#ঘৃণার_মেরিন 4
part : 12
writer : Mohona
.
নীড় নিলয়কে ১টা ঘুষি মারলো।
নীড় : এই ঘুষিটা ছিলো আমার
ডিস্টার্ব করার জন্য ।খাওয়ার পর গেলে এই ঘুষিটা মারতাম না।
নিলয় ওর সাঙ্গুমাঙ্গুদের ডাকতে লাগলো।
নীড় : আহা … কেউ আসবেনা। সবগুলোকে মেরে তক্তাতা কাঠি বানিয়ে দিয়েছি। তুই একাই আয়।
নিলয় নীড়কে ঘুষি মারতে এলে নীড় ওর হাত এমনভাবে মুচরে দিলো যে নিলয় ওর হাত আর নারাতেই পারলোনা।
নীড় : এটা কেন করলাম জানিস? এটা আমার মামনি আর বাবাকে ভয় দেখানোর জন্য। ওদের পায়ের নিচে ফাকা গুলি করার জন্য ।
এরপর নীড় দামদুম কতোগুলো মাইর দিলো।
নীড় : এগুলো কেন ছিলো জানিস? এগুলো ছিলো বিয়ের আগে মেরিনকে তুলে এনে উল্টা পাল্টা কিছু না করার জন্য ।
নিলয় : …
নীড় : এখন দিবো তোকে সেমি ফাইনাল মাইর। ডু ইউ নো হুয়াই? তুই কিভাবে জানবি? আমিই বলছি । আমি মানি না মানি এই মেয়েটা আমার কবুল বলা বউ। চৌধুরী বাড়ির বউ। এর গায়ে দাগ লাগা মানে আমার পরিবারের নামে দাগ লাগা। তাই তুই যেটা করতে যাচ্ছিলি সেটার জন্য তোর মাইর খাওয়া জায়েজ।
নীড় নিলয়কে আরো ১দফা মাইর দিলো।
নীড় : দেখ আমি খুব টায়ার্ড। তাই ফাইনাল মাইর দিবো। শোন এই মেয়েটা না ভীষন খারাপ। মানবিকতার ছিটে ফোটাও নেই। ভীষন ঘৃণা করি। সহ্যই হয়না এর নাম , এর অস্তিত্ব , এর উপস্থিতি , এর কাজ , এর চেহারা । বাট আমার মামনি-বাবানা দুর্ভাগ্যবশত মেয়েদের সম্মান করতে শিখিয়েছে । আর তুই ১টা মেয়ের সম্মানে হাত দিয়েছিস। তোর এমন হাল করবো যে আর কোনোদিন এমন কথা চিন্তাও করবিনা…
এরপর নীড় নিলয়কে ফাইনাল মাইর দিলো।
.
নীড় মেরিনের সামনে গিয়ে দারালো।
নীড় : আই জাস্ট হেইট ইউ। আমি তোমাকে কতোটা ঘৃণা করি তা নিজেও জানিনা। বাট আমি তোমার মতো হৃদয়হীনা নই।
নীড় মেরিনকে কোলে তুলতে গেলো। তখন গুলি চলার শব্দ পেলো । নীড় পেছনে ঘুরলো।
দেখলো জন গুলি নিয়ে দারিয়ে আছে ।নিলয়ে আঙুল দিয়ে রক্ত পরছে। ওর হাত থেকে পিস্তলটা পরে গেলো। নীড় বুঝতে পারলো যে নিলয় ওকে পেছন থেকে গুলি করতে চেয়েছিলো জন এসে ওকে বাচিয়েছে।
নীড় : এটা আমাকে গুলি করতে চেয়েছিলো?
জন : জী স্যার।
নীড় : এতো মাইর খেয়েও এর মন ভরেনি। দারা দেখাচ্ছি।
নীড় নিলয়ের কাছে গিয়ে নিলয়ের কাধ , ঘাড় সহ আরো কয়েকটা জায়গায় কিছু ১টা করলো। জন বুঝলো যে মার্শাল আর্টের কোনো ফর্মুলা অ্যাপ্লাই করলো। কিন্তু কি করলো সেটা বুঝলো না।
জন : স্যার ও মরে যায়নি তো?
নীড় : না। কয়েক মাসের জন্য এর হাড়গোর জ্যাম হয়ে থাকবে। অসার হয়ে থাকবে। প্যারালাইজড হয়ে থাকবে…
জন : থ্যাংকস গড যে ও মরেনি।
নীড় : থ্যাংকস গড বললে যে?
জন : কারন ও ম্যামের শিকার। ওর সাথে কি হবে সেটা ম্যাম ভেবে নিবে।
নীড় : 😒। শোনো। এই আবর্জনাটাকে হসপিটালে পাঠাও ।
জন : জী স্যার। এই তোরা ওকে দফা কর।
কয়েকজন এসে নিলয়কে নিয়ে গেলো।
জন : চলুন স্যার।
নীড় : জন জন জন… শোনো।
জন : জী স্যার।
নীড় : তোমাকে আমার ১টা কাজ করে দিতে হবে ।
জন : কি কাজ স্যার?
