#যখন_তুমি_এলে
লেখা: জাহান লিমু
পর্ব : ৪৮
পরদিন সকাল বেলা মায়ের চিৎকার চেঁচামেচিতে আরাদের ঘুম ভাঙে। এমনিতেই সাচীকে পৌঁছে দিয়ে এসে, আরো অনেক পরে বাসায় এসেছে সে। তখন প্রায় রাত দুইটা বাজে হয়তো। শহরের ফাঁকা রাস্তায় একা একা হাঁটছিলো সে,গাড়ি পাশে রেখে।
তাই দশটা বাজলেও,ওর ঘুম ভাঙেনি। এরমধ্যে আরফা বাসায় চলে আসেন। ও যখন চোখ কঁচলে কঁচলে উঠতে যাচ্ছিলো, তখন ওর চোখেমুখে কি যেন এসে পড়ে। চোখ খুলে ঝাপসা চোখে তাকিয়ে দেখে,একটা সাদা কি যেন। ভালো করে তাকিয়ে দেখে, একটা স্কার্ফ।
কিন্তু স্কার্ফটা ওর মা ওর মুখে কেন ছুড়ে ফেলেছে?
কিন্তু ততক্ষণে ঘটনা ঘটে গেছে।
ওর মা ওর কান ধরে, ওকে উনার রুমে নিয়ে গেলেন। সেখানে গিয়ে আরাদ ওর মায়ের হাতে, একটা কালো টপস দেখতে পেলো। আরফা রক্তচক্ষু দৃষ্টিতে আরাদের দিকে তাকিয়ে আছেন। সেই দৃষ্টিতে আরাদের ঘুম তো বানরের মতো ছুটে পালালোই,সেই সাথে সব ওর মাথায় ঢুকলো।
এবার আর আরাদের বিষয়টা বুঝতে অসুবিধা হলো না।
সাড়ে সর্বনাশ!
তার মানে কি ওর মা ওকে সন্দেহ করছে!
তওবা,আস্তাগফিরুল্লাহ!
মুহুর্তেই আরাদের মুখটা পাংশু বর্ণ ধারণ করলো। সে বোকা বোকা চাহনিতে মায়ের দিকে তাকালো। কতবছর পর এভাবে মায়ের শাসন পেলো সে।
আমরা মিথ্যা ইগো,অভিমানে জীবনের সুন্দর মুহুর্ত গুলো হারিয়ে ফেলি। আরফা ছেলের কান টেনে একনাগাড়ে প্রশ্ন করে যাচ্ছেন,অথচ আরাদ যেন সেটাই উপভোগ করছে৷
মানুষ আদর কুঁড়োয়,আর আরাদ শাসন কুঁড়াচ্ছে।
একসময় আরফা জোরে ধমকে উঠলেন। তখন আরাদের ঘোর কাঁটলো। সে ভাবতে লাগলো,মা কে কি করে বুঝাবে। একটা বোনও নেই যে,কথা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিবে।
ছেলের ব্যবহার কেমন যেন অদ্ভুত ঠেকছে আরফার। তবে কি তার ছেলে প্রেম করে?
হ্যাঁ,প্রেম করতেই পারে। এটা একবিংশ শতাব্দী।
কিন্তু তাই বলে বাসায় আনবে কেন? এতো নিচু মাইন্ডের হবে কেন তার ছেলে? তাও রাতের বেলায়! দিনের বেলায় আনলেও,একটা কথা ছিলো।
আরফা আর ভাবতে পারছেন না। ছেলেকে কঠিন গলায় ধমক দিয়ে সরাসরি জানতে চাইলেন,
‘মেয়েটা কে?’
আরাদ যেন গভীর সমুদ্রে পড়ে গেছে,এমন মুখটা করে তোতলিয়ে বললো, ‘কু..কু..কোন মেয়ে মা?’
