একটা সাধারণ গল্প,পর্ব:৯

0
983

#একটা_সাধারণ_গল্প
#পর্ব_নয়
চোখ খুলে প্রথমেই বালিশের তলা থেকে ফোনটা হাতে নিল পর্ণা। নেট অন করল ও। হোয়াটস অ‍্যাপ খুলেই কৌতূহলবশত শুভদের ডিলিট হয়ে যাওয়া মেসেজ দেখার জন‍্য সেটিংস-এ গেল । সাতসকালে এমন মেসেজ দেখে অবাক হলেও বিশেষ চমকাল না।
-শুভদ বাবু শেষমেশ আজকের দিনে প্রোপজটা সেরেই ফেললেন।আবার চালাকি করে ডিলিট করেলেন। কিন্তু আমি যে দেখে ফেলেছি। এখন আমি আর কোন মেসেজ করবোনা ঠিক ঠিক আপনার মর্নিং মেসেজ কখন আসে।
অজান্তে নিজের ঠোঁট কামড়াল পর্ণা।
প্রাত কর্মের উদ্দেশ্যে বিছানা ছাড়ল ও।ব‍্যস্ত হয়ে পড়ল প্রাতরাশ সারতে। আটটা থেকে আবার টিউশন আছে যে..
এক ঘন্টায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রেডি হয়ে যখন সংস্কৃত স‍্যারের কাছে পৌঁছাল তখন দেখল মাত্র দুজন এসেছে সেখানে।
ফোন বের দেখল কোনো মেসেজ নেই সেখানে। স‍্যার আসতেই ফোনটা সাইলেন্ট করে ব‍্যাগে রাখল পর্ণা। কিছুক্ষণ পর আবার দেখল ফোনটা। নো ফোন নো মেসেজ।
পড়াতে মন বসছে না ওর।
সাড়ে নয়টায় পড়া শেষ হতেই মেসেজ করলো ও। দশমিনিট অতিবাহিত হল না মেসেজ সিন হল না, এল না রিপ্লাই।
“নিশ্চয় তোর মনে পড়েছে আমার ফোনে ডিলিট মেসেজ দেখা যায়। সেই কারণে লজ্জায় তুই মেসেজ করিসনি। আরে আমি ঐ কথা তুলবো না” মনের মধ্যে এই ধারণা বহন করে বাড়ি পৌঁছে শুভদের নম্বর ডায়াল করল। যান্ত্রিক স্বর জানাচ্ছে ফোন বন্ধ আছে। ঝটকা খেল পর্ণা। এখন ফোন অফ কেন!আবার ডায়াল করলে শুভদের নম্বর। পুনরায় তাই জানল যান্ত্রিক স্বর।
উথালপাতাল শুরু হল পর্ণার হৃদয়ে। কি এমন হল যে শুভদ ফোন বন্ধ করে রেখেছো? ওর জন‍্য?? লজ্জাতে না অপরাধবোধে। ও তো স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছে মেসেজটাকে। এতে ওদের বন্ধুত্বের কোন আঁচ পড়ার কথা তো নয়। কেন এমন করছে শুভদ। দুশ্চিন্তা এতটাই বেড়ে গেল সঙ্গে সঙ্গে ডায়াল করতে হলো মহিমের নাম্বার।
-সূর্য কি পশ্চিমে উঠেছে? না উঠেই নি?
ফোনটা তুলে প্রথম কথাটা এটাই বলল মহিম।
-ফাজলামি ছাড় মহিম। আমি শুভদকে পাচ্ছিনা।
-এ যে উল্টোপুরাণ! শুভদ যে তোর মুষ্ঠিতে আবদ্ধ থাকতে চাই।
-হেঁয়ালি করিসনা,সত‍্যি শুভদকে ফোনে পাচ্ছি না।
উত্তেজনা প্রকাশ পেল ওর কন্ঠে।
-আমি তো স্কুল যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি। শুভদও যাবে বলেছিল।
-কিন্তু সকাল থেকে ফোন অফ কেন থাকবে?
-তুই শান্ত হ পর্ণা। কি হয়েছে আমাকে খুলে বল।
-কি আবার হবে।সকাল থেকে ওর ফোন অফ। অথচ সকালে প্রথম ওর মর্নিং মেসেজ করে। আজ কি হল বলত। এই মহিম তুই একবার দেখ না..
-তুই লাইনে থাক পর্ণা। আমি দেখছি..
হোল্ড হয়ে গেল পর্ণা।
-না অফ বলছে। তুই চিন্তা করিস না। আমি ওর বাড়ি যাচ্ছি।
-কি খবর পেলি জানাস আমাকে।
লাইন সংযোগচ‍্যুত হয় ওদের।