নীড় : সবাইসহ মেরিনকে জানাতে হবে যে মেরিনকে আমি না তুমি বাচিয়েছো…
জন : সরি স্যার…
নীড় : না বোঝার কি আছে? আমি স্পষ্ট বাংলায় কথাটা বললাম ।
জন : সরি স্যার । আমি এটা পারবোনা। আমি মেরিন ম্যামকে মিথ্যা বলতে পারবোনা।
নীড় : ভেবে বলছো?
জন : জী স্যার।
নীড় নিচে পরে থাকা গানটা হাতে নিয়ে নিজের মাথায় ঠেকালো।
জন : স্যার কি করছেন কি?
নীড় : ঠিকই করছি। তুমি যখন আমার কথা শুনবেইনা তখন আমি নিজেকেই শেষ করে দিবো।
জন : স্যার এতোটুকুর জন্য নিজেকেই শেষ করে দিবেন।
নীড় : হ্যা দিবো। তোমার সমস্যা ?
মনে মনে : এটা মোটেও এতোটুকু সমস্যা নয়। ইটস অ্যাবাউট মাই ইগো।
জন : স্যার নামান। পিস্তলটা লোড করা। লেগে যাবে।
নীড় : লাগুক। মরে যাবো আমি । তখন তুমি তোমার ম্যামকে জবাব দিও। গুলি খেয়ো।
জনের প্রচুর হাসি পাচ্ছে ।
নীড় : কি হলো বলো কিছু। তুমি যদি প্রমিস না করো তবে আমি নিজেকে শেষ করে দিবো।
জন নিজের হাসিটাকে চেপে
বলল : ওকে স্যার। আমি বলবোনা মেরিন ম্যামকে যে আপনিই ম্যামকে বাচিয়েছেন।
নীড় : প্রমিস?
জন : প্রমিস।
নীড় : গুড।
জন : স্যার এবার তো ওটা সরান।
নীড় পিস্তলটা ফেলে দিলো।
নীড় : তুমি ভালোমতো জানো যে যদি তোমার জন্য আমার কিছু হয় তাহলে তোমার ম্যাম তোমাকে দুনিয়া ছারা করবে। আর তাই তুমি রাজি হলে। আই নো।
জন : নো স্যার। আমি জানি আপনার কিছু হলে ম্যাম পাগল হয়ে যাবে । মরে যাবে। আগুন জ্বলবে শহরের বুকে তাই রাজী হলাম।
নীড় : 😒। হয়েছে। ডায়লগ বন্ধ করো। এখন ওকে তোলো।
জন : স্যার আমি ?
নীড় : তা নয়তো কি আমি?
জন মেরিনকে কোলে তুলতে গেলে কি ১টা ভেবে নীড় জনকে বাধা দিলো।
নীড় : দারাও।
জন : জী স্যার।
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিলো।
নীড় : তোমার ম্যামের গ্যাং এ কোনো মেয়ে সদস্য নেই।
এবার জন ফিক করে হেসেই দিলো।
নীড় : হুয়াট সো ফানি? 😤।
জন : সরি স্যার। জী স্যার মেয়েরাও আছে।
নীড় : দেন ওদেরকে আমাদের বাসা থেকে কিছুটা দূরে দারাতে বলো। আমি মেরিনকে ওদের হাতে মেরিনকে তুলে দিয়ে বাসায় যাবো। গাড়ি নিয়ে ফলো করো।
বলেই নীড় চলে গেলো।
জন : মেরিন ঠিকই বলে। আসলেই তুমি পাগল চৌধুরী।
.
নীড় ড্রাইভ করছে। আর মেরিনের মাথাটা একটু পরপর ওর ঘাড়ের ওপর পরছে আর সরিয়ে দিচ্ছে।
নীড় : উফফ এই অতৃপ্ত আত্মাটাকে ব্যাকসিটে রাখলেই ভালো হতো। জেগে থাকুক আর ঘুমিয়ে … আমাকে জ্বালাতেই হবে। অতৃপ্ত আত্মা কোথাকার। দেখো দেখি… এর মাথা আবারও কাধে পরে। কাধের মধ্যে এর মাথা থাকলে তো আমার হার্টবিট ধীরে ধীরে আরো বারবে। ড্রাইভ কিভাবে করবো? আমি বুঝিনা আমি একে এতো হেইট করি… তবুও এ আশেপাশে থাকলে আমার হার্টবিট এতো ফাস্ট হয় কেন? মেডিকেল সাইন্স তো একে ভালোবাসা বলবে… 😒😒.. মেডিকেল সাইন্স যে সবসময় ঠিক হবে তা তো কোনো কথা না। মনে হয় একে মারাত্মক ঘৃণা করি বলেই এমন হয়…
বাসা থেকে কিছুটা দুরে নীড় মেরিনকে হ্যান্ডওভার করে পেছনের দরজা দিয়ে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেতে বসলো।
.
নীলিমা : এখনও আসছেনা কেন?
নিহাল : আহ জন তো বলল যে মেরিন ঠিক আছে। আসছে।
নীলিমা : আসছেনা কেন এখনো?
নিহাল : ওই তো চলে এসেছে।
২টা মেয়ে ধরে মেরিনকে নিয়ে এসেছে। জন সাথে সাথে আছে।
জন : ম্যামকে কি এখানেই রাখবে নাকি রুমে দিয়ে আসবো?