‘ এই ড্রেসগুলো যার। আরফা সোজাসাপ্টা জবাব দিলেন।
আরফার কথার প্রতিউত্তরে আরাদ কি বলবে,ভেবে পেলো না। কিন্তু তখনো তার মা সমানে লেকচার দিয়ে যাচ্ছে। আরাদ মনে মনে ভাবলো,ওর মায়ের তো অভিনেত্রী না হয়ে,রাজনৈতিক নেত্রী হওয়ার দরকার ছিলো।
ছিহ,তুই এতো বাজে হয়ে গেছিস। আমি ভাবতেও পারিনি,আমার ছেলে এমন হবে। আমার দোষ ছিলো, তোকে এভাবে ছেড়ে চলে যাওয়া,সেটা আমি মানছি। কিন্তু সেখানে তো আমার কিছু করার ছিলো না। পরিস্থিতই এমন বাজে ছিলো তখন। আরফা রাগে,দুঃখে আরাদের থেকে মুখ সরিয়ে নিলেন।
আরাদ পড়লো বিপাকে। রাতে একবারের জন্যও খেয়াল হয়নি,এমন কিছু ঘটবে। আর হবেই বা কি করে?
এতোরাতে বাসায় এসে,এসবের কথা কি আর মাথায় ছিলো নাকি?
তাহলে কাপড়গুলো সরিয়ে রাখতো ওর রুমে। এখনতো মা ভীষণ চটে গেছে। কিভাবে বুঝাবে আরাদ? মেজাজটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে নিজের প্রতি। কিছুটা সাচীর প্রতিও। এই মেয়েটা জীবনে আসার পর থেকে,আরাদকে মিথ্যার ভান্ডার খুলে বসতে হয়েছে। আর এখন মিথ্যা বলেও,কোন লাভ হচ্ছে না। কি কিসমত রে বাবা!
অথচ সে আমার জীবনে এক মরিচীকা ব্যতীত কিছুই নয়।
গতকাল যদি একবার বলতো যে,সাচী ওর মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলো, তাহলেও অন্তত মা বিশ্বাস করতো। কিন্তু ওর মা তো জানে, যারা আসবে তারা সন্ধ্যার আগেই চলে যাবে।
কি যে একটা চিপায় ফাঁসলো সে।
নিজের মাও সন্দেহ করছে, ঐ থাপ্পড়রানীর জন্য।
এখন ঐ থাপ্পড় রানীকেই কয়টা থাপ্পড় দিতে মন চাইছে আরাদের। অন্য কারোই হবে যখন,তাহলে খুব জরুরী ছিলো কি আরাদের অন্তরে ঝড় তোলার?
খুব জরুরী ছিলো,আরাদকে পদে পদে বিপদে ফেলার?
ছিলো না তো।
তাহলে?
আরেকবার দেখা হলে,আরাদ ওর থাপ্পড়গুলো সুদে-আসলে
ফেরত দিবে। মনে মনে এটাই স্থির করলো সে।
আপাতত মায়ের হাত থেকে বাঁচার উপায় বের করতে হবে। ওর কোন কথাতেই মা বিশ্বাস করছেনা। যখন বললো,ঐ মেয়ের বিয়ে ঠিক,তখন মা আরো ফুঁস করে জ্বলে উঠলো। বলতে লাগলো, একটা ম্যারিড মেয়ের সাথে বাজে সম্পর্ক, ছিহ ছিহ!
এই শিক্ষা দিয়েছিলাম ছোটবেলায়?
বড় হলেই কি, শিক্ষাও চলে যায়?
এই কয়বছরে তোর এতো অধঃপতন হয়েছে,বাসায় মেয়ে নিয়ে আসিস। আরাদ বোকার মতো মায়ের অভিযোগ শুনে যাচ্ছে। বাবার মরার পর,এই প্রথম মা চিৎকার চেঁচামেচি করছে। এতোদিন স্তব্দ হয়ে ছিলো কেমন।
যদিও মা ওর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলছে,তবুও আরাদ কোন জবাব না দিয়ে, চুপ করে শুনে যাচ্ছে। যেন তার মা এভাবে কথা বলছে,সেটাই ওর মধুর লাগছে। একসময় আরফা না পেরে রেগে কিচেনে চলে গেলেন।
তখন সহসা আরাদ এর সমাধান খুঁজে পেলো। যার কারনে এই সমস্যা, তাকেই সমাধান করতে হবে। ফোনটা হাতে নিয়ে সেই সমস্যা তৈরিকৃত ব্যক্তির নাম্বারটা ডায়াল করলো। ভেবেছিলো আর কোনদিন ফোন দিবে না। সব হিসেব চুকানো শেষ। কিন্তু সেই দিতে হলো।
পোড়া কপাল!
