? Ragging To Loving ?
Part:: 17
Writer:: Ridhira Noor
সবাই জল খুঁজতে লাগলো। কোথায় পাবে পরবর্তী ধাঁধার উত্তর। একেকজন একেক দিকে গেল।
নূরঃঃ- অন্তত কেউ এক গ্লাস জল দে। সুইমিং তো জানি না। নাহয় ডুবে মরি। (রেগে আর বিরক্ত হয়ে বলল) এই জল… সুইমিং! ভার্সিটির সুইমিং পুলে। (দৌড়ে গেল।)
সুইমিং পুলে পানির মধ্যে ভাসছে। পানির মধ্যে হাত দিয়ে অনেক চেষ্টা করল নেওয়ার। কিন্তু কোন ভাবে আসছে। একে তো সাঁতার জানে না তার উপর যদি পানিতে পড়ে তাহলে শেষ। রেগে গিয়ে কোমরে দুই হাত দিয়ে অনেক্ষণ চিন্তা করল। তারপর বাইরে গেল একটা লম্বা লাঠি জাতীয় কিছু আনতে। পান্না নূরকে মাঠ থেকে দৌড়ে আসতে দেখে তার পিছু পিছু আসল। নূর যে সাঁতার জানে না সেটা শুনে ছিল।
পান্নাঃঃ- আফরানকে পাওয়ার জন্য কত কি না করলাম। আর তুমি দুই দিনের মেয়ে এসে আফরানকে ফাঁসাতে চাইছ? তোমাকে আমার আর আফরানের মধ্যে আসতে দিব না। (ব্যাগ থেকে ক্রিম জাতীয় কিছু বের করে পুরো সুইমিং পুলের চারপাশে ছিটিয়ে দিল) পা পিছলে সোজা যাবে ধপাসসস সুইমিংপুলে। (নূরের আসার আওয়াজ শুনে তৎক্ষনাৎ সেখান থেকে সরে গেল।)
নূর একটা লম্বা লাঠি আনল। সেটা দিয়ে পানির মধ্য থেকে পতাকাটি টানতে লাগলো। কাছে আসতে নিয়ে নিল।
পান্নাঃঃ- (শিট পড়ছে না কেন? পুরো ক্রিম ঢেলে দিলাম যাতে পিছলে পড়ে যায়। তাও এই নাছোড়বান্দা পড়ে না।)
পতাকাটি নিয়ে পিছন ফিরতে পা পিছলে যায়। পান্না মনে মনে বিজয়ী হাসি দিল। নূর পিছলে পড়ে যেতেই আফরান নূরের হাত ধরে ফেলে। নূর পিছন দিক দিয়ে সুইমিংপুলে ঝুকে আছে। হাত ছাড়লেই সুইমিংপুলে পড়ে যাবে। আফরান হেচকা টান দিয়ে নূরকে টেনে নিল। ভয়ে নূরের নিশ্বাস ভারি হয়ে গেল। জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো। বুকের ভেতর হৃৎপিন্ডটা ডিজে গানে উরাধুরা লাফাচ্ছে।
আফরানঃঃ- (রাগে রীতিমতো কাঁপছে) তোমার কি মাথা খারাপ? এক্ষুনি পড়ে যেতে। ভাগ্য ভালো যে লাঠি নিয়ে আসার সময় তোমাকে দেখে পিছু নিয়েছি। এখন যদি আমি না থাকতাম? (মনে ভয় কাজ করছে আবার রাগও হচ্ছে।)
নূরঃঃ- (আফরানের চিল্লানোতে মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না) ও… আমি…
পান্নাঃঃ- (লুকিয়ে এসব দেখে রাগে তার গাঁ জ্বলছে) নূরের প্রতি তোমার এত চিন্তা কেন আফরান? তুমিও কি??? নো। তোমাকে আমি ছিনিয়ে যেতে দিব না।
আফরানঃঃ- ইচ্ছে তো করছে আমি নিজেই তোমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেই।
নূরঃঃ- আমি আগেই বুঝেছিলাম আপনি আমাকে মারার প্লানিং করছেন। সেই প্রথম দিন থেকে। একবার গাড়ি চাপা দিয়ে আর এখন পানিতে চুবিয়ে।
আফরানঃঃ- (নূরের মাথা ধরে ভালো করে দেখতে লাগলো) তোমার মাথার তার কয়টা ছিড়া দেখি একটু। (নূর মাথা ছাড়িয়ে নিল) আমি কখন গাড়ি চাপা দিয়ে মারতে চেয়েছি?
