? Ragging To Loving ?
Part:: 31
Writer:: Ridhira Noor
নিস্তব্ধ পরিবেশ বিরাজ করছে চারপাশে। বলার ভাষা’ই হারিয়ে ফেলেছে সবাই। পুষ্পর হাত ধরে নিরবতা ভেঙে নূর বলল।
নূরঃঃ- তুই চল আমার সাথে। (পুষ্পকে টেনে নিয়ে যেতেই আফরান নূরের হাত ধরে ফেলে)
আফরানঃঃ- কোন চলাচলি না। যা বলার সবার সামনে বলবে। কারণ সবার মনে হাজারো প্রশ্ন ঘুরছে। বিষয়টা সবার কাছে পরিষ্কার করে নেওয়ায় ভালো।
নূর পুষ্পর হাত ছেড়ে মাথা নেড়ে সায় দিল। কিন্তু আফরান এখনও তার হাত ধরে আছে।
আফরানঃঃ- এবার বল কাহিনি কি? আমার সেই আগে থেকে খটকা লাগছিল। যেদিন তুমি ফার্ম হাউসে গিয়েছিলে। রিহানকে ফোন করেছ মানলাম। কিন্তু ফার্ম হাউসের এড্রেস তুমি কিভাবে জানলে? এই নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল। কিন্তু কখনও সেই পরিস্থিতি আসেনি যে তোমাকে বা রিহানকে জিজ্ঞেস করব।
নূরঃঃ- (উরিম্মা এই দেখি মি. গোয়েন্দা। এতো চিন্তা ভাবনা নিয়ে ঘুমাই কেমনে? আমার তো এই চিন্তায় ঘুম আসে না যে ডোরেমনের পকেটে এতো বড় বড় গেজেট থাকে কিভাবে? আর এই দেখি। বাহ্!) দাঁড়িয়ে থেকে পা ব্যাথা হয়ে গেল। ক্যান্টিনে গিয়ে বসে আরাম সে কথা বলি?
সবাই মত পোষণ করল। নূর যেতে হাতে টান অনুভব করে। পিছন ফিরে দেখে আফরান এখনও হাত ধরে আছে। নূর যাওয়ায় আফরানের হাতেও টান লাগে। দুজনেই হাতের দিকে তাকায়। তড়িঘড়ি আফরান হাত ছেড়ে দিল। তারপর সবাই ক্যান্টিনে গিয়ে বসল।
পুষ্পঃঃ- আমাদের পরিচয় হয়েছিল দুই বছর আগে। ফেসবুকে আমাদের রিলেশন হয়। সরি ফেইক রিলেশন। (মুখটা মলিন করে বলল। ফেইক রিলেশন বলায় রিহানও কিছুটা কষ্ট পেল।)
সাদিকঃঃ- তার জন্য আমি দুঃখিত। আমার গার্লফ্রেন্ড আমাকে ধোকা দিচ্ছিল। সে ফেইক আইডি ইউজ করে আরেকজনের সাথে রিলেশন করছিল। আমি রিহানকে ওর আইডি দেয় যাতে সে ফেইক রিলেশন করে হাতে নাতে প্রমাণ যোগাড় করতে পারে। কিন্তু পরে জানতে পারলাম আইডিটা ওর না তোমার।
রিহানঃঃ- এক সপ্তাহ ফেইক ফ্রেন্ডশিপ করার পরই জানতে পেরেছিলাম ব্যাপারটা। চেয়েছিলাম পুষ্পকে সব বলে দিব। ফেইক ফ্রেন্ডশিপ ফেইক রিলেশন এর কথা। কিন্তু নিজের অজান্তেই ওর মায়ায় জড়িয়ে পড়েছিলাম। ফ্রেন্ডশিপ ফেইক ছিল। কিন্তু ভালবাসাটা রিয়েল ছিল।
পুষ্পঃঃ- কিন্তু তুমি তো বলেছিলে আমার সাথে কথা বলতে তোমার বিরক্ত লাগতো। আমার বকবক গুলো বিরক্ত লাগতো। যখন তুমি তোমার ফার্ম হাউসে উনাদের বলছিলে তখন শুনেছিলাম। (বলে মুখ ফিরিয়ে নিল)
রিহানঃঃ- সেটা যখন প্রথম অজানা ছিল তখন। যখন জানতাম আইডিটা সাদিকের গার্লফ্রেন্ডের তখন। কিন্তু পরে তো সেই বকবক গুলোই আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। (মৃদু হাসলো। পরক্ষণে চেহারা মলিন হয়ে গেল) আমি তো না জেনে ফেইক ফ্রেন্ডশিপ করেছিলাম। ভাল তো সত্যি বেসে ছিলাম। কিন্তু তুমি? তুমি তো জেনে শুনে সব শুরু থেকেই টাইমপাস করেছিলে।
পুষ্পঃঃ- কে বলেছে তোমায় আমি টাইমপাস করেছি। আমি তো সেই শুরু থেকেই তোমাকে ভালবেসে ছিলাম। তোমাকে বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু যখন তুমি বলেছ সব ফেইক ছিল। মিথ্যা রটনা ছিল আমার সব বিশ্বাস ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল।
রিহানঃঃ- হ্যাঁ বলেছিলাম। কিন্তু তা তো যখন জানতাম না তখন বলেছি।
নূরঃঃ- আয়ায়ায়া স্টপ…… (চিল্লিয়ে উঠল) কে কি বলেছে? কি শুনেছে? কিছুই মাথায় ঢুকছে না। পুষ্প তুই বল তুই কি শুনেছিস?
