?#The_Colourful_Fragrance_Of_Love?
Part: 11
আজ সোমবার
আজ সকাল থেকে বললে ভুল হবে কাল রাত থেকেই শুরু হয় বউভাতের তুমুল আয়োজন,অনুষ্ঠান বাড়ির ছাঁদে হবে,আর ছাঁদের সব ডেকোরেশন এর দায়িত্ব নেয় বিহান পাবলো,,বিকেল এখন চার টা,,সন্ধি তিশা খুব সকালে এসেই হাজির বাড়িতে,উজানের আবার নতুন করে বউভাত হবে সাথে ফুলসজ্জা ওদের খুশি আজ দেখে কে,সন্ধি বায়না করে ও উজান হিয়াকে হলুদ মাখাবা,তাই তার বায়না মেটাতে বাসবি সন্ধিকে এনে দেয় হলুদ বাটা,উজানকে হালকা হলুদ ছুঁইয়ে দিয়ে সন্ধি জিনি সবাই মিলে ডলে ডলে হিয়াকে হলুদ মাখিয়ে দেয়,হলুদ মাখা শেষ হলে হিয়া স্নান করে এসে নিজের রুমে মাথা মুছতে শুরু করে,মাথা মুছা ভালো করে না হতেই জিনি আর সন্ধি মিলে হিয়াকে ধরে বসিয়ে দিয়ে হিয়াকে দু হাত ভর্তি করে মেহেন্দি দিয়ে দেয়,,
জিনিয়াঃ নেও বউকে মেহেন্দি পড়াও শেষ,, এখন আমার তৈরি হয়ে নেই আপুওওও প্লিজজজ
সন্ধিঃ হ্যা হ্যা যা যা,হিয়ার মেহেদী টা শুকিয়ে আসুক তোতোক্ষন আমরা রেডি হয়ে এসে ওকে বউ সাজিয়ে দেবো,কেমন?
হিয়াঃ ঠিক আছে,আপনারা বরং এখানে জামাকাপড় নিয়ে এসে এখানেই তৈরি হোন,আমার একা একা ভালো লাগবে না তো?
জিনিয়াঃ আচ্ছা আচ্ছা এখানে এসেই তৈরি হচ্ছি,,ওয়েট
সন্ধি আর জিনি ওদের জামাকাপড় আর সাজার জিনিস আনতে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়,এদিকে হিয়ার দু হাত ভর্তি থাকায় হিয়া না নড়তে পারছে না উঠে কোনো কাজ করতে পারছে,হিয়া আনমনে দাঁড়িয়ে ড্রেসিং এর সামনে গিয়ে নিজেকে দেখতে শুরু করে একটু পরে নাকি সে আবার বউ সাজবে,ধ্যাত কতো লজ্জা এসে মুহুর্তে গ্রাস করছে হিয়াকে??হুট করে উজান এসে পেছন থেকে হিয়ার কোমড় আলগা করে জড়িয়ে ধরতেই হিয়া টপ করে পেছন ফিরে
হিয়াঃ আপনি এভাবে হঠাৎ,আপনি না ছাঁদের উপরে ছিলেন
উজানঃ হুম ছিলাম,তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছিলো তাই কি মনে করে নেমে আসলাম
হিয়াঃ আমাকে আপনার দেখতেও ইচ্ছে করে এখন বুঝি
উজানঃ (হিয়ার হাত দুটো পেছনে চেপে ধরে হিয়াকে ওর কাছে টেনে নিয়ে) করতেই পারে,প্রবলেম কি তাতে
হিয়াঃ কি করছেন কি দরজা টা তো খোলা
উজানঃ কি হ্যা চুল গুলোও মুছোনি ঠিক করে পেছন টা তো পুরো ভিজে আছে,এতো কেয়ারলেস হলে আমার কেয়ার করবে কি করে শুনি
হিয়াঃ ঔ তখন জিনি আর আপু এসে মেহেদী দিয়ে দিতে চাইলো তাই আর মুছা হয় নি,,আর আপনার কেয়ার করতে না আমার বড় হতে হবে না ওটা আমি এমনিই পারবো
উজানঃ পাকনি
হিয়াঃকি করছেন হ্যা,প্লিজ ছাড়ুন,কেউ এসে পড়লে এভাবে দেখলে কি ভাববে
উজানঃ এতো অস্থির কেনো তুমি,সবসময় ছটফট,বলছি না কেউ আসবে না
হিয়াঃ হ্যা কিন্তু আপনি যেভাবে আমার হাত চেপে ধরে আছেন আমার মেহেদী নষ্ট হয়ে গেলে কিন্তু আপনার মাথা ফাটিয়ে দেবো আমি?
উজানঃ তাই
হিয়াঃ হুম তাই
উজানঃ তাহলে তো নষ্ট করতেই হয় দেখছি
হিয়াঃ না একদম না,ভুলেও না,আমি কিন্তু মাকে ডাকবো হ্যা,এই দেখুন
হিয়া আর কিছু বলার আগে উজান হিয়ার এক হাত ধরে হিয়ার হাত টা ওর গালে ছুঁইয়ে নেয়,আর উজানের এই কান্ডে হিয়া হতবাক?শুধু এক হাত না উজান এবার হিয়ার আরেকটা হাত গালে নিয়ে দু গালে মেহেদী লাগাতে শুরু করে
হিয়াঃ আপনি পাগল হয়ে গেছেন,কি করছেন কি হ্যা এগুলো?
