Ragging To Loving 2❤পর্ব-১৯

0
1035

#Ragging_To_Loving__2
#পর্বঃ- ১৯
#রিধিরা_নূর

দাদী, দাদু এয়ারপোর্টে অপেক্ষা করছে। বিমান অবতরণ স্থলে পৌঁছানোর ঘোষণা দিয়েছে। অস্থির দুই জোড়া চোখ অধীর আগ্রহে কারো অপেক্ষা করছে। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটলো। দাদী দাদুর মুখে বিশাল বড় হাসি ফুটে উঠল। দাদীর অশ্রুসিক্ত নয়নে এক ফোঁটা নোনাজল বেয়ে পড়ল। জিন্স-টপ পরিধান করা, এলোমেলো চুল পিঠ পর্যন্ত ঝুলে আছে। ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি। মেয়েটি এগিয়ে এলো দাদী দাদুর কাছে। দাদী পরম আবেশে মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরল। চোখের জল যেন বাঁধা মানছে না।

দাদু — কেমন আছ দাদুমনি?

মেয়েটি — আই এম গুড। হাউ আর ইউ?

দাদু — গুড।

দাদী — পায়েলি তুমি একা এসেছ? কেউ আসে নি সাথে?

মেয়েটি — দাদী। ইটস নট পায়েলি। ইটস পার্লি৷ পার…লি।

দাদী — পারিলি?

পার্লি — পার্লি। পার.. লি।

দাদী — কীসব ইংরেজদের নাম দিয়েছে। পায়েল। পায়েলি। কত সুন্দর নাম। কি যেন নাম দিছে? পাল্লি।

পার্লি — হোয়াট? নট পাল্লি। পার্লি।

দাদু — থাক দাদুমনি। আস্তে আস্তে শিখে যাবে।

পার্লি — ওকে। (মুচকি হেসে)

দুই বছর বয়সে বাবা মায়ের সঙ্গে পার্লি সিঙ্গাপুরে স্যাটেল হয়। বাবার কাছ থেকে সবুজ, সুজলা, সুফলা, শস্য শ্যামলা দেশের অনেক কাহিনী শুনেছে। অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্যের কথা। মনে কৌতুহল জাগত সেই দেশটি দেখার। গুগলে সার্চ দিয়ে আরও অনেক তথ্য পেল। কৌতূহল যেন আরও দৃঢ় হলো। বাবা মাকে জানায় সে বাংলাদেশে আসবে। নিজ দেশের মাটির ঘ্রাণ, প্রকৃতির হাওয়া উপভোগ করার লোভ ইমরান সাহেবের উপর ঘ্রাস করে। সেও দেশে বাবা মার কাছে যেতে চাই। কিন্তু তার স্ত্রীর কড়া নির্দেশের কারণে আসার সাহস যোগাতে পারে নি। কিন্তু পার্লিও স্বাধীনচেতা মেয়ে। স্বাধীনতা পেয়েই বড় হয়েছে। তাই যা চাই তা-ই করে। সে-ও সিদ্ধান্ত নিল। বাংলাদেশে আসবে মানে আসবেই। মেয়ের জেদ এবং খুশির কাছে হার মেনে ইমরান সাহেব স্ত্রীর বিরুদ্ধে গিয়ে সব আয়োজন করে। বাবা মায়ের সামনে দাঁড়ানোর সাহস তার নেই। কারণ বৃদ্ধ বয়সে যখন তার বাবা মায়ের লাঠি হওয়ার কথা ছিল তখন সে তাদের একা ফেলে চলে এসেছে প্রদেশে। দাদী দাদুর পূর্বকার ঠিকানা হওয়ায় ইমরান সাহেবের সমস্যা হলো না। তাদের ফোন নাম্বার আয়োজন করে পার্লি যোগাযোগ করে।

দাদী দাদুর খুশি যেন আকাশচুম্বী। রক্তের বন্ধন ছিন্ন করা এতই সহজ নাকি। সেই ছোট বেলায় দাদীর কোলে হাত পা নেড়ে খেলা করেছে। দাদুর হাত ধরে চলতে শিখেছে।