নীলিমা : একটু কষ্ট করে রুমে নিয়ে যেতে বলো না।
জন : জী ম্যাম। এই তোমরা ম্যামকে রুমে নিয়ে চলো।
মেরিনকে রুমে নিয়ে গেলো। সবাই ঢুকে দেখে নীড় খাচ্ছে। নীড়কে দেখে জনের ভীষন হাসি পাচ্ছে। আর নীলিমার রাগ উঠছে। সেই সাথে নিহালেরও।
নীলিমা : এই দেখি সাইড যাও। মেরিনকে শুইয়ে দিতে দাও।
নীড় : ওকে।
নীড় প্লেট নিয়ে সোফায় বসলো
নীলিমা : এই নুপুর… পানি নিয়ে আসো তো। দেখি যদি জ্ঞান ফিরে।
জন : কিছুক্ষনের মধ্যে ফিরে যাবে জ্ঞান। ৩ঘন্টার বেশি হয়ে গিয়েছে। তবে সম্ভবত একটু উইকনেস থাকবে।
নীলিমা : পানির ছিটা দিবো?
জন : জী দিতে পারেন…
নুপুর পানি নিয়ে এলো। নীলিমা পানি ছিটিয়ে দিলো। কিছু হলোনা। আবার ছিটিয়ে দিলো। এবার মেরিন চোখ মিটমিট করলো। নীলিমার মুখে হাসি ফুটলো।
নীলিমা : মেরিন…
মেরিন : আআআমি…
নীলিমা : বাসায়…. আমাদের কাছে।
মেরিন ধীরে ধীরে উঠে বসলো।
নিহাল : আর ইউ ওকে? 😒।
মেরিন মুচকি হাসি দিয়ে
বলল : হামমম।
মেরিনের চোখ গেলো নীড়ের দিকে। অবাক হলো। তখন ওর নিলয়ের কথা মনে পরলো।
মেরিন : নিলয়… জন নিলয়?
জন : হসপিটালে অ্যাডমিট ম্যাম।
মেরিন : মরে নিতো?
জন নীড়ের দিকে তাকিয়ে
বলল : সম্ভবত না ম্যাম।
নীড় মনে মনে : ওই জন আবার আমার দিকে তাকায় কেন… 😢…
মেরিন : গুড। ওকে আমি মারবো।
নীলিমা : জনই তোকে বাচিয়েছেরে।
মেরিন : ইটস নট নিউ মামনি। জন বহুবার আমাকে বাচিয়েছে । ও তো আমার ভা…
ভাইয়ের মতো বলতে গিয়েও থেমে গেলো।
মেরিন : ও তো আমার ভালোই চায় সবসময়।
জন : আসছি ম্যাম।
মেরিন : হামমম।
নীলিমা : তুই রেস্ট কর।
মেরিন : আচ্ছা মামনি।
নীলিমা : তোর গিলা হলে একটু নিচে আসিস। কথা আছে।
নীড় : ওকে….
নিহাল-নীলিমা চলে গেলো। একটুপর নীড়ও গেলো।
মেরিন : মামনি নীড়ের সাথে রেগে কথা বলল কেন? জন আমাকে বাচিয়েছে। মনে হয় মামনি নীড়ের ওপর রেগে আছে কারন নীড় কোনো স্ট্যান্ড নেয়নি…
এসব ভেবে মেরিন একটু কষ্ট পেলো।
.
নীলিমা : জানিস আজকে আমার ভাবতেও অবাক লাগছে যে তুই আমার ছেলে। আমি তোকে কোনো শিক্ষাই দিতে পারিনি। তুই সবসময় মেরিনের কথা বলিস যে ও খারাপ। আজকে তুই যা করেছিস তা কি ঠিক ছিলো?
নিহাল : নীড়…. যেভাবেই হোক বিয়েটা হয়েছে। তুমি ওকে বউ অস্বীকার করলেও এটা মিথ্যা হবেনা যে মেরিন তোমার বউ। আর যতোদূর আমি মেরিনকে চিনি ও কোনোদিনও তোমাকে ছারবেনা।
নীড় : বাবা…. মামনি মানলাম একটু সেন্টি। বাট তুমিও… নট ডান।মেরিনতো তোমার আমার দুশমন পার্টি…
নিহাল : জাস্ট শাট আপ।
নীড় : ওকে । গুড নাইট। কালকে ভাষন শুনবো। আম টায়ার্ড।
নীলিমা : কি এমন কাজ করলি যে টায়ার্ড ?
নীড় : ধোলাই।
নিহাল : ধোলাই? কিসের ধোলাই?
নীড় : ঘুমের।
নিহাল : ঘুমের ধোলাই মানে?
নীড় : আরে জানোই তো ঘুম পেলে আমার কোনো হুশ থাকেনা। ঘুম আমাকে ধোলাই করে। ওকে বাই গুড নাইট।
বলেই নীড় কেটে বলল।
নিহাল : এই তোমার ছেলে কি বলে গেলো?
নীলিমা : তুমিই জিজ্ঞেস করো।
.