উজানঃ কেনো আমার হিয়ার মেহেদী গায়ে মাখছি
হিয়াঃ এভাবে কে তার বউ এর মেহেদী গায়ে মাখে শুনি
উজানঃ এক মিনিট
হিয়াঃ কি
উজানঃ একটু পিছিয়ে যাও
হিয়াঃ কেনো
উজানঃ একটু একটু
হিয়াঃ হ্যা কিন্তু কেনো
উজানঃ শুধু আমি মেহেদী মাখবো তোমাকে কিছু মাখিয়ে দেবো না তা কি হয় নাকি
হিয়াঃ কি মাখাবেন শুনি আমাকে
উজান হিয়া সহ সামনে হালকা ঝুঁকে ড্রেসিং এর সামনে রাখা হলুদের বাটি টা থেকে হলুদ তুলে নিয়ে আলতো করে শাড়ির ফাঁকে হিয়ার কোমড়ে লেপ্টে দেয়,আর উজানের এই কান্ডে হিয়া মেহেদী হাতই চোখ বন্ধ করে লজ্জা রাঙা মুখে জড়িয়ে ধরে উজানকে
হিয়াঃ আমার কাতুকুতু লাগছে তো,আর কতো মাখাবেন?
উজানঃ (হিয়ার মাথায় একটা স্নেহের পরশ একে) থ্যাংকস হিয়া,আবার আমাকে নতুন করে একটা সুন্দর জীবন দেবার জন্য,,আমি জানি না আমি কখনো নীলিমা কে ভুলতে পারবো কি না,নীলিমার সাথে আমার একটা লং রিলেশন ছিলো আমি ওকে মন থেকে অনেক ভালোবেসেছিলাম হিয়া,কিন্তু নীলির প্রতি ফিলিংস টা এখন শুধু মনেই রাখতে চাই আমি নীলির প্রতি অনুভূতি গুলো নিয়ে বাঁচতে চাই না,বাঁচতে চাই তোমার অনুভূতি নিয়ে,,নীলিকে অতীতে ভালোবাসলেও তোমার জায়গা টা আমার কাছে অন্য রকম হিয়া!!নীলিকে ছাড়া বাঁচতে শিখেছি তোমাকে ছাড়া সম্ভব না❤️
হিয়াঃ (মুখ তুলে)আমি আপনাকে আগেও বলেছি নীলি আপু কে ভুলতে হবে না,আপনি যদি নীলি আপুকে মনে রেখে ভালো থাকতে চান আমার কোনো আপওি নেই,পৃথিবী থেকে কোনো ভালোবাসা মুছে যাগ আমি তা চাই না,পৃথিবীটা এরকম না পাওয়া ভালোবাসা তেও সুখ খুঁজে নিক এটাই চাওয়া আমার,,,,!!!!নীলি আপু নেই তো কি হয়েছে আপনার তার প্রতি ভালোবাসা টা বেঁচে আছে সেটাই বা কম কিসে
উজানঃ তোমার কি সত্যি কখনো নীলির কথা শুনতে খারাপ লাগে না হিয়া????
হিয়াঃ খারাপ তা কেনো লাগতে যাবে,,আমি তো রোজ রাতে নীলি আপু আর আপনাকে নিয়ে শুনে যাওয়া গল্পতে আপনাদের এক করে মিলিয়ে দেখি,কি সুন্দর লাগে আপনাদের একসাথে?❤️
উজানঃ এখন থেকে নীলি আর আমাকে না,তুমি রোজ স্বপ্নে আমাকে আর তোমাকে দেখবে,ঠিক আছে❤️____বাই দা ওয়ে তুমি কি করে স্বপ্নে নীলি আর আমাকে এক করে দেখো তুমি তো কখনো নীলি কে দেখো নি তাহলে?
হিয়াঃ হে হে দেখেছি তো?আপনি আপনার ওয়ালেটে নীলি আপুর যেই ছবি টা রেখেছেন আমি ঔ একবার চুপ করে
উজানঃ চুরি করে ছবি দেখা হচ্ছে তাহলে
হিয়াঃ হ্যা ঔ একটু(মাথা চুলকে)
উজান একটা শান্তি সূচক হাসি দিয়ে হিয়াকে আবার তার বুকে জরিয়ে ধরে
_________________________
রাত তখন ৮টা,আর একটু পর খাবার দাবারের আয়োজন শুরু হবে,উজান আজ একটা সবুজ পাঞ্জাবির সাথে সাদা চুড়িদার পড়েছে,হাতে সেই চিরায়ত ব্রান্ডের ঘড়ি চুল গুলো নিয়ম করে আছড়ানো,পান্জাবির হাতা টা কনু অবধি গুটে দেওয়া,সন্ধি হিয়াকে পড়িয়ে দিয়েছে একটা সবুজ রঙেরই জর্জেটের শাড়ি অবশ্য সেটাকে সবুজ বললে ভুল হবে লেমন রঙ বলা টাই বেটার,,বিয়েতে লাল শাড়ির জায়গায় লেমন রঙ টা উজানেরই চুজ করা,তার মতে লাল শাড়ির চাইতে নাকি হিয়াকে এই লেমন শাড়ি তেই বেশি সুন্দর মানাবে,আর সত্যি তাই হালকা মেক-আপের সাথে এই রঙ হিয়ার ফর্সা গায়ে বেশ মানিয়েছে
সন্ধি হিয়ার সাজের শেষ ফিনিশিং টানছে,এমন সময় হঠাৎই উজান এসে গেট টা হালকা খুলে ভেতরে এসে ড্রেসিং এ আলতো করে গা এলিয়ে হাত দুটো ভাজ করে হিয়াকে দেখতে থাকে
সন্ধিঃ আর কতো দেখবি,এরপর থেকে তো রোজই তোর পিচ্চি টার মুখ দেখেই ঘুম থেকে উঠবি,,নামা চোখ টা?
উজানঃ হয়েছে না ওকে রেডি করা এখন যা তো একটু বাহিরে,কাজ আছে
তিশাঃ ফুলসজ্জার আগেই কাজ করে নিবে?
উজানঃ একদম বাজে বকবি না?
সন্ধিঃ ??রাগ করছিস যে,যেভাবে তখন থেকে এই পিচ্চিটার পিছে পিছে লেগে আছিস, অকাজ তো করেই ফেলতে পারিস,সমস্যা কি তোরই তো বউ
উজানঃ তোরা যাবি কি রুম থেকে,না আমি টেনে নিয়ে গিয়ে বের করে দিয়ে আসবো
সন্ধিঃ যাচ্ছি যাচ্ছি হু?
