#পঞ্চভূজ_তারা?
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পার্টঃ০২
সাদুরা কাল দেশে ফিরবে এই নিয়ে পাচজন ফ্রেন্ড এর সে-কি আনন্দ।কাল থেকে তারা আবার এক হবে।তাই এখন থেকেই প্লানিং করছে কে কি করবে?
–” সাদু তুই কিন্তু আমাদের ভার্সিটিতেই ভর্তি হবি।”আলিফা বলে উঠলো।
–“হ্যা আমরা পাচজন আবার এক হবো।” খুশিতে গদগদ হয়ে বললো আলিশা।
–” এই এই এই ফকিন্নি’স আমার কথা শুন সবাই।”নূর এর কথা শুনে সবাই নূর এর দিকে তাকালো।তা দেখে নূর আবার বললো,
–” ওয়াও দেখিছিস আমি কতোটা ভি.আই.পি পারছান সবাই আমার এক কথায় এদিকে তাকালি।”
মিম বিরক্ত হয়ে বললো,
–“, তার আগে বল কি বলবি।”
নূর দাত কেলিয়ে বলে,
–“, কিছু না।এহেহেহে!”
সাদু রেগেমেগে শেষ বললো,
–“, চুরেল কাল দেশে এসে সবার আগে তোর ঘাড় মটকাবো।”
নূর কিছু একটা চিন্তা করে বলে,
–“, তাহলে তো তুই চুরেল হবি আমি না।”
আলিফা জোড়ে চিল্লিয়ে বলে,
–“নূর তুই থামবি।নাহলে কালকে ভার্সিটি এসে তোরে ইচ্ছা মতো পেদানি দেবো।”
নূর ভ্রু-কুচকে বলে,
–“, তুই আমার ঘাড় মটকাবি লাইক সিরিয়াসলি।”
সাদু এইবার জোরে বলে,
–“স্টোপ!! চুপ কর তোরা আমি কালকে এসে নেই তোদের সব কয়টাকে শায়েস্তা করবো।”
আলিশা বলে উঠলো,
–“সাদু ওদের কথা বাদ দে তুই এইবার বল কোন ভার্সিটিতে এডমিশন নিবি।”
সাদু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
–“ভাইয়া যেই ভার্সিটিতে ভর্তি হবে ওইটাই।আর ভাইয়া তার বন্ধুরা যেই ভার্সিটিতে আছে ওইটায় এডমিশন নিবে।তো আমাকেও ওইটাই নেওয়া এডমিশন নেওয়া লাগবে। ”
মিম চিন্তিত হয়ে বলে,
–“কিন্তু আমরা তো সবাই আলাদা আলাদা ভার্সিটিতে আছি।মানে আমি এখন রাজশাহী, নূর আর আলিফা ঢাকাই আছে মানে সাদুর ভাইয়ের বন্ধুরা যেই ভার্সিটিতে আছে।আলিশা আছে চট্টগ্রাম।এখন তাহলে আমাকে আর আলিশাকে ঢাকা এসে এডমিশন নিতে হবে। কিন্তু…”
মিমকে মাঝপথে থামিয়ে আলিফা বললো,
–” তুই আমাদের বাসায় থাকবি।”
সাদু লাফিয়ে উঠে বলে,
–” আর আলিশা আমার বাসায়।নূর আর আমার বাশা তো পাশা-পাশি।আমরা ছাদ থেকেও একজনের বারি আর একজন যেতে পারি। ইনফেক্ট আমি আগে ওদের ছাদ দিয়ে রাতে নূর দের বাড়ি যেতাম?।”
আলিশা বললো,
–“,কিন্তু আমাদের ওতো বাড়ি আছে ওখানে তাহলে তোদের বারি কেন থাকবো।”
সাদু বিরক্ত নিয়ে বললো,
–“হ্যা জানি আমি।কিন্তু আংকেল আর আন্টি তো আর এখানে নেই।তাই আমি তোদের একা থাকতে দিবো না।এইটাই ফাইনাল।”
ওরা জানে সাদু যা বলবে তাই।অগত্য ওরা রাজী হয়ে গেলো।এইভাবে ওরা কথা বলতে লাগলো।
