#না_চাওয়া_পূর্ণতা ?
লেখক : সানজিতা আক্তার মীম
পর্ব : ০৩
তনু মেয়েকে নিয়ে কলেজের পাশের একটি স্কুলে এলো ভর্তি করানোর জন্য। অন্তু তনুর হাত ধরে ঘুরে ঘুরে সব দেখছে। তনু সোজা প্রিন্সিপাল এর রুমে গেলো।
তনু : আসসালামু আলাইকুম, স্যার।
প্রিন্সিপাল : ওয়ালাইকুম আসসালাম, তনু যে? হঠাৎ স্কুলে, কোনো কাজ ছিল?
তনু : জ্বী স্যার। অন্তুকে ভর্তি করতে এলাম এই স্কুল এ।
প্রিন্সিপাল : বাহ্। এটা তো ভালো কথা। তা অন্তু কেমন আছ,মামনি? ( অন্তুকে কোলে নিয়ে)
অন্তু : আলহামদুলিল্লাহ, আপনি কেমন আছেন?
প্রিন্সিপাল : তোমাকে দেখে পুরো ভালো হয়ে গেছি। আচ্ছা তনু তুমি সব ফর্মালিটি পূরণ কর আমি অন্তুকে নিয়ে স্কুল ঘুরে আসি। চল মামনি। ( বলে অন্তুকে নিয়ে চলে গেল)
তনু সকল ফর্মালিটি পূরণ করে কিন্তু বাবার নাম লিখার সময় থেমে যায় কিছু সময় এর জন্য। তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সায়ন রায়জাদা লিখে দিল। অফিসে সব জমা দিয়ে যেনে নিল কবে থেকে ক্লাস করতে পারবে। যদিও দুইদিন পর পর লকডাউন চলছে যার ফলে zoom এ ক্লাস করতে হবে। অন্তুকে নিয়ে প্রিন্সিপাল থেকে বিদায় নিয়ে কলেজে চলে এলো।
কলেজে এসে তনু অফিস রুমে অন্তুকে নিয়ে প্রবেশ করতেই সবাই এমন ভাবে ছুটে এলো যেন মিষ্টি বিতরণে যাচ্ছে আগে না গেলে মিষ্টি পাবে না। অন্তু যেয়ে কারও কোলে না উঠে আরাভ এর কোলে উঠল। আরাভ সবার মতো দৌড়ে কোলে নিতে আসে নি তাও অন্তু ওর কাছে যাওয়াতে সবাই গাল ফুলিয়ে বসে পরলো তা দেখে তনু হেসে দিল।
তনু : আরে আপনারা রাগ হচ্ছেন কেন? আজ ও আপনাদের সাথেই থাকবে।
আশফি স্যার : সিরিয়াসলি তনু, অন্তু আজ আমাদের সাথে থাকবে?
অন্তু : হ্যাঁ, কিন্তু আপনার কোলে যাবো না ( বলে ভেঙচি দিল)
অন্তু ভেঙচি দেওয়াতে সবাই হেসে দিল জোরে। সবাই হাসাহাসি করছিলো এমন সময় পিওন এসে বললো আজ নাকি কলেজের ট্রাস্টি আসছে তাই ১ ঘন্টা পর মিটিং।
তনু ভাবছে কে এই ট্রাস্টি। এই ৫ বছরে কখনো দেখি নি আর আসেও নি। তনু এসব ভাবতে ভাবতে ক্লাস করাতে লাগলো।
এদিকে সায়ন নারায়ণগঞ্জ এসে পরেছে। সায়ন এর কাছে কেন যেন খুব টান অনুভব হচ্ছে। কেন যেন মনে হচ্ছে কেউতো আছে এই শহরে যে ওর আপন। এসব ভাবতে ভাবতে গাড়ি কলেজের ভেতরে প্রবেশ করলো।
তনুর হঠাৎ কেমন অদ্ভুত ভয় করছে আর ঘামছে। তাই ও ক্লাস থেকে বের হয়ে দাড়াতেই চোখ গেল গেট দিয়ে ঢুকতে থাকা কালো গাড়িটির দিকে। কে এই গাড়িতে তা দেখার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা নেই তনুর তাই ও ক্লাস এ চলে গেল।
গাড়ি কলেজে ঢুকতেই সায়ন এর বুকে ধক করে উঠলো। এমন কেন হচ্ছে ওর জানা নেই।ও গাড়ি থেকে নেমে প্রিন্সিপাল এর রুমের দিকে গেল।
অন্তু আরাভ স্যার এর সাথে আছে। আরাভ ক্লাস করাচ্ছে অনলাইনে। আর অন্তু ক্লাসে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।
আরাভ: এই সবাই 9(A) এর 1 এর সব অংক গুলো কর।
সবাই : ওকে স্যার।
অন্তু : আমি কিভাবে করবো? আমি তো পারিই না! ( চিন্তিত হয়ে)
অন্তুর কথা শুনে সবাই হেসে দিল সাথে আরাভও।
সবাইকে প্রিন্সিপালের রুমে যেতে বলেছেন তাই সবাই গেছে তনু আর আরাভ বাদ এ।
সায়ন : সবাই কি এখানেই?
প্রিন্সিপাল : না দুইজন বাকি। এসে পরবে হয়তো ক্লাস করাচ্ছে।
সায়ন : ওকে আমরা কথা স্টার্ট করি।
প্রিন্সিপাল: ওকে।
সবাই কথা বলছিল এমন সময় তনু আর আরাভ এলো।
তনু : may i come in sir?
প্রিন্সিপাল : yes. Come.
তনু এখনো সায়নকে খেয়াল করেনি কিন্তু সায়ন তনুকে দেখে স্তব হয়ে গেছে। এটা কি সেই তনু যাকে ও মাঝ পথে ছেড়ে দিল। পরোক্ষণেই মনে হলো ওই ঘটনার আজ পাঁচ বছর চলে গেছে আর তনু তো বিবাহিত। তাই নিজের দৃষ্টি সরিয়ে নেয়।
তনু কথা বলার জন্য সামনে তাকাতেই ও যেনো জমে গেল। এ ও কাকে দেখছে।
তনু : সা,,,সায়ন ( অস্ফুট স্বরে)
তনু কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে গেল।রুম থেকে বের হয়ে ও দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।
তনু : কেন তুমি আবারও আমার লাইফে চলে এলে। কোনো কিছু কি বাকি ছিল। আমি তোমার মুখ দেখতে চাই না আর। i just hate you. hate u ( বলে কান্না করতে লাগলো)
মিটিং শেষ এ সায়ন বের হতেই এক পিচ্চি মেয়ের সাথে ধাক্কা লাগাতে মেয়েটি পরে যায়। সায়ন সাথে সাথে মেয়েটিকে তুলেমেয়েটির সামনে বসে পর।সায়ন দেখতে লাগলো মেয়েটি কোথাও ব্যাথা পেয়েছে কি না।
সায়ন : baby তুমি কোথাও ব্যাথা পেয়েছ?বল,,
অন্তু : না আমি ঠিক আছি৷। মাম্মাম এর স্ট্রোং গার্ল আমি। ( বলে উঠে দাড়ালো)
সায়ন : তা এই স্ট্রোং বেবিটার নাম কি? জানতে পারি?
অন্তু : অন্তু রায়জাদা।
সায়ন কিছু বলার আগেই তনু এসে অন্তুকে নিয়ে চলে গেল।সায়ন তনু আর অন্তু যাওয়ার দিক চেযে রইলো।
#চলবে