#ফাগুন_ছোঁয়া
#পর্ব_১০
#লেখিকা_সারা মেহেক
হঠাৎ আদ্রিশকে দেখার তীব্র ইচ্ছা চেপে বসলো মিমের মনে৷ তবে ছবিতে নয়, বাস্তবে। কিন্তু এ ইচ্ছে আদ্রিশের নিকট বলার সাহস তার হলো না। মূলত আদ্রিশের সামনে নিজের একটা ভাব বজায় রাখতে সে ইচ্ছে বিসর্জন দিতেও রাজি মিম। যদিও তার মনটা এ কারণে বেশ অস্থির হয়ে উঠলো। শেষমেশ নিজের সাথে ল’ড়া’ইয়ে পরাজিত হয়ে আদ্রিশকে কল দিলো মিম। আদ্রিশ প্রায় সাথে সাথেই কল রিসিভ করলো,
” তোমাকেই কল দিতে চাইছিলাম।”
মিমও বললো,
” আমিও অনেকক্ষণ যাবত ভাবছিলাম কল দিবো আপনাকে।”
” বাহ! এই না হলে কাপল থিংস!”
মিম খানিক হাসলো। বললো,
” খাওয়াদাওয়া শেষ আপনার? ”
” এখনও না।”
” কখন খাবেন? আর কোথায় এখন? মেসে?”
” না, তোমার হোস্টেলের সামনে।”
আদ্রিশের সাথে কথা বলতে বলতে পানি খাচ্ছিলো মিম। অকস্মাৎ আদ্রিশের এহেন কথায় বিষম খেলো সে। বার কয়েক কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করলো। অতঃপর কণ্ঠে আকাশসম বিস্ময় নিয়ে বললো,
” এই রাত বারোটায় আমার হোস্টেলের সামনে আপনি!”
মিমের কাজকারবারে আদ্রিশ যেনো হেসেই কূল পেলো না। ওপাশে ঠোঁট টিপে হেসে বললো,
” জি হ্যাঁ, মিসেস।”
মিমের এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। তাই তো অবিশ্বাস্য কণ্ঠে বললো,
” সিরিয়াসলি বলছেন? মজা করছেন না তো?”
আদ্রিশ এবার গম্ভীর হওয়ার ভান করে বললো,
” জি ম্যাডাম, সিরিয়াসলি বলছি।”
” এখন হোস্টেলের সামনে এসেছেন কেনো? আপনার সাথে তো দেখা করাও সম্ভব না। ”
” সম্ভব সম্ভব। ইচ্ছে থাকলে সবই সম্ভব। ”
” কি করে সম্ভব? এই রাতে দারোয়ান মামা কি দরজা খুলবে?”
” দারোয়ান মামাকে দরজা খুলতে কে বলেছে? দরজা খোলা ছাড়াও তোমাকে দেখতে পাবো আমি।”
মিম এবার ধরেই নিলো আদ্রিশ গম্ভীর একটা ভাব ধরে মজা নিচ্ছে তার সাথে। সে-ও এবার মজা নিতে শুরু করলো,
” আচ্ছা! আপনার চোখের এতো পাওয়ার! দরজা খোলা ছাড়াও আমাকে দেখতে পাবেন! তা কি করে শুনি?”
আদ্রিশ ঠোঁট টিপে বললো,
” কেনো? আমার কথা বিশ্বাস হয় না?”
” উঁহু। বিশ্বাসযোগ্য কিছু বলেননি আপনি।”
” আহহা, এতো অবিশ্বাস কেনো? এবার জলদি ব্যালকুনিতে এসো তো।”
” ব্যালকুনিতে কেনো?”
