In The Depths of Love part-1

0
2355

“আমি আপনাকে স্বামী হিসেবে মানি না। আর না মানতে পারবো।” বলে বিছানার চাদর খামচে ধরলাম। সাথে সাথেই উনি আলতো ভাবে আমার ঠোঁটদুটো নিজের ঠোঁটের মাঝে নিলেন। চমকে উঠে বিছানার চাদর খামচে ধরেছি । এক সেকেন্ড পরেই উনি আমার ঠোঁট ছেড়ে আমার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকালেন। হৃদপিন্ডটা রীতিমত বুলেট ট্রেন এর মত ছুটছে।

নিজের সিক্ত মাতাল গলায় বললেন “কি বললে?”
এমনভাবে বললেন যেনো শুনতেই পান নি। আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম “অা”’ আমি আপনাকে ….. স্বামী হিসেবে মানি না”

সাথে সাথে আবারো উনি আমার ঠোঁট নিজের ঠোঁটের দখলে নিয়ে নিলেন। তবে এবার আলতো ভেবে নয় একটু জোর করেই………

আমি ডান হাত দিয়ে তাকে দূরে ঠেলতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু লাভ নেই। যথারীতি আবারো আমার ঠোঁট ছেড়ে আমার মুখ বরাবর এসে শান্ত কণ্ঠে বললেন “আবার বলো”

আমি কোনোকিছু বলার ভাষাটাই হারিয়ে ফেলেছি। কি বলবো.. বললে ও কি লাভ। উনি তো শুনছেন না।

“আপনি কিন্তু…..” বলতে না বলতেই আবারো একই কাজ। আমার ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নিলেন। তবে এবার আলতো করে কামড় বসালেন। নিজেকে ছাড়িয়ে বললাম “দেখুন আপনি…….”

কিন্তু আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ উনি দিলেন না । আমার মুখ নিজের বা হাতে চেপে ধরে গলায় মুখ গুজে আমাকে বিছানায় শুইয়ে দিলেন।

আমি ছাড়া পাওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। কিন্তু যতই হোক একটা ছেলের শক্তির কাছে মেয়েরা কখনোই পেরে ওঠে না। চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। উনি খুব ভালো করেই জানেন আমি ওনাকে ভালোবাসি না। সম্ভব ও না। তবুও কেনো আমার সাথে এমন করছেন।

কিছুক্ষন পর আর কোনো উপায় না পেয়ে আমি এমনিতেই শান্ত হয়ে গেলাম। উনি ধীরে ধীরে নিজের মুখ তুলে নিলেন। আর আমার মুখের ঠিক সামনে নিয়ে এলেন। বা হাতটা সরিয়ে আমার ঠোঁট দুটোকে আলতো আঙ্গুল ছুঁয়ে যাচ্ছেন আর নাক দিয়ে আমার গাল ঘষতে লাগলেন …….
ওনাকে এতো কাছে আমি সহ্য করতে পারছি না “কেনো আমায় বিয়ে করলেন? খুব কি দরকার ছিল?”

উনি আমার গালে আলতো করে চুমু দিলেন আর ফিসফিস করে বললেন “কাওকে চিরতরে কষ্ট দেওয়ার মুক্ষোম রাস্তাটাই হলো নিজের কাছে বন্দী রাখা। আর এই সমাজে তার সবথেকে সহজ উপায় “বিয়ে””

বলে ঠোঁট থেকে আঙ্গুল সরিয়ে গেল ঘষতে লাগলেন ।

“কেনো ? আমি আপনার কোন ক্ষতিটা করেছি? কিসের কষ্ট দিতে চান আর? এর থেকে বেশি আর কি কষ্ট দেবেন আমায়? ”

উনি মুচকি হাসলেন “সময়ের সাথে সাথে কষ্টের ধরণ ও কারণ দুটোই স্পষ্ট হয়ে যাবে …….”

বলে আবারো আমাকে টেনে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।

“দয়া করে ছাড়ুন আমাকে …. আমি আপনাকে………”

আমার কথা শেষ করার আগেই আমার মুখ একহাতে চেপে ধরলেন উনি ও রাগান্বিত কণ্ঠে বললেন

“তুমি কি কোনোভাবে আমার কাছে প্রাণভিক্ষা চাইছো? আমি কি গুন্ডা নাকি ধর্ষক? কোনটা? খুব শখ দয়া নেওয়ার! ওকে…….”

বলেই উনি রীতিমত আমার ঠোঁট কামড়ে ধরলেন। এই মুহূর্তে আমার উপরে ভালোবাসা নয় তবে আমার বলা একটি বাক্যের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনের এই একটাই পথ ওনার কাছে। ব্যাথায় আমার চোখ থেকে অঝোরে পানি পড়ছে। আস্তে আস্তে উনি আমার শাড়ীর আঁচলটা ফেলে কুচিগুলো খুলতে লাগলেন।
শত ধাক্কা দিয়েও তাকে একচুলও নড়াতে পারলাম না, উল্টো আমার প্রতিটা আঘাতের জন্য ওনার অত্যাচার তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
কষ্টে চোখ খিচে বন্ধ করে নিলাম , আর কোনো উপায় নেই আমার…….

……………………..?

