? Ragging To Loving ?
Part:: 42
Writer:: Ridhira Noor
রাতে______________________________
মায়মুনা সব মেয়েদের নিয়ে নিচ তলায় একত্রিত হলো।
মায়মুনাঃঃ- শোন সবাই খাওয়া দাওয়ার পর বড়রা নিজ নিজ রুমে শুয়ে পড়বে। জার্নি করে সবাই বেশ ক্লান্ত। আর আমরা সবাই মিলে রিসোর্টের পিছনে বনফায়ারের আয়োজন করা হবে। সবাই মিলে হৈ-হুল্লোড় করব।
আলিফাঃঃ- গুড আইডিয়া। অনেক মজা হবে।
পান্নাঃঃ- এসব ফালতু কাজে আমি নেই। সরি বাট আমি আসব না।
মায়মুনাঃঃ- এখানে কাউকে আসতে বলা হয়নি। যার ইচ্ছা হবে আসবে যার ইচ্ছা হবে না আসবে না।
পান্না চলে গেল।
মায়মুনাঃঃ- এতপ পালতু কাদে আমি নেই। বিয়েতেই বা আসছে কেন? যত্তসব। বড় মামার বিজনেস পার্টনারের মেয়ে আর আফরান ভাইয়ার ফ্রেন্ড না হলে ওকে আমি জীবনেও আমার বিয়েতে দাওয়াত দিতাম না। আসছে তো আসছে নিজের চামচি দুইটারে নিয়ে আসছে।
তখনই আফরান এলো।
আফরানঃঃ- কি হলো? এভাবে রেগে আছিস কেন?
মায়মুনাঃঃ- এই পান্নাকে দাওয়াত দিলে কেন? সাথে ওই চামচি দুইটারেও বলছ।
আফরানঃঃ- দেখ পান্না বাবার বিজনেস পার্টনারের মেয়ে। সাথে আমার ফ্রেন্ডও। পান্নাকে দাওয়াত দেওয়ার সময় তার ফ্রেন্ডরাও ছিল। একজনকে দাওয়াত দিয়ে বাকি দুইজনকে না দেওয়া একটু খারাপ দেখায় না? তাই তাদেরও বললাম।
মায়মুনাঃঃ- বিয়েটা আমার। তাই আমার কথা মতোই চলবে। বিয়েতে যখন এসেছে প্রত্যেক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে হবে। এসব ফালতু কাজে আমি নেই। এসব ঢং করতে পারবে না।
.
.
রাতে খাবার খেয়ে সবাই একত্রিত হলো রিসোর্টের পিছনের এরিয়ায়। আজকে সবাই মিলে বনফায়ার এর আয়োজন করল। অনেক বড় খোলা জায়গায় বিস্তৃত রিসোর্টটি। চারপাশে খোলা জায়গা মাঝ বরাবর হোটেল। আফরান আর তার বন্ধুরা গেল সেদিকে। গিয়ে দেখে মেয়েরা মোবাইলের ফ্লাশ লাইট দিয়ে বসে আছে। তারা অবাক হয়ে গেল।
আহিলঃঃ- কি হলো? তোমার আগুন না জ্বালিয়ে বসে আছ কেন? আমরা আরো ভেবেছি সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু এখানে এসে দেখি সব উল্টো।
সবাই মিলে মাঝখানে লাইট দিল। ছেলেরা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সেদিকে। কারণ আমাদের ডিনচেক নূর ম্যাডাম দুইটা শিলা পাথর দিয়ে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করছে। আফরান হা হয়ে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে। নূর পরনে লম্বা সোয়েটার, চুল গুলো খোলা। ঠোঁটের কোণে হালকা জিব বের করে আপ্রাণ চেষ্টা করছে আগুন জ্বালানোর। কিন্তু আগুন জ্বলছেই না। মাঝে একটু বিরক্ত হচ্ছে কিন্তু আবারও চেষ্টা করছে। তার কান্ড দেখে আফরান হেসে দিল।
নূরঃঃ- আহহহহহ। এই পাথরগুলো ম্যানেজারের টাকলু মাথায় মারমু। কি সব শিলা পাথর রাখছে আগুন জ্বলে না।
ইয়াশঃঃ- লাইটার নাও।
মেহেরঃঃ- বিগত এক ঘন্টা ধরে সবাই তাকে বলছে কিন্তু ম্যাডাম জি শুনছেন না। বলে কি….
