Senior life partner পর্ব ৪৪

0
1876

#Senior_life_partner
পর্ব——-44
Afrin Ayoni

?Dear Princess?

“”বলবো না আমার হতে!তবে জীবনসঙ্গী বেছে নিতে ভুল করবেন না।আমি স্বাদ ভাইয়া কিংবা শাহেদ ভাইয়া কারো নাম নিবো না।যে আপনার যোগ্য তাকেই আপনি নিজের জন্য বেছে নিবেন।

#Goodbye & #Take_care””

রিদীমা বসে আছে নিজের রুমের বারান্দায়। পাশ থেকে বেলী ফুলের তীব্র গন্ধ নাকে আসছে।এখন সন্ধ্যার সময়। স্বাদ আর তার মা বাড়িতে চলে যায় দুপুরেই। তারপর বিকেলের দিকে ইসুয়ার বাড়ির লোকেরা ও বিদায় নিলো।শাহেদ আর শিলা যেতে নিলেই তাদের আটকে দিলেন আফজাল সাহেব। আজ থেকে তারা দুই ভাইবোন মায়ের কাছেই থাকবে।আর কতকাল ছন্নছাড়া জীবন কাটাবে??

বাধ্য হয়ে রয়ে গেল দুজনেই।আকাশ ও খুশি।সুরাইয়া খানের আনন্দের শেষ নেই।তবে সিনথিয়ার জন্য তিনি রবিনের কাছে তদারকি করতে গেলে রবিন সাফ সাফ বলে দিলো,,,,

রবিন– যথোপযুক্ত সাজা পাওয়ার পর সঠিক টাইমে ফিরে আসবে সিনথিয়া।

এসব ভাবতে ভাবতেই রিদীমা কল করলো কাউকে,,,,

রিদীমা– আমার নতুন পি.এ র ব্যবস্থা করেছো??

ম্যাম!!খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা হয়ে যাবে।

রিদীমা রেগে– Shut up ….?? কবে হবে?? আমি দুদিনের মধ্যে ফিরছি।জলদি আমার জন্য পি.এ র ব্যবস্থা করো।

Okkk ম্যাম!!

রিদীমা কলটা রাখতেই কেউ দরজায় নক করলো।

শাহেদ– আসবো??

রিদীমা পিছু ফিরে– বারান্দায় চলে আয়।

শাহেদ রিদীমার কথা অনুযায়ী বারান্দায় এসে রিদীমার পাশেই চেয়ার পেতে বসে।

শাহেদ– কি অবস্থা প্রিয়দর্শীনি??

রিদীমা– এই তো। তা কি মনে করে? আমার রুম চিনলি কি করে??

শাহেদ– ইসুয়া দেখিয়ে দিল।

রিদীমা– ওহ্।??

শাহেদ– এখন শরীর কেমন আছে??

রিদীমা– মোটামুটি।

শাহেদ– স্বাদ কল করেছে তোর খবর জানতে।

রিদীমা– আমাকেও কল করলে পারতো।

শাহেদ– আন্টি আর স্বাদ লন্ডন ফিরছে কাল।

রিদীমা– তাই নাকি? আমি ও ব্যাক করছি দুদিন পর।

শাহেদ– এই অবস্থায়??

রিদীমা– কেন?? আমার কি কোনো গুরুতর রোগ হয়েছে যে বেরুতে পারবো না??

শাহেদ– তা না,এমনিতেই বলছিলাম।তুই আর চেন্জ হলি না।

রিদীমা– অনেক কষ্টে পাথর হয়েছি,,,, মাটির মত গলতে চাই না আর।

শাহেদ– ????

রিদীমা– ফুফুকে দেখে রাখিস।বাড়ির সবাই তো আছেই।

শাহেদ– সত্যিই আবার ছেড়ে যাবি??

রিদীমা– পিছুটান নেই যে।

শাহেদ– এই বাড়ির প্রতিটা মানুষের তোকে প্রয়োজন।

রিদীমা– স্কুলের চাকুরীটা আর করবি??

শাহেদ– না,,,ভাবছি ছেড়ে দিব।

রিদীমা– সে তুই স্কুল ছেড়ে দিতেই পারিস মাস্টার! সেই চঞ্চল কিশোরীর মন খারাপের কারণ উদঘাটন করবি না??

শাহেদ– লন্ডনে থেকেও দেশের প্রতিটা মানুষের পেছনে গোয়েন্দা লাগিয়ে রেখেছিস?? পারিস ও বটে।

রিদীমা– মেয়েটা কিন্তু দারুণ।

শাহেদ– বড্ড ছোট।??

