❤#মেঘ_বৃষ্টি_রোদ
#অষ্টাদশ_পর্ব❤
সেদিন আর কথাবার্তা তেমন এগোয়নি পর্ণা আর সৌমিকের মধ্যে। পর্ণার বলা ঐ একটা কথাতেই সৌমিক ভীষণভাবে যেন অনেকরকম ভাবনাচিন্তার মধ্যে পড়ে গেল। কয়েকদিন আগে থেকে তার নিজেরও পর্ণার প্রতি কীরকম একটা অদ্ভুত ভালোলাগা জন্মে গেছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু সেটার ব্যাপারে ও এখনো পর্যন্ত কোনো নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পারেনি। তবে আজকের কথাটা শুনে আলাদাই এক ধরণের অনুভূতি হল সৌমিকের মনে। হঠাৎ করেই, ওর মনে হল, একটা বড়ো কাছের জিনিস, না জেনেই সে এতদিন অবহেলা করে এসেছে, যেটা চাইলে খুব সহজেই হয়তো পাওয়া যেত। এতক্ষণে সৌমিকের চোখের সামনে ধীরে ধীরে সেই প্রশ্নগুলো পরিস্কার হতে শুরু করল,- তৃণাকে পছন্দের কথা বললে কেন পর্ণার মন খারাপ হয়ে যেত, শুধুমাত্র বন্ধুত্বের খাতিরে সেইসব প্রসঙ্গের কথাগুলো চালিয়ে যেত ও। এতবার পরোক্ষভাবে মেয়েটা জানিয়ে গিয়েছে যে ওর একটা ছেলেকে পছন্দ, অথচ বলতে পারছেনা, এতবার করে ও বোঝানোর চেষ্টা করে গেছে, কিন্তু অদ্ভুত ভাবে সৌমিক কিছুই বুঝতে পারেনি, হয়তোবা বোঝার চেষ্টাই করেনি…. পুরো ব্যাপারটা প্রথম থেকে ভাবা শুরু করতেই, ক্রমশ আরো বেশি করে পর্ণার কথাবার্তা, চোখের চাহনি, হাসি, ওর প্রতি মুগ্ধতার দৃষ্টি এসবের সাথে জড়িয়ে যেতে লাগল সৌমিক……
অবশেষে এরকম ভাবে কয়েকটা দিন কাটার পর, পর্ণার সমস্ত কথা মিলে গিয়ে যখন সৌমিক পুরোপুরি ভাবে বুঝতে পারল, যে অন্য কেউ নয়….পর্ণার প্রতিই ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে সে, একদিন কথা না হলেই মনের ভিতর ভীষণ রকম অস্থিরতা কাজ করছে, পর্ণাকে পুরোপুরি ভুলে যাওয়ার কথা উঠলেই সেটা অসম্ভব মনে হচ্ছে…. তখন একদিন মনে মনে সৌমিক ঠিক করেই ফেলল একটা জটিল সিদ্ধান্ত, যেটা আদপে হয়তো খুবই সহজ-সরল।
সেদিনের ওরকম কথাবার্তার পর মাঝখানে অনেকদিন ওদের কারোরই কথা হয়নি। সৌমিক আর নিজে থেকে ফোন না করায় একপ্রকার আশা ছেড়েই দিয়েছিল পর্ণা। ও নিজেও চক্ষুলজ্জার খাতিরে আর যোগাযোগ করেনি। বরং বারবার আফশোস করে গেছে নিজের কাজের জন্য, কথার জন্য। কী দরকার ছিল সেদিন সরাসরি ওভাবে কথাটা বলার? হয়তো সৌমিক ব্যাপারটা পছন্দ করেনি, সে জন্যই কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। পর্ণার এই আশঙ্কা গুলোর আরও একটা কারণ ছিল। সেদিন সৌমিককে আচমকা নিজের মনের কথাটা বলে, পর্ণা ফোন রেখে পরে মেসেজও করেছিল, যে ও কথাটা মজা করে বলেছে। পরিস্থিতিটা সহজ করার একটা চেষ্টা করেছিল সে।
