? Ragging To Loving ?
Part:: 18
Writer:: Ridhira Noor
আরিফ আলিফার পা ধরে দেখতে লাগলো। আলিফা ব্যাথায় কুঁকড়ে যাচ্ছে। সাথে অবাকও হচ্ছে। আরিফ চাইলে তাকে ছেড়ে যেতে পারত কিন্তু সে গিয়েও আবার ফিরে এলো। আরিফ খুব যত্ন সহকারে তার পায়ের ব্যাথা দেখছে। আলিফা তার ব্যাথার দিকে খেয়াল নেই। এক ধ্যানে আরিফকে দেখছে। হঠাৎ জোরে চিৎকার দিয়ে উঠল।
আলিফাঃঃ- আআআআ আমার পা ভেঙে দিল এএএ। আপনি আমার পা ভেঙে দিলেন। আমি জানি আপনি আমার থেকে প্রতিশোধ নিতে আমার পা ভেঙে দিয়েছেন। দেখবেন আপনার বউয়েরও এমন পা ভেঙে যাবে। আমার জামাইর কি হবে এখন।
আরিফঃঃ- ঢং একটু কম কর। আমার তো খেয়ে দেয়ে কাজ নেই তোমার পা ভাঙতে যাব।
আলিফাঃঃ- ঢং করছি আমি? এই দেখুন আপনার জন্য আমি পা…. (পা নাড়িয়ে দেখে ব্যাথা নেই। উঠে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ লাফালাফি করল।) আমার পা ঠিক হয়ে গেল। তার মানে আমার জামাইর কপাল ভালো। ইয়াহু থ্যাংক ইউ (বলে আরিফকে জড়িয়ে ধরল। খুশিতে এত পাগল হয়ে গেল যে কি করছে খেয়ালই করেনি)
আরিফঃঃ- (শকড হয়ে একদম সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে) কি করছ কি তুমি?
আলিফাঃঃ- (খেয়াল হতেই সাথে সাথে ছেড়ে দিয়ে দূরে গিয়ে দাঁড়াল) স… সরি। (দৌড়ে নূরের কাছে গেল) সরি ইয়ার। আমার জন্য হেরে গেলাম। ওই সিড়ি দিয়ে….
নূরঃঃ- আমি কি কিছু বলছি। ওটা আমাদের ভাগ্যে ছিল না তাই। সো জাস্ট চিল বেবস।
স্যার আফরানের টিমকে বিজয়ী ঘোষণা করল। তাদের চেহারায় বিজয়ের হাসি উৎফুল্ল ফুটে উঠেছে। তেমনি নূরের টিমের সবার চেহারায় রাগ আর বিরক্তি প্রকাশ করছে। আফরান নূরের দিকে তাকিয়ে দুঃখ প্রকাশ করছে। নূর তো পারছে না ওর সব চুল টেনে ছিড়ে ফেলতে। আফরান নূরের সামনে এসে দাঁড়াল।
আফরানঃঃ- কালকে ঠিক সকাল আট টায় তোমরা সবাই রেডি থেকো।
নূরঃঃ- কেন?
আফরানঃঃ- আরে ভুলে গিয়েছ কি শর্ত ছিল? যে টিম হারবে তাদের পুরো একদিন বিজয়ী টিম যা বলবে তাই করতে হবে। কাল তোমাদের যা বলব তাই করতে হবে।
নূরঃঃ- (না পারছে কিছু বলতে না পারছে কিছু করতে। চ্যালেঞ্জ যেহেতু হেরেছে তাই কিছু বলতেও পারছে না।) হুমম।
আফরানঃঃ- কি বলছ শুনতে পারছি না।
নূরঃঃ- (কানের কাছে গিয়ে জোরে চিল্লিয়ে বলল) হ্যাঁ আসব। এসে আপনাকে উদ্ধার করব। (যত্তসব খাচ্চর বেটা।)
আফরানঃঃ- উফফ আস্তে। এমনিতে ফাঁটা বাঁশের মত কন্ঠস্বর তোমার আর না চেঁচালে চলবে। চাশমিশ কাহিকি। (কান ঝাড়তে ঝাড়তে চলে গেল।)
নূরঃঃ- চাশমিশ বলল কাকে? নিজেকে যে সারাক্ষণ কালো চশমা পড়ে ঘুরে। পান্ডা কাহিকে।
_______________________________
আফরানঃঃ- গাইজ গেট রেডি। ওদের শায়েস্তা করার সময় চলে এসেছে।
ইয়াশঃঃ- মানে কিভাবে?
