#না_চাওয়া_পূর্ণতা ?
লেখক : সানজিতা আক্তার মীম
পর্ব : ০২
৫ বছর পর,,,,,,,,,
তনু : অন্তু উঠো জলদি। তুমি কি ভুলে গেছ যে আজ আমরা স্কুলে যাব?
অন্তু : মাম্মাম আমার ঘুমু শেষ হয়নি তো! ( ঘুম ঘুম কন্ঠে)
তনু : একদম পিটুনি দিবো কিন্তু উঠো। ৫ মিনিট এর মধ্যে না উঠলে কাল থেকে চকলেট খাওয়া বন্ধ। ( ভয় দেখিয়ে)
অন্তু : nooo,,মাম্মাম প্লিজ এমন করো না। আমি এখনি উঠে পরবো। i am your good girl ?
তনু : এইতো আমার লক্ষী baby টা। ( জড়িয়ে ধরে) যাও এবার ব্রাশ করে আসো। আমি তোমার জন্য yummy yummy পেনকেক বানিয়েছি তা নিয়ে আসি।
বলে তনু কিচেনে চলে গেল। আর অন্তু ওয়াশরুমে৷ অন্তু হলো তনু আর সায়ন এর মেয়ে। যেদিন তনু বাড়ি থেকে পালিয়েছিল ঐ দিনই জানতে পারে যে, ও প্রেগন্যান্ট। আর ওর প্রেগন্যান্ট হওয়ার কথা সায়ন জানতো না শুধু পালানোর আগে বড় ভাই নুহাশকে বলেছিল। অন্তুই শেষ স্মৃতি সায়ন এর। অন্তুকে আকড়ে ধরেই ও বেঁচে আছে এই অচেনা জায়গায়। ঔদিন চলে আসার পর আর কারোও সাথে যোগাযোগ রাখে নি তনু। শুধু ভাইয়ের সাথে ছাড়া।
তনু একটি কলেজ এর chemistry teacher ।এখানে আসার ১ মাস পরই জয়েন হয়েছে এখানে। তনু একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। নুহাশ এর ঠিক করে দেওয়া। নুহাশ প্রতি সপ্তাহে এসে তনু আর অন্তুর সাথে দেখা করে যায়। অন্তু তো মামা বলতে পাগল। যখন তনুর ডেলিভারির সময় ওর পাশে কেউ ছিল না শুধু নুহাশ ছিল। ওই দিন অনেক বেশি অসহায় মনে হয়েছিল নিজেকে তনুর কাছে। সবকিছু যদি মনের মতো হতো তাহলে সায়ন থাকতো ওর পাশে। কিন্তু সব ইচ্ছে তো #পূর্ণতা পায় না।
অন্তু ব্রাশ করে ডাইনিং এ যেয়ে দেখে তনু কাজ করছে তাই পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে তনুকে। তনু ঘুরে মেয়ের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে গালে হাত দিয়ে বললো,
তনু : আমার মা টা ফ্রেশ হয়ে চলে এসেছে। এখন বলো তো yummy yummy নাস্তাটা কে খাবে? ( আহ্লাদি ভাবে)
অন্তু : or kon khayegi, of course main hi khawungi ( বলে হেসে দিল)
তনু : চলো আজ মাম্মাম তার প্রিন্সেস কে খাইয়ে দিবে ( বলে কোলে তুলে নিল মেয়েকে)
অন্তুকে খাইয়ে দিয়ে তনু নিজের সাথে মেচিং করে ড্রেস পরিয়ে দিল। এর মধ্যে নুহাশ কল দিল। অন্তু কল রিসিভ করে চুপ করে আছে।
নুহাশ : তা প্রিন্সেস কি চুপই থাকবে নাকি মামার সাথে কথাও বলবে? ( নুহাশ জানে ও কল করলে অন্তুই কল রিসিভ করবে তনুকে করতে দিবে না)
অন্তু নুহাশের কথা শুনে খিলখিল করে হেসে দিল আর বললো,,
অন্তু : মামা তুমি কিভাবে বুঝে ফেলো মাম্মামের মতো করে যে এটা আমি। ( অভিমান করে)
নুহাশ : bcz you are Princess of my heart. তো বলো প্রিন্সেস কে যদি না চিনি আমার চাকরি কি থাকবে? ( হেসে হেসে)
অন্তু : না না এটা চলবে না। তুমি আবার কল দিবে আর আমাকে মাম্মাম মনে করে কথা বলবে। ( বলে কল কেটে দিল)
এদিকে তনু রেডি হচ্ছে আর অন্তুর কথা শুনে হাসছে। মেয়েটা অনেক দুষ্টু হয়েছে। মামার ভালোবাসা পেয়ে পেয়ে মাথায় উঠে নাচে।
অন্তুর কথা মতো নুহাশ আবার কল দিল।
নুহাশ : কিরে ঘষেটি বেগম, আমার প্রিন্সেস কই?