রিদীমা– সময় নে। চোখে চোখে রাখ। যেতে দিস না আড়ালে।

শাহেদ– ততদিনে বুড়ো হয়ে যাবো যে।

রিদীমা– ছোট্ট নিশুয়া একটা বুড়ো বর পাবে।

শাহেদ– মাথায় একটু প্রবলেম ও আছে।??

রিদীমা হাসতে থাকে শাহেদের কথায়। শাহেদও তাল মিলালো রিদীমার সঙ্গে।

শিলা ড্রয়িং রুমে বসে আছে টিভি চালিয়ে। রবিন পিছন থেকে এসে মাথায় চাঁটি মারে।

শিলা— ওপপপ ভাইয়া।

রবিন– কি??

শিলা– মারলে কেন??

রবিন– কখন মারলাম??

শিলা– এইতো এখনি।

রবিন– মিথ্যাবাদী কোথাকার।

শিলা কোমড়ে হাত গুজে– কি বললে????

রবিন দাঁত কেলিয়ে– ফুফি ওরে বের কর বাড়ি থেকে।দেখ কোমড় বেঁধে ঝগড়া করতে নামছে।??

দিতী বেগম এগিয়ে আসতে আসতে– আমি স্পষ্ট দেখেছি তুই মেয়েটাকে জ্বালাচ্ছিস।

শিলা মুখ ভেঙ্গচিয়ে– দেখেছো। কার দোষ??

রবিন– মা তুমি always আমার বিপক্ষে থাকো।

হঠাৎ ড্রয়িং রুমে ইসুয়ার আগমন।সবাই ইসুয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।ইসুয়া দিতী বেগমের দিকে তাকিয়ে,,,

ইসুয়া– আম্মু আমার কিছু কথা ছিলো আপনার সঙ্গে।

দিতী বেগম– বল।

ইসুয়া– আমি কটা দিনের জন্য বাড়িতে যেতে চাই।

দিতী বেগম কিছু বলতে যাবে তার আগেই রবিন তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে– No never….

ইসুয়া ভ্রু কুঁচকে– কেন??

দিতী বেগম রবিনকে ধমকে উঠলেন– তুই চুপ কর।

রবিন– ???

দিতী বেগম– কাল ই যেতে হবে?

ইসুয়া– বিয়ে হওয়ার পর তো আর একবারের জন্যও ঐ বাড়িতে যাইনি তাই মনটা কেমন করছে??

রবিন– আচ্ছা, কাল সকালে আমি দিয়ে আসবো আর সন্ধ্যায় আবার আমি নিয়ে আসবো।

ইসুয়া– আপনি হয়তো শোনেননি,,আমি বলেছি যে কটা দিনের জন্য আমি যাব।

রবিন– একদিনের জন্যে হলে যাও… নয়তো যাওয়ার দরকার নেই।

দিতী বেগম– কেন? ও গিয়ে কিছুদিন থেকে আসুক বাপের বাড়িতে। তোর প্রবলেম কী??

রবিন ইসুয়ার দিকে তাকিয়ে– তুমি যাচ্ছো না মানে যাচ্ছো না। আমার পারমিশন নেই।???

কথাটা বলে রবিন নিজের রুমে চলে যায়। এদিকে ইসুয়া মন খারাপ করে ছাদে চলে যায়। ড্রয়িং রুমে বেকুব হয়ে বসে থাকে শিলা আর দিতী বেগম।

সুরাইয়া খান রান্নাঘর থেকে সব শুনেন।তিনি রান্নাটা শেষ করে রবিনকে বুঝিয়ে বলবেন মনে মনে ঠিক করেন।

…………………………………………………….

স্বাদ লপটপে কাজ করতে করতে রেহানা বেগমের উদ্দেশ্যে বললো,,,,

স্বাদ– মা তোমার সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে গুছিয়ে নিয়েছো তো??

রেহানা বেগম– সবই নিয়েছি।শুধু দুটো জিনিস নেওয়ার মত বাকি ।

স্বাদ ভ্রু উচিয়ে– কি??

রেহানা বেগম– মনের মত একটা বউমা আর আমার মনটা। কিছুতেই যেতে ইচ্ছে করছে না।

স্বাদ– যত সব বাজে কথা। তোমাকে তো বললাম থেকে যাও দেশে।

রেহানা বেগম– একা ????