সন্ধি উজানের পেটে হালকা কাতুকুতু দিয়ে তিশাকে নিয়ে হাসতে হাসতে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়,সন্ধিরা বেড়িয়ে গেলে উজান গেট লাগিয়ে হিয়ার কাছে আসে,হিয়ার মাথা তখন অবনত,কি রকম নতুন বউএর মতো লজ্জা লজ্জা পাচ্ছে হঠাৎই,তার উপর সন্ধির ওরকম মজার মজার কথা,ইসস,উজান যেভাবে তাকিয়ে আছে এবার না সত্যি কোনো অকাজ করে বসে
উজানঃ এতো লজ্জা পাবার কিছু নেই,কিছু করছি না আমি___তবে তুমি ভেবো না সেবারের মতো ফুলসজ্জা না করিয়ে পালিয়ে যাবো,আজ ধরলে কিন্তু আদর না করে ছাড়বো না,বুঝছো
হিয়াঃ যাহ অসভ্য একটা
উজান হিয়ার হাত টা ধরে হিয়াকে কাবাডের সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দেয়,তারপর আলতো করে কাবাড খুলতেই হিয়া তো পুরো থ,কাবাডের দুই-তৃতীয়াংশ শুধু শাড়ি আর শাড়ি দিয়ে ভর্তি,তার এক পাশে তাক করে রাখা কতো সুন্দর সুন্দর সব থ্রীপিচ,
হিয়াঃ এসব কি
উজানঃ আজ থেকে লাগেজ না তোমার সব জামাকাপড় আমার জামাকাপড় এর সাথে একসাথে থাকবে,,আর ওসব পুরোনো জামা এখন থেকে নট এলাও,,এখানে সব নতুন শাড়ি আছে সাথে নিউ সব কামিজ তুমি কাল থেকে ওসবই পড়বে ক্লিয়ার
হিয়াঃ না আমি এতো দামী জিনিস,,আপনি কেনো আমাকে না বলে এসবে এনেছেন,,আপনি প্লিজ রাগ করবেন না,এসবে সত্যি আমার অভ্যােস নেই
উজানঃ তোমার কি মনে হয় যেটাতে তুমি কমফোর্ট না আমি সেসব তোমাকে পড়তে বলবো,,এগুলো মোটেই কোনো দামী কিছু না,,তুমি যে ধরনের জামা পড়ো,,যে রকম সুতির শাড়ি পড়ো ঠিক সে-রকমই ড্রেস তোমার জন্য কিনে এনেছি,See
হিয়াঃ(শাড়ি গুলো জামা গুলো দেখে নিয়ে)হ্যা ঠিক আছে কিন্তু শুধু শুধু এতো খরচ আপনি কেনো করলেন,এমনিতেই তো আজ কতো খরচ হয়ে গেলো আপনাদের
উজানঃ চুপপপপ,,একটা কথা না,,আর খরচ হলো মানে টা কি,খরচ হবে তো কি হয়েছে,,আর আমার যা এখন থেকে তো সব তোমার,,এখন তুমি যদি চাও আমি ঔ আমার বেতন সব এসবে খরচ না করে বাহিরে ওসব বোতলটোতল গিলে খরচ করি তাহলে আই নেভার মাইন্ড ?
হিয়াঃ একদম বাজে কথা না হ্যা??এরপর থেকে পুরো স্যালারি আমার হাতে তুলে দিবেন আমি গুনে গুনে আপনাকে হিসাব করে আপনার হাতে মাসিক খরচ টা ধরিয়ে দেবো,ক্লিয়ার
উজানঃ ম্যাডামের কথা শুনো,এখন থেকে হিসাব চাইছে দেখছি(হিয়ার নাক টেনে)
উজান হালকা হাসি দিয়ে হিয়ার হাতে পাঁচ টা ব্যাগ তুলে দেয়
হিয়াঃ এখানে আবার এসব কি
উজানঃ দেখো
হিয়াঃ এই যা,,এতো সব দামী দামী ওরনামেন্টস,,আবার এগুলো কেনো,,আপনি কখনো দেখেছেন আমাকে এসব ভারী গহনা পড়ার
উজানঃ এখানে কোনো ভারী কিছু নেই,খুলে দেখো সব সিম্পিল
হিয়াঃ তারপরো
হিয়া সব ব্যাগ খুলে ওরনামেন্টস গুলো দেখতে শুরু করে,এবার যেই শেষ ব্যাগ টা খুলতে যাবে ওমনি হাত দিয়ে টানতেই বেড়িয়ে আসে এমন সব জিনিস,যেটা দেখার জন্য হিয়া উজান কেউ প্রস্তুত ছিলো না
হিয়াঃ ইয়েএএএএএএ এসব কি
উজানঃ না মানে,সন্ধি তখন মজা করে বললো এসব তোমার লাগতে পারে তাই আমি
হিয়াঃ মানে সিরিয়াসলি আপনি আমার জন্য দোকানে গিয়ে এসব কিনেছেন,,
উজানঃ হ্যা মানে না মানে,সন্ধি বললো তাই
হিয়াঃ যেমন আপু তেমনি আপনি,,আপু মজা করলো বলে আপনিও তার সাথে সায় দিয়ে এসব কিনতে গেলেন
উজানঃ এতে—এতো চোখ মুখ পাকানোর কি আছে,আমি তোমার হাসবেন্ড আমি কিনে আনবো না তো কে—-আনবে
হিয়াঃ আপনার লজ্জাশরমের ল টাও যে দিন দিন কোথায় জানি হারিয়ে যাচ্ছে এ ব্যাপারে কোনো ধারণা আছে আপনার
উজানঃ এই শুনো একদম এসব নিয়ে আমাকে কথা শুনাবে না,এমন ভান করছো যেনো তুমি নিজে গিয়ে এসব কিনো না
হিয়াঃ আরে,,আমি কেনা আপনি কেনা কি সেম নাকি,,আপনি আপনি জানেন আমার আমার ইয়ে কতো
উজানঃ কতো হবে,তোমাকে ফোন দিয়েছিলাম তুমি ধরো নি তাই আমি আইডিয়ার উপরে গিয়ে
উজানের কথায় হিয়া পুরো থ,উজান কতো অনায়াসে কথা গুলো বলে দিচ্ছে,কিচ্ছু কি আটকাচ্ছে না ওর মুখে,ধ্যাত এটা একটা খুব খুব খুব বাজে লোক,খুব অসভ্য লোক,উজানের সাথে এবার হিয়াও ওর লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে বসে??