নীড় রুমে গেলো। দেখে মেরিন বসে আছে।
নীড় মনে মনে : ভুলেই গিয়েছিলাম যে অতৃপ্ত আত্মাটা রুমে।
মেরিন নীড়কে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখলো।
নীড় : এমনভাবে কি দেখছো? প্রথম দেখলে নাকি আমায়?
মেরিন ১টা বাকা হাসি দিলো।
নীড় : একদম এই হাসি দিবেনা। সাইড যাও ঘুমাবো।
মেরিন : ফার্স্ট এইড বক্সটা একটু আনুন প্লিজ।
নীড় : পারবোনা।
বলেই নীড় শুয়ে পরলো । মেরিন ঢুলু ঢুলু পায়ে ফার্স্ট এইড বক্সটা নিয়ে এলো। এরপর নীড়ের হাতটা নিজের হাতে নিলো। এরপর ব্যাথার স্প্রে করে দিলো।
নীড় : একি… কি স্প্রে করলে…
মেরিন : হাতের ব্যাথা কমে যাবে।
নীড় : ব্যাথা ? কিসের ব্যাথা?
মেরিন : একটু আগে নিলয়ের কন্ডিশন জানলাম ।
নীড় : তো?
মেরিন : জন মার্শাল আর্ট সম্পুর্নটা জানেনা। শিখছে। খাবার খেতে ৩ঘন্টা লাগনা। আমার নীড় বা হাত দিয়ে চামচ তুলে খায়না…
নীড় : ওয়… আমি ২হাতই ইউজ করতে পারি।
মেরিন : আই নো। বাট খাওয়ার সময় ২হাত ব্যাবহার করেনা।
নীড় নিজের হাত ছারিয়ে নিলো।
নীড় : তোমার ছোয়াতে আমার শরীর ঘিনঘিন করে।
মেরিন : তবে আমাকে বাচালেন কেন?
নীড় : ওয় স্বপ্নকুমারি… আমি তোমাকে বাচাই টাচাইনি।
মেরিন : তাই বুঝি? 😏।
নীড় : হামম। তোমাকে বাচানোর কি আদৌ কোনো কারন আছে?
মেরিন : হামম। আছে। আমি আপনার বউ…
নীড় হাহা করে হেসে উঠলো।
নীড় : বউ মাই ফুট। আমি পারলে তোমাকে কোনো পতিতালয়ে বিক্রি করে আসতাম। কারন তোমার মতো বাজে মেয়েকে ওখানেই মানায়।
বলেই নীড় চোখ বন্ধ করে নিলো। মেরিনের চোখের কোনে পানি এসে পরলো। ফার্স্ট এইড বক্সটা রেখে। গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে পরলো। কনিকার কাছে গেলো। কনিকার পায়ের কাছে মাথা রেখে কাদতে লাগলো। কাদতে কাদতে ভোরের দিকে ঘুমিয়ে পরলো।
.
সকালে…
নীড় অবাক হলো। কারন মেরিন ওকে গুড মর্নিং কিস করেনি। কফিও নেই। অনেকবেলা হয়েছে। তাই ফ্রেশ হয়ে একবারে নিচে নামলো। টেবিলে বসলো।
নীড় : ব্রেকফাস্ট কি পাবো?
তখন নীলিমা এসে খাবার দিলো। নিহাল-নীড় অবাক হলো মেরিনকে না দেখে।
নীলিমা : মেরিনকি অসুস্থ হয়ে পরেছে ? এখনও যে ঘুম?
নীড় : ঘুম? ও তো রুমে নেই।
নীলিমা : রুমে নেই? তাহলে কোথায়?
নীড় : আই ডোন্ট নো।
নীলিমা : তুই আসলেই ১টা অপদার্থ।
নীড় : আজব তো। আমি কি করলাম।
নীড় ১টা স্যান্ডুইচ হাতে নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
নীড় মিরপুর পৌছালো। কনিকার কাছে।
কনিকার রুমের বাহিরে নার্স দারিয়ে আছে।
নীড় : ভালো আন্টির ঘুম ভেঙেছে?
নার্স : না।
নীড় : ওহ। মেরিন এসেছিলো?
নার্স : জী। ম্যাম এখনো ভেতরে।
নীড় : ভেতরে?
নার্স : হামমম।
নীড় ভেতরে ঢুকলো। দেখলো মেরিন নিচে বসে কনিকার পায়ের সামনে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।
.
চলবে…
#ঘৃণার_মেরিন 4
part : 13
writer : Mohona
.
মেরিন কনিকার পায়ের সামনে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।
নীড় মনে মনে : জাতিসংঘ থেকে প্রতিবছর কেন যে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অদ্ভুদ প্রানীদের পুরষ্কার দেয়া হয় না? দেয়া হলে নির্ঘাত এই অতৃপ্ত আত্মাটা প্রতি বছরই অ্যাওয়ার্ড পেতো। প্রতিবছর না প্রতিমাসেই পেতো। এ এদিকে আর ওদিকে মামনি বাবা অদ্ভুদভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো। কি আরামে ঘুমিয়ে আছে। দিবোনা ঘুমাতে।
নীড় মেরিনের কাধে হাত রেখে জোরে জোরে ধাক্কা দিলো। মেরিন হুরমুরিয়ে উঠলো। গান হাতে নিয়ে। দেখে নীড় দারিয়ে।
মেরিন : ওহ আপনি?
