? #The_Colourful_Fragrance_Of_Love ?
Part: 01
ফুলসজ্জার রাতে কোনো মেয়ে যে তার বর কে কসিয়ে থাপ্পড় মারতে পারে সেটা শুধু এই গল্পের নায়িকা হিয়াকে দেখেই বোঝা সম্ভব,হিয়ার বয়স কতো হবে আর, সবে এস এস সি শেষ করেছে,স্বভাবে,কাজেকর্মে,কথা বার্তা থেকে শুরু করে অঙ্গভঙ্গি সবকিছুতে বাচ্চামি নামক জিনিস টা ভরে ভরে থাকলেও নিজের আত্মসম্মান এর ব্যাপারে মেয়ে প্রচন্ড একচেটিয়া টাইপের,আর উজান কি না শেষমেশ এই ফুলসজ্জার রাতে হিয়াকে তার আত্মসম্মান নিয়ে কাটাছেঁড়া করলো
উজানঃ হাউ ডেয়ার ইউ,তোমার সাহস হয় কি করে আমার গায়ে হাত তোলার
হিয়াঃ তো কি ভেবেছিলেন আপনি,,,,আপনি আমাকে যা নয় তাই বলে কথা শুনিয়ে যাবেন আর আমি বাংলা সিনেমার নায়িকাদের মতো সব সহ্য করে নেবো,নেভার,কখনোই না,
উজানঃ ছোট্ট একটা মেয়ে এতো তেজ তোমার?
হিয়াঃ হ্যা এতোই তেজ____আর এসে থেকেই কি যেনো বলছিলেন আমার মামি আপনাদের টাকার লোভে পড়ে আমাকে আপনার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছে
উজানঃ ভুল কি বলেছি আমি(হিয়ার হাত মচকে ধরে)আমার বাবার কোটি কোটি টাকা দেখেই তো তোমার ঔ সো কলড মামি তোমাকে আমাদের কাছে,,,,,আমার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে?
হিয়াঃ আমার মামি যদি টাকার লোভে পড়ে আমাকে,আপনাদের কাছে বিক্রি করে দেয় তাহলে আপনার বাবা মাও আপনার জীবন টাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দেবার জন্য,আপনাকে আবার আগের মতো সবটা ভুলে সুন্দর করে বাঁচতে শেখার জন্য আমাকে কিনে নিয়েছে!!!কথা টা মাথায় রাখবেন
উজানঃ হিয়া (ঝারি দিয়ে)
হিয়াঃ একদম চেঁচাবেন না,বিয়ে করে নিয়েছেন বলে যে আমি আপনার কেনা দাসী হয়ে যাবো কথা টা ভুলেও মনে আনবেন না____এখন কি মনে হচ্ছে জানেন আপনার এই বদমেজাজের জন্যেই নীলিমা আপু আপনাকে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছে
উজানঃ খবরদার হিয়া নীলিমা কে নিয়ে একদম বাজে কথা বলবে না,নীলিমা কতো টা কি করতে পারে সেটা শুধু আমি জানি,নীলিমা বিয়ে করুক আর যা ইচ্ছে করুক আমি নীলিমা কে ভালোবাসি এন্ড দ্যাটস এনাফ ফর মি
হিয়াঃ আমি বুঝি না আপনি যখন এখনো নীলিমা আপুকে এতো টা ভালোবাসেন,আপনার যখন বিয়েতে এতোটাই অমত ছিলো তাহলে করলেন কেনো বিয়েটা,কি দরকারে
উজানঃ বাবা আর মার মুখের দিকে চেয়ে,অন্য কিছু দরকারে না
হিয়াঃ আপনার বাবা মাই বুঝি বাবা মা,তাদের কথা ভেবে,শুধু তাদের মুখের দিকে চেয়ে আপনি বিয়েতে হ্যা করলেন আর আমার মামি,,,,আমার বোন,আমার মামু এরা কি মানুষ না,,,,,আপনি যদি আপনার বাবা মার কথা ফেলতে না পারেন তাহলে কি করে ভাবলেন আমি তাদের কথা ফেলতে পারবো,তাদের মূল্য কি আমার কাছে নেই
হিয়ার প্রতিউওরে উজান এবার নিশ্চুপ
হিয়াঃ কি হলো চুপ হয়ে আছেন যে,উওর নেই কোনো তাই তো?