পার্লিকে দেখে দাদী দাদু যতটা খুশি হয়েছে সমানে পার্লিও ততটা আনন্দিত হয়েছে। প্রথম দেখায় যে হৃদয়ে এভাবে আন্তরিকতা জন্ম নিবে ভাবে নি।

পার্লি — দাদু আমি চট্টগ্রাম যাব। যেখানে আমার জন্মস্থান।

পার্লির মুখে নিখুঁত বাংলা ভাষা শুনে দাদু দাদী দুজনেই বেশ অবাক হলেন। যখন তারা সিঙ্গাপুর গিয়েছিল তখন সবে মাত্র পার্লির মুখে বুলি ফুটেছিল। মাতৃভাষা বলতে পারবে তা জানা ছিল না।

দাদী — দাদুমনি তুমি তো বেশ ভালোই বাংলা বলতে পার।

পার্লি — হ্যাঁ! বাবা বাংলা ভাষায় কথা বলত। বাবার কাছ থেকেই শিখেছি। এখানে আসার আগে বাবা অনেক কিছু জানিয়েছে।

দাদী দাদুর মনে এক রাশ অভিমান জমে আছে। একটিবার দেশে এলে কি খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যেত? বাবা মায়ের বুকটা খালি করে চিরতরে চলে গিয়েছে দূরদেশে। একটা ফোন কলও কি দেওয়া যায় না? তা না হোক কিন্তু আজ। আজও আসতে পারল না?

পার্লি — চল চট্টগ্রাম।

দাদু — আজ এতদূর থেকে ভ্রমণ করে এসেছ। ক্লান্ত হয়ে গিয়েছ। আজ বিশ্রাম নাও৷ কাল সকালেই রওনা দিব।

পার্লি — নো। আমি আজই যাব। বরং এক্ষুনি যাব। যেই করেই হোক টিকেট আরেঞ্জ কর।

দাদী — কিন্তু….

পার্লি — নো মিনস নো। আমি এখনই যাব। ব্যাস।
.
.
.
আহিল — অভিশাপ দিলাম তোর কপালে যেন একটা আনরোমেন্টিক বউ জুটে। শালা আমার রোমেন্সে বাঁধা দিছস। তোর বউ তোর রোমেন্সে বাঁধা দিবে।

আফরান খিলখিল করে হেসে উঠল। পিছন থেকে পান্না এসে আফরানের হাত ঝাপটে ধরল।

আহিল — (আনরোমেন্টিক বলেছিলাম কিন্তু এখানে তো চিপকু ফেবিকল চলে এসেছে।)

পান্না আহিলের সাথে কুশল বিনিময় করল। আহিলও কৃত্রিম হাসি দিয়ে কুশল বিনিময় করল। এরপর পান্না আফরানকে টেনে নিয়ে গেল।
.
.
আমরিন দৌড়ে এসে হাঁপাতে লাগলো। হৃৎপিন্ডটা অনবরত ধুকপুক ধুকপুক করছে। হঠাৎ তার অস্বস্তি লাগছে। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে।

সিমা — আমরিন কি হয়েছে তোর? (চিন্তিত হয়ে)

আমরিন — আ..আমি বাসায় যাব। শরীরটা ভালো লাগছে না।

তখনই আহিল এলো। আহিলকে দেখে যেন তার অস্বস্তি আরও বেড়ে গেল। কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বেরিয়ে গেল। তার পিছে পিছে বাকিরাও বেরিয়ে গেল।

ওয়াসিম — তোরা না লাইব্রেরী গিয়েছিলি? তাহলে হঠাৎ আমরিনের কি হলো?

আহিল — হয়তো হৃদয়ের গহীনে সূক্ষ্ম অনুভূতি কড়া নেড়েছে। (ভাবলেশহীন হয়ে)

ওয়াসিম — এ্যাহহ!