অন্তু : মামা তুমি মাম্মাম কে ঘষেটি বেগম বললে কেন? ( রেগে নাক ফুলিয়ে)
নুহাশ : ওরে বাবা কি বলে ফেললাম ( ঘাবড়ে গেছে বেচারা কারণ গতবার এই কথা বলার কারণে পাবলিক প্লেসে কান ধরে উঠবস করতে হয়েছিল অন্তুর নির্দেশ মতো এবার কি করাবে)
তনু এমন পরিস্থিতি দেখে ফোন নিয়ে নিল,
তনু : কেমন আছো ভাইয়া?
নুহাশ : বোন আমাকে বাঁচা তোর ওই জল্লাদনি মেয়ের হাত থেকে। আমি আর জীবনেও তরে ঘষেটি বলবো না। ( রিকুয়েষ্ট করে)
তনু : করতে পারি কিন্তু! ( সয়তানি হেসে)
নুহাশ : কিন্তু কি?
তনু : আমাকে আমার ভাবি এনে দাও ( দাত কেলিয়ে)
নুহাশ : যেমন মা তেমন মেয়ে। ধুর লাগবো না তোর হেল্প। আমি আমার প্রিন্সেস এর দেওয়া শাস্তিই মেনে নিবো। তুই অন্তুকে ভর্তি করিয়ে আয় তারপর বাকি কথা বলবো।
তনু : okk bro
কল কেটে দেখে অন্তু এখনো নাক ফুলিয়ে বসে আছে তাই তনু বললো,,
তনু : যান মাম্মাম তোমার মামা কি বলেছে? বলেছে এবার এসে তোমাকে নিয়ে পার্কে ঘুড়তে যাবে। ( ডাহা মিথ্যা কথা)
অন্তু : সত্যি মাম্মাম!!! yeeeeee mama is the best mama in the world. ( বলে তনুকে চুমু খেলো)
তনু অন্তুকে নিয়ে স্কুল এর উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরলো।
রায়জাদা মেনশন,,,,,,
ডাইনিং টেবিলে বসে আছে আরাফাত রায়জাদা ও তার স্ত্রী সুমোনা রায়জাদা। আর ছেলে সায়ন এর জন্য অপেক্ষা করছে।
সায়ন নিচে এসে সোজা টেবিলে বসে পরলো নাস্তার জন্য।
সুমোনা : তুই কি কোথাও যাচ্ছিস?
সায়ন : হ্যাঁ। নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছি। আমি যে কলেজের ট্রাস্টি ওই কলেজের কিছু কাজ করানো বাকি তা করাতে যাচ্ছি।
আরাফাত : ফিরবি কবে?
সায়ন : জানিনা। ওইখানে থেকেই বা কি করবো। কে আছে ওইখানে আমার যে তার জন্য থেকে যাব। ( অন্যমনষ্ক হয়ে)
বলে লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে পরলো সায়ন। উদ্দেশ্য নারায়ণগঞ্জ।
#চলবে…..