ঘৃণার মেরিন সিজন ৪( পর্ব ১৪+১৫)

0
580

#ঘৃণার_মেরিন 4
part : 14
writer : Mohona

.

নীড় ছুটে গিয়ে ডক্টরকে ডেকে আনলো। সাথে তপুও এলো। ডক্টর চেক আপ করতে গেলে তপু বাধা দিলো।
তপু : লেট মি চেক প্লিজ…
তপু চেক আপ করতে লাগলো। জন , দাদুভাই , নিহাল , নীলিমা এসে হাজির হলো। নীড় এক সাইডে দারিয়ে রইলো । ধীরে ধীরে মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। চোখ মেলে তাকালো। আর তাকিয়েই দাদুভাইকে দেখলো।
মেরিন : দদদাদুভাই…
দাদুভাই ছুটে মেরিনের পাশে বসলো। কপালে চুমু দিলো। এরপর হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে কাদতে লাগলো ।
মেরিন : হেই দদদদাদুভাই… ডোন্ট ক্রাই…
তপু : দাদুভাই… প্লিজ …
দাদুভাই নিজের কান্না থামালো।
দাদুভাই : তুমি ছারা কি আমার কেউ আছে?হামমম।
মেরিন : সরি… দদদাদুভাই… নননীড় ককোথায়? উউউনি সসসুস্থ আছে তো?
কথাটা নীড় স্পষ্ট শুনলো। এমন অবস্থাতেও মেয়েটা ওর কথা ভাবছে।
মেরিন : বববলোনা দাদুভাই… উউউনি ঠিক আছে তো?
তপু : ওর কি হবে? ও একদম ঠিক আছে।
কথাটা বেশ কঠোরভাবেই তপু বলল।
কথাটা শুনে এই অবস্থাতেও মেরিন রাগ লাগলো। ও ধীরে ধীরে ঘাড়টা তপুর দিকে ঘুরালো। চোখ খুলে রাখতে কষ্ট হচ্ছে। তবুও তপুকে রাগী লুক দিলো।
নীড় তপুর পিছেই দারিয়ে ছিলো। তাই বিষয়টা লক্ষ্য করলো।
মেরিন চোখ ফিরানোর সময় মেরিনের দৃষ্টি নীড়ের দিকে পরলো । মেরিনের ঠোটের কোনে হাসি ফুটলো।

মেরিন : নীহর…
মেরিন আবার জ্ঞান হারালো।

দাদুভাই : দিদিভাই… তপু… কি হলো ওর…
তপু : কিছুনা দাদুভাই। মেডিসিনের ইফেক্টের জন্য ঘুমিয়ে পরেছে। ২-৩ঘন্টা পর কিছুটা নরমাল হবে। জেগে যাবে। এখন সবাই বের হলে ভালো হবে।
সবাই বের হলো। কেবল তপু রয়ে গেলো। নীড় বেরিয়ে আবার ভেতরে ঢুকলো।
নীড় : সবাইকে বের হতে বলে তুমি ভেতরে রয়ে গেলে। নট ডান ।
তপু : সবাই আর আমি না।
নীড় : এই কথাটা আমি বলতে পারি… যে সবাই আর আমি না।
তপু : দেখো তুমি আমাকে এগুলো বলার কেউ নও। গট ইট?
নীড় : আমি কেউ নাকি কেউ নই… সেটার জবাব কিছু না বলেও মেরিন দিয়েছে। ডক্টরদের শর্ট টাইম মেমোরি হলে চলেনা…
তপু : যত্তোসব।
বলেই তপু বেরিয়ে গেলো।
নীড় : হুহ।
বলেই নীড় চেয়ার টেনে মেরিনের পাশে বসলো।
নীড় : নাউ কালকে থেকে আবার তোমার সাইকোগিরি শুরু হবে।

বলেই নীড় অজু করে এসে নামায পরে নিলো।

.

৩ঘন্টাপর…
মেরিনের ঘুম ভাংলো।
নীড় : অবশেষে ঘুম ভাংলো?
মেরিন পাশ ফিরে দেখে নীড় বসে আছে। হাতে ম্যাগাজিন । দৃষ্টিও ম্যাগাজিনে।

মেরিন : আপনি…
নীড় : হামমম।
মেরিন : আপনি ঠিক আছেন তো?
নীড় : আমি? আমি ঠিক কি করে থাকতে পারি? আমাকে এসে ট্রাক ধাক্কা মেরেছে … আমার সার্জারি হয়েছে … ৫৫ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরেছে । আমি কিভাবে ঠিক থাকতে পারি? 😒।
নীড়ের কথায় মেরিন মুচকি হাসি দিলো ।
নীড় : আচ্ছা আমাকে এতো ভালোবেসে কি কোনো লাভ আছে তোমার? ঘৃণা ছারা কি কখনো কিছু পাবে? তবে কিসের আশায় এতো ভালোবাসো?
মেরিন : সত্যি বলবো না মিথ্যা?
নীড় : সত্যিই বলো।
মেরিন : ছোট্ট ১টা নীড় চাই। যাকে নিয়ে বাকীটা জীবন পার করতে পারবো । ভুলে থাকতে পারবো আপনাকে…
নীড় : এতো আশা কোরোনা। পূরন হবেনা।
মেরিন : না হলে নেই। আপনি তো আছেন…
নীড় : বসো আমি দাদুভাইকে ডেকে নিয়ে আসছি।
মেরিন : শুনুন … নিজের জন্য খাবারও নিয়ে আসবেন।
নীড় : খাবার?
মেরিন : হামমম খাবার।
নীড় : কেন?
মেরিন : কারন প্রায় ৬০ঘন্টা ধরে আমার খাদক জামাইটা না খেয়ে আছে।
নীড় : মোটেও না।
বলেই নীড় বেরিয়ে গেলো।

.