উজানঃ লিসেন হিয়া আমাকে এসব স্মার্টনেস দেখিয়ে কোনো লাভ নেই,তুমি হাজার চেষ্টা করেও কোনোদিন নীলিমার জায়গা নিতে পারবে না
হিয়াঃ নীলিমা আপুকে আমি চিনি না,আর যাকে আমি চিনি না তার জায়গা আমি হিয়া কখনো নিতে যাবো না
উজানঃ তোমার সেই যোগ্যতাও নেই
কথা টা বলেই উজান হিয়ার হাত টা এক ঝাটকায় ছাড়িয়ে দিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়ে
_________________
সন্ধিঃ তুই কাল হিয়ার কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইবে আর এটাই আমার শেষ কথা
উজানঃ আমি পা-র-বো না
সন্ধিঃ তোর লজ্জা করে না বলতে যে তুই পারবি না,ঔ টুকুনি একটা মেয়ে সব কিছু ছেড়ে তোর জীবনে এসেছে শুধু তোর জীবনটাকে নতুন করে সাজিয়ে তুলবে বলে আর তুই এভাবে ফুলসজ্জার রাতে ওর সাথে এরকম ব্যবহার করে,ওকে একা রেখে চলে এলি
উজানঃ ড্যাম ইউর ফুলসজ্জা?যখন আমি এই বিয়ে টাকেই মানি না তখন কিসের ফুলসজ্জা আমাকে বলতে পারিস
সন্ধিঃ মানি না মানে টা কি,বল আমায় কি মানে,বিয়ে করবার সময় খেয়াল ছিলো না,,,,,মানছি আঙ্কেল আন্টির কথা ভেবে বিয়ে টা করেছিস কিন্তু তাই বলে হিয়া কোনো ফেলনা না,বিয়ে টা যখন করেছিস সংসার টাও তুই করতে বাধ্য?
উজানঃ হিয়া একটা বাচ্চা মেয়ে সন্ধি,কি বোঝে ও সংসারের
সন্ধিঃ তুই শিখিয়ে দিবি
উজানঃ পা-র-বো না,যেই স্বপ্ন গুলো আমি আর নীলিমা দুজনে মিলে দেখেছি সেটা আমি অন্য কারো সাথে ফুল ফিল করবো,নেভার
সন্ধিঃ নীলিমা তোর অতীত উজান,আর তার চাইতেও বড় কথা নীলিমা এখন বিবাহিত ওর বিয়ে হয়ে গেছে
উজানঃ ও নিজের ইচ্ছেতে বিয়ে টা করেনি সন্ধি,তুই তো জানিস নীলিমা আমাকে কতো টা ভালোবাসে
সন্ধিঃ আমি জানি নীলিমা আর তুই দুজন দুজনকে কতো টা ভালোবাসতি,ইনফেক্ট আমি কেনো, ভার্সিটি ক্যাম্পাস অবধি সবাই স্বীকার করতে বাধ্য তোদের মতো কেউ কাউকে কখনো ভালোবাসতে পারবে না,,,,,কিন্তু দেখ যেভাবেই হোক নীলিমা আর তুই দুজনে এখন অন্য কারো সাথে আবদ্ধ,নীলিমা কখনো ফিরে আসবে না উজান
উজানঃ সন্ধি(অস্ফুটে)
সন্ধিঃ বল না কি ভুল বললাম আমি,নীলিমা ফেরার হলে এতোদিনেই ফিরতো উজান,নীলিমা নেই হিয়া আছে,হিয়া কে নিয়ে নতুন করে সবটা শুরু কর না উজান
উজানঃ সম্ভব না,কখনোই সম্ভব না
__________________
সবে স্নান শেষ করে হিয়া তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে রুমের বড় ব্যালকুনি টায় গিয়ে দাঁড় হয়,বাহিরের রোদ টা আজকে বেশি কড়াও না আবার বেশি হালকাও না,মিষ্টি প্রকৃতির তেজ আজ সূর্যের এই মনকড়া আলোর
উজানঃ হিয়া (অস্ফুটে)
