Senior life partner পর্ব ৩৯

0
1466

#Senior_life_partner
পর্ব——-39
Afrin Ayoni

রিদীমা কাল এয়ারপোর্টে গাড়ি পাঠিয়ে মারিয়াকে আনিয়েছি বাড়িতে। মারিয়াকে guest house এ থাকতে দিয়েছে।রিদীমার গেস্ট বলে কথা।কোন ধরনের ভুল ত্রুটি হওয়ার কথাই নেই আপ্যায়নে।রিদীমা মারিয়ার সঙ্গে দেখা করতেই guest house এর দিকে এগোয়। দরজায় নক করতেই মারিয়া দরজা খুলে দিলো,,,,

রিদীমা– কেমন আছো??

মারিয়া হেসে– এইতো,কাল এলাম আর আজ এতক্ষণে তোমার দেখা মিললো!!??

রিদীমা– সরি গো,বাড়িতে একটা অনুষ্ঠান তো তাই সবকিছু মিলিয়েই একটু ব্যস্ত।

মারিয়া– It’s ok……?

রিদীমা– এই তোমার বাংলা ভাষাটা অনেকটা স্পষ্ট হয়ে এসেছে।

মারিয়া– তাই!!

রিদীমা– হ্যাঁ একদম।

মারিয়া– Thanks…….??

রিদীমা– চলো,,,কাল টায়ার্ড ছিলে তাই কারো সাথে ঠিক করে পরিচয় করিয়ে দিতে পারিনি।আজ সবার সঙ্গে পরিচিত হয়ে নিবে।

মারিয়া– Okkkkk……

রিদীমা মারিয়াকে নিয়ে বাড়ির ড্রয়িং রুমের দিকে গেল।

রবিন আর ইসুয়া ড্রয়িং রুমেই ছিলো।কিছু একটা নিয়ে আলোচনা করছিলো।রিদীমা & মারিয়াকে দেখে দুজনে তাকিয়ে আছে,,,,,

রিদীমা ইসুয়ার দিকে তাকিয়ে– ও হচ্ছে মারিয়া।

রবিন ভ্রু কুঁচকে– ফরেইনার?? ??

রিদীমা– হ্যাঁ।

ইসুয়া– তোমার friend??☺☺

রিদীমা– হুম।

ইসুয়া মারিয়ার দিকে এগিয়ে গেল– Hi আপু

মারিয়া– hlw??

রবিন মারিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।কি যেন ভেবে চলছে আপনমনে!!রিদীমা রবিনের দিকে তাকিয়ে,,,

রিদীমা– কিরে?চুপ কেন?

ইসুয়া– দেখ না!নিশুয়াকে নিয়ে আসতে বললাম,,আস্ত অলস একটা।যেতে চাচ্ছে না ???

রিদীমা– ভাই যা,নিয়ে আয়।নিশুয়া এলে বাড়িটা একটু জীবন্ত প্রাণবন্ত হবে,যা দুষ্টু মেয়ে টা।

রবিন– একটু পর যাই প্লিজ।??

ইসুয়া– অলরেডি আধঘন্টার মধ্যে স্কুল ছুটি হবে।ও কতক্ষণ অপেক্ষা করবে??

রবিন– আচ্ছা, যাচ্ছি। এবার শান্তি??

রিদীমা– তুই জলদি যা।

মারিয়া– Who is নিশুয়া????

রিদীমা ইসুয়াকে দেখিয়ে — ও ইসুয়া। আমার ভাইয়ের wife….. ও রবিন,আমার ভাই।আর নিশুয়া ইসুয়ার একমাত্র বোন।

মারিয়া– Ohhhhh

রবিন— Ok ….. bye guys

ইসুয়া মুখ ভেঙ্গচিয়ে — ডং…??

রবিন– এই কি বললে????

রিদীমা হেসে– যা তো তুই!

রবিন চলে যাচ্ছিল রিদীমা পিছন থেকে বললো,,,

রিদীমা– স্বাদ আর শাহেদ কে কার্ড পৌঁছে দিয়েছিস??

রবিন– সেই সকালেই।

রিদীমা– আচ্ছা ঠিক আছে,,,,যা।

রবিন নিশুয়াকে নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে চলে যায়। রিদীমা মারিয়া আর ইসুয়া বসে বসে আড্ডা দিতে থাকে।

————————————–

সেলিম জোয়ারদার লাঞ্চ করতে বসেছেন। সিরিন বেগম স্বামীর পাশে এসে বসলেন।সেলিম সাহেব স্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন,,,

সেলিম সাহেব– কিছু বলবে ????