দাদুভাই : দিদিভাই …
মেরিন : দাদুভাই …
দাদুভাই : কেমন লাগছে এখন ?
মেরিন : ভালো। বাট পিঠ ব্যাথা করছে শুয়ে থাকতে থাকতে।
তপু : ১মাস যে তোমাকে বেড রেস্টে থাকতে হবে ।
মেরিন : ইম্পসিবল। পারবোনা আমি।
তপু ১টা ইনজেকশন দিতে দিতে
বলল : পারতে তো হবেই। সুস্থ হতে হবেনা।
মেরিন : যখন মরিনি তখন সুস্থও হয়ে যাবো।
তখন নিহাল-নীলিমা-নীড় ঢুকলো।

নীলিমা : এটা আবার কেমন কথা শুনি?

নীড় মনে মনে : ত্যারামি কথা। আবার মামনি বাবার কাছে আমাকে বকা খাওয়াবে। হুহ।

নীলিমা : আমরা যে আমাদের সন্তানদের সম্পূর্ন রেখে যেতে পারি…

কিছুক্ষন কথা বলেই মেরিন হাপিয়ে উঠলো । তাই সবাই বেরিয়ে গেলো।

মেরিন : দাদুভাই…
দাদুভাই : হ্যা দিদিভাই।
মেরিন : একটু শোনো।
দাদুভাই বসলো।
মেরিন : তুমি কিছু খেয়েছো? মেডিসিন নিয়েছো?
দাদুভাই : হামমম। তোমার পাগল চৌধুরী খাইয়েছে ।
মেরিন : কিন্তু আমার পাগল চৌধুরীর মুখ দেখে মনে হচ্ছে যে না খেয়ে আছে। কিছু খাইয়ে দিও প্লিজ।
দাদুভাই : হামমম। আসছি। তুমি আরাম করো।
দাদভাই চলে গেলো । মেরিনও ঘুমিয়ে পরলো।

.

নীড় : ওহ মাই গুডনেস… এমন করে মাথা ঘুরছে কেন? ওহ গড …
নীড় পরে যেতে নিলো । জন ধরে ফেলল। এরপর নীড়কে বসিয়ে দিলো।
নীড় : থ্যাংকস জন।
জন : নট নিডেড। এটা আমার ডিউটি।
বলেই জন নীড়ের সামনে খাবারের প্লেট তুলে ধরলো।
নীড় : এগুলো?
দাদুভাই : নিশ্চয়ই মাথায় দেয়ার জন্য নয় খাওয়ার জন্য ।
নীড় : দাদুভাই আমি ..
দাদুভাই : জন ওকে বলে দাও যে ও আমার নাতনির বয়ষটা না জানলেও আমার নাতনি ওর নারী নক্ষত্র সব জানে। তাই ওকে দেখেই বুঝে গিয়েছে যে ও কিছু খায়নি ২দিন ধরে।
বলেই দাদুভাই চলে যাচ্ছিলো।
নীড় : দারাও দাদুভাই।
দাদুভাই দারালো। নীড় খুব কষ্ট করে গিয়ে দাদুভাইয়ের সামনে দারালো ।
নীড় : সামনে জুলাইয়ের ২২ তারিখ মেরিন ২৫এ পা দিবে । মেরিন আর আমার জন্মদিন একই দিনে। মেরিনের উচ্চতা ৫ফুট ৩ইঞ্চি । ওজন ৫১কেজি । জন্মলগ্ন ভোর ৫টা ১৫। রোজ বুধবার । সিংহ রাশি। প্রিয় রং কালো। প্রিয় ব্যাক্তি তুমি । সবকাজে সবধরনের খেলাধুলায় পারদর্শী । রান্নাতেও এক্সপার্ট । ছোটবেলায় মাথায় আঘাত পেয়ে ব্রেইন এ একটু প্রবলেম হয়। তবে আঘাতের কারন জানিনা। রাগটা অনেক বেশি। যাকে ঘৃণা করে সবটা দিয়ে ঘৃণা করে। যাকে ভালোবাসে তাকে সবটা উজার করে ভালোবাসে । ঘৃণার তালিকায় হাজারজন থাকলেও ভালোবাসার তালিকায় ৬জন। তুমি , ভালো আন্টি , জন , মামনি , বাবা এন্ড অফকোর্স আমি। মেরিন কখনো হারতে শিখেনি। না কথাটা ওর ভালো লাগেনা। যেটা চায় সেটা হাসিল করেই ছারে। তুমি ওর একমাত্র দুর্বলতা । বৃষ্টি দেখলেই কেবল ভয় পায়। ফোবিয়া আছে। জনকে ভাই মনে করে। বাট প্রকাশ করেনা। সকলে প্রতি ঘৃনা , আমার-তোমার প্রতি ভালোবাসা , সকলের সাথে রাগ ছারা নিজের কোনো ফিলিংস ই কারো সামনে প্রকাশ করেনা। শেয়ারও করেনা । টাকার পিছে ছুটতে ভালোবাসে । আবার পানির মতো টাকা উরাতেও ভালোবাসে । রাগ-জেদ প্রচন্ড বেশি তাই এই বয়সেই বিপি প্রচুর হাই। তবে রক্তশূন্যতা। কারন নিজের যত্ন নেয় না। আর নিজের যত্ন না নেয়ার কারন হলো মেরিনকে সবাই ঘৃণা করে তবে মেরিনকে সবথেকে বেশি ঘৃণা করে মেরিন নিজেই …
সবশুনে দাদুভাই আর জন অবাক।।

