#Senior_life_partner
পর্ব——32
Afrin Ayoni
মাঝের দুটো দিন একই রকম অতিবাহিত হলো রবিন ইসুয়ার। রবিন নিজেকে সারাদিন কাজে ব্যস্ত রাখে আর যে সময় টা বাড়িতে থাকে সে সময়টাতে ইসুয়ার সাথে কোনো কথা বলে না। ইসুয়া নানা অজুহাতে নানা বাহানায় কথা বলার চেষ্টা করে দেখেছে,কিন্তু রবিন তাকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলছে।
ব্যাপারটা নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হত,কিন্তু রবিন আজ খাবার টেবিলে প্রায় সকলের সামনে ইসুয়াকে avoid করেছে বিশ্রীভাবে।
আজ ছুটির দিন থাকাতে ইসুয়া অনেক ভালো ভালো খাবার রান্না করে সকলের জন্য। খাবার সার্ভ করার সময় ইসুয়া রবিনের পাতে মাছের মাথাটা তুলে দিতেই প্রচন্ড রকমের রিয়েক্ট করে সে।
রবিন– আমি তোমার কাছে চেয়েছি??
ইসুয়া– না মানে,আসলে ……..
রবিন– যেচে দিতে আসো কেন??
রবিন এক প্রকার রেগে খাবার টেবিল ছেড়ে উঠে যায়। ব্যপারটা সবার চোখে বাধলো খুব বিশ্রীভাবে। ইসুয়া চোখে জল নিয়ে সবার সামনে থেকে লজ্জিত হয়ে রান্নাঘরে ছুটে আসে। ব্যপারটাতে সিনথিয়া আর দেলোয়ার খান যেন খুব খুশি হয়েছেন।
খাওয়া দাওয়া সেরে রিদীমা রবিনের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করবে বলে রবিনের সাথে দেখা করতে যায়।
রিদীমা রুমে ঢোকার আগে দরজায় নক করে,,
রবিন– দরজা খোলা আছে!!
রিদীমা রুমে ঢুকে সরাসরি রবিনের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় — কি, হচ্ছে কি এসব রবিন??
রবিন– কি হয়েছে আপুনি??
রিদীমা রবিনের পাশে বসলো– তোদের মাঝে কি কিছু হয়েছে??
রবিন না বোঝার ভান করে– কাদের ? কি বলছো এসব??
রিদীমা যেন এবার রাগ ধরে রাখতে পারলো না। চেঁচিয়ে উঠল– তুই ইসুয়ার সঙ্গে এমন misbehave করলি কেন?তা ও সবার সামনে
রবিন– দেখ আপু …………
রিদীমা– দেখার কি আছে,যা দেখার নীচেই তো দেখলাম।মেয়েটা এমন কি করেছিলো যে এভাবে সিনক্রিয়েট করলি??
রবিন– আমার কথাটা তো শুনবে!!
রিদীমা– Stop just stop ….. তোর কাছে আমার শোনার মত কিছু নেই, তুই যা করছিস একদম ঠিক করছিস না। মেয়েটা কতটা লজ্জা পেয়েছে সবার সামনে।
রবিন– সরি আপু …. আসলে তখন
রিদীমা রবিনকে বাঁধা দিয়ে বলে — সরি আমাকে নয়, ওকে বলে দিস। আর হ্যাঁ তুই ওকে ঠকিয়ে বিয়ে করেছিস ও নিজের ইচ্ছায় আসেনি এই বাড়িতে।
রবিন—????
রিদীমা– So, ইসুয়ার সবকিছু দেখে রাখার,ওকে ভালো রাখার দায়িত্ব তোর।
রবিন– আচ্ছা।
রিদীমা– Careless কোথাকার ???
রবিনকে এক গাদা কথা শুনিয়ে বকাবকি করে রেগে বেরিয়ে যায় রিদীমা। ইসুয়া রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলছিলো।বাড়ির কথা খুব মনে পড়ছে।আজ পাশে বাবা থাকলে,বাবার কোলে মাথা রেখে ঘুমাতো ইসুয়া। বাবার বড়ই আদরের মেয়ে ইসুয়া। বুকটা কেমন ভারী ভারী লাগছে।
রান্নাঘরের লাইট জ্বালানো দেখে দিতী বেগম এগিয়ে যান।ইসুয়াকে রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে,,,
দিতী বেগম– কি রে মা?এখনো রুমে যাসনি??