পুষ্পঃঃ- আমাদের রিলেশনের দুই মাস পূর্ণ হওয়ায় আমরা রিহানের ফার্ম হাউসে ডেইট প্লান করি। আমি ওয়াশরুমে গিয়েছিলাম। এসেই শুনি রিহান তার বন্ধুদের বলছে আমাদের সম্পর্ক মিথ্যা ছিল। সেটা শুনে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম তাই আর এক মূহুর্তও অপেক্ষা না করে চলে এলাম।
রিহানঃঃ- হোয়াট? তুমি অর্ধেক কথা শুনেই চলে এলে। আর একটু অপেক্ষা করলে সম্পূর্ণ কথা শুনতে পেতে। আমি বলেছিলাম আমার ফ্রেন্ডশিপ ফেইক ছিল। কিন্তু পরে এটাও বলেছিলাম যে আমি সত্যি তোমাকে ভালবাসি। কিন্তু তুমি সেই অর্ধেকটা শুনে ভুল বুঝলে।
এসব শুনে পুষ্প তো পারছে না নিজেই নিজের খুন করতে। আরেকটু অপেক্ষা করলে হয়তো আজ তারা এই পরিস্থিতিতে থাকত না। এখন নিজেকে দোষী মনে হচ্ছে। লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে। কারো চোখে চোখ মিলানোর মতো সাহস এখন তার নেই।
নূরঃঃ- এবার আপনি বলুন। (রিহানকে উদ্দেশ্য করে)
রিহানঃঃ- (দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করল) সাদিক আর ফাহাদের সাথে কথা বলার পর তাদের পুষ্পর সাথে পরিচয় করতে চেয়েছিলাম। তাই তাকে খুঁজতে খুঁজতে দেখি বাইরে ফোনে কারো সাথে কথা বলছে। তাই গেলাম তার কাছে। আর তখনই শুনি সে কাউকে বলছে, কিসের রিলেশন কিসের ভালবাসা। মিথ্যা ছিল সব। শুধু টাইমপাস ছিল। ভেবেছিলাম হয়তো আমি ভুল করেছি। তাই তাকে সব বলে দিতে চেয়েছি। কিন্তু বলে আর কি হতো। সবই তো নাটক ছিল।
পুষ্পঃঃ- ওয়েট ওয়েট। তোমাকে কে বলেছে সব নাটক ছিল। টাইমপাস ছিল। আমি সেগুলো তোমার কথা বলছিলাম। আমি যা শুনেছি শুধু তাই রিপিট করেছি।
পুষ্প আর রিহান ছাড়া সবাই একসাথে কপালে হাত দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করল।
নূরঃঃ- এই জন্যই বলে অল্প বিদ্যা ভয়ংকর। দুইজনেই অল্প একটু শুনে নিজের মধ্যে কাহিনি তৈরি করে নিল। আরে যদি বিশ্বাসই না থাকে একে অপরের প্রতি তাহলে আবার কিসের ভালবাসা। একটিবার তো একে অপরকে জিজ্ঞেস করতে পারতে।
পুষ্পঃঃ- আমার রাগ সম্পর্কে জানিসই। সেসব শোনার পর প্রচুর রেগে ছিলাম। তাই ফোন সুইচড অফ করে দেয়। কিন্তু রাতে আমি রিহানকে ফোন দিয়েছিলাম। নট রিচএবল ছিল। পর পর তিন দিন ফোন দেয়। তাও ফোন নট রিচএবল। কিন্তু আমি যে না বলে চলে এসেছিলাম ওর কি প্রয়োজন ছিল না আমাকে একটিবার ফোন করার।
সাদিকঃঃ- আরে সেই দিন রিহান তোমাকে খুঁজতে যায়। প্রায় এক ঘন্টা হয়ে গেল কিন্তু রিহান আসেনি। তাকে খুঁজতে গিয়ে দেখি ওয়াশরুমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে। গায়ে প্রচুর জ্বর। তারপর আমরা তাকে হসপিটালে নিয়ে যায়। চার দিন ধরে জ্বর ছিল।
আফরানঃঃ- রিহান টেনশন করলে ওর জ্বর হয়। তা অনেক দিন স্থায়ী থাকে।