গালে কিছু একটার স্পর্শ অনুভব হলো। এমনিতেই রাতে তেমন ঘুমোতে পারিনি, চোখ মুখ কুঁচকে বিরক্তিভাব নিয়ে চোখ ডলতে ডলতে তাকালাম।
আমার পাশেই উনি আমার দিকে কাত হয়ে একহাত দিয়ে আমার গালে স্লাইড করে যাচ্ছেন। চোখ চড়কগাছ এ পরিণত হলো আমার। আচমকা সরে যেতে গেলাম, কিন্তু লাভ হলো না। উল্টো আমাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিলেন উনি…….আর রহস্যময়ী এক হাসি ওনার ঠোঁট ছুঁয়েই রয়েছে।

গতরাতের কথা মনে পড়তেই চোখ সরিয়ে নিলাম তার ওপর থেকে।
উনি স্বাভাবিক গলায় বললেন “মানুষ ৩ কারণে চোখে চোখ মেলাতে পারে না…….. হয় লজ্জা নয় ভয় আর নয়তো…….”

“ঘৃণা” আমি দৃঢ় কণ্ঠে প্রকাশ করলাম।

উনি আমার কথা তুচ্ছ করে হেসে গলায় মুখ গুজলেন “মানুষ ঘৃণার ভাগটাও সহজে কাওকে দেয় না। আমি তো তাহলে ভাগ্যবান [[ক্ষীণ কণ্ঠে বললেন]] – তোমার ঘৃণাই সই।”

একটা আলতো ভাবে গলায় কামড় দিয়ে উনি তার হাতের বাঁধন আলগা করে দিলেন। আমি গায়ের চাদর জড়িয়ে তার থেকে দূরে সরে উঠে বসলাম।
উনি দুহাত মাথার নিচে দিয়ে আরাম করার মত ভাবে শুয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন।
আমি আর কিছু না বলে খাট ছেড়ে উঠতে গেলাম । কিন্তু কপাল আমার ষোলো আনা খারাপ।

পা নামাতে গিয়েই শরীরের ব্যথার কারণে আর এগোতে পারছি না।
আড়চোখে তাকিয়ে দেখি উনি এখনো ওভাবেই শুয়ে আছেন। কোনো হেলদোল নেই।

খুব কষ্ট নিজেকে শান্ত করে আস্তে আস্তে উঠে দাড়ালাম। একপা দুপা সামনে দিতে গিয়েই আবারো পড়ে যেতে গেলাম। সাথে সাথেই খাট ধরে একটু ঠেক দিলাম। শরীরে অসহ্য ব্যাথা। হাটতে অনেকটাই কষ্ট হচ্ছে। আর ওদিকে উনি একটু সাহায্য টুকুও করছেন না।

আবারো হাঁটার জন্য পা বাড়ালাম পেছন থেকে মৃদু অনুরোধের সুর ভেসে এলো “রাই……..”

থেমে গেলাম । উনি বললেন “আজ একটা হলদে রঙের শাড়ি পরবে?”

কথাটা যতই শুনতে মধুর হোক বা মোহময়ী হোক না কেনো ,,,এখন তার এই ছোট্ট অনুরোধটি ও রাখার মত মানসিকতা আমার মাঝে নেই।

কিছু না বলে আস্তে আস্তে বাথরুমে ঢুকে গেলাম।
ঝর্না ছেড়ে অঝোরে চোখের জল বিসর্জন দিচ্ছি।
কেনো হটাৎ করেই জিবনটা এমনভাবে ঘুরে গেলো! কয়েকটাদিন আগেও তো সব ঠিকঠাক ছিলো। শুধু এই একটা মানুষের জন্যই আমার জীবনের চিত্রটাই বিষাদ হয়ে গেল। এই একটা লোকই চার চারটে জীবনের ছবি ঘুরিয়ে রেখে দিলেন।

কিছুক্ষন পরে বড়ো টাওয়েল পেঁচিয়ে দরজা হালকা খুলে বাহিরে একটু উঁকি দিলাম। ঘর পুরোই ফাঁকা। উনি কি নেই তাহলে? একপা একপা বেরিয়ে পুরো ঘরে চোখ বুলোলাম। নাহ নেই।
“যাক ভালো…..”
তাকিয়ে দেখি খাটের ওপরে একটা হলদে রঙের শাড়ি বের করে রাখা। দেখে ঠাণ্ডা মাথাটায় ও আগুন জ্বলে উঠলো। মুখ ঘুরিয়ে নিলাম “পরবো না ওটা”

এগিয়ে আমার সুটকেস খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু আশ্চর্য। সুটকেসটা নেই। আমার সব কাপড়চোপড় তো ওটাতেই ছিলো। তাহলে?

“মা কি কাল বিদায়ের সময় সুটকেস দিতে ভুলে গেলেন? আরে ধুর এখানেই তো ছিলো। কালকেই তো দেখলাম….. এ কেমন কথা বিয়ের পরেরদিন নাকি কাপড় খুঁজে পাচ্ছি না। হলো কিছু!”

সরঘর তন্ন তন্ন করে খুঁজেও সুটকেস এট হদিস মিলল না। নির্ঘাত উনিই সরিয়েছেন। হ্যাঁ…… যাতে আমি এই শাড়িটা পরি।

“ভাবি…… ভাবি….. দরজা খোলো আর কতক্ষন? ভাইয়া তো এসে গিয়েছে এখন সবাই তোমার অপেক্ষা করছে……. কই তুমি?”

“হ্যাঁ…. হ্যাঁ সুমি…. আসছি। তোমরা ,,,, আচ্ছা তুমি যাও আমি আসছি,।।।” বলেই তাড়াতাড়ি শাড়িটা নিয়েই বাথরুমে ঢুকে গেলাম। উপায় নেই।

একেই বলে “ঝড় আসলে সবদিকই অন্ধকার …….”

চলবে✨✨✨✨

#In_The_Depths_of_Love
#Mizuki_Aura
#part_01

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here