ভালোবাসি_প্রিয়_সিজন_টু
পর্ব_৩২
#সুলতানা_সিমা
আপা আমি সত্যি বলছি। তোমার মেয়ে লুকিয়ে বিয়ে করেছে ওর একটা বাচ্চাও আছে।” সায়রা চৌধুরী ধমক দিয়ে বললেন,”দেখ ফয়সাল আমি জানি আমি একটা ভুল করছিলাম৷ তাই বলে তোরা আমার মেয়েকে নিয়েও এগুলা বলবি?
_তুমি বিশ্বাস করছো না তো? তাহলে আসো, আমি এক্ষুনি প্রমাণ দিচ্ছি।” সায়রা চৌধুরী তেজ নিয়ে বললেন,”হ্যাঁ চল।” ফায়সাল সাহেব বোনকে নিয়ে রুম থেকে বের হলেন। এতোক্ষণ ধরে তিনি বলে যাচ্ছেম কিন্তু উনার বোনকে এটা বিশ্বাসই করাতে পারছেন না। এখন ওই ছেলেটার সামনে দাঁড়িয়ে বলবেন। তখন তো বিশ্বাস করবেন? বাইরে এসে উনার চেহারায় বিরক্তির চাপ ফুটে উঠলো। গানের সাউন্ডে মাথা ধরছে উনার। চারদিকে তাকিয়ে নীলকে খুঁজলেন,কিন্তু নীলকে দেখাই যাচ্ছে না। ডান্স ফ্লোরে গেলেন সেখানেও নীল নেই। কয়েকটা ছেলে নাচতাছে। একটা ছেলে মাক্স পরা। এটাকে ওই ছেলে ভাবা যায়না। কারণ ছেলেটার ব্লেজার পরা নেই। লুপার পাশের ছেলেটার ব্লেজার পরা ছিলো। সায়রা চৌধুরী বিরক্তি নিয়ে বললেন,”কই তোর প্রমাণ।
_ছেলেটাকে খুঁজে পাচ্ছিনা।
_কোন ছেলে?
_যে ছেলে এসব বলেছিলো।
_নাম কি জানিস?
_আমি চিনিনা ছেলেটাকে,আজ প্রথম দেখলাম।
_দেখ আমার বিরক্ত লাগছে। ছেলের নাম জানিস না ছেলে কে জানিস না, উল্টো এসেছিস আমায় এসব বানোয়াট কথাবার্তা বলতে। আমি এতো অবসর না। থাক তুই।” রাগ দেখিয়ে সায়রা চৌধুরী চলে গেলেন। উনি চলে যাওয়ার পরেই ফায়সাল সাহেবের চোখে পরলো নীল নাচতেছে। এতোক্ষণ মাক্স পরে উনার সামনে দাঁড়িয়ে নাচছিলো এ। ফায়সাল সাহেব দ্রুত পায়ে সায়রা চৌধুরীর কাছে গেলেন,কিন্তু ততক্ষণে সায়রা কয়েকজন মহিলার সাথে আড্ডা জমাতে বসে যান।
ফায়সাল সাহেব ডান্স ফ্লোরের সামনে থেকে চলে যেতেই নীল দৌড়ে এখান থেকে সরে গেলো। উনারা নিচে নামছেন দেখে ভয়ে তাঁর হাঁটু পর্যন্ত কাঁপছিলো। লুপাকে খুঁজতে খুঁজতে নীল পার্কিংয়ের দিকে যায়। গিয়ে দেখে লুপা আর শাওন কি নিয়ে যেন কথা বলছে। নীল লুপাকে বলল,”লুপা তোকে ছোট মামি ডাকছে।”নীলের কথায় লুপার আত্মা কেঁপে ওঠে। একটু আগে নীল যা কান্ড করেছে তাঁর মামা কি সব বলে দিয়েছেন? শুকনো এক ঢোক গিলে ভয়ার্ত কণ্ঠে বলল,”কেন?”
_জানিনা।
_আআআমি একটু বিজি আছি। পরে যাবো।” শাওন বলল,”আচ্ছা পরে এ বিষয়ে কথা হবে তুই গিয়ে শুনে আয়।
_পরে শুনে নিবো ভাইয়া।” নীল লুপার হাত ধরে বলল,”মামি বলেছে আর্জেন্ট। চল।” নীল লুপাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে টেনে নিয়ে আসলো ওখান থেকে। একটা পিলারের আড়ালে এনে লুপাকে পিলারের সাথে ঠেসে বলে,”শাওনের সাথে কি কথা তোর?