চলুন কিছু কথা বলা যাক আফরান আর সাদু হলো আপন ভাই বোন আর নিবির হলো সাদু আর আফরান এর খালাতো ভাই।নিবির যখন ক্লাস এইট এ পড়ে তখন নিবির এর বাবা মা একটা কার এক্সিডেন্ট এ মারা যাবার কারনে নিবির বাংলাদেশ ছেড়ে আমেরিকা চলে যায় যেখানে সাদুর বাবা থাকতো।সাদুর ক্লাস নাইনে থাকতে একটা রোগ হয় যার চিকিৎসা করারনোর জন্য ওরাও চলে যায়।আর কাল আবার তারা বাংলাদেশ যাবে।ওরা সবাই এইবার পার্মানেন্ট বাংলাদেশ স্যাটেল হয়ে যাবে।নিবির পাক্কা ৮ বছর পর আসবে আর সাদুরা ৩ বছর পর।আর নূর আর মনির হলো চাচাতো ভাই বোন জয়েন্ট ফ্যামিলি।নিবির আর আফরান সেম বয়সের আর নিবির আফরান দের বাসা থেকেই স্টাডি করতো যার কারনেই নিবির ওদের ও বেস্ট ফ্রেন্ড।আর যেহেতু ওরা বেস্ট ফ্রেন্ড সেই সুবাদে নূর ও সাদুর বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে যায়।আর মিম,আলিফা,আর আলিশার সাথে স্কুলে বন্ধুত্ব হয়।ঠিক এইরকমি আরিফ আর মেরাজ এর সাথেও মনির,আফরান আর নিবির এর বন্ধুত্ব স্কুল থেকে।
_____________এইদিকে,,,,,,,,
–” ভাই কালকে আবার আমরা এক হবো আবার আগের মতো মজা করবো।”আরিফ খুশি হয়ে বললো।
–“হ্যা ইয়ার আমরা আবার এক হবো।”মনির মুচকি হেসে বললো।
মেরাজ করুনভাবে বলে উঠলো,
–” দোস্ত আমরা যেহেতু এক হবো তাহলে তো। সাদুর সাথে ফ্রেন্ড’স রাও এক হবে।আমি সিউর ওরা এই ভার্সিটিতেই এডমিশন হবে।মানে মিম আর আলিশাও এখানে আসবে।নূর আর আলিফা তো আগের থেকেই আছে।তুই ভাবতে পারছিস কি হবে তাহলে।”
আরিফ এক ঢোক গিলে বললো,
–“,আগে যেই শয়তানের শয়তান ছিলো এক একটা।সাদু যাওয়ার পর মিম আর আলিশা ওর ফ্যামিলি নিয়ে অন্য জায়গায় চলে যায়।ফলে নূর আর আলিফা নিজেদের দুষ্টুমি কমিয়ে দিয়েছে।মানে করে দুষ্টুমি কিন্তু আমাদের সাথে না।কিন্তু এইবার এই পাচজন এক জায়গায় একত্রিত হলে আমাদের জীবন তেজপাতা আল্ট্রা মেক্স প্রো হয়ে যাবে।”
মনির বললো,
–“,ওরা যতো দুষ্টুই হোক না কেন! ওদের মন কিন্তু অনেক ভালো।আর আমি যে আমার পিচ্চিপরির এই দুষ্টুমি দেখেই প্রেমে পড়েছি।”
মেরাজ কাদো কাদো হয়ে বলে,
–” ভাই তুই সাদুকে ভালোবাসিস তাই এমন কথা বলছিস।কিন্তু তোর বউ যে তার গ্যাংগ নিয়ে আমাদের নাকে দরি দিয়ে ঘুরাবে তার বেলায় কি?”
মনির একটা বাকা হাসি দিয়ে বললো,
–“, এইবার খেলাটা উল্টো হবে।নিবির আর আফরান আসুক আমরাও ওদের জ্বালাবো।যেমন টা ওরা তিন বছর আগে জ্বালাতো।”
_________পরেরদিন__________
এয়ারপোর্টে অপেক্ষা করছে মনির, আরিফ,আর মেরাজ কারন একটু পর সাদু,আফরান আর নিবির চলে আসবে।ওরা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে।মনির একদিক দিয়ে নিজের প্রানের বন্ধুর জন্য যেমন অপেক্ষা করছে অন্যদিক দিয়ে আবার নিজের ভালোবাসার মানুষটির জন্য অপেক্ষা করছে।হঠাৎ মনির নিজের পিঠে ধুম করে একটা ঘুশি খেয়ে হকচকিয়ে গেলো।দেখে নূর অগ্নিশর্মা হয়ে তাকিয়ে রাগে ফুসছে।আর ওর পিছে দারিয়ে আছে আলিফা,মিম আর আলিশা।মনির বিরবির করে বললো,
–” এরা দুইজন কি কম ছিলো।বাকি দুইটাও আসল শয়তান আসার খবর শুনে দূর থেকেও এসে পড়েছে।”,
নূর রেগে মেগে বলে,
–“,বিরবিরানি ওফ কর আগে বল আমাকে একা ফেলে এলে কেন ভাইয়া! আমি তোমাকে ওয়েট করতে বলি নাই যে মিম আর আলিশা কিছুক্ষনের মাজেয় এসে পড়বে তাহলে তুমি আমাদের একা ফেলে চলে এলে কেন?”