নূরঃঃ- আরে বনফায়ারে যদি এভাবে শিলা পাথর দিয়ে আগুন না জ্বালায় তাহলে কি আর মজা থাকে? যতক্ষণ না আগুন জ্বলছে এভাবে চুপচাপ অন্ধকারে বসে থাক সবাই।
ইয়াশঃঃ- আমার মনে হয় না আজকে আর কোন আয়োজন হবে। আমি গেলাম ঘুমাইতে। গুড নাইট গাইজ। (পিছন ফিরে পা বাড়াতেই নূর দিল এক ধমক।)
নূরঃঃ- যারা যারা এখান থেকে যাবে এই বনফায়ার থেকে কাঠ নিয়ে হুধুম খেলানি দিব। বিয়ে খাওয়া তো দূরে থাক। এক্কেরে হসপিটালে গিয়ে পড়ে থাকবে।
ভয়ে সবাই একেবারে সোজা হয়ে গেল। কারণ এই তারছিড়া একবার রাগলে সামনের জনের কি হাল করবে কে জানে।
ইয়াশঃঃ- (আফরানের কানে কানে বলল) ভাই কিছু একটা কর। নইলে সারারাত এভাবে কাটাতে হবে।
আফরান নূরের পাশে গিয়ে বসল।
আফরানঃঃ- আমাকে দাও আমি করে দেয়। (হাত পেতে শিলা পাথর চাইল।)
নূরঃঃ- আপনাকে কেন দিব? (পাথর নিয়ে হাত অন্যপাশে সরিয়ে নিল) আমিই জ্বালাবো। (আবারও চেষ্টা করছে)
আফরান ইশারা করাই মায়মুনা এসে তার হাতে লাইটার ধরিয়ে দিল। নূর এদিকে শিলার সাথে শিলা ঘেষেই যাচ্ছে। নূরের চোখের আড়ালে লুকিয়ে আফরান আস্তে করে লাইটার দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিল। নূর মনে করল সেই জ্বালিয়েছে। খুশিতে লাফিয়ে উঠল।
নূরঃঃ- ইয়াহু হয়ে গেল। ইয়ো ইয়ো ডিংকা চিকা। (ভাংড়া ডান্স করল। তার কান্ড দেখে সবাই হাসছে।) তো চল শুরু করা যাক।
সবাই গোল হয়ে বসল। আফরান বনফায়ারের কাঠ ঠিক করে দিল। সবাই একসাথে পাশাপাশি বসা। আফরানের বসার জন্য কোথাও জায়গা রাখেনি। নূরের পাশে স্পিকার রাখা আফরান গিয়ে সেটা সরিয়ে অন্যপাশে রাখল। যে না নূরের পাশে বসতে যাবে কোথা থেকে জানি উড়ে এসে জুড়ে বসল সবার প্রাণ প্রিয় আফা পান্না। ঝড়ের গতিতে দ্রুত এসে বসায় নূর কেঁপে উঠল। একবার আকাশের দিকে তাকাল একবার পান্নার দিকে তাকাল।
নূরঃঃ- আপনি আবার আকাশ থেকে টুগগুর কইরা পড়লেন নাকি?
পান্নাঃঃ- হোয়াট?