নীড় : নারী নক্ষত্র জানি না। কারন আমি ওকে ভালোবাসিনা। তবে সব জানলেও অনেকটাই জানি মেরিন সম্পর্কে। কিন্তু তখন যখন ডক্টর জিজ্ঞেস করেছিলো তখন আমি ঘাবরে ছিলাম। নিজের মধ্যে ছিলামনা। অ্যাক্সিডেন্টের দৃশ্যটা চোখে ভাসছিলো। হয়তো তখন মেরিনের ফুল নেইমটাও বলতে পারতাম না… আর হ্যা সবথেকে বড় কথা। আমি মেরিনের অ্যাক্সিডেন্ট করাইনি। আমাকে বাচাতে গিয়ে ওর এই অবস্থা ।

সবাই অবাক। ও এতোকিছু জানে?

নীলিমা : হ্যা আমরা জানি তুইও কম সাইকো না। খেয়ে নে।
নীড় : আমার ক্ষুধা নেই।
নীলিমা : দেখ ড্রামা শুরু করিসনা।
দাদুভাই : দেখো তুমি যদি না খাও তবে দিদিভাই এই শরীর নিয়ে কিন্তু কাহিনি করবে। সো প্লিজ । ড্রামা কোরোনা।
নীড় : আমি ড্রামা করি ?
নীলিমা : নাহ। আমরা করি…

.

৫দিনপর…
আজকে মেরিনকে রিলিজ দেয়া হলো। এই ৫দিন মেরিনের সাথে নীড়়ই ছিলো হসপিটালে।

নীড় : তোমার কি কিছু লাগবে?
মেরিন : না । নীড়…
নীড় : হামমম।
মেরিন : আপনি তো ৭দিন ধরে হসপিটালেই ছিলেন। তাই তো আম্মুর কাছে যাওয়া হয়নি।
নীড় : না আসলে। তোমাকে এভাবে রেখে কিভাবে যেতাম ?
মেরিন : নীড় ১টা কথা বলি?
নীড় : হ্যা বলো।
মেরিন : নীড়… আমি আপনাকে বাচিয়েছি সেটা আপনার জন্য নয় নিজের জন্য করেছি। নিজের স্বার্থের জন্য করেছি। আপনার জন্য কিছুই করিনি । আর আপনাকে বাচানোর জন্য কৃতজ্ঞতা স্বরূপ প্লিজ আমার সাথে ভালো ব্যাবহার করবেন না। করুনা করবেননা। যেটা গত ৫দিন ধরে করেছেন…
নীড় : আরে আমি তো …
মেরিন : আমার কথা শেষ হয়নি … নীড় আপনি ৫দিন ধরে হসপিটালে থেকে অনেক টায়ার্ড । অনেক করেছেন আমার জন্য । ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবোনা। ২-৩দিন রেস্ট করুন। দেন আবার আম্মুর ট্রিটমেন্ট স্টার্ট করুন। আর এরপর থেকে আমি অসুস্থ হই যাই হই … আমার কথা ভেবে আম্মুর ট্রিটমেন্ট বন্ধ করবেন না। আমার নিজের থেকে আমার কাছে আমার আম্মু দামী। ইভেন আমি যদি মরেও যাই তবে সেটা নিয়েও মাথা না ঘামিয়ে আপনি আমার আম্মুর ট্রিটমেন্ট চালিয়ে যাবেন। যদিও আমার মৃত্যুতে আপনার মাথা ব্যাথা নেই। কিন্তু প্লিজ আমার আম্মুর ট্রিটমেন্ট অফ করবেন না। আই থিংক এতোটুকু ট্রাস্ট আমি করতে পারি আপনাকে তাইনা?
নীড় কিছু না বলে গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।

.