হিয়াঃ (ওগুলো নিয়ে খুতে খুতে দেখে ফিসফিস করে)আইডিয়ার উপর এসব কেনা যায় কখনো,,একটাও তো দেখে মনে হচ্ছে না হবে আমার,ইসস কি রঙ এক একটার,ছিঃ,কি করে যে দোকানে গিয়ে বলেছে কে জানে,এসব না হলে না ঔ এসবের সবকটার জুস বানিয়ে আপনাকে খাওয়াবো,ভালোই লাগে না আমার ধুর??নির্লজ্জ পুরুষ,,বেহায়া লোক,,খুব খুব অসভ্য খুবববব
হিয়ার ওরকম খিটখিটানি মেজাজ দেখে উজান কপট রাগ করে হিয়ার হাত থেকে সব গুলো কেড়ে হাতে থাকা বাকি ব্যাগ গুলো কেড়ে নিয়ে কাবাডে ঢুকিয়ে রাখে,হিয়া তখনো বরফের মতো থ হয়ে দাঁড়িয়ে খিটমিট করতেই থাকে
উজানঃ সব কিছুতে পিটপিটানি স্বভাব??ইডিয়াট,,ওরকম ভ্যাবলার মতো দাঁড়িয়ে কি দেখছো,দেখি হাত টা দেও(ঝারি দিয়ে)
হিয়াঃ আবার কি
উজানঃ দিতে বলেছি,দেও
হিয়াঃ নিন,হাত পা মাথা মুন্ডু কি লাগবে নিয়ে নিন(বুম বুম বুম)
হিয়ার হাতে একটা মোটা খাম ধরিয়ে দিয়ে
উজানঃ তোমার মোহরানার টাকা আছে এখানে,এর আগে তো এসব কোনো দায়িত্ব আমি পালন করতে পারি নি,মার কাছে শুনলাম তোমার দেনমোহর এর টাকা এখনো দেওয়া হয় নি,ওটা নাকি স্বামী দেরকেই দিতে হয়,তাই আজ আমি আমার কর্তব্যটুকু পালন করলাম,,,ধরো❤️
হিয়াঃ আমি এতো টাকা দিয়ে কি করবো,আমার এসব লাগবে না,,আপনি বরং এটা আপনার কাছে রাখুন আমার কিছু লাগলে তো আমি বলেই নিতে পারবো
উজানঃ উমহুম,এটা তোমার অধিকার হিয়া,(হিয়াকে জড়িয়ে দু হাতে আগলে ধরে)অনেক দায়িত্বই হয়তো আমি তোমার প্রতি করতে পারি নি,এটুকু দায়িত্ব থেকে আমাকে বঞ্চিত করো না প্লিজ,,,,,তুমি চাইলে তোমার মামু তো আসছে তুমি ওনার হাতেও টাকা টা দিতে পারো কিন্তু আমি চাই না তুমি ওনাকে দেও কারণ তোমার মামি তো আবার তোমাকে সহ্য করতে পারে না,উনি এই টাকা টার ঠিক কি সদ ব্যবহার করবে উনিই জানেন
হিয়াঃ আমি যদি এই টাকা টা থেকে মামুকে কিছু টাকা দেই আপনি রাগ করবেন না তো,আসলে মামুর দোকান টা ধারে চলছে আমি দোকান টা ছাড়িয়ে মামুর নামে করে দিলে মামুর সংসার টা চালাতে একটু সুবিধে হতো আর কি
উজানঃ এটা তো তোমারই টাকা হিয়া,তোমার যা ইচ্ছে তুমি করো আমি কখনো তার হিসাব নিতে যাবো না
হিয়াঃ আপনি না সত্যি মানুষ টা অনেক ভালো,খুব খুব খুব ভালো,আমার ভালো বর টা,কতো কিউট?