আলিফা কটমট চোখে তাকিয়েই বললো,
–” মনির ভাইয়ার কোন দোশ নেই।আমি জানি এই ব্যাক্তি[আরিফকে ইশারা করে] মনির ভাইয়াকে উসলিয়ে নিয়ে এসেছে।”
মিম কোমড়ে হাত দিয়ে বলে,
–” সাথে তো ওই হনুমানটাও আছে।”[মেরাজকে উদ্দেশ্য করে]
আরিফ নাক মুখ কুচকে বললো,
–” তোমরা এতো ঝগড়া করো কিভাবে।আর আলু ফালুদের এতো রাগ মানায় না।দেখা যাবে অতি রাগে জ্বলতে জ্বলতে পটাটো চিপ্স হয়ে যাবে।”
মেরাজ হেসে বলে,
–” দোস্ত যা বলছিস ডিম টাকেও এতো রাগতে বারন কর নাহলে ওমলেট হয়ে যাবে।”
মনির বিরক্ত হয়ে বলে,
–“নূর তোর ফ্রেন্ড’স দের থামতে বল এইটা এয়ারপোর্ট।”
নূর দাতে দাত চেপে বলে,
–” তুমিও তোমার ফ্রেন্ড’স দের থামতে বলো।এতো ঝগরা করে আল্লাহ মেয়েদের মতো।”
মনির কিছু বলবে তার আগেই তার সামনে দিয়ে মনে হয় ঘূর্ণিঝড়ের মতো কিছু চলে গেলো।মনির তাকিয়ে দেখে একটা মেয়ে নূরকে জড়িয়ে ধরে লাফাচ্ছে আর চেচাচ্ছে।লাফানো ওফ করে আবার নিজের দু-হাত ছড়িয়ে দিতেই মিম,আলিশা,আলিফাও ঝাপিয়ে পড়লো ওর উপর এইবার এই পাচজন মিলে লাফাচ্ছে আর চেচাচ্ছে।মনির আর বুজতে বাকি রইলো না এটা কে?তুফান এসে পড়েছে।মনির উকিঝুকি দিয়ে সাদুকে দেখার চেষ্টা করছে কিন্তু এই মেয়ে ওর ফ্রেন্ড’স দের পেয়ে এমন লাফান লাফাচ্ছে যেন সে ভূলেই গেছে এইটা এয়ারপোর্ট। মনির একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সামনে তাকালো দেখে নিবির আর আফরান বিরক্তিকর চাহনি নিয়ে আসছে।মনে হচ্ছে ওদের কেউ করলার রস খাইয়ে দিয়েছে।মনির ভ্রু-কুচকে বুজার চেষ্টা করছে এই দুই ভাইয়ের হয়েছেটা কি?যেখানে ওদের খুশির ঠ্যালায় লুংগি ড্যান্স দেওয়ার কথা ঠিক সাদুর মতো সেখানে এদের মুখ চুপসে যাওয়া আমের মতো হয়ে আছে।নিশ্চয় কোন ঘাপলা আছে।সেটা জানতে হবে মনির কে।নিবির আর আফরান এগিয়ে আসতেই মেরাজ, আরিফা আর মনির ও ওদের গিয়ে জড়িয়ে ধরে গ্রুপ হাগ করলো,অনেক্ষন পর ছেড়ে দিয়ে মনির জিজ্ঞেস করলো,
–” বোথ ওফ ইউ গাইস আর ওকে?”,
আফরান নিবির এর দিকে একবার তাকিয়ে বললো,
–“,নো উই আর নট ওকে।”
আরিফ চোখ ছোট ছোট করে বললো,
–“, কেন কি হয়েছে?”
নিবির একবার সাদুদের দিকে তাকিয়ে মনির কে উদ্দেশ্য করে বললো,
–“, মনির, মনির রেএএ।আমি সত্যি কইতাছি তোর বউরে ভালা হইয়া যাইতে কইছ, তোর বউ যদি ভালা না হয় তো আমি তোর হাড্ডি গুড্ডি ভাইংগা দিমু।”
মেরাজ চোখ-মুখ কুচকে বলে,
–“ছেহঃ আমেরিকায় থেকে এইসব কি ভাষায় কথা বলিস নিবির।”
নিবির দাতেদাত চেপে বললো,
–” খাটি বাংলা।আরো ভয়ানক খাটি বাংলা আছে শুনবি।”
মেরাজ এক ঢোক গিলে বলে,
–“নাহ থাক আমি শুনবো না।”
আরিফ এইবার বলে উঠলো,
–“, আরে ভাই হয়েছেটা কি সাদু কি করেছে সেটা বলো।”
চলবে,,,
কেমন লাগলো জানাবেন সবাই।নাহলে পরের পার্ট পাবেন না।ঘটনামূলক কমেন্ট চাই আর রিয়েক্ট কবশ্যই দিবেন।আমরা এতো বড় গল্প লিখতে পারলে আপনারা সামান্য রিয়েক্ট আর কমেন্ট করতে পারবেন না।তাহলে গল্প লিখবো কেন?”
এডিটঃ আমি জানি আপনাদের পড়তে একটু অসুবিধে হচ্ছে। আসলে পর পর ৩ টা আইডি একদিনে ডিজেবল হয়ে যাওয়ায় আমি ডিপ্রেশনে আছি।তাই লিখা এমন হয়েছে।প্লিজ কেউ আমাকে বকা দিও না বোনুরা।আগামী থেকে গুছিয়ে লিখবো???