অন্যরকম বসন্ত – ২
অলিন্দ্রিয়া রুহি
সকালের মিষ্টি রোদ গাল ছুঁতেই নড়েচড়ে চোখ মেললো রিতি। প্রথম কয়েক সেকেন্ড নিজেকে ধাতস্থ করতে করতে কেটে গেল। এরপর যখন নিজের অবস্থান আবিষ্কার করতে পারল, তখন চোখে আবারও জল ছাপিয়ে উঠল। রিতি ঠিক বুঝতে পারছে না তার কী করা উচিত। এরকম একজনের সঙ্গে আজীবন কেন, এক ঘন্টাও একরুমে থাকা সম্ভব নয়! মিনিমাম কার্টেসীটুকু যার নেই, তার সঙ্গে এক ছাদের তলায় কী করে বাস করা যায়? রিতির মাথা ভার হয়ে আছে। গতকাল থেকে ক্ষণে ক্ষণে কান্না, আবার রাতে ঠিকভাবে না ঘুমোতে পারার কুফল… রিতির ঠান্ডাও লাগছে বেশ। সামনে শীতের শুরু… এখন থেকেই হালকা ঠান্ডা পড়ে। শেষ রাতে পাতলা কাঁথা নিতে হয়। সেই সময়ে রিতি ঠান্ডা মেঝেতে বারান্দায় ঘুমিয়েছে! শরীরটাও খারাপ লাগছে তার। মোট কথা, একটা আলস্য সারা দেহ-মন জুড়ে। রিতি বারান্দার দরজা খুলে গুটিগুটি পায়ে রুমের ভেতরে ঢুকলো। সাদিক ভাই এখনো ঘুমিয়ে আছেন। ভোর সাড়ে ছয়টা বাজছে মাত্র! রিতি হতাশ চিত্তে বিছানার এক কোণায় শুয়ে পড়ল। পায়ের কাছে একটা পাতলা কম্বল রাখা। সেটা গায়ে চাপাতেই রাজ্যের সব ঘুম রিতির চোখজোড়া দখল করে নিলো। রিতি তলিয়ে গেল ঘুমের দেশে…
____________
সাত-সকালে সাথীকে ছাদ থেকে নামতে দেখে শফিক সাহেব অবাক হলেন। সাথীও নিচে নামার মুখে বাবার সাক্ষাৎ পেয়ে একটু হকচকিয়ে গেল। শফিক সাহেব ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলেন, “ছাদে কী?”
সাথী আমতাআমতা করল। যুতসই কোনো জবাব না দিয়ে পাশ কাটিয়ে দ্রুত নিজের ঘরে চলে এলো। শফিক সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। তার স্ত্রী গত হয়েছেন প্রায় পনেরো বছর আগে। তারপর থেকে একা হাতে দুই ছেলে-মেয়েকে মানুষ করেছেন তিনি। সাদিক কে মোটামুটি মানুষ করতে পারলেও সাথীকে যথেষ্ট শাসন তিনি করতে পারেননি। হয়তো বাবারা মেয়েদের শাসন করতে পারে না বলে তাই, আর নইলে মেয়ের প্রতি তার অত্যধিক দুর্বলতা এর কারণ। সে যাইহোক না কেন, এর ফলাফল এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন শফিক সাহেব। সাথী বড় হতে না হতেই বিভিন্ন গোপন সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগেও এক ছেলের সঙ্গে মাঠের ভেতর খোলামেলা পরিবেশে হাতেনাতে ধরেছিলেন তিনি। এখন আবার কার সঙ্গ ধরেছে, কে জানে! শফিক সাহেবের এখন একমাত্র ভরসা রিতি। রিতি মেয়েটা যথেষ্ট বুদ্ধিমতী এবং কঠিন ধাঁচের। সে যদি চায়, সাথীকে ছোটো বোন হিসেবে সঠিক পথে আনতে পারবে। শফিক সাহেব ভাবলেন, নাশতার টেবিলে রিতির সঙ্গে এই বিষয়ে একটা ছোট্ট আলাপ করবেন তিনি। রিতিকে না বোঝালে অনেক কিছুই বুঝবে না। আর সবচেয়ে বড় কথা, হুট করে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় যেই ধাক্কাটা সে খেয়েছে সেটাও কমিয়ে দেওয়ার জন্য কিছু একটা করতে হবে তাকে। কেননা রিতির বাবা আর তার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ছিল, রিতি-সাদিকের বিয়েটা দেওয়া। তাদের জন্য পূর্ব পরিকল্পনা থাকলেও রিতির জন্য বিষয়টি অকস্মাৎ এবং হঠাৎ হওয়া। তাকে সবকিছু বুঝিয়ে পরিষ্কার করতে পারলে সংসারে হয়তো মন বসাতে পারবে!