ভীষন স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে ।
নীড় : সবসময় নিজেই ঠিক… নিজে যা বলবে তাই ঠিক। সামনের ব্যাক্তির কথাটা শোনারও প্রয়োজনবোধ করেনা। স্টুপিড ।

তখন নীড়ের সামনে কারো গাড়ি এসে পরলো ।
নীড় : হু দ্যা হেল ইজ দিস…
নীড় মাথাটা বের করে
বলল : হেই ইউ ব্লাইন্ড … ডোন্ট ইউ স…
তখন গাড়ি থেকে নিরা নামলো ।
নীড় : ইটস ইউ…
নিরা : হ্যা আমি। তবে অবাক হলাম… নীড় তার বনপাখির গাড়িটাও চিনতে পারলোনা ।
নীড় গাড়ি থেকে নামলো।
নীড় : সরি । আসলে মাথাটা একটু গরম ।
নিরা : মাথা গরম থাকবেই । বউ অসুস্থ হলে তো জামাইর মাথা গরম হবেই। ভালোবেসে ফেলেছো নাকি?
নীড় : আরে মেয়েটা আমাকে বাচাতে গিয়ে মরতে বসেছিলো …
নিরা : আই নো। বাট কে বলতে পারে যে অ্যাক্সিডেন্টটা ওর প্ল্যান নয় । তোমার কাছে নিজেকে ভালো প্রমান করতে।
নীড় : মেরিন কখনো নিজেকে কারো কাছে ভালো প্রমান করেনা। আর ১টা কথা… মেরিন কখনোই আমার লাইফ রিস্কে ফেলতে পারেনা । কারন ও আমাকে… ভালোবাসে …।
নিরা : হামমম। বাই ।
নীড় নিরার হাত ধরলো ।
নীড় : ও আমাকে ভালোবাসে…. আর আমি আমার বনপাখিকে…
নিরা : এখন কি এসব কথার কোনো মানে আছে? নাকি এই ভালোবাসার কোনো ভবিষ্যৎ আছে ?
নীড় : সেটা জানিনা। দেখি কি হয় … লেটস হ্যাভ অ্যান কফি ।
নিরা : ওকে…

জন : ১মিনিট নীড় স্যার।
নীড় : জন তুমি ?
জন : জী । স্যার ম্যাম অসুস্থ তাই আমি চাইনা ম্যাম উত্তেজিত হোক। ডক্টর তপু বারবার বলেছে যেন মিনিমাম ১মাস ম্যামকে যেন উত্তেজিত না করা হয়। অলরেডি ওর হাত ধরে ম্যামকে উত্তেজিত করার মতো কাজ করেছেন। তবুও ম্যামের ভালোর জন্য কথাটা আমি ম্যামকে বলবোনা। বাট প্লিজ আর বেশি কিছু করবেননা।
নীড় : তুমি কি আমার ওপর নজরদারী করছো?
জন : না স্যার। ম্যাম বলল যে আপনি গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছেন। তাই যেন আপনার খেয়াল রাখি। যেন কোনো বিপদ না হয় ।
নিরা : চলো তো বেবি… মেরিন তো এখন ঘরে পরে আছে। কি করতে পারে আমি দেখে নিবো ।
জন : সিংহী কিছুক্ষনের জন্য গুহায় অবস্থান করার মানে এটা নয় যে সে শিকার করতে ভুলে গিয়েছে বা শিকার করা ছেরে দিয়েছে ।
নীড় : জন … আমি কফি খেতে যাবো … নিরার সাথেই যাবো।

জন : আপনাকে কিছু বলার বা হুমকি দেয়ার পারমিশন আমার নেই । বাট নিরা… তুমি যদি এখন ১পাও বারাও নীড় স্যারের সাথে। তবে তোমার মায়ের সাথে কি হতে পারে আমি জানিনা। লাশও পরতে পারে।
নিরা : জন…
জন : শাট আপ। আমি জন … মেরিন ম্যাম ছারা কারো চোখ রাঙানি মেনে নেই না। চোখ তুলে ফেলে দিবো।
নীড় : নিরা বাসায় যাও।
নিরা : হামমম।

নিরা চলে গেলো।
নীড় : কাজটা ঠিক করোনি।

.

রাতে…
নীড় বাসায় পৌছালো । রুমে গেলো । দেখলো দাদুভাই মেরিনকে খাইয়ে দিচ্ছে।
নীড় : হ্যালো দাদুভাই ।
দাদুভাই : হামমম।
নীড় মনে মনে : শান্তই আছে । তাহলে বোধহয় সত্যিই জন কিছু বলেনি। না বলাই ভালো। খামোখা মাথায় প্রেসার পরতো।
নীলিমা : এভাবে দারিয়ে আছিস যে? যা ফ্রেশ হয়ে নিয়ে খাবার খা। তুলে রেখেছি তোর জন্য টেবিলে।
নীড় : হামমম।
নীড় ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে গেলো। খাওয়া শেষ করলো। তখন দেখলো যে দাদুভাই সিড়ি দিয়ে নামছে।