কিন্তু তারপরেও যখন সৌমিক কোনো রিপ্লাই দিলনা, এই কয়েকদিনে একবারও ফোন পর্যন্ত করলনা…..তখন আত্মসম্মানের খাতিরে পর্ণা আর জোর করেনি। যে থেকে যাওয়ার,যে ভাগ্যে আছে সে এমনিতেই রয়ে যাবে, আর যে জীবনে থাকার নয়, তাকে শতচেষ্টা করেও বেঁধে রাখা যাবেনা- ছোটো থেকে জ্ঞান হওয়ার পরবর্তী সময় পর্যন্ত এটাই মেনে এসেছে পর্ণা। তাই সমস্ত আশা ছেড়ে দিয়ে নিজের সাধারণ কাজে মন দিয়েছিল সে। কিন্তু তারপরেই ঐদিন রাতে একটা ফোন-কল পর্ণার সমস্ত প্রতিজ্ঞা, অভিমান গুলোকে টুকরো টুকরো করে ভেঙে আবার নতুন করে জুড়ে তাকে একটা নতুন জীবনের দোরগোড়ায় দাঁড় করিয়ে দিল। সৌমিক সেদিন বেশ রাত করেই ফোনটা করেছিল, ততক্ষণে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছে পর্ণা। রাতের ঘড়ি জানান দিচ্ছে, তখন সময় রাত একটা…
-” হ্যালো কে?”
কে ফোন করেছে তা না দেখেই, ঘুমজড়ানো কন্ঠে কথা বলে উঠল পর্ণা। অনেক চেষ্টা করেও চোখ খুলতে পারলনা সে। অবশ্য ওর ঘুমভাবটাও আর রইল না বেশিক্ষণের জন্য। ফোনের ওপাশে মানুষটার কন্ঠস্বরটা কানে যেতেই, চমকে বিছানায় উঠে বসল পর্ণা।সৌমিক তখনও ওদিক থেকে বলে যাচ্ছে,
-” হ্যাঁ হ্যালো, আমি সৌমিক। নম্বর ডিলিট করে দিয়েছো নাকি??”
-” এমা, না না, আমি বুঝতে পারিনি বলো। সরি সরি”
-” ওহ্, সরি আমি তোমাকে বলছি, এত রাতে এভাবে ফোন করে বিরক্ত করার জন্য। কিছু মনে করোনি তো?”
-” না কীই বা মনে করব, এত রাতে এরকম তড়িঘড়ি ভাবে ফোন করেছ মানে নিশ্চয় কোনো দরকার কাছে, তাই না? বলো আমি শুনছি”
-” হ্যাঁ বলছি, আচ্ছা আগে এটা বলোতো তুমি কি রাগ করেছো? এই কয়েকদিন আমি কোনো ফোন, মেসেজ করিনি বলে?”
-” তোমার উপরে রাগ দেখানোর কোনো কারণ বা অধিকার আছে কি আমার আদৌ? আমি কিছুই করিনি, রাগ, অভিমান কিছু না, কিচ্ছু না। সত্যি ”
-” হুমম বুঝেছি। আর কিছু কথা ঢাকা না দিলেও চলবে। তো আজকে আমি একটা ভীষণ দরকারি কথা বলার জন্যই তোমাকে ফোন করেছি। সেটা শুনে তোমার যদি খারাপ লাগে তাহলে সত্যি কিছু করার নেই। বলব কি কথাটা??”
-” হ্যাঁ বলো, আর আমার খারাপ লাগা নিয়ে খুব বেশি ভেবেও লাভ নেই। আমি এতকিছু মাইন্ডে নিইনা। বলো, আসলে এত রাতে তুমি দরকারি কথা কী বলবে, সেটাই বুঝতে পারছিনা”
-” পর্ণা, আমি তোমাকে ভালোবাসি। যেরকম ভাবে এই কয়েকটা দিন তুমি আমার পাশে ছিলে সেরকম ভাবেই পুরো জীবনটা থাকবে? বলো?”