_আআআআম্মু কি সত্যি ডাকছিলো?
_এটা আমার প্রশ্নের উত্তর?” লুপা মুখটা মলিন করে চোখ নিচে নামায়। নীল একহাতে লুপার থুতনিতে ধরে মুখটা তুলে বলল,”ভয় পাচ্ছিস কেন বাবুইপাখি? হতে দে না একটা ঝামেলা। যেন আমাদের বিয়েটা সবাই পড়িয়ে দেয়।” লুপা বড় বড় চোখ করে তাকায়৷ নীল বলে,”অবাক হচ্ছিস কেন? তুই চাস না কি আমাদের বিয়েটা হোক?” লুপা কিছু উত্তর দিলো না। নীল লুপার কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে বিড়বিড় করে বলল,”আর কত অভিমান করবি বল? তুই তো আমাকে বাধ্য করেছিলি এইসব বলতে।” লুপা ছলছল চোখে নীলের দিকে তাকায়। টুপ করে একফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে তাঁর চোখ থেকে। নীল চোখটা মুছে বলল,”তোর সময় লাগলে সময় নে বাবুই। নিজেকে ঠিক কর। অভিমানের পাল্লাটা হালকা কর। তবে প্লিজ অবশেষে আমার কাছেই ফিরে আসিস।” কথাটা বলেই নীল চলে যেতে লাগে। লুপা চট করে নীলকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে। কেঁদে কেঁদে নীলকে বলে,”আমি কি করবো নীল ভাই বলো। আমি তোমাকে ভুলতে পারিনা। তোমাকে ভুলে যাবো এটাও ভাবতে পারিনা। আমার কষ্ট হয়, খুব কষ্ট হয়। আমার বুকটা পুড়ে যায়। তোমার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে থাকে। এমন ভাগ্য কেন উপরওয়ালা দিলো বলো,যে ভাগ্যে তুমি নেই? আমার যে খুব ইচ্ছে করে তোমাকে কাছে পেতে, তোমাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে,তোমার মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিতে, তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে। আমার এতো এতো ইচ্ছে জুড়ে শুধু তুমি নীল ভাই। কিন্তু ভাগ্যে কেন তুমি নেই বলো?” নীল কিছু বলতে পারলো না। তার গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। দম বন্ধ হয়ে আসছে তাঁর। ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকানোর বৃথা চেষ্টা করলো। তবুও চোখ থেকে ঝরঝর পানি পরতে লাগলো। সত্যিই কী লুপা তাঁর ভাগ্যে নেই? লুপাকে ছাড়া কি করে বাঁচবে সে? তার সর্বোচ্চ জুড়ে যে শুধু লুপার বসবাস। লুপাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কেঁদে যায় সেও। দুজন দুজনকে কতটা ভালোবাসে সেটা তারা দুজন ছাড়া আর কেউ জানেনা। নীল লুপাকে বুকে চেপে বলল,”কাঁদিস না বাবুই প্লিজ। দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা আবার এক হবো।
_ওরা আমাদের কোনোদিন মেনে নিবে না।
_মেনে নিবে পাগলী। না নিলেও কিচ্ছু যায় আসে না। আমরা নিজেই বিয়ে করে নিবো। বাবুই চলনা আমরা বিয়ে করি। প্লিজ বাবুই। দেখবি তখন আর কেউ না মেনে থাকতে পারবে না।” কথাটা শুনেই লুপা নীলকে ছেড়ে দিয়ে দুপা পিছিয়ে যায়। হাতের উল্টো পিঠে চোখ মুছে কাট কাট গলায় বলে,”
_না আমি এভাবে বিয়ে করবো না। আমার মাকে মানুষ কত কথা শুনায় আমি তা নিজের কানে শুনি। আমার মা এমন করেছিলো বলে তোমার পরিবার আমায় মেনে নিতে চায়না। আমি চাইনা আমার সন্তানরাও এরকম কথা শুনোক। এটাও চাইনা কেউ আমার মাকে বলুক সে যেমন তাঁর মেয়েকেও সেই শিক্ষা দিয়েছে। তুমি যদি সত্যি আমায় চাও তাহলে তোমার পরিবারকে মানিয়ে আমার কাছে এসো। আর যদি তা না পারো তাহলে এই তিনটা বছর আমরা যেভাবে ছিলাম সেভাবে থাকবো।” কথাটা বলে লুপা চলে যেতে পা বাড়ায়। নীল লুপার হাত ধরে ফেলে। লুপা পিছন তাকায়। নীল বলে,”ততদিন তুই আমার থাকবি তো?