নীড় : তুমি কি মশা কামড় দিলেও গান হাতে নাও?
মেরিন কিছু না বলে নীড়ের ঠোটে কিস করে
বলল : আই লাভ ইউ…
নীড় : 😒।
মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : আপনি আমাকে যতো খারাপ বলবেন আমি আপনাকে ততো ভালোবাসবো। আমাকে কষ্ট দেয়ার অধিকার আছে আপনার । আমার জান নেয়ার অধিকারও আছে আপনার । ব্রেকফাস্ট করেছেন?
নীড় : জানিনা।
মেরিন : আমি এখনই বানিয়ে নিচ্ছি।
নীড় : ওই… খেয়েছি।
মেরিন : ওহ । মামনি বাবা খেয়েছে?
নীড় : দেখেছি খাচ্ছে।
মেরিন : ওহ। ভালো। আচ্ছা আমি ফ্রেশ হয়ে অফিস যাচ্ছি।
নীড় : আমাকে বলছো কেন?
মেরিন : কারন আপনি আমার জান তাই। রাতে দেখা হচ্ছে ।
বলেই মেরিন চলে যেতে নিলো।
নীড় : মেরিন ….
মেরিন দারিয়ে গেলো। নীড়ের দিকে ঘুরলো।
মেরিন : কি ব্যাপার জান… আজকে এমন করে ডাক দিলেন যে?
নীড় মেরিনের দিকে এগিয়ে গেলো।
নীড় : কিছু বলার ছিলো।
মেরিন : বলুন…
নীড় : আমার ওইটা বলার ছিলো।
মেরিন : কোনটা বলার ছিলো?
নীড় : ওই যে ইংরেজী ‘এস’ অক্ষর দিয়ে শুরু হয় …
মেরিন : স্টুপিড ?? 😏।
নীড় : না।
মেরিন : সামার।
নীড় : নো।
মেরিন : দেন সাফার…
নীড় : আরে না। আই ওয়ান্ট টু সে সরি।
মেরিন : সরি? ফর হুয়াট?
নীড় : আই ডোন্ট নো …
মেরিন : কালকে রাতের কথাটার জন্য ?
নীড় : ….
মেরিন : নট নিডেড নীড়। আমি কিছু মনে করিনি। আসলে আমি সবার কাছে নিজের জন্য এই কথাগুলোই আশা করি । হয়তো এর থেকেও জঘন্য কথা ডিজার্ভ করি । বাট জানেন নীড় … মেরিন রাগী হতে পারে , পাজী হতে পারে , খারাপ হতে পারে কিন্তু চর… লিভ ইট। তবে ১টা কথা কি নীড় … পতিতালয়ে যারা থাকে দোষ কিন্তু কেবল তাদের একার হয়না। রাতে দেখা হচ্ছে।
মেরিন চলে গেলো।
নীড় : সাইকো মার্কা অতৃপ্ত আত্মা। হুহ।
.
রাতে…
নীলিমা : শোন … মার কাছে যাবি ভালো কথা। কাউকে জবাবদিহি করিসনা সেটাও ভালো কথা । তবে ওই মায়ের কাছে যাওয়ার আগে এই স্টুপিডটার কাছে না বললেও এই মায়ের কাছে বলে গেলে কি খুব দোষের হবে?
নিহাল : নীলা কাকে কি বলছো? এটা মেরিন বন্যা খা… মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী । সে কাউকে কোনোকিছুর জন্য জবাব দেয়না। আর তোমাকে মামনি ডেকেছে বলেই তো আর তোমাকে মামনি বানিয়ে ফেলেনি । জাস্ট বলার জন্য বলে। দ্যাটস ইট।
মেরিন : আচ্ছা মামনি… তোমার বরটা এমন কেন গো? আমার সাথে কথা বললে সরাসরিই তো বলতে পারে। এমন করে বলার কি আছে?
নিহাল : শোনো মেয়ে তোমার সাথে না কথা বলতে ভালো লাগেনা।
মেরিন : তো এর জন্য কি তোমাকে নোবেল ছুরে মারবো?
নিহাল : এই মেয়ে তুমি কি ভালোভাবে কথা বলতে পারোনা?
মেরিন : না। যাই হোক মনে আছে কালকে টেন্ডার নিতে যেতে হবে তোমাকে?
নিহাল : কিসের টেন্ডার?
মেরিন : জানোনা কিসের টেন্ডার?
নিহাল : ওই টেন্ডার কি গত ৪-৫বছর ধরে নিতে পেরেছি তোমার জন্য। হাটুর বয়সী মেয়ে হয়ে … স্টুডেন্ট লাইফে বিজনেসে জয়েন করে খান এম্পায়ারকে ৫ থেকে ১ এ নিয়ে গিয়েছো। এখন এমন টাইপের টেন্ডারের কথা আর কেউ কল্পনাই করতে পারেনা। নট ইভেন মি।
মেরিন : এখন থেকে কল্পনা করবেনা। টেন্ডার নিবে।
নিহাল : দয়া দেখাচ্ছো?