রাত এখন ১০টা
অর্ধেক গেস্ট দের খাবারদাবার শেষ,গেস্ট বললে ভুল হবে ঔ শাহরিয়ার বাড়ির সব আত্মীয় দের নিয়ে যা হচ্ছে আর কি,সাথে উজানের অফিসের সবাই তো আছেই,হিয়ার মামা মামি রাও এসে পড়ে ঠিক সাড়ে আটটার দিকে,হিয়ার মামা তো হিয়াকে দেখে ভীষণ খুশি সত্যি যে তার ভাগ্নী টা এতো খুশিতে আছে এটাই তো তার অনেক পাওনা,এদিকে উজানের বড় ফুফু থেকে শুরু করে মেজ ফুফু সবাই হালকা ক্ষেপে আছে কারণ উজানের এসব আয়োজনের পেছনে তাদের কেও যে উজান মুখের উপর ঝামা নামক জিনিস টা ঘসে দিচ্ছে সে কথা তারা খুব ভালো ভালোই টের পাচ্ছে
রাত এখন ১২টা পার হবে হবে,সব গেস্ট রা বিদায় নিয়েছে,ফুফুরা বাড়িতেই আছে,পরশু ফিরবে,হিয়ার মামা মামিও থেকে যায় বাড়িতে,রাত বেশি হওয়াতে উজান আর ওদের ফিরতে দেয় না,এদিকে বিহান,তুষার,অভিকরা সবাই মিলে প্লান করে ওরা আজ ছাঁদের উপর সারারাত মজা করবে ঔ নিয়ে চলছে ওদের ডিসকাস,সন্ধি সব কাজ খাওয়া দাওয়া, ফটোশুট থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ সেড়ে হিয়াকে দিয়ে যায় ওদের রুমে,আর রুমে এসে হিয়া তো পুরো হতবাক,এই ক ঘন্টার মধ্যে রুম টা এতো সুন্দর করে কারা সাজালো,পুরো রুমে গোলাপ আর রজনীগন্ধার ছড়াছড়ি,চারপাশ মো মো করছে গোলাপ আর রজনীগন্ধার মিষ্টি সুগন্ধে,সাথে এক পাশে জ্বলছে কিছু দামী মোমবাতি,নিচের দিকে উড়ে চলছে কিছু লাভ শেপ বেলুন,দেওয়ালটাও আবার বাচ্চাদের মতো বেলুন দিয়ে সাজিয়ে রাখা,
হিয়াঃ কি করেছে দেখো আমার বিছানা টার অবস্থা,উনি এসে দেখলে কিন্তু খুব বকা দিয়ে দেবে জিনি
জিনিয়াঃ বকা না হিয়াদী তোমার বর-ই বলেছে রুম টাকে ঔ ফুল,বেলুন,ক্যান্ডেল দিয়ে সাজিয়ে দিতে বুঝলা
হিয়াঃ উনি এসব করতে বলেছে,,কি যে হয়েছে ওনার আজকাল,,ছোট বোনকেও এসব করতে বলছে সত্যি
সন্ধিঃ এতে এতো লজ্জা পাবার কি আছে শুনি,ফুলসজ্জা বলে কথা,ফুল দিয়ে ঘর সাজবে না তো কি তোমার বরের ঔ অফিসের সব ফাইল দিয়ে রুম সাজাবো বুঝি
হিয়াঃ আরে না আমি তা বলছি না,আমি তো শুধু ভাবছি
তুষারঃ আ হা হিয়া এখন কিছু ভাবাভাবির সময় নেই,,দেখি দেখি সন্ধি হিয়াকে বসিয়ে দেও দেখি,কাজি সাহেব আসছে এখন বিয়ে পড়ানো শুরু হবে কুইক কুইক
হিয়াঃ কাজি সাহেব আসছে মানে,,বিয়ে!!কার বিয়ে!!কীসের বিয়ে!!
সন্ধিঃ আরেএএ আসল বিয়ে নাকি,নকল নকল বিয়ে
হিয়াঃ নকল বিয়ে ওটা আবার কি জিনিস____কি যে হচ্ছে কিছুই তো বুঝতে পারছি না?
জিনিঃ তুমি একটু স্থির হয়ে বসো,সব বুঝতে পারবে
জিনি হিয়াকে বিছানায় বসিয়ে দিলে অভিক আর বিহান মিলে উজান কে কোলে করে তুলে এনে হই হই করতে করতে হিয়ার পাশে বসিয়ে দেয়
উজানঃ কি যে করছিস তোরা,,মা কিন্তু এবার ভীষণ বকবে তোদের,,বিহানননন
বিহানঃ আজ আমি তোমার কোনো কথা শুনছি না ভাইয়া,,,নেও নেও দেখি বসো তো ফাস্ট
উজান হিয়া পাশাপাশি বসলে তুষার কাজি হিসাবে সাব্বির কে ডেকে আনে,আর সাব্বির টুপিটুপি মাথায় দিয়ে কাজি বেশে হাতে একটা কাগজ নিয়ে উজান হিয়ার সামনে বসে পড়ে
সাব্বিরঃ এখন বিয়ে পড়া হবে,,বাচ্চারা তোমারা সবাই তৈরি তো
সন্ধিঃ জ্বী জনাব আমরা তৈরি
সাব্বিরঃ তো ছেলে পক্ষের কে আছে সামনে আসুন
অভিকঃ আমি আমি আমি,আমি আর জিনি আর বিহান আছি ছেলে পক্ষে
সাব্বিরঃ বহুত খুব,,,নিন এখন তৈরি হয়ে নিন(মনে মনে কিসব দোয়া পড়ে)এই যে শাহরিয়ার ইবনে উজান আপনি কি আহমেদ সাহেব এর একমাত্র সুযোগ্য কন্যা হিয়া মুনতাসীর আহমেদ কে বিয়ে করতে রাজি,রাজি থাকলে বলুন কবুল
সাব্বিরের কথায় উজান হিয়া দুজনে হেঁসে দেয়
সাব্বিরঃ সাইলেন্স,নো টকিং ওনলি কবুল সেয়িং
হিয়াঃ এ যা কাজি সাহেব তো ইংলিশ ও বলতে পারে দেখছি?
উজানঃ হ্যা ইংলিশ এর যা ছিঁড়ি☺️
সন্ধিঃ আ হা বল না কবুল?