স্বাদ– তো তোমার জন্য আমি পার্টনার আনবো কোত্থেকে??

রেহানা বেগম– বিয়ে করে নে।

স্বাদ– তোমার এই ত্যানা প্যাচানো কবে বন্ধ হবে বলতো??

রেহানা বেগম– রিদীমা মেয়েটা মনের মত ছিল।ছেলের বউমা হিসেবে পারফেক্ট।

স্বাদ– আবারো শুরু করলা??

রেহানা বেগম– আচ্ছা আচ্ছা আর বলবো না। তুই সারাজীবন সন্ন্যাসী ই থাক।আমার কী??

স্বাদ– ???? সব ভালো মত প্যাক করে নাও।

রেহানা বেগম– নিয়েছি।

স্বাদ– Good………

রেহানা বেগম– খেতে আয়।খাবার দিচ্ছি টেবিলে।

স্বাদ– একটু কাজটা সেরে নেই।

স্বাদের কথায় তেতে উঠলেন রেহানা বেগম। হাতে থাকা তরকারির চামচ টা দিয়ে ঝনঝন শব্দ তুললেন টেবিলে।

স্বাদ– What happened মা??

রেহানা বেগম– এভাবে অপেক্ষা করতে পারবো না রোজ রোজ তোর জন্য? আমার ঠেকা পড়েনি এত।??

স্বাদ বেচারা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। মায়ের এমন অহেতুক রাগের মানেটা তার স্পষ্টই জানা আছে।

রবিন রুমের লাইট অফ করে মাথায় হাত রেখে চোখ বন্ধ করে আছে।রবিনের প্রচন্ড রাগ হলে যা সে প্রতিনিয়তই করে থাকে।দরজা খোলার আওয়াজ পেতেই পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে রবিন।

লাইট জ্বলে উঠতেই প্রচন্ড জোরে বলে উঠলো রবিন– আমার চোখে আলো লাগছে ।

সুরাইয়া খান– আমি ইসুয়া নই ।

রবিন সুরাইয়া খানের কথা শুনে চোখ খুলে বিছানায় বসলো।সুরাইয়া খান এগিয়ে আসে।রবিনের পাশে বসে।

সুরাইয়া খান রবিনের মাথায় হাত দিয়ে– কি হয়েছে??

রবিন– কিছু না তো।

সুরাইয়া খান– কিছু না হলে মেয়েটাকে এভাবে কষ্ট দিলি কেন?

রবিন– আমাকে জিজ্ঞেস করেছে একবার ও যে বাড়িতে যাবে কিনা????

সুরাইয়া খান– সামান্য এটুকুর জন্য এত বাজে ব্যবহার? তাহলে বুঝ ওর ভিতরে কি চলছে??

রবিন– মানে??

সুরাইয়া খান– তুই ও তো মেয়েটার কাছ থেকে অনেক কিছু লুকিয়ে গেছিস।

রবিন মলিন মুখে তাকিয়ে রইলো ফুফির দিকে। সত্যিই তো!! রবিন তো আরো বড় অপরাধ করেছে।

সুরাইয়া খান আবারো বললেন– মেয়েটাকে কটা দিনের জন্য নিজের উপর ছেড়ে দে।দেখবি ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাচ্ছে।

রবিন– ওকে ছাড়া থাকা সম্ভব না।

সুরাইয়া খান উঠে দাঁড়ায় আর হেসে বললেন– তাহলে অভিমান ভাঙাতে পারিস কিনা দেখ।

রবিন– ??

সুরাইয়া খান চলে গেলেন।রবিনের মাথায় চলতে থাকে ভিন্ন ধারার খেলা।রাতে সবাই ডিনার করে যে যার রুমে ফিরে।ইসুয়া আজ ইচ্ছে করেই দেরিতে আসে রুমে।সবাই চলে যাওয়ার পর ও ইসুয়া প্রায় ঘন্টাখানেকের মত বসে ছিলো ড্রয়িং রুমের সোফায়।

কিন্তু তারপর রহিমার জন্য সে ড্রয়িং রুমেও বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারলো না। রহিমার অহেতুক প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে গেছে ঐ এক ঘন্টায়।

ইসুয়া রুমে ঢুকতেই রুমের লাইট বন্ধ হয়ে গেল।অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে বিছানা খুঁজতে লাগলো ইসুয়া। কিন্তু এক সেকেন্ড পড়েই সে বুঝতে পারলো সে হাওয়ায় ভাসছে।যদিও সে বুঝতে পেরেছে রবিন ই তাকে কোলে তুলে নিয়েছে।তারপর ও সামান্যতম জোড়াজুড়ি করলো না সে।এই যেন নীরব অভিমান।

রবিন ইসুয়ার কোনো রিয়েকশ না দেখে অবাক হল। ইসুয়ার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো,,,

রবিন– এই অন্ধকারে হাত ছেড়ে দিলে কোমড় ভাঙবে নিশ্চিত।?