মেরিন : মেরিন কখনো কাউকে দয়া দেখায়না। খান & মাহমুদের সাথে চৌধুরী এম্পায়ারও আমার। তাই এটাকেও টপে রাখা আমার দায়িত্ব । মেরিন পিছিয়ে থাকতে পছন্দ করেনা।
নীড় মনে মনে : ডাইনিং টেবিলটাকে মিটিংরুম বানিয়ে দিলো। মানুষ যে কি করে বিজনেস করে আল্লাহ মালুম। সুস্থ শরীরকে ব্যাস্ত করা। 😒।
নীড় : গুড নাইট সবাই..
নিহাল কিছু বললনা। ইগনোর করলো। মেরিন বিষয়টা লক্ষ্য করলো। নীড় চলে গেলো। নিহালও ঘুমাতে চলে গেলো।
মেরিন : মামনি… এই বাবা ছেলের জুটিতে ফাটল ধরলো কি করে?
নীলিমা : তোর জন্য ।
মেরিন : আমার জন্য ?
নীলিমা : হামমম। নীড় কালকে তোকে বাচাতে যায়নি । তাই বাবা ছেলের ওপর রেগে আছে।
মেরিন : এতো সহজে আমাকে মেনে নিলো? আজব তো।
নীলিমা : কি করবে বল তো। তাদের আন বান শান চৌধুরী টাইটেল যে তোর নামের সাথে লেগে গিয়েছে। তাইজন্য ।
মেরিন : তুমিও না মামনি….
ওরা ২জনও নিজ নিজ রুমে চলে গেলো।
.
নীড় ঘুমের ভান ধরে পাশ ফিরে শুয়ে আছে । মেরিন বিষয়টা বুঝলো।
মেরিন : পাগল চৌধুরী…
মেরিন লাইটটা নিভিয়ে বিড়াল ছানার মতো নীড়ের বাহুর ভেতর ঢুকে গেলো।
নীড় মনে মনে : ঘুমের ভান ধরেও শেষরক্ষা হলোনা। অতৃপ্ত আত্মাটা কলিজার ভেতর ঢুকেই গেলো।
মেরিন নীড় শার্টের ওপরের ২টা বাটন খুলল।
নীড় মনে মনে : এই মেয়ে করছে কি? মান ইজ্জতে হাত দেয় কেন?
মেরিন নীড়ের বুকে চুমু দিলো। এরপর মাথাটা একটু তুলে নীড়ের ঠোটে কিস করলো।
মেরিন : ভালোবাসি…
বলেই নীড়কে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো।
নীড় মনে মনে : বাহ… আমার কলিজার ওপর চরে কি আরামে ঘুমিয়ে পরলো। এর চুলের ঘ্রাণটা তো সেই। কোন শ্যাম্পু লাগায় ? হা…চি… চুলের ঘ্রাণ সুন্দর হলেও এর চুল এর মতোই অসভ্য নাকের ভেতর গিয়ে জ্বালাচ্ছে… আমারও ঘুম পাচ্ছে।
নীড়ও ঘুমিয়ে পরলো।
.
৭দিনপর…
মেরিন নীড়কে নিয়ে জোক করে লং ড্রাইভে বের হয়েছে। আসলে নীড় একাই যাচ্ছিলো। মেরিন যেতে চাইলো ক্যানসিল করে দেয়। তাই মেরিন জোর করে নিয়ে যায়। মেরিনই ড্রাইভ করছে ।
নীড় : ওয়… আমার খোমার দিকে না তাকিয়ে রোডের দিকে তাকাও। না হলে অ্যাক্সিডেন্ট হবে।
মেরিন : হোক… আপনাকে দেখতে দেখতে মরে যাবো। বিগ ডিল।
নীড় : তুমি তো আর একা মরবানা… মরবো তো আমিও।
মেরিন : আমি মরে গেলে আপনি বেচে থেকে কি করবেন?
নীড় : মসজিদে শিন্নি দিবো ।
মেরিন : সত্যি?
নীড় : হ্যা। মসজিদে শিন্নি দিবো । ২রাকাআত নফল নামায পরবো। ২দিনপরই নিরাকে বিয়ে করবো।
মেরিন : …
কথা গুলো বলে নীড়ের নিজেরই খারাপ লাগছে । কথাগুলো শুনে মেরিন চুপচাপ ড্রাইভ করতে লাগলো।
বেশকিছুক্ষন পর নীড় চেচিয়ে উঠলো ।
নীড় : এই থামো থামো আইসক্রীম।
মেরিন : আইসক্রীম খাবেন?
নীড় : হামমম ।
মেরিন : ওকে…
নীড় : একি আবার গাড়ি স্টার্ট দিচ্ছো কেন?
মেরিন : আইসক্রীম না খাবেন বললেন।
নীড় : এ পার থেকে ও পার। হেটেই যাওয়া যাবে। গাড়ি দিয়ে এতো লম্বা লেন ঘুরতে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই ।
বলেই নীড় গাড়ি থেকে নামলো।
নীড় : তুমি দারাও আমি নিয়ে আসছি ।
মেরিন : না না আপনার যেতে হবেনা। আপনি দারান আমি নিয়ে আসছি।
নীড় : কেন তুমি যাবে কেন?