নীলিমা : আংকেল থেকে যান রাতটা নাতনির কাছে।
দাদুভাই : না অন্যদিন এসে থাকবো।
নীড় : দাদুভাই তুমি কোথাও যাচ্ছোনা। চুপচাপ রুমে যাও।
দাদুভাই : আমি আজকে যাবো। এ বাড়িতে রাত কাটানোর সময় আসেনি। যখন সময় আসবে সেদিন ঠিকই থাকবো। আজকে না। নীলিমা… ৩-৪দিন গেলেই ও অফিস যাবার ধুম উঠাবে। সো এটা তোমার দায়িত্ব যে কোনোভাবেই ও না যায়। যদি একেবারে না শোনে তবে আমাকে ফোন করে দিবে।
নীলিমা : জী আংকেল। আসছে। গুড নাইট। নীড় দাদুভাই যাও রেস্ট করো।
নীড় : চলো আমি তোমাকে পৌছে দেই। অনেক রাত হয়েছে।
দাদুভাই : শমসের খান এখনো সম্পুর্ন অকেজো হয়ে যায়নি। আমি যেতে পারবো। ড্রাইভার আছে। দিদিভাইয়ের দেয়া বডিগার্ড আছে। আমি যেতে পারবো। তাই ১ঢিলে ২পাখি মারতে চাওয়ার দরকার নেই।
বলেই দাদুভাই চলে গেলো। কয়েকমিনিট পর নীড় বুঝলো যে দাদুভাই নিরার সাথে দেখা করার কথা বলেছে।
নীড় : এরা দাদু-নাতনি ১ লাইন নো নো… ১০লাইন বেশি বোঝে কেন?

.

চলবে…

#ঘৃণার_মেরিন 4
part : 15
writer : Mohona

.

নীড় : ১০লাইন বেশি বোঝে ।
নীড় রুমে গেলো। দেখলো মেরিন বসে বসে কিছু ভাবছে ।
নীড় : ঘড়ি দেখেছো? কয়টা বাজে…
মেরিন : হামমম… কটা বা… ১১টা। খুব বেশি বাজেনা ।
নীড় : তোমার জন্য বেশিই বাজে । ঘুমিয়ে পরো।
মেরিন : …
নীড় : কিছু বললাম তো নাকি?
মেরিন : হামম।
নীড় : জাস্ট হামম?!?!
মেরিন : মানে?
নীড় : নাথিং।
বলেই নীড় মেরিনের পাশে শুয়ে পরলো। মেরিন হাতের ওপর মাথা রেখে নীড়কে দেখতে লাগলো।
নীড় মনে মনে : অতৃপ্ত আত্মাটা এতো সহজে ঘুমিয়ে পরলো ? হসপিটালেও তো ৫দিন ধরে ড্রামা করেছে । আজকে নো ড্রামা। ১টা বার দেখা দরকার…
নীড় ১চোখ খুলল। দেখলো মেরিন ওর দিকে তাকিয়ে আছে। নীড় চমকে গেলো।
নীড় : ঘঘঘুমাও নি কেন?
মেরিন : গত কয়েকটা দিন ধরে আপনাকে মন ভরে দেখতে পারিনি। তাই আপনাকে দেখছি। ২চোখ ভরে দেখছি…
নীড় : আমি ঘুমাবো ।
মেরিন : তো ঘুমান । আপনাকে তো জেগে থাকতে বলিনি।
নীড় : এভাবে কেউ তাকিয়ে থাকলে কি ঘুমানো যায় ? চুপচাপ ঘুমাও।
মেরিন : এমন করেন কেন ? আমি ডিস্টার্ব করবোনা আপনাকে । আপনি ঘুমান।
নীড় : জাস্ট শাট আপ। ঘুমাও।
মেরিন : আপনি আমাকে চোখ রাঙাচ্ছেন ?
নীড় : হ্যা। তো?
মেরিন : ভালো লাগলো।
বলেই মেরিন নীড়ের ঠোটে কিস করে বসলো।
মেরিন : ভালোবাসি…
বলেই নীড়কে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলো। নীড়ও ১হাত আগলে নিলো । জানেনা কেন এমনটা করলো শুধু জানলো করলো।

.

২দিনপর…
নীলিমা : কিছু বলবে?
নিহাল : তোমার এমন কেন মনে হচ্ছে যে আমি তোমাকে কিছু বলবো ?
নীলিমা : ৩০বছর ধরে সংসার করছি। এতোটুকু বুঝবোনা?
নিহাল : তুমি ভুল বুঝছো। আমার কিছু বলার টলার নেই ।
নীলিমা : ওকে। বিশ্বাস করলাম ।
মনে মনে : কিছুতো ওর মাথায় চলছে। কিন্তু কি? বেরিয়ে যাবে পেট থেকে। খাবার পেটে পরলেই সব বের করবে পেট থেকে। খাদক কোথাকার।

নিহাল : এই কি এতো ভাবছো? কয়টা খেতে দাও ।
নীলিমা : বসো দিচ্ছি।

নিহাল খাবার খাচ্ছে। সাথে নীলিমাও । নীড়ও নিচে নেমে এলো ।
নীলিমা : আয় বোস। খেয়েনে ।
নীড় : হামম।
৩জন বসে খাচ্ছে।
নিহাল : নীড় …
নীড় : বলো।
নিহাল একদমে বলে
দিলো : তোমার বউ এখন কেমন আছে ?
নীড়ও একদমে বলে
দিলো : ভালোই আছে। একটু উইকনেস আছে।

নীলিমা ফিক করে হেসে দিলো।

নিহাল-নীড় : হুয়াট সো ফানি ? 😡।
নীলিমা : কিছুনা।
নীলিমা মুখ টিপে হাসছে ।

.