আফরানঃঃ- ওদের চ্যালেঞ্জ করেছিলাম যদি হারে পুরো একদিন যা বলব তাই করতে হবে। ওদের একসাথে শায়েস্তা করা যাবে না। তাই আলাদা আলাদা শিক্ষা দিতে হবে।
রিহানঃঃ- তোর কথা কিছুই মাথায় ঢুকছে না। একটু ক্লিয়ারলি বল।
আফরানঃঃ- ওহ গড। (দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলল) শোন। একসাথে হলে ওরা আবার কিছু একটা করে নতুন কান্ড পাকাবে। তাই কাল আমরা ওদের আলাদা আলাদা নিয়ে যাব। আর ওদের এমন টর্চার করব যাতে নেক্সট টাইম আমাদের সামনে আসতেও ভয় পায়।
আহিলঃঃ- (তার মানে কালকে সারাদিন আমরিন আমার সাথে থাকবে। গ্রেট এই সুযোগে ওর ফিলিংসও জানতে পারব। ওয়াসিমকে মেসেজ দিল।)
ওয়াসিমঃঃ- (“কালকে তুই আর আমি মিলে নেক্সট প্ল্যান এক্সিকিউট করব। এই চ্যালেঞ্জে আমাদের কাজ আরো সহজ হয়েছে।”)
আহিলঃঃ- (“হ্যাঁ! এবার দেখব ওরা কি করে।”) মেসেজ দেখে একে অপরের দিকে তাকিয়ে হাসছে।
আফরানঃঃ- আরিফ-আলিফা,, ইয়াশ-মেহের,, রিহান-পুষ্প,, ওয়াসিম-সিমা,, আহিল-আমরিন। তোরা ওদের ইচ্ছে মতো টর্চার করবি। এতদিন আমাদের যে পরিমাণ প্যারা দিয়েছে তার সব প্রতিশোধ নিবি। আর মিস চাশমিশকে আমি হ্যান্ডেল করব।
আরিফঃঃ- একেকটার প্রতিশোধ নিব। চুন চুনকে বাদলা লুংগা।
ইয়াশঃঃ- আমি আছি তোর সাথে।
ওয়াসিম-আহিলঃঃ- আমরা তো জমিয়ে রোমান্স করব।
আফরানঃঃ- আহিলের বুঝলাম। তোর রোমান্স কেমনে?
আহিলঃঃ- ভাই এটাও আমার সাথে শহীদ হয়ে গেল। আই মিন সিমার প্রেমে পইড়া ওয়াসিম হলো দিওয়ানা।
আফরানঃঃ- হায়! (দুঃখ প্রকাশ করে) বাকিদের ম্যানেজ হয়ে যাবে। রিহান তুইও কিন্তু সামলে নিস। জানি পুষ্পর সাথে তোর তেমন একটা ঝামেলা হয়নি। তাও ওই টিমের প্রত্যেকেই আমাদের দুশমন।
রিহানঃঃ- (তুই তো ভাবতেই পারবি না পুষ্পর সাথে আমার ঝামেলা অনেক আগে থেকেই) হুমম।
_______________________________
নূর ও বাকিরা ক্যান্টিনে বসে আছে। নূর নখ কামড়াচ্ছে।
মেহেরঃঃ- আচ্ছা ওরা আমাদের কি করতে বলবে? ভার্সিটির সবার সামনে র্যাগিং করবে না তো? প্রথম দিনের কথা আমার এখনো মনে আছে। তার উপর ওই ইয়াশ আরিফ ওরাও আছে। আগের সব প্রতিশোধ নিতে কিছু না কিছু করবেই। আমার হেব্বি টেনশন হচ্ছে।
আলিফাঃঃ- আমারও। (না আরিফ তেমন খারাপ না। আমার সাহায্য করেছে। সেটা ভেবে মুচকি হাসি দিল। পরক্ষণে হাসি উধাও হয়ে গেল। কিন্তু ওর সাথে যা কিছু করেছি তার জন্য যদি প্রতিশোধ নিতে চাই।)
নূরঃঃ- তা তো কালকেই জানতে পারব।
.
.
.
পরের দিন আফরান ও বাকিরা ভার্সিটির পার্কিং এরিয়ায় অপেক্ষা করছে। নূর ও বাকিরা এলো। রাগ ভয় চিন্তা সব অনুভূতি মিশ্রিত হয়ে অন্য এক নতুন অনুভূতি মনের মধ্যে কুতকুত খেলছে। আফরান উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ছিল রিহানের ইশারায় পিছন ফিরে তাকায়। নূর আজ চশমা পড়েনি। আফরান তো এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে সেই চোখ জোড়ায়।
নূরঃঃ- (খাচ্চর এমন করে তাকিয়ে আছে কেন?) চোখ খুলে নিচে পড়ে যাবে।
আফরানঃঃ- (ইতস্তত বোধ করে একটু নড়েচড়ে দাঁড়াল) উহুম। চাশমিশ আজ চশমা পড়নি কেন?
নূরঃঃ- তাতে আপনার কি?
আফরানঃঃ- সবসময় উল্টো কথা বার্তা। সেই যাই হোক আজ সারাদিনের জন্য তোমরা আমাদের পিএ। পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট। আজ পুরো দিন আমরা যা যা বলব তাই করবে। আলিফা আরিফকে,, মেহের ইয়াশকে,, সিমা ওয়াসিমকে,, আমরিন আহিলকে,, আর তুমি আমাকে অ্যাসিস্ট করবে।
আহিলঃঃ- সো লেটস গো।
আমরিনঃঃ- কোথায়?
আহিলঃঃ- আজ আমি যেখানেই যাব তুমি আমার সাথে যাবে। ওয়াসিম তুইও চল।
ওয়াসিমঃঃ- ইয়াহ লেটস গো। মিস পিংকি চল।
আমরিন সিমা না চাইতেও তাদের সাথে গেল।
.
.
.
চলবে