যতোই এই থাপ্পড় রানী থেকে দূরে যেতে চায় আরাদ,ততই যেন কাছে আসে।
এ কি অদ্ভুত যন্ত্রণা!
নিজের মাথার চুল টেনে ধরে,নীরব চিৎকার দিলো আরাদ। কারন সে চিৎকার কেউ শুনতে পায় না।
.
বিকাল দিকে সাচী আরাদের বাসায় উপস্থিত। আরাদের কথা শুনে পারলে সে তখনি চলে আসে। কিন্তু মাথা ব্যথা করছিলো, তাই ঘুমাচ্ছিলো সে। কাল রাতে বাসায় ফিরতে,অনেক রাত হয়ে গিয়েছিলো।
তাই ঘুম থেকে উঠে, ফ্রেশ হয়ে বিকালে আসে৷ এখন আরাদের মায়ের মুখোমুখি বসে আছে সে। হালকা নার্ভাস লাগছে। কারন আরাদের কথা শুনে যতটুকু বুঝেছে,তাতে মনে হচ্ছে পরিস্থিতি সুবিধার নয়। যদিও এটা নিছক ভুল বুঝাবুঝি কেবল। কিন্তু তবুও সেটা ঠান্ডা মাথায় বুঝাতে হবে। না হলে সাচীকেও ভুল বুঝতে পারে উনি। তখন কেলেংকারী হয়ে যাবে!
আর এসব ভেবেই সাচী বিচলিতবোধ করছে।
অন্যদিকে আরাদের মা সাচীকে খুঁটিয়ে দেখছেন। সাচী আরাদের মায়ের শাড়িটা ব্যাগে করে নিয়ে এসেছে। কথার একপর্যায়ে সাচী সে শাড়িটা উনার সামনে রাখেন। নিজের শাড়িটা দেখে চিনতে কষ্ট হয়নি উনার। যদিও একইরকম শাড়ি অনেকেরই থাকতেই পারে।
তবে মেয়েটাকে দেখে কেন যেন অন্যরকম মনে হলো আরফার। বিশ্বাস করতে মন চাইছে। এরকম একটা মেয়ে যদি উনার গবেট ছেলের গার্লফ্রেন্ড হতোও,উনি খুশি খুশি মেনে নিতেন।
কিন্তু আফসোস, সত্যিই মেয়েটার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। তাই সে আশায় গুড়ে বালি। তবে উনি শাড়িটা ফেরত নিলেন না। সাচীকে গিফট করে দিলেন। আর শাড়িটা নতুন,উনি এখনো ভাঁজ ভাঙ্গেননি। সাচীই শাড়িটা প্রথম পরেছে। আর টকটকে লাল রংটা উনাকে আর মানায় না এখন। এটা ভেবেই সন্তর্পণে একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস গোপন করলেন উনি।
এর পরপরই সাচীর বিয়ের তারিখ জানতে চাইলেন উনি। সাচী তারিখ জানালো। সেই সাথে দাওয়াত ও দিলো অগ্রিম। তখন আরফা কিছু বলতে চাইলে,আরাদ এই প্রসঙ্গটাই ঘুরিয়ে দেয় আচমকা। ছেলের এহেন কান্ডে,আরফা বেশ অবাক হোন। তবে সেখানে কিছু বলেননি। তবে সাচী চলে যাওয়ার পর, ছেলেকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন। তখনও আরাদ মাকে বিভিন্নভাবে এড়িয়ে যেতে চায়,কিন্তু পারেনি।