কেউ কিছুই বুঝল না। আহিলও কোন ভাবান্তর না করে বেরিয়ে পড়ল।
.
.
পান্না, আফরান একটি ক্যাফেটেরিয়ায় বসে আছে। পান্না তার ফোনে ব্যস্ত। আফরান চুপচাপ কফির কাপে চুমুক দিল। পান্নার উচ্চশব্দে ফিরে তাকাল। পান্না হাত নেড়ে কাউকে ইশারা করছে। আফরান তাকিয়ে দেখে দুজন মেয়ে তাদের দিকেই এগিয়ে আসছে। পান্নার কাছে এসে স্টাইলিশ মার্কা বড়লোক্স টাইপ আলাপ করল।

পান্না — রিতা, ঝিনুক। এই হলো আফরান। মাই বয়ফ্রেন্ড। আর এরা হলো আমার কলেজ ফ্রেন্ডস। দুই বছর পর দেখা হলো ঢাকায় ফটোশুটে।

রিতা, ঝিনুক ড্যাবড্যাব করে আফরানের দিকে তাকিয়ে আছে। বিষয়টি আফরানের কাছে অস্বস্তিকর লাগলো। তবুও ঠোঁটের কোণে হাসি বিদ্যমান রাখল। অনেক্ষণ যাবত তাদের মাঝে আলাপ চলল। আলাপের বিষয় তাদের শো অফ করা নিয়ে। এর মাঝে আফরান ফাইস্যা গেল মাইনকার চিপায়। মনে মনে একটা দোয়ায় করছে এখান থেকে বের হতে পারলেই বাঁচা গেল। কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে কিছু বলতেও পারছে না। হঠাৎ এক দুষ্টু হাসি দিল। ফোনে এক মিনিট পর রিমাইন্ডার সেট করে দিল। এরপর চুপচাপ স্বাভাবিক হয়ে বসে আছে। এক মিনিট পর ফোন রিং হতেই এমন ভাব ধরল যেন কেউ সত্যি ফোন দিয়েছে। গম্ভীর মনোভাব নিয়ে কথা বলতে লাগলো।

আফরান — কি বলছ? কবে? আমাকে জানালে না কেন? আচ্ছা আমি আসছি। চিন্তা কর না। (সব ঢং)। গাইজ আই হেভ টু গো। তোমরা কথা বল আমার কিছু জরুরি কাজ এসে পড়েছে। (কিছু বলতে না দিয়ে দ্রুত বেরিয়ে এলো। বাইরে এসে স্বস্তির নিশ্বাস নিল।)

রিতা — পান্না হি ইজ সো হ্যান্ডসাম। আই এম শিওর লাভ এট ফার্স্ট সাইট। রাইট?

পান্না বাঁকা হাসি দিল।

পান্না — লাভ? হি ইজ জাস্ট মাই ট্রাম্প কার্ড। আই অনলি লাভ মাই ড্রিম।

ঝিনুক — মানে?

পান্না — তোমরা জানোই ছোট বেলা থেকে আমার একটাই স্বপ্ন। মডেলিং। আর আমার স্বপ্নের শিকরে পৌঁছাতে আফরানকে সিড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছি। আফরানের বাবা মি. শরীফ আহমেদ। আহমেদ টেক্সটাইল কোম্পানির মালিক। উনার সাথে অনেক বড় বড় লোকদের পরিচয় আছে। আমার স্বপ্নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তার পরিচিতি হেল্প করেছে।

ঝিনুক — মানে? কীভাবে?

পান্না — আফরান। শরীফ আহমেদের পরিচিতির সুবাদে আফরানেরও অনেক নাম আছে। আর তাকে বয়ফ্রেন্ড বানানো মানে তার সাথে নিজের পরিচয় যুক্ত করা। আফরানকে ব্যবহার করেই ঢাকার ফটোশুটের ইনভেস্টরের সাথে খাতির জমায়। ব্যস আমার ৭৫% কাজ সেভাবেই হয়ে গেল। এটা জাস্ট স্টার্টিং ছিল। আমার মডেলিং ক্যারিয়ারে আমার আরও দূরে এগিয়ে যেতে হবে। এসব ছোটখাট মডেলিং-এ আমার স্বপ্ন পূরণ হবে না। আমার স্বপ্ন ইন্টারন্যাশনাল মডেলদের মধ্যে আমার নাম টপে থাকবে। আমার জনপ্রিয়তা বাড়বে।

রিতা — আর আফরান?

