভুল হয় না,হিয়া এসে মামির থেকে বাটি টা নিয়ে নেয় উজান যে এর চাইতে বেশি খেতে পারবে না এটা এ কদিনে বেশ বুঝেছে হিয়া,তবে এদিক দিয়ে হিয়ার মামু যে হিয়াকে মন থেকে ভালোবাসে এটাও বুঝে ফেলে উজান,,ডাইনিং টেবিলে আজ প্রথম হিয়ার মামুর সাথে কথা হয় উজানের,বেশ ভালো ভাবেই গল্প করে তারা দুজন আসলে উনি যে পেশার তার সাথে উজানদের আর্কিটেকচার প্রফেশনের অনেক যোগাযোগ সেই সূএে গল্প টা জমে উঠে আরকি দুজনের,,,,খাওয়া শেষে এবার ঝামেলা বাধে কে কোথায় ঘুমোবে তা নিয়ে,হিয়ার খাট টা তো উজানের সোফাটার সমান এখন এই খাটে না উজান ঠিক মতো শুতে পারবে না হিয়া উজান আলাদা থাকতে পারবে,শেষ মেষ ঠিক হয় চিএার ঘরে বড় বিছানাটায় উজান হিয়া আজ রাত টা থাকবে,কথা মতো চিএা গিয়ে উজান কে ওর রুম টা দেখিয়ে দিয়ে চলে আসে,রুমের মধ্যে ঢুকে ফোন হাতেই উজান চিএার বিছানায় বসে পড়ে চিএার ঘরের প্রত্যেকটা জিনিস খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করে,হিয়ার রুম টা যতোটাই রঙ চটা চিএার রুম টা ঠিক ততোটাই সুন্দর করে সাজানো,দামি সব কাঠের আসবাবপএ দিয়ে ভরা,সাথে এই নরম তুলতুলে বিছানা,পর্দাতে টাঙানো কতো সুন্দর পুঁথি,সব পরক্ষ করে উজান ওর চোখ টা নামিয়ে নেয়,এরি মধ্যে হিয়া এসে রুমের গেট লাগিয়ে বিছানায় কোথায় ঘুমোবে মাথায় হাত দিয়ে দাড়িয়ে তাই ভাবতে থাকে

উজানঃ হোয়াট,,এরকম বোকার মতো দাঁড়িয়ে আছো কিসের জন্য?

হিয়াঃ এমনি,,আচ্ছা আপনি উপরে ঘুমোন,এ ঘরে তো এক্সট্রা সোফা নেই আমি বরং একটা চাদর পেতে নিচে শুইয়ে পড়ছি?

উজানঃ কেনো বেডে কি জায়গার অভাব?

হিয়াঃ না তা কেনো হতে যাবে,কিন্তু আপনি আমার সাথে এক বিছানায় ঘুমোতে পারবেন,আমরা তো কখনো এর আগে এক সাথে

উজানঃ এক বিছানায় ঘুমালাম বলে যে এক সাথে ঘুমালাম ব্যাপার টা নিশ্চয় এক না

হিয়াঃ হ্যা কিন্তু

উজানঃ আর তাছাড়া তোমার শরীরের যে কন্ডিশন দেখছি ফ্লোরে ঘুমিয়ে কি আরো শরীর খারাপ করবার চিন্তা করছো, যাতে বাড়িতে না যেতে হয় কলেজ করতে না হয় তাই তো

হিয়াঃ আপনি না?

হিয়া উজানকে একটা ভেংচি কেটে দিয়ে বিছানার এক কানিতে গিয়ে আঁটোসাটো হয়ে শুয়ে পড়ে,আর শরীর টা ক্লান্ত থাকায় শুতে না শুতেই হিয়ার চোখ বন্ধ হয়ে আসে ঘুমে,উজান কিছুক্ষণ ল্যাপটপে ওর অফিসের কিছু ফাইল চেক করে নিজেও বিছানার এক পাশ কাত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে
_____________________

উজানের ঘুম ভাঙ্গে সকাল প্রায় ৮ টার কাছাকাছি,উঠেই দেখে হিয়া ওর পাশে নি,উঠে পড়েছে,উজান উঠে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে হিয়াকে খুঁজতে রুম থেকে বেরুলে চিএা এসে বলে হিয়া বাড়িতে নেই,উঠোনে নিপা মিলে গল্প করছে,উজান চিএা কে কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে উঠোনে গিয়ে হিয়াকে খুঁজতে গেলেই ওর চোখ পড়ে উঠোনের সামনে বড় হয়ে ওঠা পেয়ারা গাছ টার উপর,যেটার উপর উঠে হিয়া আপন মনে পেয়ারা পাড়ছে আর নিপা ওরনা পেতে দাঁড়িয়ে আছে

উজানঃ হোয়াট দা হ্যাল ইস দিস হিয়া,তুমি এই সাত সকালে গাছের উপর কি করছো?