আরফার সূক্ষ দৃষ্টি, ছেলের চোখের ভাষা বুঝতে ভুল করেনি। একসময় আরাদ সবটাই বলে দেয়। ওর নিজেরও দম বন্ধ হয়ে আসছিলো,কাউকে বলতে না পেরে। ঐদিন রোহানী জোরাজুরি করলেও,আরাদ ওকে এঁড়িয়ে গিয়েছিলো। রোহানীকে কষ্ট দিতে চায় নি। মানুষ কষ্ট শেয়ার করে, নিজেকে হালকা করার জন্য। অন্যের কষ্ট বাড়ানোর জন্য নয়। আর সেখানে রোহানী প্রেগনেন্ট। এটা আরাদ ঐদিনই জানতে পারে। তাই আর কিছুই বলেনি।
ভেবেছিলো কাউকেই কিছু জানাবেনা। কিন্তু সেই মায়ের চোখকে ফাঁকি দিতে পারলনা। মায়ের জহুরি দৃষ্টি, সন্তানের মনের খবর ঠিকই বের করে ফেলে।
ছেলের কথা শুনে কোন দুঃখ প্রকাশ না করে, স্বাভাবিক কন্ঠে আরফা ছেলেকে একটা কাহিনী বললেন।
যখন উনার আরাদের বাবার সাথে পরিচয় হয়নি,তখন উনি অন্য এক সিনিয়র ভাইকে ভালোবাসতেন। এমনটা উনি ভাবতেন। আসলে সেটা ক্ষণিকের একটা মোহ ছিলো। তবে ঐ সিনিয়র ভাই ও যে, উনাকে ভালোবাসেন,সেটা জানতেন না। কারন সামনা-সামনি অতো পাত্তা দিতো না উনাকে। তারপর একসময় আরাদের বাবার পাগলামীতে, উনার প্রেমে পড়তে বাধ্য হোন। উনাদের বিয়ে হয়ে যায়। এরপর একদিন কোনভাবে জানতে পারেন,সেই সিনিয়রও উনাকে ভালোবাসতেন। তবে বলতে পারেন নি। ভেবেছিলেন কিছু একটা করে,তারপর উনার সামনে দাঁড়াবেন। কিন্তু ততদিনে আরাফের সাথে উনার বিয়ে হয়ে যায়। আরাফ তখন নিজের বাবার ব্যবসা সামলাতো। তাই আরফার মা,বাবা রাজি হয়ে যান।
তবে বিয়ের পর,এটা জেনে আরফার আর কোন বিশেষ অনুভূতি হয় নি। তবে একটু কষ্ট হয়েছিলো,ঐ সিনিয়রের জন্য। কিন্তু সেখানে আরফার কোন দোষ নেই। কারন তখনের প্রেক্ষাপটে কোন মেয়ে কখনোই, আগবাড়িয়ে নিজে প্রেম নিবেদন করতে যেতো না।
তখন আরফা ভেবে নিলো,হয়তো উনার সাথে আরফার জোড়া ছিলো না,তাই বিয়ে হয় নি।
এতটুকু শুনে আরাদ প্রশ্ন করলো,
‘ এই কাহিনী আমাকে বলছো কেন মা?’
