Ragging To Loving ?part-13

0
1066

? Ragging To Loving ?
Part:: 13
Writer:: Ridhira Noor

নূরঃঃ- এখন শুরু করবে গান “বন্ধু তুমি একা হলে আমায় দিও ডাক,,, তোমার সাথে গল্প করব আমি সারারাত ” রিপন ভিডু। নানানানানানা। কান বাঁচানো ফরজ।

পুষ্পঃঃ- কেন তুই কি উনার গান শুনেছিস?

নূরঃঃ- ঝগড়া করলে মনে হয় কাক কা কা করতেছে। গান গাইলে তো মনে হয় কাকেরও জান পরান বাইর করে ফেলবে।

হঠাৎ গিটারে টোন বেজে উঠল। কান থেকে হালকা করে হাত সরালো। আফরানের সাথে সাথে উপস্থিত সবাই তাল মিলালো। হাত উপর করে হাওয়ায় ছড়িয়ে গানের সাথে তাল মিলাচ্ছে।
♪♪♪

ঝুম…..রেরে রারে রারি রেরে (৬)

তুমি আমায় ডেকেছিলে
এক মেঘে ঢাকা দিনে
কেন আমি দেইনি সাড়া
আমার চোখে আকাশ দেখে
তুমি বলেছিলে কিছু
বুঝিনি কেন সেই ইশারা
এখন আমি অন্য আমি হয়ে
ছুটে চলি তোমারই শহরে
হারিয়ে চোখের যত ঘুম
ঝুম……..উড়ে উড়ে দূরে দূরে
ঝুম……..মেঘে মেঘে ডানা মেলে
ঝুম……..ঘুরে ঘুরে তারে ডাকি
ঝুম……..উড়ে উড়ে খুঁড়ে খুঁড়ে
ঝুম……..মেঘে মেঘে ডানা মেলে
ঝুম……..ঘুরে ঘুরে তারেই খুঁজি
আলো আঁধারির এ মায়ায়
এই অবেলায়, মন যে হারায়
চেনা অচেনা কত পথ
হঠাৎ কেনো থমকে দাঁড়ায়
ঝুম…….উড়ে উড়ে দূরে দূরে
………………………………….

ঝুম…….ঘুরে ঘুরে তারেই খুঁজি
তোমার আমার ফেলে আসা যত
রঙিন মলিন স্মৃতি
লুকিয়ে অবুঝ ঠিকানায়
অচিন মনের অচিন কোনও কোণে
বন্দী আজও আমি
ভুল সে পথের সীমানায়
এখন আমি অন্য আমি হয়ে
ছুটে চলি তোমারই শহরে
হারিয়ে চোখের যত ঘুম
ঝুম……..উড়ে উড়ে দূরে দূরে
…………………………………..

ঝুম……..দূরে দূরে তারে খুঁজি

♪♪♪

চোখ বন্ধ করে গানটা অনুভব করছিল নূর। উফফ এই সময় যদি বৃষ্টি হতো তাহলে তো জমে পুরো ক্ষীর হতো। গানের তালে তালে এক অন্য ঘোরে চলে গেল। এখনো চোখ বন্ধ করে আছে।গান শেষে আফরান নূরের সামনে এসে মুখে হালকা ফুহ্ দিল। নূর কিছুটা কেঁপে উঠল। চোখ খুলে সামনে তাকিয়ে দেখে আফরান ঠোঁট বাকিয়ে হাসছে। কেন জানি আফরানের দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে। প্লেইন সাদা শার্টে যেন তার ফর্সা গায়ের রঙ মিশে গিয়েছে। অন্য রকম লাগছে। তারপর স্টেজ থেকে এনাউন্সমেন্ট করল। যা বলল তা শুনে যেন সবার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। নূরের চোখ বেরিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি খাবে এমন অবস্থা। নাচে যারা অংশগ্রহণ করবে সেই লিস্টে নূরের নাম দেওয়া। কিন্তু সে তো নাম দেই নি।

নূরঃঃ- মানে কি এসবের? আমার নাম কেন এখানে।

আফরানঃঃ- (ওই দিন প্রোগ্রাম এনাউন্স করার পর আফরানই লুকিয়ে নূরের নাম দিয়েছিল। যাতে সে নাচতে না পেরে সবার সামনে লজ্জিত হয়) তুমি নাচবে তাই তোমার নাম দেওয়া। তুমি তো খুব ভালো নাচ। সেই প্রথম দিনের নাচ। আহা আজীবন মনে থাকবে আমার।

পুষ্পঃঃ- মানে কেমনে কি? কোন জানা নেই শোনা নেই প্রেকটিস নেই। নাচবে কি করে?