_যদি তুমি তোমার করে রাখো তাহলে তোমারই থাকবো।
______________________________
সেই কখন থেকে শাওনকে খুঁজে যাচ্ছে দিশা। কিন্তু শাওনের কোনো খুঁজ নেই। কই গেলো হঠাৎ? রিসোর্টে আসার আগে থেকে দেখছে শাওন মন মরা হয়ে আছে। কি এমন হলো যে সে এমন করছে? দিহান আর অরিন বসে বসে ডান্স দেখছে। দিশা দিহানকে বলল,”ভাইয়া শাওন ভাইয়াকে দেখেছো।” দিশার কথায় দিহান ঠোঁট কামড়ে হেসে অরিনের দিকে তাকালো। অরিনও মিটিমিটি হাসছে। দিশার রাগ হলো। কি এমন বলল যে এভাবে হাসতে হবে? দিশা কণ্ঠে কিঞ্চিৎ ঝাঁঝ এনে বলল,ভাইয়া আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি।” দিহান বলল, “আমি দেখিনি শাওন কই।
_সেটা আগে বললেই পারতে।” বলেই চলে গেলো দিশা। দিশা চলে গেলে অরিন আর দিহান ফিক করে হেসে উঠে। হাসি থামিয়ে অরিন দিহানকে বলল,”
_এই শুনেন। আমার ভালো না। কেমন জানি লাগছে।
_কি বলছো আগে বলবা না? চলো অন্যদিকে যাই। মেবি সাউন্ডে প্রবলেম হচ্ছে।
_বাসায় যাওয়া যাবে না?
_দাদুমনি রেগে যাবে সোনা।” অরিন কিছু বলল না। এভাবে অনুষ্ঠানের মাঝখানে বাসায় যাওয়াটাও ঠিক হবে না। দিহান অরিনকে নিয়ে উপরে গেলো। একটা রুমে এসে অরিনকে বলল,”চলো আমরা একটু ঘুমাই।
_হুম। তারপর যেন সবাই আমাদের ফেলে চলে যেতে পারে।
_আরে দূর আমরা কি সত্যি সত্যি ঘুমাবো নাকি? আমরা তো রোমাঞ্চ করবো।”বলেই চোখ মেরে ঠোঁট কামড়ে হাসে দিহান। অরিন চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে দরজার দিকে যেতে যেতে বলল,”আমার এখন ভালো লাগছে আমি নিচে যাচ্ছি।” দিহান অরিনকে হেঁচকা টানে নিজের কাছে নিয়ে আসে। অরিন দিহানের বুকে ধাক্কা খায়। অরিনের কোমর জড়িয়ে ধরে বলে,”স্বামীর সাথে রোমাঞ্চ করতে বুঝি ভালো লাগে না?
_দেখুন আমার ভালো লাগছে না।
_আমাকে?
_আপনার লুচ্চামিকে।” দিহান জোরে হেসে উঠে। তারপর অরিনের পেটে স্লাইড করতে করতে বলল,”বউপাখি মন খালি প্রেম প্রেম করে কেন গো?” অরিন দিহানের হাত ছাড়িয়ে বলল,”
_লুচ্চামি ছাড়েন। আমার পেট ব্যথা করছে।” দিহান হাঁটু গেড়ে বসে অরিনের পেটে লম্বা একটা চুমু এঁকে অরিনকে বলল,”এবার কমেছে?” অরিন হেসে উঠে। দিহান অরিনের কোমর জড়িয়ে পেটে কান পেতে চোখ বন্ধ করে বলল,”আমার পাপাটা আসবে কবে?” আরো ৮-৯ মাস ওয়েট করতে হবে তাইনা? আমার কাছে যে একটা দিনও অনেক বড় লাগছে।” অরিন তৃপ্তির হাসি হেসে দিহানের মাথায় ধরলো। দিহানের নরম চুলে মুঠো ধরে চোখ বন্ধ করে নিলো। এই মূহুর্তে যে সুখটা পাচ্ছে সে এই সুখ মনে হয় এই দুনিয়াতে আর কিছুতেই নেই। স্বামীর ভালোবাসায় এতো সুখ কেন? হবেনা কেন সুখ হালাল সবকিছুই যে সুখের।
কিছুক্ষণ পরে দিহান উঠে অরিনের দু গাল ধরে বলল,”বউপাখি খুব কষ্ট হয় তোমার তাইনা?