সোফাতে শান্ত হয়ে বসে পর্ণা। শূন‍্য দৃষ্টিতে বাইরের দিকে তাকায় ও।
-না রে সকালে শুভ কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে গেছে। কোথায় গেছে তা এখনো অজানা.
-কী!
-হ‍্যাঁ কাকিমা তাই বললো।
-কোনো খবর পেলে প্লিজ জানাস।

“তুই নিশ্চয় তোর দাদার সাথে ঝামেলা করে ঘর ছেড়েছিস তাই কোথায় যাচ্ছিস বাড়িতে বলে অব্দি যাসনি। আমাকে বলতে তো পারতিস।কেন শুভদ কেন! আমাকে এত দুশ্চিন্তায় রাখার কি প্রয়োজন” বেলকনির রেলিং ধরে উদাস দৃষ্টিতে তাকাল পর্ণা।

কোন কাজেই মন বসছে না। খেতে বসে ভাত নাড়াচাড়া করে উঠে গেল।
মনে মনে একটা কথায় আওড়াচ্ছে ভগবান শুভদের একটা খবর এনে দাও।

যাকে ঘিরে ঐ সপ্তদশীর হৃদয় এত তোলপাড় সে মনের সুখে তখন মাঠে ছোটদের সাথে ঘুড়ি ওড়াচ্ছে। অদূরে পড়ে আছে ওর নতুন সেলফোন। দেহই আছে তবে কোনো প্রাণ নেই।
-শুভ খেতে আয়..
হাঁক দিলেন এক মাঝবয়সী মহিলা।
-হ‍্যাঁ মামি যাই!

মামার বাড়িতে নিজেকে আত্মগোপন করেছে শুভদ ঘোষ। অবশ‍্য বাড়ির লোক সবাই জানে। আত্মগোপন করেছে শুধুমাত্র ঐ কন‍্যার থেকে..

শুধুমাত্র সেই কন‍্যা নয়,শুভদের প্রাণের বন্ধু আনচান করছে শুভদের জন‍্য।আবার ওদের বাড়ি গেল ও।
এবার চোখ জল বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে পর্ণার। ঈশ্বরের কাছ শুভদের মঙ্গল কামনায় মানত করছে ও।

***
-কোন খবর পেলি!?
-হুম..
-কোথায় ও..
-মামারবাড়ি গেছে..
-যাক নিশ্চিন্ত হলাম। ঘরে ঝামেলা করে গেছে?
-না হঠাৎ,কাউকে কিছু না বলে। শুভর মা-বাবাও ওর কার্যকালাপে অবাক।
মহিমের কথা শুনে পর্ণাও কি কম অবাক হল। শুভর আত্মগোপনের কারণ হাতড়াতে লাগল।
-ঠিক আছে মহিম আর কোনো খবর পেলে তুই জানাস…