সিরিন বেগম– কাল আমাদের ইনভাইট করা হয়েছে।

সেলিম সাহেব– কোথায়????

সিরিন বেগম– দিতীদের বাড়িতে।

সেলিম সাহেব– রিদীমা ও দেশে এসেছে শুনলাম।

সিরিন বেগম– হুম,কাল কিন্তু তুমি আফজাল ভাইজানের সঙ্গে শুভ আর রিদীমার কথাটা বলবে।

সেলিম সাহেব– দেখ আমরা না হয় মেনে নিব,,,ছেলের এত বছরের পাগলামির দিকে তাকিয়ে। কিন্তু ওরা যে মানবে তার তো গ্যারান্টি নেই।তাছাড়া রিদীমা যেমন মেয়ে ওর এক ঘুষিতে তোমার ছেলে দশ হাত দূরে গিয়ে পড়বে।??

স্বামীর কথায় উচ্চ স্বরে হেসে উঠে সিরিন বেগম। হাসতে হাসতে বলেন– তা যা বলেছো।???

শুভ তখন ফোন স্ক্রল করতে করতে সিড়ি বেয়ে নামছিলো।বাবা মায়ের হাসি দেখে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে,,,,

শুভ — Mr. & Mrs. জোয়ারদার নিশ্চয়ই আমাকে নিয়ে হাসছে!!??

সেলিম সাহেব– তুই কি হাসার মত কিছু করেছিস??

শুভ — সিউর বলতে পারছি না। তবে এই বাড়ির দেয়ালে একটা লেজ ছাড়া টিকটিকির দেখা পেলেও সেটার জন্য আমাকেই দোষারোপ করা হয়ে থাকে।??

সিরিন বেগম– মোটেও এমন হয় না।

শুভ — একশোবার হয়,আলবাৎ হয়।

সেলিম সাহেব– এই বাড়িতে তোকে ছাড়া দোষারোপ করার জন্য অন্য কেউ থাকলে তো করবো।

সিরিন বেগম– কাল যাচ্ছিস তো??

শুভ কপাল কুঁচকে বলে– কোথায়??

সেলিম সাহেব– Future শ্বশুর বাড়িতে।

শুভ মুখ কালো করে– এখনো দাওয়াত পাইনি।??

সিরিন বেগম– সে কিরে তুই আজ এভাবে রিদীমার পিছন পিছন ঘুরলি তারপর দাওয়াত দিলো না তোকে????

শুভ — Oppps মা,,,রিদীমা কেন দাওয়াত দিবে আমাকে??

সিরিন বেগম — তাহলে সকাল সকাল ওর পিছন পিছন এভাবে চরকির মতো ঘুরলি কেন??

শুভ — ঐটার কারণ একটাই তোমার বউমাকে বিরক্ত করা।তুমি জানো না তোমার ছেলে তোমার বউমাকে বিরক্ত করতে কত ভালবাসে??

সেলিম সাহেব– নির্লজ্জ ছেলে কোথাকার, বাবা মায়ের সামনে ভালবাসার কথা বলছে।

শুভ হেসে– আচ্ছা মা,Without ভালবাসা তুমি এই লোকের সঙ্গে কি করে সংসার করলে????

সেলিম সাহেব– তোমার কি সন্দেহ আছে আমি তোমার মাকে ভালবাসি যে!!

শুভ — Mr. জোয়ারদার! নিজের একমাত্র ছেলেকে এরকম প্রশ্ন করা আপনার কাছে কোন ক্যাটাগরিতে পড়ে আমার জানা নেই।☺☺

সিরিন বেগম হেসে– যেমন বাপ তেমন বেটা!!

শুভ — তোমরা যাচ্ছো তো কাল?

সিরিন বেগম– অবশ্যই, তোর দিতী আন্টি অনেকবার বলে দিয়েছে।রিদীমার সঙ্গে ও কথা হল ফোনে।

শুভ — রবিন আমাকে এখনো ইনভাইট করলো না।

সেলিম সাহেব– রবিন ইনভাইট করতে হবে না, তুমি যে ঐ বাড়িতে কাল সকাল সকাল নয়নকে নিয়ে গিয়ে যেচে সবার আগে বসে থাকবে তা আমাদের জানা।?

শুভ — রবিন ইনভাইট করলে যাবো,তার আগে না।

সিরিন বেগম– পরে পাল্টি খাবি না তো আবার??