মায়মুনাঃঃ- তুমি না বলেছিলে এসব ফালতু কাজে আসবে না।
পান্নাঃঃ- রুমে একা একা বোরিং লাগছিল তাই চলে এলাম। (মায়মুনা ভেঙচি কেটে অন্যপাশে ফিরে গেল। এমনিতেই এসবে আমার কোন ইন্টারেস্ট নেই। ভেবেছিলাম আসব না। কিন্তু নূর আর আফরানকে একা ছাড়া যাবে না। না জানি কখন তারা একে অপরের কাছে চলে আসে। আমি তা মোটেও হতে দিব না। পাশ ফিরে নূরের দিকে তাকাল। নূর দাঁত সব বের করে দিল এক ভেটকানি। পান্না কোন পাত্তা না দিয়ে ফিরে গেল।)
নূরঃঃ- (দাঁত ব্রাশ করে নাই নাকি? একটু হাসি দিলে কি হয়? যেমন খাচ্চোর আফরান তেমন খাচ্চোর তার ফ্রেন্ড। এই না না ফ্রেন্ডরা সবাই ভালো আছে। শুধু ইনি একটু….)
আফরান গিয়ে আরিফের পাশে বসল। নূর আর আফরান মুখোমুখি হয়ে বসল।
মায়মুনাঃঃ- তো শুরু করা যাক? মিউজিক্যাল পিলো। গেইম সম্পর্কে সবাই জানেনই। সো মিউজিক শেষে যার হাতে পিলো থাকবে সে আউট এবং তাকে যা বলবে তাই করতে হবে। লাইক ডেয়ার। কিন্তু মিউজিক অন অফ করবে কে?
আলিফাঃঃ- আমি। আমার ভালো লাগছে না খেলতে। তাই আমি মিউজিকের দায়িত্বে আছি। (আলিফাকে মিউজিক অন অফ করার দায়িত্ব দেওয়া হলো।)
মায়মুনাঃঃ- বাট নো চিটিং।
মিউজিক প্লে করা হলো। একে একে সবাই আউট হয়ে হচ্ছে। সবাইকে আজব আজব ডেয়ার দেওয়া হলো। কাউকে করলার জুস খেতে দিল, কাউকে কাঁচা মরিচ, একটাকে জঙ্গলি ডান্স, তো আরেকটাকে ভাংড়া ডান্স, ইয়াশকে তো মেহের ডেয়ার দিল হামাগুড়ি দিয়ে পুরো এক রাউন্ড ঘুরতে। ইয়াশও কম না। সে মেহেরকে মুরগির মতো খকখক করে পুরো এক রাউন্ড ঘুরতে। এখন বাকি আরিফ নূর আফরান পান্না। আলিফা মিউজিক অন করল।
♪♪♪
মানা কি হাম ইয়ার নেহি লো তেই হেকি পিয়ার নেহি
((( গান শুরু হতেই আলিফা করুণ দৃষ্টিতে আরিফের দিকে তাকাল। আরিফের ধ্যান গেইমে। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে।)))
মানা কি হাম ইয়ার… নেহি… লো তেই হেকি পিয়ার নেহি….
ফিরভি নাজরে না তুম মিলানা দিল কা এতবার নেহি
(ঐ)
রাস্তে মে জো মিলে তো হাত মিলানে রুখ জানা
সাথ মে কই হো তুমহারে দূর সে হি তুম মুসকানা
লেকিন মুসকান হো এইসি কি জিসমে ইকরার নেহি…… (২)
নাজরো সে না কার না তুম বায়ান ও জিস সে ইনকার নেহি
(ঐ)
((( আরিফের চোখে চোখ পড়তেই আলিফা চোখ সরিয়ে নিল। কিন্তু আরিফ এখনো তাকিয়ে আছে আলিফার দিকে। তার চোখে পানির দিকে। আলিফা সাথে সাথে মিউজিক অফ করে দিল।)))
আরিফ আউট হয়ে গেল। ডেয়ার দিল গান গাইতে হবে।
♪♪♪
কুছ ইসতারা তেরি পালকে মেরে পালকোসে মিলালে
আসু তেরি সারে মেরে আখো মে সাজা দে
♪♪♪
((( আলিফার দিকে তাকিয়ে পুরো গান গাইল। কিন্তু আলিফা একটিবারও আরিফের দিকে তাকাল না।)))
এখন বাকি রইল নূর আফরান পান্না। আলিফা মিউজিক অন করল। নূর পিলো আফরানকে দিল। আফরান পান্নাকে দিল। পান্না নূরকে। এভাবে কয়েক রাউন্ড ঘুরলো।
পান্নাঃঃ- (খুব শখ না আফরানের সাথে চোখাচোখি করার। এবার নাও।)
পান্না পিলো নিয়ে সজোরে ছুড়ে মারল নূরের দিকে। পিলো গিয়ে পড়ল নূরের চোখে। ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠল। আফরান দৌড়ে নূরের কাছে গেল। হাটু গেড়ে তার সামনে বসে পড়ল। নূর হাত দিয়ে চোখ ঢেকে আছে। আফরান আস্তে করে হাত সরিয়ে চোখে ফুহ্ দিল। কিন্তু চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরছে।
পান্নাঃঃ- (নাটক করে গেল নূরের কাছে) ওহ নূর আর ইউ ওকে?