” আসো তো আগে।”
মিম রুম ছেড়ে ব্যালকুনিতে গিয়ে দাঁড়ালো। তৎক্ষনাৎ আদ্রিশ বললো,
” এই যে, এবার তোমাকে দেখতে পারছি। দরজা খোলা ছাড়াই দেখতে পারছি তোমাকে।”
মিম বিস্মিত হলো। তার দৃষ্টিজোড়া পাঁচতলার ব্যালকনি পেরিয়ে সম্মুখের এলাকায় আদ্রিশকে খুঁজতে লাগলো। কিন্তু আশপাশ খোঁজার পরও তার দৃষ্টি স্থির হলো না। শেষমেশ আদ্রিশ বললো,
” চারপাশে না তাকিয়ে একদম তোমার বরাবর তাকাও। একজন জলজ্যান্ত মানুষকে দেখতে পারবে।”
হ্যাঁ, এবার আদ্রিশের দেখা পেলো মিম। তার একদম বরাবর একটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে আদ্রিশ। ল্যাম্পপোস্টের আলোয় আদ্রিশের চেহারাখানা আধ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। তার চেহারা দেখে মিমের মনটা যেনো শীতল হলো। শান্ত হলো তার ভেতরটা। অস্থিরতা কমলো। অধর কোনে ফুটে উঠলো এক টুকরো মিষ্টি হাসি।
আদ্রিশ বললো,
” তোমার হাসি দেখার অধিকার কি নেই হুম? একটু ব্যালকনির লাইটটা অন করে দাও।”
মিম খানিক চমকিত হলো। জিজ্ঞেস করলো,
” জানলেন কি করে আমি হাসছি?”
আদ্রিশ এহেন প্রশ্নে মুচকি হেসে বললো,
” জেনেছি একভাবে। এবার তুমি লাইটটা জ্বালিয়ে দিয়ে আসো। আমাকে তো তুমি দেখতে পারছো। কিন্তু তোমাকে দেখতে পারছি না আমি।”
মিম আর কথা বাড়ালো না৷ রুমে গিয়ে ব্যালকনির লাইটটা জ্বালিয়ে দিয়ে আসলো। হলদে বাতির আলোয় খানিক অস্পষ্ট মুখখানা দেখতে পেলো আদ্রিশ। এতেই যেনো সে রাজ্যের সুখ খুঁজে পেলো। এই মেয়েটাকে সরাসরি দেখার জন্যই রাত বারোটায় এই রাস্তায় চলে এলো সে। প্রিয়জনকে চোখের দেখায় যে বড্ড শান্তি রয়েছে তা একমাত্র তীব্র অস্থিরতায় থাকা তৃষ্ণার্ত প্রেমিকই উপলব্ধি করতে পারবে।
মিম জিজ্ঞেস করলো,
” এতো কষ্ট করে এই রাস্তায় আসলেন কেনো? ফোনেও তো কথা বলা যেতো। ”
আদ্রিশ তখনও মিমকে দেখতে ব্যস্ত। তার তৃষ্ণা যেনো মিটছে না। সে দেয়ালে হেলান দিয়ে নীরবে মিমকে দেখছে। যদিও অস্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, তবুও এতেই যেনো শান্তি রয়েছে। মিম তার নীরবতা উপলব্ধি করে জিজ্ঞেস করলো,
” কি ব্যাপার? চুপ করে আছেন কেনো? কিছু যে জিজ্ঞেস করলাম?”
আদ্রিশ তৎক্ষনাৎ ঠোঁটের আগায় আঙুল রেখে মিমকে থামালো। বললো,
” শশশ, কথা বলো না তো। একটু দেখতে দাও ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা ঐ মেয়েটিকে। ”
মিম হাসলো। বললো,
” নিচ থেকে এই মেয়েটিকে কি আদৌ দেখা যাচ্ছে?”