উজানঃ বলছি,কি জানি বলবো
সাব্বিরঃ আপনি কি আহমেদ সাহেব এর একমাত্র সুযোগ্য কন্যা হিয়া মুনতাসীর আহমেদ কে বিয়ে করতে রাজি,রাজি থাকলে বলুন কবুল
উজানঃ কবুল,কবুল,কবুল
সাব্বিরঃ আলহামদুলিল্লাহ,,,,,নিন এই কাগজে একটা সাইন করে দিন
উজানঃ কাগজো এনেছিস,ওহ গড,,তোরা সত্যি এক একটা
সাব্বিরঃ নিন এবার কনে পক্ষের লোক সামনে আসুন
সন্ধিঃ আমি কনে পক্ষে আছি,বলুন কি করতে হবে হুজুর
সাব্বিরঃ আপাতত আপনি দাঁড়িয়ে থাকুন,,,,এই যে মা শুনো তুমি কি শাহরিয়ার সাহেব এর বড় পুএ শাহরিয়ার ইবনে উজান কে নিজের স্বামী হিসাবে গ্রহন করতে রাজি,রাজি থাকলে বলো কবুল
হিয়া কবুল বলবে কি হিয়া তো ওখানেই হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাচ্ছে
হিয়াঃ রাজি,রাজি,কবুল কবুল কবুল কবুল কবুল কবুল
সন্ধিঃ থাক মা আমার,এতো বলতে হবে না ঔ একবার বললেও সে তোমার স্বামী একশবার বললেও উনিই তোমার স্বামী
সাব্বিরঃ আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ বিবাহ সুসম্পর্ন হলো,,কোথায় বিয়ান সাহেবারা মিষ্টি মুখ করান বরবউকে
তুষারঃ এই যে আমি মিষ্টি নিয়ে হাজির জনাব
তুষার মিষ্টি নিয়ে এক এক করে সবার মুখে মিষ্টি ঢুকিয়ে দেয়
সন্ধিঃ নিন এখন দুজনে বিছানা থেকে নেমে আসুন কুইক
সন্ধির কথায় দুজনে বিছানা থেকে নেমে আসে
সন্ধিঃ নিন এবার সালাম করুন,বড়দের সালাম করতে হয় ভুলে গেছো সেই রীতি হু,,আমি থেকে শুরু করে সবাই কে সালাম করবা কুইক
উজান হিয়া একটা অমায়িক হাসি দিয়ে সন্ধি কে সালাম করতে গেলে সন্ধি থামিয়ে দেয়
সন্ধিঃ এই এই এই পা ধরে সালাম করতে নেই,গোনাহ হয় জানো না___হয়েছে হয়েছে,,অনেক সুখী হও বাছাধনেরা আমার,সামনের বছর একটা ছোট্ট টোনা নিয়ে মিষ্টি মুখ করে দিও কেমন☺️
উজানঃ তোরা না সত্যি
তিশাঃ এই এ বার এ বার এ বার আমাকে সালাম কর
উজান হিয়া তিশা কে সালাম করলে
তিশাঃ থাক থাক থাক,শত পুএের জননী হও মা,শত পুএের জননী হও?
জিনিয়াঃ এই এই পুএ না পুএ না বলো কন্যা কন্যা,এমনিতে বংশে ছেলে দিয়ে ভর্তি এবার আরো ছেলে হলে নির্ঘাত কেস হয়ে যাবে?
তিশাঃ ওকে ওকে শত কন্যার জননী হও মা
উজানঃ হয়েছে তোদের এবার যাবি কি রুম থেকে
তুষারঃ ইসস তর সইছে না না আর
সন্ধিঃ যাবো তো আগে গেট ধরার সালামি দে,,
উজানঃ হোয়াট সালামি,,গেট ধরা আসলো কোথা থেকে এখানে,,যা তো সন্ধি বিরক্ত করিস না
সন্ধিঃ এ বি-রক্ত করিস না,,আগে আমাদের ৮জনকে ১৬হাজার টাকা দিবি তবেই এই রুম থেকে বের হবো,,এখন তুই ভাব তুই কি করবি
উজানঃ দিস ইস নট ফেয়ার সন্ধি,প্লিজ বের হ
??
সন্ধিঃ আগে টাকা তারপর বাদ বাকি লেনদেন,তুই টাকা দিবি আমরা তোকে আর হিয়াকে প্রাইভেসি দেবো সোজা হিসাব
সন্ধিদের জোড়াজুড়ি তে উজান ইনিয়েবিনিয়ে ৮হাজার ধরিয়ে দেয় হাতে,,
উজানঃ খুশি এবার,প্লিজ আর জ্বালাবি না রাতে
সন্ধিঃ গাইস চলে এসো,আমরা যুদ্ধে জয়ী হতে পেরেছি নাও ইনজয়
কথাটা বলেই সবাই রুম থেকে বের হয়ে যায়,উজান যেই রুমের দরজা লাগাতে যাবে ওমনি সন্ধি ফিরে এসে
উজানঃ আবার কি?
সন্ধিঃ বালিশের নিচে প্যাকেট রাখা আছে,ওটা খুঁজতে গিয়ে আবার সময় নষ্ট করিস না?
উজানঃ যাবি কি তুই,ফাজিল একটা
সন্ধি মুখ টিপে হেঁসে দিয়ে চলে যায়,উজান গেট লাগিয়ে ভেতরে আসতেই খেয়াল করে হিয়া রুমে নেই,বারান্দায়,উজান আলতো করে বারান্দায় হিয়ার পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে হিয়াকে খুব যত্ন ভরে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে
হিয়াঃ ধন্যবাদ আমাকে এতো টা সম্মান দেবার জন্য আজ
উজানঃ এটা তোমার অনেক আগেই প্রাপ্য ছিল আমি দিতে দেড়ি করে ফেলেছি,Sorry
হিয়াঃ আমাকে একটা কথা দিবেন
উজানঃ বলো
হিয়াঃ আমি কখনো হারিয়ে গেলে আপনি নিজেকে কখনো কষ্ট দিবেন না বলুন,এমন কিছু করবেন না যেটাতে আপনার ক্ষতি হয়,আপনি কষ্ট পান
উজানঃ(হিয়াকে সামনে ঘুড়িয়ে এনে)হঠাৎ এরকম করে কথা বলছো কেনো তুমি,কোথায় হারিয়ে যাবে,আমি তোমাকে কোথাও হারিয়ে যেতে দেবো না,তুমি আমার হিয়া তুমি আমার কাছেই থাকবা,কেউ তোমাকে আমার থেকে আলাদা করতে পারবে না কেউ না (গম্ভীর কন্ঠে কাঠ কাঠ গলাতে)????