আফরানঃঃ- ওকে? তোমার নূরকে দেখে ওকে মনে হচ্ছে? দেখছ না কি হয়েছে। চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে। পিলো হাতে দিতে বলছে ছুড়ে মারতে নয়। দেখে শুনে কাজ করতে পারো না। দেখ চোখ লাল হয়ে গিয়েছে। (রেগে চিল্লিয়ে বলল)
নূরঃঃ- আরে আমি ঠিক আছি।
আফরানঃঃ- কি ঠিক আছ দেখছি।
পান্না হনহনিয়ে চলে গেল।
মায়মুনাঃঃ- এই চুন্নিটাকে আসতে কে বলেছিল? প্রথমেই তো বলেছিল আসবে না। আবার ঢং করতে এসেছে। কত কিছু প্ল্যান করছিলাম। সবাই মিলে আড্ডা দিব, গল্প করব। কিন্তু এই চুন্নি সব মাটি করে দিল।
নূরঃঃ- কিছু মাটি হবে না। আমি ঠিক আছি। চল আবার গেইম শুরু করি।
আফরানঃঃ- কোন গেইম টেইম খেলতে হবে না। (নূরের হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল।)
আফরান নূরকে নিয়ে করিডরে সোফায় বসিয়ে দিয়ে বরফ নিয়ে এলো। নূরের পাশে বসে পকেট থেকে রুমাল বের পরম যত্নে তার চোখ মুছে দিল। রুমালের এক কোণায় বরফের টুকরো নিয়ে নূরের চোখে ভাব দিতে লাগলো। চোখে ফুহ্ দিতেই নূর শিউরে উঠল।
আফরানঃঃ- এখন ঠিক আছে? (নূর বেখেয়ালি হয়ে আফরানের দিকে তাকিয়ে আছে। এত যত্ন কেন নিচ্ছে এই ভাবনায় ডুবে আছে। কিন্তু এই যত্ন ভীষণ ভালো লাগছে নূরের কাছে।) কি হলো বল? ঠিক আছ তুমি?