শুভ — ?????

হঠাৎ শুভদের বাড়ির সামনে বাইকের হর্ন শোনা গেল। সিরিন বেগম ছেলের দিকে তাকিয়ে,,,

সিরিন বেগম– বলতে না বলতে বান্দা হাজির।দেখ রবিন এসেছে।

ততক্ষণে রবিন আর নয়ন বাড়িতে ঢুকে পড়েছে। রবিন হাসতে হাসতে এগিয়ে এলো,”কি আমাদের নামে নিন্দা করা হচ্ছিল বুঝি?”??

শুভ — মহিলাদের মত কথা কস কেন??

নয়ন–আন্টি আমাদের লাঞ্চ দিবেন না??

সিরিন বেগম– আরে বস।বলতে হবে নাকি!শুরু কর।

নয়ন আর রবিন বসতে যাবে শুভ রবিনের দিকে তাকিয়ে,,,,

শুভ — তুই বসবি না শালা!!?

রবিন– কেন??

শুভ — আগে আমাকে ইনভাইট দে।

নয়ন– ইনভাইট চাস নাকি ভিক্ষা চাস????

শুভ রবিনের দিকে তাকিয়ে– তোর জন্য বাপি আমাকে বললো আমি নাকি দাওয়াত ছাড়াই সবার আগে গিয়ে বসে থাকবো কাল সকালে।

নয়ন আর রবিন হা হা হা করে হেসে উঠে।

রবিন– সত্যি আঙ্কেল আপনি একথা বলেছেন নাকি??You r great uncle ??

শুভ — ইনসাল্ট করছিস??

রবিন– তবে আঙ্কেলের কথায় একটু ভুল আছে।

সেলিম সাহেব– কি ??

রবিন– ও কাল সকালে না,আজ সন্ধ্যায় গিয়ে আমার সঙ্গে কামলা দিবে আমাদের বাড়িতে তাও বিনা দাওয়াতে। ??

শুভ– যাব ই না তোদের বাড়িতে ??

নয়ন ফিসফিসিয়ে– তুই যাবি না?ভাই আমারে lady পেত্নি ভর করলেও বিশ্বাস হবেনা। তুই এই চান্স হাতছাড়া করবি??

সিরিন বেগম ছেলের মজা নিতে বললেন– থাক না রবিন, ও যখন যেতে চাচ্ছে না।জোর করে কি লাভ??☺?

রবিন– যা তোকে যেতে হবেনা।

শুভ– মানে কি????

নয়ন দুষ্টু হেসে– তুই তো বললি যাবি না।

শুভ– আমি তো মজা করলাম।

রবিন– বিনা দাওয়াতেই যাবি????

নয়ন,রবিন, সিরিন বেগম, সেলিম সাহেব এক দফা হেসে নিলেন শুভর চেহারা দেখে।

শুভ — মজা পাচ্ছো সবাই!!না ………

রবিন– Ok ok এত ন্যাকামি করিস না, আন্টি আঙ্কেল কাল চলে যাবে।তুই আর নয়ন বিকেলে চলে আসিস।

শুভ– খা শালা,,,,,পেট ভরে খা।আর লাগবে না তোর দাওয়াত।??

রবিন নয়ন লাঞ্চ টা সেরে নিলো শুভদের বাড়িতেই।অতঃপর রবিন নিশুয়াকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা মনে পড়তেই বিদায় নিলো ওখান থেকে।

————————————————————-

স্কুল ছুটি হয়েছে দেড় ঘণ্টা। টিচারদের অফিসরুমে কাজ ছিলো সামনে পরীক্ষা বিধায়।মাঠের বকুল গাছের নিচে বসে নিশুয়া অনেকগুলো ফুল কুড়ালো।তারপর এক এক করে সেগুলো দিয়ে বিভিন্ন সেইফের অক্ষর আঁকতে লাগলো।

এই মেয়ে, রোজ রোজ এভাবে স্কুলে বসে থাকো কেন??
??

নিশুয়া পিছনে ফিরে তাকালো,,”আমি না হয় রোজ রোজ বসে থাকি।কিন্তু আপনি রোজ রোজ আমার এখানে থাকাটা অপছন্দ করেন কেন?”

শাহেদ– প্রয়োজনের চেয়ে ও বেশি বলে ফেলছো না??

নিশুয়া– কই অন্য টিচারদের তো কোনো প্রবলেম হয় না। ??