ইসুয়া তার দুহাতে শুধু রবিনের গলা জড়িয়ে ধরে। কোনো কথা বললো না। রবিন যেন সুযোগের সদ্ব্যবহার করছে।

রবিন ইসুয়ার নাকে নাক ঘষে বললো– বড্ড জেদ??

ইসুয়া চুপ করেই রইলো।জবাব দিলো না। রবিন এবার ছোট করে একটা কামড় বসিয়ে দিলো ইসুয়ার উপরের ঠোঁটে।

ইসুয়া ছোট করে আওয়াজ করলো– আহ্??

রবিন হেসে– আরেকটা দিব??

ইসুয়া– মেরে ফেলবো একদম গন্ডার কোথাকার।

রবিন– রাগ ভেঙেছে??

ইসুয়া– না।

রবিন– বাড়িতে যেতে চেয়েছো কেন??

ইসুয়া– এমনিতেই।

রবিন– সরি!! আর কখনো কিছু লুকাবো না তোমার কাছ থেকে। এই কানে ধরছি।

ইসুয়া– অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

রবিন ইসুয়ার গাল চেপে ধরে– খুব দেখতে ইচ্ছে করছে? না Miss.অধ্যাপিকা!!

ইসুয়া– আমার কোনো শখ নেই কাউকে কান ধরতে দেখার।

রবিন– তবে আমার খুব ইচ্ছে আছে।

ইসুয়া– কি??

রবিন– অন্ধকারে বউকে আদর দেওয়ার। ??

ইসুয়া এবার হাত পা ছোঁড়াছুড়ি করতে লাগলো– ভালো হবে না বলে দিচ্ছি। ছাড়ুন…..

রবিন– No ছাড়াছাড়ি। আজ আর কোনো কথা শুনছি না।

ইসুয়া– দেখুন ভালো হচ্ছে না একেবারে। দূরে যান।

রবিন ইসুয়া কে বিছানায় শুইয়ে দিলো– চলে যাব??

ইসুয়া– দূরে যেতে বললাম তো।

রবিন– ওকে।

ইসুয়া– আল্লাহ্ বাঁচলাম।

রবিন বিছানা থেকে এক পা এগিয়ে গিয়ে আবার ফিরে এল– জ্বি না।আজ আর বাঁচার জো নেই আপনার।

রবিন রুমের লাইট জ্বালালো।ইসুয়া বসে আছে বিছানায়। রবিন এগিয়ে গেল তার কাবার্ডের দিকে।কাবার্ড খুলে একটা টকটকে একরঙা লাল শাড়ি আর একটা চিকন হাতকাটা ব্লাউজ বের করলো।

রবিন ইসুয়ার দিকে এগিয়ে– যাও এগুলো পড়ে এসো।

ইসুয়া– কেন??

রবিন– যা বলেছি করো।নয়তো একটু আগের কাজটা এখন করে ফেললে আমি দায়ী না।

ইসুয়া চোখ বড় বড় করে– অসহ্য। ??

রবিন– সহ্য করে নাও।যাও জলদি।

ইসুয়া– যাচ্ছি তো।

ইসুয়া ওয়াশরুমে গিয়ে শাড়িটা পড়লো।কিন্তু ঝামেলা করে বসলো ব্লাউজটা। এতটাই uneasy লাগছে,,,, বলার মত না।ইসুয়া শাড়ির আঁচল দিয়ে পুরো পিঠ ঢেকে বেরিয়ে এল ওয়াশরুম থেকে।

রবিন ইসুয়া কে দেখে কপাল কুঁচকে– এভাবে শাড়ি পড়েছো কেন??

ইসুয়া রেগে — এটা কেমন ব্লাউজ। ছিঃ!!

রবিন– এটা সানি লিওনির কাছ থেকে দুদিনের জন্য ভাড়া করে এনেছি।??

ইসুয়া–???

রবিন– আঁচল সরাও।সুন্দর করে পড়ো।

ইসুয়া আঁচল টা ফেলতেই পিঠের এক তৃতীয়াংশ উন্মুক্ত হয়ে গেল। রবিন—পিছনে ফিরো।

ইসুয়া– কেন??