শফিক সাহেব আনমনে কথাগুলো ভেবে নিজের ঘরের দিকে চলে গেলেন।
___________
গালে কারো স্পর্শ পেতেই রিতির মস্তিষ্ক সাইরেন বাজালো। এটা সাদিক ভাইয়ের ঘর। তবে কী সে-ই রিতিকে ছুঁয়েছে? রিতি চোখ খোলার আগে ঘুম থেকে উঠে বসল। তারপর ধীরে ধীরে চোখ খুললো। সাদিক ভাই হাসি হাসি মুখ করে তাকিয়ে আছেন।
“গুড মর্নিং রিতি। ঘুম কেমন হলো? আমার তো বাবা জম্পেশ ঘুম হয়েছে। তোমার ভালো ঘুম হয়েছে তো?”
রিতি মনে মনে বলল, “হ্যাঁ, এত ভালো ঘুম হয়েছে যে সেটার কথা আর না বলি! বাপের জন্মেও এত ভালো ঘুম কক্ষনো হইনি আমার।”
মুখে কোনো জবাব না দিয়ে রিতি একবার ঘড়ির দিকে তাকাল। একদম ন’টা বাজে। রিতি আড়মোড়া ভেঙে উঠে দাঁড়াল।
“তোমার জন্য নতুন ব্রাশ কেনা হয়েছে রিতি। বাথরুমে দেওয়া আছে। পিংক কালারের। আচ্ছা রিতি, তোমার কী পিংক কালার খুব পছন্দ?”
রিতি ভ্রু কুঁচকে বলল, “পিংক কালার আমার ভালো লাগে। কিন্তু ওতটাও পছন্দের না।”
“ওহ আচ্ছা! আমি ভাবলাম তোমার বোধহয় খুবই পছন্দের। নইলে তোমার সবকিছু শুধু পিংকই কেন হবে!”
রিতির কোঁচকানো ভ্রু এবার আরও কুঁচকে গেল।
“আপনার মাথায় সমস্যা, এটা আমি জানতাম। চোখেও যে সমস্যা,সেটা এখন জানলাম। আমার পরনে কোথাও কী পিংক কালার আছে সাদিক ভাই? একটু চোখ টা মেলে দেখুন!!”