হিয়াঃ আরে আপনি তো রাগ করছেন,আমি তো শুধু আপনাকে কথার কথা বললাম
উজানঃ না তুমি কথার কথাও বলবে না,কখনো না,আর কখনো হারিয়ে যাবার কথা মুখে আনছো তো আমি কিন্তু
হিয়াঃ আ হা,আনবো না ঠিক আছে,খুশি
কথাটা বলেই হিয়া পেছন ফিরে বারান্দার গ্রীল ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে,আকাশ টা ভীষণ পরিষ্কার আজ,তারা গুলো খুব সুন্দর করেই মিটমিট করে জ্বলছে আর নিভছে,চাঁদ টা পূর্ণিমার আলোতে নিজেকে আবৃত না করলেও তার জোৎস্না মেলতে কিন্তু একটুকু কৃপণতা করে নি আজ
উজানঃ হিয়া
হিয়াঃ হুম
উজানঃ আজ আমি মন থেকে তোমাকে, তোমার সব কিছু কে গ্রহন করতে চাই,তুমি কি সেই অধিকার দেবে আমাকে
হিয়াঃ (পেছন ফিরে উজানের বুকে মুখ লুকিয়ে মাথা নাড়ায় মানে সে দেবে)এতে এতো বলার কি আছে,,আমার যা সব কিছু তো আপনারই এখন থেকে,,দু দু বার বিয়ে হলো আজ আমাদের ভুলে গেলেন,এখন তো শুধু অধিকার না অধিকারের উপর অধিকার হয়ে গেলো,হে হে
উজানঃ পাগলি!!
কিছুক্ষণ বারান্দায় প্রেমবিলাশ করে উজান হিয়াকে কোলে করে তুলে নিয়ে বিছানায় গিয়ে শুইয়ে দেয়,হিয়ার এ সময় টা নিজেকে খুব অস্থির লাগতে শুরু করে,তখন তো কতো সহজে বলে দিলো অধিকারের কথা টা আর এখন এতো লজ্জা কেনো আসছে হিয়ার,উজান গিয়ে বারান্দায় গেট লাগিয়ে ওর পাঞ্জাবি টা খুলে ফেলতেই হিয়া বোকার মতো তাকিয়ে থাকে উজানের দিকে,উজানের চোখে চোখ পড়তেই হিয়া ওর চোখ টা নামিয়ে নেয়,উজান হালকা হাসি দিয়ে হিয়ার পাশে গিয়ে বসে আলতো করে হিয়াকে শুইয়ে দিয়ে হিয়ার গা থেকে এক এক করে সব অর্নামেন্টস খুলতে শুরু করে,,এই ব্যাপারটা হিয়ার বেশ মজা লাগছে,,উজান কি সুন্দর ওরনানেন্টস খুলতে এক্সপার্ট,,উজান হিয়াকে বালিশে শুইয়ে দিয়ে হিয়ায় পাশে কাত হয়ে শোয়
উজানঃ দেখি এবার চোখ বন্ধ করে ঘুমায় পড়ো তো(বুম বুম বুম)
হিয়া এমন অনাকাঙ্ক্ষিত কথা শুনে চোখ বন্ধ করার বদলে আরো গোলগোল চোখে তাকিয়ে উঠে অবাক চোখে
হিয়াঃ ??
উজানঃ চোখ বন্ধ করতে বলেছি চোখ এরকম মেলে ধরতে বলি নি
হিয়াঃ ইয়ে মানে আমি এখন ঘুমোবো কেনো,,আপ আপ আপনি যে তখন বললেন আমাকে মন থেকে আজ আপনি গ্রহন করতে চান তাহলে
উজানঃ শুধু শরীর স্পর্শ করলেই কি তাকে মন থেকে গ্রহন করা বলে হিয়া
হিয়াঃ বলে না
উজানঃ (হালকা হেঁসে দিয়ে) না বলে না
হিয়াঃ তাহলে
উজানঃ বড় হও নিজেই বুঝতে পারবা
হিয়াঃ তার মানে কি দাঁড়ালো বলুন তো আপনি ঔ ফুফুদের কথা শুনেই আমাকে
উজানঃ না
হিয়াঃ তাহলে
উজানঃ আমার ইচ্ছে ছিলো তোমাকে সবার সামনে এভাবে স্বসম্মানে ঘরে নিয়ে আসার কিন্তু সেটা এখন না অনেক পড়ে
হিয়াঃ পড়ে কেনো
উজানঃ (হিয়ার আঙ্গুলের ভাঁজে আঙ্গুল গুঁজে দিয়ে) তোমার বয়স কতো জানো
হিয়াঃ এখানে আবার আমার বয়স কোথা থেকে এলো?
উজানঃ তুমি এখনো এ্যাইটটিন প্লাস হও নি সেটা কি তুমি জানো
হিয়াঃ ???
উজানঃ তোমার মামু আর মামি সেদিন আমার মাকে মিথ্যাে বলেছিলো ইভেন তোমার মামি কাজি কে পর্যন্ত ঘুষ দিয়ে নকল বার্থ সার্টিফিকেট ধরিয়ে আমাদের বিয়ে টাকে বৈধ বলে চালিয়ে দিয়েছিলো
হিয়াঃ ???(ওরে ব্যাছ এই লোক কে তো পুরো সিআইডি তে জয়েন করা দরকার ছিলো,,আমার জানা মতে উনি ঔ একবারই আমার গ্রামে গিয়েছিলেন আর মামু মামি তো আজকে ছাড়া এখানে আর আসে নি তাহলে উনি ঔ এক রাতেই সব জেনে নিলো কি করে,,,,,বুঝেছি এরপর পুরো লাইফ আমার কিরকম আতঙ্কে কাটবে সব বুঝেছি আমি)
উজানঃ সামনের মার্চে তোমার ১৮পূর্ন হবে সেদিন আমি আমার এই পিচ্চি টাকে স্পর্শ করবো তার আগে না,,এজন্য তুমি যে সোফাতে ঘুমোতে এ নিয়ে আমি তোমাকে কখনো কোনো জোড়াজুড়ি করি নি,,,কোনো ভাবে তোমার উপর দূর্বল হতে চাই নি,,,কিন্তু ফুফুরা ব্যাপারটাকে এভাবে টেনে আনবে আমি সত্যি বুঝতে পারি নি Sorry
হিয়াঃ এই এই এই মার্চ আসতে তো আরো পাঁচ মাস তারমানে ফুলসজ্জা হবে আরে পাঁচ মাস পর,,,আরো পাঁচ মাস এখন আমাকে এই আপনার আদরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে
উজানঃ খুব শখ না আমার আদর নেবার,,পাকনি
বলেই উজান হিয়াকে ওর বুকে আগলে ধরে,দুজনের গায়ে কম্বল পেচিয়ে নিয়ে,হিয়ার চুলে বিলি কাটতে শুরু করে
হিয়াঃ একটা কথা জিজ্ঞেস করি
উজানঃ বলো
হিয়াঃ যদি কখনো নীলিমা আপু ফিরে আসে সেদিন কি করবেন আপনি!!