মেরিন : এমনিতেই। আপ…
নীড় : দেখো আমি কোনো বাচ্চা না যে রোড ক্রস করতে পারবোনা। এটলিস্ট এতোটুকু কাজেও বাধা দিওনা।
মেরিন : …
নীড় আইসক্রীম কিনতে গেলো। কিনে নিয়ে মেরিনেরটা হাতে নিয়ে … আর নিজেরটা খেতে খেতে রাস্তা পার হচ্ছে মিস্টার খাদক চৌধুরী।
পার হতে হতে নীড়ের কানে মেরিনের ডাক ঢুকলো।
মেরিন : নীড়…
ডাকটা শুনেই তৎক্ষনাৎ ১টা ধাক্কা অনুভব করলো।
পিছন ফিরতে সাহস হচ্ছেনা নীড়ের। কেন যেন খুব ভয় হচ্ছে। বুকটা কাপছে। আইসক্রীম ওয়ালা ছুটে গেলো । নীড় ১টা লম্বা নিঃশ্বাস নিয়ে চোখ বন্ধ করে পিছনে ঘুরলো। ভয়ে ভয়ে চোখ মেলল।
দেখলো মেরিনের রক্তাত্ব দেহটা পরে আছে। নিভু নিভু চোখে তাকিয়ে আছে । নীড় হাতের আইসক্রীম গুলো ছুরে ফেলে ছুটে মেরিনের কাছে গেলো ।
নীড় : মমমেরিন…
মেরিন : মমমসজিদে শিন্নিও দিয়েন…. নননফল ননামাযও পরে নিয়েন। ককককিন্তু নননিরা ভিন্ন অন্য ককককাউকে বববিয়ে করবেন। ও ভভভালোনা… আআআই লললাভ ইউ…
মেরিন জ্ঞান হারালো।
.
নীড় দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে ।
মনে পরছে গাড়িতে বলা নিজের কথাগুলো। আর চোখের সামনে থেকে ভেসে উঠছে মেরিনের রক্তাত্ব শরীর। কানে বারি খাচ্ছে মেরিনের বলা শেষ কথা গুলো।
তখন ডক্টর বেরিয়ে এলো।
ডক্টর : পেশেন্টের সাথে কে আছে? পেশেন্টের সাথে কে আছে? আম আসকিং পেশেন্টের সাথে কে আছে?
নীড়ের ধ্যান ভাংলো।
নীড় : ইইইটস মি।
নীড় ডক্টরের সামনে গিয়ে দারালো।
নীড় : আই অ্যাম উইথ হার।
ডক্টর : কি হন আপনি পেশেন্টের?
নীড় : …
ডক্টর : আপনি পেশেন্টের কি হন?
নীড় : হ্যা? হাজবেন্ড ।
ডক্টর : নাম কি পেশেন্টের?
নীড় : মমমেরিন।
ডক্টর : বয়স কতো?
নীড় : …
ডক্টর : বয়স কতো?
নীড় : ২৪-২৫…বছর । ২৬ও হতে পারে… আই ডোন্ট নো।
ডক্টর : আর ইউ ব্লাডি ড্রাগ অ্যাডিক্টেড …? কিছুই জানেননা। আম ড্যাম শিওর যে আপনি পেশেন্টের মেডিকেল হিস্ট্রিও জানেন না। কি যে করি।।।
তখন জন হাজির হলো।
জন : এই যে পেশেন্টের মেডিকেল হিস্ট্রি ।
জন ডক্টরের হাতে রিপোর্টগুলো দিলো।
ডক্টর : আপনি কি হন?
দাদুভাই : ভাই… ও পেশেন্টের ভাই । পেশেন্ট ২৫এ পা রাখবে জুলাই এ।
ডক্টর : রিপোর্ট তো বলছে যে পেশেন্টের মাথায় ১টা আঘাত আছে। তাও ছোটবেলার ।
দাদুভাই : জী…
ডক্টর : এখনো মাথায় আঘাত পেয়েছে। এই মুহুর্তে সার্জারি করা প্রয়োজন।
দাদুভাই : তো করুন।
ডক্টর : সরি। উই কান্ট । অনেক রিস্কি। কিছু হয়ে গেলে আমার আর আমার হসপিটালের দোষ হবে।
দাদুভাই : আরে আপনি কি বলছেন এসব? প্লিজ আমার নাতনিকে বাচান ।
ডক্টর : সরি স্যার । এতো বড় রিস্ক আমরা নিতে পারবোনা।
জন : ডক্টর যদি আপনি এখন এই মুহুর্তে গুলি খেয়ে না মরতে চান তবে সার্জারি শুরু করুন।
ডক্টর : সরি উই কান্ট। আর আমার পক্ষে এটা সম্ভবও না। প্ল…
তখন তপু হাজির হলো।
তপু : সার্জারিটা আমিই করবো। আপনাকে করতে হবে। আই জাস্ট নিড ইউর ওটি …
ডক্টর : আপনি?