ইসুয়া আড়ালে চোখ মোছার চেষ্টা করে– এইতো যাচ্ছি।
দিতী বেগম– চোখের জল লুকাচ্ছিস??
ইসুয়া– না,কই?না তো।
দিতী বেগম– আমার কাছে লুকাচ্ছিস?
ইসুয়া– এমনিতেই বাড়ির জন্য খারাপ লাগছিলো।
দিতী বেগম ইসুয়ার দিকে এগিয়ে এসে– আমি জানি রবিনের ব্যবহারে মন খারাপ করেছিস।খুব কষ্ট হচ্ছে??
ইসুয়া নিচু হয়ে রইলো।দিতী বেগম — তোদের মাঝে কি কোনো ঝামেলা হয়েছে??
ইসুয়া– না।
দিতী বেগম– তাহলে ছেলেটা এমন করলো কেন??
ইসুয়া– হয়তো কাজের চাপ খুব।
দিতী বেগম– তাই বলে বউয়ের উপর রাগ ঝারবে??
ইসুয়া—-????
দিতী বেগম– হারামজাদা একবার আমার সামনে আসুক, তখন বুঝাবো।তুই যা রেস্ট নে একটু…….
ইসুয়া আর দিতী বেগম যে যার রুমে চলে যায়। ইসুয়া রুমে ঢুকে বিছানার উপর বসে।রবিন ইসুয়াকে কি করে সরি বলবে বুঝতে পারছিলো না। ইসুয়া বিছানায় পিঠ লাগাতে যাবে তখনই,,,,
রবিন– Miss. অধ্যাপিকা!!
ইসুয়া জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় রবিনের দিকে। রবিন এগিয়ে এসে– I am sorry….. really Sorry ??
ইসুয়াকে যেন রাজ্যের অভিমান এসে ঘিরে ধরলো। মুখ ফিরিয়ে শুয়ে পড়ে সে।রবিন খুব বিরক্ত হলো।ইসুয়ার সামনে গিয়ে খাটের উপর দু হাঁটু ভাঁজ করে বসে,,,
রবিন– এই মেয়ে তুমি কি আমাকে avoid করছো??
ইসুয়া অন্য দিকে ফিরে গেল আবারো।রবিন আগের জায়গায় বসে — এদিকে ফিরো,এদিকে ফিরো বলছি!!
ইসুয়া রবিনের কথায় কান না দিয়ে ঘুমানোর ভান করে। চোখ বুজে থাকে।রবিন বিরক্ত হয়ে– ভালোই ভালোই বলছি,সরি একসেপ্ট করো।নয়তো ……??
ইসুয়া উঠে বসে রবিনের দিকে তাকিয়ে– নয়তো কী??
রবিন– আগে বল সরি একসেপ্ট করেছো কিনা??
ইসুয়া– না।??
রবিন– কি বললে??
ইসুয়া– আপনি আজ কটা দিন আমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছেন, তাও বিনা কারণে। এটার জন্য কি সত্যিই আপনার সরিটা একসেপ্ট করা উচিত?
রবিন বিষন্ন মুখে– দেখ,আমি তোমার উপর অনেক জোর জবরদস্তি করেছি।তোমাকে ঠকিয়ে বিয়ে করেছি।তাই তোমাকে আর কোনো প্যারা দিতে চাই না। সেজন্য দূরে সরে থাকি তোমার কাছ থেকে।
ইসুয়া– কিন্তু এভাবে misbehave করার কি মানে??
রবিন– At last সবকিছুর জন্য সরি Miss. অধ্যাপিকা
ইসুয়া– ওকে।
রবিন– Thanks……আমাকে কি মেনে নেওয়া যায় না?????
ইসুয়া– মানে বুঝলাম না।
রবিন– আপনাকে Senior life partner বানাতে চাই।??
ইসুয়া যেন খুব অস্বস্তিতে পড়ে গেছে।সে ঘুমানোর অজুহাতে পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে। রবিন আর জোর করে না তাকে।
রবিন মনে মনে বলে — বরফ যখন গলতে শুরু করেছে, তখন ওটাকে আমি পানি করেই ছাড়বো।??
রবিন তার গিটার টা হাতে নিয়ে বারান্দায় আসে,,,খালি গলায় গান ধরলো ……………….
“দিও তোমার মালাখানি
দিও তোমার মালাখানি_________
বাউলের এই মনটারে।
আমার ভিতরে বাহিরে অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে এএএএএএএএএ…..
ভিতরে বাহিরে অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে এএএএএএএ……….