_একটুও না।
_আমি জানি তো অনেক কষ্ট পাও। খেতে পারো না ঘুমাতে পারো না। আরো কত অশান্তি হয় তোমার।” অরিন দিহানের গলা জড়িয়ে বলল,”আপনার মুখটা দেখলে আমার সব কষ্ট দূর হয়ে যায়।” দিহান অরিনের কপালে চুমু এঁকে বলল, ”
_তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
_কি?
_বলে দিলে বুঝি সারপ্রাইজ থাকবে?
_তাহলে এখন বললেন কেন? এখন যে শুনতে ইচ্ছে করছে।” দিহান অরিনকে দেয়ালের সাথে ঠেকে অরিনের ঘাড় থেকে চুল সরাতে সরাতে বলল,”শুনবা তো। যেদিন সারপ্রাইজ দিবো। সেদিন শুনবা।
_কবে দিবেন তাহলে?” দিহান অরিনের ঠোঁটে হাত দিয়ে বলে,”কথা বলবা না।” অরিন চুপ হয়ে যায়। দিহান অরিনের গাল স্লাইড করতে করতে বলে,”বউপাখি একটু আদর করি?”অরিন কিছু বলল না। দিহান সম্মতি পেয়ে অরিনের ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে দিতেই মিহান দরজা ঠেলে রুমে ঢুকে। দিহান চট করে অরিনকে ছেড়ে দেয়। মিহান ঘাড় চুলকাতে চুলকাতে বলল,”সরি ভাই।
দিহান ধমক দিয়ে বলে,”
_এখানে কেন এসেছিস?
_দাদুমনি পাঠিয়েছে। আমি জানতাম না তোরা এমন একটা অবস্থায় আছিস।
_ওই এমন একটা অবস্থা বলে কি বুঝাচ্ছিস? যা এখান থেকে।
_যাচ্ছি তো। আয় তোরা।” মিহান চলে যায়। দিহান কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে বলে,”আজকের সকালটা যে কার মুখ দেখে শুরু করছিলাম আল্লাহই জানে।” অরিন মিটিমিটি হেসে বলল, “নিশ্চয়ই আমার।
_তাহলে তো শাস্তিটা তোমায় দিতে হবে।” বলেই দিহান অরিনের দিকে এগিয়ে যায়।
ইশি শান্তি চৌধুরীকে টেনে নিয়ে ডান্স ফ্লোরে গেলো। তারপর মিহানকে টেনে এনে জিহানকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলল,”চল আমরাই নাচি। সবার বউয়ের শরীর খারাপ কেউ নাচবে না। মিহান গান প্লে করে আসে। শান্তি চৌধুরীর হাত ধরে ডান্স করতে লাগে।
সুরাজ হুয়া মাধ্যাম
চাঁদে জ্বালনে লাগা
আসমায়ে হায়
কিউ ভিগালনে লাগা
স্টেজে এসে পা রাখলো দিহান আর অরিন। দিহান অরিনের সাথে ডান্স করতে লাগে।
মে ঠেহরা রাহা যামি চালনে লাগি
ধারকায়ে দিল চাসে থামনে লাগি
ওওওও কিয়া ইয়ে মেরা পেহেলা পেহেলা পিয়ার হে
সাজনা আয়ায়ায়ায়া কিয়া ইয়ে মেরা পেহেলা পেহেলা পিয়ার হে।
হঠাৎ গান স্টপ হয়ে যায়। ক্যান্ডেল লাইটগুলো নিভিয়ে চারদিকে গ্রীন,রেড ঝলমলে ড্রীম লাইট জ্বলে উঠলো। জিহান লারাকে কোলে নিয়ে ডান্স ফ্লোরে আসলো। সবাই একসাথে চিৎকার করে জোরে তালি দিতে লাগলো। নীল মিউজিক বলে চেঁচিয়ে উঠে।
মুনডা থোড়া অফবিট হে
পার কুরিয়া দেনাল বহত সুইট হে
ডোংগি সাইয়ে বাড়া ডিট হে
ভাইরাল হোগেয়া ইয়ে টুইট
জিহান লারাকে কোল থেকে নামিয়ে হাতে ঘুরিয়ে আবার নিজের কাছে আনলো।
পার ফুল ভুল কারনে মে কুল
তু বারি তেজ কিটারি হে
সাগান তেরি কি লাগান তেরি কি
হামনে কারদি তায়ারি হে
মিহান শান্তি চৌধুরীর আঁচল ধরে ঘুরতে গিয়ে উল্টে পড়লো ইশির উপর। ইশি মিহানকে ধাক্কা দিয়ে দূরে ঠেলে দিয়ে নেচে নেচে মিহানের দিকে যায়।
নাচদে নে সারে রাল মিলকে
আজ হিল ডুল কে