একদমে কথাটা বলেই চুপ করে গেল সৌমিক। নিঃশ্বাস বন্ধ করে পর্ণার উত্তরের অপেক্ষা করতে লাগল ও। কিন্তু ওদিক থেকে পর্ণা কোনো কথাই বললনা প্রথমে। খানিকক্ষণ চুপচাপ থেকে পর্ণা ধীরে ধীরে বলল,
-” আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা, তুমি…..হঠাৎ আমাকে, মানে……”
-” পর্ণা, তুমি এত কথা বলতে পারো, বান্ধবীর জন্য এতকিছু করতে পারো, আমি কে কোথাকার কে, তার জন্য পাশে থাকতে পারো। অথচ, একটা মানুষকে তোমার ভালোলাগে, তাকে তুমি ভালোবেসে ফেলেছ, এই কথাটুকু স্বীকার করতে পারো না?”
-” আমি কিন্তু তখন, মজা করে কথাটা বলতে চেয়েছি। মানে সত্যিই …..”
-” আমি এতটাও বোকা নই পর্ণা, হ্যাঁ এটা ঠিক সেদিন তুমি কথাটা বলার আগে আমি বিষয়টা নিয়ে ভাবিনি। কিন্তু তুমি যে একতরফাই আমাকে পছন্দ করে গেছো, এটাও তোমার ভুল ধারণা। যদি কিছু বুঝতে পারো নিজে থেকে তাহলে হয়তো জানতে পারবে, যে আমিও তোমাকে পছন্দ করি। এই কয়েকদিন আমার একটু সময়ের প্রয়োজন ছিল তাই তোমাকে ফোন, মেসেজ করিনি। তার জন্য ভুল না বুঝলেই খুশি হব ”
-” আমার মাথাতে সব কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে। দাঁড়াও দাঁড়াও, আমাকে একটু ভাবতে দাও প্লিজ”
-” বেশ তুমি টাইম নাও, আমি আছি। ওকে আজকে ঘুমিয়ে পড়ো, অনেক রাত হয়ে গেছে অলরেডি, কাল.. পরশু করে যখন সময় পাবে জানিও। কেমন?”
-” হুমমম”
সংক্ষেপে জবাব দিল পর্ণা। আকস্মিক ঘটনায় ওর চিন্তাভাবনা সত্যিই এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। তাই সেই মুহূর্তে কোনো কথা আর বলতে পারেনি সে। তবে খুব বেশিদিন তারপর অপেক্ষা করতে হয়নি সৌমিক। কিছুদিনের ব্যবধানে পর্ণা নিজের মনের এতদিনের লুকিয়ে রাখা কথাটা স্বীকার করে নেয় সৌমিকের কাছে। ধীরে ধীরে সময় এগিয়ে চলার সাথে সাথে, ওদের মধ্যেকার সম্পর্কটাও গভীর হতে থাকে খুব স্বাভাবিক ভাবেই। সৌমিকের ছেলেমানুষি, পর্ণার ব্যক্তিত্বপূর্ণ কথাবার্তা, আর সম্পর্কের বোঝাপড়া এটুকুই দরকার ছিল বোধহয় ওদের জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সেটুকু পূরণ হয়ে যাওয়ার পর, একদম অন্যরকম ভাবে সব কিছু শুরু করল সৌমিক আর পর্ণা।
************
পুরোনো কথা ভাবতে ভাবতে একপ্রকার হারিয়ে গিয়েছিল সৌমিক। পর্ণাও চুপচাপ বসে ছিল সৌমাভর ঘরের সোফায় । তৃণা আর সৌমাভকে অনেকক্ষণ ধরেই দেখা যাচ্ছে না, দুজনেই বাইরের ঘরের দিকে, পা কিচেনের দিকে গেল বোধহয়। কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। একবার গিয়ে দেখে আসাই যায়, কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে সেটা করাও সম্ভব হচ্ছেনা। ভীষণ একটা অস্বস্তির মধ্যে পড়ে গেল পর্ণা। সৌমাভ যতই বলুক, লজ্জা না পেতে, তবুও উনি তো সম্পর্কে ওর স্যারই হন সবশেষে। পর্ণা সৌমিকের গায়ে একটা ঠেলা মেরে বলল,
-” একবার গিয়ে দেখবে , ওরা কোথায় গেল? আমরা এমনি করেই বসে থাকব নাকি এখানে?”