ভালো আছি,ভালো থেকো
আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখ,,,
ভালো আছি,ভালো থেকো
আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখ।।
পুষে রাখে যেমন ঝিনুক
খোলসের আবরণে মুক্তোর সুখ,,,
তেমনি তোমার গভীর ছোঁয়া
ভিতরের নীড় বন্দরে ……….
আমার ভিতরে বাহিরে অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে …………
ভিতরে বাহিরে অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে এএএএএএ………”
রবিনের এত মন মাতানো কন্ঠস্বরে ইসুয়া আর শুয়ে থাকতে পারলো না। বারান্দায় এসে দাঁড়ায় রবিনের পাশে।গানটা শেষ হতেই রবিনের তারিফ করে।
রবিন– শুকনো কথায় চিড়ে ভিজবে না Miss. অধ্যাপিকা!!
ইসুয়া– ????
রবিন– আচ্ছা, আপনি এই কয়দিন ভার্সিটিতে যাচ্ছেন না কেন??
ইসুয়া– ভালো লাগে না, বাড়িতেই বেশ আছি।
রবিন– তা বললে তো হচ্ছে না। এইভাবে বাড়িতে একা থাকতে কতক্ষণ ভাললাগে আর।
ইসুয়া– সমস্যা নেই কোনো।
রবিন– আমার আছে।আমার exam সামনে। কাল থেকে কিছুদিন ক্লাস করা খুব জরুরী। আপনি না গেলে ভার্সিটি আমার কাছে কেমন পানসে পানসে লাগবে।
ইসুয়া– কিন্তু ……
রবিন– কোনো কথা নয়, কাল আমার সাথেই ভার্সিটিতে যাবেন।সকালে তৈরি হয়ে থাকবেন।
ইসুয়া নিরস মুখে — আচ্ছা ???
————————————————
শাহেদ কিছু করছিলো তার স্টাডি রুমে।শিলা ছুটে এসে,,,,,
শিলা — ভাইয়া ???
শাহেদ– হ্যাঁ বল।
শিলা একটা খাম এগিয়ে দিয়ে– এটা তোমার প্যান্টের পকেটে ছিলো।
শাহেদ– ইস দেখলি!!এটার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। আজ দুদিন ধরে ফেলে রেখেছি।
শিলা — কি এটা??
শাহেদ– দেখিনি , দাঁড়া খুলে দেখছি।
শিলা — দেখ জরুরী কিছু কিনা!!
শাহেদ খামটা খুলে পড়লো।তারপর শিলার দিকে তাকিয়ে বললো– একটা সরকারী ইনভাইটেশন এসেছে তোর ভাইয়ের ।
শিলা — কবে?
শাহেদ– কাল বিকেলে।
শিলা — যাবে না ????
শাহেদ– ঐ সময়টাতে স্কুলে থাকবো।যাওয়া হবেনা হয়তো।
শিলা হালকা চেঁচিয়ে উঠে– এটা এদিকে দাও তো।পিছনেও কি লেখা আছে যেন!!
শাহেদ খামটা উল্টো করে দেখলো।খামের উল্টো পাশে যাদের যাদের ইনভাইট করা হয়েছে তাদের নাম দেওয়া ছিলো।নামগুলোর মধ্যে রিদীমা চৌধুরী আর স্বাদ আহসান এই দুটি নাম দেখে শাহেদের কলিজায় মোচড় দিয়ে ওঠে।
শিলা — কি লেখা আছে ভাইয়া????
শাহেদ– আমাকে যেতে হবে,,,আমি কাল যাব।তুই আমার সাদা ফর্মাল ড্রেসটা ভালো করে তৈরি করে রাখিস তো।
কথাটা বলেই শাহেদ কাগজটা টেবিলের উপর রেখে বেরিয়ে গেল। শিলা কিছু বুঝতে না পেরে এগিয়ে এসে টেবিলের উপর থাকা কাগজটা পড়তে লাগলো।
নিশুয়া ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখছিলো।তারেক সাহেব এসে মেয়ের পাশে বসেন।মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে,,,
তারেক সাহেব– কিরে মা?মন খারাপ??
নিশুয়া– আপুকে খুব মিস করছি।??
তারেক সাহেব– আমি ও।
নিশুয়া হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো — আব্বু চল না,, আপুকে গিয়ে দেখে আসি।সারপ্রাইজ দেই
তারেক সাহেব ভ্রু কুঁচকে– এখন??
নিশুয়া– হ্যাঁ এখন,মাত্র চারটে বিশ বাজে।??