” হ্যাঁ, দেখা যাচ্ছে। যেটুকু দেখা যাচ্ছে তাতেই আমার মন জুড়াচ্ছে। ”
মিম মৃদু হাসলো। আদ্রিশের কথাগুলো তার ভীষণ ভালো লাগে। বিয়ের পর আদ্রিশের এই কথাগুলোই তাকে নতুন অনুভূতিতে ধাবিত করেছে। তার মনে আদ্রিশের জন্য জায়গা করে নিতে সাহায্য করেছে। সাথে আদ্রিশের ছোটখাটো পাগলামিগুলো তো আছেই।
বেশ খানিক সময় দুজনার মাঝে নীরবতা বিরাজ করলো। দুজন দুজনাকে মন ভরে দেখছে। মিম দেখছে অদূরে ল্যাম্পপোস্টের ছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটিকে। আদ্রিশ দেখছে ব্যালকনির হলদে আলোয় দাঁড়িয়ে থাকা তার মিশমিশকে। মাঝে মাঝে মেঘের আড়াল হতে চাঁদ এসে উঁকি দিচ্ছে হোস্টেলের ছাদের মাথায়। আদ্রিশ একবার দেখছে চাঁদকে, একবার দেখছে মিমকে। কি দারুণ এক অনুভূতি এ! হৃদয় শীতল করা দুটো প্রিয় জিনিসকে একসাথে দেখতে পারছে সে।
খানিক সময় পর আদ্রিশ তৃপ্ত কণ্ঠে বললো,
” কতদিন পর সরাসরি তোমার মুখটা দেখছি মিশমিশ! রোজ দেখা হওয়ার পরও তোমায় পুরোপুরি দেখতে পারি না। ”
এই বলে সে কয়েক সেকেন্ডের বিরতি নিলো। পুনরায় বললো,
” মাঝে মাঝে মন চায় তোমায় একটা রুমে বসিয়ে রেখে সারাদিন দেখি। কি অদ্ভুত ইচ্ছে বলো তো!”
মিম খিলখিল করে হেসে উঠলো। বললো,
” রোজ রোজ আমায় দেখলে আজকে আমায় দেখার এই তীব্র ইচ্ছাটা হতো না। ”
” হতো। আমার মনের অবস্থা তুমি বুঝবে না। প্রিয় মানুষটিকে রোজ দেখলেও দেখার সাধ মিটে না। সেখানে আমি এক তৃষ্ণার্ত পথিক। আমার এ তৃষ্ণা মেটার নয় মিশমিশ।
একটা সত্যি কথা বলো তো, আমায় দেখার ইচ্ছা কি করে না তোমার?”
মিম নীরব রইলো। এ প্রশ্নের মিথ্যে জবাব দেওয়ার ইচ্ছে তার নেই। কিন্তু সত্যটা বলার সাহসও নেই তার। সে আদ্রিশকে জবাব দিতে ব্যর্থ হলো। এদিকে তার নীরবতাকে সম্মতির লক্ষণ হিসেবে ধরে নিয়ে আদ্রিশ বললো,
” জবাবটা পেয়ে গেলাম তাহলে।”
মিম ঈষৎ বিস্মিত হয়ে বললো,
” কিভাবে পেলেন! আমি তো কিছু বলিনি!”
আদ্রিশ হাসলো। বললো,
” সেই প্রবাদটা কি জানো না, ‘নীরবতাই সম্মতির লক্ষণ?'”
” হুম জানি।
” তাহলে?
আচ্ছা, একটা প্রশ্নের জবাব দাও তো, প্রেমে পড়লে শক্তপোক্ত পরিপক্ক মেয়েও কি একদম অবুঝ তরলমতি হয়ে যায়?”
মিম ভ্রুজোড়া কুঞ্চিত করে জিজ্ঞেস করলো,
” আপনি কি আমায় অবুঝ তরলমতি বললেন?”
আদ্রিশ ঠোঁট টিপে হেসে বললো,
” না না তা বলিনি। তবে আমি আমার প্রশ্নের জবাব পেয়ে গিয়েছি।
” আচ্ছা, আপনি এদিকে চিনলেন কি করে?”