পর্ণার কথাটা শোনামাত্র সৌমিক কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু তার আগেই ও কথা থামিয়ে প্রচন্ড অবাক হয়ে সামনে তাকিয়ে দেখল, দাদা তৃণাকে পাঁজাকোলা করে কোলে নিয়ে, ভীষণ চিন্তিত মুখে সোফার দিকে এগিয়ে আসছে। পর্ণা তৃণাকে অচেতন অবস্থায় দেখেই ব্যস্ত পায়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
-” কী হয়েছে? তৃণা সেন্সলেস হলো কী করে? ও ঠিক আছে তো??”
-” কিচ্ছু হয়নি, প্যানিক করো না। একটু জল নিয়ে আসো এদিকে। তাড়াতাড়ি”
পর্ণা দৌড়ে গিয়ে বেসিন থেকে এক গ্লাস জল নিয়ে এল। সৌমাভ সেই জলটা তৃণার চোখে মুখে ছিটিয়ে দিতে দিতে, ভীষণ গভীর দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়েই রইল। বুকের ভিতর অদ্ভুত একটা কষ্ট অনুভূত হচ্ছে, মনে হচ্ছে ভীষণ ভারী কিছু চেপে আছে বুকের উপরে। সামনে ভাই আর পর্ণা না থাকলে হয়তো চোখের জলটুকু বেরিয়ে যেতেও আর কোনো বাধা থাকত না। শেষ কবে সৌমিভ কেঁদেছে ওর মনে নেই। কিন্তু এই মুহূর্তে তৃণার এরকম অবস্থার জন্য ওর নিজেকেই দায়ী মনে হচ্ছে। কী দরকার ছিল মেয়েটাকে ওরকম ভিবে জোর দেখিয়ে কথা বলার! সৌমাভ বারবার ভুলে যায়, যে তৃণা ভীষণ ছেলেমানুষ। তৃণার ভাবনাচিন্তার সাথে ওর ভাবনার মিল হতে এখনো অনেক দেরী। একটু ঠান্ডা মাথায় বোঝালেই হয়তো আজ এই অবস্থাটা হত না…
বেশ কিছুক্ষণ পরে তৃণাকে ক্রমাগত, হাওয়া করে , মুখে চোখে জল দেওয়ার পর ওর জ্ঞান বোধহয় অল্প অল্প ফিরে এল। হালকা চোখের পাতাটা নড়ার সাথে সাথেই ভীষণ উত্তেজিত ভাবে সৌমাভ তৃণার হাতটা চেপে ধরে বলে উঠল,
-‘এখন ঠিক আছো তুমি? তাকাও আমার দিকে।”
-” দাদা,শান্ত হ। তৃণা ঠিক আছে এখন। টেনশন করিস না। বাট এরকম হল কীভাবে? মানে হঠাৎ করেই কি তৃণা অজ্ঞান হয়ে গেল?”