৫দিনপর…
নীড়ের ঘুম ভাংলো। দেখে মেরিন অফিসের পোশাকে। নীড় তারাতারি উঠে বসলো।
নীড় : তুমি?
মেরিন : হ্যা আমি ।
নীড় : কোথায় যাচ্ছো ।
মেরিন : অফিস।
নীড় : অফিস ?
মেরিন : এমন করে রিঅ্যাক্ট করছেন যেন এই ওয়ার্ডটা আর কখনো শুনেননি।
নীড় বেড থেকে নেমে মেরিনকে টেনে এনে বসিয়ে দিলো ।
নীড় : ১টা থাপ্পর মারবো তোমাকে যদি এখান থেকে ১পাও নামো । স্টুপিড।
মেরিন : দেখুন অনেক বড় ১টা কনট্র্যাক্ট নিয়েছি ১মাস হয়ে গেলো। ফিল করার কথা নেক্সট উইক । আই নিড টু নো যে কাজের প্রগ্রেস কতোদূর । জন একা সামলাতে পারবেনা। আর এমনিতেও এতোদিন শুয়ে বসে থেকে পিঠ আর সারা শরীর ব্যাথা হয়ে গিয়েছে ।
নীড় : আমি কিছু শুনতে চাইনা। আমি যখন বলেছি তখন তুমি নামবেনা।
মেরিন : কিন্তু আমি আপনার কথা শুনবো কেন ?
নীড় : মানে কি এর?
মেরিন : মানেটা খুব সহজ। আপনি আমাকে বাধা কেন দিচ্ছেন জানতে পারি?
নীড় : কারন তুমি অসুস্থ।
মেরিন : সো হুয়াট ? তাতে আপনার কি ? আমার কিছু হয়ে গেলে তো আপনার পথের কাটা সরে যাবে।
নীড় : দেখো তোমার কিছু হলে তোমার দাদুভাই আমাকে ছেরে কথা বলবেনা ।
মেরিন : আমার দাদুভাই আমি বুঝবো । দাদুভাইকে আমি সামলে নিবো। আসছি।

মেরিন বের হতে নিলো আর তখন নীলিমা রুমে ঢুকলো।
নীলিমা : একি কোথায় যাচ্ছিস?
মেরিন : অফিসে মামনি।
নীলিমা : মার খাবি । কোথাও যেতে হবেনা।
মেরিন : মামনি অনেক কাজ পরে আছে। আম…
নীলিমা : থাকুক কাজ। তুই কোথাও যাবিনা। না মানে না। চুপচাপ বোস এখানে।
মেরিন : মামনি আমি তারাতারি চলে আসবো। যাবো আর আসবো। আর আসার সময় আম্মুকে দেখে আসবো। আম্মুকে দেখিনা কতোদিন হয়ে গেলো।
নীলিমা : কোথাও যাবিনা তুই।।। যদি মাকে দেখতে মন চায় তবে নীড় গিয়ে তোর মা কে নিয়ে আসবে । এখানে সবার সাথে থাকবে।
মেরিন : না মামনি। আসলে আম্মু এখানে এলে অবাক হবে। ভয়ও পাবে। তাহলে দেখা যাবে নীড় এতোদিন ধরে যা করেছে সব পানিতে যাবে।
নীলিমা : যতোযাই বলিস আমি যেতে দিবোনা। তপু তোকে বেডরেস্টে থাকতে বলেছে । তুই কোথাও যাবিনা। অফিসে লস হলে হোক।
মেরিন : মামনি মামনি আমার লক্ষি মামনি। আমার যেতে হবে। আম…
নিহাল : কাকে কি বলছো নীলা? ওর কাছে কি কারো কোনো কথার মূল্য আছে? নাকি কারো স্নেহের মূল্য আছে? লেট হার গো। যে নিজের ভালো বোঝেনা তাকে কিছুই বলাই বেকার। ভাব খানা এমন যে সে অফিস না গেলে তাকে কেউ খেতে দিবেনা।

মেরিন নিহালের সামনে গিয়ে দারালো ।
মেরিন : তুমি খাওয়াবে আমাকে?
নিহাল : কেন অতোটুকু সামর্থ্য কি আমার নেই?
মেরিন : সেই কথা তো আমি মিন করিনি। আমি যাবোনা অফিসে যদি… আজকে ৩বেলা তুমি আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দাও…
নিহাল : 😒।
মেরিন : আচ্ছা ৩বেলা না হোক। অন্তত দুপুরেও যদি খাইয়ে দাও। তবুও আমি যাবোনা।
নিহাল : 😒
নীলিমা : ঠিক হয়েছে।

নিহাল : হুহ…
বলেই নিহাল রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

মেরিন : আসছি মামনি…
তখন আবার নিহাল রুমে ঢুকলো।
নিহাল : এই মেয়ে আমি কি তোমাকে না করেছি যে আমি তোমাকে খাইয়ে দিবোনা? যত্তোসব।
বলেই নিহাল আবার চলে গেলো। নীলিমা হা হা করে হেসে উঠলো।
নীলিমা : লোকটা না একে বারেই পাগল। এখন কোথাও যাবিনা তো?
মেরিন : কি আর করার। ভার্চুয়ালি কাজটা করতে হবে। মামনি … আজকে আমার খাবার আর ওপরে পাঠিও না কেমন? নিচে সবার সাথে বসে খাবো।
নীলিমা : আচ্ছা
নীলিমা চলে গেলো।

মেরিন ঘুরে দেখে নীড় ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছে ।

মেরিন : কি হলো?
নীড় : তোমাকে বলবো কেন? অতৃপ্ত আত্মা কোথাকার।

একটুপর ৪জন একসাথে ব্রেকফাস্ট করলো।

.

