Ragging To Loving ?part-25

0
972

? Ragging To Loving ?
Part:: 25
Writer:: Ridhira Noor

তন্বি সুস্থ হওয়ায় বাসায় নিয়ে এলো। পুষ্প বিকালেই বাড়ি ফিরে গিয়েছিল। নূর তন্বি রুমে বসে আছে। আম্মু মাত্রই স্যুপ দিয়ে গেল ত্তন্বিকে খাওয়াতে। নূর চামচ কেটে খাইয়ে দিল।

নূরঃঃ- তন্বি কি হয়েছিল তোর? হঠাৎ শরীর এতটা খারাপ হলো কিভাবে? তুই তো সব কিছু আমার সাথে শেয়ার করিস। এটাও শেয়ার কর।

তন্বিঃঃ- সকালে কলেজে গিয়েছিলাম। তোমার মনে আছে সেই চারজন ছেলে যারা র‍্যাগিং করেছিল।

নূরঃঃ- ওরা কিছু করেছে?

তন্বিঃঃ- না ওরা না। ওরা তো অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ওদের বন্ধু শাহেদ রাফি। একটা আমাদের কলেজের প্রিন্সিপালের ছেলে আর অন্যটা অধ্যাপকের ছেলে কিছুদিন আগেই ট্রান্সফার হয়েছে কলেজে। প্রতি তিন মাসে কলেজ বদলি করতে হয় তাদের কান্ড কীর্তির জন্য। ওরাই কিছু মেয়েদের উতক্ত করছিল আমি গিয়ে বাঁধা দেয় তাই সে….. (ভয়ে কেঁপে উঠল) তুমি তো জানো তেলাপোকা আমি কতটা ভয় পায়। ওরা জীবন্ত তেলাপোকা আমার গায়ে ঢেলে দেয়। ভয়ে আমি সেন্সলেস হয়ে পড়ি।

নূরঃঃ- তুই চিন্তা করিস না। (তন্বির গালে হাত দিয়ে) এখন শুয়ে পড়। (চাদর উড়িয়ে দিল)
.
.
.
আমরিনঃঃ- কিরে নূর আজ কোচিং এ এলো না কেন?

পুষ্পঃঃ- এইরে সরি তোদের বলতে ভুলে গেছি। তন্বি অসুস্থ তাই আসেনি। আর জানিসই তো তন্বিকে নিয়ে ও কতটা প্রোটেক্টভ। যখন ওই ঘটনা হয়েছে তার পর থেকে তন্বির প্রতি সে একটু বেশি প্রোসেসিভ হয়ে গেল।

সিমাঃঃ- এটা কি ভুলে যাওয়ার কথা। চল আমরা এক্ষুনি তন্বিকে দেখতে যাব। তন্বি শুধু নূরের না আমাদেরও বোনের মতো।

আলিফাঃঃ- চল।
_______________________________

রহিম চাচার সেই চায়ের দোকানে শাফি সুমন সাব্বির মারুফ বসে চা খাচ্ছিল। হঠাৎ একটা বাইক এসে তাদের সামনে থামলো। হেলমেট খুলে মুখে রুমাল বাঁধা। তারা চিনে ফেলল এই তো সেই মেয়ে যে ওদের শায়েস্তা করেছিল। তারা পালিয়ে যেতে নিলে মেয়েটি থামিয়ে দেয়।

মেয়েটিঃঃ- দাঁড়াও (চিল্লিয়ে বলায় তারা থেমে যায়)

সাব্বিরঃঃ- আমাদের কোন দোষ নেই। আমরা বারবার তাদের বারণ করেছি। প্রিন্সিপালের ছেলে হওয়ায় আমরা তাদের আটকাতে পারিনি।

মেয়েটিঃঃ- ওই দুইজনকে কোথায় পাব শুধু এইটুকু বল।

শাফিঃঃ- ওরা একটু পর এখানেই আসবে আড্ডা দিতে।

মেয়েটিঃঃ- ঠিক আছে। এক মিনিটের মধ্যে চলে যাও এখান থেকে। আমার কাজে কোন বাঁধা হোক আমি চাই না। চাচা আপনিও দয়া করে আজকের জন্য দোকান বন্ধ করে দেন।

রহিম চাচা দোকান বন্ধ করে দিল। সাব্বিররা চলে যেতে নিয়ে আবার ফিরে তাকাল।

সাব্বিরঃঃ- ধন্যবাদ আপু। ওইদিন যদি আপনি আমাদের শিক্ষা না দিতেন তাহলে আমাদের মধ্যে পরিবর্তন হতো না। আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পারতাম না। হয়তো আমরাও ওদের মতো অন্যায় করেই যেতাম। থ্যাংক ইউ। (তারা চলে গেল।)

রাস্তাটা এখন সম্পূর্ণ নির্জন। কিছুক্ষণ পরই জীপে করে দুইজন ছেলে এলো। তাদের মধ্যে একজন বলে উঠল।