রিহানঃঃ- অজ্ঞান হওয়ার সময় ফোন বাথটাবে পড়ে যায়। তাই ফোন কাজ করছিল না। সুস্থ হওয়ার পর আমি ফোন দিয়েছিলাম। এফবিতেও খুঁজে ছিলাম। কিন্তু আইডি ডিএক্টিভেট করে দেয়।
পুষ্পঃঃ- তিন ধরে অনেক চেষ্টা করেছি যোগাযোগ করার। না হওয়ায় আইডি ডিএক্টিভেট করে দেয় আর সিম ভেঙে ফেলি।
সিমাঃঃ- হ্যালো গাইজ? কেউ কি কিছু বুঝতে পেরেছ? নাকি আমিই আবুল হয়ে বসে আছি যে আগা মাথা কিছুই বুঝল না।
আমরিনঃঃ- আমার তো সব মাথার উপর দিয়ে গেল।
কারো মাথায় কিছু ঢুকছে না। কিন্তু এতটুকু বুঝতে পেরেছে যে তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। রিহান পুষ্প দুইজনই লজ্জিত।
পুষ্পঃঃ- এসবের শুরু তো মিথ্যা দিয়েই হয়েছে। রিহান যদি আমাকে সত্যিটা বলে দিত তাহলে কি এত কিছু হতো? হ্যাঁ আমি মানছি সে প্রথমে ভুল করেছিল। কিন্তু পরে? পরে কি আমাকে জানাতে পারতো না। যে সম্পর্কের ভিত্তিই ছিল মিথ্যা সেই সম্পর্কই টিকতই বা কিভাবে? (এসব বলতে বলতে চোখের পানি গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ল)
কারো বলার মতো কিছু নেই। রিহানও মনে মনে অনুতপ্ত। চেয়েও কিছু বলতে পারছে না। পুষ্প নিজেকে আর সামলাতে না পেরে উঠে চলে গেল। পুষ্প যাওয়ার পর পরই রিহানও উঠে চলে গেল। বাকিরা ছোট খাট শকড খেয়ে বসে আছে।
সিমাঃঃ- পুষ্পর যা রাগ। বাবা গো বাবা। আমাদের জানা আছে। রাগে কাউকে কিছু বলবে না। কিন্তু নিজেরই ক্ষতি করবে।
আলিফাঃঃ- দুইটাই ঘাড় ত্যাড়া। মেইড ফর ইচ আদার।
আমরিনঃঃ- সেই যায় হোক। ভাল তো অনেক বাসে একে অপরকে। কিন্তু তাদের ইগোর কারণে কেউ কারো কাছে মাথা নত করবে না। পুষ্প তো না ই।
মেহেরঃঃ- দোষ কিন্তু রিহান ভাইয়ার অবশ্যই আছে। যদি পুষ্পকে জানিয়ে দিত তাহলে এমন হতো না।
ইয়াশঃঃ- আহাহা তোমার বান্ধবী ধোয়া তুলসীপাতা।
মেহেরঃঃ- তা নয় কি। রিহান ভাইয়া আগে বলে দিলে এসব ভুল বোঝাবুঝি হতো না।
আফরানঃঃ- প্লিজ স্টপ গাইজ। এখানে পুষ্প রিহানের ঝগড়া মিটানোর জন্য আছি। নতুন ঝগড়া বাঁধানোর জন্য না। সো স্টপ দেস ননসেন্স।
নূরঃঃ- (হো নিজে সেন্স ওয়ালা। ঢং।) আমাদের আগে জানতে হবে তাদের মনে কি চলছে। এখনো কি একে অপরকে ভালবাসে নাকি অভিমান নিয়েই আজীবন দূরে থাকবে।
_______________________________
সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। দুই সপ্তাহ কেটে গেল। সাদিক ফাহাদ সেই দিনই ইন্ডিয়া ফিরে গিয়েছিল। পুষ্প তার রাগ নিয়ে রিহান তার অভিমান নিয়েই আছে। ভাল কিন্তু উভয়ই বাসে। কিন্তু তাদের ইগোর কারণে কেউ কারো কাছে যাবে না। এই কয়দিন পুষ্প রিহান যতই একে অপরের সামনে আসতো রাগে অভিমানে দুইজনই মুখ ফিরিয়ে নিত। আবার সবার আড়ালে লুকিয়ে একে অপরকে দেখতো। রিহান পুষ্পকে ছাড়া সবাই একসাথে ক্যান্টিনে গোল মিটিং এ বসল।
