Ragging To Loving ?part-22

0
946

? Ragging To Loving ?
Part:: 22
Writer:: Ridhira Noor

আফরান ড্রাইভ করছে নূর আড়চোখে বারবার আফরানের দিকে তাকাচ্ছে। আর চিন্তা করছে তার মাথায় কোন খুরাফাতি চলছে। এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করায় নূর সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে। কিছু বলতে যাবে তার আগেই আফরান গাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে। নূর বাইরে তাকিয়ে দেখে একটা বাড়ি। আফরানদের ফার্ম হাউস। হঠাৎ মনে ভয় হতে শুরু করল। জামা খামচে ধরে গাড়ির সিটে বসে আছে। আফরান নূরের পাশে দাঁড়িয়ে আছে।

আফরানঃঃ- ম্যাডাম এখন কি আপনাকে দরজা খুলে দিয়ে ফুলের কার্পেট বিছিয়ে ভেতরে নিয়ে যেতে হবে? (নরম সুরে বলল) এক্সকিউজ মি আজকে তুমি আমার পিএ আমি তোমার নয়। সো কাম আউট ফাস্ট।

নূর তৎক্ষনাৎ গাড়ি থেকে বেরিয়ে আফরানের সামনে গিয়ে দাঁড়াল। আফরান ভেতরে গেল নূরও গুটিসুটি পায়ে তার পিছনে গেল। একটা ছোট ছেলে ৭-৮ বছর হবে আফরানের সামনে এসে দাঁড়াল।

আফরানঃঃ- রাহাত তুই এখানে কি করছিস? তোর স্কুল নেই আজকে?

রাহাতঃঃ- আছে ভাইয়া। আব্বার শরীর খারাপ। কাইল থিকা জ্বর। তাই আব্বার লগে আইছি। যদি শরীর খারাপ হয়। হেইল্লাইগা।

আফরানঃঃ- জাফর চাচা? আপনাকে বলেছিলাম না আগে নিজের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখবেন তারপর কাজে আসবেন। যান বাসায় যান। আরাম করুন।

জাফর চাচাঃঃ- কিন্তু বাজান তোমার খাউন কে দিব?

আফরানঃঃ- চিন্তা করিয়েন না আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়ে এসেছি। আজকে আমার সব কাজ সে করে দিবে। আর এই নিন। (কিছু টাকা দিল) ডাক্তার দেখিয়ে নিয়েন।

জাফর চাচাঃঃ- না বাজান লাগতো না।

আফরানঃঃ- আমি কোন কথা শুনতে চাই না।

তারপর জাফর চাচা চলে গেল। নূর দাঁড়িয়ে তাদের কার্যক্রম দেখছে। আফরানের এমন রূপ দেখে বেশ ভালোই লাগলো।

আফরানঃঃ- মিস খিটখিট। যাও আমার জন্য কফি বানিয়ে আন। চিনি এক চামচ দিয়ে। আর ওদিকে কিচেন। গো ফাস্ট।

নূরঃঃ- (হনহনিয়ে গেল কিচেনে) কফি খাবে কফি। ইচ্ছে করছে কফির মধ্যেই ডুবিয়ে মারি। খাওয়াচ্ছি কফি। (ইচ্ছেমতো কফি পাউডার দিয়ে কফি তেতো বানিয়ে ফেলল।)

কফি বানিয়ে আফরানকে দিল। আফরান ভাব নিয়ে পায়ের উপর পা দিয়ে বসে কফি নিল। কফি মুখে দিতেই ফুহহহ দিয়ে উড়িয়ে দিল। চেহারা দেখে মনে হচ্ছে এক্ষুনি বমি করে দিবে।

আফরানঃঃ- কি এটা। কফি নাকি বিষ?

নূরঃঃ- (বিষ হলে তো কথায় ছিল না) কফিই তো বানালাম। কেন ভালো হয়নি?