শাহেদ– ফাজিল কোথাকার।

নিশুয়া– উচিত কথার দাম নাই আজকাল চারপাশে।

শাহেদ– বাড়ি যাও।

নিশুয়া– আজ তো যাবোই না। ??

শাহেদ– ????

নিশুয়া– আপনার এত সমস্যা কেন হচ্ছে বুঝি না আমি??

শাহেদ কিছু বলতে যাবে তার আগেই রবিনের বাইক এসে থামল স্কুলের মাঠে।নিশুয়া রবিনকে দেখে কাঁধের ব্যাগটা ঠিক করে কাঁধে নিলো।

শাহেদ তার স্কুলে রবিনকে দেখে তো অবাক। তার উপর নিশুয়া যখন রবিনের বাইকের পিছনে গিয়ে উঠলো তখন সে রীতিমতো হা।

শাহেদ এগিয়ে গেল রবিনের দিকে,,,

শাহেদ– তুমি এখানে????

রবিন– নিশুয়া কে নিতে এলাম।

শাহেদ নিশুয়ার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে– ও তোমার কি হয়??

রবিন হেসে– শালি আধি ঘরওয়ালি।??

শাহেদ– ওহ আচ্ছা।

রবিন– আপনি এখানে শিক্ষকতা করেন নাকি??

শাহেদ– হুম।ভিতরে এসো বসো,চা কফি হয়ে যাক।

রবিন– আজ না, জানেন ই তো বাড়িতে অনেক কাজ।কাল আসবেন কিন্তু।

শাহেদ– ঠিক আছে।☺

রবিন শাহেদের সঙ্গে টুকটাক কথা বলে নিশুয়াকে নিয়ে রওয়ানা দিলো।

নিশুয়া রবিনের উদ্দেশ্যে বললো– আচ্ছা ভাইয়া উনাকে আপনি চিনেন??

রবিন– কাকে????

নিশুয়া– এই যে রাক্ষস টিচার টাকে।

রবিন হেসে– শাহেদ ভাইয়ের কথা বলছো??

নিশুয়া– হুম।

রবিন– উনি তো রিদীমা আপুর friend….??

নিশুয়া– ওহ্?

রবিন– রাক্ষস বললে কেন??

নিশুয়া– যা attitude নিয়ে চলে,,কথায় কথায় খেয়ে ফেলবে এমন ভাব করে।??

রবিন হেসে– উনি একটু গম্ভীর টাইপের,এমনিতেই অনেক ভালো।

নিশুয়া আর কিছু বললো না। রবিন নিশুয়ার কিছু লাগবে কি না পথিমধ্যে অনেকবার জিজ্ঞেস করে।কিন্তু নিশুয়ার যেন বোনের কাছে যাওয়ার তর সইছে না। সে রবিনকে তাড়া দেয় দ্রুত বাড়িতে ফিরতে।

…………………………………………………………..

স্বাদ একটা কপিসপ থেকে বেরুলো।সাথে রেহানা বেগম ও ছিলেন,,,,,

স্বাদ– তোমার শাড়ি টা পছন্দ হয়েছে তো?

রেহানা বেগম– অনেক পছন্দ হয়েছে।?

রেহানা বেগম কথাটা বলে একটু বামে ঘুরতে যাবেন তখনই কেউ ওনাকে ধরে হেচকা টান মারেন।রেহানা বেগম জোরে নিঃশ্বাস নিলো।

স্বাদ– দেখে মা।??

শুভ– আন্টি আরেকটু হলে তো …….??

কথাটা এটুকু বলেই শুভ আর নয়ন নিজেদের মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে লাগলো।স্বাদ এগিয়ে এসে,,,

স্বাদ– তুমি শুভ না????

শুভ আমতা আমতা করে– জ্বি চিনেছেন তাহলে!!

স্বাদ হেসে– Thnx…. তা কেমন আছো??

শুভ– ভালো। আপনার কি খবর??

স্বাদ– আছি একরকম।তা আগের মতোই দুষ্টু আছো এখনো???

নয়ন– এখন দুষ্টু না কেবল দুষ্টু pro max??

শুভ হেসে– আপনারা এখানে ? কোনো কাজে নাকি?

স্বাদ– এমনিতেই বের হলাম ঘুরতে মাকে নিয়ে।

শুভ রেহানা বেগমের দিকে তাকিয়ে– আসসালামু ওয়ালাইকুম আন্টি।

রেহানা বেগম– ওয়ালাইকুম ওসসালাম।

শুভ– দেখে চলবেন,হুটহাট কিছু হয়ে যেতে পারে।

রেহানা বেগম– ধন্যবাদ তোমাকে বাবা,আসলে গাড়িটা হঠাৎ কখন এলো বুঝতে পারিনি।

নয়ন– পরবর্তীতে সাবধানে চলাচল করবেন আন্টি।

রেহানা বেগম হেসে– আচ্ছা বাবা।?