সৌমিক ওর দাদার দিকে তাকিয়ে যতটা সম্ভব পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করতে লাগল। কিন্তু আগের মতই একটা চাপা অস্থিরতা ছেয়ে রইল সৌমাভর মুখ। ও সৌমিকের কথার উত্তরে সরাসরি কিছু বললনা, অন্যমনস্ক ভাবে তৃণার দিকে তাকিয়েই সে পর্ণার উদ্দেশ্যে বলল,
-” একটু জলটা খাইয়ে দাও তো ওকে আস্তে আস্তে।”
তৃণার কান অবধিও কথাটা বোধহয় পৌঁছালো।
এবার ও ধীরে ধীরে সোফা থেকে উঠে বসার চেষ্টা করতেই , সৌমাভ আবার ওর হাতটা ধরে সেই আগের কথাগুলোই বলল। চোখের দৃষ্টি দিয়েই যেন সে নিজের মনের কথাগুলো বোঝানোর চেষ্টা করতে লাগল তৃণা কে। তৃণা অবশ্য এবারেও কোনো কথা বললনা। শূন্যদৃষ্টি নিয়ে ও একভাবে পর্ণার দিকে তাকিয়ে রইল। ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে, শরীর কখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। তবু কোনো এক অদম্য কারণে ওকে যেন জোর করেই উঠে বসতে হয়েছে। পর্ণা এবার তৃণার হাতটা ধরে নরম গলায় বলল,
-” কষ্ট হচ্ছে কোথাও? বল আমাকে তাহলে? কী অসুবিধা হচ্ছে খুলে বল প্লিজ”
-” আমি ওর সাথে একটু কথা বলতে চাই আলাদা করে”
সৌমাভর দিকে তাকিয়ে ,খুব ধীর কন্ঠে বিড়বিড় করে কথাটা বলল তৃণা। আর এই কথাটা বলার পরেই, পর্ণা বুঝতে পারল, নিশ্চয় ওদের মধ্যে কোনো একটা বড়োসড়ো ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এই কয়েকদিনের সম্পর্কে কী এমন ঝামেলার পর্যায়ে চলে গেছে ঘটনা, যে এরকম পরিণতি হতে হল?
সৌমাভর অবশ্য বুঝতে পারল যে এই মুহূর্তে ঠিক কোন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে চায় তৃণা। সেই ব্যাপারটা নিয়ে ও নিজেও কথা বলতে চায়, কিন্তু তৃণার এই শারীরিক পরিস্থিতিতে সেটা কি উচিত হবে? বোধহয় না, ওকে এখন বেশি উত্তেজিত না করাটাই ভালো। এই সব কথা ভেবেই সৌমাভ তৃণার দিকে তাকিয়ে নরম গলায় বলল,
-” আমরা এটা নিয়ে পরে কথা বলি? আগে একটু সুস্থ হও। আমি ডক্টরকে ফোন করছি, একটু পরে তুমিও যাবে সেখানে, আমার সাথে। বুঝতে পেরেছো?”
-” না, যা কথা বলার আমি এখনই বলব। ব্যাপারটা একই মেটাবো।”
-” তৃণা অযথা জেদ করোনা। যেটা বলছি শোনো ”
-” আমি জেদ করছি? আর তুমি যেটা বললে সেটা জেদ নয়?”
অসুস্থ শরীরেই চিৎকার করে কথাটা বলে উঠল তৃণা। স্থান-কাল-পাত্র সবই যেন ভুলে গেছে সে। অবস্থা বেগতিক দেখে সৌমিকের মনে হল, তার আর পর্ণার এখানে এই মুহূর্তে না থাকাই উচিত। ওদের দুজনের মধ্যবর্তী ঝামেলা দুজনের উপরেই ছেড়ে দেওয়া ভালো, এতে সম্পর্কের ভিতর মজবুত হবে, সাথে বোঝাপড়াও বাড়বে। আর এখানে আর বেশিক্ষণ থাকলে দাদা যে ভীষণ অস্বস্তিতে পরে যাবে এটাও বেশ স্পষ্ট বুঝতে পারল সৌমিক। সেই কারণে, পর্ণার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে চলে যাওয়ার জন্য একটা ইশারা করার চেষ্টা করতে লাগল সৌমিক, এবং খুব তাড়াতাড়িই তাতে সফল ও হল…
( ক্রমশ )