হিয়াঃ আন্ডা পারছি খাবেন,,,,,দেখতেই তো পাচ্ছেন ফল পারছি তারপরো কি সব বোকা বোকা প্রশ্ন করছে দেখো(উজান কে একটা পেয়ারা ক্যাচ দিয়ে)

উজানঃ (টপ করে পেয়ারা টাকে ধরে নিয়ে) কালকে নিষেধ করেছি না মুখে মুখে তর্ক করবা না আমার সাথে,তারপরো এতো ওডাসিটি আসে কোথা থেকে তোমার?

হিয়াঃ আরে আচ্ছা মুশকিল তো আমি আবার মুখে মুখে কি তর্ক করছি আপনার সাথে

উজানঃ করছো না___এক মিনিটের মধ্যে গাছ থেকে নামবা নাহলে কিন্তু আমি

হিয়াঃ নাহলে কিন্তু কি

উজানঃ একটা কসিয়ে থাপ্পড় বসিয়ে দেবো গালে,ইডিয়ট,আর সাথে মাকেও ফোন করে বলে দেবো তুমি এখানে ঠিক কি কি করে বের হচ্ছ যার জন্য বাড়িতে যেতে তোমার বিন্দু মাএ কোনো ইচ্ছে নেই?

হিয়া আর কিছু বলে না,শুধু মনে মনে ফুঁসতে থাকে,আলতো করে এক ডাল টপকে আর এক ডালে নামতে গিয়েই এবার পেয়ারা গাছে বাসা বাধা লাল পিঁপড়ের কামড়ে আচমকাই হিয়ার হাত টা ফস্কে গেলে হিয়া ওর ব্যালেন্স হারিয়ে পড়ে যাবে যাবে ওমনি উজান দৌড়ে গিয়ে নিচে ওর হাত প্রশ্বস্ত করে দাঁড়ালে হিয়া এসে পড়ে ঠিক উজানের দু’হাতের বেষ্টনে❤️

এদিকে নিপা এদের এই কান্ড দেখে ফিক করে হেঁসে দিয়ে ওখান থেকে চলে আসে

উজানঃ শখ মিটেছে গাছে ওঠার

হিয়াঃ আপনার জন্যেই আমি তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে পড়ে গেছি?নাহলে এসব গাছে ওঠা আমার কাছে কোনো ব্যাপারই না বুঝলেন,হু

উজান হিয়াকে কোল থেকে নামিয়ে দিলে হিয়া দৌড়ে গিয়ে ভেতর থেকে একটা সাইকেল নিয়ে আসে

উজানঃ সাইকেলে করে কোথায় যাচ্ছ আবার?

হিয়াঃ যাবেন আমার সাথে,,আসুন আপনাকে আমাদের গ্রাম টা ঘুরিয়ে নিয়ে আসি

উজানঃ এই সাত সকালে গ্রামে ঘুরবার কোনো ইচ্ছে আমার নেই

হিয়াঃ ঠিক আছে,আপনি তাহলে ভেতরে গিয়ে বসুন আমি একটু এই সামন থেকে আসছি

হিয়া সাইকেলে প্যাডেল তুলে যেতে ধরলে উজান হিয়াকে থামিয়ে দেয়

হিয়াঃ কি

উজানঃ খুব সাহস না তোমার,ওস্তাদি দেখাচ্ছ আমাকে

হিয়াঃ আরে ওস্তাদি কেনো দেখাতে যাবো,আমার এরকম গ্রামে একায় চলবার অভ্যাস আছে,আমি বলছি তো আপনাকে আপনি একটু ভেতরে গিয়ে বসুন আমি এই যাবো আর এই চলে আসবো

উজানঃ আর রাস্তায় সার্তকি বলে ছেলেটা তোমায় আবার বিরক্ত করলে,তখন,

হিয়াঃ ??আপ-নি কি ক-রে জানলেন সার্তকি আমাকে বিরক্ত করে

উজান কোনো উওর দেয় না শুধু হিয়াকে চোখের ইশারায় সাইকেল থেকে নামতে বলে,হিয়া সাইকেল থেকে নামে হিয়ার তখনো চোখ বড় বড় করে রাখা কি করে এক রাতেই উজান জানলো সার্তকি হিয়াকে সুযোগ পেলেই বিরক্ত করে শুধু,উজান সাইকেলে বসে হিয়াকে চোখের ইশারায় বসতে বলে,হিয়া গিয়ে পেছনের সীটে বসতে যাবে ওমনি খেয়াল করে সাইকেলের পেছনের সীট টা নষ্ট হয়ে আছে,এখন কি হবে