আফরানঃঃ- একটি প্রবাদ আছে “নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা” সেটা নূরের সাথে পার্ফেক্টলি মানিয়েছে। নাচতে পারবে না বলে দাও এতো বাহানা কিসের। সবার জানা উচিৎ তোমার দ্বারা হবে না এসব। (আমি জানি তুমি না করে দিবে। তারপর দেখ এই ব্যাপার নিয়ে তোমাকে কত জ্বালায়)

নূরঃঃ- আমি পারফর্ম করব। আমার দ্বারা হবে কি হবে না সেটা কিছুক্ষণ পরে জানবেন।

আফরানঃঃ- তাই? আচ্ছা দেখি।

নূর রেগে চলে গেল। তার সাথে পুষ্প মেহের আলিফা আমরিন সিমা গেল। প্রোগ্রামে যারা অংশগ্রহণ করবে তাদের জন্য আলাদা গ্রিনরুম করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীর জন্য সব জিনিসপত্র সাজানো হয়েছে। সেখান থেকে রেডি হয়ে তারা পারফর্ম করবে। নূর গেল সেখানে।

সিমাঃঃ- এখন কি করবি? তুই সত্যি নাচবি? প্রেকটিস ছাড়া। গানও সিলেক্ট করা হয়নি।

নূরঃঃ- (বলে তো দিয়েছি আমি পারফর্ম করব। কিন্তু কিভাবে?) সেটা পরে দেখা যাবে। আমি তো আজ নাচতে নাচতে স্টেজ ভেঙে ফেলব। ওই বিলাতি বককে না দেখিয়েছি না তাহলে আমিও নূর না।

পুষ্প নূরকে রেডি করে দিল। একটি সাদা লং বারবি ফ্রক। কানে সাদা স্টোনের টপ। চুল খোলা। চোখে গাঢ় কাজল দেওয়া। ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক। ব্যাস এতটুকুই মেকআপ। হালকা বাদামি গায়ের রঙ এর উপর সাদা জামা। উফফ হালকা সাজেও অসাধারণ লাগছে।

আমরিনঃঃ- হায় মে মারজাভা গুড় খাকে। ইশ আমি যদি ছেলে হতাম এক্ষুনি তোকে নিয়ে পালিয়ে যেতাম।

আলিফাঃঃ- কথা সেটা না। তুই কি এখন চশমা পরে পারফর্ম করবি?

নূরঃঃ- আরে না। এটা তো শুধু মাথা ব্যাথার জন্য দেই। আর আমি চশমা ছাড়া দেখতে পায় ফকিন্নি। (চশমা খুলে নিল।)

আমরিনঃঃ- (নূরের হাত ধরে টানতে লাগলো) লাগবে না ছেলে হওয়া চল এমনিতেই পালিয়ে যায়। উফফ চশমা ছাড়া তোকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে।

নূরঃঃ- (কোমরে হাত দিয়ে) ফাম দিস না। উড়ে যাব। তখন আমার হবু জামাই আর হবু বাচ্চা কাচ্চা আমাকে আর খুঁজে পাবে না। আর পুষ্প তুই আমার সাথে চল আর বাকিরা তোরা যা আর আমার পারফর্মেন্স দেখ। যদি জোরে হাত তালি না দিস তাহলে তোদের হাত ভেঙে গুড়ি করে দিব।

নূর আর পুষ্প গেল ব্যাকস্টেজে। কিছুক্ষণ পর নূর পারফর্ম করবে। তাই সব ঠিক করছে। হঠাৎ সব হওয়ায় নূর অনেকটা নার্ভাস। কিন্তু পুষ্প আশ্বাস দিল সব ঠিক হবে। আমরিন সিমা মেহের আলিফা গেল প্রোগ্রাম এরিয়ায়। আফরান দেখল নূর নেই। তাকে খুঁজতে গেল। স্টেজের পিছনে। সেখানে পুষ্প একা দাঁড়িয়ে আছে। তার মানে নূর স্টেজের দিকে গিয়েছে। আফরান স্টেজের পাশে গিয়ে দাঁড়াল। স্টেজে দুইটা সাদা বড় পর্দা ঝুলানো। হঠাৎ স্টেজে ধোঁয়া হতে লাগলো। মিউজিক শুরু হলো। পর্দায় ঝুলে নূর নাচ শুরু করল।

♪♪♪♪

Mann yeh saahib ji, jaane hai sab ji
Phir bhi banaye bahaane
Naina nawaabi ji, dekhe hain sab ji
Phir bhi na samjhe ishaare

(পর্দায় নূরের হাত ছুটে পড়ে যেতে নিলে আফরান দৌড়ে এসে ধরে ফেলে। আস্তে আস্তে স্লাইড করে নিচে নামিয়ে দিল)

Mann yeh saahib ji haan karta bahaane
Naina nawaabi ji na samjhe ishaare
(na samjhe ishaare)

(নূর হাত উল্টো পিঠ করে চোখ ঢেকে নিলে আফরান হাত ধরে আস্তে করে নামিয়ে নেই।)