তারেক সাহেব কিছুক্ষণ ভেবে– Good idea…. আচ্ছা তুই রেডি হয়ে নে।
নিশুয়া জড়িয়ে ধরে বাবার গালে চুমু খেল — good father…….???
………………………………………………………
স্বাদ ল্যাপটপে কিছু করছিলো।রেহানা বেগম এলেন ছেলের রুমে।ছেলের সামনেই চুপ মেরে বসে রইলেন।স্বাদ বুঝতে পারছে রেহানা বেগম তাকে কিছু বলতে এসেছে।
স্বাদ– কিছু বলবে মা????
রেহানা বেগম– তুই রিদীমার সঙ্গে দেখা করলি,আমাকে কবে দেখা করাবি??
স্বাদ– সময় হলে দেখা হয়ে যাবে।
রেহানা বেগম– না আমি আজকেই দেখা করবো।
স্বাদ– জেদ করো না মা,তোমার জন্য কাজ ফেলে রেখে দেশে চলে এসেছি।এখন আর নতুন করে বায়না করো না প্লিজ।
রেহানা বেগম– আমি কিছু শুনতে চাই না, আমাকে আজ রিদীমার সঙ্গে দেখা করাবি ব্যাস।
স্বাদ– Impossible …… হবে না মা।??
রেহানা বেগম– রিদীমার নাম্বার টা দে।
স্বাদ– কেন?ওর নাম্বার দিয়ে তুমি কি করবে??
রেহানা বেগম– ওকে আসতে বলি আমাদের বাড়ি।
স্বাদ– ও জীবনেও আসবে না। ??
রেহানা বেগম– তাহলে বাইরে কোথাও দেখা করতে বল।
স্বাদ– ওর সময় নেই মা।
রেহানা বেগম– আমাকে ওদের বাড়িতে নিয়ে চল তাহলে।
স্বাদ– ছোটদের মত করছো কেন????
রেহানা বেগম — আরে আমাকে নিয়ে চল,আজ ছুটির দিন।বাড়িতেই থাকবে রিদীমা। ওর সাথে দেখাও হয়ে গেল।আর ওদের বাড়ির লোকদের সাথে আলাপ ও হয়ে গেল।
স্বাদ– পারবো না আমি।??
রেহানা বেগম– আমি রেডি হচ্ছি।তুই বস।
স্বাদ– শুনো তো আরে!!☹☹
রেহানা বেগম ছেলের কথায় কান না দিয়ে চলে গেলেন।স্বাদ জানে বলে কোনো লাভ হবে না। আজ তার মাকে নিয়ে যেতেই হবে।কথা শোনার পাত্রী উনি একেবারেই নন।
ইসুয়া ঘুমিয়ে পড়েছে কিছুক্ষণ আগে।রবিন এতক্ষণ ফোন স্ক্রল করছিলো।ইসুয়া ঘুমিয়ে পড়েছে কিনা শিউর হয়ে সে ঘুমন্ত ইসুয়ার দিকে এগিয়ে আসে।মুখের উপর পড়ে থাকা চুল গুলো একটা আঙ্গুল দিয়ে সরিয়ে কানের পিছনে গুঁজে দেয়।
নিজের ঠোঁট দুটো হালকা ভাবে ছুঁয়ে দেয় ইসুয়ার কানে।ইসুয়ার বডি স্মেইলটা খুব করে রবিনের নাকে বাজছে।কি মোহময় সে ঘ্রাণ!মাতাল করা প্রিয় মানুষটার গায়ের গন্ধে নিজেকে কি কন্ট্রোল করা যায়??
রবিন ইসুয়ার গলায় চুমু খেল। মুহূর্তের মধ্যেই জেগে গেল ইসুয়া।রবিনকে নিজের এত কাছে দেখে ভড়কে যায় সে।ইসুয়ার শরীর কাঁপতে থাকে,,,,
ইসুয়া টেনে টেনে বলে — আপপপপনি???
রবিন কি বলবে ভেবে পায় না, আমতা আমতা করে বললো — Actually চার্জার! চার্জারটা পাচ্ছি না। দেখতে এলাম বালিশের তলায় আছে কিনা??
ইসুয়া হাঁফ ছেড়ে– ওহহহহহ…….??
রবিন যেন প্রাণে বেঁচে গেল।আর একটু হলেই ভুল বুঝতো ইসুয়া। রবিন চায় না নতুন করে আর দূরত্ব তৈরি হোক তাদের মধ্যে।
রবিন– বাইরে যাবে ঘুরতে??