আফরানঃঃ- (রেগে নূরের দিকে আসল। আফরান নূর সামনা-সামনি দাঁড়াল। আফরান নূরের চেয়ে বেশ লম্বা। নূর কোমরে হাত দিয়ে মাথা উঁচু করে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আফরান নিচু হয়ে এক আঙ্গুল দিয়ে নূরের নাক চেপে হালকা পিছনে সরিয়ে দিল) মিস খিটখিট তুমি বোধহয় ভুলে যাচ্ছ আজ সারাদিন আমি যা বলব তাই করতে হবে। তাই নেক্সট টাইম এমন করলে এর চেয়ে আরো বেশি টর্চার করব। (নূর এবার একটু নরম হলো। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।) গুড। এবার যাও আমার জন্য কিছু রান্না কর। প্রচুর ক্ষিধে পেয়েছে। পুল সাইডে আছি। সময় ত্রিশ মিনিট। যা করার তাড়াতাড়ি কর। (অর্ধেক গিয়ে আবার পিছন ফিরে এলো) এবার যাই বানাও আগে তোমাকে দিয়ে টেস্ট করাবো। সো বি কেয়ারফুল।

নূরঃঃ- ইচ্ছে করছে আমার স্পেশাল মুলার জুস খাইয়ে দেই। পরে যদি আমার উপরই রিয়েকশন হয়। (এক দৌড়ে গেল কিচেনে। কি বানাবে চিন্তায় পড়ে গেল। উপরে সেল্ফ থেকে নুডলস বের করল) বাহ্ এটা তো আমার বাম হাতের খেলা। (নুডলস বানিয়ে নিল। একটা প্লেটে পরিবেশন করে নিয়ে গেল।)

আফরানঃঃ- আবার কোন…. (কথা শেষ করার আগেই নূর এক চামচ খেয়ে নিল। আফরান স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়ে খেতে লাগলো)

নূর আফরানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ পায়ে স্পর্শ অনুভব করে শিউরে উঠলো। নূর চোখ বড় বড় করে আফরানের দিকে তাকাল। আফরান নিজের মতো করে খেতে আছে। নূর আবারও অনুভব করল পায়ে কারো স্পর্শ। এবার রাগ উঠে গেল। ধুমম করে টেবিলে আঘাত করল। আফরানকে নিচের দিকে ইশারা করল।

আফরানঃঃ- হোয়াট? খাওয়ার থাকলে খেতে পার। আমি বারণ করিনি।

নূরঃঃ- আমার খাওয়ার কোন ইচ্ছে নেই। আপনি যা করছেন তা বন্ধ করুন।

আফরানঃঃ- তুমি না খেলে আমার কিছু যাই আসে না। আমার খাওয়াতে তোমার কি সমস্যা।

নূর আবারও শিউরে উঠলো। এবার রেগে দিল লাথি। সাথে সাথে নিচ থেকে আওয়াজ হলো। ঘেউ। নূর একদম শক্ত হয়ে রোবটের মতো দাঁড়িয়ে আছে। ধীরে ধীরে টেবিলের নিচে তাকিয়ে দেখে কুকুর। দিল এক চিৎকার। আআআয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া। নূরের চিৎকারে আফরানের হাত থেকে চামচ পড়ে গেল। নিচে তাকিয়ে দেখে ক্যাপ্সি। নূর দিল এক দৌড় তার পিছে ক্যাপ্সিও ঘেউ ঘেউ করে দৌড়ছে। আফরান ক্যাপ্সি আর নূর দুইজনকেই থামানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা নূর সুইমিংপুলের চারপাশে দৌড়াতে আছে। হঠাৎ আফরান সামনে চলে আসায় পিছলে সুইমিংপুলে পড়ে যায়। আফরান ধরার আগেই ধপাস করে পড়ে গেল। সাঁতার না জানায় পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। আফরান এক মুহূর্ত চিন্তা না করে ঝাপ দিল পানিতে। নূরকে টেনে কাছে নিয়ে আসতেই নূর শক্ত করে তাকে জড়িয়ে ধরল। চোখ খিছে বন্ধ করে আছে।