নূরঃঃ- এই নাছোড়বান্দা যে ত্যাড়া। এমনি সোজা হবে না। তাদের সাথে ত্যাড়ামি করেই সোজা করতে হবে।
ওয়াসিমঃঃ- খুরাফাতি কুইন নিজের কোন খুরাফাতি আইডিয়া চালাও। এই টেনশন থেকে আমাদের উদ্ধার কর। এসব ঝামেলা আর ভালো লাগছে না। লাইফে একটু চিল চায়।
নূরঃঃ- হুমম…… (গালে আঙুল দিয়ে চিন্তার ভাব নিয়ে ভাবছে।) মেরি খুরাফাতি দিমাগ মে তুফানি আইডিয়া আগেয়া। (চুটকি বাজিয়ে) লাভ ফরমুলা ইউজ করতে হবে।
সবাইঃঃ- লাভ ফরমুলা?
আহিলঃঃ- সেটা আবার কি?
নূরঃঃ- জেলাসি। শোন _________________।
আহিলঃঃ- নট বেড। আইডিয়া কিন্তু ভালোই।
আফরানঃঃ- সব আমার ভাইকে দিয়ে করাবে।
নূরঃঃ- সব হয়েছেও আপনার ভাইয়ের জন্য। যদি আগেই সব ক্লিয়ার করে দিত তাহলে এসব হতো না। তাই বেশি ঢং করবেন না। হুহ্।
.
.
.
ইয়াশঃঃ- আরে আহিল শুনেছি পুষ্পর নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে।
রিহানঃঃ- (অবাক হয়ে তাকাল। হোয়াট? পুষ্পর? বিয়ে? আরে হয়তো ভুল শুনেছে ওরা। আবারও শান্ত হয়ে বসে পড়ল।)
আহিলঃঃ- (এর তো কোন রিয়েকশনই নেই) হ্যাঁ শুনেছি। ইনফেক্ট আগামী সপ্তাহ নাকি এনগেজমেন্ট। আমরিন বলেছে।
রিহান এবার একটু আতংকিত হয়ে নড়েচড়ে বসল।
আহিলঃঃ- আরে কাল নাকি ওর ফিওন্সে ভার্সিটি আসবে সবার সাথে দেখা করতে।
রিহান কিছু বলছে না। শুধু রাগে ফুঁসছে।
ওয়াসিমঃঃ- (কাজ হচ্ছে দেখছি। মনে মনে পৈশাচিক হাসি দিল।)
পরের ভার্সিটিতে আসতেই দেখে পুষ্প আর একটা ছেলে অনেকটা কাছাকাছি দাঁড়িয়ে কথা বলছে আর হাসছে। নূর আর বাকিরা দূর থেকে এসব দেখে আনন্দ নিচ্ছে। রিহান মুখ ফিরিয়ে যেতে নিলে দেখে পুষ্প ছেলেটির হাত ধরে আছে। রাগে হাত মুষ্টি বদ্ধ করল। ভালবাসার মানুষটিকে অন্য কারো সাথে দেখলে কারই বা হিংসা হয়না। পুষ্পর চুল মুখে আসায় ছেলেটা আলতো করে কানের পিছে গুজে দিল। রিহান এবার রাগ সামলাতে না পেরে দ্রুত গিয়ে ছেলেটিকে সরিয়ে পুষ্পকে টেনে নিয়ে গেল। বাকিরা দাঁড়িয়ে হাসছে।
নূরঃঃ- ওয়েল ডান মুহিন। (বলে হাই ফাইভ দিল) থ্যাংকস। কালকে বলেছিলাম আর আজই চলে এলে।
মুহিনঃঃ- আরে কি বলছ। পুষ্প আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। ওর জন্য এতটুকু করতে পেরে আমি অনেক খুশি। রিহানকে অনেক ভালবাসে কিন্তু এত রাগ যে নিজে কষ্ট পাবে তাও বলবে না।
রিহান জানতো না মুহিন পুষ্পর মামা হয় সম্পর্কে। শুধু জানতো ওর বেস্ট ফ্রেন্ড। তাই তাদের একসাথে দেখে জ্বলছিল। পুষ্পকে টেনে একপাশে নিয়ে এলো।
পুষ্পঃঃ- কি করছ তুমি? সরি আপনি। (অভিমান করে বলল)
রিহানঃঃ- হ্যাঁ। এখন তো আমি আপনি হয়ে গেলাম। আর সেই তোমার আপন হয়ে গেল। (দুই বাহু চেপে ধরল) কেন করছ এমন? আমি মানছি আমি ভুল করেছি। তার শাস্তি দুইটা বছর ধরে পেয়েছি। এখন আর কেন শাস্তি দিচ্ছ?