কিছুক্ষনপর …
নিহাল বসে বসে খবরের কাগজ পড়ছে।
নীলিমা : নিহাল আহমেদ চৌধুরী তবে মেরিনকে ছেলের বউ হিসেবে মেনেই নিলো।
নিহাল : মেরিন কে মেনে নেয়ার বা না নেয়ার অধিকার কারো আছে কি নেই সেটা আমি জানিনা। তবে আমি তোমাকে চিনি। তুমি অন্তত সন্দেহ প্রবন । কখনোই কাউকে বিশ্বাস করোনা। সেই তুমি মেরিনকে আপন করে নিয়েছো। এমনি এমনি নাউনি । মোক্ষম কারন আছে। কি সেটা জানিনা। তবে আছে। দেখি কি সেই কারন। তবে এর থেকেও বড় ১টা কারন আছে। মেয়েটা সত্যিই আমার ছেলেটাকে ভালোবাসে। হয়তো নিরার থেকেও বেশি। তবে আমার ১টাই ভয়। আমার ছেলে তার বনপাখিকে ভীষন ভালোবাসে। জানিনা নীড়-মেরিনের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কি? ঘৃণার সম্পর্ক কি সারাজীবন বয়ে চলা সম্ভব ?

.

দুপুরে…
নীলিমা টেবিল সাজাচ্ছে আর হাসছে।
নুপুর : খালাম্মা তুমি আজকে এতো খুশি?
নীলিমা : এখন যে ঘটনাটা ঘটবে তা ইতিহাসে বিরল। নিহাল আহমেদ চৌধুরী মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীকে খাইয়ে দিবে।
নুপুর : কি বলছো কি খালাম্মা?
নীলিমা : হামমম। যাও সবাইকে ডাক দাও।
নীড় মেরিন নিচে নামছে । নীড় ধরতে চাইলে মেরিন ধরতে দিলোনা। নিজেই নামলো। মেরিন না করাতে ক্ষেপে গিয়ে আর হেল্পই করতে যায়নি।

নীড় মনে মনে : এই অতৃপ্ত আত্মাটা সিড়ি থেকে ধপাস করে পরে যেতো। ভালো হতো। খুশি হতাম। একদম ধরবো না।

ঠিক তখনই মেরিন পরে যেতে নিলো। আর নীড় খপ করে ধরে নিলো।

নীড় : 😒।
মেরিন : এভাবে দেখছেন কেন? ছারুন আমি নামতে পারবো।
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিয়ে বাকি সিড়ি গুলো নামলো। মেরিনকে চেয়ারে বসিয়ে দিলো ।
নীড় : মামনি। ভীষন ক্ষুধা লেগেছে।
নীলিমা : সে আর নতুন কি বাবা? তোমার তো পারলে ২৪ঘন্টায় ৪৮ঘন্টাই ক্ষুধা লাগে।
নীড় : তুমি কি আমাকে ইনডিরেক্টলি খোটা দিচ্ছো?
নীলিমা : নট অ্যাট অল।
মেরিন : মামনি… বাবা কোথায়? আমাকে খাইয়ে দেবার ভয়ে কি লুকিয়ে পরেছে নাকি? বলো যে খাইয়ে দিতে হবেনা। সবাই একসাথে বসে খাই। তাহলেই হবে।
নিহাল : চৌধুরীরা ভীতু নয়। আর কথা দিয়ে কথা ভাঙেও না।
বলেই নিহাল চেয়ার টেনে মেরিনের বা দিকে বসলো। কারন ডান দিকে নীড় ।
নিহাল খাবারের প্লেট টা হাতে নিয়ে ১টা লোকমা মেরিনের দিকে এগিয়ে দিলো ।

মেরিন ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছে কবির প্রায়ই নিরাকে খাইয়ে দেয়। এখনো দেয়। অথচ মেরিনকে ছোটোবেলাতেও খাইয়ে দেয়নি ।

নিহাল : কি হলো? হা করো।

মেরিন : …
নিহাল মুচকি ১টা হাসি দিয়ে
বলল : মুখ খোলো। খেয়ে নাও।
মেরিনের পক্ষে চোখের পানিগুলোকে আর ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা। কিন্তু চোখের পানিগুলো কাউকে দেখানোও সম্ভব না।
আর কিছু না ভেবে। ছুটে ওপরে নিজের রুমে চলে গেলো।

নিহাল : কি হলো? ওভাবে চলে গেলো কেন?
নীড় : কারন ও বোকা। বোকা না হলে কি মুখের সামনে খাবার ফেলে কেউ চলে যায়?