নূরঃঃ- হুহ? হুমম…. হুমম…. ঠিক আছি।
আফরানঃঃ- চল তোমাকে তোমার রুম পর্যন্ত দিয়ে আসি।
নূরঃঃ- চোখে ব্যাথা পাইছি কানা হয়ে যায় নি। আমি যেতে পারবো। (উঠে যেতে নিলেই আফরান হাত ধরে ফেলে।)
আফরানঃঃ- ইদানিং দেখছি তুমি কিন্তু বেশি বাজে বকছ। আমি ভালো আছি ভালো থাকতে দাও। আমাকে রাগিও না কিন্তু বলে দিলাম। চুপচাপ চল আমার সাথে। (নূরের হাত ধরে রুম অবধি নিয়ে গেল। নূর যেতে পিছন থেকে ডাক দিল।) শোন? যদি প্রয়োজন হয় আমাকে ডেকে নিও।
নূরঃঃ- (আমার এতো টেকা পড়ে নাই) আচ্ছা। (আফরান কিছু বলতে যাবে তার আগেই তাড়াতাড়ি দরজা বন্ধ করে দৌড় দিল)
আফরানঃঃ- গুড…. (দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলল) নাইট।
অন্যদিকে পান্না তার রুমে গিয়ে ভাঙচুর করা শুরু করল। টেবিলের উপর ফুলদানি ছিল সেটা নিয়ে মেঝেতে ছুড়ে মারল।
পান্নাঃঃ- নূঊঊঊররররর। আই জাস্ট হেইট ইউ। আই হেইট ইউ। হেইট ইউ। হেইট ইউ। আজ তোমার জন্য আফরান আমার সাথে এমন ব্যবহার করল। শুধু তোমার জন্য। আজ পর্যন্ত আমার বাবা মাও আমার সাথে উঁচু গলায় কথা বলে নি। সেখানে আফরান আমাকে এত কথা শুনালো। বিকজ অফ ইউ। ইউ হেভ টু পে ফর দিজ নূর।
পরের দিন______________________
গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান হবে। সকাল সকাল সবাই ফ্রেশ হয়ে চলে এলো আয়োজন করতে। কেউ কেউ ডেকোরেশন কাজে সাহায্য করছে, কেউ কেউ খাবারের মেনু দেখছে। বড়রা সব রীতিমতো হচ্ছে কি না দেখছে।
আফরানের মাঃঃ- আরে আজ গায়ে হলুদ। কিন্তু হলুদ কোথায়? কাঁচা হলুদ বাটতে হবে তো না কি। আমার তো অনেক কাজ পড়ে আছে। হলুদ বাটবে কে?
নূরঃঃ- আন্টি আমাকে দেন আমি বেটে নিচ্ছি। (হলুদ সুন্দরভাবে বেটে আফরানের মায়ের কাছে দিল। কিন্তু তার পুরো হাতে হলুদ মেখে গেল। সামনে তাকিয়ে দেখে মায়মুনা নিহালের সাথে বসে কথা বলছে। শয়তানি হাসি দিয়ে গেল তার কাছে।) মায়মুনা? আজকে তোর গায়ে হলুদ অথচ তোর গায়ে কোন হলুদ নেই।
মায়মুনাঃঃ- হলুদ সন্ধ্যায় লাগানো হবে।
নূরঃঃ- সন্ধ্যায় তো লাগানো হবেই। কিন্তু এখন তো সবাইকে জানাতে হবে যে আজ তোর গায়ে হলুদ। তাই….. এই নে…. (হাতে থাকা সব হলুদ মায়মুনার মুখে মেখে দিল।) এখন মনে হচ্ছে তোর গায়ে হলুদ। (দিল ভৌ দৌঁড়।)
মায়মুনাঃঃ- নূরিই কি বাচ্চি। বানামু তোর কাচ্চি। দাঁড়া তুই। (সেও দিল দৌড়)
পান্না সিড়ি দিয়ে নামছিল নূর দৌড়ে তার পাশ কেটে যাওয়ায় সে পিছলে পড়ে।
পান্নাঃঃ- হোয়াট দ্যা…. (সামনে তাকিয়ে দেখে আফরান আসছে তাই তাড়াতাড়ি শোকাহত চেহারা বানিয়ে নিল। পান্নাকে দেখে আফরান এগিয়ে এলো।)