***
সম্পূর্ণ দুদিন হল পর্ণার সাথে শুভদের কোনো যোগাযোগ নেই। গতকাল রথীন স‍্যারে ক্লাসে অতজনের মধ‍্যেও একাকিত্ব অনুভব করেছে পর্ণা। শুভদের চিন্তা ওকে উন্মাদ করে ছাড়ছে।
-তুই এত অস্থির হচ্ছিস কেন। তুইও কি শুভকে ভালোবাসিস..
থমকাল পর্ণা।
-এরমধ্যে এই কথাটা আসছে কেন মহিম?
-না তুই যে ভাবে ওর জন‍্য দুশ্চিন্তা করছিস তাতে তাই মনে হচ্ছে।
-শুভদ আমার খুব ভালো বন্ধু। বন্ধুত্ব হল আমাদের সম্পর্কের একমাত্র নাম ।একটা বন্ধুর খবর না পেলে যতটুকু চিন্তা হয় আমারো ততটাই হচ্ছে ব্যাস এটুকুই।
কথাটা জোর দিয়ে বলতে গেলেও কন্ঠস্বর মিইয়ে গেল পর্ণা।
সত‍্যিই কি একটা বন্ধুর জন‍্য এতটা উতলা হয় কেউ। হ‍্যাঁ প্রিয় বন্ধুর জন‍্য হতে পারে। এক্ষেত্রে তো ও জানে শুভদ মামারবাড়িতে আছে। ভালো আছে ও।তবু মন জুড়ে কেন উথাল পাথাল চলছে। কেন সুস্থির হয়ে বসে থাকতে পারছে না। কেন এতটা উতলা হয়ে আছে ওর কন্ঠস্বর শোনার জন‍্য।একবার, শুধু একবার শুভদের সাথে কথা বলতে চাইছে ও।এই অন‍ুভূতি গুলো কি শুধুমাত্র বন্ধুত্ব না তার আড়ালে অন‍্য কিছু। মনের মধ্যে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হল পর্ণা।

-কি ভাবছিস তুই?কিছু না বল..
-আমার সঙ্গে শুভদের কথা হলো কিছুক্ষণ আগে।
-কী!
কথাটা তুই এখন বলছিস?
-আরে শোন..ওর মামার নম্বর নিয়ে আমিই ফোন করলাম।
-তারপর ও কি বললো মহিম।
-বলছি তার আগে বল তোর সাথে কিছু ঝামেলা হয়েছে। মানে কথাতে সেটাই ইঙ্গিত পেলাম।
-তোর কথাটা ঠিক বুঝলাম না মহিম।
-তোকে কি এমন কিছু বলেছে যেটাতে ও নিজেকে দোষী মনে করছে। লজ্জায় তোর কাছে আসতে পারছে না। তাই জিজ্ঞাসা করছি কোন খারাপ কথা বলেছে?দেখ সেইরকম হলে মিটিয়ে নে।
-মহিম তোকে আমি পরে ফোন করছি।
বলেই ফোন ছেড়ে দেয় পর্ণা।
“ও তাহলে এটাই শুভদের অন্তর্ধান এর কারণ!আমি কিছু মনে করব কিরে, আমি তো নিজেই সেই অনুভূতির শিকার হচ্ছি। বারবার মনকে শাসন করেও তোর দিকে ঝোঁকা থেকে বিরত রাখতে পারছি না। তাই ফিরে আয় শুভদ..”

ফোন রেখে একগাল হাসলো মহিম। কাজটা ভালো ভাবেই এগোচ্ছে। আজ পর্ণাকেও জানানো হল। শুভর গায়েব হয়ে যাওয়াতে প্রথমে ওঔ চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। পরে অবশ‍্য শুভ ওর মামার নম্বর থেকে সমস্তটা জানিয়েছে। নিশ্চিন্ত হয়েছে মহিম। এবার ওদের সম্পর্কটাতে সিলমোহর পড়লে ও বাঁচে।

ফোনটাকে এরোপ্লেন মোডে রেখে গ্যালারিতে ফটো ও আগের মেসেজ দেখে রাত কাটাচ্ছে শুভদ। চোখ থেকে দু ফোঁটা নোনা জল মোবাইলে গড়িয়ে পড়লো। তোর সাথে দুদিন কথা হয়নি পর্ণা। তুই আমার স্বপ্ন,স্বপ্ন ছাড়া যে মানুষ বাঁচে না রে। তুই পাশে থাকলে আমি যুদ্ধ জয়ের শক্তি পাব। শুধুমাত্র তোর পাশে আমাকে থাকতে যে..কথা দিচ্ছি কখনো তোকে কাঁদাবো না.. অশ্রুতে সাঁতার কাটতে কাটতে ঘুমিয়ে গেল শুভদ।

-পর্ণা কাল রথীন স‍্যারের কাছে পড়তে যাবি?
-না যাব না..
-আজ বিকেলে শুভদ বাড়ি আসছে, কাল পড়তেও যাবে ।তবুও তুই যাবিনা?
-না, যাব না। ও এলে যেতে হবে এমন মাথার দিব্যি কে দিয়েছে? ও কে আমার?আর একটা মাস আছে এরপরে আমি রথিন স্যারের কাছে পড়াই ছেড়ে দেবো।
চিৎকার করল পর্ণা।