রাফিঃঃ- শাহেদ ইয়ার আজকে মেয়েটার অবস্থা দেখার মতো ছিল। তেলাপোকা দেখে যেভাবে নাচানাচি করল। আরেকটু নাচলে ভালো বিনোদন হত। কিন্তু ভীতু বেহুশ হয়ে পড়ে গেল।

শাহেদঃঃ- তুই যে তেলাপোকা নিয়ে ঘুরিস জানতাম না। হাহাহা।

রাফিঃঃ- আরে মামা সবাইকে জানাতে হবে না কোন ভূমিকম্প আসছে কলেজে।

তাদের কথা শুনে বুঝতে বাকি রইল না এরাই শাহেদ আর রাফি। আপনাদেরও বুঝতে বাকি রইল না এটা কে? তাদের কথা শুনে মুহূর্তেই রাগ উঠে গেল। হাতে থাকা হকি স্টিক জোরে চেপে ধরল। গিয়ে জীপের সামনের গ্লাসে সজোরে আঘাত করল। মুহূর্তে গ্লাস ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। ঘটনার তড়িতে শাহেদ রাফি কিছু বুঝে উঠার আগেই আরেকটা বারি দিল। তারা গাড়ি থেকে নেমে পড়ল।

রাফিঃঃ- হেই ইউ হোয়াট আর ইউ ডুয়িং? আর ইউ আউট অফ ইউর মাইন্ড?

একটু আগে সেই তন্বির কথা বলছিল। রেগে স্টিক দিয়ে তার মাথায় আঘাত করল। মাথায় ফেটে রক্তাক্ত হয়ে গেল। রাফি মাথা ধরে নিচে বসে পড়ল। এটা দেখে শাহেদ এগিয়ে আসতেই তার উপরও হামলা করে। ইচ্ছে মতো মারতে লাগলো।

আফরান কার ড্রাইভ করছে। তার মাথায় শুধু নূর ঘুরপাক খাচ্ছে। তার সেই কান্না মাখা চেহারা। ছলছল চোখ দুটো। নিজেরই অস্বস্তি হতে লাগলো। না চাওয়া সত্ত্বেও বারবার কেন তার কথায় চিন্তা করছে। হঠাৎ চোখ পড়ল সামনে গন্ডগোল চলছে। গাড়ি ব্রেক করে সেদিকে এগিয়ে গেল।

শাহেদকে মারার সময় পিছন থেকে রাফি উঠে এসে তাকে চেপে ধরে। তার হাত থেকে ছুটার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। শাহেদ তার হাত থেকে হকি স্টিক ছিনিয়ে নিল। রাফি সজোরে ধাক্কা দেই। পড়ে যাওয়ার আগেই আফরান ধরে ফেলে। মাথা উঠিয়ে দেখে। রুমাল বাঁধা থাকায় চেহারা দেখতে পায়নি। আফরানের চোখ পড়ল তার চোখে। খুব চেনা পরিচিত লাগছে চোখ দুটো। কিছু বুঝে উঠার আগেই শাহেদ পিছন থেকে স্টিক দিয়ে আঘাত করতেই আফরান তাকে বুকের মাঝে আঁকড়ে ধরে উল্টো হয়ে ফিরে দাঁড়ায়। ফলে আঘাত গিয়ে লাগে তার মাথায়। জোরে আঘাত লাগাই আফরানের সামনে ধীরে ধীরে সব ঘোলাটে হতে লাগলো।দেহ নিথর হয়ে পড়ে যেতেই চিৎকার দিয়ে উঠল। আফরায়ায়ায়ানননননন। পড়ে যেতে মুখের রুমাল আঁকড়ে ধরে ফলে মুখ থেকে রুমাল খুলে যায়। চেহারা দেখার আগে আফরান সেন্স হারিয়ে ফেলে। শাহেদ আবার আঘাত করার আগে তৎক্ষনাৎ তিনজন মেয়ে এসে তাদের আটকে দেয়। তাদের দুইজনকে একসাথে বেঁধে দিল।

আমরিনঃঃ- নূর… এদের আমি আর সিমা সামলে নিব। পুষ্প তুই নূরের সাথে আফরানকে নিয়ে হসপিটালে নিয়ে যাহ। প্রচুর রক্ত ঝরছে।

নূর নিথর হয়ে আফরানের পাশে বসে আছে। নড়ছেই না। পুষ্প তাকে ঝাকিয়ে দিল।

পুষ্পঃঃ- নূর ধর ওকে। হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে প্রব্লেম বাড়তে পারে। (তারা আফরান ধরে উঠাল) বাইকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। আমি বাইক নিচ্ছি তুই তাকে কারেই নিয়ে যাহ তাড়াতাড়ি কর।

সিমাঃঃ- মেহের তোরা পৌঁছে গিয়েছিস তো? হ্যাঁ আমরা আসছি। ওকে বাই। আমরিন চল।

আফরানকে পাশের সিটে বসিয়ে নূর ড্রাইভিং সিটে বসল। ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ঝরতে দেখে অনেকটা ভয় পেয়েছে। রুমালটা আফরান মুষ্টিবদ্ধ করে ধরে আছে। তারা কিছুক্ষণের মধ্যে পাশ্ববর্তী একটি হসপিটালে নিয়ে এলো। ডক্টর আর নার্স এসে আফরানকে নিয়ে গেল। নূর বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। নূর এদিক থেকে ওদিক পায়চারি করছে। পুষ্প এসে নূরকে এভাবে দেখে কিছুটা আশ্চর্য হলো।

পুষ্পঃঃ- ভালবাসিস?