সাদিক ভাই জবাব না দিয়ে মুচকি হাসলেন। রিতি বড় শ্বাস ফেলে তোয়ালে হাতে বাথরুমে ঢুকে গেল। শরীরটা কেমন যেন চিটচিট করছে। একটা শাওয়ার নিতে পারলে ভালো লাগবে। এই ভেবে ঝর্ণাটা ছেড়ে নিচে দাঁড়াল রিতি। প্রায় আধঘন্টার ন্যায় নিজেকে আপাদমস্তক পলিশড করে যখন জামা বদলালো, তখন পিংক কালারের অন্তর্বাস দেখে রিতির পিলে চমকালো। সাদিক ভাই কী তবে এই পিংকের কথা বলছিলেন? রিতির মনে হলো সে এক্ষুনি মাথা ঘুরে পড়ে যাবে। সে দেয়ালে ঠেস দিয়ে কোনোরকমে নিজেকে সামলালো।
খাবার টেবিলে পিনপতন নিরবতা। সাথী ঘুমুচ্ছে, সাদিক গিয়ে কয়েকবার ডেকে আসার পরও উঠেনি। এই বাড়ির সদস্য বলতে, শফিক সাহেব, সাথী, সাদিক আর সাত বছরের পুরোনো বুয়া মাজেদা খালা। মাজেদা খালার দুই মেয়ে। তাদের দু’জনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। মাজেদা খালার কাজ না করলেও চলে যায়। দুই মেয়েই তাকে মাসে কিছু করে টাকা দেয়। তবুও সাদিকের পরিবারটির উপর একটা মায়া জন্মেছে তার। তাই চাইলেও কোথাও যেতে পারে না। বাকি জীবনটা এদের সঙ্গেই কাটিয়ে দেওয়ার একান্ত ইচ্ছা পোষণ করেছেন তিনি। তাই মাজেদা খালাকে এই পরিবারের একজন সদস্যই বলা চলে। গুটিকতক সদস্যের ভেতরে রিতি যুক্ত হলো। রিতি আড়ষ্ট ভঙ্গিতে চেয়ারে বসেছে। সাদিক ভাইয়ের মুখের দিকে তাকাতে তার কেন যেন লজ্জা লজ্জা লাগছে ভীষণ। পিংক পিংক ঘটনাটি তার মাথায় খুঁটি গেড়ে বসেছে। বারবার মনে হচ্ছে, তার ঘুমন্ত অবস্থার সুযোগ লুফে নিয়েছে সাদিক ভাই। পরমুহূর্তেই মনে হচ্ছে, তাহলে কী সে একটুও টের পেতো না? নিশ্চয়ই সাদিক ভাই এমনিতে ওই কথাটি বলেছিল। সে খামোকাই দুশ্চিন্তা করছে। শফিক সাহেব রিতিকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে বললেন, “কী ব্যাপার রিতি মা, খাচ্ছো না কেন?”
“খাচ্ছি আংকেল।” বলে খাওয়ায় মন বসালো রিতি।
“রিতি মা, তোমাকে কিছু কথা বলতাম,যদি কিছু মনে না করো।”
“বলুন আংকেল। আমি আর কী মনে করব!”
শফিক সাহেব একবার সাদিকের দিকে তাকালেন। সাদিকের কোনোদিকে কোনো খেয়াল নেই। সে গোগ্রাসে গিলছে,যেন কত জনম পর খেতে পেয়েছে! শফিক সাহেব মৃদু শ্বাস ফেলে বললেন, “তোমার বাবা আর আমি অনেক আগে থেকে বন্ধু এটা তুমি জানো। সেই তখন থেকেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তোমরা বড় হলে তোমাদের বিয়ের মাধ্যমে আত্মীয়তা গড়বো আমরা। সম্পর্ক পাঁকা করব। তারই রেশ ধরে তোমাকে চমকানোর জন্য এভাবে হুট করে বিয়েটা করানো হয়েছে। এর বুদ্ধিও তোমার বাবার ছিল। তিনিই তোমাকে ভড়কানোর জন্য এসব করেছেন।”
রিতি স্তব্ধ হয়ে শুনলো,জবাবে কিছু বলতে পারল না।
“তোমার বাবার ইচ্ছা সফল হয়েছে। তুমি যথেষ্ট ভড়কেছো। আর ভড়কাতে চাই না, তাই বলে রাখছি, দু’দিন পর তোমাদের বিয়ের রিসিপশনের আয়োজন করা হয়েছে।”
“রি..রিসিপশন!” চমকে গেল রিতি। সঙ্গে সঙ্গে সাদিক ভাইয়ের দিকে তাকাল। যে কীনা অভুক্ত বেচারার মতো এক ধ্যানে খেয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘশ্বাস পড়ল রিতির। এই মাথা পাগলের সঙ্গে রিসিপশনে বসতে হবে– কথাখানা ভাবতেই তো গায়ে জ্বর চলে আসছে!