পান্না — লাইক আই সেইড। সে শুধু আমার লক্ষ্যে পৌঁছানোর সিড়ি। উচ্চতায় পৌঁছে গেলে সিড়ির প্রয়োজন নেই। (তাচ্ছিল্য হাসি দিল)
.

আমরিন জানালার পাশে বইয়ের মাঝে মুখ গুজে বসে আছে। আহিলের চিন্তা কিছুতেই মাথা থেকে ফেলতে পারছে না। অস্থির লাগছে ভীষণ। কোন কাজেই মন বসছে না। মাথাটা ঝিম ধরে আছে। উঠে গেল রান্নাঘরে। চা বানানোর জন্য চুলায় পানি বসালো। ভাবনার মাঝে আহিলের চেহারা ভেসে উঠল। আহিলের এতটা কাছে ছিল ভাবতেই শিউরে উঠল। নিশ্বাসটাও ভারি হয়ে আসছে। হঠাৎ পোড়া গন্ধ নাকে লাগতেই তড়িঘড়ি তাকিয়ে দেখে পানি শুকিয়ে পাত্র পুড়ে গিয়েছে। আচমকা হাত দিয়ে ধরতে হাতে সেঁকা লাগে। রাগে, দুঃখে শরীর জ্বলে যাচ্ছে। চুলা নিভিয়ে চলে গেল। আর চা খাওয়া হলো না।

.

রিকশা থেকে নেমে ভাড়া দেওয়ার জন্য আফরান পকেটে হাত দিয়ে দেখে ওয়ালেট নেই। সব পকেটে চেক করেও ওয়ালেট পেল না। ফোন আর ওয়ালেট সবসময় একসাথে রাখে। ফোন আছে কিন্তু ওয়ালেট নেই।

আফরান — মামা আপনি একটু অপেক্ষা করেন আমি ভেতর থেকে টাকা নিয়ে আসি।

ভেতরে প্রবেশ করে মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভাড়া পরিশোধ করল। কিন্তু ওয়ালেট গেল কোথায়? ভাবতে ভাবতে হঠাৎ মনে পড়ল সকালে রিহানের রুমে ড্রেসিং টেবিলের সামনে রেখেছিল।

আফরান — ওহ গড। ওয়ালেটে….। আমার এক্ষুনি যেতে হবে।

দ্রুত রওনা দিল রিহানের বাসার উদ্দেশ্যে। দশ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেল। গেইটের বাইরে দাঁড়িয়ে রিহানকে ফোন দিল।

আফরান — রিহান। আমার ওয়ালেট তোর ড্রেসিং টেবিলের সামনে রেখে এসেছি। তাড়াতাড়ি নিয়ে আয়। আমি তোর বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছি।

রিহান — বাইরে কেন? ভেতরে আয়।

আফরান — না। আমি ঠিক আছি। তুই আয়।

তন্বী — আফরান ভাইয়া। তুমি এখানে? বাইরে কেন ভেতরে এসো।

আফরান — পুতুল। কেমন আছো?

তন্বী — আমি তো ভালো আছি। কিন্তু তোমার কোন খবর নেই। ভেতরে এসো না।

আফরান — না। না। কোন সমস্যা নেই।

বেলকনি থেকে রিহান বলে উঠল।

রিহান — তন্বী আফরানকে নিয়ে আয়। (নূর এখন বাসায় নেই। তাই সমস্যা হবে না।)

আফরান না করা সত্ত্বেও তন্বী তাকে নিয়ে এলো। তন্বী আফরানের কাছে ভীষণ আদরের। পুষ্পর মতো তন্বীকে ছোট বোনের মতো আদর করে। ছোট বেলায় তন্বী একটি লাল ফ্রক পরে লম্বা দুটো বিনুনি করে ছিল। দেখতে একেবারে পুতুলের মতো লাগছিল। এরপর থেকে আফরান তন্বীকে পুতুল বলে ডাকে। তন্বীও আফরানকে বড় ভাইয়ের মতো ভালবাসে। আফরান সর্বপ্রথম ভেতরে প্রবেশ করে নিজের ওয়ালেট নিয়ে নিল। ফিরে আসতে চাইলে তন্বী কোন ভাবেই আসতে দিচ্ছে না। গল্পে জুড়ে গেল।