নূরঃঃ- আয়ায়া আমি ডুবে যাব। আমি সাঁতার জানি না। প্লিজ বাচান আমাকে। আআয়ায়ায়া।

আফরানঃঃ- নূর স্টপ। চুপ কর নইলে এক্ষুনি পানিতে ফেলে দিব।

মুহূর্তে চুপ হয়ে আফরানকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। ধীরে ধীরে তাকে উপরে আনল। ক্যাপ্সিকে দেখে আফরানের পিছনে লুকিয়ে গেল। আফরান ক্যাপ্সিকে অন্য দিকে যেতে বলতে দৌড়ে চলে গেল। নূর আফরান দুইজনে ভিজে একেবারে চুপসে আছে। এমন অবস্থায় নূর অস্বস্তি লাগছে। আফরান তার অবস্থা বুঝতে পেরে চোখ ফিরিয়ে নিল।

আফরানঃঃ- চল আমার সাথে। (নূরকে একটি রুমে নিয়ে গেল। নূর ভয়ে চিপায় দাঁড়িয়ে আছে।) চিন্তা কর না। ওই ওয়াড্রবে জামা আছে পড়ে নাও। ডান পাশে ওয়াশরুম আছে। আমি অন্য রুমে যাচ্ছি।

নূরঃঃ- আপনার এখানে মেয়ের কাপড় আছে? (অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল।)

আফরানঃঃ- আস পানিতে আরেকটু চুবিয়ে আনি। যদি বুদ্ধি একটু বাড়ে। এটা আমাদের ফার্ম হাউস। তাই আমার জামা কাপড় আছে। তার মধ্য থেকেই পড়ে নাও।

নূরঃঃ- বুদ্ধি আপনার প্রয়োজন আমার না। আমি কি আপনার শার্ট প্যান্ট পরব?

আফরানঃঃ- জ্বি ম্যাডাম। কারণ আমাদের ফ্যামিলিতে মেয়ে নেই যার জামা কাপড় থাকবে। তাই এটাই পরেন।

নূরঃঃ- না আমি এসব পড়তে পারব না।

আফরানঃঃ- তাহলে কি এই ভেজা কাপড় নিয়ে থাকবে? (এবার নূর নিজেই চিন্তায় পড়ে গেল) এখন চেঞ্জ করে নাও। আমি আশেপাশে কোন শপে জামা পায় নাকি দেখি। এই ভেজা কাপড়ে থেকে ঠান্ডা লাগলে তারপর আমার দোষ দিবে।

নূর আর কিছু বলল না। মাথা নেড়ে সায় দিল। আফরান অন্য রুমে গিয়ে চেঞ্জ করে বেরিয়ে পড়ল। নূর ওয়াড্রব খুলে দেখে সব শার্ট আর জিন্স। তার মধ্য থেকে নিয়ে ওয়াশরুমে গেল।

_______________________________

মেহেরঃঃ- আমরা কোথায় যাচ্ছি?

ইয়াশঃঃ- এক বড় পাহাড়ের চূড়ায়। সেখানে গিয়ে তোমাদের ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিব। আমাদের যে জ্বালিয়েছ তার প্রতিশোধ নিব।

মেহের আলিফা ভয়ে ঢোক গিলতে লাগলো।

আলিফাঃঃ- দে…দেখুন এমন করলে কি…কিন্তু আপনারাই ফেসে যাবেন। কারণ আমাদের বান্ধবীরা জানে আমরা আপনাদের সাথে এসেছি। তাই আমাদের যদি কিছু হয় তাহলে ওরা আপনাদের নামে থানায় মামলা করবে।

মেহেরঃঃ- আ…আমরা ভ…ভ…ভয় পায় না।

ইয়াশ আরিফ তাদের অবস্থা দেখে হেসে দিল। মেহের আলিফা একে অপরের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ইয়াশ আরিফ তাদের মতো করে চলছে।

.
.
.

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here