তপু : আমি তপু। ডক্টর তপু। ব্রেইন স্পেশালাইজড । দেয়ার মাই পেপার।
ডক্টরটা দেখে নিলো।
তপু : ক্যান ইউ প্লিজ অ্যাসিস্ট মি?
ডক্টর : কিছু খারাপ হয়ে গেলে কিন্তু…
তপু : আমার দোষ।
ডক্টর : মুখে বললে তো হবেনা। আপনার সিগনেচার লাগবে।
তপু : যা করার তারাতারি করবেন…
ডক্টর : হামমম।
ডক্টর চলে গেলো। তপু নীড়কে ১টা লুক দিলো। নিহাল-নীলিমা এসে হাজির হলো।
নীলিমা : কি অবস্থা মেরিনের?
জন : ভালোনা। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লরছে। অনেকেই চায় যেন ম্যাম মারা যায়। কিন্তু আমি আর শমসের স্যার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো যেন তেমনটা না হয়।
কথা গুলো জন নীড়ের দিকে তাকিয়ে বলল।
কিছুক্ষন পর নার্স কিছু পেপার নিয়ে নীড়ের সামনে দারালো।
নার্স : স্যার আপনাকে এখানটায় সিগনেচার করতে হবে…
নীড় : আআমাকে?
নার্স : জী আপনাকে…
নীড় কাপা কাপা হাতে কলমটা নিয়ে আবার রেখে দিলো।
নীড় : নননো । আই কান্ট। আই কান্ট …
নিহাল : নীড় সিগনেচার করো।
নীড় মূর্তির মতো দারিয়ে রইলো।
দাদুভাই : নীড়… দুর্ভাগ্যক্রমে তুমি মেরিনের স্বামী তাই ওখানে সিগনেচার করার দায়িত্বও তোমার। অন্তত ১টা দায়িত্ব পালন করো। ট্রাস্ট মি… তোমাকে দোষ দিবোনা।
ডক্টর : এমন স্বামী আমি জীবনেও দেখিনি । আমার মনে হয় অ্যাক্সিডেন্ট টা ওনারই প্ল্যান …
কথাটা শুনে সবাই নীড়ের দিকে পুলিশের নজরে তাকালো।
সবার তাকানোর থেকেও নীলিমার তাকানোতে নীড় কষ্ট পেলো। নীড় নিজেকে শক্ত করে সিগনেচার করে দিয়ে ওখান থেকে চলে গেলো।
.
৩ঘন্টাপর…
ওটির লাইট নিভে গেলো। সবাই এগিয়ে গেলো । একা নীড় দূরে দারিয়ে আছে ।
তপু বেরিয়ে এলো।
দাদুভাই : আমার দিদিভাই…
তপু : আউট অফ ডেঞ্জার … বাট
জন : বাট?
তপু : ৭২ঘন্টার মধ্যে জ্ঞান না ফিরলে মেরিন ডিপ কোমায় চলে যেতে পারে।
কথাটা শুনে দাদুভাই পরে যেতে নিলো। তখন কবির কোথায় থেকে হাজির হয়ে তাকে ধরে ফেলল।
দাদুভাই কবিরকে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলো ।
দাদুভাই : তোর কাছে গত ২৫বছর ধরে কিছু চাইনি। আজকে চাইছি… আমার নাতনিকে ফিরিয়ে দে।। প্লিজ ফিরিয়ে দে…
কবির : বাবা … ঠান্ডা হও। বাচানোর মালিক আল্লাহ। তুমি আমি কি করতে পারি?
দাদুভাই কবিরের থেকে সরে এলো।
জন : আপনি এখানে কেন এসেছেন? ম্যামকে মেরে ফেলতে?
তপু : জন… থামো।
জন : হঠাৎ করে এলো তো তাই অবাক হলাম।
কবির : লিসেন আমি আমার বাবার জন্য এসেছি। বাবাকে সামলাতে এসেছি । দ্যাটস ইট ।
.
৫৫ঘন্টাপর…
নীড় দরজার বাহিরে থেকে মেরিনকে দেখছে। এই ২দিনে নীড় পানি ছারা কিছুই মুখে দেয়নি। আর কেউ ওর কথা ভাবেওনি। ও ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছে ও একটু অসুস্থ হলে নীলিমা না খেয়ে থাকে। আর ওর সুস্থ হওয়ার জন্য দোয়া করে। নীড়ও তাই করেছে। মাথা ঘুরে পরে যাচ্ছিলো তাই একটু পানি মুখে দিয়েছে ।
নীড় : তুমি এভাবে যেতে পারোনা। আমাকে ঝণী করে যেতে পারোনা। নীড় আহমেদ চৌধুরী কারো কাছে ঋণ থাকেনা। তোমার কাছে কিভাবে ঝন থাকতে পারি? যে সবার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে সে আমার জীবন বাচিয়ে কি করে যেতে পারে। নো নো নো… এটা হতে পারেনা। অনেক হিসাব নিকাশ বাকি।। উঠে বসো । তো…
তখন নীড় দেখলো মেরিনের হাতের আঙ্গুল নরছে। নীড়ের মুখে হাসি ফুটলো । ছুটে গিয়ে ডক্টর ডেকে আনলো।
.
চলবে…