রবিন– আমি বলছি তাই।

ইসুয়া– পারবো না।

রবিন বিছানা থেকে দাঁড়িয়ে পড়ে– আমার এমনিতেই জোরজবরদস্তি ভাললাগে না। তুমি যখন চাইছো!!

ইসুয়া– এই না না,,,,,ফিরছি।

ইসুয়া পিছনে ফিরতেই পিঠের সেই জোড়া তিলখানা স্পষ্ট দেখা দিচ্ছিলো।রবিন এগিয়ে এসে তাতে চুমু খেল।ইসুয়ার সারা শরীর কেঁপে ওঠে।

রবিন ইসুয়ার চোখ গুলো দুই হাতে আটকে ধরে।

ইসুয়া– চোখ ধরলেন কেন??

রবিন– One second…আমি চোখ গুলো ছাড়ছি,তবে তুমি চোখ খুলবে না।

ইসুয়া– কি করছেন বলুন তো।

ইসুয়ার চোখ ছেড়ে রবিন ইসুয়ার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।

রবিন– এবার চোখ খুলো।

ইসুয়া হা হয়ে আছে। রবিন হাঁটু গেড়ে বসে আছে ইসুয়ার সামনে।হাতে অনেক গুলো কাঠগোলাপ আর একটা বক্স।

রবিন– গুণে দেখ ১০১ টাই আছে।সেদিন একটা ফুল নিয়েছি তোমার খোঁপা থেকে।আজ ১০১ টা ফেরত দিলাম ভালবাসার রূপে।

ইসুয়া– Thank you??……ঐ টা কী??

রবিন বক্সটা খুলে–তোমাকে ডায়মন্ড ইয়ারিং দেওয়া কোনো ব্যাপার না রবিন চৌধুরীর কাছে,,,, কিন্তু আমার golden এর দুল গুলো অনেক ভালো লেগেছে তাই নিয়ে আসলাম আমার অধ্যাপিকার জন্য।

ইসুয়া– Omg ?? অনেক সুন্দর।

রবিন– আমি পড়িয়ে দিচ্ছি।

ইসুয়া– আমি পড়ে নিতে পারবো।

রবিন– উঁহু আজ আমি সাজাই আমার মিসেসকে!!

ইসুয়া লজ্জায় মাথা নিচু করে রইলো। রবিন ইসুয়াকে দুল গুলো পড়িয়ে দেয়।ইসুয়ার হাত দুটো নিজের হাতে নিলো,,,,,

রবিন– এইদিকে তাকাও।

ইসুয়া মাথা উঁচু করে তাকালো।রবিন মুচকি হেসে বললো– আরো অপেক্ষা করতে হবে আমায়?? তোমাকে পেতে????

ইসুয়া জবাবহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।

রবিন– আমি কি ধরে নেব নীরবতা সম্মতির লক্ষণ??

ইসুয়া নিশ্চুপ।রবিন নিজে বিছানায় বসে ইসুয়াকে টেনে কাছে নিয়ে এসে কোলে বসালো।

রবিন– Miss. অধ্যাপিকা আপনার স্টুডেন্ট confused…. plz help him…..???

ইসুয়া– মানে??

রবিন– এখন তুমি আমার কথার উত্তরে যদি হ্যাঁ মানে রাজি থাকো তবে আমার গালে একটা চুমু খাবে।আর যদি তোমার উত্তর না হয় তবে সোজা বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।আমার দিকে ফিরবে না।

ইসুয়া– ???

রবিন– তোমার অস্বস্তি হচ্ছে? এই আমি চোখ বন্ধ করলাম।তুমি তোমার answer আমাকে জানাও।

ইসুয়া দোটানায় পড়ে। আজ রবিনকে নাখোচ করা মানে স্বামীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করা ওকে।কিন্তু ইসুয়ার ভীষণ লজ্জা লাগছে।কি করবে সে??

রবিন– কি হল?? তোমার উত্তর দেওয়া হয়েছে??