শফিক সাহেব বললেন, “আর একটা কথা মা। আমার ছেলেটা একটু আলাভোলা হলেও মানুষ ভালো। ওর ভেতরে কোনো প্যাঁচ নাই। তুমি যেভাবে তৈরি করবা, ওভাবেই তৈরি হবে। তাই ওর দায়িত্ব আমি সম্পূর্ণ তোমার উপর ছেড়ে দিলাম। ওকে একটু তুমিই শিখিয়ে পড়িয়ে নিও। জীবনে পড়াশোনাটাই শুধু শিখেছে আমার ছেলে, আর কিছু না। কার সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হয় সেটাও জানে না ঠিকঠাক। তুমি পারবে তো মা ওকে তোমার মতো করে গড়ে নিতে?”
রিতি সাদিক ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে মৃদু শ্বাস ফেলল। একে এখন নিজের মতো গড়ে নিতে হবে! না জানি এর জন্য কত কাঠখড় পোড়াতে হবে তাকে! আশ্চর্য, কিছুক্ষণ আগেও যার সঙ্গে এক ছাদের তলায় বসবাস করা যায় না ভাবছিল রিতি, এখন তাকে গড়ে নেওয়ার চিন্তাভাবনা কেন আসছে মাথায়! তবে কী একেই বলে নারীর মন? বিয়ের মাধ্যমে স্বামীর প্রতি একটা আলাদা ভালোলাগা, টান, মহব্বত আল্লাহ তায়ালা দিয়ে দেন, এটাই কী তার উপযুক্ত প্রমাণ? রিতি মনে মনে মাথা দোলালো। একদমই না। একটা চাকরি হওয়ার আগ অবধি এই বাসায় থাকবে সে। তারপর ফুরুৎ..গোল্লায় যাক সাদিক ভাই। সাদিক ভাইকে নিয়ে সে একদমই ভাববে না, একদম না!
সাথীর ব্যাপারেও কয়েকটা কথা রিতিকে বলতে চাইছিলেন শফিক সাহেব, শেষতক বললেন না। রিতি হয়তো ভাবতে পারে, আসতে না আসতেই তার উপর দায়িত্বের পাহাড় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারচেয়ে থাকুক, রিতি থাকতে থাকতে নিজ থেকেই বুঝে যাবে সাথীকে শাসন করা দরকার ব্যাপার টা। তখন নাহয় শফিক সাহেবও আর একটু উৎসাহিত করে তুলবেন। শফিক সাহেব ব্যাপারটাকে ছেড়ে দিলেন। নাশতা খেয়ে উঠে চলে গেলেন। রিতিও তার ঘরে চলে এলো। শুধু সাদিক ভাই একা ডাইনিং এ বসে রইলেন। তার খাওয়া ইহজনমে আর ফুরোবে না!
_____________
সাদিক ভাই ঘরে এলেন বেশ কিছুক্ষণ পরে। পায়ে লেডিস স্যান্ডেল, যেটা গতকালও তিনি পরেছিলেন। রিতিই আগ বাড়িয়ে বলল, “আপনাকে কিছু মার্কেট করে দিতে হবে সাদিক ভাই।”
“কেন রিতি? আমার তো জামাকাপড় সবই আছে। নাকি আমাকে দেখে তোমার গরীব মনে হয়?”
“আপনার জন্য শপিং করব না, আপনার পায়ের জন্য শপিং করব। আপনার জামাকাপড় থাকলেও জুতো বোধহয় নেই। থাকলে সাথীর জুতো পরে এভাবে ঘুরাঘুরি করতেন না। কী যে বাজে লাগে দেখতে!”
সাদিক ভাই দাঁত কেলিয়ে হাসলেন।
“সত্যি দেখতে বাজে লাগে রিতি?”
“অসম্ভব বাজে।”
“অহনা তো কখনো আমাকে এই কথা বলেনি রিতি। তাহলে কী অহনা আমার দিকে খেয়াল করে না!”
তৎক্ষনাৎ রিতির ভ্রু কুঁচকে গেল।
“অহনা কে?”
“আমার গার্লফ্রেন্ড রিতি..”
কথাটা সাদিক ভাই স্বাভাবিক ভাবে বললেন, রিতি হকচকিয়ে গেল। প্রায় চাপা চিৎকার দিয়ে বলে উঠল, “গার্লফ্রেন্ড!”