পুষ্পঃঃ- শাস্তি? আর আমি যে বিনা দোষে পেয়েছি শাস্তি। তার কি হবে? ছাড় আমাকে। আমার যেতে হবে। মুহিন…..
রিহানঃঃ- নাম নিবে না ওর।
পুষ্পঃঃ- কেন নিব না? ওর আমার….
রিহানঃঃ- কেউ না তোমার। তুমি আমার। শুধুই আমার। ভালবাসি তোমায়। প্লিজ আবার আমাকে ছেড়ে যেও না। প্লিজ। (কান্না সুরে বলল) এই দুইটা বছর তিলে তিলে কাটিয়েছি। এবার তুমি চলে গেলে সত্যি মরে যাব।
পুষ্পঃঃ- কি যা তা বলছ। এসব ফালতু কথা বলতে বারণ করেছি না। তুমি না থাকলে আমি কিভাবে থাকব। দুই বছর আমিও তো কম কষ্ট পায়নি। প্রতিটি মুহূর্ত তোমার কথা ভেবেছি। আমিও তো ভালবাসি তোমায়।
রিহানঃঃ- তাহলে বিয়ে কেন করছ?
পুষ্পঃঃ- বিয়ে? কার বিয়ে? কখন বিয়ে? কোথায় বিয়ে?
রিহানঃঃ- কেন তোমার আর মুহিনের।
পুষ্পঃঃ- তোমার মাথা খারাপ? মুহিন আমার মামা হয়।
রিহান ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। হঠাৎই পাশ থেকে হাসির আওয়াজ আসল। সবাই সেখানে উপস্থিত ছিল। তাদের কান্ড দেখে হেসে দিল।
ওয়াসিমঃঃ- এসব খুরাফাতি কুইনের আইডিয়া ছিল। যাতে তুই নিজে পুষ্পকে তোর মনের কথা বলতে পারিস। কারণ দোষ তোর ছিল। তুই সত্য লুকানোর কারণে এসব হয়েছে। তাই তোকে দিয়েই সব করিয়েছে।
রিহানঃঃ- ওহ গড। এদিকে আমার জান বের হয়ে যাচ্ছিল এটা ভেবে যে পুষ্পকে হারিয়ে ফেলব।
নূরঃঃ- না হারানোর জন্যই এসব প্ল্যান। সময় থাকতে যাতে বুঝতে পারেন। নাহলে অনেক দেরি হয়ে যেত।
পুষ্পঃঃ- নূরিইইই (জড়িয়ে ধরতে আসলে নূর থামিয়ে দেয়)
নূরঃঃ- এক্কেরে থাপরাইয়া মুতাই দিমু। আমার ধারে কাছেও আসবি না। খুব ভালোই নাটক করতে পারিস। বাহ্ আমি তো মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
পুষ্পঃঃ- আরে তোরা তো কিছু বল। (বাকি বান্ধবীদের উদ্দেশ্য করে)
সিমাঃঃ- অবশ্যই। আমি লাত্থাইয়া হাগাই দিমু।
আলিফাঃঃ- আমি ঘুসি দিয়া পাদাই দিমু।
আমরিনঃঃ- আমি চিমটি দিয়া বমি করাই দিমু।
মেহেরঃঃ- আমি কামড় দিয়া রক্ত বাইর করে দিমু।
ছেলেরা তাদের কথা শুনে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। তারা বান্ধবীরা এসবে অভ্যস্ত। কিন্তু ছেলেরা এই প্রথম শুনে একটু থুক্কু বড় শকড খেল।
.
.
.
চলবে
বিঃদ্রঃ ?? কেউ কনফিউজড হইয়া আমারে ফ্লাইং জুতা মেরো না। এই পর্ব লিখতে গিয়ে নিজেই কনফিউজড হয়ে গেলাম যে কি লিখছি। ?? তিন যাবত পাগল আছিলাম। ?? তাই এই মাসুম বাচ্চার উপর দয়া করিও ??