শুভ স্বাদের দিকে তাকিয়ে– আজ তাহলে আসি।পরে কখনো দেখা হবে।

স্বাদ– ওকে।

শুভ আর নয়ন এগিয়ে গেল।স্বাদ পিছন থেকে তাদের দেখছিলো।

রেহানা বেগম– কে রে ছেলে গুলো?????

স্বাদ– তুমি চিনবে না।

রেহানা বেগম– বললেই চিনবো।

স্বাদ– এত লম্বা পরিচয় তো রাস্তায় দেওয়া যাবে না, তবে এটুকু বলি।ফর্সা মত লম্বা বিলাই চোখা যে ছেলেটা তোমাকে টেনে ধরেছিলো সে ছেলেটাকে তোমার এই ডাক্তার পুত্র একদা বেদম প্রহার করেছে।??

রেহানা বেগম– আহারে এত ভালো ছেলেটাকে মারতে গেলি কেন????

স্বাদ– সে রিদীমা কে অনেক জ্বালাতন করতো।রিদীমা বলেছিলো একটু টাইট দিতে।

রেহানা বেগম উৎসাহ নিয়ে– তারপর????

স্বাদ– ওপপ মা,এটা রোড।একটু দেখে চল,এভাবে কথায় মশগুল থাকলে আবার একটা এক্সিডেন্ট হয়ে যেতে পারে।

রেহানা বেগম ছেলের কড়া কথায় চুপ মেরে গেলেন।

………………………………………………………

নিশুয়া রবিনদের বাড়িতে এসেই তার স্বভাব সুলভ লাফালাফি, হইচই শুরু করে দিয়েছে।রবিন শুভ আর নয়ন ডেকোরেশন দেখছে।আফজাল সাহেব আর দেলোয়ার খান বসে আছেন সোফায়। ইসুয়া রান্নাঘর থেকে বার বার নিশুয়াকে শাসাচ্ছে হইচই না করতে।শুভ এদিক ওদিক কাউকে খুঁজে চলেছে।

নয়ন শুভর দিকে এগিয়ে গিয়ে– আপু বাড়িতে নেই, অফিসে গেছে শুনলাম।?

শুভ রেগে — আমি তোকে জিজ্ঞেস করেছি???

নয়ন– তুই এভাবে আশেপাশে কি খুঁজছিস, মাকড়সা???

শুভ নয়নের পিঠে ঘুষি মেরে– যা কাজ কর।

রবিন শুভদের দিকে তাকিয়ে– তোরা এদিকটা দেখ আমি ওদিক থেকে আসছি একটু।??

নয়ন — ম্যামকে মিস করছিস বুঝি??

শুভ — যা দোস্ত, দুইটা খুন্তির ছ্যাঁকা খেয়ে আয় রান্নাঘর থেকে। ??

রবিন– ?????

রবিন বন্ধুদের কথায় কান না দিয়ে অন্য দিকে চলে গেল। তারপর নিশুয়াকে ডেকে বলে,,

রবিন– এই নিশুয়া!??

নিশুয়া রবিনের দিকে এগিয়ে এসে– হুম।

রবিন– তোমার আপু কই?

নিশুয়া– রান্নাঘরে,ডেকে দিব??

রবিন– না।একটা কাজ করবে??

নিশুয়া– কি????

রবিন– তোমার আপুর সঙ্গে রোমাঞ্চ করবো,একটু দরজায় দাঁড়িয়ে পাহারা দিবে।

নিশুয়া হেসে– ওকে……??

রবিন– Your time starts now….?

রবিন রান্নাঘরে ঢুকে। ইসুয়া তখন সকলের জন্য সন্ধ্যার নাস্তা আর রাতের খাবার তৈরিতে ব্যস্ত।

ইসুয়া গরম কড়াইতে তখন বেগুনি বাজছে।সুরাইয়া খান বাড়ির সবাইকে চা দিতে গেছেন।দিতী বেগম কালকের জন্য সব ব্যবস্থা ঠিক আছে কিনা সেটা দেখতে বের হয়েছেন।রান্নাঘর সম্পূর্ণ ফাঁকা।

রবিন গিয়ে ইসুয়ার ঘর্মাক্ত কপালের লেপ্টে থাকা চুলগুলো কানের পিছনে গুঁজে দেয়। ইসুয়া রবিনের দিকে তাকিয়ে,,,

ইসুয়া– এখানে কি চাই????