নিহাল : নীড়… গিয়ে দেখো তো নীলা কি হলো…

নীলিমা : হামম দেখছি।
নীলিমা যেতে নিলো। তখন দেখলো মেরিন নিচে নামছে । শার্ট-প্যান্ট আর চোখে কালো চশমা পরে। হাতে গাড়ির চাবি।
নীলিমা : একি তুই কোথায় যাচ্ছিস?
মেরিন : দরকারী কাজ পরে গিয়েছে ।
বলেই মেরিন দেরি না করে বেরিয়ে গেলো ।
নিহাল-নীলিমা বেশ অবাক হলো।

নিহাল : কি হলো কি?
নীলিমা : মেয়েটা এভাবে চলে কেন গেলো?
নীড় : কারন মেয়েটা ভীতু। নিজের দুর্বলতা কাউকে দেখাতে চায়না। 😴।
নিহাল : মানে?
নীড় : কিছুনা।
বলেই নীড়ও বেরিয়ে গেলো। গাড়ি নিয়ে ।

নীড় : আই থিংক আমি জানি তুমি কোথায়?

.

নীড় মিরপুর পৌছালো। দেখলো মেরিনের গাড়িটা আছে।
নীড় : আই জাস্ট নিউ ইট …
নীড় ভেতরে ঢুকলো।
নার্স : স্যার ভালোই হয়েছে আপনি এসেছেন।
নীড় : কেন কি হয়েছে?
নার্স : স্যার…. মেরিন ম্যাম কনিকা ম্যামকে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করিয়েছে। বাট সেটার কোনো প্রয়োজন ছিলোনা ।
নীড় : আমি দেখছি…
নীড় কনিকার রুমে গেলো। দেখলো কনিকা ঘুমিয়ে আছে। আর মেরিন নিচে বসে কনিকার হাতের ওপর নিজের মাথা কাত করে রেখেছে।

নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো। মেরিন নীড়ের উপস্থিতি বুঝতে পারলো । নিজের চোখের পানি মুছে নিলো । নিজেকে স্বাভাবিক করে মাথা তুলল।

মেরিন : আপনি … আজকে তো আপনার অফ ডে …
নীড় মেরিনের ২গালে হাত রাখলো। মেরিনের চোখের দিকে তাকালো। মেরিন চোখটা নামিয়ে নিলো।

নীড় : জানিনা কেন আর কিভাবে তোমাকে একটুখানি বুঝতে শিখে গিয়েছে । নিজের অনুভূতি এভাবে আটকে রাখতে নেই। দম আটকে মারা যাবে। মরে গেলে আমাকে ভালোবাসবে কিভাবে ? হামমম।
মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরলো। হাউমাউ করে কাদতে লাগলো।

নীড় কিছুনা বলে ধীরে ধীরে মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো । কিছুক্ষনপর মেরিন শান্ত হলো ।

নীড় : ব্যাস কান্না শেষ? আমি তো ভাবলাম আরো অনেকক্ষন কাদবে। নট ডান ইয়ার। এটা তো ধোকা। তোমাকে আরেকটু কান্না করতেই হবে। তোমার জন্য জাস্ট ২বার মুখে দিয়ে চলে আসতে হয়েছে। আরেকটু কান্না করো তারপর বাসায় চলো।

মেরিন নীড়ের বুক থেকে মাথা তুলে নীড়ের সারামুখে কিস করে দিলো।
মেরিন : আই লাভ ইউ আই লাভ ইউ আই লাভ ইউ…
নীড় : 😭। হইসে বইন এবার বাসায় চল । আর … থাক বললাম না …

.

নীড়-মেরিন বাসায় পৌছালো। ২জনকে ঢুকতে দেখে নিহাল
বলল : দেখো আমার ছেলেটা ঠিকই মেরিনকে নিয়ে এসেছে।
নীলিমা : আনতেই পারে। ওর বউ। হুহ । দেখি সরো।
নীলিমা মেরিনের দিকে এগিয়ে গেলো।
নীড় : ওহ মাই ফুডস।। আম কামিং…
বলেই নীড় ছুটে খাবার টেবিলের কাছে গেলো।
নীলিমা : কাজ শেষ ময়নাপাখি?
মেরিন : হামমম।
নীলিমা : এখন চল খাবি চল। সবাই একসাথে খাবো ।
মেরিন : তোমরা খাওনি ?
নিহাল : এটা খান বাড়িনা। চৌধুরী বাড়ি। এখানে সবাই বাসায় থাকলে একসাথে খাবার খায়। নাউ কাম ফাস্ট।
নীলিমা : চল।
সবাই বসলো। নিহাল বসলো মেরিনের পাশে। আবার খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে এক লোকমা মেরিনের মুখের সামনে তুলে ধরলো।
নিহাল : হা করো… 😊…
মেরিন মুচকি হাসি দিয়ে একই প্লেট থেকে একটু খাবার নিয়ে নিহালের মুখে ঢুকিয়ে দিলো।
মেরিন : নাও এবার খাওয়াও।
নিহাল মেরিনকে খাইয়ে দিলো।

.

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here