তিনদিন পর বাড়ি এসে ফোনের নেটওয়ার্ক সেট করল শুভদ।
হোয়াটস অ্যাপে একের পর এক মেসেজ ঢুকেই যাচ্ছে,বেশিরভাগই পর্ণার।
একটা কাগজে লাল স্কেচপেন দিয়ে সরি লিখে পর্ণার হোয়াটস অ‍্যাপে পাঠালো শুভদ।
সিন করলেও কোনো রিপ্লাই নেই। দৃশ‍্যটা দেখে আশাহত হল শুভদ।
ঐ প্রান্ত রাগে ফুঁসছে। দুই চোখ থেকে নির্গত হচ্ছে বারিধারা।
-যাব না কিছুতেই কাল পড়তে যাব না। কোনদিনও তোর মুখ দেখবো না..

পরের দিন ছয়টা দশে রথীন স্যারের বাড়ি চলে গেল শুভদরা।কথামতো মাম্পিও তাড়াতাড়ি ডাকতে যাবে পর্ণাকে।
পাঁচমিনিট ধরে বাইরে অপেক্ষা করছে শুভদ। তখন রথীন স‍্যার ঘর খোলেনি।
-মহিম ও আসবে তো!
-বা* আমি কি করে জানব! এত কেদ্দানি মারতে কে বলেছিল?
বন্ধ দরজার চৌকাঠে বসে পড়ল শুভদ।
দূর থেকে চেনা লেডি বার্ডটাকে আসতে দেখে ওষ্ঠ প্রসারিত হল ওর।দ্রুততার সঙ্গে ব্যাগ থেকে কাগজটা বের করল ও। পর্ণা গম্ভীর মুখে সাইকেলের ব্রেক কষতেই ওর অভিমুখে মেলে ধরল কাগজটাকে।
-শালা হারামি ছেলে সরি মাড়াচ্ছিস!! বলেই ব‍্যাগ দিয়ে দুম দুম করে মারতে শুরু করল পর্ণা। মারতে মারতে কেঁদেই ফেলল ও।
-তোর খবর না পেয়ে আমার কি অবস্থা হয়েছিল। আন্দাজ আছে তোর কোনো?
পর্ণার অবস্থা দেখে শুভদের চোখের কোণা চকচক করে উঠলো।
-তুই যদি আমাকে ভুল বুঝিস।তাই তো..
-আর কখনো যাস না..
পর্ণার হাত ততক্ষণে শুভদের হাতের মধ‍্যে আবদ্ধ হয়েছে।
মাম্পি-মহিম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওদেরকে দেখছে। এবার একে অন‍্যের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলল ওরা।
-এই রাস্তা দিয়ে লোক যাচ্ছে,তোরা নিজেকে সামলা..স‍্যারও এল বলে..
তখনো চোখ থেকে জল গড়াচ্ছে শুভদের। সেই জল যে আনন্দাশ্রু। শেষ অব্দি পর্ণা যে ওর ভালোবাসার কাছে বশ‍্যতা স্বীকার করবে ভাবেনি ও।
সেদিন থেকে বসার জায়গা পরিবর্তন হল। মহিম,শুভদ তারপরেই বসল পর্ণা। পরিবর্তনটা সকলেরই চোখে পড়ল।
পরীক্ষা দিয়ে ক্লাস টুয়েলভে এল ওরা।
শুধুমাত্র পর্ণা জন্যই সব টিউশন চেঞ্জ করল শুভদ।
দূর থেকে হলেও রোজ দেখা করা চাই ওদের।
পর্ণা শুভদের একমাত্র অধিকার,একমাত্র সম্পত্তি। ভালোবাসা তো বটেই..