” না চিনার কি আছে এদিকে? হোস্টেলের পিছন সাইডের রাস্তা দিয়ে এখানে আসতে দশ মিনিটেরও কম সময় লাগে। ”
” ওহ। আচ্ছা, অনেকক্ষণ কথা হলো। আপনি এখন যান। বেশ দেরি হয়েছে। আপনারও ডিউটি আছে, আমারও ক্লাস আছে। গিয়ে খাওয়াদাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ুন।”
” উঁহু, এখনই না। আরেকটু থাকতে দাও।”
মিম এবার শক্ত কণ্ঠে বললো,
” অনেকক্ষণ এখানে দাঁড়িয়ে আছেন। যান বলছি।”
” আহ, এমন মিষ্টি শাসন শুনতেও ভালো লাগে।”
” এটা মোটেও মিষ্টি শাসন ছিলো না। এবার আর কথা না বাড়িয়ে মেসে যান। ফোন রাখছি আমি।”
বলেই মিম কল কেটে দিলো। কিন্তু আদ্রিশ তবুও গেলো না। বরং আরো দু মিনিট অব্দি দাঁড়িয়ে থেকে তারপর চলে গেলো। সে চলে যেতেই মিম রুমে চলে এলো। তার মন চাইলো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আরো কিছুক্ষণ আদ্রিশের সাথে আলাপ করতে। কিন্তু বেশ দেরি হয়ে যাওয়ায় সে ইচ্ছেকে মাটি চাপা দিলো সে।
————-
আজ শুক্রবার। আদ্রিশ ও মিমের বিয়ের দু সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। আদ্রিশের এক বন্ধু গতকাল হঠাৎ তাদের গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার দাওয়াত দিলো তাদের দুজনকে। শুক্রবার হওয়ায় আদ্রিশ রাজিও হলো। মূলত সে রাজি হয়েছিলো মিমের সাথে একটা দিন ভালোমতো কাটানোর জন্য। বিয়ের পর হতে সে মিমের সাথে ঠিকভাবে সময়ও কাটাতে পারেনি। উপরন্তু সামনে মিমের পরীক্ষা আসছে। এর মধ্যে তার সাথে বেশি ঘুরাঘুরি, বেশি কথা বলা বন্ধ করতে হবে। তাই তো এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আদ্রিশ কিছু সময় কাটিয়ে নিতে চাইছে।
দুজনের বাসা হতে অনুমতি পেয়ে তবেই আজ সকাল আটটার দিকে রওনা হলো তারা। যাত্রাপথে আদ্রিশ ও মিমের সঙ্গ দিলো আদ্রিশের বন্ধু নোমান ও তার স্ত্রী তিথি। তাদের চারজনের গন্তব্য ধর্মপুর। ঘণ্টাখানেকের মাঝে তারা ধর্মপুর এসে পৌঁছালো। গ্রামের মাঝে সবুজে সবুজারন্য পরিবেশ দেখে মিমের মনটা ভীষণ ভালো হয়ে উঠলো।
বাস হতে নেমে ভ্যানে উঠে আরো দশ মিনিট পর তারা সকলে নোমানের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালো। সেখানে পৌঁছেই নোমানের মা আদ্রিশ ও মিমের অতিথিপরায়ণে ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। তাদের হাতমুখ ধুতে বলে নিজে সকালের খাবারদাবারের ব্যবস্থা করলেন। সাথে নোমানের স্ত্রী তিথিও সাহায্য করলো তাকে। সকালের খাওয়াদাওয়া শেষে নোমানের রুমে কিছু সময় বিশ্রাম নিলো আদ্রিশ ও মিম। এরপর নোমান আদ্রিশকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো গ্রামের বাজারের উদ্দেশ্যে। দুপুরের খাবারটা তারা টাটকা টাটকা সবজি ও মাছ দিয়ে করবে।
আদ্রিশ ও নোমান বেরিয়ে গেলে তিথি মিমকে নিয়ে তাদের বাড়ির আশপাশ ঘুরে দেখালো। মাঝে মিম ও তিথি মিলে নোমানের মা’কে সেদ্ধ হলুদ রোদে মেলে দিতে সাহায্য করলো।