নূরঃঃ- তোর কি মাথা খারাপ? এমন অবস্থায় জিজ্ঞেস করছিস আমি আফরানকে ভালবাসি কি না?

পুষ্পঃঃ- (আমি তো আফরানের নামই নিই নাই। তুই তো চাইলে নাও বলতে পারতি। কিন্তু এড়িয়ে গেলি। বিনিময়ে শুধু মুচকি হাসলো) না মানে তুই যেভাবে টেনশন নিচ্ছিস এমন তো তন্বির সময়ও করিস নি।

নূরঃঃ- (অবাক হয়ে তাকাল) না…মানে… আমার জন্যই উনার এমন অবস্থা তাই কিছুটা চিন্তিত।

পুষ্পঃঃ- চিন্তা করতে হবে না। রিহান আসছে। রিসেপশনিস্ট তাকে জানিয়ে দিয়েছে।

নূরঃঃ- রিহানের নাম্বার পেল কোথায়?

পুষ্পঃঃ- তোর এত কিছু ভাবতে হবে না। তুই ভাব ওদের কি করবি?

নূরঃঃ- তা ভেবে নিয়ে….. (পুষ্প নূরকে টেনে সাইডে নিয়ে এলো)

পুষ্পঃঃ- শশশশ। রিহান। আমাদের দেখলে সমস্যা হবে।

কিছুক্ষণ পর ডক্টর এসে জানিয়ে দিল সিরিয়াস কিছু হয়নি। মাথার পিছনে আঘাত লাগায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। একটু পরই জ্ঞান ফিরবে। নূরের জানে যেন জান এলো। রিহান আফরানের কেবিনে গেল আর পুষ্প নূর রওনা দিল পুষ্পদের গোডাউনের উদ্দেশ্যে। আলিফা আর বাকিরা সেখানে। সবার মুখ রুমাল দিয়ে ঢাকা। একটা বড় কাঁচের বাক্সে শাহেদ রাফি বাঁধা। নিজেদের ছাড়ানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। কিন্তু ব্যর্থ হলো।

আমরিনঃঃ- তোরা জানিস না তোরা কত বড় অপরাধ করে ফেললি। কার ক্ষতি করতে গিয়েছিলি।

আলিফাঃঃ- তোদের এখন কি হবে আমরা নিজেরাও জানি না।

সিমাঃঃ- ওর কলিজায় আঘাত কর‍তে গিয়েছিলি এবার বুঝ ঠেলা। (তখনই পুষ্প এলো) নূর কোথায়?

নূরঃঃ- এই যে আমি। (হাতে দুইটা বড় বাক্স নিয়ে শাহেদ ও রাফির কাছে গেল।) খুব শখ না র‍্যাগিং করার। নাও পেই ফর ইট।

বাক্স খুলে ঢেলে দিল বড় বড় জঙ্গলি ইঁদুর। ইঁদুরগুলো তাদের কামড়াতে লাগলো। বাঁধা থাকায় তারা অসহায়ের মতো কামড় খাওয়া ছাড়া কিছু করতে পারছে না।

নূরঃঃ- (চোখের পানি ছলছল করছে) একজনকে হারিয়েছি তোদের মতো অমানুষের জন্য। আরেকজনকে হারাতে দিব না। তোদের র‍্যাগিং ছুটাচ্ছি। সারারাত ইঁদুরের কামড় খা কাল সকালে মুক্তি পাবি। এরপরও যদি না শুধরাস তাহলে পরবর্তীতে কি হবে নিজেও জানি না। থাকুক ওরা চল আমরা যায়।

বাইরে এসে সবাই নূরের উপর ক্ষেপে গেল।

আলিফাঃঃ- আমাদের না বলে একা গেলি কেন? যদি তোর বাসায় গিয়ে তন্বির কাছ থেকে কাহিনি না জানতাম তাহলে কি হতো বুঝতে পারছিস।

মেহেরঃঃ- এভাবে একা যাওয়ার কোন মানে হয় না। আমরা একসাথে সব কাজ করি। তুই আমাদের না জানিয়ে….

নূরঃঃ- সরি। একটু সেন্টি হয়ে গিয়েছিলাম তাই। আর হবে না। এখন চল। অনেক দেরি হয়ে গেল।

.
.
.

চলবে

বিঃদ্রঃ ধামাকা কেমন লাগলো জানিও। আর পরবর্তী ধামাকার জন্য রেডি থাকিও। ??
আর হ্যাঁ যারা অনুমান করতে পেরেছ তাদের জন্য রিপন ভিডুর তরফ থেকে আইলাভিউ।
আর যারা পারনি তাদের হিরো আলম এর তরফ থেকে এক বদনা সমবেদনা ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here