রবিন– বউয়ের আদর।??

ইসুয়া– ঠোঁটকাটা স্বভাবের লোক একটা।

রবিন– বউয়ের সামনে লজ্জা পেলে স্বয়ং ইবলিশ ও হাততালি দিবে।??

ইসুয়া– জরুরী কথা থাকলে বলে কেটে পড়ুন।

রবিন– তুমি কি বিজি??

ইসুয়া অবাক হয়ে– দেখতে পাচ্ছেন না কত কাজ পড়ে আছে!!

রবিন– ইয়ে মানে…….

ইসুয়া– কিছু বলার হলে জলদি বলুন।

রবিন– আসলে শুভ আর নয়ন বলছিলো …… কিভাবে যে বলি!!??

ইসুয়া– বলবেন তো কী বলছিলো??

রবিন– Love bite না থাকলে নাকি স্ত্রী স্ত্রী মনে হয় না।

ইসুয়া কপাল ভাঁজ করে– Seriously,,,, ওরা আমার শরীরে love bite খুঁজবে!!??

রবিন– আরে না না, এমনিতেই আমাকে বলছিলো।

ইসুয়া রেগে– এখান থেকে কেটে পড়ুন,নয়তো খবর হয়ে যাবে।??

রবিন– রেগে যাচ্ছো কেন?

ইসুয়া—?????

রবিন ইসুয়ার কোমড় জড়িয়ে ধরে– তোমার ঘর্মাক্ত শরীরে এইভাবে রেগে কপাল কুঁচকে থাকার যে expression তার প্রেমে পড়েছি Miss. অধ্যাপিকা!!

হঠাৎ রান্নাঘরের দরজার দিকে থেকে আওয়াজ আসে,,

শুভ — প্রেমে পড়েছিস ভালো কথা!আমাদের ইজ্জতের ফালুদা বানাচ্ছিস কেন????

নয়ন — আমরা কখন Love bite এর কথা বললাম????

নিশুয়া– ভাইয়া রোমাঞ্চ শেষ হলে এবার বের হোন।আমরা আর পাহারা দিতে পারবো না। ?

রবিন আর ইসুয়া ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। দুজন দুজনের কাছ থেকে দুহাত দূরে গিয়ে দাঁড়ালো।ইসুয়া লজ্জায় মাথায় ঘোমটা টানলো।রবিন রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে নয়ন আর শুভকে কড়া দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো,,,,,

রবিন– শালা হারামির দল,,,,,একটু রোমাঞ্চ করতে দিলো না বউটার সাথে ???

…………………………………………………

রিদীমা অফিসে বসে কিছু ফাইল দেখছিলো,, তখনই তার ফোনের রিংটনের আওয়াজে ধ্যান ভাঙে।

রিদীমা– হ্যাঁ বলুন Mr. আরিফ।

আরিফ– Madam…… আপনি কোথায় আছেন?

রিদীমা– কোথায় আছেন মানে????

আরিফ — ম্যাডাম important কিছু বলার ছিলো।

রিদীমা– বলুন।

আরিফ –এতদিন ধরে আপনাকে যারা আক্রমণ করার চেষ্টা করেছে তাদের ডিটেইলস সংগ্রহ করতে পেরেছি।

রিদীমা– কে বা কারা????

আরিফ– তার আগে একটা কথা বলার ছিল,,,,যে কয়দিন আপনি বাংলাদেশে আছেন।একটু সাবধানে থাকুন । তাদের টার্গেট চব্বিশ ঘণ্টা আপনার উপর।

রিদীমা– আমি ভয় পাই না Mr. আরিফ। আপনি শুধু আমাকে ওদের পরিচয়টা দিন।

আরিফ কিছু বলতে যাবে তার আগেই দুটো গুলির শব্দ ভেসে আসে রিদীমার কানে।হতভম্ব হয়ে যায় রিদীমা।

রিদীমা– Hlw Hlw মিস্টার আরিফ!আপনি শুনতে পাচ্ছেন?????

তার দুই সেকেন্ড পর পর ই ফোনটা ডিসকানেক্ট হয়ে গেল।রিদীমার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়লো।কে হতে পারে যে তার সর্বোচ্চ ক্ষতি সাধন করতে তার পিছনে লেগে আছে??

_____________________________(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here