তখন আরফা সহাস্যে বলেন,
‘ কারন সে যদি তোর জোড়া হিসেবে এই পৃথিবীতে এসে থাকে,তবে সে তোরই হবে। আর নয়তো ভালোবেসে লাইলি,মজনু সেজেও কোন লাভ নেই। আরফা হাসলেন এটা বলে। তবে সে হাসিতে কোন প্রাণ ছিলো না। কারন তিনি উপরে শক্ত দেখালেও,ভেতরে ভেতরে ছেলের জন্য কষ্ট পাচ্ছিলেন। কিন্তু উনি ছেলেকে ভেঙে পড়তে দিবেন না। তাই এই কথাগুলো বললেন। আরাদও বোধহয় সেটা বুঝতে পারলো।
তবে ঐ লোক পরবর্তীতে জঘন্য একটা কাজ করেছিলেন। যে কারনেই উনাদের দূরত্ব তৈরি হয়। আর আরাদ এমন হয়ে যায়। এতোবছর পরে,কেউ এমন ঘৃণ্য কাজ করতে পারে,আরফার জানা ছিলো না। ঐ লোক বিয়ে করেছিলো,তবে উনার স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। একটা মেয়েও ছিলো তের বছরের।
এরপর প্রথমে আরফার সাথে ফেসবুকে এড হয়,বন্ধুসুলভ কথা বলে। আরফার সিমপ্যাথি পাওয়ার জন্য। আরফা ওতোটা বুঝতে পারেনি। অথচ ওর সাথে বলা কথাগুলোর সস দিতো আরাফকে। আরো বিভিন্ন কথা এডিট করে বসাতো। একসময় আরাফ আরফাকে সন্দেহ করতে শুরু করে। আর সেটা চূড়ান্ত আকার ধারণ করে,যখন ঐ লোক একটা বাজে ভিডিওতে আরফা আর তার ছবি এড করে, সেটা আরাফকে পাঠায়। এমনটা করার কারন হলো,আরফা ওর কুপ্রস্তাবে রাজি না হয়ে ব্লক মারা।
আরফা ভাবতেও পারিনি,মানুষ এমন গিরগিটির মতো আচরণ করতে পারে। সে সহানুভূতি দেখাতে গিয়েছিলো। আর তাতে একসময় নিজের সংসারই ভেঙে গেলো। আরফা অনেক চেষ্টা করে,আরাফকে বুঝানোর। কিন্তু আরাফের মনে যেহেতু, সন্দেহের বীজটা ধীরে ধীরে বপন করা হয়েছিলো,তাই সে আরফাকে বিশ্বাস করেনি। আর আরাফ খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছিলো,আরফা একসময় ঐ লোকটাকে পছন্দ করতো। ব্যাস,এরপর আরফাকে একচুলও বিশ্বাস করেনি আরাফ।
আরফা অপমানে,ক্ষোভে সংসার,দেশ সব ছেড়ে চলে গিয়েছিলো। কখনো ভাবেননি,আরাফ উনাকে অবিশ্বাস করবেন। তারপর এতোগুলো বছর এভাবেই অভিমানে কেটে গেলো। কেউ কাউকে ডিভোর্সও দিলো না,আবার কথাও বললোনা। আর যখন সেই অভিমান ঘুচলো,ভুল ভাঙলো, তখন দুজনের আজন্ম দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে!
আরাফ যে বন্ধুর সাথে নেপাল থাকতো,সে দেশে এসেছিলো কয়দিন আগে। সে আরফাকে সব খুলে বলে। একটা লোক নাকি কয়েকমাস আগে, ভিডিও কলেই আরাফের হাতে-পায়ে ধরে মাফ চাই। মানে পারলে সে,ভিডিও কলেই পা ধরে আরকি। সে আর কেউ নয়,ঐ জঘন্য লোক। সব দোষ স্বীকার করে,কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে নাকি সে। কারন তারও নাকি ক্যান্সার ধরা পড়ে,আর সেটা লাস্ট স্টেজে। আর মাসখানিক বাঁচবে বড়জোর। তাই মাফ চাইতে কল দেয়। আর তখনো সে হাসপাতালে ভর্তি ছিলো,সেখান থেকেই কল দেয়। হয়তো পাপবোধ থেকে।
আরাফ সব শুনে অনুশোচনায় দগ্ধ হতে থাকে। একসময় আরফার কাছে মাফ চেয়ে,ওকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু জীবন বোধহয় অন্যকিছুই সাজিয়ে রেখেছিলো।
আর সেটা সুখকর কিছু নয় নিশ্চয়ই!
মায়ের মুখে সব শুনে,আরাদ কান্নায় ভেঙে পড়লো। আরফাও ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন একসময়। যেন মা ছেলে একে অপরকে আঁকড়ে ধরে,নিজেদের কষ্টগুলো জলাঞ্জলি দিতে চাইছে।
#চলবো…
সবাই রেসপন্স করুন।?