ঘণ্টাখানেকের মাঝে আদ্রিশ ও নোমান বাজার হতে ফিরে এলো। বাজার হিসেবে তারা শুধু সবজি আনলো। বাজারের মাছ পছন্দ হয়নি বলে নোমান আদ্রিশকে তাদের পুকুরের মাছ ধরার প্রস্তাব দিলো। গ্রামে এসে এমন সুবর্ণ সুযোগ হাত ছাড়া করতে চাইলো না আদ্রিশ। ফলে সাথে সাথেই রাজি হলো সে।
বাড়িতে এসে একটা গেঞ্জি ও ট্রাউজার পরে বরশি নিয়ে বাড়ির পিছন দিকে গেলো আদ্রিশ ও নোমান। বরশি দিয়ে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক লাগিয়ে মাছ ধরলো তারা। সবদিয়ে বড় মাঝারি মিলিয়ে প্রায় সাত আটটা সিলভার ও মিনার কার্প মাছ ধরলো দুজনে। অতঃপর এই মাছ বাড়িতে আনা হলো। নোমানের মা সিদ্ধান্ত নিলো এই মাছ এক জায়গায় কড়া করে ভাঁজবেন। আরেক জায়গায় ঝিঙা দিয়ে ঝোল করা হবে।
তিথি ও মিম রুমে বসে গল্প করছিলো। হঠাৎ তিথির জোরাজুরি করে মিমকে সুতির নতুন একটা শাড়ি পরালো। নোমান বলেছিলো মিমকে যেনো শাড়ি পরিয়ে পুকুরের ধারে নিয়ে যাওয়া হয়। মিমকে এ শাড়ি পরানোর উদ্দেশ্য হলো পুকুর পাড়ে সে ও আদ্রিশ মিলে যেনো একা কিছু সময় অতিবাহিত করতে পারে। মিম অবশ্য এ উদ্দেশ্য হতে অবগত ছিলো না।
তিথি মিমকে শাড়ি পরিয়ে দিয়ে পুকুরপাড়ে দাঁড় করিয়ে বললো,
” তুমি এখানে একটু দাঁড়াও। আমি এক্ষুনি আসছি। ”
বলেই মিমকে রেখে তিথি বাড়ির ভেতরে চলে গেলো। তিথি চলে যেতেই মিম পুকুরের চারপাশ একবার ভালো করে দেখে নিলো৷ চারপাশে বেশ ঝোপঝাড়ের মতো জঙ্গল। আশেপাশে মানুষ একেবারেই নেই। একটা বাঁশ ঝাড়ের ওপাড় দিয়ে ক্ষেতের মধ্যে আসা যাওয়া করছে কিছু কৃষক। যদিও তা পুকুরপাড় হতে সহজে দেখা যাচ্ছে না। এদিকে মানুষজনের দেখা না পেয়ে মিম মাথা হতে ঘোমটা ফেলে দিলো। সাথে সাথে এক ঝোঁক শীতল হাওয়া তার শরীরে বারি খেলো। পরম তৃপ্তিতে দৃষ্টিজোড় বুজে ফেললো সে।
পুকুর ঘাটের সাথে লাগোয়া নারিকেল গাছের সাথে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে মিম। তার পরনে সুতির একটা শাড়ি। আশেপাশে নিরিবিলি পরিবেশ হওয়ায় ও মানুষজন না থাকায় সে চুলের খোপা খুলে দিয়েছে। কোমড় ছাপিয়ে তার খোপার কেশজুগল হাওয়ায় হাওয়ায় উড়ে বেরাচ্ছে। তীব্র কাঠফাটা রোদেও চারপাশে গা শীতল করা হাওয়া বইছে৷ ফলে গরমে ঘামছে না সে। এমন শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে হঠাৎ আদ্রিশ পিছন হতে এসে জিজ্ঞেস করলো,
” সাঁতার পারো?”
মিম চমকে উঠলো তৎক্ষনাৎ। তবে দ্রুতই নিজেকে ধাতস্থ করে সম্মুখের দিকে চেয়েই বললো,
” পারি না৷ আপনি পারেন?”
আদ্রিশ মিমের প্রশ্নের জবাব দিলো না। বরং মিমের দু বাহু চেপে ধরে বললো,
” যদি এখন ধাক্কা দেই, পারবে ঘাঁটে ফিরে আসতে?”
বলেই সে মিমের দু বাহু ধরে ধাক্কা দিলো।
#চলবে
®সারা মেহেক