হিয়াঃ (আলতো করে পিছন ফিরে)এটা আপনার বাড়িতে আসার সময় হলো,এরপর থেকে বাহিরে রাত কাটালে,আপনার বাড়িতে কাউকে বলে যাবেন,আপনার জন্য অহেতুক আমি কারো কথা শুনি সেটা নিশ্চয় আপনি চাইবেন না
উজানঃ কি হয়েছে,কেউ কিছু বলেছে তোমাকে আমার বাড়িতে না থাকা নিয়ে,,,বলো আমাকে
হিয়াঃ না কিছু বলার নেই আমার,,,,ছাড়ুন ওসব কথা,স্নান করবেন??(উজানের দিকে তোয়ালে টা এগিয়ে দিয়ে)আসলে আমি সাথে করে আমার তোয়ালে টা নিয়ে আসতে ভুলে গিয়েছি তাই আপনার তোয়ালে দিয়ে
উজানঃ ঠিক আছে
হিয়া আর কিছু না বলে ব্যালকুনি থেকে রুমে ঢুকতে যাবে ওমনি উজান হিয়াকে পেছন থেকে থামিয়ে দেয়
উজানঃ হিয়া
হিয়াঃ জ্বী বলুন
উজানঃ I am sorry
হিয়াঃ কি-সের জন্য
উজানঃ কাল আমার তোমার সাথে ওভাবে কথা বলা টা উচিৎ হয় নি__তুমি আর আমি দুজনেই পরিস্থিতির স্বীকার,,কাল তোমাকে ওভাবে বিয়ের সাজে দেখে আমার শুধু নীলিমার মুখ টা মনে আসছিলো,তাই আমি নিজের উপর কন্ট্রোল হারিয়ে তোমার সাথে বাজে ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছি
হিয়াঃ (একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে) পারলে আমাকেও ক্ষমা করে দিবেন আমারো উচিৎ হয় নি নীলিমা আপুকে নিয়ে ওভাবে কথা গুলো বলা
উজানঃ ঠিক আছে
হিয়া একটা সৌজন্যেসূচক হাসি দিয়ে এক পা বাড়াতেই উজান আবার হিয়াকে থামিয়ে দেয়
উজানঃ হিয়া (অস্ফুটে)
হিয়াঃ বলুন
উজানঃ হিয়া আমি কখনো নীলিমা কে ভুলতে পারবো না
হিয়াঃ (কিছুক্ষণ চুপ থেকে) আপনাকে নীলিমা আপুকে ভুলতে হবে না,ভালোবাসাটা ভুলে যাবার জিনিস না__আপনি তো নীলিমা আপুকে ভালোবেসেছিলেন ভুলে যাওয়ার জন্য না সারাজীবন আগলে রাখবার জন্য তাহলে ভুলতে যাবেনই বা কেনো❤️আমি নীলিমা আপুর পাশাপাশি বেশ আছি____শুধু দেখবেন আমার উপর যেন কোনো অবিচার না হয়,,,,,,যদি সময় পেড়িয়ে যাবার সাথে সাথে আপনার মনে হয়,যে না নীলিমার পাশাপাশি হিয়াকেও আপনার চাই আমাকে বিনা দ্বিধায় বলবেন আর তার সাথে যদি কখনো এটাও মনে হয় যে না হিয়াকে আপনার পক্ষে মেনে নেওয়া কখনোই সম্ভব না সেটাও আমাকে নিঃসংকোচে জানিয়ে দেবেন,,,,,❤️!!!!__আমি আমার পথ টা ঠিক দেখে নিতে পারবো,,,,তবে হ্যা সব টা শুরু বা শেষ যাই করুন সেটা করতে বেশি দেড়ি করবেন না,আমিও একটা মেয়ে ধর্য্যশক্তি আছে বলে আত্নসম্মান টা হারাতে পারবো না❤️
হিয়া ওর প্রত্যেকটা কথা এতো সুন্দর আর সাবলীল ভাবে বললো যে এ-র পর উজান কিছু বলবে তার সে ভাষা নেই,উজান শুধু এক দৃষ্টিতে হিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে আর ভাবে, কে বলবে হিয়া বাচ্চা,যার প্রত্যেকটা কাজকর্ম বাচ্চা দের কাজকর্ম কে হার মানায়,তার ভাবনার গভীরতা এতো টা গভীর,কি করে সম্ভব..!!