হিয়ার কথায় উজান নিশ্চুপ,,উজানের এই নীরবতা মুহুর্তেই হিয়ার মনে কান্নার দলা পাকিয়ে দেয়,,কই এতোদিন তো নীলির জন্য হিয়া কখনো এতো কষ্ট পায় নি এক বিন্দুও না তাহলে আজ কেনো কষ্ট হচ্ছে ওর,,হিয়া উঠে বসে কম্বল টা বুকের কাছে পেচিয়ে ধরে আর একটু হলে হিয়ার নিষ্পাপ দুটো চোখ দিয়ে এই বুঝি জল গড়িয়ে পড়বে,,
হিয়াঃ নিশ্চয় সেদিন ছুঁড়ে ফেলে দিবেন আমায়,,স্বাভাবিক,,ভয় নেই পরগাছা হয়ে লেপ্টে থাকবো না আপনার জীবনে, পাড়ি দেবো না হয় দূর কোনো দেশে
উজান এবার উঠে বসে হিয়ার গালে ঠাস করে একটা চড় বসাতে গিয়েও হিয়ার মায়াভরা চোখ দুটো দেখে থেমে যায়,হিয়াকে শক্ত করে আগলে ধরে তার প্রশ্বস্ত বুকে
উজানঃ তুমি আমাকে এতো টা স্বার্থপর ভাবো হিয়া______(একটা দীর্ঘশ্বাস টেনে)সত্যি বলতে আমি আর চাই না নীলিমা আর কখনো আমার জীবনে ফিরে আসুক,,এতে তিনটে জীবন বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়বে____আর যদি বলো আমি কি করবো তাহলে মনে রেখো হিয়া যখন তোমাকে মন থেকে গ্রহন করেছি আমি তখন এই উজান শুধু তোমার আর এই তুমি হিয়া শুধু তার উজানের,,,,❤️
হিয়াঃ Sorry আমার কথায় আপনি কষ্ট পাবেন না প্লিজ
উজানঃ আমি কষ্ট পাই নি হিয়া___তুমি জানো না নীলিমা যাবার পর আমার ঠিক কি হয়েছিলো পুরো দেড় মাস নিজেকে শেষ করতে গিয়ে ICU তে ভর্তি ছিলাম আমি,,ICU থেকে ফিরেও শুধু এই নিশ্বাস টুকু নিয়ে বেঁচে ছিলাম কিন্তু ওটাকে ঠিক বেঁচে থাকা বলতো না___তারপর সেই মেঘলা আকাশে রামধনু হয়ে একদিন দেখা দিলে তুমি___আমি তোমার সামনে গম্ভীর থাকলেও তোমার অজান্তে যে কতো টা হেঁসেছি তোমার কান্ডে আমি নিজেও জানি না___
হিয়াঃ ??
উজানঃ অফিসে গিয়েও মিটিং এ বসে কখনো পুরো মিটিং জুড়ে তোমার কথা ভেবেছি,,কখনো সারারাত তোমার ঘুমম্ত মুখ টার দিকে চেয়ে থেকেছি,আবীরের সাথে তোমাকে দেখে নিজেকে কতো আঘাত করেছি তুমি কখনো তা বুঝতে পারো নি❤️❤️
হিয়াঃ ??
উজানঃ আমিই অবশ্য তা বুঝতে দেই নি,,বুঝে গেলে যদি বেঁচে থাকার এই Oxygen টা হারিয়ে যেতো,,ভয় হতো ভালোবাসি কথা টা বলতে__নীলির সাথে আট বছরের দীর্ঘ সম্পর্কে ছিলাম আমি হিয়া,,, ভালোবাসি নীলিকে এভাবে ঠকাবার পরো ওকে ঘৃনা করতে পারি নি আজো তবে নীলি শুধু আমার অতীত হিয়া শুধু অতীত__আমি তোমাকে নিয়ে বাঁচতে চাই হিয়া__তুমি আজ থেকে আমাকে কথা দেও আর কখনো আমাদের মাঝে নীলি কে টানবে না
হিয়াঃ (মুখ তুলে)ইয়ে মানে আমার না ঔ অভ্যােস হয়ে গিয়েছে তাই ঔ একটু
উজানঃ তুমি বোধহয় পৃথিবীর একমাত্র বউ যে নিজের হাসবেন্ড কে অন্যের সাথে ভাগ করে দেও জানো
হিয়াঃ বালাইষাট ভাগ কেনো করতে যাবো,,আজ থেকে আপনার গোটা টাই শুধু আমার বুঝলেন
উজানঃ পাকনি(হিয়ার কপালে স্নেহের পরশ এঁকে)
হিয়াঃ এই নিয়ে আপনি আমাকে আজ প্রথম দু বার চুমু দিলেন কিন্তু
উজানঃ কে বলেছে আজ আমি প্রথম তোমাকে দুবার স্পর্শ করেছি
হিয়াঃ মানে??
উজানঃ তুমি ঘুমিয়ে থাকলে___আমাকে এতোটাও ডিসেন্ট ভাবার দরকার নেই এতো টাও ভালো আমি না
হিয়াঃ তারমানে আমি ঘুমিয়ে গেলে আপনি আমার মুখে(হিয়া আর বলতে পারে না তার আগে চোখ মুখ খিচে লজ্জায় মুখ লুকিয়ে নেয় উজানের বুকে)
উজানঃ ঘুমোও এখন ফাস্ট,,আর হ্যা একটা কথা এতোদিন সব কিছু যেভাবে চলে এসেছে কাল থেকে আবার সব সেভাবেই কন্টিনিউ হবে,,তবে আমি ঔ মাঝেমধ্যে তোমাকে ইউ নো
হিয়াঃ অসভ্য লোক একটা ধ্যাত??