ইসুয়া উঠে গিয়ে রুমের লাইট টা অফ করে দিল।রবিন চোখ খুললো । অন্ধকার দেখে নিরাশ হয়ে পিছু ফিরবে তখনই ইসুয়া রবিনের কলার চেপে ধরে তাকে lipkiss করে বসলো।রবিন ভাবতেও পারেনি এমন কিছু।

ইসুয়া রবিনকে ছেড়ে দূরে গিয়ে বসে।রবিন তার প্রশ্নের জবাব পেয়ে ভীষণ excited…… ইসুয়াকে জড়িয়ে ধরে বললো– অধিকার পেয়ে গেলাম যে! আজ থেকে শান্তির ঘুম হারাম হয়ে গেল অধ্যাপিকা আপনার।

[এর বেশি রোমান্টিক দৃশ্য আশা করলে ঠেঙ্গামু এক একটারে।পাজি পাজি readers..?? শুধু রোমান্টিক সিন খুঁজে]

————————————————————-

দুদিন পর,,,,,,

দিতী বেগম– জন্মের পর থেকে কোনো কথা শুনেছিস? যে আজ শুনবি!!

রিদীমা– মম just stop this drama…

দিতী বেগম– আমার সবকিছুই ড্রামা তোর কাছে ??

রিদীমা– একটু চুপ করবে।বাড়ি থেকে বের হবো শান্তিপূর্ণ ভাবে,,, সেটার ও জো নেই।

আফজাল সাহেব– আহ দিতী ওকে বাঁধা দিও না তো।

দিতী বেগম– দাও আরো লাই দাও।মাথায় তোলো।

মমতা চৌধুরী– মেয়েটাকে কোথায় দোয়া করে দিবে,, তা না করে সেই কখন থেকে বকবক করেই চলেছো।

দিতী বেগম– এই চুপ করলাম।আর কিছু বলবো না। যে যা খুশি করো।

রবিন ছুটে এসে– আপুনি চল চল,,, গাড়ি চলে এসেছে।তোমার ফ্লাইট কয়টায়??

দিতী বেগম এগিয়ে এসে ছেলের কান ধরে।রবিন চেঁচিয়ে– ওপপপ মা ! কি করছো????

দিতী বেগম — কোথায় বোনকে যেতে মানা করবি,,,তা না করে এগিয়ে দিচ্ছিস??

শাহেদ– তোমার কি মনে হয় মামী? রিদীমা কারো কথা শুনবে??

সুরাইয়া খান — মোটেও না। রবিনের কান ছাড়ো তো ভাবী।

রবিন– লাগছে তো মা,,,,,, ছাড়ো।

দিতী বেগম– কেউ ই ওকে আটকাবি না তো??

আকাশ– সারা দেশে হরতাল পড়লেও আজ রিদীমা লন্ডনে যাবেই।সো….. তুমি ও সে চেষ্টা আর করো না। যা করেছো …….. করেছো।??

ইসুয়া এগিয়ে এসে– আবার কবে আসবে আপু??

রিদীমা হেসে– যত শীঘ্রই আমি পিম্মি হবো তত শীঘ্রই??

ইসুয়া লজ্জায় লাল হয়ে উঠে। রবিন কাশতে লাগলো।

রিদীমা দিতী বেগমের দিকে এগিয়ে গেল– মম এত টেনশন নিও না তো।আমি প্রথম কদিন স্বাদ আর রেহানা আন্টির সাথে থাকবো তো।তারপর আবার আগের বাসায় ফিরবো।সম্পূর্ণ সেফটি নিয়ে।

দিতী বেগম– আচ্ছা। নিজের খেয়াল রাখিস।

সবার থেকে বিদায় নিয়ে রিদীমা গাড়িতে উঠে বসে। পাশে রবিন আর শাহেদ।তারা রিদীমাকে এয়ারপোর্টে এগিয়ে দিতে যাচ্ছে।

রিদীমার ফোনে কল আসে,,,,,

রিদীমা– Hlw বল।

স্বাদ– তুই রওয়ানা হয়েছিস রিদ??

রিদীমা– এয়ারপোর্ট যাচ্ছি।

স্বাদ– ফ্লাইট কয়টায়??

রিদীমা– 7:35 মিনিটে।

স্বাদ– আমি তোকে এই দেশের এয়ারপোর্ট থেকে ড্রপ করে নিব।

রিদীমা– আমি তোর বাসা চিনিতো। চলে যেতে পারবো।

স্বাদ– তার কোনো দরকার নেই। আমি আসবো এয়ারপোর্টে বললাম তো।

রিদীমা– Ok bye ….. রাখছি রে।

স্বাদ– Ok……..??

স্বাদের ফোন রাখতেই রিদীমাদের গাড়ি এয়ারপোর্ট এসে থামলো।রিদীমা ফিরে যাচ্ছে তার আগের জীবনযাত্রায়।

__________________________(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here