-পর্ণা তুই জানিস না তুই আমার কাছে কি!প্রথম যেদিন তোকে দেখেছি সেদিন তোর রূপে মোহিত হয়েছিলাম।কিন্তু পরে পরে বুঝলাম হৃদয় জুড়ে শুধু তোর অস্তিত্ব। সেদিন পার্কেও তোর চোখ দেখেই বুঝেছিলাম তুই আমাকে ভালবাসিস। শুধুমাত্র স্বীকার করতে চাস না। তাই এই পরিকল্পনা করতেই হল।
-ভালোবাসার এমন পরীক্ষা নিস না রে। আরে আমিতো প্রায় মরতেই বসেছিলাম..
-আমি থাকতে তুই মরবি!ইম্পসিবেল..হয় তোর সাথে একসঙ্গে মরব না হলে তোকে যমরাজের কাছ থেকে কেড়ে আনবো।
ফোনের ওপার থেকে শব্দ করে হাসল পর্ণশ্রী সেন।
-শুভদ!
-কি বলো সোনা!
-তুই আমাকে কখনো ছেড়ে যাবিনা তো?
-জীবন থাকতে তো নয়ই..আমি জানি তুই রাজকন‍্যা। তোর বাবার অবস্থা অনেকটাই হাইফাই। তুই চিন্তা করিস না পর্ণা আমি নিজেকে তোর যোগ্য তৈরি করব। আমার মনে হৃদয় সত্যের আমার বাড়ি তো তোকে রানী করে রাখবো।
-এতটা চাই না,তোর মনে জায়গা দিলেও হল। দেখিস ওখানে যেন কেউ ভাগ না বসায়..
-কথা দিলাম পর্ণা।তুই আমার প্রথম
ও শেষ ভালোবাসা।
-নে এবার তো ফোন রাখ। কাল সকালে আবার টিউশন যেতে হবে রে..
-রাখতে ইচ্ছা করছে না সোনা। মনে হচ্ছে সারারাত তোর সাথেই কাটায়..
-খুব শখ না! এখন রাখ ফোন..
-ও তাই তো!?ঠিক আছে রেখে দিচ্ছি।
ছদ্ম রাগ দেখাল শুভদ।
-ওলে বাবা আমার বাবু আবার রাগ করেছে। একটা কিসিতে রাগ কমবে তো?
-দুটো চাই।
আগেরবারের মতন গম্ভীর স্বরে বলল শুভদ।
-ঠিকআছে,আমার বাবুর রাগ ভাঙ্গাতে তাই করতে হবে।
বলে ফোনের স্ক্রিনে দুবার চুম্বন করলো পর্ণা।
ঐ শব্দ পৌঁছাল শুভদের কানেও।প্রত‍্যুত্তরে ও তিনবার চুম্বন ফিরিয়ে দিল।

ওদের সোনালী দিন কাটছিল এইভাবেই।

নতুন টিউশনে পর্ণা শুভদকে সংস্কৃত স‍্যারের কাছে নিয়ে গেল। ওখানেও পাশাপাশি বসল ওরা।

-কিরে নতুন বন্ধু পেয়ে পুরনোদের কে ভুলে গেলি?
পর্ণার ব‍্যাচমেট ঋষি টোন কাটল।
-শুভদ নতুন না পুরনো,আমার জিওগ্রাফি ব‍্যাচের ফ্রেন্ড তাই..
-আমার থেকে পুরনো না।
দাঁত বের করে হাসল ঋষি।
চুপ করে থেকে ঋষির অভিব‍্যক্তি দেখছিল শুভদ।

-আগের দিন স‍্যার কি লিখিয়েছিল সেই নোটটা কেউ দিস তো। শরীরটা ঠিক ছিলনা তাই আসা হয়নি।
সবার উদ্দেশ্যে কথাটা বললেও ঋষি আগেভাগেই বলে উঠলো,
-এই নে পর্ণা। আমি ফেয়ার খাতায় তুলে নিয়েছি।
হাত বাড়িয়ে খাতাটা নিতে উদ্যত হলো পর্ণা। সেই সুযোগে পর্ণার হাতের ছোঁয়া পেয়ে হাতটা আলত ডোলে দিল ঋষি।
-ঋষি তুই না খুব ছোটলোক।
পর্ণার কথায় খ্যাক খ্যাক করে হেসে উঠলো ঋষি।
বিস্ফোরিত নয়নে দৃশ্যটা দেখল শুভদ।
চলবে:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here