নূরঃঃ- সেই প্রথম দিনে। গাড়ি ফুল স্পীডে চালিয়ে আমার উপর দিয়ে যেতেন। সেটা তো আমার কপাল ভালো ছিল বেঁচে গেলাম।
আফরানঃঃ- (কিছুক্ষণ চিন্তা করল) ওটা তুমি ছিলে? আমার আগেই বোঝা উচিৎ ছিল। আমার লাইফে যত অঘটন ঘটবে তার পিছে তুমিই থাকবে। সেই দিন তোমার জন্য লাইফে প্রথমবার আমি হেরে যেতাম।
নূরঃঃ- ডোন্ট ওয়ারি। যেটা তখন হয়নি সেটা এখন হবে। লাইফে সব কিছু প্রথমবার হয়। আপনিও প্রথমবার হারবেন। আর আপনাকে হারাবো আমি। রিধিরা নূর। ফুহ্। (কান ফুহ্ দিয়ে দিল দৌড়)
নূর সবাইকে ডেকে তৃতীয় ধাঁধা নিল। “সে তো এক কিংবদন্তি, শ্রদ্ধা তার প্রতি, সংগ্রাম করেছে বেশ, যার জন্য পেয়েছি এই দেশ”
আফরানদেরও একই ধাঁধা।
রিহানঃঃ- কিংবদন্তি? যার জন্য পেয়েছি এই দেশ। বঙ্গবন্ধু!
ইয়াশঃঃ- বঙ্গবন্ধুর সব কিছু আমাদের ভার্সিটির ইতিহাস লাইব্রেরিতে পাওয়া যাবে।
পুষ্পঃঃ- এটা বঙ্গবন্ধু হবে। ভার্সিটির ইতিহাস লাইব্রেরিতে পাওয়া যাবে।
সবাই একসাথে সেখানে একত্রিত হলো। একে অপরকে দেখে বেশ অবাক। সেখানে বঙ্গবন্ধুর একটি বড় ছবি। তার সাথে একটি মাত্র পতাকা। নূর দৌড়ে গিয়ে সেটা নিল। কিন্তু সেখানে কোন ধাঁধা নেই। শুধু বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকা।
নূরঃঃ- এটাতে তো কিছু নেই। শুধু মানচিত্র আঁকা।
মেহেরঃঃ- স্যার বলেছিল সব ধাঁধা একত্রে করে সর্বশেষ ধাঁধা সমাধান করতে হবে।
নূর সব ধাঁধা দেখতে লাগলো। কিন্তু কিছু বুঝতে পারছে না। আফরানও তাদের গুলো দেখতে লাগলো। সেইও কিছু বুঝতে পারছে না। নূর বিরক্ত হয়ে আবার দেখতে লাগলো।
নূরঃঃ- ওয়েট ওয়েট। এই দেখ প্রথম ধাঁধা লাল কালি দিয়ে আর দ্বিতীয় ধাঁধা সবুজ কালি দিয়ে লিখা। আর তৃতীয় ধাঁধা মানচিত্র। লাল সবুজ মানে বাংলাদেশের পতাকা।
আফরানঃঃ- আর এই মানচিত্র। ভার্সিটিতে বাংলাদেশের পতাকা ভার্সিটির মাঠে।
বলতে না বলতে আলিফা দিল দৌড় তার পিছে আরিফ গেল। বাকিরাও দৌড়ে গেল। আলিফা সিড়ি দিয়ে নামতেই পা মচকে পড়ে যায়। আরিফ আলিফাকে অতিক্রম করে খানিকটা দূরে গিয়ে আবার ফিরে আসে। আলিফার পা দেখতে লাগলো। আলিফা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে। আরিফ না গিয়ে ওর পা দেখছে। নূর এসে আলিফার পাশে বসে পড়ল।
আলিফাঃঃ- আমি ঠিক আছি তোমরা যাও।
নূরঃঃ- তোকে…..
আলিফাঃঃ- যা…. (নূরকে ধাক্কা দিয়ে এগিয়ে দিল)
নূর উঠে দৌড় দিল পতাকা উড়িয়ে দিবেই কি আফরান তার আগেই এসে উড়িয়ে দিল।
আফরানঃঃ- ইয়েএএএএএ। (খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল। পিছন ফিরে দেখে নূর মুড অফ করে আছে) উহু উহু কে যেন বলেছিল আমাকে হারাবে। আফরানকে হারানো এত সহজ না মিস চাশমিশ। ফুহ্ (নূরের কানে ফুহ্ দিয়ে চলে গেল)
.
.
.
চলবে