“হুম, গার্লফ্রেন্ড। কেন রিতি? তোমার কোনো গার্লফ্রেন্ড নাই?”
“আমার গার্লফ্রেন্ড থাকবে মানে! এই আমাকে কী আপনার সমকামী মনে হয়?”
“সমকামী কী রিতি?”
“ওটা আপনার মাথা আর আমার মন্ডু..” আচানক রিতির গলাটা কেমন ভারী হয়ে এলো। লোকটার গার্লফ্রেন্ড অবধি আছে! তবুও সে রিতিকে বিয়ে করেছে। আবার বুক ফুলিয়ে নিজের গার্লফ্রেন্ডের কথা বলছে! রিতির মনে প্রশ্ন জাগলো, ওই অহনা মেয়েটার সঙ্গে কী এখনো সম্পর্ক আছে সাদিক ভাইয়ের? আছে নিশ্চয়ই, নইলে ওর টপিক আসলো কেন?
রিতি গমগমে সুরে বলল, “ওই মেয়ের সঙ্গে আপনার এখনো সম্পর্ক আছে সাদিক ভাই?”
“কোন মেয়ে? অহনা? হ্যাঁ, থাকবে না কেন। ও তো এই বিল্ডিং এই থাকে। উপরের তলায়। প্রতিদিন এরকম সময়ে আমাদের বাসায় আসে। সাথীর সঙ্গে খুব খাতির। আজকেও চলে আসবে, দেখো।”
রিতি চমকের উপর চমক খেলো।
“আপনার গার্লফ্রেন্ড এই বিল্ডিংয়েই থাকে?”
“হ্যাঁ।”
“আপনার পরিবারের সবাই তাকে চেনে,না?”
“চিনবে না কেন?”
“তাহলে আপনি তাকে বাদ দিয়ে আমাকে কেন বিয়ে করলেন হ্যাঁ? তাকে বিয়ে করতেন। আমার জীবনটা নষ্ট করলেন কেন সাদিক ভাই?” রিতির গলা ভারী হয়ে এলো। তার কেন যেন খুব খারাপ লাগছে এই শুনে যে সাদিক ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ড আছে এবং সে এই বাসাতেই থাকে।
সাদিক ভাই ভ্রু কুঁচকে বললেন, “তাকে কেন বিয়ে করব রিতি? বন্ধুকে কেউ বিয়ে করে?”
“বন্ধু?”
“হুঁ, অহনা তো আমার বন্ধুই। শোনো গার্লফ্রেন্ড অর্থ কী? গার্ল অর্থ মেয়ে, ফ্রেন্ড অর্থ বন্ধু। গার্লফ্রেন্ড অর্থ মেয়ে বন্ধু। এটাও কী জানো না তুমি? ছি রিতি, শুনেছি অনার্স কমপ্লিট করেছো। ঘোড়ার ডিম মাথার ভেতর বুদ্ধি হয়নি কোনো.. আহারে..” সাদিক ভাই মুখ দিয়ে চুকচুক ধরনের একটা শব্দ করে উঠে চলে গেলেন। রেখে গেলেন রিতির হতভম্ব মুখ। রিতির বুঝতে সময় লাগল আসলে তিনি বললেন টা কী। যখন বুঝল, তখন মেজাজ আপনা আপনি চড়ে গেল। একে তো নিজেই জানে না আজকাল গার্লফ্রেন্ড অর্থ কী বোঝায়, তার উপর তার শিক্ষা নিয়ে কথা! রিতি মনে মনে বলল, “আপনাকে আমি দেখে নিবো সাদিক ভাই।”
মনে হলো বাতাসে ফিসফিস করে সাদিক ভাই বলছেন, “আমি তো তোমার সামনেই আছি রিতি। যত দেখার দেখে নাও। কে মানা করেছে?”
রিতি আচমকা চমকে উঠল। নাহ, মনে মনে কথা বলেও শান্তি নেই। এই বলদের পাঠা তো মনের ঘরে ঘাপটি মেরে বসে আছে!
(চলবে)
[গল্প একদিন পর পর পাবেন।]