নূর দাদুর বাসায় বসে আছে। পার্লির সাথে বেশ ভালোই খাতির জমে গিয়েছে তার। পার্লিও বেশ বন্ধুসুলভ মেয়ে। নূরের কথা হাসতে হাসতে তার পেট ব্যাথা করছে। কথায় যতটা না হাসি পাচ্ছে তার চেয়ে বেশি তার কথার ধরন দেখে।

নূর — বিএফ তুমি এটা ঠিক কর নি। আমার যে এতো বড় একটা নাতনি আছে তুমি আমাকে আগে বল নি কেন?

পার্লি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। দাদুকে বিএফ বলছে এবং তাকে নাতনি। পার্লির মুখের ভঙ্গিমা দেখে নূর ফিক করে হেসে দিল।

নূর — অবাক হওয়ার কিছু নেই। ইনি আমার বুড়ো বিএফ। আর ইনি আমার সতিন। সেই সুবাদে তুমি আমার নাতনি হলে না?

পার্লি খিলখিল করে হেসে উঠল।

পার্লি — ইউ আর সো ফানি।

নূর — আচ্ছা অনেক্ষণ তো কথা বললাম। এত দূর পথ যাত্রা করে এসেছ ক্লান্ত হয়ে গিয়েছ। এখন বিশ্রাম নাও। পরে আসব।

পার্লি নূরকে উঠান অবধি এগিয়ে দিল। এর মধ্যেও তাদের কথার শেষ নেই। দুজনে দাঁড়িয়ে বকবক করছে। আফরানও বেরিয়ে পড়ল। গেইটের কাছে এসে তন্বী, রিহানের কাছ বিদায় নিবে এমন সময় তার নজর পড়ল নূরের উপর। ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে।

আফরান — এই মেয়ে এখানে কি করছে? (নূরকে উদ্দেশ্য করে)

তন্বী উঁকি মেরে দেখে নূর আর পার্লি কথা বলছে।

নূর — আপুকে তো চেনোই। আর তার সাথে যে আছে সে হলো দাদুর নাতনি।

আফরান অবাক হয়ে তন্বীর দিকে তাকাল। আবার নূর আর পার্লির দিকে তাকাল।

আফরান — আনন্দিতা? (মৃদুস্বরে)

আফরান ভুলক্রমে পার্লিকে আনন্দিতা ভাবলো। আর নূরকে দাদুর নাতনি। আফরান নিষ্পলক পার্লির দিকে তাকিয়ে আছে। সেই ছোট্ট বাল্য বধূ আনন্দিতার সাথে পার্লিকে মেলাতে লাগলো।

আফরান — (অনেকটা বদলে গিয়েছ। ছোট বেলায় গুলুমুলু ছিলে, বড় হয়ে অনেক শুকিয়ে গিয়েছ। ছোট বেলায় ঢিলাঢালা ফ্রক পরতে। বধূ রূপী লাল শাড়ি মোড়ানো, হাত ভরতি চুড়ি, লাল রঙের রাঙা ঠোঁট জোড়া। আনন্দিতা। পিচ্চি আনন্দিতা।)

আনমনে হাসছে। পাশে নজর পড়ল নূরের উপর। নূরের তিড়িং বিড়িং আচরণ, লাফালাফির স্বভাব আফরান বিরক্তি ভঙ্গিতে দেখছে।

আফরান — (এই কি মেয়ে? নাকি বান্দরি। এতো লাফালাফি করে কেন?)

আফরান ভাবলো আনন্দিতার সাথে দেখা করবে। কিন্তু… দ্বিধা নিয়ে এগিয়ে গেল না। রিহান আর তন্বীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল।

.
.
.

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here