আফরানঃঃ- আই এম সরি পান্না। কালকে রেগে তোমাকে কত কিছু বলে ফেললাম। আসলে নূরকে এভাবে কষ্টে দেখে নিজেকে সামলাতে পারিনি। আই এম রিয়েলি ভেরি সরি ফর দেট।
পান্নাঃঃ- (নূরের কষ্ট দেখে নিজেকে সামলাতে পারনি। তাই আমাকে কষ্ট দিলে। নূর এবার তুমি বুঝবে কষ্ট কি।) নো আফরান। আই এম সরি। আমারই ভুল ছিল। আমি খেয়াল করি নি তাই।
নূর দৌড়াচ্ছে তার পিছে পিছে মায়মুনাও দৌড়াচ্ছে। হঠাৎ নূর কারো সাথে ধাক্কা খেল। তাল সামলাতে না পেরে পড়ে যেতে সামনের জন ধরে ফেলে। নূর চোখ খুলে দেখে সোহেল।
পান্নাঃঃ- আফরান ওই দেখ। (নূর আর সোহেলের দিকে ইশারা করল। আফরান সেদিকে তাকিয়ে দেখে।)
সোহেল তড়িঘড়ি নূরকে দাঁড় করিয়ে দিল।
সোহেলঃঃ- ঘুরে ফিরে বারবার শুধু আমার সাথেই ধাক্কা খেতে আসো।
নূরঃঃ- বারবার কোথায়? আমি তো….. (ভাবনা নিয়ে হাতে গুনতে লাগলো) তিনবার। মাত্র তিনবার ধাক্কা খেয়েছি। একবার ভার্সিটির ফেয়ারওয়েল পার্টির দিন। একবার মায়মুনার এনগেজমেন্ট এর দিন। আরেকবার আজকে। মাত্র তিনবার।
সোহেলঃঃ- আরো ধাক্কা খাওয়ার ইচ্ছা আছে নাকি? (নূর চোখ বড় বড় করে তাকাল)
মায়মুনাঃঃ- অলওয়েজ লেট। কালকে আসার করা ছিল। (মায়মুনাকে দেখে নূর দিল এক দৌড়)
সোহেলঃঃ- (মায়মুনাকে দেখে হাসতে লাগলো) তোর এই অবস্থা কেন? কে করেছে এমন?
মায়মুনাঃঃ- এই আমাদের গুণধর নূর ম্যাডাম পালিয়ে গেল। দেখে বুঝতে পারনি কে করল? আগে তুমি বল কালকে আসার কথা ছিল আজকে এলে।
সোহেলঃঃ- ইম্পর্টেন্ট মিটিং ছিল তাই আসতে পারিনি। দেখ কোন ফাংশন মিস করিনি চলে এসেছি।
.
.
পান্নাঃঃ- (মনে মনে ভুতনি মার্কা হাসি দিল) আফরান তোমার কি মনে হয়না নূর আর সোহেলের মধ্যে কিছু চলছে। আই থিংক দেই লাইক ইচ আদার।
আফরানের না জানি কেন কিন্তু নূর আর সোহেলকে একসাথে দেখে যতটা না কষ্ট পেয়েছে তার চেয়ে বেশি পান্নার কথা শুনে কষ্ট পেল। সোহেলকে হারিয়েছে। কিন্তু মনে এখন নূরকে হারানোর ভয়ও কাজ করছে।
আফরানঃঃ- তুমি ভুল ভাবছ। ওদের মধ্যে এমন কিছু নেই। তা… আমি জা…জানি। প্লিজ উল্টা পাল্টা ভেবো না। (বুকের ভেতর চিনচিন ব্যাথা অনুভব করছে। মনে হচ্ছে যেন বুকের ভেতর কলিজাটা যেন কেউ নিয়ে যাচ্ছে। হাত পা কাঁপতে শুরু করল।)
পান্নাঃঃ- আমি ভুল ভাবছি? তুমি নিজেই দেখ ওরা একসাথে…..
আফরানঃঃ- একসাথে থাকলেই যে একে অপরকে পছন্দ করে এমন না। আর তাদের পরিচয় বা কয়দিনের। তাই প্লিজ নিজেও এসব চিন্তা কর না। আমার মাথায়ও এসব চিন্তা ঢুকিয়েও না। (এসব বলে চলে গেল)
পান্নাঃঃ- উফফ সোহেল থ্যাংকস ওয়ান্স এগেইন। নূর নূর নূর। হাহ্। (বাঁকা হাসি দিল)
.
.
.
চলবে