ইসুয়া– এখন??
রবিন– হ্যাঁ!তৈরি হয়ে নাও।
ইসুয়া– আজ না অন্য একদিন।
রবিন– As your wish……Miss. অধ্যাপিকা!!??
রবিন রুমে থেকে বেরিয়ে নিচে ড্রয়িং রুমে গেল।রিদীমা ও বসা ছিলো ড্রয়িং রুমের সোফায়। রবিনকে দেখে একবার আড়চোখে তাকায়।
রবিন বসতে বসতে বলে– কি করছো আপু??
রিদীমা– বসে আছি।
রবিন– সে তো দেখতেই পাচ্ছি।
রিদীমা– তাহলে জিজ্ঞেস করছিস কেন??
রবিন গম্ভীর মুখে– এমনিতেই।
রিদীমা– তুই এসব কাজ কবে থেকে করছিস??
রবিন– কিসের কাজ????
রিদীমা– আমাকে বোকা বানাতে আসিস না।
রবিন– সত্যি বুঝতে পারছি না আমি তুমি কিসের কথা বলছো??
রিদীমা– তুই black wo……………
তখনই কলিং বেল বেজে উঠল। রবিন রিদীমার দিকে তাকিয়ে– আমি দেখছি কে এলো??
রবিন গিয়ে দরজা খুলে দেয়। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে নিশুয়া আর তারেক সাহেব। নিশুয়া হালকা চিৎকার করে বলে উঠে– Surprise ????
রবিন– আরে শালিসাহেবা যে!!
তারপর তারেক সাহেবের দিকে তাকিয়ে– আসুন আঙ্কেল, ভিতরে আসুন।
তারেক সাহেব আর নিশুয়াকে নিয়ে রবিন ভিতরে এলো।নিশুয়া রিদীমাকে দেখে এগিয়ে গেল,,
নিশুয়া– কেমন আছেন আপু??
রিদীমা– Hey little girl…. ভালো ,তুমি কেমন আছো??
নিশুয়া– হেব্বি ভালো।
রিদীমা– কেমন চলছে পড়াশোনা??
নিশুয়া– ভালোই।
আফজাল সাহেব আর দিতী বেগম সিড়ি দিয়ে নামছিলেন,, তারেক সাহেবকে দেখে আফজাল সাহেব মুখে হাসি ফুটিয়ে এগিয়ে আসে।
আফজাল সাহেব– কি খবর বন্ধু????
তারেক সাহেব– ভালো না, মেয়েটার জন্য খারাপ লাগছিলো তাই না জানিয়েই চলে এসেছি।
দিতী বেগম– সে আপনার যখন ইচ্ছা হবে চলে আসবেন।জানাতে হবে কেন??
রিদীমা নিশুয়ার দিকে তাকিয়ে– চল উপরে যাই আমরা। ইসুয়া কে surprise টা দেওয়া যাক।??
নিশুয়া হেসে– একদম??
দরজায় আবারো বেল বাজলো। রিদীমা রবিনের দিকে তাকিয়ে– দেখ তো কে এসেছে??
দরজা খোলাই ছিলো,রবিন গিয়ে দাঁড়াতেই স্বাদ আর তার মাকে দেখে অবাক। তাদের ভিতরে নিয়ে আসে রবিন। রিদীমা সিড়িতে পা রাখতে যাবে তখনই রেহানা বেগম বলে উঠলেন– রিদ মামণি ??
রিদীমা অবাক হয়ে পিছনে ফিরে– আন্টি!আপনি??
রেহানা বেগম– এসে পড়লাম আর কি??
স্বাদ– আর বলিস না, তোর সাথে দেখা করবে বলে আমার জান বের করে ফেলছিলো।??
দিতী বেগম আর বাকি সবাই স্বাদের মায়ের সাথে পরিচিত হন।ইসুয়া ও নিচে এসে সবাইকে দেখে একেবারে অবাক, সাথে বাবা বোনকে দেখে খুশি ও হয়েছে অনেক।
দিতী বেগম ,সুরাইয়া খান আর ইসুয়া সবার জন্য হালকা নাস্তা তৈরি করতে লেগে পড়েন।রিদীমা রেহানা বেগমের সাথে কথা বলছে।রেহানা বেগম যেন এতদিনের সব কথা জমিয়ে রেখেছে রিদীমার জন্য। স্বাদ,রবিন আর নিশুয়া নিজেদের মধ্যে আড্ডা দিচ্ছে।
_________________________(চলবে)