হিয়াঃ সাইকেলের পেছনের সীট টা তো নষ্ট,আমি একদমই খেয়াল করিনি

উজানঃ ঠিক আছে,সামনে এসে বসো

হিয়াঃ হ্যা সামনে!!আপনার সামনে

উজানঃ হ্যা কোনো সমস্যা

হিয়াঃ না মানে সমস্যা কিছু না

হিয়া আর কথা টা লম্বা করে না,চুপচাপ আলতো করে সামনে গিয়ে বসে,আজ প্রথম হিয়া উজানের এতো টা কাছে তখন গাছ থেকে পড়ে যাবার সময় আর এখন সাইকেলে এভাবে,গ্রামের পরিবেশ টা এখন নিতান্তই ঠান্ডা থাকে,তারউপর ভোরের দিকে হালকা গুড়ি বৃষ্টি হওয়াতে সকালের বাতাস টাতে আজ একটু বেশি গা কাটা দিয়ে উঠছে,উজান কাল রাত থেকে একই শার্ট পড়ে আছে যে ছেলে নিজের স্মার্টনেসের ব্যাপারে এতোটা কেয়ারিং সে যে এখনো ঘামে ভেজা কুঁচকে যাওয়া শার্টে নিজেকে ধরে রেখেছে সেদিকে বিন্দু মাএ তার নজরদারি আজ নেই❤️

সাইকেল চলছে,উজান খুব সাবধানতার সাথে উঁচু নিচু জায়গা গুলো দেখে সাইকেল টা চালাচ্ছে,আশেপাশের সবাই কি রকম করে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে,আর সবার ওরকম চাহনি তে হিয়ার ভীষণ লজ্জা করলেও উজানের কোনো ভূক্ষেপ নেই

হিয়াঃ আপনি এতো সুন্দর করে সাইকেল চালাতে পারেন জানতাম না তো?

উজান কোনো উওর না দিয়ে চুপ করে থাকে

হিয়াঃ বা দিকের গলি টা তে মোড় নেবেন,হ্যা হ্যা এদিক টাতে____কার কাছে শিখেছিলেন সাইকেল চালানো,,কি হলো চুপ করে আছেন যে বলুনননন নাআআআআ?

উজানঃ নীলিমা আর আমি একসাথে শিখেছিলাম

হিয়াঃ ওহ,,আপু তো শুনেছি অনেক সুন্দর গাড়ি ও নাকি চালাতে পারে,আপনারা নাকি এক সাথে ড্রাইভিং ও শিখেছিলেন মা বললো সেদিন?

উজানঃ মা তোমাকে নীলিমার কথা বলে

হিয়াঃ হ্যা,না বলার কি আছে,রোজই তো কতো গল্প হয় আপুকে নিয়ে আমাদের

উজানঃ কি বলে মা নীলিমা কে নিয়ে

হিয়াঃ অনেক কিছুই তো গল্প হয়,কোনটা রেখে এখন কোনটা বলি বলুন তো,

উজানঃ (কিছুক্ষন চুপ থেকে)তোমার কষ্ট হয় না ওসব গল্প শুনলে

হিয়াঃ কষ্ট!!কষ্ট কেনো হতে যাবে,আমার তো আপনার আর আপুর গল্প শুনতে বেশ লাগে? আপনি নাকি কি রকম চোরের মতো আপুকে দেখবার জন্য আপুর বাড়ির দেওয়াল টপকে রেলিং এর পাইপ ধরে ধরে আপুর রুমে গিয়ে আপুকে দেখতেন(কথা টা বলেঔ হিয়া ফিক করে হেঁসে দেয়??

উজানঃ এতে এ-র কম করে হাসির কি আছে??আর হোয়াট চোরের মতো,আমি কি চোর নাকি যে চোরের মতো দেওয়াল টপকে রেলিং ধরে উপরে উঠবো,ইডিয়ট

হিয়াঃ উঠেননি বলছেন (বলেই হিয়া বেআক্কালের মতো হাসতে থাকে)__থামুন এখানে এসে গেছি,,

হিয়া একটা দোকানে গিয়ে দাঁড়ালে ভেতর থেকে একটা কাকিমা এসে হিয়ার হাতে দুটো প্যাকেট ধরে দেয়,হিয়া ওগুলো নিয়ে কাকিমার হাতে টাকা তুলে দিয়ে আবার সাইকেলে এসে উঠে বসে,দুটো প্যাকেটে একটাতে আছে নিপার বোনের বিয়ের উপহার হিসাবে একটা শাড়ি আর এক প্যাকেটে আছে উজানের জন্য একটা শার্ট,হিয়া আপাতত কিছু না বলে উজানের সাথে বাড়ির দিকে এগুতে শুরু করে,চারপাশের প্রকৃতিতা আজ সত্যিই অনেক মনকড়া,হু হু বাতাসের বেগ এই মনকড়া পরিবেশ টা কে যেন আরো মোহিত করে তুলছে মুহুর্তে,সাথে হিয়ার মনটাকেও রাঙিয়ে দিয়ে যাচ্ছে ক্ষনে ক্ষনে

__________________

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here