( হঠাৎ তার চোখ পড়ল নূরের কাজল কালো চোখে। ডান চোখের ঠিক কোনায় ছোট্ট একটা কালো তিল। যেন নজর ফোঁটা দিয়েছে যাতে এই চোখ জোড়ায় নজর না লাগে। আনমনে হারিয়ে যায় এই চোখে।)

Dheere dheere, nainon ko dheere dheere
Jiya ko dheere dheere bhaayo re Saibo
Dheere dheere, begaana dheere dheere
Apna sa dheere dheere lage re Saibo

(আফরান নূরের হাত ধরে পুরো স্টেজ ঘুরালো)

Surkhhiyaan hain hawaaon mein, do dilon ke milne ki

(নূর আফরানের বুকের বাম পাশে হাত রেখে হালকা দুলে নাচলো)

Ho! Arziyaan hain nazaaron mein, lamha yeh tham jaane ki

(আফরান নূরের গালের পাশে কপাল থেকে হালকা স্লাইড করল)

Kaisi huzoori ji yeh lab dikhlaaye
Chuppi laga ke bhi ghazab hai yeh dhaaye

(আফরান নূরের কোমর আঁকড়ে ধরল)

Dheere dheere, nainon ko dheere dheere
Jiya ko dheere dheere bhaayo re Saibo
Dheere dheere, begaana dheere dheere
Apna sa dheere dheere lage re Saibo
Saibo… Saibo…

(আফরান এক হাত দিয়ে নূরের কোমর আঁকড়ে ধরল অন্য হাতে ঝুলানো পর্দা আঁকড়ে ধরল পুরো স্টেজ ঘুরে হাওয়ায় ভাসলো)

♪♪♪

নাচ শেষে আফরান পর্দা ছেড়ে নূরকে ছেড়ে দিল। সবাই হাত তালি দিল। অনেকে আবার শিষও বাজালো। নূর ভেঙচি কেটে স্টেজ থেকে নেমে গেল। আফরান সেই এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে। বারবার সামনে সেই চোখ দুটো ভেসে আসছে। আফরান নিচে আসতেই শুরু হলো নূরের ভাষণ।

নূরঃঃ- কি এবার বলেন। কে যেন বলেছিল আমার দ্বারা হবে না। আমি পারফর্ম করতে পারব না। আর আমি এটাও বুঝতে পেরেছি লিস্টে আমার নাম আপনি দিয়েছেন। যাতে আমি পারফর্ম করতে না পারি আর সবার সামনে ছোট হয়। তাই তো। বাট এখন ছোট আমি না আপনিই হয়েছেন।

আফরানঃঃ- হ্যাঁ তোমার নাম আমিই দিয়েছি। আর যে পারফর্ম করলে তাও কিন্তু আমার জন্য। আমি না থাকলে এতক্ষণে পা ভেঙে হসপিটালে পড়ে থাকতে। সে থেকে বোঝা যায় আসলে তোমার দ্বারা কিছু হবে না।

নূরঃঃ- কেন হবে না। অবশ্যই হবে।

আফরানঃঃ- ওহ রিয়েলি! তাহলে হয়ে যাক প্রতিযোগিতা। প্রতি বছর ভার্সিটিতে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়। এবারও হবে। তোমার টিম আর আমার টিম। যারা প্রতিযোগিতায় জিতবে তারাই বিজয়ী।

নূরঃঃ- শক্তির বলে তো আপনারাই জিতবেন। আর আপনারা আগেও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন।

আফরানঃঃ- এখানে শুধু শক্তি না বুদ্ধিকেও কাজে লাগাতে হবে। নতুন বছর নতুন খেলা আর নতুন রুলস। আর যে টিম জিতবে সে অপর টিমকে পুরো একদিন যা বলবে তাই করতে হবে। তাই যা করবে ভেবে চিন্তে কর। কারণ তোমাদের জেতার কোন চান্স নেই।

নূরঃঃ- সেটা তো পরে দেখা যাবে। কে জিতে। সো চ্যালেঞ্জ এক্সেপ্টেট।

ছেলেরা পকেটে দুই হাত দিয়ে ভাব নিয়ে তাকাল। মেয়েরা এক হাত কোমরে দিয়ে অন্য হাতে চুল ঝাড়া দিল। নূর-আফরান,, পুষ্প-রিহান,, সিমা-ওয়াসিম,, আমরিন-আহিল,, মেহের-ইয়াশ,, আলিফা- আরিফ মুখোমুখি হয়ে দাঁড়াল। ছেলেরা মেয়েদের মুখে হালকা ফুহ্ দিয়ে সামনের চুল উড়াল। মেয়েরা রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে ওয়ায়াক্কক্কক্ক বমির ভাব করল। ছেলেরা দু পা পিছিয়ে যায়।

.
.
.

চলবে

বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ? আর কেমন হলো অবশ্যই জানাবেন। ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here