লে সারে কে সারে নাজরে
নাচদে নে সা রাল মিলকে
আজ হিল ডুল কে
খাস মানু খানে
অরিন দিহান নাচার থেকে রোমাঞ্চ করছে বেশি। দুজন দুজনার চোখে চোখ রেখে শুধু হাত নাচাচ্ছে। দিহান একটু পর পর অরিনের ঠোঁট ছুঁয়ে দিচ্ছে। অরিনও দিহানের সাথে তাল দিয়ে যাচ্ছে।
জোর জোরসে সোর বোর কারে
ডিজে গানে বাজানে আ
রুঠডে রুঠডে জিজা ফফাদ
হামনে সারে মানানে হা
নাচতে নাচতে লুপার ওড়না এলোমেলো হয়ে যায়। নীল লুপার ওড়না গায়ে পেছিয়ে দিয়ে ইশারায় চুমু খায় লুপা হেসে উঠে।
পার ফুল ভুল কারনে মে কুল
তু বাডি তেজ কিটারি হে
সাগান তেরি কি লাগান তেরি কি
হামনে কারদি তায়ারি হে
নাচদে নে সারে রাল মিলকে
আজ হিল ডুল কে
লে সারে কে সারে নাজরে।
গান শেষে অনেক জোরে করতালি বাজে। অনেকে শিস বাজায়। দিশার চোখ শুধু শাওনকে খুঁজছে। ডান্স ফ্লোরে যাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে হচ্ছে না তাঁর। দূর থেকে দাঁড়িয়ে সবকিছু দেখছে।
নীল লুপার পাশে দাঁড়িয়ে মাথা কিঞ্চিৎ ঝুকিয়ে বলল,”ওড়নায় পিন লাগা। আবার পড়ে গেছে। লুপা লজ্জা পায়। ওড়না ঠিক করতে করতে ক্ষীণ স্বরে বলে “একটা গান গাইবে?” নীল নিজের দিকে আঙুল তাক করে বুঝায় সে নাকি। লুপা হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ায়। নীল মৃদু হেসে সামনে এগিয়ে যায়। মাইক হাতে নিয়ে বলে,” attention প্লিজ।” সবাই নীলের দিকে তাকায়।” আমি আমার প্রিয় মানুষটাকে ডেডিকেট করে একটা গান গাইবো।” একসাথে সবাই করতালি দিয়ে উঠে।
I promise you
you in my heart
i really want you girl
had a dream about you girl
i will never let you go
you in my soul
i Won’t forget you girl
you left me all alone
and i hate that i love you girl
লুপার চোখের পর্দায় ভেসে উঠে নীলের সাথে কাটানো মূহুর্ত গুলো। স্পষ্ট চোখে ভাসছে, সে নীলের মাথা টিপে দিচ্ছে নীলের মাথা ব্যথায় খুব কষ্ট হচ্ছে বলে সে বাচ্চাদের মতো কান্নাকাটি করছে।
i promis you promise i Won’t lie
i promise you together we can fly
i promise you
i promise i Won’t hurt you ever again
i promise i want you to love me again
লুপার চোখে ভাসে নীলের জন্য সে পায়েশ রান্না করতে কিচেনে আছে নীল এসে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। লুপার ওষ্ঠযুগল দখলে নেয়।
You khow how i feel inside me
every breathe i take you know there’s no kne beside me
but i will be ok
i forever love you girl
just be all mine
i really want you girl
গান শেষে সবাই অনেক জোরে চিৎকার করে উঠে। নীল বত্রিশপাটি দাঁত বের করে হেসে হেসে সামনে তাকিয়ে দেখে লুপার মামা রক্তিম চোখে তাকিয়ে আছেন। রেড গ্রীন ড্রীম লাইটের আলোতে উনাকে ভিলেনের মতো লাগছে। নীল পিছাতে পিছাতে ডান্স ফ্লোর থেকে নেমে যায়।
চলবে,,,,,।
জানি অনেকে বোরিং হচ্ছেন। গল্পের রেসপন্স কমছে লেখার আগ্রহ হারাচ্ছি। কিন্তু কি করবো বলুন? ব্যস্ততা তো সবারই থাকে তাইনা??